সারা বছর রোজার সময় – কোন কোন দিবসে রোজা রাখতে হয়

সারা বছর রোজার সময় – কোন কোন দিবসে রোজা রাখতে হয়

সারা বছর রোজার সময় – কোন কোন দিবসে রোজা রাখতে হয় >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৭, অধ্যায়ঃ (৪১-৫৫)=১৫টি

৭/২৮. অধ্যায়ঃ সারা বছর রোযা রাখা।
৭/২৯. অধ্যায়ঃ প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখা
৭/৩০. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর রোযা।
৭/৩১. অধ্যায়ঃ দাঊদ [আ.] এর রোযা
৭/৩২. অধ্যায়ঃ নূহ আলাইহিস সালামের রোযা।
৭/৩৩. অধ্যায়ঃ শাওয়াল মাসের ছয় দিনের রোযা।
৭/৩৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহ্‌র রাস্তায় এক দিন রোযা রাখার ফযিলত ।
৭/৩৫. অধ্যায়ঃ আইয়্যামে তাশরীকে রোযা রাখা নিষেধ
৭/৩৬. অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিতর ও ইদুল আযহার দিন রোযা রাখা নিষেধ ।
৭/৩৭. অধ্যায়ঃ জুমুআর দিন রোযা রাখা।
৭/৩৮. অধ্যায়ঃ শনিবারের রোযা
৭/৩৯. অধ্যায়ঃ দশ দিনের রোযা।
৭/৪০. অধ্যায়ঃ আরাফাত দিবসের রোযা।
৭/৪১. অধ্যায়ঃ আশূরার দিনের রোযা
৭/৪২. অধ্যায়ঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখা।
৭/৪৩. অধ্যায়ঃ হারাম মাসসমূহের রোযা
৭/৪৪. অধ্যায়ঃ রোযা হলো দেহের যাকাত ।
৭/৪৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতাহার করালো তাহার সওয়াব ।
৭/৪৬. অধ্যায়ঃ রোযাদারের সামনে কেউ পানাহার করিলে।
৭/৪৭. অধ্যায়ঃ রোযাদারকে আহার গ্রহণের জন্য আহ্বান করা হলে।
৭/৪৮. অধ্যায়ঃ রোযাদারের দুআ প্রত্যাখ্যাত হয় না [কবুল হয়]।
৭/৪৯. অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে আহার করা।
৭/৫০. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি অবহেলা করে রমাযানের রোযা অনাদায় রেখে মারা গেলো।
৭/৫১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মানতের রোযা যিম্মায় রেখে মারা গেলো।
৭/৫২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রমজান মাসে ইসলাম গ্রহণ করিল।
৭/৫৩. অধ্যায়ঃ যে মহিলা তাহার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত [নফল] রোযা রাখে।
৭/৫৪. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের মেহমান হলে সে তাহাদের সম্মতি ব্যতীত [নফল] রোযা রাখবে না।
৭/৫৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি বলে, কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল রোযাদারের সমতুল্য।

৭/২৮. অধ্যায়ঃ সারা বছর রোযা রাখা।

১৭০৫ আবদুল্লাহ্‌ ইবনিশ শিখখীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সর্বদা রোযা রাখে সে রোযাও রাখেনি, আবার রোযা ভঙ্গও করেনি। {১৭০৫}

{১৭০৫} নাসাঈ ২৩৮০, ২৩৮১, আহমাদ ১৫৮৬৯, ১৫৮৭৩, ১৫৮৮৮, দারেমী ১৭৪৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭০৬ আবদুল্লাহ্‌ বিন আম্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সর্বদা রোযা রাখে, সে রোযাই রাখেনি। {১৭০৬}

{১৭০৬} মুসলিম ১১৫৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/২৯. অধ্যায়ঃ প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখা

১৭০৭ মিনহাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওমুল বীদ অর্থাৎ প্রতি মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনের তারিখে রোযা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং বলিতেন, তা সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য। {১৭০৭}

{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}

১/১৭০৭[১]. কাতাদাহ বিন মালহান আল-কায়সী হইতে তিনি নবী [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি মাজাহ বলেন, এক্ষেত্রে শুবাহ ভুল করিয়াছেন এবং হাম্মাম ঠিক করিয়াছেন। {১৭০৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ লিগাইরিহি{১৭০৭} নাসাঈ ২৪৩০, ২৪৩১, ২৪৩২, ৫৭৫৮, বায়হাকী ৪/২৯৬, সহীহ, আবু দাউদ ২১১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ, লিগাইরিহি।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

১৭০৮ আবু যাহার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখলো, সে যেন সারা বছর রোযা রাখলো। আল্লাহ্‌ তাআলা তাহাঁর কিতাবে এর সমর্থনে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন

مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا

“কেউ কোন সৎকাজ করিলে, সে তাহার দশ গুণ পাবে” [সূরা আনআমঃ ১৬০]।

অর্থাৎ প্রতিটি দিন দশ দিনের সমান। {১৭০৮}

{১৭০৮} নাসাঈ ২৪১০, ইরওয়াহ ৪/১০২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭০৯ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখতেন, রাবী বলেন, আমি বললাম, মাসের কোন্‌ কোন্‌ দিন? তিনি বলেন, তিনি যে কোন দিন রোযা রাখতে ইতস্তত করিতেন না। {১৭০৯}

{১৭০৯} মুসলিম ১১৬০, তিরমিজি ৭৬৩, আবু দাউদ ২৪৫৩, সহীহ আবু দাউদ ২১১৭, মুখতাসার শামাইল ২৬০, মুসলিম। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩০. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর রোযা।

১৭১০ আবু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আয়িশা [রাদি.] এর নিকট নবী [সাঃআঃ]-এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তিনি একাধারে রোযা রেখেই যেতেন। এমনকি আমরা বলতাম, তিনি রোযা রেখেই যাবেন। আবার তিনি একাধারে রোযাহীন অবস্থায় কাটাতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি রোযাহীন অবস্থায়ই থাকিবেন। শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে আমি তাহাঁকে এত অধিক রোযা রাখতে দেখিনি। তিনি প্রায় পুরা শাবান মাসই রোযা রাখতেন। তিনি শাবানের অল্প কিছুদিন বাদ দিয়ে পুরা মাসই রোযা রাখতেন। {১৭১০}

{১৭১০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৬৯, মুসলিম ৭৪৬, আবু দাউদ ১৩৪২, ২৪৩৪, আহমাদ ২৪৭৮৯, ২৫৫২২, ২৫৭৭৮, মুয়াত্তা মালিক ৬৮৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭১১ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একাধারে রোযা রেখে যেতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি আর রোযা ভঙ্গ করবেন না। আবার কখনো তিনি একাধারে রোযাহীন থাকতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি আর রোযা রাখবেন না। মাদীনায় আসার পর থেকে তিনি রমজান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে সম্পূর্ণ মাস রোযা রাখেননি। {১৭১১}

{১৭১১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৭১, মুসলিম ১১৫৭, নাসাঈ ২৩৪৬, আবু দাউদ ২৪৩০, আহমাদ ১৯৯৯, ২০৪৭, ২১৫২, ২৯৪১, ৩০০২, দারেমী ১৭৪৩, সহীহ আবু দাউদ ২১০০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩১. অধ্যায়ঃ দাঊদ [আ.] এর রোযা

১৭১২ আবদুল্লাহ্‌ বিন আম্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ রোযাসমূহের মধ্যে দাঊদ [আলাইহিস সালাম] এর রোযা আল্লহ্‌র নিকট অধিক প্রিয়। তিনি এক দিন রোযা রাখতেন এবং পরবর্তী দিন রোযা রাখতেন না। আল্লাহ্‌র নিকট দাঊদ [আলাইহিস সালাম] এর সলাত অধিক প্রিয়। তিনি রাতের অর্ধাংশ ঘুমাতেন, এক-তৃতীয়াংশ সলাতে কাটাতেন এবং আবার এক-ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। {১৭১২}

{১৭১২} ইরওয়াহ ৪৫১, ৯৪৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭১৩ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হে আল্লাহ্‌র রসূল! যে ব্যক্তি দু দিন রোযা রাখে এবং এক দিন রাখে না, তাহার সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? তিনি বলেন, কেউ কি তাহার সামর্থ্য রাখে? উমার [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যে ব্যক্তি এক দিন রোযা রাখে এবং এক দিন রাখে না? তিনি বলেন, সেটা হলো দাঊদ [আলাইহিস সালাম] -এর রোযা। উমার [রাদি.] বলিলেন, যে ব্যক্তি একদিন রোযা রাখে এবং দু দিন রাখে না? তিনি বলেন, আমি পছন্দ করি যে, আমাকে এ ধরনের রোযা রাখার সামর্থ্য দান করা হোক। {১৭১৩}

{১৭১৩} মুসলিম ১১৬২, আবু দাউদ ২৪২৫, আহমাদ ২২০২৪, ২২১৪৪, সহীহ আবু দাউদ ২০৯৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩২. অধ্যায়ঃ নূহ আলাইহিস সালামের রোযা।

১৭১৪ আবদুল্লাহ্‌ বিন আম্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ নূহ [আলাইহিস সালাম] ঈদুল ফিতরের দিন ও ঈদুল আযহার দিন ব্যতীত সারা বছর রোযা রাখতেন। {১৭১৪}

{১৭১৪} যঈফাহ ৪৫৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন, কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। আবুল কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তাহার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো তবে আমি তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৩৩. অধ্যায়ঃ শাওয়াল মাসের ছয় দিনের রোযা।

১৭১৫ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মুক্ত দাস সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পর ছয় দিন রোযা রাখলো, তা পূর্ণ বছর রোযা রাখার সমতুল্য।

مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا

“কেউ কোন সৎকাজ করিলে, সে তাহার দশ গুণ পাবে” [সূরা আনআমঃ ১৬০]। {১৭১৫}

{১৭১৫} আহমাদ ২১৯০৬, দারেমী ১৭৫৫, ইরওয়াহ ৪/১০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭১৬ আবু আয়্যূব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোযা রাখার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখবে, তা যেন সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য। {১৭১৬}

{১৭১৬} মুসলিম ১১৬৪, তিরমিজি ৭৫৯, আবু দাউদ ২৪৩৩, আহমাদ ২৩০২২, ২৩০, ইরওয়াহ ৯৫০, দারেমী ১৭৫৪, বায়হাকী ৪/৩০২, সহীহ আবু দাউদ ২১০২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সাদ বিন সাঈদ সম্পর্কে ঈমাম তিরমিজি বলেন, তাহার হিফযের পূর্বে হাদিস বর্ণনার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২২০৮, ১০/১৬২ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৭/৩৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহ্‌র রাস্তায় এক দিন রোযা রাখার ফযিলত ।

১৭১৭ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র রাস্তায় একদিন রোযা রাখে, আল্লাহ্‌ ঐ দিনের বিনিময়ে জাহান্নামকে তাহার মুখমন্ডল থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে দেন। {১৭১৭}

{১৭১৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৮৪০, মুসলিম ১১৫৩, তিরমিজি ১৬২৩, নাসাঈ ২২৪৫, ২২৪৭, ২২৪৮, ২২৩৯, ২২৫০, ২২৫১, ২২৫২, ২২৫৩,আহমাদ ১০৮২৬, ১১০১৪, ১১১৬৬, ১১৩৮১, দারেমী ২৩৯৯, বায়হাকী ৪/২৮৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তাহার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭১৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র রাস্তায় একদিন রোযা রাখে, আল্লাহ্‌ তাহার বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে তাহার মুখমন্ডলকে সত্তর বছরের দূরত্বে রাখেন। {১৭১৮}

{১৭১৮} নাসাঈ ২২৪৪, আহমাদ ৭৯৩০, ৮৪৭৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন আবদুল আযীয আল-লায়সী সম্পর্কে ঈমাম বুখারী তাহাকে মুনকার বলেছেন। জাওযুজানী বলেন, তিনি যুহরী থেকে মুনকার ভাবে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আহমদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল ও শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৩৯৫, ১৫/২৩৮ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আবদুল্লাহ বিন আবদুল আযীয আল-লায়সী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৩৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২৫ টি অধিক দুর্বল, ৭১ টি দুর্বল, ৫৩ টি হাসান, ৮৮ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ বুখারী ২৮৪০, মুসলিম, ১১৫৪, ১১৫৫, তিরমিজি ১৬২২, ১৬২৩, ১৬২৪, দারেমী ২৩৯৯, আহমাদ ৭৯৩০, ৮৪৭৫, ১০৪২৭, ১০৮২৬, ১১০১৪, ১১১৬৬, ১১৩৮১, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৯৬৮৩, ৯৬৮৪, ৯৬৮৫, মুজামুল আওসাত ১৬০, ২১৭৩, ৩১১৮, ৩২৪৩, ৩২৪৯, ৩৫৭৪, ৪৬৬০ ইত্যাদি।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩৫. অধ্যায়ঃ আইয়্যামে তাশরীকে রোযা রাখা নিষেধ

১৭১৯ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মিনার দিনসমূহ হলো পানাহারের দিন। {১৭১৯}

{১৭১৯} ইরওয়াহ ৪/১২৯, সহীহাহ ১২৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু আমর বিন মুহাম্মাদ বিন আমর বিন হুরায়স সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫১৩, ২৬/২১২ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৭২০ বিশ্‌র বিন সুহায়ম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আইয়্যামে তাশরীকে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, মুসলিম ব্যক্তি ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করিবে না এবং এই দিনসমূহ হচ্ছে পানাহারের দিন। {১৭২০}

{১৭২০} নাসাঈ ৪৯৯৪, আহমাদ ১৫০০২, ১৮৪৭৬, দারেমী ১৭৬৬, ইরওয়াহ ৪/১২৮, ১২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩৬. অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিতর ও ইদুল আযহার দিন রোযা রাখা নিষেধ ।

১৭২১ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতর ও ইদুল আযহার দিন রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৭২১}

{১৭২১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১১৯৭, ১৮৬৪, ১৯৯৬, মুসলিম ৮২৭, তিরমিজি ৭৭২, আবু দাউদ ২৪১৭, আহমাদ ২৭৯২০, ২৭৯২৪, ১০৯৫৫, ২৭৬৩৬, ১১১১৩, ১১২৩৭, ১১২৪৩, ১১৩২৫, ১১৩৯৫, ১১৫০০, দারেমী ১৭৫৩, ইরওয়াহ ৯৬২, ইরওয়া ৯৬২, সহীহ আবু দাউদ ২০৮৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭২২ আবু উবায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] এর সাথে ঈদের দিন উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুতবাহ্‌র আগে সলাত পড়েন, অতঃপর বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা এ দু দিন রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। কেননা ঈদুল ফিতরের দিন হচ্ছে তোমাদের রোযা ভঙ্গের দিন এবং ঈদুল আযহার দিন তোমরা তোমাদের কুরবানির গোশত খাবে। {১৭২২}

{১৭২২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৯০, ৫৫৭৩, মুসলিম ১১৩৭, তিরমিজি ৭৭১, আবু দাউদ ২৪১৬, আহমাদ ২৮৪, মুয়াত্তা মালিক ৪৩১, বায়হাকী ৫/১১৭, ইরওয়াহ ৩/১২৭-১২৮, সহীহ আবু দাউদ ২০৮৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩৭. অধ্যায়ঃ জুমুআর দিন রোযা রাখা।

১৭২৩ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআর আগের দিন বা পরের দিনসহ রোযা রাখা ব্যতীত, কেবলমাত্র জুমুআর দিন রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৭২৩}

{১৭২৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৮৫, মুসলিম ১১৪৪, তিরমিজি ৭৪৩, আবু দাউদ ২৪২০, আহমাদ ১৭২৪৯০৩১, ৯১৮১, ৯৫৮৭, ১০০৫২, ১০৪২১৭২৫৫, ১০৫০৯, ইরওয়াহ ৯৫৯, ৯৮১, সহীহাহ ০৮১, ১০২২, সহীহ আবু দাউদ ২০৯১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭২৪ মুহাম্মাদ বিন আব্বাদ বিন জাফর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আল্লাহ্‌র ঘর তাওয়াফকালে জাবির বিন আবদুল্লাহ্‌ [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী [সাঃআঃ] কি জুমুআর দিন রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন? তিনি বলেন, হাঁ, এই ঘরের প্রভুর শপথ! {১৭২৪}

{১৭২৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭২৬, ১৯৮৪, মুসলিম ১১৪৩, আহমাদ ১৩৭৪০, ১৩৯৪৩, দারেমী ১৭৪৮, সহীহাহ ৩/১১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭২৫ আবদুল্লাহ্‌ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জুমুআর দিন খুব কমই রোযাহীন দেখেছি। {১৭২৫}

{১৭২৫} তিরমিজি ৭৪২, সহীহ আবু দাউদ ৩১১৬, তালীক ইবনি খুযাইমাহ ২১২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম বিন বাহদালাহ সম্পর্কে আবু বকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি হাফিয ছিলেন না। তাহার হাদিস কেউ বর্জন করিয়াছেন এমন কাউকে পায়নি। আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল ছাড়া তাহার মাঝে অন্য কোন দোষ পাইনি। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। ইসমাইল বিন উলাইয়্যাহ বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩০০২, ১৩/৪৭৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৭/৩৮. অধ্যায়ঃ শনিবারের রোযা

১৭২৬ আবদুল্লাহ্‌ বিন বুসর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের উপর যে রোযা ফরয করা হইয়াছে সেই রোযা ব্যতীত তোমরা শনিবার রোযা রাখবে না। তোমাদের কেউ আঙ্গুরের ডাল বা গাছের ছাল ব্যতীত কিছু না পেলে সে যেন তা চুষে [শনিবারের] রোযা ভঙ্গ করে।

১/১৭২৬[১]. আস-সমা বিনতু বুসর [রাদি.], রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন- বলে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেন। {১৭২৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{১৭২৬} তিরমিজি ৭৪৪, আবু দাউদ ২৪২১, আহমাদ ২৬৫৩৪, দারেমী ১৭৪৯, ইরওয়াহ ৯৬০, তালীক ইবনি খুযাইমাহ ৩১৬৪, সহীহ আবু দাউদ ২০৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৩৯. অধ্যায়ঃ দশ দিনের রোযা।

১৭২৭ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্‌র নিকট [যুলহিজ্জার] দশ দিনের সৎকাজের চাইতে অধিক পছন্দনীয় সৎকাজ আর নেই। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহ্‌র পথে জিহাদও নয় কি? তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র পথে জিহাদও নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি তাহার জান-মালসহ আল্লাহ্‌র পথে বের হয়ে তাহার কোন কিছু নিয়ে আর ফিরে আসে না [তাহার মর্যাদা অনেক]। {১৭২৭}

{১৭২৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৯৬৯, তিরমিজি ৭৫৭, আবু দাউদ ২৪৩৮, আহমাদ ১৯৬৯, ৩১২৯, দারেমী ১৭৭৩, ইরওয়াহ ৯৫৩, সহীহ আবু দাউদ ২১০৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭২৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [যুলহিজ্জার] দশ দিনের ইবাদাতের চেয়ে দুনিয়ার অন্য কোন দিনের ইবাদাত মহান আল্লাহ্‌র নিকট অধিক প্রিয় নয়। এই কদিনের মধ্যকার এক এক দিনের রোযা এক বছর রোযা রাখার সমান এবং তাহার এক একটি রাত কদরের রাতের সমান। {১৭২৮}

{১৭২৮} তিরমিজি ৭৫৮, মিশকাত ১৪৭১, যঈফাহ ৫১৪২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মাসউদ বিন ওয়াসীল সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি যাচাই বাছাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ঈমাম দারাকুতনী, সুলায়মান বিন দাউদ আত-তায়লাসী ও তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক তাহারা সকলে বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯১৪, ২৪/৪৮১ নং পৃষ্ঠা] ২. নাহহাস বিন কাহম সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান তাহার স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করিয়াছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ঈমাম নাসাঈ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি আদী বলেন, তিনি সিকাহ রাবী থেকে এককভাবে বর্ণনা করিলে তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৪৮২, ৩০/২৮ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৭২৯ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে [যুলহিজ্জার] দশ দিন কখনো রোযা রাখতে দেখিনি। {১৭২৯}

{১৭২৯} মুসলিম ১১৭৬, তিরমিজি ৭৫৬, আবু দাউদ ২৪৩৯, সহীহ আবু দাউদ ২১০৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৪০. অধ্যায়ঃ আরাফাত দিবসের রোযা।

১৭৩০ আবু কাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি আল্লাহ্‌র নিকট আরাফাত দিবসের রোযাহার এই সওয়াব আশা করি যে, তিনি তাহার বিনিময়ে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। {১৭৩০}

{১৭৩০} তিরমিজি ৭৪৯, আহমাদ ২২০২৪, ইরওয়াহ ৯৫২, আবু দাউদ ২০৯৬।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩১ কাতাদাহ্‌ বিন নুমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আরাফাত দিবসে রোযা রাখলো, তাহার আগের বছরের ও পরের বছরের গুনাহ মাফ করা হলো। {১৭৩১}

{১৭৩১} ইরওয়াহ ৪/১০৯, ১১০, যঈফাহ ৫/২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসহাক বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আলী আল-জুরজানী বলেন, তাহার সানাদ বা মাতান কোনটিরই কেউ অনুসরণ করেনি। আবু বকর আল বুরকানী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মাতরুক বা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু বকর আল বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু ইয়ালা আল খালীলী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৭, ২/৪৪৬ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইসহাক বিন আবদুল্লাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৪০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১ টি জাল, ৩১ টি অধিক দুর্বল, ৮২ টি দুর্বল, ৬৫ টি হাসান, ৬১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ৭৪৯, ৭৫২, আহমাদ ২২০১০, ২২০২৩, ২২০৮, ২২০১৯, ২২১১৩, ২৪৪৪৮, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৭৮১৬, ৭৮২৭, ৭৮৩১, ৭৮৩২, মুজামুল আওসাত ২০৬৫, ৪৮৭৫, ৫৬৪৬ ইত্যাদি।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩২ ইকরিমাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আবু হুরাইরা [রাদি.] এর বাড়িতে গিয়ে তাহাকে আরাফাতের ময়দানে আরাফাত দিবসে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। আবু হুরাইরা [রাদি.] বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরাফাতের ময়দানে আরাফাত দিবসে রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৭৩২}

{১৭৩২} আবু দাউদ ২৪৪০, তালীকুর রগীব ২/৭৭ জইফ আবু দাউদ ৪২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. হাওশাব বিন আকীল সম্পর্কে হাকিম একে বুখারীর শর্তে সহীহ বলেছেন, যাহাবী তাতে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু এটা তাহাদের অশোভনীয় ধারানা মাত্র। কেননা সানাদে হাওশাব ইবনি আকীল এবং তাহার শায়খ মাহদী আল-আবাদী হইতে ঈমাম বুখারী বর্ণনা করেননি। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৫৭১, ৭/৪৬১ নং পৃষ্ঠা] ২. মাহদী আল-আবদী সম্পর্কে ইবনি হাযম তাহার মুহাল্লা গ্রন্থে বলেন, তিনি অজ্ঞাত। ঈমাম যাহাবী আল-মীযান গ্রন্থে তা সমর্থন করিয়াছেন। আবু হাতিম ও ইবনি মাঈনও তাই বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬২২০, ২৮/৫৮৬ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৪১. অধ্যায়ঃ আশূরার দিনের রোযা

১৭৩৩ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আশূরার দিন রোযা রাখতেন এবং এ দিন রোযা রাখতে নির্দেশ দিতেন। {১৭৩৩}

{১৭৩৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৯২, ১৮৯৩, ২০০১, ২০০২, ৩৮৩১, ৪৫০২,৪৫০৪ মুসলিম ১১২৫, তিরমিজি ৭৫৩, আবু দাউদ ২৪৪২, আহমাদ ২৩৪৯১, ২৩৭১০, ২৪৭৬৬, ২৫৫৩৭, ২৫৫৭৬, মুয়াত্তা মালিক ৬৬৫, দারেমী ১৭২০, ১৭৬৩, সহীহ আবু দাউদ ২১১০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩৪ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] [হিজরত করে] মদিনায় পৌঁছে ইহূদীদের রোযা অবস্থায় দেখিতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ এটা কী? তাহারা বলল, এ দিনে আল্লাহ্‌ মূসা [আলাইহিস সালাম]-কে মুক্তি দেন এবং ফিরাউনকে ডুবিয়ে মারেন। তাই মূসা [আলাইহিস সালাম] এ দিন শোকরানা রোযা রাখেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমরা মূসা [আলাইহিস সালাম]-এর [অনুসরণের] ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। তাহারপর তিনি এদিনে রোযা রাখেন এবং অন্যদেরও রোযা রাখার নির্দেশ দেন। {১৭৩৪}

{১৭৩৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০০৪, ৩৩৯৭, ৩৯৪৩, ৪৬৮০, ৪৭৩৭, মুসলিম ১১৩০, ১১৩৪, আবু দাউদ ২৪৪৪, ২৪৪৫, আহমাদ ২৬৩৯, ২৮২৭, ৩১০২,৩১৫৪, ৫১৫৪, দারেমী ১৭৫৯, সহীহ আবু দাউদ ২১২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩৫ মুহাম্মাদ বিন সায়ফী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আশূরার দিন আমাদের জিজ্ঞেস করেনঃ তোমাদের কেউ আজ আহার করেছ কি? আমরা বললাম, আমাদের কতক আহার করেছে এবং কতক আহার করেনি। তিনি বলেন, তোমরা যারা আহার করেছো এবং যারা আহার করোনি, তোমাদের অবশিষ্ট দিনটি রোযা রাখো। আর তোমরা মাদীনাহ্‌র পার্শ্ববর্তীদের নিকট লোক পাঠিয়ে দাও, তাহারাও যেন দিনটির অবশিষ্টাংশ রোযা রাখে। {১৭৩৫}

{১৭৩৫} আহমাদ ১৮৯৫৭, সহীহাহ ২৬২৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩৬ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি আগামী বছর বেঁচে থাকলে অবশ্যই [মুহাররমের] নবম তারিখে রোযা রাখবো। ইবনি আবু যিব-এর বর্ণনায় আরো আছেঃ তাহাঁর থেকে আশূরার রোযা চলে যাওয়ার আশঙ্কায় [তিনি এ কথা বলেন]। {১৭৩৬}

{১৭৩৬} মুসলিম ১১৩৪, আবু দাউদ ২৪৪৫, আহমাদ ২১০৭, হীহ আবু দাউদ ২১১৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩৭ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আশূরার দিন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, জাহিলী যুগে লোকেরা এ দিন রোযা রাখতো। অতএব তোমাদের কেউ এ দিন রোযা রাখতে আগ্রহী হলে রাখতে পারে এবং কেউ অনাগ্রহী হলে নাও রাখতে পারে। {১৭৩৭}

{১৭৩৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০০০, ৪৫০১, মুসলিম ১১২৬, আবু দাউদ ২৪৪৩, আহমাদ ৫১৮১, ৬২৫৬, দারেমী ১৭৬২, বায়হাকী ৪/১৩৯, সহীহ আবু দাউদ ২১১১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৩৮ আবু কাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আশূরার দিনের রোযাহার দ্বারা আমি আল্লাহ্‌র নিকট বিগত বছরের গুনাহ মাফের আশা রাখি। {১৭৩৮}

{১৭৩৮} তিরমিজি ৭৫২, আবু দাউদ ২৪২৫, আহমাদ ২২০৮২, ইরওয়াহ ৪/১০৯, সহীহ আবু দাউদ ২০৯৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৪২. অধ্যায়ঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখা।

১৭৩৯ রবীআহ ইবনিল গায [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আয়িশা [রাদি.] এর নিকট রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযাহার প্রতি খুবই খেয়াল রাখতেন। {১৭৩৯}

{১৭৩৯} তিরমিজি ৭৪৫, নাসাঈ ২১৮৬, ২৩৬০, ২৩৬১, ২৩৬২, ২৩৬৩, ২৩৬৪, ইরওয়াহ ৪/১০৫-১০৬, তালাক ইবনি খুযাইমাহ ২১৭, মুখতাসার, শামায়িল ২৫৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৪০ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন। তাহাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রেখে থাকেন। তিনি বলেন, আল্লাহ্‌ তাআলা সোমবার ও বৃহস্পতিবার এ দু দিন পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী দু ব্যক্তি ব্যতীত প্রত্যেক মুসলমানকে ক্ষমা করেন। তিনি [ফেরেশতাহাদের] বলেন, তাহারা সন্ধিতে আবদ্ধ হওয়া অবধি তাহাদের ত্যাগ করো। {১৭৪০}

{১৭৪০} তিরমিজি ৭৪৭, তালীকুর রগীব ৩২/৮০-৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তাহার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৪৩. অধ্যায়ঃ হারাম মাসসমূহের রোযা

১৭৪১ ইসমু মুবহাম [বা নাম অপরিচিত] হইতে বর্ণীতঃ

আমি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহ্‌র নবী [সাঃআঃ]! আমি সেই ব্যক্তি, গত বছরও আপনার নিকট এসেছিলাম। তিনি {রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]} বলেন, কী ব্যাপার, আমি তোমার শরীর দুর্বল দেখছি কেন? তিনি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি দিনে আহার করি না, রাতেই আহার করি। তিনি বলেন, নিজের দেহকে শাস্তি দিতে কে তোমাকে নির্দেশ দিয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি অধিক শক্তিশালী। তিনি বলেন, তুমি ধৈর্যের মাসের রোযা রাখো এবং এরপর [প্রতি মাসে] এক দিন রোযা রাখো। আমি বললাম, আমি তো অধিক শক্তিশালী। তিনি বলেন, তুমি ধৈর্যের মাসের রোযা রাখো এবং প্রতি মাসে দু দিন রোযা রাখো। আমি বললাম, আমি এর অধিক শক্তি রাখি। তিনি বলেন, তুমি ধৈর্যের মাসের রোযা রাখো, অতঃপর প্রতিমাসে তিন দিন এবং হারাম মাসসমূহে রোযা রাখো। {১৭৪১}

{১৭৪১} আবু দাউদ ২৪২৮, জইফ আবু দাউদ ৪১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। এর সানাদ ভাল নয়। কেননা এর সানাদে ইদতিরাব হইয়াছে। যা হাফিয আত-তাহযীব গ্রন্থে এবং তাহার পূর্বে মানযিরী মুখতাসার সুন্সান গ্রন্থে উল্লেখ করিয়াছেন। অতঃপর তিনি বলেছেন, এর সানাদে এরূপ মতভেদ সৃষ্টি হইয়াছে যা আপনি প্রত্যক্ষ করিলেন। আর এ জন্যই আমাদের কতিপয় শায়খ এটি দুর্বল হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করিয়াছেন। এতে আরেকটি দোষ আছে তা হল জাহালাত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৭৪২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করিল, রমজান মাসের পর কোন্‌ রোযা উত্তম? তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র সেই মাস যাকে তোমরা মুহাররম বলে থাকো। {১৭৪২}

{১৭৪২} মুসলিম ১১৬৩, তিরমিজি ৪৩৮, ৭৪০, আবু দাউদ ২৪২৯, আহমাদ ৮৩০২, ৮৩২৯, ১০৫৩২, দারেমী ১৭৫৭, ইরওওয়া ৯৫১, সহীহ আরবী দাউদ ২০৯৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৪৩ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] রজব মাসে রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৭৪৩}

{১৭৪৩} যঈফাহ ৪০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি দাউদ বিন আতা সম্পর্কে ঈমাম বুখারী মুনকার বলেছেন। আবু হাতিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ঈমাম নাসাঈ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। আবু বাকর আল-বায়হাকী ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৭৭৫, ৮/৪১৯ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

১৭৪৪ উসামাহ বিন যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উসামাহ বিন যায়দ [রাদি.] হারাম মাসসমূহে রোযা রাখতেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেন, তুমি শাওয়াল মাসে রোযা পালন করো। অতঃপর তিনি হারাম মাসসমূহের রোযা পালন করা ছেড়ে দেন এবং আমরণ শাওয়াল মাসে রোযা পালন করেন। {১৭৪৪}

{১৭৪৪} তালীকুর রগীব ২/৮১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযীয আদ-দারওয়ারদী সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজালী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি যখন তাহার কিতাব থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করেন তখন তা সহীহ কিন্তু যখন মানুষের কিতাব থেকে হাদিস বর্ণনা করিতেন তখন তিনি সন্দেহ করিতেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৪৪. অধ্যায়ঃ রোযা হলো দেহের যাকাত ।

১৭৪৫ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতিটি জিনিসের যাকাত আছে। রোযা হলো শরীরের যাকাত। মুহরিযের হাদীসে আরো আছে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, রোযা হলো ধৈর্যের অর্ধাংশ। {১৭৪৫}

{১৭৪৫} মিশকাত ২০৭২, যঈফাহ ১৩২৯, ৩৮১১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন উবায়দাহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হুজ্জাহ নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার থেকে হাদিস বর্ণনা করা উচিত নয়। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬২৮০, ২৯/১০৪ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৪৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতাহার করালো তাহার সওয়াব ।

১৭৪৬ যায়দ বিন খালিদ আল-জুহানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতাহার করায়, তাহার জন্য রয়েছে ইফতাহারকারীদের সমান সওয়াব এবং এজন্য তাহাদের সওয়াব থেকে কিছুই হ্রাসপ্রাপ্ত হইবে না। {১৭৪৬}

{১৭৪৬} তিরমিজি ৮০৭, আহমাদ ১৬৫৮২, ২১১৬৮, দারেমী ১৭০২, রওয ৩২২, তালীকুর রগীব ২/৯৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু লায়লা সম্পর্কে ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, আমি তাহার চেয়ে দুর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন ব্যাক্তি আর কাউকে দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল। ইবনি মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪০৬, ২৫/৬২২ নং পৃষ্ঠা] ২. হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়, অন্যত্রে তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ তবে ইবনি আবু লায়লা ও হাজ্জাজ এর রেওয়য়াতে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৮৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ৮ টি অধিক দুর্বল, ২৭ টি দুর্বল, ৪৭ টি হাসান, ১০১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বুখারী ৪৮৪৩, মুসলিম ১৮৯৬, ১৮৯৭, তিরমিজি ৮০৭, ১৬২৮, ১৬২৯, ১৬৩১, আবু দাউদ ২৫০৯, দারেমী ১৭০২, ২৪১৯, আহমাদ ১৬৫৯১, ১৬৫৯৬, ১৬৫৯৭, ১৬৬০৮, ২১১৬৭, ২১১৭২, ২১৫৩২, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৭৯০৫, মুজামুল আওসাত ৫৩২, ১০৪৮, ৭১৩৬, ৭৭০০, ৭৮৮৩, ৮০৩৮, ৮৪৩৮ ইত্যাদি।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৪৭ আবদুল্লাহ্‌ ইবনিয-যুবায়র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাদ বিন মুআয [রাদি.]-এর এখানে ইফতাহার করেন, অতঃপর বলেন, তোমাদের এখানে রোযাদারগণ ইফতাহার করিয়াছেন, নেককারগণ তোমাদের খাদ্যদ্রব্য আহার করিয়াছেন এবং ফেরেশতাগণ তোমাদের জন্য রহমাত কামনা করিয়াছেন। {১৭৪৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ ইফতাহার করার কথা ব্যতীত সহীহ।

{১৭৪৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আদাবুয যিফাক ৮৫৮৬। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন আমর সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তিনি সালিহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি কখনো হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি আদী বলেন, তাহার হাদিস বর্ণনায় সমস্যা নেই। ঈমাম নাসাঈ তাহাঁকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫১৩, ২৬/২৬২ নং পৃষ্ঠা] ২. মুসআব বিন সাবিত সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বাল বলেন, তাহাকে আমি দুর্বল হিসেবেই জানি। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাঁকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাবী বলেন, তিনি সিকাহ নন তবে সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি গায়ির সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৮০, ২৮/১৮ নং পৃষ্ঠা]। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৪৬. অধ্যায়ঃ রোযাদারের সামনে কেউ পানাহার করিলে।

৭৪৮ উম্মু উমারাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের এখানে আসলে আমরা তাহাঁর সামনে খাদ্যসামগ্রী পরিবেশন করলাম। তাহাঁর সাথের কতক লোক ছিল রোযাদার। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ রোযাদারের সামনে আহার করা হলে ফেরেশতাগণ তাহার জন্য [আল্লাহ্‌র] অনুগ্রহ কামনা করেন। {১৭৪৮}

{১৭৪৮} তিরমিজি ৭৮৪, ৭৮৫, আহমাদ ২৬৫১৯, ২৬৯২৬, দারেমী ১৭৩৮, তালীকুর রগীব ২/৭৬, জইফ ১৩৩২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি লায়লা সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী অজ্ঞাত নারীর অনুচ্ছেদে উল্লেখ করিয়াছেন এবং বলেছেন, তাহার সুত্রে হাবিব ইবনি যায়দ একক হয়ে গেছেন। হাফিয তাহার সম্পর্কে মুতাবআতের ক্ষেত্রে মাকবুল বলেছেন। অন্যথায় তিনি হাদিস গ্রহনে শিথিল। কিন্তু তাহার মুতাবিআত জানা যায়নি। বরং একথা বলা সম্ভব যে, তিনি বিপরীত করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৯২৭, ৩৫/৩০১ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৭৪৯ বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিলাল [রাদি.]-কে বললেনঃ হে বিলাল! সকালের খাবার। বিলাল [রাদি.] বলেন, আমি রোযাদার। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমরা আমাদের রিযিক আহার করিব, আর বিলালের অংশ রয়েছে জান্নাতে। হে বিলাল! তুমি কি জানো যে, রোযাদারের সামনে খাওয়া-দাওয়া করা হলে, তাহার হাড়সমূহ আল্লাহ্‌র গুণগান করে এবং ফেরেশতাগণ তাহার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে! {১৭৪৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট। {১৭৪৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৪/৬২। যঈফাহ ১৩৩২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা] ২. বাকিইয়্যাহ সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, যখন তিনি সিকাহ রাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করেন তখন তাহাকে সিকাহ হিসেবে গন্য করা হইবে। ঈমাম নাসাঈ বলেন, যখন তিনি হাদ্দাসানা বা আখবারনা শব্দদয় দ্বারা হাদিস বর্ণনা করেন তখন তিনি সিকাহ হিসেবে গন্য হইবেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৩৮, ৪/১৯২ নং পৃষ্ঠা] ৩. মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যুক তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আল-উকায়লী বলেন, তিনি অপরিচিত, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আল-আযদী তিনি মিথ্যুক তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ঈমাম যাহাবী তাহাকে উল্লেখ করে বলেন, তাহার মাঝে জাহালাত রয়েছে। তিনি সন্দেহভাজন নির্ভরযোগ্য নয়। তাহার সম্পর্কে আবুল ফাত্তাহ আদ্দী বলেন, তিনি মিথ্যুক তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪১৬, ২৫/৬৫৭ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস

৭/৪৭. অধ্যায়ঃ রোযাদারকে আহার গ্রহণের জন্য আহ্বান করা হলে।

১৭৫০ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যখন তোমাদের কাউকে আহার করার জন্য ডাকা হয়, অথচ সে রোযাদার, তখন সে যেন বলে, আমি রোযাদার। {১৭৫০}

{১৭৫০} মুসলিম ১১৫০, তিরমিজি ৭৮১, আবু দাউদ ২৪৬১,আহমাদ ৭২৬২, দারেমী ১৭৩৭, সহীহাহ ১৩৪, ইরওয়াহ ১৯৫৩, সহীহ আবু দাউদ ২১২৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৫১ জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, রোযাদার ব্যক্তিকে আহার গ্রহণের আহবান জানানো হলে সে যেন তাতে সাড়া দেয়। অতঃপর তাহার ইচ্ছা হলে খাবে অথবা খাবে না। {১৭৫১}

{১৭৫১} মুসলিম ১৪৩০, আবু দাউদ ৩৭৪০, আহমাদ ১৪৭৯৭, সহীহাহ ৩৪৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৪৮. অধ্যায়ঃ রোযাদারের দুআ প্রত্যাখ্যাত হয় না [কবুল হয়]।

১৭৫২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তিন ব্যক্তির দুআ রদ হয় নাঃ ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোযাদার যতক্ষণ না ইফতাহার করে এবং মজলুমের দুআ। কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্‌ তাহার দুআ মেঘমালার উপরে তুলে নিবেন এবং তাহার জন্য আসমানের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হইবে এবং আল্লাহ্‌ বলবেনঃ আমার মর্যাদার শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে সাহায্য করিব, একটু বিলম্বেই হোক না কেন। {১৭৫২}

{১৭৫২} তিরমিজি ৩৫৯৮, যঈফাহ ১৪৫৮, রোযাদার ও মাযলুমের দুয়ার কথা সহীহ এবং ন্যায়পরায়ণ ঈমাম এর স্থলে মুসাফিরের কথা সহীহ। সহীহাহ ৫৯৬, ১৭৯৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু মুদিল্লাহ হল আইশাহ [রাদি.] এর আযাদকৃত দাস এবং আমরা তাহাকে এই হাদিস দ্বারা চিনতে পেরেছি। বিষয়টি যদি তাই হয় তবে উসুলী কায়িদাহ অনুযায়ী সে একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তি। ঈমাম মাদানী বলেছেন, তাহার নাম জানা যায়নি। সে অজ্ঞাত এবং আবু মুজাহিদ ব্যাতিত কেউ তাহার থেকে হাদিস বর্ণনা করেনি। মুলতঃ তাহার সম্পর্কে এরূপ বক্তব্য তাহার হাদিসকে হাসান করেন না, বিশেষ করে হাদিসটি আবু হুরাইরা হইতে বর্ণিত ভিন্ন একটি হাদিসের বিপরীত। সেই হাদিসটি রয়েছে সহীহাহ ২য় খণ্ড ৭ম অধ্যায়ে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৬১১, ৩৪/২৬৯ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৭৫৩ আবদুল্লাহ বিন আম্‌র ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইফতারের সময় রোযাদারের অবশ্যই একটি দুআ আছে, যা রদ হয় না [কবুল হয়]। বিন আবু মুলাইকা [রাদি.] বলেন, আমি আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.]-কে ইফতারের সময় বলিতে শুনেছিঃ

اللّٰهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَنْ تَغْفِرَ لِي

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা বি রাহমাতিকাল্লাতি ওয়া সিয়াত কুল্লা সাইইন আন তাগফিরলি, “হে আল্লাহ্‌! আমি আপনার দয়া ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি যা সব কিছুর উপর পরিব্যাপ্ত, যেন আপনি আমাকে ক্ষমা করেন”। {১৭৫৩}

{১৭৫৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এহকভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৯২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসহাক বিন উবায়দুল্লাহ আল-মাদানীর কারণে হাদিসটি দুর্বল হইয়াছে। তাহার সম্পর্কে শায়খ আলবানী ইরওয়াউল গালীল এর মধ্যে প্রায় ৫ পৃষ্ঠা আলোচনা করিয়াছেন। বিস্তারিত জানতে দেখুন ইরওয়াউল গালীল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৪৯. অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে আহার করা।

১৭৫৪ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতরের দিন খেজুর না খেয়ে [ঈদের মাঠে] রওয়ানা হইতেন না। {১৭৫৪}

{১৭৫৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৯৫৩, তিরমিজি ৫৪৩, আহমাদ ১১৮৫৯, ১৩০১৪, মিশকাত ১৪৪০, যঈফাহ ৪২৪৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস সম্পর্কে মুসলিম বিন কায়স বলেন, ইনশাআল্লাহ্‌ [আল্লাহ্‌ চায়তো] তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি মুদতাহারাব ভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার একাধিক মুনকার হাদিস রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৯১, ৪/৪৮৯ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৯২ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ৯৫৩, তিরমিজি ৫৪২, ৫৪৩, দারেমী ১৬০০, আহমাদ ১০৮৪২, ১০৯৬২, ১১৮৫৯, ১৩০১৪, ২২৪৭৩, ২২৪৭৪, ২২৫৩২, দারাকুতনী ১৬৯৯, ১৭০১, ১৭০২, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৫৭৩৪, মুজামুল আওসাত ৪৫১, ২৮৬৭, ৩০৬৫, ৪৫০২, ৫০১৪, ৫৮৩৬, শারহুস সুন্নাহ ১১০৪, ১১০৫, ইত্যাদি।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৫৫ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতরের দিন ভোরে তাহাঁর সহাবীদের ফিতরা পরিশোধের নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত [ঈদগাহে] রওয়ানা হইতেন না। {১৭৫৫}

{১৭৫৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। যঈফাহ ৪২৪৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস সম্পর্কে মুসলিম বিন কায়স বলেন, ইনশাআল্লাহ্‌ [আল্লাহ্‌ চায়তো] তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি মুদতাহারাব ভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার একাধিক মুনকার হাদিস রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৯১, ৪/৪৮৯ নং পৃষ্ঠা] ২. মানদাল বিন আলী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াকুব বিন শসায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৭৬, ২৮/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] ৩. উমার বিন সহবান সম্পর্কে আহমাদ বিন সালিহ বলেন, তাহার ব্যাপারে হাদিস বিশারদগণ এতো কথা বলেছেন, যে তা অন্য কারো ব্যাপারে আমি আর দেখিনি। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪২৬০, ২১/৩৯৮ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৭৫৬ বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিতরের দিন আহার না করে [ঈদের মাঠে] রওয়ানা হইতেন না এবং কুরবানীর দিন ঈদগাহ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত আহার করিতেন না। {১৭৫৬}

{১৭৫৬} তিরমিজি ৫৪২, আহমাদ ২২৪৭৪, ২২৫৩৩, দারেমী ১৬০০, মিশকাত ১৪৪০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৫০. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি অবহেলা করে রমাযানের রোযা অনাদায় রেখে মারা গেলো।

১৭৫৭ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তাহার যিম্মায় রমজান মাসের রোযা বাকি রেখে মারা গেলো, তাহার পক্ষ থেকে প্রতি দিনের রোযাহার জন্য যেন একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে আহার করানো হয়। {১৭৫৭}

{১৭৫৭} তিরমিজি ৭১৮, মিশকাত ২০৩৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আশআস [বিন সাওয়ার] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন সিকাহ বললেও অন্যত্রে তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। উসমান বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, হার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫২৪, ৩/২৬৪ নং পৃষ্ঠা] ।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৫১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মানতের রোযা যিম্মায় রেখে মারা গেলো।

১৭৫৮ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক মহিলা নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার বোন তাহার যিম্মায় রমাদানের পর পর দু মাসের রোযা রেখে মারা গেছে। তিনি বলেন, তুমি কি মনে করো, তোমার বোন ঋণগ্রস্ত থাকলে তুমি তা পরিশোধ করিতে? সে বলল, হাঁ। তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র প্রাপ্য তো অধিক পরিশোধযোগ্য। {১৭৫৮}

{১৭৫৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৫৩, মুসলিম ১১৪৮, তিরমিজি ৭১৬, নাসাঈ ৩৮১৬ আবু দাউদ ৩৩১০, আহমাদ ২০০৬, দারেমী ১৭৬৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু খালিদ আল-আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালিহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৫৯ বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক মহিলা নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার মা তাহার যিম্মায় রোযা রেখে মারা গেছেন। আমি কি তাহার পক্ষ থেকে রোযা রাখবো? তিনি বলেন, হাঁ। {১৭৫৯}

{১৭৫৯} মুসলিম ১১৪৯, তিরমিজি ৬৬৭, ৯২৯, আবু দাউদ ১৬৫৬, ২৮৭৭, ৩৩০৮, আহমাদ ২২৪৪৭, ২২৪৬২, ২২৫২৩, ২২৫৪৫, সহীহ আবু দাউদ ২৫৬১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন আতা সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযগে অভিযুক্ত। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি আহলে ইমমের নিকট নির্ভরযোগ্য। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল ও তাদলীস করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪২৯, ১৫/৩১১ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৫২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রমজান মাসে ইসলাম গ্রহণ করিল।

১৭৬০ ইসমু মুবহাম বা নাম অপরিচিত হইতে বর্ণীতঃ

আমাদের যে প্রতিনিধি দলটি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট গিয়েছিল, তাহারা সাকীফ গোত্রের ইসলাম গ্রহণের বর্ণনা দেয়। রাবী বলেন, তাহারা তাহাঁর দরবারে রমজান মাসে উপস্থিত হয়। তিনি মাসজিদে তাহাদের জন্য একটি তাঁবু খাঁটিয়ে দিয়াছিলেন। তাহারা ইসলাম গ্রহণ করার পর রমজান মাসের অবশিষ্ট রোযাগুলো রেখেছিল। {১৭৬০}

{১৭৬০} তালীক ইবনি মাজাহ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭/৫৩. অধ্যায়ঃ যে মহিলা তাহার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত [নফল] রোযা রাখে।

১৭৬১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

স্বামীর উপস্থিতিতে তাহার সম্মতি ব্যতীত স্ত্রী রমজান মাসের রোযা ছাড়া এক দিনও রোযা রাখবে না। {১৭৬১}

{১৭৬১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৯২, ৫১৯৫, মুসলিম ১০২৬, তিরমিজি ৭৮২, আবু দাউদ ২৪৫৮, আহমাদ ৭২৯৪, ২৭৪০৫, ৯৪৪১, ৯৬৬২, ৯৮১২, ১০১১৭, দারেমী ১৭২০, ইরওয়াহ ২০০৪, সহীহ আবু দাউদ ২১২১, বুখারী, মুসলিমে রামাযানের উল্লেখ ব্যতীত। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৬২ আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মহিলাদেরকে তাহাদের স্বামীদের সম্মতি ব্যতীত রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৭৬২}

{১৭৬২} আবু দাউদ ২৪৫৯, আহমাদ ১১৩৫০, ১১৩৯২, দারেমী ১৭১৯, ইরওয়াহ ৭.৬৪-৬৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭/৫৪. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের মেহমান হলে সে তাহাদের সম্মতি ব্যতীত [নফল] রোযা রাখবে না।

১৭৬৩ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের মেহমান হলে সে যেন তাহাদের সম্মতি ব্যতীত [নফল] রোযা না রাখে। {১৭৬৩}

{১৭৬৩} তিরমিজি ৭৮৯, যঈফাহ ২৭১৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি আবু বকর আল-মাদানী সম্পর্কে ঈমাম তিরমিজি ও ঈমাম যাহাবী দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৭/৫৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি বলে, কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল রোযাদারের সমতুল্য।

১৭৬৪ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল রোযাদারের সমতুল্য। {১৭৬৪}

{১৭৬৪} তিরমিজি ২৪৮৬, সহীহাহ ৬৫৫, তালীক ইবনি খুযাইয়াহ ১৮৯৮, ১৮৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল্লাহ বিন আবদুল্লাহ আল উমাবী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি অপরিচিত। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। আবু আহমাদ বিন আলী আল-জুরজানী ও তাহরিরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার পরিচয় সম্পর্কে আমার জানা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৩৬৮, ১৫/১৮৫ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইয়াকুব বিন হুমায়দ ও আবদুল্লাহ বিন আবদুল্লাহ আল উমাবী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৩ টি জাল, ৯ টি অধিক দুর্বল, ২০ টি দুর্বল, ১৩ টি হাসান, ৯ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ২৪৮৬, দারেমী ২০২৪, আহমাদ ৭৭৪৭, ৭৮২৯, ১৮৫৩৪, মুজামুল আওসাত ৭৩৮১, শারহুস সুন্নাহ ২৮৩২ ইত্যাদি।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭৬৫ নবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী সিনান বিন সান্নাহ আল-আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কৃতজ্ঞ আহারকারীর জন্য রয়েছে ধৈর্যশীল রোযাদারের অনুরূপ প্রতিদান। {১৭৬৫}

{১৭৬৫} দারেমী ২০২৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযিয আদ-দারাওয়ারদী সম্পর্কে মুহাম্মাদ বোন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল আজালী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি যখন তাহার কিতাব হইতে কোন হাদিস বর্ণনা করেন তখন তা সহীহ কিন্তু যখন মানুষের কিতাব থেকে হাদিস বর্ণনা করিতেন তখন তিনি সন্দেহ করিতেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply