ইমামতি করার যোগ্যতা – পুরুষ ও মহিলাদের ঈমামতি করা প্রসঙ্গে
ইমামতি করার যোগ্যতা – পুরুষ ও মহিলাদের ঈমামতি করা প্রসঙ্গ >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ ৫৯-৭৭ =১৯টি
অনুচ্ছেদ-৫৯ ঈমামতি ও তার ফাযীলাত সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৬০ ঈমামতি করতে আপত্তি করা বাঞ্ছনীয় নয়
অনুচ্ছেদ-৬১ ঈমামতির অধিক যোগ্য কে?
অনুচ্ছেদ-৬২ মহিলাদের ঈমামতি করা প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-৬৩ মুক্তাদীদের অপছন্দনীয় লোকের ঈমামতি করা
অনুচ্ছেদ-৬৪ সৎ ও অসৎ লোকের ঈমামতি
অনুচ্ছেদ-৬৫ অন্ধ লোকের ঈমামতি করা
অনুচ্ছেদ-৬৬ সাক্ষাৎকারীর ঈমামতি করা
অনুচ্ছেদ-৬৭ মুক্তাদীদের চেয়ে উঁচু স্থানে ইমামের দাঁড়ানো
অনুচ্ছেদ-৬৮ কোন ব্যক্তি একবার জামাআতে নামায আদায়ের পর আবার ঐ নামাজে ঈমামতি করা
অনুচ্ছেদ-৬৯ বসা অবস্থায় ঈমামতি করা
অনুচ্ছেদ-৭০ দু ব্যক্তির একজন তার সঙ্গীর ঈমামতি করলে তারা কিরূপে দাঁড়াবে?
অনুচ্ছেদ-৭১ তিনজন মুক্তাদী হলে তারা কিভাবে দাঁড়াবে?
অনুচ্ছেদ-৭২ সালাম ফিরানোর পর মুক্তাদীদের দিকে ইমামের ঘুরে বসা
অনুচ্ছেদ-৭৩ ইমামের নিজ জায়গাতে নাফল নামায আদায় করা
অনুচ্ছেদ-৭৪ নামাজে শেষ রাকআতে সাজদাহর পর ইমামের উযু ছুটে গেলে
অনুচ্ছেদ-৭৫ মুক্তাদীকে ইমামের অনুসরণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে
অনুচ্ছেদ-৭৬ যে ব্যক্তি ইমামের পূর্বে মাথা উঠায় বা নামায় তার ব্যাপারে হুঁশিয়ারী
অনুচ্ছেদ-৭৭ ইমামের পূর্বে চলে যাওয়া
অনুচ্ছেদ-৫৯ ঈমামতি ও তার ফাযীলাত সম্পর্কে
৫৮০. উক্ববাহ ইবনিআমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছিঃ কেউ সঠিক সময়ে লোকদের ঈমামতি করলে সে নিজেও এবং মুক্তাদীরাও (এর পূর্ণ সাওয়াব) পাবে। আর কোন ঈমাম যদি বিলম্বে নামায আদায় করে, তাহলে সে গুনাহগার হইবে, মুক্তাদীরা নয়।
হাসান সহিহ।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৬০ ঈমামতি করতে আপত্তি করা বাঞ্ছনীয় নয়
৫৮১. খারাশাহ ইবনিল হুর আল-ফাযারীর বোন সালামাহ বিনতুল হুর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ ক্বিয়ামাতের একটি নিদর্শন এটাও যে, মাসজিদের বাসিন্দারা ঈমামতির জন্য একে অপরের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করিবে। পরিস্থিতি এমন হইবে যে, তাহাঁদের নামায আদায় করাবার মত কোন (যোগ্য) ঈমাম তারা পাবে না। {৫৮০}
দুর্বলঃ মিশকাত ১১২৪। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬১ ঈমামতির অধিক যোগ্য কে?
৫৮২
আবু মাসউদ আল-বাদ্রী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও কিরাআতে অধিক পারদর্শী ব্যক্তি লোকদের ঈমামতি করিবে। ক্বিরাআতের দিক থেকে সকলে সমান হলে ঈমামতি করিবে ঐ ব্যক্তি, যে সবার আগে হিজরাত করেছে। হিজরাতের দিক থেকে সবাই সমান হলে বয়োজ্যেষ্ঠ্য ব্যক্তি ঈমামতি করিবে। কেউ যেন অনুমতি ছাড়া কারো বাড়িতে, কারো প্রভাবাধীন এলাকায় ঈমামতি না করে এবং অনুমতি ছাড়া কারো সংরক্ষিত আসনে না বসে।
সহীহঃ মুসলিম। শুবাহ বলেন, আমি ইসমাঈলকে বললাম,সংরক্ষিত আসন অর্থ কী? তিনি বলিলেন,তার বিছানা। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৩. শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ কেউ কারোর প্রভাবাধীন এলাকায় (অনুমতি ছাড়া) ঈমামতি করিবে না।
সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইয়াহ্ইয়াহ আল-কাত্তান শুবাহ থেকে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন যে, সর্বাধিক অভিজ্ঞ ক্বারীই ঈমামতির যোগ্য। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৪. আবু মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ কিরাআতে সবাই সমান হলে হাদিস সম্পর্কে বেশি অভিজ্ঞ লোক ঈমামতি করিবে। হাদিস সম্পর্কেও সকলে সমান হলে সর্বাগ্রে হিজরাতকারী (ঈমামতি করিবে)। আর এই বর্ণনাতেসবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্বারী কথাটি উল্লেখ নেই।
সহীহঃ মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাজ্জাজ ইবনি আরত্বাত (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইসমাইলের সূত্রে বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সে যেন অনুমতি ছাড়া কারো নির্দিষ্ট আসনে না বসে।সহিহ।ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৫. আমর ইবনি সালামাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এমন জায়গায় সমবেত ছিলাম যে, লোকেরা আমাদের পাশ দিয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট যাতায়াত করত এবং প্রত্যাবর্তনের সময় তারা আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বর্ণনা করত, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এরূপ এরূপ বলেছেন। তখন আমি বালক ছিলাম, যা শুনতাম তাই মুখস্থ করে ফেলতাম। শুনে শুনে আমি কুরআনের কিছু অংশও মুখস্থ করে ফেলি। একবার আমার পিতা কিছু সংখ্যক লোকসহ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট গেলেন। তিনি তাহাঁদেরকে নামাজের নিয়ম-কানুন শিক্ষা দিলেন। তিনি আরো বললেনঃ তোমাদের মধ্যকার কুরআন সম্পর্কে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি ঈমামতি করিবে। আর আমিই ছিলাম কুরআন সম্পর্কে সর্বাধিক অভিজ্ঞ এবং সকলের চেয়ে আমারই কুরআন বেশী মুখস্থ ছিল। সেহেতু তারা আমাকে ঈমাম নিযুক্ত করিল। আমি তাহাঁদের ইমমতি করতাম। এ সময় আমার গায়ে ছোট একটি গেরুয়া রংয়ের চাদর ছিল। আমি যখন সাজদাহ্য় যেতাম তখন আমার লজ্জাস্থান অনাবৃত হয়ে যেত। এক মহিলা বলিল, তোমাদের ক্বারীর লজ্জাস্থান ঢাকার ব্যবস্থা কর। তারা আমার জন্য একটি ওমানী চাদর খরিদ করিল। এতে আমি এতই আনন্দিত হই যে, ইসলাম গ্রহণের পর আর কিছুতে আমি এতটা আনন্দিত হইনি। আমার বয়স যখন মাত্র সাত কি আট বছর তখন থেকেই আমি তাহাঁদের ঈমামতি করতাম।
সহীহঃ অনুরূপ বোখারি।ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৬. আমর ইবনি সালামাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আমর ইবনি সালামাহ্ (রাঃআঃ) থেকে একই হাদীসে বর্ণিত আছে, আমি একটি তালিযুক্ত চাদর গায়ে দিয়ে তাহাঁদের ঈমামতি করতাম। চাদরটি ছেঁড়া থাকায় সিজদায় গমনকালে আমার নিতম্ব উন্মুক্ত হয়ে যেত।
সহিহ। হাদিস থেকে শিক্ষাঃ নাবালকের ঈমামতিতে নামায আদায় জায়িয। (উল্লেখ্য নাবালকের ঈমামতিতে নামায আদায় জায়িয না অপছন্দনীয় এ নিয়ে লোকেরা মতভেদ করলেও সহিহ কথা হচ্ছে জায়িয। কেননা নাবী (সাঃআঃ) নাবালকের ঈমামতিতে সম্মতি দিয়েছেন। তাছাড়া অন্য হাদীসে নফল নামায আদায়কারীর পিছনে ফরয নামায আদায় জায়িযের কথা এসেছে। যেহেতু নাবালকের নামায নফল)। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৭. আমর ইবনি সালামাহ হইতে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ
তারা একটি প্রতিনিধি দল হিসেবে নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে যান এবং ফিরে আসার সময় জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের (নামাজে) ঈমামতি করিবে কে? তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কুরআন বেশি জানে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমিই ছিলাম আমার ক্বওমের মধ্যে কুরআন সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। সেজন্য তারা আমাকে (ঈমামতির জন্য) সম্মুখে এগিয়ে দিল। কিন্তু আমি অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক ছিলাম। আমার পরনে ছোট একটি চাদর থাকত। জারাম গোত্রের যে কোন মাজলিসে উপস্থিত হলে আমিই তাহাঁদের ঈমামতি করতাম এবং আজকের এদিন পর্যন্ত তাহাঁদের জানাযার নামাযও আমি পড়াতাম।
সহীহঃ কিন্তু তার (আরবী) কথাটি অংসরক্ষিত। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইয়াযীদ ইবনি হারূন সূত্রেআমর ইবনি সালামাহ্র বর্ণনায় সানাদেআন আবীহি উল্লেখ নেই। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৮. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাদীনাহইতে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর আগমনের পূর্বেই মুহাজিরদের প্রথম দলটি মদিনায়আল-উসবাহ্ নামক স্থানে অবতরণ করলে আবু হুযাইফাহ্ (রাঃআঃ)-এর মুক্ত দাস সালিম (রাঃআঃ) তাহাঁদের ঈমামতি করেন। তিনি ছিলেন তাহাঁদের মধ্যে কুরআনকে সর্বাধিক হিফ্যকারী।
সহীহঃ বোখারি। হায়সাম বলেন, তাহাঁদের মধ্যেউমার ইবনিল খাত্তাব ও আবু সালামাহ্ ইবনিআবদুল আসাদ (রাঃআঃ)-ও ছিলেন। সহীহঃ অনুরূপ বোখারি। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৮৯. মালিক ইবনিল হুয়াইরিস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) তকে অথবা তার সাথীকে বললেনঃ নামাজের সময় হলে তোমরা আযান ও ইক্বামাত দিবে। তারপর তোমাদের মধ্যকার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ঈমামতি করিবে।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। মাসলামাহর হাদীসে রয়েছেঃ ঐ সময় আমরাইলমের দিক থেকে প্রায় সমান ছিলাম। এটি মুদরাজ। ইসমাঈলের হাদীসে রয়েছেঃ খালিদ বলেন, আমি আবু ক্বিলাবাহ্কে জিজ্ঞেস করলাম, এখানে কুরআন সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত হওয়ার কথা বলা হলো না কেন? তিনি বলিলেন, তারা উভয়েই এ দিক থেকে প্রায় সম মানের ছিলেন। এটি মুরসাল। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৫৯০. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যকার উত্তম লোক যেন তোমাদের আযান দেয় এবং কিরাআতে অধিক অভিজ্ঞ ব্যক্তি যেন তোমাদের ঈমামতি করে। {৫৮৯}
দুর্বলঃ মিশকাত ১১১৯। {৫৮৯} ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ আযান, অনুঃ আযানের ফাযীলাত, হাঃ ৭২৬), বায়হাক্বী (১/৪২৬)। এর সানাদে হুসাইন ইবনি ঈসা হানাফীকে হাফিয দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম ও আবু যুরআহ তার সমালোচনা করিয়াছেন। মিশকাতের তাহক্বীক্বে শায়খ আলবানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ এর সানাদ দুর্বল। সানাদের হুসাইন ইবনি ঈসা হানাফীকে জমহুর দুর্বল বলেছেন। ঈমাম বোখারি তার এ হাদিস সম্পর্কে বলেছেনঃ মুনকার। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬২ মহিলাদের ঈমামতি করা প্রসঙ্গে
৫৯১. উম্মু ওয়ারক্বাহ বিনতু নাওফাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) যখন বদরের যুদ্ধে গেলেন তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আপনার সাথে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি দিন। আমি পীড়িত-আহতদের সেবা করব। হয়তো মহান আল্লাহ আমাকেও শাহাদাতের মর্যাদা দিবেন। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তুমি তোমার ঘরেই অবস্থান কর। মহান আল্লাহ তোমাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করিবে। বর্ণনাকারী বলেন, ঐদিন থেকে উক্ত মহিলার নাম হয়ে গেল শাহীদাহ্। তিনি কুরআন মাজীদ ভাল পড়তেন। সেজন্য তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি তার ঘরে একজন মুয়াজ্জিন নিয়োগের অনুমতি দিলেন। তিনি একটি দাস ও একটি বোবা দাসীকে তার মৃত্যুর পর আযাদ করে দেয়ার চুক্তি করেছিলেন। তারা (দাস ও দাসী) দুজন রাতে উঠে তার নিকট গিয়ে তাহাঁর চাদর দিয়ে তাকে চেপে ধরে হত্যা করে উভয়ে পালিয়ে যায়। প্রত্যুষে এটাউমার (রাঃআঃ) জানতে পেরে লোকদের জানিয়ে দিলেন, এ দুটি গোলাম-বাঁদী সম্পর্কে কারো জানা থাকলে বা তাহাঁদেরকে কেউ দেখে থাকলে, তাহাঁদের যেন (ধরে) নিয়ে আসে। (তারা গ্রেফতার হলে) তাহাঁদেরকে নির্দেশ মোতাবেক শূলে চড়ানো হয়। মাদীনাহ্তে তাহাঁদের দুজনকেই সর্বপ্রথম শূলে চড়ানো হয়।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫৯২. উম্মু ওয়ারক্বাহ বিনতুআবদুল্লা ইবনিল হারিস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তবে প্রথম বর্ণনাটিই পূর্ণাঙ্গ। তাতে রয়েছেঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য তার বাড়িতে যেতেন। তিনি তার জন্য একজন মুয়াজ্জিনও নিযুক্ত করেন, যে তার জন্য (তার ঘরে) আযান দিত। তিনি তাকে (উম্মু ওয়ারাক্বাহকে) তার ঘরে মহিলাদের ঈমামতি করার নির্দেশ দেন।আবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি তার নিযুক্ত বয়োবৃদ্ধ মুয়াজ্জিনকে দেখেছি।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৩ মুক্তাদীদের অপছন্দনীয় লোকের ঈমামতি করা
৫৯৩. আবদুল্লা ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিতেনঃ তিন ব্যক্তির নামায আল্লাহর ক্ববূল করেন না। (এক) যে ব্যক্তি নিজে আগে বেড়ে ঈমামতি করে অথচ লোকেরা তাকে অপছন্দ করে। (দুই) যে ব্যক্তিদিবারে নামায আদায়ে অভ্যস্ত।দিবার হচ্ছে ওয়াক্ত শেষ হবার মুহূর্তে নামায আদায় করা। (তিন) যে ব্যক্তি কোন স্বাধীন লোককে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে। {৫৯২}
দুর্বলঃ তবে প্রথম অংশটি সহিহ, মিশকাত ১১২৩। {৫৯২} ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ নামায ক্বায়িম, অনুঃ লোকেরা অপছন্দ করা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি তাহাঁদের ঈমামত করে, হাঃ ৯৭০), বায়হাক্বী (৩/১২৮) ইফরীক্বী সূত্রে। সানাদেআবদুল্লা ইবনি উমার ইবনি গানিমকে সিক্বাহ বলেছেন ইবনি ইউনুস এবং অন্যরা। আবু হাতিম তাকে চেনেননি। এছাড়া সানাদেআবদুর রহমান ইবনি যিয়াদ ইফরীক্বী দুর্বল। সানাদেরইমরান ইবনিআবদুল মুআফিরীকে দুর্বল বলেছেন হাফিযআত-তাক্বরীব গ্রন্থে, মিশকাতের তাহক্বীক্বে রয়েছেঃ তিনি অজ্ঞাত ব্যক্তি।bহাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৪ সৎ ও অসৎ লোকের ঈমামতি
৫৯৪. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে কোন মুসলমানের ঈমামতিতে ফরয নামায আদায় করা ওয়াজিব, সে নেককার হোক বা বদকার হোক, এমনকি কবীরাহ গুনাহের কাজে জড়িত থাকলেও। {৫৯৩}
{৫৯৩} বায়হাক্বী (৩/১৩১), দারাকুতনী (২/৫৬) মাকহুল সূত্রে। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, সানাদের মাকহুল হাদিসটি আবু হুরাইরাহ্ হইতে শুনেননি। অতএব সানাদটি মুনকাতি।আওনুল মাবুদে রয়েছেঃ হাদিসটি একাধিক সানাদে বর্ণিত হয়েছে। হাফিয বলেন, বর্ণনাটি খুবই নিকৃষ্ট। উক্বাইলি বলেন, এ মাতানের কোন প্রমাণ্য সানাদ নেই। সুবুলুস সালাম গ্রন্থে রয়েছেঃ এ সম্পর্কে বহু হাদিস রহিয়াছে, যা প্রমাণ করে যে, সৎ ও অসৎ ব্যক্তির পিছনে নামায আদায় শুদ্ধ। কিন্তু এ সম্পর্কিত প্রত্যেকটি হাদিস দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৫ অন্ধ লোকের ঈমামতি করা
৫৯৫. আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) (তাবূক যুদ্ধে গমনকালে) ইবনি উম্মু মাকতূমকে (মাদীনাহ্র) শাসক নিয়োগ করেছিলেন। তিনি লোকদের ঈমামতি করতেন, অথচ তিনি অন্ধ ছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৬৬ সাক্ষাৎকারীর ঈমামতি করা
৫৯৬. বুদাইল হইতে আবুআত্বিয়্যাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মালিক ইবনিল হুয়াইরিস (রাঃআঃ) আমাদের এই নামাজের স্থানে (মাসজিদে) আসলেন। অতঃপর নামাজের ইক্বামাত হলে আমরা তাকে সামনে গিয়ে নামায আদায় করাতে বললাম। তিনি বলিলেন, তোমরা নিজেদের মধ্য হইতে একজনকে ঈমামতি করতে বল। আমি তোমাদের ঈমামতি না করার কারণ সম্পর্কে তোমাদের একটি হাদিস শোনাব। আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছিঃ কেউ কোন ক্বওমের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে সে যেন তাহাঁদের ঈমামতি না করে। বরং তাহাঁদের মধ্য হইতেই যেন কেউ ঈমামতি করে।
ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৭ মুক্তাদীদের চেয়ে উঁচু স্থানে ইমামের দাঁড়ানো
৫৯৭. হাম্মাম হইতে বর্ণিতঃ
হুযাইফাহ (রাঃআঃ) মাদায়িন নামক স্থানে একটি দোকানের উপর দাঁড়িয়ে লোকদের ঈমামতি করিলেন। এ সময় আবু মাসউদ (রাঃআঃ) তার জামা ধরে তাকে টান দিলেন। তিনি নামায শেষে বলিলেন, আপনার কি জানা নেই যে, লোকদেরকে এরূপ (উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে ঈমামতি) করা হইতে নিষেধ করা হত? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আপনি যখন আমাকে টান দেন তখনই আমার তা স্মরণ হয়।
ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৯৮. আদী ইবনি সাবিত আল-আনসারী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আমার কাছে এমন এক ব্যক্তি হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যিনি মাদায়েনেআম্মার ইবনি ইয়াসীর (রাঃআঃ) এর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, নামাজের ইক্বামাত দেয়া হলেআম্মার (রাঃআঃ) সামনে গেলেন এবং ঈমামতি করার জন্য একটি দোকানের উপর দাঁড়ালেন। তখন লোকেরা তার থেকে নিঁচু স্থানে ছিল। হুযাইফাহ (রাঃআঃ) সামনে এগিয়ে গিয়েআম্মারের দু হাত চেপে ধরলেআম্মার (রাঃআঃ) তার অনুসরণ করেন এবং হুযাইফাহ (রাঃআঃ) তাকে নিচে নামিয়ে আনেন।আম্মার নামায শেষ করলে হুযাইফাহ (রাঃআঃ) বলিলেন, তুমি কি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে বলিতে শোননি, কেউ কোন ক্বওমের ঈমামতি করলে সে যেন তাহাঁদের চেয়ে উঁচু স্থানে না দাঁড়ায়? অথবা অনুরূপই বলেছেন।আম্মার (রাঃআঃ) বলিলেন, তাই তো আপনি আমার হাত ধরা মাত্রই আমি পেছনে সরে আসলাম। {৫৯৭}
হাসান পূর্বেরটির কারণে।
হাদিস থেকে শিক্ষাঃ
১। নাফল নামায আদায়কারীর পিছনে ফারয নামায আদায় করা জায়িয। কেননা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে মুআযের (রাঃআঃ) আদায়কৃত নামাযটি ছিল ফারয আর স্বীয় সম্প্রদায়ের সাথে মুআযের (রাঃআঃ) আদায়কৃত নামায ছিল নাফল।
২। কারন বশতঃ একই দিনে এক ওয়াক্তের নামায দু বার আদায় করা জায়িয।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৮ কোন ব্যক্তি একবার জামাআতে নামায আদায়ের পর আবার ঐ নামাজে ঈমামতি করা
৫৯৯. জাবির ইবনিআবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
মুআয ইবনি জাবাল (রাঃআঃ) রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথেইশার নামায আদায়ের পর পুনরায় নিজ ক্বওমের নিকট গিয়ে ঐ নামাজেই তাহাঁদের ঈমামতি করতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৬০০. আমর ইবনি দীনার হইতে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির ইবনি আবদুল্লা (রাঃআঃ) কে বলিতে শুনেছেন, মুআয ইবনি জাবাল (রাঃআঃ) নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে নামায আদায়ের পর সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি পুনরায় নিজ ক্বওমের ঈমামতি করতেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬৯ বসা অবস্থায় ঈমামতি করা
৬০১. আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঘোড়ায় সওয়ার হন এবং ঘোড়ার পিঠ থেকে নিচে পড়ে গিয়ে তিনি ডান পাঁজরে ব্যাথা পান। ফলে তিনি কোন এক ওয়াক্তের নামায বসে আদায় করেন। আমরাও তাহাঁর পেছনে বসে নামায আদায় করলাম। নামায শেষে তিনি বললেনঃ ঈমাম এজন্যই নিয়োগ করা হয়, যেন তার অনুসরণ করা হয়। ঈমাম দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলে তোমরাও তখন দাঁড়িয়ে নামায আদায় করিবে। ঈমাম রুকু করলে তখন তোমরা ও রুকু করিবে। ঈমাম মাথা উঠালে তোমরাও তখন মাথা উঠাবে। আর ঈমাম “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বললে তোমরা বলবে, “রব্বানা লাকাল হামদ”। আর ঈমাম বসে নামায আদায় করলে তোমরা সকলেই বসে নামায আদায় করিবে।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০২. জাবির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাদীনায় একটি ঘোড়ায় সওয়ার হলে সেটি তাকে একটি খেজুর গাছের গোড়ার উপর ফেলে দেয়। এতে তিনি পায়ে আঘাত পান। আমরা তাহাঁর সাথে দেখা করতে এসেআয়েশা (রাঃআঃ) এর ঘরে তাকে বসে নামায আদায়রত পাই। বর্ণনাকারী বলেন, আমরাও তাহাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে যাই। কিন্তু তখন তিনি চুপ থাকলেন। আমরা পুনরায় তাহাঁর সাথে দেখা করতে এসে দেখি, তিনি বসা অবস্থায় ফারয নামায আদায় করছেন। আমরাও তাহাঁর পেছনে (নামায আদায়ে) দাঁড়ালাম। তিনি আমাদের প্রতি ইশারা করলে আমরা বসে পড়লাম। অতঃপর নামায শেষে তিনি বললেনঃ ঈমাম বসে নামায আদায় করলে তোমরাও বসা অবস্থায় নামায আদায় করিবে। আর ঈমাম দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলে, তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে নামায আদায় করিবে। পারস্যবাসীরা তাহাঁদের নেতাহাঁদের সামনে যেরূপ করে দাঁড়িয়ে থাকে তোমরা ঐরূপ করো না।
সহীহঃ মুসলিম ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০৩. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ঈমাম এজন্যই নিয়োগ করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। কাজেই ঈমাম তাকবীর বললে তখন তোমরাও তাকবীর বলবে। ঈমাম তাকবীর না বলা পর্যন্ত তোমরা তাকবীর বলবে না। ঈমাম রুকু করলে তোমরাও রুকু করিবে। ঈমাম রুকু না করা পর্যন্ত তোমরা রুকু করিবেনা। ঈমাম “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বললে তোমরা বলবে, “আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ”। মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছেঃ “ওয়া লাকাল হামদ”। ঈমাম সাজদাহ করলে তোমরাও সাজদাহ করিবে। ঈমাম সাজদাহ না করা পর্যন্ত তোমরা সাজদাহ করিবে না। ঈমাম দাঁড়িয়ে নামায আদায় করলে তোমরাও দাঁড়িয়ে নামায আদায় করিবে। আর বসে আদায় করলে তোমরাও বসে আদায় করিবে।
সহিহ ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন আমার সহকর্মীরা আমাকে সুলাইমানের সূত্রে “আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ” – এর বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়েছেন। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০৪. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ঈমাম এজন্যই নিয়োগ করা হয়, যেন অন্যেরা তার অনুসরন করে। অতঃপর পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। তাতে আরো রয়েছেঃ ঈমাম যখন ক্বিরআত পাঠ করিবে তখন তোমরা চুপ থাকিবে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, “ঈমাম যখন ক্বিরআত পাঠ করিবে তখন তোমরা চুপ থাকিবে।”- এ অতিরিক্ত অংশটুকু সুরক্ষিত (মাহফূয) নয়- এটা আবু খালিদের ধারণা মাত্র।
ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০৫. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর ঘরে বসা অবস্থায় নামায আদায়কালে লোকেরা তাহাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিল। তিনি তাহাঁদেরকে বসার জন্য ইশারা করিলেন। অতঃপর নামায শেষে বলিলেন, ঈমাম তো এজন্যই নিয়োগ করা হয়, যেন অন্যেরা তার অনুসরন করে। কাজেই ঈমাম রুকু করলে তোমরাও রুকু করিবে। ঈমাম মাথা ঊঠালে তোমরাও মাথা উঠাবে। আর ঈমাম বসে নামায আদায় করলে তোমরাও বসে নামায আদায় করিবে।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০৬. জাবির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রোগাক্রান্ত অবস্থায় বসে নামায আদায়কালে আমরাও তাহাঁর পেছনে নামায আদায় করি। সে সময় আবু বাকর (রাঃআঃ) লোকদের শোনাবার জন্য উচ্চস্বরে তাহাঁর তাকবীর বলছিলেন। অতঃপর (পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ) হাদিস বর্ণনা করেন।
সহীহঃ মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০৭. উসায়িদ ইবনি হুদায়ির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি লোকদের ঈমামতি করতেন। একদা তিনি অসুস্থ হলে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে দেখিতে আসেন। লোকেরা বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের ঈমাম তো অসুস্থ। তিনি বললেনঃ ঈমাম বসে নামায আদায় করলে, তোমরাও বসে আদায় করিবে।
সহিহ ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিসটি মুত্তাসিল নয়। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭০ দু ব্যক্তির একজন তার সঙ্গীর ঈমামতি করলে তারা কিরূপে দাঁড়াবে?
৬০৮. আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) উম্মু হারাম (রাঃআঃ) এর নিকট আসলেন। তারা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সামনে ঘি ও খেজুর পেশ করিলেন। তিনি বলিলেন, খেজুরের পাত্রে খেজুর আর ঘিয়ের মশকে ঘি রেখে দাও। কেননা আমি সওমরত আছি। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে আমাদেরকে নিয়ে দুরাকাআত নাফল নামায আদায় করিলেন। তখন উম্মু সুলাইম ও উম্মু হারাম (রাঃআঃ) আমাদের পেছনে দাঁড়ালেন। বর্ণনাকারী সাবিত বলেন, আমার এটাই মনে পড়ছে যে, আনাস (রাঃআঃ) বলেছেন, তিনি আমাকে তাহাঁর ডান দিকে একই বিছানায় দাঁড় করালেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০৯. আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একদিন তাহাঁর ও তাহাঁদের মধ্যকার একজন মহিলার ঈমামতি করিলেন। তিনি তাকে তাহাঁর ডান পাশে এবং ঐ মহিলাকে পেছনে দাঁড় করালেন।
সহীহঃ মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬১০. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার খালা মায়মূনাহ (রাঃআঃ) এর ঘরে রাত কাটালাম। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রাতের বেলা উঠে মশকের মুখ খুলে উযু করিলেন। তারপর সেটির মুখ বন্ধ করে নামাজে দাঁড়ালেন। আমিও তখন উঠে তাহাঁর অনুরূপ উযু করে তাহাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার ডান পাশ (বা ডান হাত) ধরে তাহাঁর পেছন দিক দিয়ে আমাকে ঘুরিয়ে এনে তাহাঁর ডান পাশে দাঁড় করালেন। এ সময় আমিও তার সাথে নামায আদায় করলাম।
সহীহঃ মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬১১. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) এ ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার মাথা অথবা মাথার চুল ধরে তাহাঁর ডান পাশে এনে আমাকে দাঁড় করেন।
হাদিস থেকে শিক্ষাঃ
১। নাফল নামায জামাআতে আদায় করা জায়িয।
২। দু জনে জামাআত হয়।
৩। দুজনের জামাআতে মুক্তাদী ইমামের ডানদিকে দাঁড়াবে।
৪। নামাযরত অবস্থায়আমালে ইয়াসির বা হালকা কাজ করা জায়িয।
৫। কেউ ঈমামতির নিয়্যাত না করলেও তার সাথে নামায আদায়ে শামিল হওয়া জায়িয আছে।
ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭১ তিনজন মুক্তাদী হলে তারা কিভাবে দাঁড়াবে?
৬১২. আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাহাঁর নানী মুলায়কাহ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর জন্য তৈরি করা খাদ্য খাওয়ার জন্য তাকে দাওয়াত করিলেন। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আহার করার পর বললেনঃ তোমরা দাঁড়াও। আমি তোমাদের নিয়ে নামায আদায় করব। আনাস বলেন, আমি উঠলাম এবং দীর্ঘদিন ব্যবহারে কালো হয়ে যাওয়া আমাদের মাদুরটির উপর পানি ঢেলে তা পরিষ্কার করলাম। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সেটির উপর দাঁড়ালেন। আমি ও ইয়াতীম (ছোট ভাই) তাহাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। আর বৃদ্ধা নানী আমাদের পেছনে দাঁড়ালেন। তিনি আমাদের নিয়ে দু রাকআত নামায আদায় করে চলে গেলেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬১৩. আব্দুর রহমান ইবনিল আসওয়াদ (রাঃআঃ) থেকে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,আলক্বামাহ ও আল-আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)আবদুল্লা (রাঃআঃ) এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ তার দরজায় বসে থাকার পর জনৈক দাসী বের হয়ে আসল। অতঃপর সে (পুনরায় ঘরে ঢুকেআবদুল্লার নিকট) তাহাঁদের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি তাহাঁদের প্রবেশের অনুমতি দিলেন। অতঃপর তিনিআলক্বামাহ এবং আল-আসওয়াদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করে বলিলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে আমি এরূপই করতে দেখেছি।
সহীহঃ মুসলিমে এর কেবল মারফু বর্ণনাটি। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭২ সালাম ফিরানোর পর মুক্তাদীদের দিকে ইমামের ঘুরে বসা
৬১৪. জাবির ইবনি ইয়াযীদ ইবনিল আসওয়াদ থেকে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর পেছনে নামায আদায় করেছি। তিনি নামায শেষে (আমাদের দিকে) ফিরে বসতেন।
ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬১৫.আল-বারাআ ইবনিআযিব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর পেছনে নামায আদায়কালে তাহাঁর ডান দিকে থাকতে পছন্দ করতাম। যাতে (নামায শেষে) রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের দিকে মুখ করে বসেন।
সহীহঃ মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৩ ইমামের নিজ জায়গাতে নাফল নামায আদায় করা
৬১৬. মুগীরাহ ইবনি শুবাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ঈমাম ফারয নামায আদায়ের স্থান হইতে সরে অন্যত্র নামায আদায় করিবে না। {৬১৬}
সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,আত্বা আল-খুরাসানী (রাঃআঃ) মুগীরাহ ইবনি শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এর সাক্ষাত পাননি। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৪ নামাজে শেষ রাকআতে সাজদাহর পর ইমামের উযু ছুটে গেলে
৬১৭. আবদুল্লা ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাজের শেষ পর্যায়ে (শেষ বৈঠকে) বসে কোনরূপ কথা বলার (সালাম ফিরানোর) পূর্বেই যদি ইমামের উযু নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ইমামের নামায পূর্ণ হয়ে যাবে এবং তার পেছনে নামায আদায়কারীদেরও নামায পূর্ণ হয়ে যাবে। {৬১৭}
{৬১৭} তিরমিযি (অধ্যয়ঃ নামায, অনুঃ তাশাহুদে উযু নষ্ট হলে, হাঃ ৪০৮, ঈমাম তিরমিযী বলেন, সানাদটি এভাবে মজবুত নয়, এর সানাদে ইযতিরাব হয়েছে), এবং দারাকুতনী (১/৩৯৭)আবদুর রহমান সূত্রে, ঈমাম দারাকুতনী বলেন,আবদুর রহমান ইবনি যিয়াদ দুর্বল। তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যাবে না। হাদিস বিশারদগণ তাকে দুর্বল বলেছেন, যাঁদের মধ্যে ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তান ও ঈমাম আহমদ ইবনি হাম্বালও রহিয়াছেন। ঈমাম খাত্তাবী বলেন, এই হাদিসটি দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬১৮ আলী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ত্বাহারাত (পবিত্রতা) হচ্ছে নামাজের চাবি, তাকবীর হচ্ছে নামাজের তাহরীম, আর হারাম হচ্ছে নামাজের তাহলীল।
হাসান সহীহঃ এটি পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে ৬১ নং এ।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৭৫ মুক্তাদীকে ইমামের অনুসরণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে
৬১৯. মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফিয়ান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমার পূর্বে তোমরা রুকু ও সাজদাহ্ করিবে না। আমি যখন তোমাদের পূর্বে রুকুতে যাব এবং তোমাদের পূর্বে (রুকু হইতে) মাথা তুলব, তখন তোমরা আমার অনুসরণ করিবে। কেননা আমি তো এখন কিছুটা ভারী (স্থুল) হয়ে গিয়েছি।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৬২০. আবু ইসহাক্ব হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমিআবদুল্লা ইবনি ইয়াযীদ (রাঃআঃ)-কে খুতবাহ দানকালে বলিতে শুনলাম, আমাদের নিকট অতীব সত্যবাদী আল-বারাআ (রাঃআঃ) হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, তাঁরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সাথে রুকু থেকে মাথা তুলে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে সাজদাহ্ করতে দেখলে তাঁরাও সাজদাহয় যেতেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২১. আল-বারাআ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) -এর সাথে নামায আদায় করতাম। নাবী (সাঃআঃ) -কে যতক্ষণ না রুকুতে দেখতাম পেতাম, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ রুকুতে যেতে পিঠ ঝুঁকাতো না।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২২. মুহারিব ইবনি দিসার হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমিআবদুল্লা ইবনি ইয়াযীদকে মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলিতে শুনলাম, তিনি বলেছেন, আমাদের নিকট আল-বারাআ (রাঃআঃ) হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যে, তাঁরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সাথে নামায আদায় করতেন। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন রুকু করতেন, তখন তারাও রুকু করতেন। তিনি যখন “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলিতেন, তখন তাঁরা দাঁড়িয়ে থেকে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন (সাজদায়) জমিনে কপাল রাখতেন, তখন তাঁরা নাবী (সাঃআঃ) -এর অনুসরণ করতেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৬ যে ব্যক্তি ইমামের পূর্বে মাথা উঠায় বা নামায় তার ব্যাপারে হুঁশিয়ারী
৬২৩. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কি ভয় হয় না, ঈমাম সাজদাহইতে থাকাবস্থায় কেউ মাথা উঠালে আল্লাহ তার মাথাকে গাধার মাথা অথবা তার আকৃতিকে গাধার আকৃতিতে রূপান্তরিত করে দিতে পারেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম হাদিস থেকে শিক্ষাঃ ঈমাম খাত্তাবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ঐরূপ আচরণকারীদের হুকুম নিয়ে মতভেদ রহিয়াছে। ইবনি উমার (রাঃআঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি ঐরূপ করিবে তার নামায হইবে না।” আহলিইলমগণ বলেনঃ সে মন্দ কাজ করিল, তবে তার নামায জায়িয হয়ে যাবে। অবশ্য বহু আহলিইলম তাকে পুনরায় সাজদাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কতিপয় আহলিইলম বলেছেনঃ সাজদাহ থেকে ইমামের মাথা উত্তোলনের পরও সে যেটুকু সময় ছেড়ে দিয়েছিল সেটুকু সময় পর্যন্ত সাজদাহয় অবস্থান করিবে। মূলতঃ নামাজে ইমামের আগে কিছু করা যে কত বড় অন্যায় উপরোক্ত আলোচনায় তাই সুস্পষ্ট। এছাড়া হাদীসে বর্ণিত শাস্তি সম্পর্কে কোন কোন বিদ্বান বলেছেনঃ উক্ত ব্যক্তিকে মূর্খ আখ্যায়িত করার জন্য গাধার সাদৃশ্য করাকে উপমা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ইমামের অনুসরণ ও নামাজের ফারযিয়্যাত সম্পর্কে সে অজ্ঞই রয়ে গেল, যা জানা কিনা তার জন্য ওয়াজিব ছিল। আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৭ ইমামের পূর্বে চলে যাওয়া
৬২৪. আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁদেরকে নামায আদায়ে উৎসাহিত করিয়াছেন এবং নামাজের পর তাহাঁর চলে যাওয়ার পূর্বে তাহাঁদের চলে যেতে নিষেধ করিয়াছেন।
সহীহঃ মুসলিমের উৎসাহিত করণের কথাটি বাদে। ইমামতি করার যোগ্যতা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply