কথাবার্তা বলা ও বর্ণনা করার সময় যাচাই-তদন্ত করা

কথাবার্তা বলা ও বর্ণনা করার সময় যাচাই-তদন্ত করা

কথাবার্তা বলা ও বর্ণনা করার সময় যাচাই-তদন্ত করা >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পরিচ্ছেদ – ২৬২ : কথাবার্তা বলা ও বর্ণনা করার সময় যাচাই-তদন্ত করে সাবধানে করার প্রতি উৎসাহ দান

মহান আল্লাহ বলেন, ﴿ وَلَا تَقۡفُ مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٌۚ ﴾ [الاسراء: ٣٦] 

অর্থাৎ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। [সূরা ইসরা ৩৬ আয়াত]

তিনি বলেছেন, ﴿ مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨ ﴾ [ق: ١٨] 

অর্থাৎ মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে। [ক্বাফ ১৮ আয়াত]

[এ মর্মে মহান আল্লাহর এ বাণীও অনেকে উল্লেখ করে থাকেন, ‘‘হে ঈমানদারগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ন করে, তাহলে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখ; যাতে অজ্ঞতাবশত: তোমরা কোন সম্প্রদায়কে আঘাত না কর এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।’’ – সূরা হুজুরাত ৬ আয়াত]

1/1555 وَعَنْ أَبي هُرَيرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «كَفَى بِالمَرْءِ كَذِباً أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ». رواه مسلم

১/১৫৫৫। আবূ হুরায়রা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা কিছু শোনে [বিনা বিচারে] তা-ই বর্ণনা করে।’’ [মুসলিম] [1]

2/1556 وَعَنْ سَمُرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «مَنْ حَدَّثَ عَنِّي بِحَدِيثٍ يَرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الكَاذِبَينَ» . رواه مسلم

২/১৫৫৬। সামুরাহ রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ  সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আমার তরফ থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করে অথচ সে জানে যে, তা মিথ্যা, তবে সে দুই মিথ্যুকের একজন।’’ [মুসলিম][2]

3/1557 وَعَنْ أَسْمَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا : أَنَّ امْرأةً قَالَتْ : يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّ لِي ضَرَّةً فَهَلْ عَلَيَّ جُنَاحٌ إِنْ تَشَبَّعْتُ مِنْ زَوْجِي غَيْرَ الَّذِي يُعْطِينِي ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم المُتَشَبِّعُ بِما لَمْ يُعْطَ كَلاَبِسِ ثَوْبَيْ زُورٍ». متفق عَلَيْهِ

 ৩/১৫৫৭। আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিত, একটি মহিলা বলিল, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ ! আমার এক সতীন আছে, সুতরাং স্বামী আমাকে যা দেয় না, তা নিয়ে যদি পরিতৃপ্তি প্রকাশ করি, তাতে আমার কোন ক্ষতি হইবে কি?’ নবী সাঃআঃ বলিলেন, ‘‘যা দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে পরিতৃপ্তি প্রকাশকারী মিথ্যা দুই বস্ত্র পরিধানকারীর ন্যায়।’’ [বুখারী ও মুসলিম][3]

‘পরিতৃপ্তি প্রকাশকারী’ যে প্রকাশ করে যে, সে পরিতৃপ্ত, অথচ আসলে সে তা নয়। এখানে উদ্দেশ্য হল, যে প্রকাশ করে যে, সে মর্যাদা লাভ করেছে, অথচ সে তা লাভ করেনি। আর ‘মিথ্যা দুই বস্ত্র পরিধানকারী’ হল সেই, যে লোকচক্ষুতে মেকী সাজে। লোককে ধোঁকা দেওয়ার জন্য সংসার-বিরাগী, আলেম অথবা ধনবান ব্যক্তির পোশাক পরিধান করে, অথচ সে তা নয়। এ ছাড়া অন্য কিছুও বলা হয়েছে। আর আল্লাহই অধিক জানেন।


[1] মুসলিম ৫, আবূ দাউদ ৪৯৯২

[2] সহীহুল বুখারী ১২৯১, তিরমিযী ২৬৬২, ইবনু মাজাহ ৩৯, ৪১, আহমাদ ১৭৭৩৭, ১৭৭৭৬, ১৯৬৫০, ১৯৭১২, মুসলিম [ভূমিকা)

[3] সহীহুল বুখারী ৫২১৯, মুসলিম ২১৩০, আবূ দাউদ ৪৯৯৭, আহমাদ ২৬৩৮১, ২৬৩৮৯, ২৬৪৩৭

Comments

One response to “কথাবার্তা বলা ও বর্ণনা করার সময় যাচাই-তদন্ত করা”

Leave a Reply