স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – আযল, দুধ পান, সন্তান, অশুভ আলামাত

স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – আযল, দুধ পান, সন্তান, অশুভ আলামাত

স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – আযল, দুধ পান, সন্তান, অশুভ আলামাত >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৯, অধ্যায় (২৬-৬৩)=৩৮

৯/২৬. অধ্যায়ঃ তরুণী স্ত্রী এবং বয়স্কা স্ত্রীর নিকট অবস্থানের পালা।
৯/২৭. অধ্যায়ঃ স্ত্রী স্বামীর নিকট এলে স্বামী যে দুয়া পড়বে।
৯/২৮. অধ্যায়ঃ সহবাসের সময় পর্দা করা।
৯/২৯. অধ্যায়ঃ স্ত্রীর মলদ্বারে সংগম করা নিষেধ।
৯/৩০. অধ্যায়ঃ আযল প্রসঙ্গ।
৯/৩১. অধ্যায়ঃ কোন মহিলাকে তাহার ফুফু অথবা তাহার খালার সাথে একত্রে বিবাহ করা যাবে না।
৯/৩২. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলো, অতঃপর সে অন্য স্বামী গ্রহণ করিল। সেও তাহাকে সহবাসের পূর্বে তালাক দিলো। এ অবস্থায় সে কি তাহার প্রথম স্বামীর সাথে পুনর্বিবাহে আবদ্ধ হইতে পারে?
৯/৩৩. অধ্যায়ঃ হালালকারী এবং যাহার জন্য হালাল করা হয়।
৯/৩৪. অধ্যায়ঃ বংশীয় সম্পর্কের দরুন যারা হারাম হয়, দুধপানজনিত কারণেও তাহারা হারাম হয়।
৯/৩৫. অধ্যায়ঃ এক ঢোক অথবা দু ঢোক দুধপানে হুরমত সাব্যস্ত হয় না।
৯/৩৬. অধ্যায়ঃ বয়স্ক লোকে দুধ পান করিলে।
৯/৩৭. অধ্যায়ঃ দুধপানের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরের দুধপান সম্পর্কে।
৯/৩৮. অধ্যায়ঃ পুরুষের দুধ ।
৯/৩৯. অধ্যায়ঃ কারো বিবাহ বন্ধনে দু [সহোদর] বোন থাকা অবস্থায় সে ইসলাম গ্রহণ করিলে।
৯/৪০. অধ্যায়ঃ চারের অধিক সংখ্যক স্ত্রী থাকা অবস্থায় কেউ ইসলাম গ্রহণ করিলে ।
৯/৪১. অধ্যায়ঃ বিবাহের শর্তাবলী পূরণ করিতে হইবে ।
৯/৪২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি নিজের দাসীকে আযাদ করার পর বিবাহ করে ।
৯/৪৩. অধ্যায়ঃ মনিবের অনুমতি ব্যতীত গোলামের বিবাহ করা ।
৯/৪৪. অধ্যায়ঃ মুতআ বিবাহ নিষিদ্ধ ।
৯/৪৫. অধ্যায়ঃ ইহরাম অবস্থায় কোন ব্যক্তির বিবাহ করা ।
৯/৪৬. অধ্যায়ঃ বিবাহের বর ও কনের সমতা [কুফু] ।
৯/৪৭. অধ্যায়ঃ স্ত্রীদের সাথে সম আচরণ এবং পালা বণ্টন।
৯/৪৮. অধ্যায়ঃ যে মহিলা তাহার পালার দিনটি তাহার সতীনকে দান করে।
৯/৪৯. অধ্যায়ঃ বিবাহ দেয়ার জন্য সুপারিশ করা।
৯/৫০. অধ্যায়ঃ স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ করা।
৯/৫১. অধ্যায়ঃ স্ত্রীদের প্রহার করা নিকৃষ্ট কাজ।
৯/৫২. অধ্যায়ঃ পরচুলা সংযোগকারিণী ও উল্কি অংকনকারিণী ।
৯/৫৩. অধ্যায়ঃ যে সময় স্ত্রীদের সাথে বাসর যাপন করা উত্তম।
৯/৫৪. অধ্যায়ঃ স্ত্রীকে কিছু দেয়ার পূর্বে তাহার সাথে নির্জনে মিলন।
৯/৫৫. অধ্যায়ঃ শুভ ও অশুভ আলামাত।
৯/৫৬. অধ্যায়ঃ আত্মমর্যাদাবোধ।
৯/৫৭. অধ্যায়ঃ যে মহিলা নিজেকে নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য হেবা করে।
৯/৫৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি তাহার সন্তান সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে।
৯/৫৯. অধ্যায়ঃ সন্তান বিছানার মালিকের এবং ব্যভিচারির জন্য পাথর।
৯/৬০. অধ্যায়ঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন অপরজনের আগে ইসলাম গ্রহণ করিলে ।
৯/৬১. অধ্যায়ঃ দুগ্ধপোষ্য সন্তানের মাতাহার সাথে সহবাস।
৯/৬২. অধ্যায়ঃ যে স্ত্রী তাহার স্বামীকে কষ্ট দেয়।
৯/৬৩. অধ্যায়ঃ হারাম বস্তু হালাল বস্তুকে হারাম করিতে পারে না।

৯/২৬. অধ্যায়ঃ তরুণী স্ত্রী এবং বয়স্কা স্ত্রীর নিকট অবস্থানের পালা।

১৯১৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বয়স্কা স্ত্রীর পালা হচ্ছে তিন দিন এবং তরুণী স্ত্রীর পালা সাত দিন। {১৯১৬}

{১৯১৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫২১৩, ৫২১৪, মুসলিম ১৪৬১, তিরমিজি ১১৩৯, আবু দাউদ ২১২৪, মুয়াত্তা মালিক ১১২৪, দারেমী ২২০৯, ইরওয়াহ ৭/৮৮-৮৯, সহীহাহ ১১৭১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয় তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯১৭. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বিবাহ করার পর তাহার নিকট তিন দিন অবস্থান করেন এবং বলেন, তোমার ব্যাপারে তোমার স্বামীর কোন অনীহা নেই। তুমি যদি চাও, তবে আমি তোমার সঙ্গে সাত দিন অবস্থান করিব। যদি আমি তোমার নিকট সাত দিন কাটাই তবে আমার অন্য স্ত্রীদের নিকটও সাত দিন করে কাটাবো। {১৯১৭}

{১৯১৭} মুসলিম ১৪৬০, আবু দাউদ ২১২২, আহমাদ ২৫৯৬৫, ২৫৯৯০, ২৬০৭৯, ২৬১৮১, ২৬১৮২, মুয়াত্তা মালিক ১১২৩, দারেমী ২২১০, ইরওয়াহ ২০১৯ সহীহাহ ১২৭১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/২৭. অধ্যায়ঃ স্ত্রী স্বামীর নিকট এলে স্বামী যে দুয়া পড়বে।

১৯১৮. আবদুল্লাহ্ বিন আম্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যখন তোমাদের কেউ স্ত্রী, খাদেম অথবা আরোহণের পশু লাভ করে তখন সে যেন তাহার কপালে হাত রেখে বলেঃ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট এর মধ্যে নিহিত কল্যাণ প্রার্থনা করি এবং যে কল্যাণ এর মধ্যে গচ্ছিত রাখা হইয়াছে। আমি তোমার নিকট এর অনিষ্ট হইতে এবং যে অনিষ্টসহ একে সৃষ্টি করা হইয়াছে তা হইতে আশ্রয় চাই”। {১৯১৮}

{১৯১৮} আবু দাউদ ২১৬০, আদাবুয যিফাফ ২০, তাখরীজ কালিমুত তাইয়্যিব ২০৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯১৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন স্ত্রীর কাছে আসে, তখন সে যেন বলেঃ

اللّٰهُمَّ جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنِي

[আল্লাহুম্মা জান্নিবনীশ শায়তান, ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রযাকতানী] “হে আল্লাহ্ ! আমাকে শয়তান থেকে দূরে রাখো এবং যে সন্তান আমাদের দান করিবে তাহাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখো”।

অতঃপর স্বামী-স্ত্রীর সেই মিলনে যদি কোন সন্তান হয়, তবে আল্লাহ্ তাহার উপর শয়তানকে কোন প্রভাব বিস্তার করিতে দিবেন না অথবা তাহার কোন ক্ষতি করিতে পারবে না। {১৯১৯}

{১৯১৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪১, ৩২৭১, ৩২৮৩, ৫১৬৫, ৬৩৮৮, ৭৩৯৬, মুসলিম ১৪৩৪, তিরমিজি ১০৯২, আবু দাউদ ২১৬১, আহমাদ ১৮৭০, ১৯১১, ২১৭৯, ২৫৫১, ২৫৯২, দারেমী ২২১২, ইরওয়াহ ২০১২, সহীহ আবু দাউদ ১৮৭৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/২৮. অধ্যায়ঃ সহবাসের সময় পর্দা করা।

১৯২০. মুআবিয়াহ আল-কুশায়রী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! আমাদের লজ্জাস্থানের কতখানি ঢেকে রাখবো, আর কতখানি খুলে রাখবো? তিনি বলেনঃ তোমার লজ্জাস্থান আপন স্ত্রী ও ক্রীতদাসী ছাড়া অন্যদের থেকে হেফাজত করিবে। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার অভিমত কী যে, লোকেরা যদি একত্রে বসবাস করে? তিনি বলেনঃ যদি তুমি কাউকে না দেখিয়ে পারো, তবে অবশ্যই তা দেখাবে না। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের কেউ যদি নির্জনে থাকে? তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ অধিক অগ্রগণ্য যে, মানুষের চেয়ে তাহাঁর প্রতি বেশি লজ্জাশীল হইতে হইবে। {১৯২০}

{১৯২০} তিরমিজি ২৭৬৯, ২৭৯৪, আবু দাউদ ৪০১৭, মিশকাত ৩১১৭। আদাবুয যিফাফ ৩৬ নং পৃষ্ঠা। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯২১. উতবাহ বিন আবদ আস-সুলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তাহার স্ত্রীর নিকট এসে যেন [নির্জনে মিলনে] পর্দা [গোপনীয়তা] রক্ষা করে এবং গর্দভের ন্যায় বিবস্ত্র না হয়। {১৯২১}

{১৯২১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/১৬৬। ইরওয়া ২০০৯, আদবুয যিফাফ ৩৩-৩৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আহওয়াস বিন হাকিম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি হিফযে দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন আওফ আল-হিমসী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৮৭, ২/২৮৯ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯২২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি কখনও রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর লজ্জাস্থানের দিকে তাকাইনি বা তা দেখিনি। {১৯২২}

{১৯২২} আহমাদ ২৩৮২৩, বায়হাকী ৪/৬৩, ইরওয়া ১৮১২, মিশকাত ৩১২৩, আদাবুয যিফাফ ৩৪ নং পৃষ্ঠা। রওদুন নাদীর ৮০৯, মুখতাসার শামাইল ৩০৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯/২৯. অধ্যায়ঃ স্ত্রীর মলদ্বারে সংগম করা নিষেধ।

১৯২৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করে, আল্লাহ্‌ তাহার দিকে [দয়ার দৃষ্টিতে] তাকান না। {১৯২৩}

{১৯২৩} আবু দাউদ ২১৬২, আহমাদ ৭৬২৭, ৮৩২৭, ৯৪৪০, ৯৮৫০, দারেমী ১১৪০, বায়হাকী ৭/৭৩৪। আদাবুয যিফাফ ৩০, সহীহ আবু দাউদ ১৮৭৮, মিশকাত ৩১৯৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তাহার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা] ২. হারিস বিন মুখাল্লিদ সম্পর্কে আবুল হাসান ইবনিল কাত্তান ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। আবু বাকর আল বাযযাহার বলেন, তিনি প্রসিদ্ধ নয়। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০৪২, ৫/২৭৮ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু সুহায়ল ও হারিস বিন মুখাল্লিদ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৪৭৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ১৯ টি অধিক দুর্বল, ৯৪ টি দুর্বল, ৮০ টি হাসান, ২৮১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১৩৫, ১১৬৪, ১১৬৬, ২৯৭৯, ২৯৮০, আবু দাউদ ২০৫, ১০০৫, ২১৬২, ২১৬৪, দারেমী ১১১৯, ১১৪০, ১১৪১, ১১৪৪, ২২১৩, আহমাদ ৬৫৭, ২৪১০, ২৬৯৮, ৬৬৬৭, ৬৯২৮, ৬৯২৯, ৭৬২৭, ৮৩২৭, ৯০৩৫, ৯৪৪০, ২১৩৪৬, ২১৩৫০, দারাকুতনী ৫৫৪, ৩৭০৮ ইত্যাদি।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯২৪. খুযায়মাহ বিন সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ সত্য বলিতে লজ্জাবোধ করেন না। কথাটি তিনি তিনবার বলেন। [অতঃপর বলেন] তোমরা মহিলাদের মলদ্বারে সঙ্গম করো না। {১৯২৪}

{১৯২৪} আহমাদ ২১৩৪৩, ২১৩৬৭, দারেমী ১১৪৪, ইরওয়াহ ২০০৫, আদাবুয যিফাফ ২৯, মিশকাত ৩১৯২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯২৫. জাবির বিন আবদুল্লাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইহূদীরা বলতো, কোন ব্যক্তি পশ্চাৎদিক থেকে স্ত্রী অঙ্গে সঙ্গম করিলে তাতে সন্তান টেরা চোখবিশিষ্ট হয়। এরপর আল্লাহ্‌ তাআলা এই আয়াত নাযিল করেন

نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ

“তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত। অতএব তোমরা তোমাদের শষ্যক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা আসো”। [২ঃ২২৩]। {১৯২৫}

{১৯২৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৫২৮, মুসলিম ১৪৩৫, আবু দাউদ ২১৬৩, দারেমী ১১৩২, ২২১৪, ইরওয়াহ ৭/৬২, সহীহ আবু দাউদ ১৮৭৯, ১৮৮০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি জামাল ইবনিল হাসান আল-আতাকী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আলী আল-জুরযানী বলেন, আনি আশা করি তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, আমরা তাহার সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম কিন্তু তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করিনি। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মাসলামহ ইবনি কাসিম বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৯৬৮, ৫/১২৮ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯২৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

৯/৩০. অধ্যায়ঃ আযল প্রসঙ্গ।

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আযল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলে তিনি বলেনঃ তোমরা কি তা করো? তা না করিলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কেননা যে প্রাণের উদ্ভব হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ্ সিদ্ধান্ত করে রেখেছেন তা হইবেই। {১৯২৬}

{১৯২৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২২৯, ২৫৪২, ৪১৩৮, ৫২১০, ৬৬০৩, ৭৪০৯, মুসলিম ১৪৩৮, তিরমিজি ১১৩৮, নাসাঈ ৩৩২৭, আবু দাউদ ২১৭০, ২১৭১, ২১৭২, আহমাদ ১০৬৯৪, ১০৭৮৮, ১০৮২০, ১১০৪৬, ১১০৬৬, ১১১১০, ১১১৫১, ১১১৭২, ১১২০৮, ১১২৫১, ১১২৯১, ১১৩৩৫, ১১৩৬৯, ১১৪২৯, ১১৪৭৪, মুয়াত্তা মালিক ১২৬২, দারেমী ২২২৩, ২২২৪, ইরওয়াহ ৯৯৯, সহীহ আবু দাউদ ১৮৮৬, ১৮৮৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯২৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর জীবদ্দশায় এবং কুরআন নাযিল হওয়া অব্যাহত থাকা অবস্থায় আযল করতাম। {১৯২৭}

{১৯২৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫২০৯, মুসলিম ১৪৪০, তিরমিজি ১১৩৬, ১১৩৭, আহমাদ ১৩৯০৬, আদবুয যিফাফ ৫১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯২৮. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্বাধীন স্ত্রীর বেলায় তাহার সম্মতি ছাড়া আযল করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৯২৮}

{১৯২৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ২০০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তাহার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯/৩১. অধ্যায়ঃ কোন মহিলাকে তাহার ফুফু অথবা তাহার খালার সাথে একত্রে বিবাহ করা যাবে না।

১৯২৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন মহিলাকে তাহার ফুফু বা তাহার খালার সাথে একত্রে বিবাহ করা যাবে না। {১৯২৯}

{১৯২৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১০৯, ৫১১১, মুসলিম ১৪০৮, তিরমিজি ১১২৬, নাসাঈ ৩২৮৮, ৩২৮৯, ৩২৯০, ৩২৯১, ৩২৯২, ৩২৯৩, ৩২৯৪, ৩২৯৫, ৩২৯৬, আবু দাউদ ২০৬৫, ২০৬৬, আহমাদ ৭০৯৩, ৭৪১৩, ৮৮৭৬, ৮৯৫০, ৯১৮৪, ৯২১৬, ৯৩০৩, ৯৫২৪, ৯৬৩৫, ৯৬৮০, ৯৭৮৯, ৯৯৭৩, ১০২২৭, ১০৩১১, ১০৩৩৪, ১০৪৬৩, মুয়াত্তা মালিক ১১২৯, দারেমী ২১৭৮, ২১৭৯, ইরওয়াহ ৬/২৮৬, সহীহ আবু দাউদ ১৮০২, ১৮০৩, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ৭, রওদুন নাদীর ১১৭১, ১১৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দুধরনের বিবাহ নিষিদ্ধ করিতে শুনেছিঃ কোন স্ত্রীলোক ও তাহার খালাকে অথবা কোন স্ত্রীলোক ও তাহার ফুফুকে কোন ব্যক্তির বিবাহাধীনে একত্র করা [নিষিদ্ধ]। {১৯৩০}

{১৯৩০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৬/২৯১। রাওদুন নাদীর ১১৭১, ১১৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩১. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন মহিলাকে তাহার ফুফু অথবা তাহার খালার সাথে একত্রে বিবাহ করা যাবে না। {১৯৩১}

{১৯৩১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি ১. জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস সম্পর্কে মুসলিম বিন কায়স বলেন, ইনশাআল্লাহ্‌ [আল্লাহ্‌ চায়তো] তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি মুদতাহারাব ভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার একাধিক মুনকার হাদিস রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৯১, ৪/৪৮৯ নং পৃষ্ঠা] ২. আবু বকর আন-নাহশালী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি কুফার একজন সিকাহ রাবী তবে তিনি মুরজিয়াহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে মুরজিয়াহ মতাবলম্বী। ঈমাম যাহাবী ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি সিকাহ। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি মুরজিয়াহ মতাবলম্বী, তিনি দুর্বলদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭২৬৭, ৩৩/১৫৬ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস ও আবু বকর আন-নাহশালী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৭২৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৭ টি জাল, ৬১ টি অধিক দুর্বল, ৪২ টি দুর্বল, ১৬৪ টি হাসান, ৪৫০ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ৫১০৮, ৫১০৯, মুসলিম ১৪০৮, ১৪০৯, তিরমিজি ১১২৫, ১১২৬, আবু দাউদ ২০৬৫, ২০৬৬, ২০৬৭, দারেমী ২১৭৮, ২১৭৯, আহমাদ ৫৭৮, ১৮৮১, ৩৫২০, ৬৬৪৩, ৬৭৩১, ৭০৯৩, ৭৪১৩, ৮৮৮০, ৮৯৫০, ১০৩১২, ১০৩৩৪, ১০৩৩৯, ১০৫০৫ ইত্যাদি।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৩২. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলো, অতঃপর সে অন্য স্বামী গ্রহণ করিল। সেও তাহাকে সহবাসের পূর্বে তালাক দিলো। এ অবস্থায় সে কি তাহার প্রথম স্বামীর সাথে পুনর্বিবাহে আবদ্ধ হইতে পারে?

১৯৩২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রিফাআহ আল-কুরাযী [রাদি.] -এর স্ত্রী রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলল, আমি রিফাআর বিবাহাধীন ছিলাম। সে আমাকে তিন তালাক দিলে পর আমি আবদুর রহমান ইবনিয যুবায়র [রাদি.]-কে বিবাহ করি। কিন্তু তাহার সাথে কাপড়ের পোটলাবৎ বস্তু ছাড়া কিছু নাই। নবী [সাঃআঃ] মুচকি হেসে বললেনঃ তুমি কি রিফাআর নিকট ফিরে যেতে চাও? তা হইবে না, যতক্ষণ না তুমি তাহার মধু পান করো এবং সে তোমার মধু পান করে। {১৯৩২}

{১৯৩২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৬৩৯, ৫২৬০, ৫২৬৫, ৫৩১৭, ৫৭৯২, ৫৮২৫, ৬০৮৪, মুসলিম ১৪৩৩, তিরমিজি ১১১৮, নাসাঈ ৩২৮৩, ৩৪০৭, ৩৪০৮, ৩৪০৯, ৩৪১১, ৩৪১২, আবু দাউদ ২৩০৯, আহমাদ ২৩৫৩৮, ২৩৫৭৮, ২৫০৭৭, ২৫৩৬৪, ২৫৩৮৯, মুয়াত্তা মালিক ১১২৭, দারেমী ২২৬৭, ২২৬৮, ইরওয়াহ ১৮৮৭,তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর অপর এক ব্যক্তি বিবাহ করে। সে তাহার সহবাসের পূর্বে পুনরায় তাহাকে তালাক দেয়। উক্ত স্ত্রীলোকটি কি প্রথম স্বামীর সাথে পুনর্বিবাহে আবদ্ধ হইতে পারবে? নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ না, যতক্ষণ না সে তাহার মধু পান করে [তাহার সাথে সহবাস করে]। {১৯৩৩}

{১৯৩৩} নাসাঈ ৩৪১৪, বায়হাকী ৭/৪৫৯, আল হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৩/২২৬, ইরওয়াহ ৬/২৯৯, ২৯৮১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সালিম বিন রাযীন সম্পর্কে ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মজহুল বা অপরিচিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২১৪৫, ১০/১৪০ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু সালিম বিন রাযীন এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩৯৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি জাল, ৫৬ টি অধিক দুর্বল, ২২৬ টি দুর্বল, ১৪০ টি হাসান, ১০ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২৬৩৯, ৫২৬০, ৫২৬১, ৫২৬৫, ৫৩১৭, ৫৭৯২, ৫৮২৫, ৬০৮৪, মুসলিম ১৪৩৩, ১৪৩৪, তিরমিজি ১১১৮, আবু দাউদ ২৩০৯, দারেমী ২২৬৭, ২২৬৮, আহমাদ ১৮৪০, ৪৭৬২, ৫২৫৫, ৫৫৪৬, ১৩৬১০, ২৩৫৩৭, দারাকুতনী ৩৯০০, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৭, ৩৯২৮, ৩৯৩১, ৩৯৩২ ইত্যাদি।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৩৩. অধ্যায়ঃ হালালকারী এবং যাহার জন্য হালাল করা হয়।

১৯৩৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহ্‌লীলকারী এবং যাহার জন্য তাহ্‌লীল করা হয় তাহাদের উভয়কে অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৯৩৪}

{১৯৩৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ১৮৯৭, মিশকাত ৩২৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি যামআহ বিন সালিহ সম্পর্কে ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি সহীহ হাদিসের বিপরীত বর্ণনা করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২০০৩, ৯/৩৮৬ নং পৃষ্ঠা] ২. সালামাহ বিন ওয়াহহাম সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আল-জুরজানী বলেন, আমি আশা করি যামআহ ছাড়া তাহার বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য নয় তবে তা দলীল যোগ্য হইবে না। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, যামআহ বিন সালিহ কর্তৃক বর্ণিত হাদিস ছাড়া তিনি সত্যবাদী অন্যথায় তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৪৭৪, ১১/৩৮২ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু যামআহ বিন সালিহ ও সালামাহ বিন ওয়াহহাম এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ২০ টি অধিক দুর্বল, ১৫ টি দুর্বল, ১৬ টি হাসান, ২ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, তিরমিজি ১১১৯, ১১২০, আবু দাউদ ২০৭৬, দারেমী ২২৫৮, আহমাদ ৪২৯৬, ৮০৮৮, দারাকুতনী ৩৫৭৬, শারহুস সুন্নাহ ২২৯৩ ইত্যাদি।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩৫. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহ্‌লীলকারী এবং যাহার জন্য তাহ্‌লীল করা হয়, তাহাদের [উভয়কে] অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৯৩৫}

{১৯৩৫} তিরমিজি ১১১৯, আবু দাউদ ২০৭৬, আহমাদ ৬৩৬, ৬৬২, ৬৭৩, ৭২৩, ৮৪৬, ৯৮৩, ১২৯১, ১৩৬৮, বায়হাকী ৫/৬১, হাকিম ফিল মুসতাদরাক ১/৪৫৪, ইরওয়াহ ৬/৩০৮, ৩০৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। ১. মুজালীদ বিন সাঈদ সম্পর্কে ঈমাম বুখারী ও ইয়াকুব বিব সুফইয়ান বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি জইফ বা দুর্বল। ইবনি মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহন করা যাবে না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭৮০, ২৭/২১৯ নং পৃষ্ঠা] ২. হারিস [বিন আবদুল্লাহ] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আহমাদ বিন সালিহ আল-মিসরী বলেন, তিনি সিকাহ। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী তাহাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ।[তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০২৪, ৫/২৩৯ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুজালীদ ও হারিস [বিন আবদুল্লাহ] এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২০ টি অধিক দুর্বল, ১৫ টি দুর্বল, ১৬ টি হাসান, ২ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১১১৯, ১১২০, আবু দাউদ ২০৭৬, দারেমী ২২৫৮, আহমাদ ৪২৯৬, ৮০৮৮, দারাকুতনী ৩৫৭৬, শারহুস সুন্নাহ ২২৯৩ ইত্যাদি।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩৬. উকবাহ বিন আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি কি তোমাদের ভাড়াটে পাঁঠা সম্পর্কে অবহিত করিব না? তাহারা বলিলেন, হাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বলেনঃ সে হলো তাহ্‌লীলকারী। আল্লাহ তাহ্‌লীলকারী এবং যাহার জন্য তাহ্‌লীল করা হয় তাহাদের উভয়কে অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৯৩৬}

{১৯৩৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৬/৩০৯-৩১০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৩৪. অধ্যায়ঃ বংশীয় সম্পর্কের দরুন যারা হারাম হয়, দুধপানজনিত কারণেও তাহারা হারাম হয়।

১৯৩৭. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বংশীয় সম্পর্কের দরুন যারা হারাম হয়, দুধপানজনিত কারণেও তাহারা হারাম হয়। {১৯৩৭}

{১৯৩৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৬৪৬, ৩১০৫, ৫০৯৯, মুসলিম ১৪৪৪, ১৪৪৫, তিরমিজি ১১৪৭, নাসাঈ ৩৩০০, ৩৩০১, ৩৩০২, ৩৩০৩, ৩৩১৩, আবু দাউদ ২০৫৫, আহমাদ ২৩৬৫০, ২৩৭২২, ২৩৮৫০, ২৩৯১০, ২৪১৯১, ২৪৯২৫, মুয়াত্তা মালিক ১২৭৭, ১২৭৮, ১২৯১, দারেমী ২২৪৭, ২২৪৯, ইরওয়াহ ৬/২৮৩, সহীহ আবু দাউদ ১৭৯৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে হামযা বিন আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] -এর মেয়ের বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি বলেনঃ সে তো আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা। বংশীয় সম্পর্কের দরুন যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন হারাম, দুধপান জনিত সম্পর্কের দরুণও অনুরূপ মহিলাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন হারাম। {১৯৩৮}

{১৯৩৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৬৪৫, মুসলিম ১৪৪৭, নাসাঈ ৩৩০৫, ৩৩০৬, আহমাদ ২৪৮৬, ইরওয়াহ ৬/২৮৪, রওদুন নাদীর ১১৯২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৩৯. উম্মু হাবীবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলেন, আপনি আমার বোন আয্‌যাকে বিবাহ করুন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি কি পছন্দ করো? তিনি বলেলেন, হাঁ হে আল্লাহর রসূল! আর আমি তো আপনার জন্যে একক নই। কল্যাণ লাভে আমার শরীক হওয়ার ব্যাপারে আমার বোন আমার নিকট অধিক অগ্রগণ্য। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সে আমার জন্য হালাল নয়। তিনি বলেন, আমরা তো পরস্পর আলোচনা করছিলাম যে, আপনি আবু সালামাহ [রাদি.] -এর কন্যা দুররাকে বিবাহ করিতে ইচ্ছুক। তিনি বলেনঃ উম্মু সালামাহর কন্যা? উম্মু হাবীবা [রাদি.] বলেন, হাঁ। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সে যদি আমার প্রতিপালনাধীন আমার স্ত্রীর পূর্ব-স্বামীর কন্যা নাও হতো, তবুও সে আমার জন্যে হালাল হতো না। কারণ সে আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা। সুয়াইবা [রাদি.] আমাকে এবং তাহাঁর পিতাহাকে দুধ পান করিয়েছে। অতএব তোমরা তোমাদের বোনদের ও মেয়েদের আমার সাথে বিবাহ দেয়ার প্রস্তাব করো না।

{উপরোক্ত হাদীসে মোট দুইটি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}৩/১৯৩৯ [১] . উম্মু হাবীবাহ [রাদি.] , নবী [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। {১৯৩৯}

{১৯৩৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১০১, ৫১০৬, ৫১০৭, ৫১২৪, ৫৩৭২, মুসলিম ১৪৪৯, নাসাঈ ৩২৮৪, ৩২৮৫, ৩২৮৬, ৩২৮৭, আবু দাউদ ২০৫৬, আহমাদ ২৫৯৫৪, ২৬৮৬৬, সহীহ আবু দাউদ ১৭৯৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৩৫. অধ্যায়ঃ এক ঢোক অথবা দু ঢোক দুধপানে হুরমত সাব্যস্ত হয় না।

১৯৪০. উম্মুল ফাদল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, এক ঢোক অথবা দু ঢোক দুধপান [দুধপানজনিত বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন] হারাম করে না। {১৯৪০}

{১৯৪০} মুসলিম ১৪৫১, নাসাঈ ৩৩০৮, আহমাদ ২৬৩৩২, ২৬৩৩৯, দারেমী ২২৫২, ইরওয়াহ ২১৪৯, সহীহ আবু দাউদ ১৮০১, সহীহাহ ৩২৫৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪১. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এক ঢোক বা দু ঢোক দুধপানে [দুধপানজনিত] বৈবাহিক নিষিদ্ধতা প্রতিষ্ঠিত হয় না। {১৯৪১}

{১৯৪১} মুসলিম ১৪৫০, তিরমিজি ১১৫০, নাসাঈ ৩৩১০, ৩৩১১, আবু দাউদ ২০৬৩, আহমাদ ২৩৫০৬, ২৫২৮৪, ২৫৫৬৮, দারেমী ২২৫১, ইরওয়াহ ২১৪৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, প্রথমদিকে কুরআনে এই বিধান ছিলো, যা পরে রহিত হয়ে যায়; দশ ঢোক বা পাঁচ ঢোক দুধ পানের কমে নিষিদ্ধতা প্রতিষ্ঠিত হয় না। {১৯৪২}

{১৯৪২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৫২, ইবনি মাজাহ ১৯৪৪, নাসাঈ ৩৩০৭, ২০৬২, মুয়াত্তা মালিক ১২৯৩, দারেমী ২২৫৩, ইরওয়াহ ২১৪৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৩৬. অধ্যায়ঃ বয়স্ক লোকে দুধ পান করিলে।

১৯৪৩. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সাহ্‌লাহ বিনতু সুহায়ল নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার নিকট সালেমের যাতায়াতের কারণে আমি [আমার স্বামী] আবু হুযাইফাহর চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব লক্ষ্য করি। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি তাহাকে দুধ পান করিয়ে দাও। সে বলল, আমি তাহাকে কিভাবে দুধ পান করাবো, সে যে বয়স্ক পুরুষ? রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুচকি হেসে বলেন, আমিও অবশ্য জানি যে, সে বয়স্ক পুরুষ। সে তাই করিল, দুধ পান করানোর পর আবু হুযাইফাহর চেহারায় আমি কোন অপছন্দের ভাব লক্ষ্য করিনি। [রাবী বলেন] , তিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। {১৯৪৩}

{১৯৪৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪০০০, ৫০৮৮, মুসলিম ১৪৫৩, নাসাঈ ৩২২৩, ৩২৩৪, ৩৩১৯, ৩৩২০, ৩৩২১, ৩৩২২, ৩৩২৩, আবু দাউদ ২০৬১, আহমাদ ২৫১২১, মুয়াত্তা মালিক ১২৮৮, দারেমী ২২৫৭, ইরওয়াহ ৬/২৬৪, রওদুন নাদীর ৩৫৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪৪. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রজম সম্পর্কিত আয়াত এবং বয়স্ক লোকেরও দশ ঢোক দুধপান সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হয়েছিল, যা একটি সহীফায় [লিখিত] আমার খাটের নিচে সংরক্ষিত ছিল। যখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইন্তিকাল করেন এবং আমরা তাহাঁর ইন্তিকালে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লাম, তখন একটি ছাগল এসে তা খেয়ে ফেলে। {১৯৪৪}

{১৯৪৪} মাজাহ ১৯৪৪ সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৫২, নাসাঈ ৩৩০৭, ২০৬২, মুয়াত্তা মালিক ১২৯৩, দারেমী ২২৫৩, তালীক ইবনি মাজাহ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৩৭. অধ্যায়ঃ দুধপানের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরের দুধপান সম্পর্কে।

১৯৪৫. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহার ঘরে প্রবেশ করেন, তখন তাহার নিকট এক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলো। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ এ ব্যক্তি কে? আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমার ভাই। তিনি বলেনঃ তোমরা লক্ষ্য রাখবে যে, কাকে তোমরা অন্দর মহলে প্রবেশ করাচ্ছো। কেননা সেই দুধপানই ধর্তব্য যা ক্ষুধা নিবারণ করে [অর্থাৎ দুগ্ধপোষ্য শিশুর দুধপানই ধর্তব্য]। {১৯৪৫}

{১৯৪৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৬৪৭, ৫১০২, মুসলিম ১৪৫৫, নাসাঈ ৩৩১২, আবু দাউদ ২০৫৮, দারেমী ২২৫৬, সহীহ আবু দাউদ ১৭৯২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪৬. আবদুল্লাহ ইবনিয যুবায়র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, দুধপান সেটাই গ্রহণযোগ্য [যা খাদ্যনালী ভেদ করে] পাকস্থলী পূর্ণ করে [অর্থাৎ শিশুর দুধপানই ধর্তব্য]। {১৯৪৬}

{১৯৪৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ২১৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তাহার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪৭. যায়নাব বিনতু আবু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সকল স্ত্রী আয়িশা [রাদি.] -এর সাথে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন এবং তাহার মত প্রত্যাখান করেন যে, সালেমের মত বয়স্ক পুরুষ দুধপান করিলে তাতে দুধপানজনিত নিষিদ্ধতা প্রতিষ্টিত হইবে এবং সে তাহাদের নিকট প্রবেশ করিতে পারবে [তাহাদের মতে তা কর্যকর হইবে না]। তাহারা আরও বলেন, এটা হয়তো কেবল সালেমের একার জন্য প্রযোজ্য [খাস] ছিলো। {১৯৪৭}

{১৯৪৭} মুসলিম ১৪৫৪, নাসাঈ ৩৩২৫, আহমাদ ২৬১২০, ইরওয়াহ ২১৫১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তাহার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৩৮. অধ্যায়ঃ পুরুষের দুধ ।

১৯৪৮. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার দুধ সম্পর্কীয় চাচা আফ্‌লাহ বিন আবু কুআয়স পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর ভেতর বাড়িতে আমার কাছে আসতে অনুমতি চাইলেন। কিন্তু আমি তাহাকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। ইত্যবসরে নবী [সাঃআঃ] আমার নিকট এসে বলেনঃ সে তোমার চাচা তাহাকে আসতে অনুমতি দাও। আমি বললাম, আমাকে তো স্ত্রীলোকটি দুধপান করিয়েছে, পুরুষ লোকটি তো দুধপান করায়নি! তিনি বলেনঃ তোমার উভয় হাত বা তোমার ডান হাত ধুলি ধুসরিত হোক। {১৯৪৮}

{১৯৪৮} মাজাহ ১৯৪৯ সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৬৪৪, ২৬৪৬, ৪৭৯৬, ৫০৯৯, ৫১০৩, ৫২৩৯, ৬১৫৬, মুসলিম ১৪৪৪, ১৪৪৫, তিরমিজি ১১৪৮, নাসাঈ ৩৩০১, ৩৩১৩, ৩৩১৪, ৩৩১৫, ৩৩১৬, ৩৩১৭, ৩৩১৮, আবু দাউদ ২০৫৭, আহমাদ ২৩৫৩৪, ২৩৫৬৫, ২৩৫৮২, আহমাদ ২৪৯১৫, ২৫০৯২, ২৫১২৩, ২৫২৯৫, ২৫৮০২, মুয়াত্তা মালিক ১২৭৭, ১২৭৮, ১২৭৯, দারেমী ২২৪৮, ইরওয়াহ ১৮৯৩, সহীহ আবু দাউদ ১৭৯৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৪৯. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার দুধ সম্পর্কীয় চাচা আমার ভেতর বাড়িতে আসার অনুমতি চাইলেন, কিন্তু আমি তাহাকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমার চাচাকে তোমার নিকট আসার অনুমতি দাও। আমি বললাম, আমাকে তো স্ত্রীলোকটি দুধপান করিয়েছে, পুরুষ লোকটি তো দুধপান করায়নি! তিনি আবার বললেনঃ তাহাকে তোমার নিকট আসার অনুমতি দাও। {১৯৪৯}

{১৯৪৯} মাজাহ ১৯৪৯ সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৬৪৪, ২৬৪৬, ৪৭৯৬, ৫০৯৯, ৫১০৩, ৫২৩৯, ৬১৫৬, মুসলিম ১৪৪৪, ১৪৪৫, তিরমিজি ১১৪৮, নাসাঈ ৩৩০১, ৩৩১৩, ৩৩১৪, ৩৩১৫, ৩৩১৬, ৩৩১৭, ৩৩১৮, আবু দাউদ ২০৫৭, আহমাদ ২৩৫৩৪, ২৩৫৬৫, ২৩৫৮২, আহমাদ ২৪৯১৫, ২৫০৯২, ২৫১২৩, ২৫২৯৫, ২৫৮০২, মুয়াত্তা মালিক ১২৭৭, ১২৭৮, ১২৭৯, দারেমী ২২৪৮, রওয ৭৫৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৩৯. অধ্যায়ঃ কারো বিবাহ বন্ধনে দু [সহোদর] বোন থাকা অবস্থায় সে ইসলাম গ্রহণ করিলে।

১৯৫০. আদ-দায়লামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন আমার নিকট দু [সহোদর] বোন ছিলো, যাদেরকে আমি জাহিলী যুগে একত্রে বিবাহ করেছিলাম। তিনি বলেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে তাহাদের একজনকে তালাক দিয়ে পৃথক করে দাও। {১৯৫০}

{১৯৫০} তিরমিজি ১১২৯, আবু দাউদ ২২৪৩, বায়হাকী ৭/১২৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইসহাক বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল জুরজানী বলেন, তাহার সানাদ মা মাতান কোনটিরই কেউ অনুসরণ করেননি। আবু বকর আল বুরকানী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মাতরুক বা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু বকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু ইয়ালা আল খালীলী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৭, ২/৪৪৬ নং পৃষ্ঠা] ২. আবু খিরাশ আর-রুকায়নী সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার পরিচয় সম্পর্কে জানা যায় না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৩৪০, ৩৩/২৭৮ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি হাসান কিন্তু ইসহাক বিন আবদুল্লাহ ও আবু খিরাশ আর-রুকায়নী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৮৫ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি জাল, ১৬ টি অধিক দুর্বল, ১৮ টি দুর্বল, ৩৭ টি হাসান, ১৩ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১১২৯, ১১৩০, আবু দাউদ ২২৪৩, আহমাদ ১৭৫৭৯, ১৭৫৮০, দারাকুতনী ৩৬৫৩, ৩৬৫৪, ৩৬৫৬, ৩৬৫৭, ৩৬৫৮, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১২৬২৭ ইত্যাদি।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯৫১. ফায়রূয আদ-দায়লামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং আমার বিবাহে দু [সহোদর] বোন রয়েছে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলেনঃ তোমার ইচ্ছেমত এদের একজনকে তালাক দিয়ে পৃথক করে দাও। {১৯৫১}

{১৯৫১} তিরমিজি ১১২৯, ১১৩০, আবু দাউদ ২২৪৩, ইরওয়াহ ৬/৩৩৪-৩৩৫, সহীহ আবু দাউদ ১৯৪০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তাহার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৪০. অধ্যায়ঃ চারের অধিক সংখ্যক স্ত্রী থাকা অবস্থায় কেউ ইসলাম গ্রহণ করিলে ।

১৯৫২. কায়স ইবনিল হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করলাম এবং তখন আমার আটজন স্ত্রী ছিল। আমি নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তাহাঁকে জানালাম। তিনি বলেনঃ তাহাদের মধ্যে তোমার পছন্দমত চারজনকে রেখে দাও। {১৯৫২}

{১৯৫২} আবু দাউদ ২২৪১, ইরওয়াহ ১৮৮৫, সহীহ আবী, দাউদ ১৯৩৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি আবু লায়লা সম্পর্কে ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, আমি তাহার চেয়ে দুর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন ব্যাক্তি আর কাউকে দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি জইফ বা দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল। ইবনি মাঈন বলেন, সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪০৬, ২৫/৬২২ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৯৫৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, গায়লান বিন সালামাহ যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তাহার দশজন স্ত্রী ছিলো। নবী [সাঃআঃ] তাহাঁকে বলেনঃ তুমি তাহাদের মধ্যে চারজনকে রাখো। {১৯৫৩}

{১৯৫৩} তিরমিজি ১১২৮, আহমাদ ৪৫৯৫, ৪৬১৭, ৫০০৭, ৫৫৩৩, মুয়াত্তা মালিক ১৪৪৩, ইরওয়াহ ১৮৮৩, মিশকাত ৩১৭১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৪১. অধ্যায়ঃ বিবাহের শর্তাবলী পূরণ করিতে হইবে ।

১৯৫৪. উকবা বিন আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে শর্ত পূরণ করা অধিক সংগত তা হলো, যাহার বিনিময়ে তোমরা [নারীর] লজ্জাস্থান হালাল করেছো। {১৯৫৪}

{১৯৫৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৭২১, ৫১৫১, মুসলিম ১৪১৮, তিরমিজি ১১২৭, নাসাঈ ৩২৮১, ৩২৮২, আবু দাউদ ২১৩৯, আহমাদ ১৬৫৫১, ১৬৯১১, দারেমী ২২০৩, ইরওয়াহ ১৮৯২, সহীহ আবু দাউদ ১৮৫৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল হামিদ বিন জাফার সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন, তাহার শীয়া মতাবলম্বী হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সুফইয়ান আস-সাওরী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭০৯, ১৬/৪১৬ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৫৫. আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের পূর্বে যে উপঢৌকন, হাদিয়া [উপহার] ইত্যাদি দেয়া হয় তা নারীর প্রাপ্য এবং বিবাহের পর দেয় বস্তুসমূহ সেই পাবে, যাকে তা দান করা হয় বা যাহার জন্য তা আনা হয়। কোন ব্যক্তির সর্বাধিক অনুগ্রহ পাওয়ার অধিকারী হলো তাহার বোন অথবা তাহার কন্যা। {১৯৫৫}

{১৯৫৫} নাসাঈ ৩৩৫৩, আবু দাউদ ২১২৯, আহমাদ ৬৬৭০, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৪/৩৬, যঈফাহ ১০০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আলী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হুজ্জাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ রাবীর সদৃস। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা] স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯/৪২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি নিজের দাসীকে আযাদ করার পর বিবাহ করে ।

১৯৫৬. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাহার একটি দাসী আছে, সে তাহাকে উত্তমরূপে আদব-কায়দা শেখায় এবং শিক্ষা-দীক্ষা দান করে, অতঃপর আযাদ করে বিবাহ করে, তাহার জন্য রয়েছে দুটি পুরস্কার। আর আহলে কিতাবের কোন ব্যক্তি তাহার নবী [সাঃআঃ] এর উপর ঈমান আনার পর মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর উপর ঈমান আনলে, তাহার জন্যও রয়েছে দুটি পুরস্কার। তদ্রুপ কোন ক্রীতদাস তাহার উপর ধার্য আল্লাহর হক ও তাহার মনিবের হক আদায় করিলে, তাহার জন্যও রয়েছে দুটি পুরস্কার। অধস্তন রাবী সালেহ [রঃ] বলেন, শাবী [রঃ] বলেছেন, আমি কোন বিনিময় ছাড়াই তোমাকে এ হাদিসটি জানিয়ে দিলাম। অথচ এর চেয়ে ক্ষুদ্র একটি হাদিসের জন্য অনেকেই মাদীনাহ পর্যন্ত সফর করতো। {১৯৫৬}

{১৯৫৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৯৭, ২৫৪৪, ২৫৪৭, ২৫৫১, ৩০১১, ৩৪৪৬, ৫০৮৩, মুসলিম ১৫৪, তিরমিজি ১১১৬, নাসাঈ ৩৩৪৪, ৩৩৪৫, আবু দাউদ ২০৫৩, আহমাদ ১৯০৩৮, ১৯১০৫, ১৯১৩৭, ১৯২১৩, দারেমী ২২৪৪, সহীহ আবু দাউদ ১৭৯২, ইরওয়াহ ১৮২৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৫৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সাফিয়্যা [রাদি.] প্রথমে দিহ্‌য়া আল-কালবী [রাদি.] -এর ভাগে পড়েছিলেন। পরে তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর অধীনে আসেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বিবাহ করেন এবং তাহাকে দাসত্বমুক্ত করাকে তাহার মাহর গণ্য করেন। অধস্তন রাবী হাম্মাদ বলেন, আবদুল আযীয [রাদি.] ছাবিত [রাদি.]-কে বলিলেন, হে আবু মুহাম্মাদ! আপনি কি আনাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.]-কে কী মাহর দিয়াছিলেন? আনাস [রাদি.] বলেন, তাহার দাসত্ব মুক্তিই ছিল তাহার মাহর। {১৯৫৭}

{১৯৫৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৭১, ৯৪৭, ২২২৮, ২২৩৫, ২৮৯৩, ৪২০০, ৪২০১, ৪২১১, ৪২১২, ৪২১৩, ৫০৮৫, ৫০৮৬, ৫১৫৯, ৫১৬৯, ৬৩৬৩,৫৩৮৭ মুসলিম ১৩৬৫, তিরমিজি ১১১৫, নাসাঈ ৩৩৪২, ৩৩৪৩, ৩৩৮০, ৩৩৮১, ৩৩৮২, আবু দাউদ ২০৫৪, ২৯৯৫, ২৯৯৬, ২৯৯৮, আহমাদ ১১৫৪১, ১১৫৮১, ১২২০৫, ১২২৭৬, ১২৩৩২, ১২৪৫৫, ১২৬৮৬, ১৩০৯৪, ১৩১৩৩, ১৩১৬৩, ১৩৫৭০, ১৩৬৮৯, দারেমী ২০৪২, ২২৪৩, ইরওয়াহ্ ১৮২৫, সহীহ, আবু দাউদ ১৭৯৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৫৮. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.]-কে আযাদ করেন এবং তাহাঁর দাসত্বমুক্তকে তাহার মাহর নির্ধারণ করে তাহাকে বিবাহ করেন। {১৯৫৮}

{১৯৫৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৪৩. অধ্যায়ঃ মনিবের অনুমতি ব্যতীত গোলামের বিবাহ করা ।

১৯৫৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, গোলাম তাহাঁর মনিবের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করিলে সে ব্যভিচারী। {১৯৫৯}

{১৯৫৯} মাজাহ ১৯৬০, দারেমী ২২৩৩, ২২৩৪, ইরওয়াহ ১৯৩৩, ইরওয়া ১৯৩৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯৬০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে গোলামই তাহাঁর মনিবদের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করে, সে যেনাকারী। {১৯৬০}

{১৯৬০} ইবনি মাজাহ ১৯৫৯, দারেমী ২২৩৩, ২২৩৪, ইরওয়াহ ৬/৩৫৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মানদাল বিন আলী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৭৬, ২৮/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি হাসান কিন্তু মানদাল বিন আলী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১০ টি অধিক দুর্বল, ২১ টি দুর্বল, ১৯ টি হাসান, ১২ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১১১১, ১১১২, আবু দাউদ ২০৭৮, ২০৭৯, দারেমী ২২৩৩, ২২৩৪, আহমাদ ১৩৮০০, ১৪৬১৩, ১৪৬৭৩, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১২৯৭৯, মুজামুল আওসাত ৪৭৯৭ ইত্যাদি।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৪৪. অধ্যায়ঃ মুতআ বিবাহ নিষিদ্ধ ।

১৯৬১. আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বার এলাকা বিজয়ের দিন মহিলাদের সাথে মুতআ [বিবাহ] করিতে এবং গৃহপালিত গাধার গোসত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৯৬১}

{১৯৬১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪২১৬, ৫৫২৩, মুসলিম ১৪০৭, তিরমিজি ১১২১, ১৭৯৪, নাসাঈ ৩৩৬৫, ৩৩৬৬, ৩৩৬৭, ৪৩৩৪, ৪৩৩৫, আহমাদ ৫৯৩, ৮১৪, ১২০৭, মুয়াত্তা মালিক ১১৫১, দারেমী ১৯৯০, ২১৯৭, ইরওয়াহ ৬/৩১৭, রওদুন নাদীর ৭০৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৬২. সাবরাহ বিন মাবাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! স্ত্রীহীন অবস্থায় থাকা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেনঃ তাহলে তোমরা এসব মহিলার সাথে মুতআ করো [সাময়িকভাবে উপকৃত হও]। অতএব আমরা তাহাদের সান্নিধ্যে পৌঁছলাম, কিন্তু তাহারা আমাদের এবং তাহাদের মাঝে নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ ব্যতিত আমাদের সঙ্গে বিবাহ বসতে অস্বীকার করিল। সাহাবীগণ বিষয়টি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উল্লেখ করিলে তিনি বলেনঃ তাহলে তোমাদের ও তাহাদের মাঝে মেয়াদ নির্দিষ্ট করে নাও। অতএব আমি ও আমার এক চাচাত ভাই [এই উদ্দেশে] বের হলাম। তাহাঁর সাথে ছিল একটি চাদর এবং আমার সাথেও ছিল একটি চাদর। তাহার চাদরটি ছিল আমার চাদর থেকে বেশি সুন্দর। আর আমি ছিলাম তাহার চাইতে অধিক যুবক। আমরা দুজন এক নারীর নিকট আসলাম। সে বলল, চাদর দুটি তো একই মানের। অতঃপর আমি তাহাকে বিবাহ করলাম এবং তাহার কাছেই ঐ রাত কাটালাম। ভোরে আমি ফিরে এলাম, তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাবা ঘরের দরজা ও রুকনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলছিলেনঃ হে লোক সকল! আমি তোমাদের মুতআ বিবাহের অনুমতি দিয়াছিলাম। এখন তোমরা শুনে নাও যে, আল্লাহ্‌ কিয়ামাত পর্যন্ত এই প্রকার বিবাহ হারাম করিয়াছেন। অতএব তোমাদের কারো কাছে এ ধরণের কোন নারী থাকলে সে যেন তাহাকে ছেড়ে দেয় এবং তোমরা তাহাদেরকে যা কিছু দিয়েছো তা থেকে কিছুই ফেরত নিও না। {১৯৬২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ [আরবি] শব্দ ছাড়া সহীহ, তবে সঠিক হলোঃ [আরবি]।{১৯৬২} মুসলিম ১৪০৬, নাসাঈ ৩৩৬৮, আবু দাউদ ২০৭২, ২০৭৩, আহমাদ ১৪৯১৩, ১৪৯২১, দারেমী ২১৯৫, ২১৯৬, ইরওয়াহ ১৯০১, ১৯০২, সহীহাহ ৩৮১, সহীহ আবু দাউদ ১৮০৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ, কিন্তু বিদায় হাজ্জের কথাটি শায, মাক্কাহ বিজয়ে কথাটি সংরক্ষিত। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযিয বিন উমার সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাফস উমার বিন শাহীন ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু মুসহির আল গাসসানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস ভুল সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবুল আলা বিন মুসহির বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৬৪, ১৮/১৭৩ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য

১৯৬৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] খলীফা নির্বাচিত হওয়ার পর লোকেদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে মাত্র তিন দিন মুতআ বিবাহের অনুমতি দিয়াছিলেন। এরপর তিনি তা হারাম ঘোষণা করেন। আল্লাহ্‌র শপথ! আমি যদি কোন বিবাহিত পুরুষের ব্যাপারে জানতে পারি যে সে মুতআ বিবাহ করে তবে আমি প্রস্তরাঘাতে তাহাকে মৃত্যুদণ্ড দিবো। তবে সে যদি আমার সামনে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করিতে পারে, যারা সাক্ষ্য দিবে যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুতআ বিবাহ হারাম ঘোষণার পর তা আবার হালাল করিয়াছেন। {১৯৬৩}

{১৯৬৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তালীক ইবনি মাজাহ্। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আবান বিন আবু হাযিম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আহমাদ বিন শুয়াব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিসের ব্যাপারে সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৪০, ২/১৪ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৪৫. অধ্যায়ঃ ইহরাম অবস্থায় কোন ব্যক্তির বিবাহ করা ।

১৯৬৪. মায়মূনাহ বিনতুল হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে হালাল [ইহরামমুক্ত] অবস্থায় বিবাহ করেন। রাবী ইয়াযীদ বিন আসাম্ম বলেন, মায়মূনাহ [রাদি.] ছিলেন আমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] -এর খালা। {১৯৬৪}

{১৯৬৪} মুসলিম ১৪১১, তিরমিজি ৮৪৫, আবু দাউদ ১৮৪৩, আহমাদ ২৬২৮৮, ২৬৩০১, দারেমী ১৮২৪, হাকিম ফিল-মুসতাদরাক ২/৫৯, রওদুন নাদীর ৪৬৭, সহীহ আবু দাউদ ১৬১৬, ইরওয়াহ ৪/২২৭-২২৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৬৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করেন। {১৯৬৫}

{১৯৬৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮৩৭, ৪২৫৯, ৫১১৪, মুসলিম ১৪১০, তিরমিজি ৮৪২, ৮৪৩, ৮৪৪, নাসাঈ ২৮৩৭, ২৮৩৮, ২৮৩৯, ২৮৪০, ২৮৪১, ৩২৭১, ৩২৭২, ৩২৭৩, ৩২৭৪, আবু দাউদ ১৮৪৪, আহমাদ ২৩৮৯, ২৪৩৩, ২৪৮৮, ২৫৫৬, ২৫৭৬, ২৫৮৪, ২৯৭২, ৩০৪৪, ৩০৬৫, ৩০৯৯, ৩২২৩, ৩২৭২, ৩৩০৯, ৩৩৯০, ৩৪০২, দারেমী ১৮২২, ইরওয়াহ ৪/২২৭-২২৮, সহীহ আবু দাউদ ১৬১৭-১৬১৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ শায।হাদিস এর তাহকিকঃ শায

১৯৬৬. উসমান বিন আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ইহরাম অবস্থায় কোন ব্যক্তি নিজে বিবাহ করিবে না, অন্যকেও বিবাহ করাবে না এবং বিবাহের প্রস্তাবও দিবে না। {১৯৬৬}

{১৯৬৬} মুসলিম ১৪০৯, তিরমিজি ৮৪০, নাসাঈ ২৮৪২, ২৮৪৩, ২৮৪৪, ৩২৭৫, ৩২৭৬, আবু দাউদ ১৮৪১, আহমাদ ৪০৩, ৪৬৪, ৪৬৮, ৪৯৪, ৪৯৮, ৫৩৫, মুয়াত্তা মালিক ৭৮০, দারেমী ১৮২৩, ২১৯৮, ইরওয়াহ ১০৩৭, সহীহ আবু দাউদ ১৬১৪-১৬১৫, রওদুন নাদীর ৪৬৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৪৬. অধ্যায়ঃ বিবাহের বর ও কনের সমতা [কুফু] ।

১৯৬৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এলের চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট,তাহার সাথে [তোমাদের মেয়েদের] বিবাহ দাও। তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে। {১৯৬৭}

{১৯৬৭} তিরমিজি ১০৮৪, ইরওয়াহ ১৮৬৮, সহীহাহ ১০২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল হামিদ বিন সুলায়মান আল-আনসারী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, যারা হাদিস বর্ণনায় ভুল ও সানাদের পরিবর্তন করে তিনি তাদেরে অন্তর্ভুক্ত। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী ও সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭১৭, ১৬/৪৩৪ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি হাসান কিন্তু আবদুল হামিদ বিন সুলায়মান আল-আনসারী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১১ টি দুর্বল, ৮ টি হাসান, ১৩ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১০৮৪, ১০৮৫, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১০৩২৫, মুজামুল আওসাত ৪৪৬, ৭০৭৪ ইত্যাদি।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯৬৮. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে উত্তম মহিলা গ্রহণ করো এবং সমতা [কুফু] বিবেচনায় বিবাহ করো, আর বিবাহ দিতেও সমতাহার প্রতি লক্ষ্য রাখো। {১৯৬৮}

{১৯৬৮} সহীহাহ ১০৬৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি হারিস বিন ইমরান আল-জাফারী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার রেওায়াতে তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০৩৫, ৫/২৬ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি হাসান কিন্তু হারিস বিন ইমরান আল-জাফারী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১ টি দুর্বল, ৫ টি হাসান হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ৩৭৪৬, আল-ফাওয়ায়িদ ১৫২৭, কিতাবুল ইয়াল ১৩০। ১৩১ ইত্যাদি।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৪৭. অধ্যায়ঃ স্ত্রীদের সাথে সম আচরণ এবং পালা বণ্টন।

১৯৬৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাহার দুজন স্ত্রী আছে, আর সে তাহাদের একজনের চেয়ে অপরজনের প্রতি বেশী ঝুঁকে পড়ে, সে কিয়ামাতের দিন তাহার [দেহের] এক পার্শ্ব পতিত অবস্থায় উপস্থিত হইবে। {১৯৬৯}

{১৯৬৯} তিরমিজি ১১৪১, নাসাঈ ৩৯৪২, আবু দাউদ ২১৩৩, আহমাদ ৮৩৬৩, ৯৭৪০, দারেমী ২২০৬, ইরওয়াহ ২০১৭, মিশকাত ৩২৩৬, গয়াতুল মারাম ২২৯, সহীহাহ ২০৭৭, সহীহ আবু দাউদ ১৮৫১, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৭০. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে রওয়ানা হলে তাহাঁর স্ত্রীদের মধ্যে [কে তাহাঁর সাথে যাবেন তা নির্ধারণের জন্য] লটারির ব্যবস্থা করিতেন। {১৯৭০}

{১৯৭০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৫৯৪, ৪১৪১, ৫২১১, মুসলিম ২৪৪৫, ২৭৭০, আবু দাউদ ২১৩৮, আহমাদ ২৪৩১৩, ২৪৩৩৮, ২৫০৯৫, ২৫৭৮২, দারেমী ২২০৮, ২৪২৩, সহীহ আবু দাউদ ১৮৫৫, গায়াতুল মারাম ১৬০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন ইয়ামান সম্পর্কে আবু বকর বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি হাদিস খুব দ্রুত মুখস্ত করিতে পারেন আবার খুব দ্রুত ভুলে যান। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি একাধিক হাদিসে ভুল করিয়াছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হুজ্জাহ নয়, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা ও তাহার হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুলের কারণে তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহন করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি একজন সত্যবাদী ও আবিদ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৫৩, ৩২/৫৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৭১. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফের সাথে [সব কিছু] সমানভাবে বণ্টন করিতেন, অতঃপর বলিতেনঃ হে আল্লাহ! এ হলো আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমার কাজ। যে বিষয়ে তোমার ক্ষমতা আছে, আমার সামর্থ্য নাই, সে বিষয়ে আমাকে তিরস্কার করো না। {১৯৭১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ তবে প্রথম অংশটি হাসান।{১৯৭১} তিরমিজি ১১৪০, নাসাঈ ৩৯৪৩, আবু দাউদ ২১৩৪, আহমাদ ২৪৫৮৭, দারেমী ২২০৭, ইরওয়াহ ৭/৮৩,৮৪৮৬, জইফ আবু দাউদ ৩৭০। কিন্তু প্রথম দিক হাসান, ইরওয়াহ ২০১৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ কিন্তু প্রথম দিক হাসান।হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য

৯/৪৮. অধ্যায়ঃ যে মহিলা তাহার পালার দিনটি তাহার সতীনকে দান করে।

১৯৭২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সাওদা বিনতু যামআহ [রাদি.] বার্ধক্যগ্রস্ত হয়ে পড়লে তিনি তাহার নির্ধারিত পালার দিনটি আয়িশা [রাদি.]-কে হেবা করেন। অতএব রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাওদা [রাদি.] -এর দিনটি আয়িশা [রাদি.] এর ভাগে ফেলতেন। {১৯৭২}

{১৯৭২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫২১২, মুসলিম ১৪৬৩, আবু দাউদ ২১৩৮, আহমাদ ২৩৮৭৪, ২৩৯৫৬, ২৪৩৩৮, ইরওয়াহ ২০২০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৭৩. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

কোন কারণে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা বিনতু হুয়াই [রাদি.] এর উপর অসন্তুষ্ট হলে তিনি [সাফিয়্যা] বলেন, হে আয়িশা! তুমি কি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আমার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিবে? আমি আমার পালার দিনটি তোমাকে দিবো। আয়িশা [রাদি.] বলেন, হ্যাঁ। এরপর তিনি যাফরান রংয়ে রঞ্জিত তাহার একটি ওড়না নিলেন এবং তাতে পানি ছিটিয়ে দিলেন, যাতে এর ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পাশে বসলে তিনি বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি আমার নিকট থেকে সরে যাও। এটা তোমার পালার দিন নয়। আয়িশা [রাদি.] বলেন, এটি হচ্ছে আল্লাহর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন। তিনি তাহাঁকে ব্যাপারটি খুলে বলেন। তাতে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.] এর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান। {১৯৭৩}

{১৯৭৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৭/৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯৭৪. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, “আপোষ-নিষ্পত্তিই উত্তম” [৪ঃ১২৮] ] আয়াত এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে নাযিল হয়, যাহার বিবাহধীনে এক মহিলা দীর্ঘদিন যাবত ছিল এবং সে তাহার স্বামীর ঔরসে কয়েকটি সন্তানও প্রসব করেছিল। স্বামী তাহাঁকে তালাক দিয়ে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করিতে চাইলে মহিলাটি এ শর্তে স্বামীকে সম্মত করিল যে, সে তাহার বিবাহ বন্ধনে থাকিবে এবং তাহাকে কোন পালার দিন দিবে না। {১৯৭৪}

{১৯৭৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আবু দাউদ ১৮৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৯/৪৯. অধ্যায়ঃ বিবাহ দেয়ার জন্য সুপারিশ করা।

১৯৭৫. আবু রুহ্‌ম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুজনের মধ্যে বিবাহ বন্ধনের সুপারিশই হলো সর্বোত্তম সুপারিশ। {১৯৭৫}

{১৯৭৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/৩০৫, যঈফাহ ৩২০৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুআবিয়াহ বিন ইয়াহইয়া সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আবু হাতিম আর-রাযী, আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবুল কাসিম আল-বাগাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৬৯, ২৮/২২৪ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯৭৬. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উসামাহ [রাদি.] পা পিছলে ঘরের দরজার চৌকাঠে পড়ে গেলে তাহার মুখমণ্ডল আহত হয়। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [আমাকে] বলেনঃ তাহার চেহারা থেকে রক্ত পরিস্কার করে দাও। আমি তা অপছন্দ করিলে তিনি নিজেই তাহার মুখমণ্ডল থেকে রক্ত মুছে পরিস্কার করে দিলেন, অতঃপর বলেনঃ উসামাহ মেয়ে হলে আমি অবশ্যই তাহাঁকে অলঙ্কার ও পোশাকে এতটা সজ্জিত করতাম যেমন বিবাহে পর্যাপ্ত খরচ করা হয়। {১৯৭৬}

{১৯৭৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ১০১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ আল-বাহী সম্পর্কে ইবনি হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৭৭, ১৬/৩৪১ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৫০. অধ্যায়ঃ স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ করা।

১৯৭৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজের পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি তোমাদের চেয়ে আমার পরিবারের কাছে অধিক উত্তম। {১৯৭৭}

{১৯৭৭} সহীহাহ ২৮৫। আত-তালীকুর রাগীব ৩/৭২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উমারাহ বিন সাওবান সম্পর্কে আবুল হাসান ইবনিল কাত্তান বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার কিছু অবস্থা অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আবদুল হাক বিন আব্দুর রহমান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৭৭, ২১/২৩১ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু উমারাহ বিন সাওবান এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ৩৮৯৫, দারেমী ২২৬০, মুজামুল আওসাত ৪৪২০, ৬১৪৫, আল-ফাওয়ায়িদ ৩০৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৭৮. আব্দুল্লাহ বিন আম্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম লোক তাহারাই, যারা তাহাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। {১৯৭৮}

{১৯৭৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহিহাহ ২৮৫, আদাবুয যিফাফ ১৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজুনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হুজ্জাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ রাবীর সদৃশ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৭৯. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হলে তাহাঁকে অতিক্রম করে যাই। {১৯৭৯}

{১৯৭৯} আবু দাউদ ২৫৭৮, আহমাদ ২৩৫৯৮, ২৪৪৬০, ২৫৭২০, ২৫৭৪৫. ২৫৮৬৬, ইরওয়াহ ১৫০২, সহীহাহ ১৩১, আদাবুয যিফাফ ১৭১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮০. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.]-কে বিবাহ করে মদিনায় নিয়ে এলে আনসারী মহিলাগণ এসে তাহার ব্যাপারে [আমাকে] অবহিত করে। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি বেশভূষা পরিবর্তন করে এবং মুখমণ্ডল আবৃত করে তাহাকে দেখিতে গেলাম। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমাকে চিনে ফেলেন। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমার দিকে লক্ষ্য করিলে আমি দ্রুত সরে যেতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু তিনি আমাকে ধরে ফেলে কোলে তুলে নেন এবং বলেনঃ কেমন দেখলে? আমি বললাম,আমাকে ছেড়ে দিন, ইয়াহূদী নারীদের মধ্যকার এক ইয়াহূদিনী। {১৯৮০}

{১৯৮০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তালীক ইবনি মাজাহ্। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুবারাক বিন ফাদালাহ সম্পর্কে আবু বাকার আল-বাযযাহার বলেন, তাহার হাদিস বর্ণনায় কোন দোষ নেই। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক তাদলীস করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭৬৬, ২৭/১৮০ নং পৃষ্ঠা] ২. আলী বিন যায়দ বিন জুদআন সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল আজালী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৭০, ২০/৪৩৪ নং পৃষ্ঠা] ৩. উম্মু মুহাম্মাদ সম্পর্কে ঈমাম তিরমিজি বলেন, তাহার হাদিস হাসান। ঈমাম যাহাবী ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯৮১. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার অজ্ঞাতে হঠাৎ যায়নব [রাদি.] অনুমতি ছাড়াই রাগান্বিত অবস্থায় আমার ঘরে আসলেন, অতঃপর বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আবু বকর [রাদি.] -এর এই ছোট্ট মেয়েটি যখন আপনার সামনে তাহার দুহাত নাড়াচাড়া করে, তখন তাই কি আপনার জন্য যথেষ্ট? অতঃপর যায়নাব [রাদি.] আমার দিকে ফিরলে আমি তাহার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম। অবশেষে নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ লও এবং তাহাঁর থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করো। অতএব আমি তাহাঁর মুখোমুখী হয়ে তাহাঁকে জব্দ করলাম, এমনকি আমি দেখলাম যে,তাহার মুখ শুকিয়ে গেছে। তিনি আমার কোন কথা প্রতিউত্তর করিতে পারলেন না। আমি নবী [সাঃআঃ]-কে দেখলাম, তাহাঁর চেহারা ঝলমল করছে। {১৯৮১}

{১৯৮১} আহমাদ ২৪০৯৯, সহীহাহ ১৮৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ আল-বাহী সম্পর্কে ইবনি হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৭৭, ১৬/৩৪১ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে পুতুল নিয়ে খেলা করতাম। তিনি আমার বান্ধবীদেরকে আমার সাথে খেলা করার জন্য আমার নিকট পাঠিয়ে দিতেন। {১৯৮২}

{১৯৮২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৬১৩০, মুসলিম ২৪৪০, আবু দাউদ ৪৯৬১, আহমাদ ২৩৭৭৭, ২৪৮০৬, ২৫৪৩০, ২৫৪৩৭, আল আদাব ১০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উমার বিন হাবীব আল-কাদী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার থেকে আমরা একটি হরফও লিখিনি। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪২১১, ২১/২৯০ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু উমার বিন হাবীব আল-কাদী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬১ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১২ টি অধিক দুর্বল, ২৩ টি দুর্বল, ১১ টি হাসান, ১৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ৬১৩০, মুসলিম ২৪৪৩, আবু দাউদ ৪৯৩১, আহমাদ ২৩৭৭৬, ২৪৮০৫, ২৫৪২৯, ২৫৪৩৬, শারহুস সুন্নাহ ২২৫৭, ২৩৩৬, ২৩৩৭, আল-ইয়াল ৫৫৫, ৫৫৬, ৫৫৯ ইত্যাদি।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৫১. অধ্যায়ঃ স্ত্রীদের প্রহার করা নিকৃষ্ট কাজ।

১৯৮৩. আবদুল্লাহ বিন যামআহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণ দিলেন, অতঃপর মহিলাদের উল্লেখ করে তাহাদের ব্যাপারে লোকজনকে উপদেশ দিলেন। তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ কেন তাহার স্ত্রীকে দাসীর মত বেত্রাঘাত করে? অথচ দিনের শেষেই সে আবার তাহাঁর শয্যাসংগী হয়! {১৯৮৩}

{১৯৮৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৯৪২, ৫২০৪, মুসলিম ২৮৫৫, তিরমিজি ৩৩৪৩, আহমাদ ১৫৭৮৮, দারেমী ২২২০, গায়াতুল মারাম ২৫২, মুখতাসার শামাইল ২৯৯, ইরওয়াহ ২০৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮৪. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনও তাহাঁর কোন খাদেমকে অথবা তাহাঁর কোন স্ত্রীকে মারপিট করেননি এবং নিজ হাতে অপর কাউকেও প্রহার করেননি। {১৯৮৪}

{১৯৮৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৫৬০, ৬১২৬, ৬৭৮৬, ৬৮৫৩, মুসলিম ২৩২৮, আবু দাউদ ৪৭৮৫, ৪৭৮৬, আহমাদ ২৩৫১৪, ২৪৩০৯, ২৪৪৬৪, ২৫৪২৫, ২৭৬৫৮, মুয়াত্তা মালিক ১৬৭১, দারেমী ২২১৮, গয়াতুল মারাম ২৫২, মুখতাসার শামাইল ২৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮৫. আবদুল্লাহ বিন আবু যূবাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ্‌র দাসীদের প্রহার করো না। অতঃপর উমার [রাদি.] নবী [রাদি.] -এর কাছে এসে বলেনঃ হে আল্লাহ্‌র রাসূল! নারীরা তো তাহাদের স্বামীদের অবাধ্যাচরণ করছে। তাই তাহাদেরকে মারার অনুমতি দিলেন এবং তাহারা প্রহিত হলো। পরে অনেক নারী রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর বাড়িতে সমবেত হলো। সকাল বেলা তিনি বলেনঃ আজ রাতে মুহাম্মদের পরিবারের সত্তুরজন মহিলা এসে তাহাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তোমরা মারপিটকারীদেরকে তোমাদের মধ্যে উত্তম হিসাবে পাবে না। {১৯৮৫}

{১৯৮৫} আবু দাউদ ২১৪৬, দারেমী ২২১৯, গায়াতুল মারাম ২৫১, সহীহ আবু দাউদ ১৮৬৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৯৮৬. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[আশআস] বলেন, আমি এক রাতে উমার [রাদি.] -এর বাড়িতে মেহমান হলাম। মধ্যরাতে উমার [রাদি.] তাহাঁর স্ত্রীকে প্রহার করিতে উঠলেন। আমি তাহাদের দুজনের মাঝে প্রতিবন্ধক হলাম। অতঃপর উমার [রাদি.] শয্যা গ্রহণ করে আমাকে বলেন, হে আশআস! তুমি আমার থেকে একটা বিষয় মনে রাখবে যা আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট শুনিয়াছি। স্বামী তাহার স্ত্রীকে প্রহার করিলে এ ব্যাপারে জওয়াবদিহি করিতে হইবে না, বিতর সালাত না পড়ে ঘুমাবে না। রাবী বলেন, আমি তৃতীয় কথাটি ভুলে গেছি। {১৯৮৬}

{১৯৮৬} আবু দাউদ ২১৪৭, ইরওয়াহ ২০-৩৪, যঈফাহ ৩৭৭৬, জইফ আল-জামি ৬২১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান আল মুলসী সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাকবুল। ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪০৩, ১৮/৩০ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯/৫২. অধ্যায়ঃ পরচুলা সংযোগকারিণী ও উল্কি অংকনকারিণী ।

১৯৮৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] সেই নারীকে অভিসম্পাত করিয়াছেন, যে কৃত্রিম চুল সংযোজন করে এবং যে তা করায় এবং যে দেহে উল্কি অংকন করে এবং যে তা করায়। {১৯৮৭}

{১৯৮৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৯৩৭, ৫৯৪০, ৫৯৪২, ৫৯৪৭, মুসলিম ২১২৪, তিরমিজি ২৭৫৯, ১৭৮৩, নাসাঈ ৫০৯৫, ৫২৫১, আবু দাউদ ৪১৬৮, আহমাদ ৪৭১০, গায়াতুল মারাম ৬৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮৮. আসমা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলল, আমার মেয়ের সদ্য বিবাহ হইয়াছে, কিন্তু রোগের কারণে তাহার মাথার চুল ঝরে গেছে। আমি কি তাহার মাথায় কৃত্রিম চুল জোড়া দিবো? রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে নারী পরচুলা সংযোজন করে এবং যে সংযোজন করায়, আল্লাহ্ তাহাদের উভয়কে অভিসম্পাত করেন। {১৯৮৮}

{১৯৮৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৯৩৫, ৫৯৩৬, ৫৯৪১, মুসলিম ২১২২, নাসাঈ ৫০৯৪, ৫২৫০, আহমাদ ২৪২৮২, ২৬৩৭৮, ২৬৩৯১, ২৬৪৩৯, গায়াতুল মারাম ৯৮-৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৮৯. আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেই সব নারীকে অভিসম্পাত করিয়াছেন, যারা অন্যের দেহে আঁকে এবং যারা নিজেদের দেহে উল্কি অংকন করায়, যারা ভ্রুর চুল উপড়ে ফেলে এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, তাহারা আল্লাহ্‌র সৃষ্টিতে পরিবর্তন করে। আসাদ গোত্রের উম্মু ইয়াকূব নাম্নী মহিলার কাছে এ হাদিস পৌঁছলে, তিনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] -এর কাছে এসে বলেন, আমি অবগত হয়েছি যে, আপনি এমন এমন কথা বলেছেন। আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বলেন, আমি তাহাদেরকে কেন অভিসম্পাত করিব না যাদেরকে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অভিসম্পাত করিয়াছেন এবং বিষয়টি আল্লাহ্‌র কিতাবে উক্ত আছে! মহিলা বলেন, আমি সম্পূর্ণ কুরআন পডেছি, কিন্তু কোথাও তো তা পাইনি। আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বলেন, তুমি খেয়াল করে তা পড়লে, অবশ্যই পেতে। তুমি কি এ আয়াত পড়োনি [অনুবাদ] ঃ “রসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে তোমরা বিরত থাকো” [সূরা হাশরঃ ৭]? মহিলা বলিলেন, হাঁ। আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ কাজ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। মহিলা বলেন, আমার মনে হয় আপনার পরিবার [স্ত্রী] এরূপ করে থাকে। তিনি বলেন, তাহলে তুমি গিয়ে লক্ষ্য করে দেখো। অতএব সে গিয়ে লক্ষ্য করিল, কিন্তু তাহার কোন লক্ষণই দেখিতে পেলো না। শেষে সে বলল, আমি এমন কিছু দেখিতে পাইনি। আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বলেন, তোমার কথা ঠিক হলে সে আমাদের সাথে একত্রে থাকতে পারতো না। {১৯৮৯}

{১৯৮৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৮৮৬, ৪৮৮৭, ৫৯৩১, ৫৯৩৯, ৫৯৪৩, ৫৯৪৮, মুসলিম ২১২৫, তিরমিজি ২৭৮২, নাসাঈ ৩৪১৬, ৫০৯৯, ৫১০২, ৫১০৭, ৫১০৮, ৫১০৯, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৪, ৫২৫৫, আবু দাউদ ৪১৬৯, আহমাদ ৩৮৭১, ৩৯৩৫, ৪০৭৯, ৪১১৮, ৪২১৮, ৪২৭১, ৪৩৩১, ৪৩৮৯, ৪৪২০, ২৬৪৭, গায়তুল মারাম ৯৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৫৩. অধ্যায়ঃ যে সময় স্ত্রীদের সাথে বাসর যাপন করা উত্তম।

১৯৯০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাকে শাওয়াল মাসে বিবাহ করেন এবং শাওয়াল মাসে আমার সাথে বাসর যাপন করেন। আর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কোন স্ত্রী তাহাঁর কাছে আমার চেয়ে অধিক প্রিয় ছিল! আয়িশাহ্ [রাদি.] নব বিবাহিতাহার সাথে তাহার স্বামীর শাওয়াল মাসেই বাসর যাপন পছন্দ করিতেন। {১৯৯০}

{১৯৯০} মুসলিম ১৪২৩, তিরমিজি ১০৯৩, নাসাঈ ৩২৩৬, আহমাদ ২৩৭৫১, ২৫১৮৮, দারেমী ২২১১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৯১. হারিস বিন হিশাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] উম্মু সালামাহ [রাদি.]-কে শাওয়াল মাসে বিবাহ করেন এবং শাওয়াল মাসেই তাহাকে তাহাঁর সহবাসে একত্র করেন। আবু বকর বিন আবদির রহমান বর্ণনায় মুরসাল। {১৯৯১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ মুরসাল।{১৯৯১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। যঈফাহ ৪৩৫০, তালীক ইবনি মাজাহ্। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ মুরসাল। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ মুরসাল

৯/৫৪. অধ্যায়ঃ স্ত্রীকে কিছু দেয়ার পূর্বে তাহার সাথে নির্জনে মিলন।

১৯৯২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক কনেকে স্বামীর কিছু [মাহ্র, উপহার ইত্যাদি] দেয়ার পূর্বেই তাহার সাথে বাসর যাপনের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য তাহাকে নির্দেশ দেন। {১৯৯২}

{১৯৯২} আবু দাউদ ২১২৮, জইফ আবু দাউদ ৩৬৬। রওদুন নাদীর ৭৬১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি হায়সাম বিন জামীল সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি হাফিয নয়, আমি আশা করি তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলেন না। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আবু হাফস উমার বিন শাহীন বলেন, তিনি সিকাহ। আবু নুআয়ম আল-আসবাহানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৬৪১, ৩০/৩৬৫ নং পৃষ্ঠা] ২. শারীক সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবুল হাসান ইবনিল কাত্তান বলেন, তিনি হাদিস তাদলীস করার দিক থেকে প্রসিদ্ধ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৩৬, ১২/৪৬২ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯/৫৫. অধ্যায়ঃ শুভ ও অশুভ আলামাত।

১৯৯৩. মিখ্মার বিন মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ অশুভ আলামাত বলিতে কিছু নেই। অবশ্য তিনটি জিনিসে শুভ আলামাত আছেঃ স্ত্রীলোক, ঘোড়া ও বাড়ি। {১৯৯৩}

{১৯৯৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ১০/২৬৫, সহীহাহ ১৯৩০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৯৪. সাহ্ল বিন সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ অশুভ আলামাত বলিতে কিছু থাকলে তা ঘোড়া, স্ত্রীলোক ও ঘরেই থাকতো। {১৯৯৪}

{১৯৯৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৮৫৯, মুসলিম ২২২৬, আহমাদ ২২৩২৯, ২২৩৫৯, মুয়াত্তা মালিক ১৮১৬, সহীহাহ ৪/২৫০, ৪৫১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৯৫. আবদুল্লাহ্ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, অশুভ আলামাত তিন জিনিসের মধ্যে থাকতে পারে, ঘোড়া, স্ত্রীলোক ও ঘর। যুহ্রী [রঃ] বলেন, আবু উবায়দাহ বিন আবদুল্লাহ্ বিন যামআহ আমাকে বলেছেন যে, তাহার দাদী যায়নাব [রাদি.] উম্মু সালামাহ [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি এই তিনটির সাথে তরবারিও যোগ করিতেন, উম্মু সালামাহর কথা ব্যতীত, তাহাদের শব্দ হলো- অশুভ আলামাত যে বস্তুর মধ্যে তাহল… অতঃপর তরবারী ব্যতীত তিনটি উল্লেখ করেন। {১৯৯৫}

{১৯৯৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৮৫৮, ৫০৯৩, ৫০৯৪, ৫৭৫৩, ৫৭৭২, মুসলিম ২২২৫, তিরমিজি ২৮২৪, ৪০০১, নাসাঈ ৩৫৬৮, ৩৫৬৯, আবু দাউদ ৩৯২২, আহমাদ ৬৩৬৯, মুয়াত্তা মালিক ১৮১৭, সহীহাহ ৭৯৯, ১৮৯৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ শায। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন ইসহাক সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কাদিরিয়্যা মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, তিনি কাদিরিয়্যা মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৫৫, ১৬/৫১৯ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ শায

৯/৫৬. অধ্যায়ঃ আত্মমর্যাদাবোধ।

১৯৯৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ আত্মমর্যাদাবোধ পছন্দ করেন এবং অপছন্দও করেন। যা থেকে বিপর্যয় সৃষ্টির আশংকা থাকে তা ত্যাগ করার আত্মমর্যাদাবোধ আল্লাহ্ পছন্দ করেন এবং যাতে বিপর্যয় সৃষ্টির আশংকা নেই তা ত্যাগের আত্মমর্যাদাবোধ আল্লাহ্ অপছন্দ করেন। {১৯৯৬}

{১৯৯৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/৪০২, ইরওয়াহ ১৯৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৯৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি খাদিজা [রাদি.] -এর ক্ষেত্রে যে আত্মমর্যাদাবোধ উপলব্ধি করতাম, তদ্রূপ অপর কোন নারীর ক্ষেত্রে অনুভব করতাম না। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রায়ই তাহার কথা উল্লেখ করিতে দেখেছি। আল্লাহ্ তাআলা তাহার রসূলকে খাদীজা [রাদি.] -এর জন্য জান্নাতে স্বর্ণ নির্মিত একটি প্রাসাদের সুসংবাদ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইবনি মাজাহ [রঃ] তা বলেছেন [অর্থাৎ কাসাব-এর অর্থ সোনা বলেছেন]। {১৯৯৭}

{১৯৯৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৮১৬, মুসলিম ২৪৩৪, ২৪৩৫, তিরমিজি ২০১৭, ৩৮৭৫, ৩৮৭৬, আহমাদ ২৩৭৮৯, ২৫১৩০, ২৫৮৪৭, বায়হাকী ৭/৪১২ সহীহাহ ১৫৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৯৮. মিসওয়ার বিন মাখরামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলিতে শুনেছিঃ বনূ হিশাম ইবনিল মুগীরাহ তাহাদের কন্যাকে আলী বিন আবু তালিবের নিকট বিবাহ দিতে আমার নিকট অনুমতি চেয়েছে। আমি তাহাদেরকে অনুমতি দিবো না, আমি তাহাদেরকে অনুমতি দিবো না, আমি অনুমতি দিবো না, আমি তাহাদেরকে অনুমতি দিবো না। তবে আলী বিন আবু তালিব আমার কন্যাকে তালাক দিলে তা করিতে পারে। কেননা ফাতিমা অবশ্যি আমার দেহের একটি টুকরা। যা তাহার মনঃকষ্টের কারণ হয় তা আমারও মনঃকষ্টের কারণ হয় এবং যা তাহাকে কষ্ট দেয় তা আমাকেও কষ্ট দেয়। {১৯৯৮}

{১৯৯৮} মাজাহ ১৯৯৯, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩১১০, ৩৭১৪, ৩৭২৯, ৩৭৬৭, ৫২৩০, ৫২৭৮, মুসলিম ২৪৪৯, তিরমিজি ৩৮৬৭, ২০৬৯, ২০৭১, আহমাদ ১৮৪২৮, ১৮৪৩২, ১৮৪৪৭, ১৮৪৫১, ইরওয়াহ ২৬৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯৯৯. মিসওয়ার বিন মাখরামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] আবু জাহলের কন্যাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। অথচ নবী [সাঃআঃ] -এর কন্যা ফাতিমাহ [রাদি.] তাহাঁর বিবাহাধীন ছিলেন। ফাতিমাহ [রাদি.] তা শুনতে পেয়ে নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলেন, আপনার সম্প্রদায়ের লোক বলাবলি করছে যে, আপনি আপনার কন্যাদের ব্যাপারে কোন কথায় রাগান্বিত হন না। এই আলী আবু জাহলের কন্যাকে বিবাহ করিতে যাচ্ছে। মিসওয়ার [রাদি.] বলেন, নবী [সাঃআঃ] দাঁড়ালেন, আমি তাহাঁকে কালিমা শাহাদাত পাঠ করার পর বলিতে শুনলামঃ আমি আবুল আস ইবনিল রাবী এর নিকট আমার এক কন্যার [যায়নব] বিবাহ দিয়াছিলাম। সে আমাকে যে কথা দিয়াছিল তা রক্ষা করেছে। নিশ্চয় ফাতিমাহ বিনতু মুহাম্মাদ আমার দেহের একটি অংশ। তোমরা তাহাকে গুনাহে নিক্ষেপ করিবে তা আমি পছন্দ করি না। আল্লাহ্‌র শপথ! আল্লাহ্‌র রসূলের কন্যা এবং আল্লাহ্‌র দুশমনের কন্যা এক ব্যক্তির অধীন কখনো একত্র হইতে পারে না। {১৯৯৯}

{১৯৯৯} ইবনি মাজাহ ১৯৯৮, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩১১০, ৩৭১৪, ৩৭২৯, ৩৭৬৭, ৫২৩০, ৫২৭৮, মুসলিম ২৪৪৯, তিরমিজি ৩৮৬৭, ২০৬৯, ২০৭১, আহমাদ ১৮৪২৮, ১৮৪৩২, ১৮৪৪৭, ১৮৪৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৫৭. অধ্যায়ঃ যে মহিলা নিজেকে নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য হেবা করে।

২০০০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলিতেন, যে নারী নিজেকে নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য পেশ করে তাহার কি লজ্জা হয় না? অবশেষে এ আয়াত নাযিল হয়ঃ [অর্থানুবাদ] ঃ “তুমি তাহাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তোমার নিকট থেকে দূরে রাখতে পারো এবং যাকে ইচ্ছা তোমার নিকট স্থান দিতে পারো” [সূরা আহযাবঃ ৫১]। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, তখন আমি বললাম, আপনার প্রভু তো আপনার ইচ্ছা পূরণে আপনার চেয়েও অগ্রগামী। {২০০০}

{২০০০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৭৮৮, ৫১১৩, মুসলিম ১৪৬৪, নাসাঈ ৩১৯৯, আহমাদ ২৪৫০৫, ২৪৭২৩, ২৪৭১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০০১. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[সাবিত] বলেন, আমরা আনাস বিন মালিক [রাদি.] -এর সাথে উপবিষ্ট ছিলাম। তাহার সাথে তাহার এক কন্যাও ছিলো। আনাস [রাদি.] বলেন, এক মহিলা নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে নিজেকে তাহাঁর জন্য পেশ করে। সে বলে, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার কি আমাকে প্রয়োজন আছে? [এ হাদিস শুনে] আনাস [রাদি.] -এর মেয়ে বলল, মহিলাটি কত নির্লজ্জ! আনাস [রাদি.] বলেন, সে তোমার চেয়ে অনেক উত্তম। সে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর প্রতি অনুরক্ত হওয়ার কারণেই নিজেকে তাহাঁর জন্য পেশ করেছে। {২০০১}

{২০০১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১২০, ৬১২৩, নাসাঈ ৩২৪৯, ৩২৫০, আহমাদ ১৩৪২৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৯/৫৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি তাহার সন্তান সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে।

২০০২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ফাযারাহ গোত্রের এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার স্ত্রী কৃষ্ণ বর্ণের একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেছে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমার কি উট আছে? সে বলল, হাঁ। তিনি বলেনঃ এগুলো কী বর্ণের? সে বলল, লাল। তিনি বলেন এগুলোর মধ্যে ছাই বর্ণের উট আছে কি? সে বলল, হাঁ, এর মধ্যে অবশ্যই ছাই রং-এর উটও আছে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এগুলো কোথা থেকে এলো? সে বলল, সম্ভবত এটি তাহার পূর্বপুরুষের কারো রং ধারণ করেছে। তিনি বলেনঃ এখানেও হয়ত পূর্বপুরুষের কালো রং ধারণ করে থাকিবে। {২০০২}

{২০০২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৩০৫, ৬৮৪৭, ৭৩১৪, মুসলিম ১৫০০, নাসাঈ ৩৪৭৮, ৩৪৭৯, ৩৪৮০, আবু দাউদ ২২৬০, আহমাদ ৭১৪৯, ৭২২৩, ৭৭০২, ৯০৪৩, সহীহ আবু দাউদ ১৯৫৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০০৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক গ্রাম্য বেদুইন নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার স্ত্রী আমার ঘরে একটি কালো রং-এর পুত্র সন্তান প্রসব করেছে, অথচ আমাদের পরিবারে কালো রং-এর কেউ কখনো ছিলো না। তিনি বলেনঃ তোমার কি উট আছে? সে বলল, হাঁ। তিনি বলেনঃ এগুলোর রং কী? সে বলল, লাল। তিনি বলেনঃ এগুলোর মধ্যে কি কালো বর্ণের উট আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ ছাই বর্ণের আছে কি? সে বলল, হাঁ। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন এটা কিরূপে হলো? সে বলল, হয়ত পূর্বপুরুষের রক্ত ধারায় এমনটি হয়ে থাকিবে। তিনি বলেনঃ হয়তো তোমার পুত্রের বেলায়ও এমনটি হয়ে থাকিবে। {২০০৩}

{২০০৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উবাদাহ বিন কুলায়ব আল-লায়সী আবু গাসসান সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, জুয়ায়য়ারিয়া বিন আসমা কর্তৃক বর্ণিত হাদিস এর অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৪৮, ১৪/২৬৬ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৯/৫৯. অধ্যায়ঃ সন্তান বিছানার মালিকের এবং ব্যভিচারির জন্য পাথর।

২০০৪. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি যামআহ ও সাদ [রাদি.] যামআহর দাসী-পুত্রকে কেন্দ্র করে নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট বিবাদে লিপ্ত হন। সাদ [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার ভাই আমাকে বলেছেন যে, আমি মাক্কাহ্য় গেলে আমি যেন যাম্আর দাসী-পুত্রকে খুঁজে বের করি। আর আব্দ বিন যামআহ বলল, সে আমার ভাই, আমার পিতাহার দাসী-পুত্র, সে আমার পিতাহার শয্যায় জন্মগ্রহণ করে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছেলেটিকে উতবার সাথে [গঠনাকৃতিতে] সাদৃশ্যপূর্ণ লক্ষ্য করেন। তিনি বলেনঃ হে আব্দ বিন যামআহ! এটি তোমারই প্রাপ্য। সন্তান বিছানার মালিকের [স্বামীর] এবং ব্যভিচারির জন্য রয়েছে পাথর। আর হে সাওদা! তুমি তাহার থেকে পর্দা করিবে। {২০০৪}

{২০০৪} বুখারী ২০৫৩, ২২১৮, ২৪২১, ২৫৩৩, ২৭৪৫, ৪৩০৩, ৬৭৪৯, ৬৭৬৫, ৬৮১৭, ৭১৮২, মুসলিম ১৪৫৭, নাসাঈ ৩৪৮৪, ৩৪৮৭, আবু দাউদ ২২৭৩, আহমাদ ২৩৫৬৬, ২৪৪৫৪, ২৫৩৬৬, ২৫৪৭০, মুয়াত্তা মালিক ১৪৪৯, দারেমী ২২৩৬, ২২৩৭, সহীহ আবু দাউদ ১৯৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০০৫. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফয়সালা দিয়েছেন যে, সন্তান বৈধ শয্যাধারীর [স্বামীর]। {২০০৫}

{২০০৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/১৬৯, তাখরীজুল মুখতাহারাহ ২২৩-২২৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০০৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সন্তান বৈধ শয্যাধারীর [স্বামীর] এবং ব্যভিচারির জন্য রয়েছে পাথর। {২০০৬}

{২০০৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৬৭৫০, ৬৮১৮, মুসলিম ১৪৫৮, তিরমিজি ১১৫৭, নাসাঈ ৩৪৮২, ৩৪৮৩, আহমাদ ৭২২১, ৭৭০৫, ৮৭৭৭, ৯০৪৭, ৯৬৯২, ৯৭৯৭, দারেমী ২২৩৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০০৭. আবু উমামা আল বাহিলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ সন্তান বৈধ শয্যাধারীর [স্বামীর] এবং ব্যভীচারীর জন্য রয়েছে পাথর। {২০০৭}

{২০০৭} আহমাদ ২১৭৯১, বায়হাকী ৭/৩২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা] ২. শুরাহবীল বিন মুসলিম আবু মুহাম্মাদ আল-ফাতায়ানী ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। মুহাম্মাদ বিম আবদুল্লাহ বিন নুমায়র বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৭২১, ১২/৪৩০ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৬০. অধ্যায়ঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজন অপরজনের আগে ইসলাম গ্রহণ করিলে ।

২০০৮. ইকরিমা ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক মহিলা নবী [সাঃআঃ] –এর নিকট এসে ইসলাম গ্রহণ করার পর এক ব্যক্তি তাহাকে বিবাহ করিল। রাবী বলেন, তখন পূর্ব স্বামী এসে বলল, “হে আল্লাহর রসূল! আমি তো তাহার সাথেই ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং সে আমার ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে জানে। রাবী বলেন; রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মহিলাটিকে তাহার দ্বিতীয় স্বামীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাহার প্রথম স্বামীকে ফেরত দেন। {২০০৮}

{২০০৮} আবু দাউদ ২২৩৯, বায়হাকী ৭/৩২২, ইরওয়াহ ১৯১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১.হাফস বিন জুমায় সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন, তিনি যখন এককভাবে কোন হাদিস বর্ণনা করেন তখন তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৩৮৬, ৭/৬ নং পৃষ্ঠা] ২. সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২০০৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কন্যাকে প্রথম বিবাহের সুবাদে প্রথম দুবছর পর আবুল আস ইবনির রবী [রাদি.] -এর নিকট ফেরত পাঠান। {২০০৯}

{২০০৯} তিরমিজি ১১৪৩, আবু দাউদ ২২৪০, ইরওয়াহ ২৯২১, সহীহ আবু দাউদ ১৯৩৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০১০. আব্দুল্লাহ বিন আমর্ ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কন্যা যায়নাব [রাদি.] কে নতুন বিবাহের মাধ্যমে আবুল আস ইবনির রবী [রাদি.] এর নিকট ফেরত পাঠান। {২০১০}

{২০১০} তিরমিজি ১১৪২, ইরওয়াহ ১৯২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা] স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯/৬১. অধ্যায়ঃ দুগ্ধপোষ্য সন্তানের মাতাহার সাথে সহবাস।

২০১১ জুদামাহ বিনতে ওয়াহাব আল আসাদিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ আমি ইচ্ছা করেছিলাম যে, দুগ্ধদানের মুদ্দতে মহিলাদের সাথে সহবাস করিতে নিষেধ করাবো। কিন্তু আমি দেখলাম যে, পারস্য ও রোমের অধিবাসীরা এমনটি করে, অথচ তাহাদের সন্তানদের কোন ক্ষতি হয়না। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আযল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। আমি তাহাঁকে বলিতে শুনিয়াছিঃ এটি হচ্ছে গোপন হত্যার একটি পদ্ধতি। {২০১১}

{২০১১} মুসলিম ১৪৪২, তিরমিজি ২০৭৬, ২০৭৭, নাসাঈ ৩৩২৬, আবু দাউদ ৩৮৮২, আহমাদ ২৬৪৯৪, ২৬৯০১, মুয়াত্তা মালিক ১২৯২, ২২১৭, আদাবুয যিফাফ ৫৪, গায়াতুল মারাম ২৪১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন আয়্যুব সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি তাহার মুখস্ত হাদিস থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন, কিন্তু তাহার কিতাবে লিখিত হাদিস থেকে বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আবু বকর আল-ইসমাইলী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু মুহাম্মাদ বিন হাযম বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৯২, ৩১/২৩৩ নং পৃষ্ঠা] হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০১২ আসমা বিনতু ইয়াযীদ ইবনিস সাকান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ তোমরা গোপনে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করোনা। সেই সত্তার শপথ যাহার হাতে আমার প্রাণ! দুধপানের মেয়াদে স্ত্রীর সাথে সহবাস করিলে আরোহীকে ঘোড়া তাহার পিঠ থেকে ভূলুন্ঠিত করে। {২০১২}

{২০১২} আবু দাউদ ৩৮৮১, আহমাদ ২৭০১৫, ২৭০৩৮, ২৭০৪৩, গায়াতুল মারাম ২৪২, আত-তালীকু আলাত-তানকীল ২/২৫৯, মিশকাত তাহকীকুল সানী ৩১৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৯/৬২. অধ্যায়ঃ যে স্ত্রী তাহার স্বামীকে কষ্ট দেয়।

২০১৩ আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা তাহার দুটি সন্তানসহ নবী [সাঃআঃ] এর নিকট আসে। সে একটি সন্তানকে কোলে এবং অপরটিকে হাতে ধরে নিয়ে আসে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ গর্ভধারিনী [বহনকারিণী] , সন্তান জন্মদানকারীণী এবং মমতাময়ী বা তাহারা তাহাদের স্বামীদের কষ্ট না দিলে তাহাদের মধ্যে যারা সলাতী তাহারা জান্নাতে যাবে। {২০১৩}

{২০১৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রওযুল নাযীর ৯০৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুআম্মাল [বিন ইসমাইল] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইসহাক বিন রাহওয়ায় বলেন, তিনি সিকাহ। মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করে। আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। ইবনি কানি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৩১৯, ২৯/১৭৬ নং পৃষ্ঠা] তাছাড়া উক্ত হাদিসের সানাদে সালিম বিন আবুল জাদ ও আবু উমামাহ [রাদি.] এর মাঝে ইনকিতা হইয়াছে। স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২০১৪ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোন স্ত্রী তাহার স্বামীকে কষ্ট দেয় তখন জান্নাতে তাহার আয়তালোচনা হুর স্ত্রীগণ বলিতে থাকেঃ ওহে! আল্লাহ তোমার সর্বনাশ করুন। তুমি তাহাকে কষ্ট দিওনা। সে তো তোমার নিকট অল্পদিনের মেহমান অচিরেই সে তোমাকে ত্যাগ করে আমাদের নিকট চলে আসবে। {২০১৪}

{২০১৪} তিরমিজি ১১৭৪, সহীহা ১৭৩, আদাবুল যিফাফ ১৭৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল ওয়াহহাব ইবনিদ দাহহাক সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি জাল [বানিয়ে] হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু নুআয়ম আল-আসবাহানী বলেন, তিনি একাধিক জাল হাদিস বর্ণনা করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬০১, ১৮/৪৯৪ নং পৃষ্ঠা] ২. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিস্ত সহীহ কিন্তু আবদুল ওয়াহহাব ইবনিদ দাহহাক ও ইসমাঈল বিন আয়্যাশ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৮ টি অধিক দুর্বল, ৬ টি দুর্বল, ২ টি হাসান, ১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১১৭৪, আহমাদ ২১৫৯৫ ইত্যাদি। হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯/৬৩. অধ্যায়ঃ হারাম বস্তু হালাল বস্তুকে হারাম করিতে পারে না।

২০১৫ নাফি ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, হারাম বস্তু হালাল বস্তুকে হারাম করে না। {২০১৫}

{২০১৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। যঈফাহ ৩৮৫-৩৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন উমার সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও আলী ইবনিল মাদানী বলেন তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৪০, ১৫/৩২৭ নং পৃষ্ঠা]।স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য – হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply