মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম খুত্ববাহ ও তাকবীর সংখ্যা

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম খুত্ববাহ ও তাকবীর সংখ্যা

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম খুত্ববাহ ও তাকবীর সংখ্যা >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ ২৪৫-২৫৭ =১৩টি

অনুচ্ছেদ-২৪৫ দুই ঈদের নামায
অনুচ্ছেদ-২৪৬ ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে ঈদগাহে যাওয়ার সময়ও্ব্ব্ব
অনুচ্ছেদ-২৪৭ ঈদের নামায নারীদের অংশগ্রহণ
অনুচ্ছেদ-২৪৮ ঈদের নামাজের খুত্ববাহ
অনুচ্ছেদ-২৪৯ ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান
অনুচ্ছেদ-২৫০ ঈদের নামায আযান নেই
অনুচ্ছেদ-২৫১ দুই ঈদের তাকবীর
অনুচ্ছেদ-২৫২ ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আযহার নামাজের কেরাত
অনুচ্ছেদ-২৫৩ খুত্ববাহ শুনার জন্য বসা
অনুচ্ছেদ-২৫৪ ঈদগাহে এক পথ দিয়ে যাওয়া এবং অন্য পথে ফেরা
অনুচ্ছেদ-২৫৫ কোন কারণে ঈমাম ঈদের দিন নামায পড়াতে না পারলে পরের দিন পড়াবেন
অনুচ্ছেদ-২৫৬ ঈদের নামাজের পর অন্য নফল নামায
অনুচ্ছেদ-২৫৭ বৃষ্টির দিনে লোকদের নিয়ে ঈদের নামায মাসজিদে আদায় করা

অনুচ্ছেদ-২৪৫ দুই ঈদের নামায

১১৩৪আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাদীনাহ্তে এসে দেখেন মাদীনাহ্বাসীরা নির্দিষ্ট দুটি দিনে খেলাধূলা ও আনন্দ করে থাকে। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ দুটি দিন কিসের? সকলেই বললো, জাহিলী যুগে আমরা এ দু দিন খেলাধূলা করতাম। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের এ দু দিনের পরিবর্তে উত্তম দুটি দিন দান করিয়াছেন। তা হলো, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্বরের দিন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪৬ ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে ঈদগাহে যাওয়ার সময়

১১৩৫. ইয়াযীদ ইবনি খুমাইর আর-রাহবী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সহাবীআবদুল্লা ইবনি বুসর (রাঃআঃ) লোকদের সাথে ঈদুল ফিত্বর কিংবা ঈদুল আযহার সরাত আদায় করতে যান। (নামায আরম্ভ করতে) ঈমাম দেরী করায় তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলিলেন, (রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ))-এর যুগে এ (ইশারাকের) সময় আমরা ঈদের নামায আদায় শেষ করতাম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪৭ ঈদের নামায নারীদের অংশগ্রহণ

১১৩৬. উম্মুআত্বিয়্যাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়ার জন্য গৃহিণীদের নির্দেশ দেন। বলা হলো, ঋতুবর্তী মেয়েরা কি করিবে? তিনি (সাঃআঃ) বলিলেন, কল্যাণমুলক কাজ ও মুসলিমদের দুআয় তাহাঁদের শরীক হওয়া উচিত। এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রসূল ! কারো (শরীর ঢাকার মত) কাপড় না থাকলে সে কি করিবে? নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তার বান্ধবীর (সঙ্গীর) কাপড়ের কিছু অংশে জড়িয়ে যাবে।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম।

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩৭.উম্মুআত্বিয়্যাহ (রাঃআঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। (এতে রহিয়াছে) নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ ঋতুবর্তী নারীরা মুসলিমদের নামাজের স্থান হইতে পৃথক থাকিবে। এ হাদীসে কাপড়ের বিষয় উল্লেখ নাই। বর্ণনাকারী হাফসাহ ও আরেক মহিলা হইতে জনৈক মহিলা সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন যে, বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল!…অতঃপর মূসা বর্ণিত হাদিসের কাপড় বিষয়টি বর্ণনা করেন।

সহীহঃ বোখারি। মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩৮. উম্মুআত্বিয়্যাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা এ (উপরোক্ত) হাদিস মোতাবেক আমল করতে আদিষ্ট হতাম। বর্ণনাকারী বলেন, ঋতুবর্তী নারীরা সকলের পিছনে অবস্থান করতো এবং লোকদের সাথে তাকবীর পাঠ করতো।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩৯. ইসমাঈল ইবনিআবদুর রহমান ইবনিআত্বিয়্যাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার দাদী উম্মুআত্বিয়্যাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

ইসমাঈল ইবনিআবদুর রহমান ইবনিআত্বিয়্যাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার দাদী উম্মুআত্বিয়্যাহ (রাঃআঃ) সূত্রে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাদীনাহয় আগমন করে আনসার মহিলাদেরকে একটি ঘরে সমবেত করেউমার ইবনিল খাত্তাবকে আমাদের নিকট প্রেরন করিলেন।উমার(রাঃআঃ) এসে দরজায় দাঁড়িয়ে আমাদেরকে সালাম জানালে আমরা তার সালামের উত্তর দেই।উমার বলেন, আমি আপনাদের নিকট রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সংবাদবাহক হিসেবে এসেছি। অতঃপর তিনি আমাদের ঋতুবর্তী ও কুমারী মেয়েদের দুই ঈদের নামায অংশগ্রহনের আদেশ দেন, মহিলাদের জন্য জুমুআহ বাধ্যতামূলক নয় বলে জানান এবং আমাদেরকে জানাযার নামায অংশগ্রহনে নিষেধ করেন। {১১৩৯}

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪৮ ঈদের নামাজের খুত্ববাহ

১১৪০. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা ঈদের দিন মারওয়ান ঈদের মাঠে মিম্বার স্থাপন করে নামাজের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করায় জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেন, হে মারওয়ান ! তুমি সুন্নাত বিরোধী কাজ করলে। তুমিঈদের দিন বাইরে মিম্বার এনেছো এবং নামাজের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করেছো। অথচ ইতিপূর্বে (নাবী (সাঃআঃ) ও খুলাফায়ি রাশিদ্বীনের যুগে) কখনো এমনটি করা হয়নি। আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, লোকটি কে? লোকজন বললো, অমুকের পুত্র অমুক। তিনি বলিলেন, সে তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে। আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে বলিতে শুনেছিঃ কেউ কোন গর্হিত (শারীআত বিরোধী) কাজ সংঘটিত হইতে দেখলে তাকে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করিবে। এরূপ করতে অক্ষম হলে তা কথার দ্বারা প্রতিহত করিবে। যদি এতেও অক্ষম হয় তাহলে সে তা অন্তরে ঘৃণা করিবে (বা তা দূর করার উপায় অন্বেষনে চিন্তা-ভাবনা করিবে)। তবে এটি হচ্ছে দুর্বলতম ঈমানের পরিচায়ক।

সহীহঃ মুসলিম।মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৪১. জাবির ইবনিআবদুল্লা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)ঈদুল ফিত্বরের দিন দাঁড়িয়ে খুত্ববাহর পূর্বেই নামায আদায় করিলেন।তারপর লোকদের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ দিলেন এবং খুত্ববাহ শেষে মহিলাদের নিকট গিয়ে তাহাঁদেরকে নসীহত করিলেন। তিনি (সাঃআঃ)তখন বিলালের হাতের উপর ভর করেছিলেন এবং বিলাল (রাঃআঃ) তার কাপড় বিছিয়ে রেখেছিলেন। মহিলারা তাতে দানের বস্তু নিক্ষেপ করছিলেন। কোন কোন মহিলা তাতে নিজেদের গহনা তাতে ছুঁড়ে দিচ্ছিলো এবং অন্যরা আরো অনেক কিছু নিক্ষেপ করছিলো।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৪২. আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি আর ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন যে, নাবী (সাঃআঃ)ঈদুল ফিত্বরের দিন রওয়ানা হয়ে নামায আদায়ের পর খুত্ববাহ দিলেন। অতঃপর নারীদের নিকট গেলেন। তাহাঁর সাথে বিলাল (রাঃআঃ) ছিলেন। ইবনি কাসীর বলেন, হাদিস বর্ণনাকারী শুবাহর দৃঢ় ধারণা, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নারীদেরকে সদাক্বাহ করতে আদেশ করলে তারা নিজেদের অলংকারাদী ছুঁড়ে দিতে লাগলেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৪৩. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

পুর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ অর্থবোধক হাদিস বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) অনুমান করিলেন যে, (দূরে অবস্থানের কারণে) মহিলারা তাহাঁর কথা শুনতে পাননি। কাজেই তিনি বিলালকে সাথে নিয়ে মহিলাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে তাহাঁদেরকে নসীহত প্রদান করেন এবং সদাক্বাহ করতে আদেশ করেন। মহিলারা তাহাঁদের কানের রিং ও হাতের আংটি খুলে বিলালের কাপড়ের মধ্যে নিক্ষেপ করতে লাগলেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৪৪. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

পুর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। তিনি আরো বলেন, মহিলারা তাহাঁদের কানের রিং এবং হাতের আংটি খুলে দিতে লাগলেন এবং বিলাল (রাঃআঃ) স্বীয় চাদরে সেগুলো তুলে রাখলেন। ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সেগুলো অভাবী মুসলিমদের মাঝে বিতরণ করে দিলেন।

সহীহঃ মুসলিম। মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪৯ ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ প্রদান

১১৪৫. ইয়াযীদ ইবনিল বারাআ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) কে ঈদের দিন একটি ধনুক দেয়া হলে তিনি তাতে ভর করে খুত্ববাহ দেন।

মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম -হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫০ ঈদের নামায আযান নেই

১১৪৬. আবদুর রহমান ইবনিআবিস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) কে জিজ্ঞেস করেন, আপনি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে কোন ঈদের নামায আদায় করিয়াছেন কি? তিনি বলিলেন, হাঁ। তাহাঁর সাথে আমার ঘনিষ্টতা না থাকলে শিশু হওয়ার কারণে আমি হয়ত তাহাঁর সাথে নামায শরীক হইতে পারতাম না। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঈদের দিন কাসীর ইবনিল সলত এর বাড়ির পাশে স্থাপিত ঝান্ডার নিকটে এসে নামায আদায় করার পর খুত্ববাহ দেন। ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) আযান ও ইক্বমাতের কথা উল্লেখ করেননি। ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) বলেন, অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) সদাক্বাহ করতে আদেশ করলে মহিলারা তাহাঁদের কান ও গলার দিকে ইশারা করেন, ফলে নাবী (সাঃআঃ) বিলালকে তাহাঁদের নিকট পাঠান। বিলাল (রাঃআঃ) তাহাঁদের কাছে গিয়ে (সদাক্বাহ সংগ্রহ করে) নাবী (সাঃআঃ) এর কাছে ফিরে আসেন।

সহীহঃ বোখারি। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৪৭. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ), আবু বাকর এবং উমার অথবা উসমান (রাঃআঃ) আজান ও ইক্বামাত ছাড়াই ঈদের নামায আদায় করেতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৪৮. জাবির ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)– এর সাথে দুই ঈদের নামায আজান ও ইক্বামাত ছাড়া এক দুইবার নয়, বরং অনেকবার আদায় করেছি।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ-২৫১ দুই ঈদের তাকবীর

১১৪৯. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আযহার নামাজে প্রথম রাকআতে সাতবার এবং দ্বিতীয় রাকআতে পাঁচবার তাকবীর বলিতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৫০. ইবনি শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ অর্থবোধক হাদিস একই সানাদে বর্ণিত হয়েছে। ইবনি শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, রুকূর দুই তাকবীর ব্যতীত।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৫১. আবদুল্লা ইবনি আমর ইবনিল আস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ঈদুল ফিত্বরের নামাজের তাকবীর হচ্ছে প্রথম রাকআতে সাতটি এবং দ্বিতীয় রাকআতে পাঁচটি এবং উভয় রাকআতেই তাকবীরের পর কেরাত পড়তে হইবে।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১১৫২. আমর ইবনি শুআইব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) ঈদুল ফিত্বরের নামাজের প্রথম রাকআতে সাতবার তাকবীর বলিতেন, অতঃপর ক্বিরায়াত পাঠ করতেন, কেরাত শেষে তাকবীর বলার পর দ্বিতীয় রাকআতের জন্য দন্ডায়মান হয়ে চারবার তাকবীর বলে ক্বিরায়াত আরম্ভ করতেন, অতঃপর রুকূ করতেন। {১১৫২}

হাসান সহিহ, তবে (চার তাকবীর) কথাটি বাদে। সঠিক হচ্ছে (পাঁচ তাকবীর)।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১১৫৩. আবু মূসা আল-আশআরী ও হুযাইফাহ ইবনিল ইয়ামান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

আবু মূসা আল-আশআরী ও হুযাইফাহ ইবনিল ইয়ামান (রাঃআঃ)- কে সাঈদ ইবনিল আস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) জিজ্ঞেস করেন, ঈদুল ফিত্বর এবং ঈদুল আযহার নামায রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কিভাবে তাকবীর বলিতেন? আবু মূসা আল-আশআরী (রাঃআঃ) বলেন, তিনি জানাযার নামাজের ন্যায় চারটি তাকবীর বলিতেন। হুযাইফাহ (রাঃআঃ) বলেন, আবু মূসা (রাঃআঃ) সত্যি বলেছেন। আবু মূসা (রাঃআঃ) বলেন, আমি বাসরাহইতে গভর্নর থাকাকালে (ঈদের নামায) এভাবেই তাকবীর দিয়েছি। আবু আয়েশা (রাঃআঃ) বলেন, সাঈদ ইবনিল আসের প্রশ্ন করার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ-২৫২ ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আযহার নামাজের কেরাত

১১৫৪. উবাইদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লা ইবনি উতবাহ ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা উমার ইবনিল খাত্তাব (রাঃআঃ) আবু ওয়াক্বিদ আল-লাইসী (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেন, রসুল্ললাহ (সাঃআঃ) ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আযহার নামাজে কোন সূরাহ পাঠ করতেন? তিনি বলেন, তিনি সূরাহ কাফ অয়াল-কুরাআনিল মাজীদ এবং সূরাহ ইকতারাবাতিস সাআতু ওয়ান-শাককাল কামারু তিলাওয়াত করতেন।

সহীহঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫৩ খুত্ববাহ শুনার জন্য বসা

১১৫৫. আবদুল্লা ইবনিস সায়িব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) সাথে ঈদের নামায আদায় করি। নামায শেষে তিনি বলেনঃ আমি এখন খুত্ববাহ দিবো। যে খুত্ববাহ শুনার জন্য বসতে চায় সে বসবে, আর কেউ চলে যেতে চাইলে চলে যাবে।

সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিসটি মুরসাল। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫৪ ঈদগাহে এক পথ দিয়ে যাওয়া এবং অন্য পথে ফেরা

১১৫৬. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঈদের দিন এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন।

সহীহঃ বোখারি। জাবির হইতে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫৫ কোন কারণে ঈমাম ঈদের দিন নামায পড়াতে না পারলে পরের দিন পড়াবেন

১১৫. আবুউমাইর ইবনি আনাস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার চাচা -যিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর সহাবী ছিলেন- হইতে বর্ণিতঃ

একদা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে একদল আরোহী এসে সাক্ষ্য দিলো যে, গতকাল তারা (ঈদের) চাঁদ দেখেছে। তিনি লোকদেরকে সওম ভঙ্গ করার এবং পরদিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

আমি ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আযহার দিন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সহাবীদের সাথে ঈদগাহে যেতাম। আমরা বাতনে বুতহান নামক প্রান্তর অতিক্রম করে ঈদগাহে গিয়ে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে নামায আদায় করতাম। অতঃপর বাতনে বুতহানের পথ ধরেই আমাদের ঘরে ফিরতাম। {১১৫৮}

{১১৫৮}- এর সানাদ দুর্বল। কারণ, সানাদে রয়েছেঃ

১। হামযাহ ইবনি নুসাইরঃ মাক্ববূল

২। ইবনি আবু মারইয়াম, তার সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ দুর্বল

৩। ইসহাক্ব ইবনি সালিম মাওলা নাওফিল ইবনিআদী, হাফিয বলেনঃ তিনি মাজহুলুল হাল।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫৬ ঈদের নামাজের পর অন্য নফল নামায

১১৫৯. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ঈদুল ফিত্বরের দিন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঈদগাহে নিয়ে (ঈদের) দু রাকআত নামায আদায় করেন। ঈদের নামাজের পূর্বে বা পরে তিনি কোন নামায আদায় করেননি। অতঃপর তিনি বিলালকে সাথে নিয়ে মহিলাদের নিকট গিয়ে তাহাঁদেরকে দান-খয়রাত করতে নসীহত করেন। মহিলারা নিজেদের কানের দুল ও হার (চাদরে) নিক্ষেপ করতে থাকলো।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫৭ বৃষ্টির দিনে লোকদের নিয়ে ঈদের নামায মাসজিদে আদায় করা

১১৬০. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা ঈদের দিন বৃষ্টি হলে নাবী (সাঃআঃ) সহাবীদেরকে নিয়ে ঈদের নামায মাসজিদে আদায় করেন। {১১৬০}

{১১৬০}- ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ নামায ক্বায়িম, অনুঃ বৃষ্টি হলে মাসজিদে ঈদের নামায আদায় করা, হাঃ ১৩১৩) ঈসা ইবনিআবদুল আরা হইতে। এর সানাদ দুর্বল। সানাদে ঈসা ইবনিআবদুল আলা ইবনি আবু ফারওয়াতাহ সম্পর্কে হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেনঃ মাজহুল। অনুরূপ তার শায়খউবাইদুল্লাহ আত- তায়মীও মাজহুল।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply