ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা – সুদ সম্পর্কে কঠোর বানী
ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা – সুদ সম্পর্কে কঠোর বানী >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১২, অধ্যায়ঃ (৪০-৬২)=২৩টি
১২/৪০. অধ্যায়ঃ বাজারসমূহ এবং তাতে প্রবেশের নিয়ম।
১২/৪১. অধ্যায়ঃ সকাল বেলায় বরকত হওয়ার আশা করা।
১২/৪২. অধ্যায়ঃ [দুধ আটকে রেখে] স্তন ফুলানো পশু বিক্রয় করা।
১২/৪৩. অধ্যায়ঃ আয় ভোগ দায় বহনের সাথে যুক্ত।
১২/৪৪. অধ্যায়ঃ গোলাম ফেরতদানের সময়সীমা।
১২/৪৫. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি ত্রুটিযুক্ত জিনিস বিক্রয় করলে তা বলে দিবে ।
১২/৪৬. অধ্যায়ঃ বন্দীদের পরস্পর থেকে বিছিন্ন করা নিষেধ।
১২/৪৭. অধ্যায়ঃ গোলাম ক্রয়-বিক্রয়।
১২/৪৮. অধ্যায়ঃ মুদ্রার নগদ বিনিময় এবং যে সব বস্তু কম-বেশী করে বিনিময় করা জায়েয নয়।
১২/৪৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি বলে, বাকি লেনদেনই সুদ হয়।
১২/৫০. অধ্যায়ঃ সোনার সাথে রুপার বিনিময়।
১২/৫১. অধ্যায়ঃ সোনার বিনিময়ে রুপা এবং রুপার বিনিময়ে সোনা ক্রয়-বিক্রয় করা।
১২/৫২. অধ্যায়ঃ দিরহাম ও দীনার [মুদ্রা] ভাঙ্গা নিষেধ।
১২/৫৩. অধ্যায়ঃ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রয় করা।
১২/৫৪. অধ্যায়ঃ মুযাবানা ও মুহাকালা প্রসঙ্গে।
১২/৫৫. অধ্যায়ঃ আরিয়া পদ্ধতির লেনদেন [গাছের মাথার খেজুর অনুমানে ক্রয়-বিক্রয়]।
১২/৫৬. অধ্যায়ঃ জন্তুর বিনিময়ে বাকীতে জন্তু বিক্রয় করা।
১২/৫৭. অধ্যায়ঃ পশুর পরিবর্তে পশু অধিক দরে নগদ ক্রয়-বিক্রয়।
১২/৫৮. অধ্যায়ঃ সুদ সম্পর্কে কঠোর বানী।
১২/৫৯. অধ্যায়ঃ ওজন, পরিমাপ ও মেয়াদ নির্দিষ্ট করে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।
১২/৬০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি কোন জিনিস অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করলে তার পরিবর্তে অন্যটি নিতে পারবে না।
১২/৬১. অধ্যায়ঃ কোন নির্দিষ্ট খেজুর গাছ, ফল আসার পূর্বে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।
১২/৬২. অধ্যায়ঃ চতুষ্পদ জন্তু অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।
১২/৪০. অধ্যায়ঃ বাজারসমূহ এবং তাতে প্রবেশের নিয়ম।
২২৩৩. আবু উসাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আন-নাবীত নামক বাজারে গেলেন এবং কিছুক্ষণ তা পরিদর্শন করে বলেনঃ এটা তোমাদের উপযোগী বাজার নয়। অতঃপর তিনি অন্য একটি বাজারে গেলেন এবং তা পরিদর্শন করে বলেনঃ এটিও তোমাদের উপযোগী নয়। অতঃপর তিনি এই বাজারে ফিরে এলেন এবং কিছুক্ষণ পরিদর্শন করে বলেনঃ এটি তোমাদের জন্য উপযুক্ত বাজার। এখানে তোমরা কারচুপি পাবে না এবং এই বাজারে তোমাদের উপর খাজনা আরোপ করা হইবে না। {২২৩৩}
{২২৩৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৫/৩২২, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. ইসহাক বিন ইবরাহীম বিন সাঈদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩২৬, ২/৩৬৩ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ ইবনিল হাসান সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী বলেন, তার মাঝে জাহালাত রয়েছে। ইবনি হাজার আল-আসকালানী তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫১৪৭, ২৫/৬০ নং পৃষ্ঠা] ৩. যুবায়র ইবনিল মুনযীর বিন আবু উসায়দ আস-সাঈদী সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার সম্পর্কে অজ্ঞাত। ঈমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৭২, ৯/৩২৯ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৩৪. সালমান আল-ফারিসী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি ভোরবেলা ফজরের নামায পড়তে রওয়ানা হয়, সে ঈমানের পতাকা নিয়ে রওয়ানা হয়। আর যে ব্যক্তি সকাল বেলা বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়, সে শয়তানের পতাকা নিয়ে রওয়ানা হয়। {২২৩৪}
{২২৩৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৬৪০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী উবায়স বিন মায়মুন সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। তিনি তার দাওয়াতুল কাবীর এর মাঝে বলেন, তিনি মুনকারুল হাদিস। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম তিরমিযি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী ও ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৬১, ১৯/২৭৬ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
২২৩৫. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি বাজারে প্রবেশকালে বলেঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু মুলকু ওয়ালাহুল হামদু য়ুহ্য়ী ওয়া য়ুমীতু ওয়া হুয়া হায়্যুন লা ইয়ামূতু বিয়াদিহিল খাইর কুল্লুহু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদীর” [আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তাহাঁর কোন শরীক নাই, রাজত্ব তাহাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসা তাহাঁরই। তিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তিনি চিরঞ্জীব, কখনো মরবেন না, তাহাঁর হাতেই সমস্ত কল্যাণ নিহিত এবং তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান], আল্লাহ তার আমলনামায় এক লক্ষ পুণ্য লিপিবদ্ধ করেন, তাহাঁর এক লক্ষ গুনাহ মাফ করেন এবং তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরী করেন। {২২৩৫}
{২২৩৫} তিরমিজি ৩৪২৮, ৩৪২৯, আহমাদ ৩২৯, দারেমী ২৬৯২, তাখরীজুল মুখতার ১৭৬-১৭৮, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৪, তাখরীজু কালিমুত তায়্যিব ২২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আমর বিন দিনার সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম তিরমিযি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল ও মুনকার। ঈমাম বুখারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। মুহাম্মাদ বিন আম্মার বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৩৬১, ২২/১৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২/৪১. অধ্যায়ঃ সকাল বেলায় বরকত হওয়ার আশা করা।
২২৩৬. সাখর আল-গামিদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ
اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا
“হে আল্লাহ! আমার উম্মাতের জন্য তাহাদের ভোরবেলাকে বরকতময় করুন।”
তিনি ক্ষুদ্র বা বৃহৎ সামরিক বাহিনী অভিযানে পাঠাতে চাইলে দিনের প্রথম ভাগেই তাহাদেরকে পাঠাতেন। রাবী [উমারা বিন হাদীদ] বলেন, সাখর [রাদি.] ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়িক পণ্য দিনের প্রথম ভাগেই পাঠাতেন। ফলে তিনি সম্পদশালী হন এবং তার সম্পদে প্রাচুর্য আসে। {২২৩৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ “হে আল্লাহ্! আমার উম্মাতের জন্য তাহাদের ভোরবেলাকে বরকতময় করুন” বাক্যটি সহিহ। তবে [আরবি] কথাগুলো দুর্বল।{২২৩৬} তিরমিজি ১২১২, আবু দাউদ ২৬০৬, আহমাদ ১৫০১৭, ১৫১৩০, ১৮৯৩৭, ১৮৯৮৫, রাওদুন নাদীর ৪৯০, সহিহ আবু দাউদ ২৩৪৫, যইফাহ ৪১৭৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হে আল্লাহ! আমার উম্মাতের জন্য তাহাদের ভোরবেলাকে বরকতময় করুন। বাক্যটি সহিহ। তবে …قَالَ وَكَانَ إِذَا بَعَثَ কথাগুলো দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী উমারাহ বিন হাদীদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী, আবু আলী ইবনিস সাকান ও ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৭৯, ২১/২৩৬ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
২২৩৭. আবু হুরায়রা[রা] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ
اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا يَوْمَ الْخَمِي
“হে আল্লাহ! বৃহস্পতিবার দিনের প্রথমভাগে আমার উম্মতকে বরকত দান করুন। {২২৩৭}
{২২৩৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৫/৩২০, রাওদুন নাদীর ৪৯০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন মায়মুন আল-মাদানী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬৫০, ২৬/৫৪১ নং পৃষ্ঠা] ৩. আব্দুর রহমান বিন আবু যিনাদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয নয়। আবুল কাসিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য হইবে না। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৬, ১৭/৯৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৩৮. ইবনি উমার[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী[সাঃআঃ] বলেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا
“হে আল্লাহ! আমার উম্মতের ভোরবেলায় বরকত দান করুন”। {২২৩৮}
{২২৩৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. আব্দুর রহমান বিন আবু বকর আল-জুদআনী সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম তিরমিযি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৬৮, ১৬/৫৫৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু ইয়াকুব বিন হুমায়দ ও আব্দুর রহমান বিন আবু বকর আল-জুদআনী এর কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিযি ১২১২, আবু দাউদ ২৬০৬, দারিমী ২৪৩৫, আহমাদ ১৩২২, ১৩২৫, ১৩৩১, ১৩৩৪, ১৩৪১, ১৫০১২, ১৫০১৭, ১৫১২৯, ১৫১৩৯, ১৫১৩০, ১৮৯৩৫, ১৮৯৮৪, ১৮৯৮৫, ১৮৯৮৬।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৪২. অধ্যায়ঃ [দুধ আটকে রেখে] স্তন ফুলানো পশু বিক্রয় করা।
২২৩৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি স্তনে দুধ আটকে রাখা জন্তু ক্রয় করলো, তাহাঁর জন্য তিন দিনের এখতিয়ার আছে[ক্রয় বহাল রাখা বা না রাখার]। সে তা ফেরত দিলে তাহাঁর এক সা খেজুরও দিবে, গম নয়। {২২৩৯}
{২২৩৯} সহীহুল বুখারী ২১৪৮, ২১৫০, ২১৫১,মুসলিম ১৫১৫, ১৫২৪, তিরমিজি ১২৫১, ১২৫২, নাসায়ী ৪৪৮৭, ৪৪৮৮, ৪৪৮৯, আবু দাউদ ৩৪৪৩, ৩৪৪৪, ৩৪৪৫, আহমাদ ৭২৬৩, ৭৩৩৩, ৭৪৭১, ৭৬৪১, ২৭৪২৯, ৮৭৭৯, ৮৮৭৬, ৯০৫৫, ২৭৫৪১, ৯১৬০,৯২৭৫, ৯৬৭৫, ৯৬৪৪, ২৭২৪৯, ৯৭১৬, ৯৮৭৫, ৯৮৯৬, ১০২০৮, মুয়াত্তা মালেক ১৩৯১, দারেমী ২৫৫৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৪০. আব্দুল্লাহ বিন উমার[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ লোকসকল! যে ব্যক্তি [দুধ জমা করে] স্তন ফুলানো পশু ক্রয় করিবে তাহাঁর জন্য তিন দিনের এখতিয়ার থাকিবে। সে যদি তা ফেরত দেয় তবে তাহাঁর সাথে দুধের সমপরিমান দুধ অথবা দুধের সমপরিমান গম দিবে। {২২৪০}
{২২৪০} আবু দাউদ ৩৪৪৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী জুমায় বিন উমায়র আত-তায়মী সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি রাফিদী মতাবলম্বী ও জাল [বানিয়ে] হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। ঈমাম বুখারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৯৬৬, ৫/১২৪ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৪১. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সত্যবাদী এবং সত্যবাদী বলে স্বীকৃত আবুল কাসিম[সাঃআঃ] আমাদেরকে বলিয়াছেন, [দুধ আটকে রেখে] স্তন ফুলানো পশু বিক্রয় করা একটি প্রতারনা। আর মুসলিম ব্যক্তির জন্য প্রতারণা করা হালাল নয়। {২২৪১}
{২২৪১} সহীহুল বুখারী ২১৪৯, আহমাদ ৪০৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আল-মাসউদী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি নুমায়র বলেন, তিনি সিকাহ তবে শেষ বয়সে হাদিস সংমিশ্রণ করেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ তবে বাগদাদে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। মুহাম্মদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে মৃত্যুর পূর্বে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আলী ইবনিল মাদীনী তাহাকে সিকাহ বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮৭২, ১৭/২১৯ নং পৃষ্ঠা] ২. জারির [বিন ইয়াযীদ] সম্পর্কে শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আল-জাওযুজানী তাহাকে মিথ্যুক বলিয়াছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৮৭৯, ৪/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৪৩. অধ্যায়ঃ আয় ভোগ দায় বহনের সাথে যুক্ত।
২২৪২. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রায় দিয়েছেন যে, গোলামের দায় বহন করলে তার উপার্জিত আয় ভোগ করা যায়। {২২৪২}
{২২৪২} ইবনি মাজাহ ২২৪৩, তিরমিজি ১২৮৫, ১২৮৬, নাসায়ী ৪৪৯০, আবু দাউদ ৩৫০৮, আহমাদ ২৩৭০৪, ২৩৯৯৩, ২৪৩২৬, ২৪৭৪৮, ২৫২১৭, ২৫৪৬৮, ইরওয়া ১৩১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২২৪৩. আয়িশাহ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি একটি গোলাম খরিদ করে তার দ্বারা কিছু উপার্জনও করে। অতঃপর গোলামের মধ্যে কিছু দোষ পেয়ে সে তা ফেরত দেয়। বিক্রেতা এসে বললো, ইয়া রসূলুল্লাহ! সে আমার গোলাম দ্বারা কিছু উপার্জনও করেছে। রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলেনঃ উপার্জন ভোগ দায় বহনের সাথে যুক্ত। {২২৪৩}
{২২৪৩} ইবনি মাজাহ ২২৪২, তিরমিজি ১২৮৫, ১২৮৬, নাসায়ী ৪৪৯০, আবু দাউদ ৩৫০৮, আহমাদ ২৩৭০৪, ২৩৯৯৩, ২৪৩২৬, ২৪৭৪৮, ২৫২১৭, ২৫৪৬৮, ইরওয়া ১৩১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী মুসলিম বিন খালিদ আয-যানজী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু জাফার আল-উকায়লী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯২৫, ২৭/৫০৮ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২/৪৪. অধ্যায়ঃ গোলাম ফেরতদানের সময়সীমা।
২২৪৪. সামুরা বিন জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলিয়াছেন, গোলাম ফেরত দেওয়ার সময়সীমা তিন দিন। {২২৪৪}
{২২৪৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৫/২৭৬, ৩৫০৬, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/২১, যইফ আল-জামি ৩৮৩২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী সাঈদ বিন আবু আরুবাহ সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু বকর আল বাযযার বলেন, তিনি মৃত্যুর পূর্বে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করার পূর্বে সিকাহ। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৩২৭, ১১/৫ নং পৃষ্ঠা] উক্ত সনদের সকল রাবী সিকাহ তবে সাঈদ বিন আবু আরুবাহর হাদিস সংমিশ্রণ করার পূর্বেই আবদাহ বিন সুলায়মান তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তবে এখানে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সামুরাহ বিন জুনদুব থেকে হাসান বিন আবুল হাসান হাদিসটি শ্রবন করেছেন কিনা [ইনকিতা করেছেন কিনা] তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। [মিসবাহুয বুজাজাহ ফিয যাওয়াইদ ইবনি মাজাহঃ ৭৯৬, ৩/২৯ ]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৪৫. উকবার বিন আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলেনঃ চার দিনের পর ফেরত দানের সুযোগ নাই। {২২৪৫}
{২২৪৫} আবু দাউদ ৩৫০৬, আহমাদ ১৬৯০৬, ১৬৯৩৩, দারেমী ২৫৫১, ২৫৫২, যইফ আল-জামি ৬৩০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৪৫. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি ত্রুটিযুক্ত জিনিস বিক্রয় করলে তা বলে দিবে ।
২২৪৬. উকবাহ বিন আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ মুসলমান মুসলমানের ভাই। অতএব কোন মুসলমানের পক্ষে তাহাঁর ভাইয়ের কাছে পণ্যের ত্রুটি বর্ণনা না করে তা বিক্রয় করা বৈধ নয়। {২২৪৬}
{২২৪৬} আহমাদ ১৬৯৯৮, ইরওয়া ১৩২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াহইয়া বিন আয়্যুব সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি তার মুখস্ত হাদিস থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন, কিন্তু তার কিতাবে লিখিত হাদিস থেকে বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আবু বকর আল-ইসমাইলী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু মুহাম্মাদ বিন হাযম বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৯২, ৩১/২৩৩ নং পৃষ্ঠা]ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৪৭. ওয়াসিলাহ ইবনিল আসকা[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি যে, যে ব্যক্তি পণ্যের ত্রুটি বর্ণনা না করে তা বিক্রয় করে, সে সর্বদা আল্লাহর গযবের মধ্যে থাকে এবং ফেরেশতারা সব সময় তাঁকে অভিসম্পাত করিতে থাকে। {২২৪৭}
{২২৪৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত-তালীকুর রাগীব ৩/২৪, যইফ আল-জামি ৫৫০১, মিশকাত ২৮৭৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবদুল ওয়াহহাব বিন দাহহাক সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি জাল [বানিয়ে] হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু নুআয়ম আল-আসবাহানী বলেন, তিনি একাধিক জাল হাদিস বর্ণনা করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬০১, ১৮/৪৯৪ নং পৃষ্ঠা] ২. মুআবিয়াহ বিন ইয়াহইয়া সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আবু হাতিম আর-রাযী, আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবুল কাসিম আল-বাগাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৬৯, ২৮/২২৪ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১২/৪৬. অধ্যায়ঃ বন্দীদের পরস্পর থেকে বিছিন্ন করা নিষেধ।
২২৪৮. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট যুদ্ধবন্দী আসলে তিনি তাহাদেরকে বিছিন্ন করা অপছন্দ করিতেন। তাই তিনি [নিকট সম্পর্কযুক্ত] সকল বন্দী একই পরিবারকে দান করিতেন। {২২৪৮}
{২২৪৮} আহমাদ ৩৬৮২, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/১৪১, মিশকাত ৩৩৭৩, যইফ আল জামি ৪৩২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী জারির [বিন ইয়াযীদ] সম্পর্কে শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আল-জাওযুজানী তাহাকে মিথ্যুক বলিয়াছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৮৭৯, ৪/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৪৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে দুটি গোলাম দান করেন, যারা ছিল পরস্পর সহোদর ভাই। আমি তাহাদের একজনকে বিক্রয় করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি গোলাম দুটি কী করলে? আমি বলিলাম, আমি তাহাদের একজনকে বিক্রয় করেছি। তিনি বলেন, তাহাকে ফেরত আনো। {২২৪৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাদিসটি সহিহ তবে সনদ দঈফ বা দুর্বল।{২২৪৯} তিরমিজি ১২৮৪, মিশকাত ৩৩৬২, সহিহ আবু দাউদ ২৪১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাদিসটি সহিহ তবে সনদ যইফ বা দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা] ২. মায়মুন বিন আবু শাবীব সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ইরসাল করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। আবু দাউদ ও আবু হাতিম বলেন, তিনি আলী [রাদি.] এর সাক্ষাৎ পাননি এরপরও তিনি আন আন সুত্রে হাদিস বর্ণনা করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৩৩৫, ২৯/২০৬ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
২২৫০. আবু মূসা[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যে ব্যক্তি [বন্দী] মা ও সন্তানকে এবং দুসহোদর ভাইকে পরস্পর থেকে বিছিন্ন করে, রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] তাহাকে অভিসম্পাত করেছেন। {২২৫০}
{২২৫০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৫/২৮৩, মিশকাত ৩৩৭২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ইবরাহীম বিন ইসমাইল সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। ঈমাম নাসাঈ তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। ইবনি আদী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ নন বরং হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৪৮, ২/৪৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৪৭. অধ্যায়ঃ গোলাম ক্রয়-বিক্রয়।
২২৫১. আদ্দা বিন খালিদ বিন হওযাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আদ্দা বিন খালিদ বিন হাওয়া [রাদি.] আমাকে বলিলেন, আমি কি তোমাকে সেই পত্র পড়ে শুনাবো না, যা রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] আমাকে লিখেছিলেন? রাবী বলেন, আমি বলিলাম, হাঁ। অতএব তিনি আমার সামনে একখানি পত্র বের করিলেন, যাতে লেখা ছিলঃ “আদ্দা বিন খালিদ বিন হাওয়া আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের নিকট থেকে যা ক্রয় করেছেন এটা তার দলীল। সে তাহাঁর নিকট থেকে একটি গোলাম বা বাঁদী ক্রয় করেছে, যার কোন রোগ-ব্যাধি নাই, যা চুরিকৃতও নয় এবং হারাম মালও নয়। এ হলো দু মুসলমানের পারস্পারিক ক্রয়-বিক্রয়”। {২২৫১}
{২২৫২১} তিরমিজি ১২১৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আব্বাদ বিন লায়স সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩০৯২, ১৪/১৫৪ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২২৫২. আবদুল্লাহ বিন আমার ইবনিল আস[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের যে কেউ দাসী ক্রয় করলে সে যেন বলে, আর-বি “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণ এবং এর স্বভাবের মধ্যে যে কল্যাণ রেখেছেন তা প্রার্থনা করি। আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি”, অতঃপর বরকতের জন্য দোয়া করিবে। আর তোমাদের কেউ উট ক্রয় করলে সে যেন তাহাঁর কুজের উপরিভাগ ধরে বরকতের জন্য দোয়া করে এবং পূর্বানুরুপ বলে। {২২৫২}
{২২৫২} আবু দাউদ ২১৬০, বায়হাকী ফিস সুনান ৫/২৭৫, আল হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/৪৯, আদাবুয যিফাফ ২০, সহিহ আবু দাউদ ১৮৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হুজ্জাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ রাবীর সদৃশ। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২/৪৮. অধ্যায়ঃ মুদ্রার নগদ বিনিময় এবং যে সব বস্তু কম-বেশী করে বিনিময় করা জায়েয নয়।
২২৫৩. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নগদ আদান প্রদান না হলে সোনার বিনিময়ে স্বর্ণমুদ্রা গ্রহণ সুদের অন্তর্ভুক্ত। গমের বিনিময়ে গম নগদ বিনিময় না হলে সূদ হইবে। বার্লির সাথে বার্লির নগদ বিনিময় না হলে সূদ হইবে। খেজুরের সাথে খেজুরের নগদ বিনিময় না হলে সূদ হইবে। {২২৫৩}
{২২৫৩} ইবনি মাজাহ ২২৫৯, ২২৬০, সহীহুল বুখারী ২১৩৪, ২১৭০, ২১৭৪, মুসলিম ১৫৮৬, তিরমিজি ১২৪৩, নাসায়ী ৪৫৫৮, আবু দাউদ ৩৩৪৮, আহমাদ ১৬৩, ২৪০, ৩১৬, মুয়াত্তা মালেক ১৩২৮, ১৩৩৩, দারেমী ২৫৭৮, ইরওয়া ১৩৪৭, রাওদুন নাদীর ৭২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৫৪. উবাদাহ ইবনিস সামিত [রাদি. হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন এক গির্জায় অথবা ইহূদীদের ইবাদতখানায় উবাদা ইবনিস সামিত [রাদি.] ও মুআবিয়া [রাদি.] এর সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। উবাদা ইবনিস সামিত [রাদি.] তাহাদের নিকট হাদিস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে রুপার বিনিময়ে রুপা, সোনার বিনিময়ে সোনা, গমের বিনিময়ে গম, বার্লির বিনিময়ে বার্লি, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর এবং লবনের বিনিময়ে লবন বিক্রয় করিতে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদেরকে গমের বিনিময়ে বার্লি এবং বার্লির বিনিময়ে গম ওজনে কন-বেশি করে যেভাবে ইচ্ছা নগদ বিক্রয় করার অনুমতি দিয়েছেন। {২২৫৪}
{২২৫৪} মাজাহ ১৮, মুসলিম ১৫৮৭, তিরমিজি ১২৪০, নাসায়ী ৪৫৬০, ৪৫৬১, ৪৫৬২, ৪৫৬৩, ৪৫৬৪, ৪৫৬৬, আবু দাউদ ৩৩৪৯, আহমাদ ২২১৭৫, ২২২১৭, ২২২২০, দারেমী ২৫৭৯, রাওদুন নাদীর ৭৪৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৫৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, রুপার সাথে রুপা, সোনার সাথে সোনা, যবের সাথে যব এবং গমের সাথে গম পরিমাণে সমান সমান ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় অনুমোদিত। {২২৫৫}
{২২৫৫} মুসলিম ১৫৮৮, নাসায়ী ৪৫৫৯, আহমাদ ৭১৩১, ১১১৬২, মুয়াত্তা মালেক ১৩১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৫৬. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে আহারের জন্য নিম্ন মানের খেজুর দিতেন। আমরা এই খেজুর পরিমাণে বেশি দিয়ে উত্তম খেজুর বদলে নিতাম। রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলেনঃ এক সা খেজুরের পরিবর্তে দু সা খেজুর এবং এক দিরহামের পরিবর্তে দু দিরহাম গ্রহণ করা বৈধ নয়, বরং এক দিরহামের পরিবর্তে এক দিরহাম এবং এক দিনারের পরিবর্তে এক দীনার সমান ওজনে অতিরিক্ত না করে নেয়া যাবে। {২২৫৬}
{২২৫৬} সহীহুল বুখারী ২০৮০, ২১৭৯, ২২০২, ২৩১২, মুসলিম ১৫৮৪, ১৫৯৩, ১৫৯৪, ১৫৯৫, ১৫৯৬, নাসায়ী ৪৫৫৩, ৪৫৫৪, ৪৫৫৫, ৪৫৫৬, ৪৫৫৭, ৪৫৬৫, আহমাদ ১০৬০৯, ১০৬৯১, ১১০২০, ১১০৬৫, ১১০৮৩, ১১১৬১, ১১২৪৬, মুয়াত্তা মালেক ১৩১৫, দারেমী ২৫৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু আমর বিন মুহাম্মাদ বিন আমর বিন হুরায়স সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে ঈমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫১৩, ২৬/২১২ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১২/৪৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি বলে, বাকি লেনদেনই সুদ হয়।
২২৫৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি, দিরহামের বিনিময়ে দিরহাম, দীনারের বিনিময়ে দীনার [ওজনে সমান ও নগদ আদান প্রদান] হইতে হইবে। আমি বলিলাম, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.] কে অন্য রকম বলিতে শুনিয়াছি। আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর সাথে সাক্ষাত করে বলিলাম, আমাকে অবহিত করুন যে, মুদ্রার বিনিময় সম্পর্কে আপনি যা বলেন, তা কি আপনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট শুনেছেন, না আল্লাহর কিতাবে পেয়েছেন? তিনি বলেন, আমি তা আল্লাহর কিতাবেও পাইনি এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকটও শুনিনি, বরং উসামা বিন যায়েদ [রাদি.] আমাকে অবহিত করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ধার-কর্জের ক্ষেএেই কেবল [কম বেশি করলে] সুদ হয়। {২২৫৭}
{২২৫৭} সহীহুল বুখারী ২১৭৬, ২১৭৭, ২১৭৯, মুসলিম ১৫৮৪, তিরমিজি ১২৪১, নাসায়ী ৪৫৬৫, ৪৫৮১, আহমাদ ১১০৮৮, ইরওয়া ১৩৩৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৫৮. আবুল জাওযা হইতে বর্ণীতঃ
আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.] সম্পর্কে শুনলাম যে,তিনি মুদ্রার বিনিময় [বাকিতে কম-বেশি] করার বিষয়টি অনুমোদন করছেন এবং তার বরাতে তা বর্ণনা করা হচ্ছে। অতঃপর আমি জানতে পারলাম যে, তিনি এ মত প্রত্যাহার করেছেন। তাই আমি মক্কা শরীফে তার সাথে সাক্ষাত করে বলিলাম, আমি অবগত হয়েছি যে, আপনি আপনার মত প্রত্যাহার করেছেন। তিনি বলেন, হা। সেটি ছিল আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আর এই আবু সাইদ [রাদি.] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বরাতে বর্ণনা করেছেন যে,তিনি [বাকিতে] মুদ্রার বিনিময় নিষিদ্ধ করেছেন। {২২৫৮}
{২২৫৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়া ৫/১৮৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫০. অধ্যায়ঃ সোনার সাথে রুপার বিনিময়।
২২৫৯. উমার[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, নগদ লেনদেন না হলে সোনার সাথে রুপার [বাকীতে] বিনিময় সুদের অন্তর্ভুক্ত। আবু বাকর বিন আবু শাইবা [রাদি.] বলেন, আমি সুফিয়ান [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা মনে রেখো, সোনার সাথে রুপার বিনিময়। {২২৫৯}
{২২৫৯} মাজাহ ২২৬০, ২২৫৩, সহীহুল বুখারী ২১৩৪, ২১৭০, ২১৭৪, মুসলিম ১৫৮৬, তিরমিজি ১২৪৩, নাসায়ী ৪৫৫৮, আবু দাউদ ৩৩৪৮, আহমাদ ১৬৩, ২৪০, ৩১৬, মুয়াত্তা মালেক ১৩২৮, ১৩৩৩, দারেমী ২৫৭৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৬০. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[মালিক] বলেন, আমি একথা বলিতে বলিতে সামনে অগ্রসর হলাম, কে রৌপ্য মুদ্রা বদল করিবে? তালহা বিন উবাইদুল্লাহ [রাদি.] তখন উমার ইবনিল খাত্তাব[রাদি.]- এর নিকট উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমাদেরকে তোমার সোনা দেখাও এবং [কিছুক্ষণ পর] আমাদের নিকট এসো। আমাদের কোষাধ্যক্ষ এসে গেলেই [তোমাকে তোমার প্রাপ্য] রুপা দিয়ে দিবো। তখন উমার [রাদি.] বলেন কক্ষনো নয়। আল্লাহর শপথ! হয় এখনই তুমি তাহাকে রৌপ্য মুদ্রা দিয়ে দাও, নতুবা তার সোনা তাহাকে ফেরত দাও। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ নগদ আদান-প্রদান না হলে সোনার সাথে রুপার বিনিময়ে সুদ হইবে। {২২৬০}
{২২৬০} মাজাহ ২২৫৯, ২২৫৩, সহীহুল বুখারী ২১৩৪, ২১৭০, ২১৭৪, মুসলিম ১৫৮৬, তিরমিজি ১২৪৩, নাসায়ী ৪৫৫৮, আবু দাউদ ৩৩৪৮, আহমাদ ১৬৩, ২৪০, ৩১৬, মুয়াত্তা মালেক ১৩২৮, ১৩৩৩, দারেমী ২৫৭৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৬১. আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দীনারের বিনিময়ে দীনার [স্বর্ণমুদ্রা] এবং দিরহামের বিনিময়ে দিরহামের [রৌপ্যমুদ্রা] লেনদেনের ক্ষেএে অতিরিক্ত নেয়া যাবে না। কারো রুপার প্রয়োজন হলে সে যেন সোনার সাথে তা বিনিময় করে এবং কারো সোনার প্রয়োজন হলে সে যেন তা রুপার সাথে বিনিময় করে। তবে বিনিময়ের এই লেনদেন নগদ হইতে হইবে। {২২৬১}
{২২৬১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসে মোট তিনজন রাবী রয়েছে, তারা হলঃ ১. মুহাম্মাদ ইবনিল আব্বাস সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন তিনি শুধু তার পিতা থেকেই হাদিস বর্ণনা করেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৩২৬, ২৫/৪৪৮ নং পৃষ্ঠা] ২. আব্বাস বিন উসমান বিন শাফি সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার অবস্থা বা পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৩১, ১৪/২৩২ নং পৃষ্ঠা] ৩. উমার বিন মুহাম্মাদ বিন আলী বিন আবু তালিব সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৩০৫, ২১/৫০৪ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু তিনজন রাবী তথা মুহাম্মাদ ইবনিল আব্বাস ও আব্বাস বিন উসমান বিন শাফি এবং উমার বিন মুহাম্মাদ বিন আলী বিন আবু তালিব এর জাহালাতের কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬৬৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ৪ টি জাল, ১০৮ টি খুবই দুর্বল, ২১৭ টি দুর্বল, ১৭৩ টি হাসান, ১৬১ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২১৩৪, ২১৭০, ২১৭৪, ২১৭৫, ২১৭৬, ২১৭৭, ২১৮২, মুসলিম ১৫৮৪, ১৫৮৫, ১৫৮৬, ১৫৮৭, ১৫৮৮, ১৫৮৯, ১৫৯০, ১৫৯১, ১৫৯৩, ১৫৯৪, ১৫৯৬, তিরমিযি ১২৪০, ১২৪১, ১২৪৩, আবু দাউদ ৩৩৪৮, ৩৩৪৯, ৩৩৫৩, দারিমী ৪৪৩, ২৫৭৮, ২৫৭৯, আহমাদ ১৬৩, ২৪০, ৩১৬, ৫৮৫১, ৭১৩১, ৭৫০৫।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫১. অধ্যায়ঃ সোনার বিনিময়ে রুপা এবং রুপার বিনিময়ে সোনা ক্রয়-বিক্রয় করা।
২২৬২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি উটের ব্যবসা করতাম। আমি রুপার পরিবর্তে সোনা, সোনার পরিবর্তে রুপা, দীনারের পরিবর্তে দিরহাম এবং দিরহামের পরিবর্তে দীনার গ্রহন করতাম। আমি এ সম্পর্কে নাবী [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ যখন তুমি ঐগুলোর একটি গ্রহন করিবে এবং অপরটি প্রদান করিবে, তখন তোমার সঙ্গীর সাথে লেনদেন চূড়ান্ত না করে পৃথক হইবে না। [তিরমিজি ১১৭৯]।
{উপরোক্ত হাদিসে মোট ৭ টি সনদের ৬ টি বর্ণিত হয়েছে, অপরটি সনদটি হলঃ}। {২২৬২}/২২৬২[১]. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীত।তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ।{২২৬২} তিরমিজি ১২৪২, নাসায়ী ৪৫৮২, ৪৫৮৩, ৪৫৮৯, আবু দাউদ ৩৩৫৪, আহমাদ ৪৮৬৮, ৫৫৩০, ৫৭৩৯, ৬২০৩, ৬৩৯১, দারেমী ২৫৮১, ইরওয়া ১৩২৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ঈমাম বুখারী মন্তব্য করেছেন। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তার হাদিস বর্জন করেছেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৪১৮, ১১/২০০ নং পৃষ্ঠা] ২. আতা ইবনিস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করেছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা] ৩. সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করেছেন তা সহিহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৫২. অধ্যায়ঃ দিরহাম ও দীনার [মুদ্রা] ভাঙ্গা নিষেধ।
২২৬৩. আবদুল্লাহ বিন সিনান বিন নাবীশায় বিন সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত বৈধ মুদ্রা অপরিহার্য প্রয়োজন ব্যতিত ভাঙ্গতে নিষেধ করেছেন। {২২৬৩}
{২২৬৩} আবু দাউদ ৩৪৪৯, যইফাহ ৪৭০৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. মুহাম্মাদ বিন ফাদা সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী ও আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৪, ২৬/২৭৭ নং পৃষ্ঠা] ২. ফাদা বিন খালিদ সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালানী ও ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ঈমাম যাহাবী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২৪, ২৩/১৮৪ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৫৩. অধ্যায়ঃ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রয় করা।
২২৬৪. সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যুহরা গোত্রের মুক্ত দাস যায়দ আবু আইয়্যাশ সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস [রাদি.]- কে যবের বিনিময়ে সাদা গম ক্রয় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। সাদ [রাদি.] তাহাকে বলেন, এ দুটির মধ্যে কোনটি উত্তম? তিনি বলেন, সাদা গম। সাদ [রাদি.] আমাকে এরুপ লেনদেন করিতে নিষেধ করেন এবং বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে শুকনা খেজুরের সাথে তাজা খেজুরের বিনিময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে শুনিয়াছি। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তাজা খেজুর শুকালে কি কমে যায়? লোকজন বলেন, হাঁ। তিনি এ জাতীয় লেনদেন করিতে নিষেধ করেন। {২২৬৪}{২২৬৪} তিরমিজি ১২২৫, নাসায়ী ৪৫৪৫, আবু দাউদ ৩৩৫৯, ৩৩৬০, আহমাদ ১৫১৮, ১৫৪৭, মুয়াত্তা মালেক ১৩১৬। ইরওয়া ১৩৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫৪. অধ্যায়ঃ মুযাবানা ও মুহাকালা প্রসঙ্গে।
২২৬৫. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুষাবানা ধরনের ক্রয়-বিক্রয় করিতে নিষেধ করেছেন। বাগানের তাজা খেজুর গাছে থাকা অবস্থায় [সংগৃহীত] ওজনকৃত শুকনো খেজুরের বিনিময়ে বিক্রয় করাকে মুযাবানা বলে। অনুরূপভাবে তাজা আঙ্গুর ওজনকৃত শুকনা আঙ্গুর [কিশমিশ] – এর বিনিময়ে বিক্রয় করা, ক্ষেতের শস্য [সংগৃহীত] ওজনকৃত শস্যের বিনিময়ে বিক্রয় করাও [মুযাবানার অন্তর্ভুক্ত]। তিনি এই প্রকারের লেনদেন করিতে নিষেধ করেছেন। {২২৬৫}
{২২৬৫} সহীহুল বুখারী ২১৭১, ২১৭৩, ২১৮৫, ২২০৫,মুসলিম ১৫৪২, নাসায়ী ৪৫৩৩, ৪৫৩৪, ৪৫৪৯, আবু দাউদ ৩৩৬১, আহমাদ ৪৪৭৬, ৪৫১১, ৪৬৩৩, ৫২৯৮, ৫৮২৮, ৬০২২, মুয়াত্তা মালেক ১৩১৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৬৬. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালা ও মুযাবানা ধরনের ক্রয়-বিক্রয় করিতে নিষেধ করেছেন। {২২৬৬}
{২২৬৬} সহীহুল বুখারী ২৩৮১, মুসলিম ১৫৩৬, নাসায়ী ৩৮৮৩, ৩৯২১, ৪৫৫০, আহমাদ ১৪৪৫৪, ১৪৭৯৩।হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
২২৬৭. রাফি বিন খাদীজ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালা ও মুযাবানা ধরনের লেনদেন করিতে নিষেধ করেছেন। {২২৬৭}
{২২৬৭} মাজাহ ২৪৪৯, ২৪৫৩, ২৪৫৮, ২৪৫৯, ২৪৬০, ২৪৬৫, সহীহুল বুখারী ২২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৪৮, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসায়ী ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১,৩৮৮৬, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২,৩৩৯৩,৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭,৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৪০১, ৩৪০২, আহমাদ ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, মুয়াত্তা মালেক ১৪১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।উক্ত হাদিসের রাবী তারিক বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইমামা যাহাবী ও ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে সিকাহ বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৯৫২, ১৩/৩৪৫ নং পৃষ্ঠা]ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫৫. অধ্যায়ঃ আরিয়া পদ্ধতির লেনদেন [গাছের মাথার খেজুর অনুমানে ক্রয়-বিক্রয়]।
২২৬৮. যায়দ বিন সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গাছের উপরিস্থিত খেজুর অনুমানে পরিমাণ নিরূপণ করে বিক্রয় করার অনুমতি দিয়েছেন। {২২৬৮}
{২২৬৮} মাজাহ ২২৬৯, সহীহুল বুখারী ২১৭৩, ২১৮৮, ২১৯৩, ২৩৮০, মুসলিম ১৫৩৪, ১৫৩৯, তিরমিজি ১৩০০, ১৩০২, নাসায়ী ৪৫৩২, ৪৫৩৬, ৪৫৩৭, ৪৫৩৮, ৪৫৩৯, ৪৫৪০, আবু দাউদ ৩৩৬২, আহমাদ ৪৪৭৬, ৪৫২৭, ৪৫৭৬, ২১০৬৭, ২১০৭১, ২১১২৯, ২১১৪৭, ২১১৬৪, মুয়াত্তা মালেক ১৩০৭, দারেমী ২৫৫৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৬৯. যায়দ বিন সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গাছের উপরিস্থিত খেজুর অনুমানে পরিমান নির্ধারণ করে সংগৃহীত খেজুরের বিনিময়ে বিক্রয় করার অনুমতি দিয়েছেন। ইয়াহইয়া [রাদি.] বলেন, গাছের মাথার খেজুর অনুমানে পরিমান নিরূপণ করে ঘরের শুকনা খেজুরের সাথে বিনিময় করাকে আরিয়্যা বলে। {২২৬৯}
{২২৬৯} মাজাহ ২২৬৮, সহীহুল বুখারী ২১৭৩, ২১৮৮, ২১৯৩, ২৩৮০, মুসলিম ১৫৩৪, ১৫৩৯, তিরমিজি ১৩০০, ১৩০২, নাসায়ী ৪৫৩২, ৪৫৩৬, ৪৫৩৭, ৪৫৩৮, ৪৫৩৯, ৪৫৪০, আবু দাউদ ৩৩৬২, আহমাদ ৪৪৭৬, ৪৫২৭, ৪৫৭৬, ২১০৬৭, ২১০৭১, ২১১২৯, ২১১৪৭, ২১১৬৪, মুয়াত্তা মালেক ১৩০৭, দারেমী ২৫৫৮, রাওদুন নাদীর ৩১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫৬. অধ্যায়ঃ জন্তুর বিনিময়ে বাকীতে জন্তু বিক্রয় করা।
২২৭০. সামুরা বিন জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পশুর বিনিময়ে পশু ধারে ক্রয়-বিক্রয় করিতে নিষেধ করেছেন। {২২৭০}
{২২৭০} তিরমিজি ১২৩৭, নাসায়ী ৪৬২০,আবু দাউদ ৩৩৫৬, আহমাদ ১৯৬৩০, ১৯৭০৩, ১৯৭২৫, ১৯৭৫১, দারেমী ২৫৬৪, মিশকাত ২৮২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫৭. অধ্যায়ঃ পশুর পরিবর্তে পশু অধিক দরে নগদ ক্রয়-বিক্রয়।
২২৭১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, একটি পশু দুটি পশুর বিনিময়ে নগদ ক্রয়-বিক্রয় করাতে কোন দোষ নেই। কিন্তু তিনি বাকীতে এরূপ লেনদেন করিতে নিষেধ করেছেন। {২২৭১}
{২২৭১} তিরমিজি ১২৩৮। সহিহাহ ২৪১৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালেহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা] ২. হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ বী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা]ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৭২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.] কে সাতটি দাসীর বিনিময়ে খরিদ করেন। রাবী আবদুর রহমান [রাদি.] বলেন, দিহয়াতুল কালবী [রাদি.]-র নিকট থেকে [তাহাকে খরিদ করেন]। {২২৭২}
{২২৭২} মুসলিম ১৩৬৫, আবু দাউদ ২৯৯৭ আহমাদ ১৩১৬৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী হুসায়ন বিন উরওয়াহ সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৩১৯, ৬/৩৯০ নং পৃষ্ঠা]ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫৮. অধ্যায়ঃ সুদ সম্পর্কে কঠোর বানী।
২২৭৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, মিরাজের রাতে আমাকে একদল লকের কাছে নিয়ে আসা হলো। তাহাদের পেট ছিল ঘরের মত বিশাল, তার মধ্যে সাপ ভর্তি ছিলো, যা বাইরে থেকে দেখা যায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাঈল! এরা কারা? তিনি বলেনঃ এরা সুদখোর। {২২৭৩}
{২২৭৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ২৮২৮, যইফ আল জামি ১৩৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আলী বিন যায়দ বিন জুদআন সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল আজালী বলেন, কোন সমস্যা নাই। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৭০, ২০/৪৩৪ নং পৃষ্ঠা] ২. আবুস সালত সম্পর্কে আবুল মুহসিন, আবু মুহাম্মাদ বিন হাযম ও ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ঈমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায়না। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭৪৪৩, ৩৩/৪২৮ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৭৪. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, সুদের গুনাহর সত্তরতি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্তর হলো আপন মাকে বিবাহ [যেনা] করা। {২২৭৪}
{২২৭৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত-তালীকুর রাগীব ৩/৫০,৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু মাশার সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি সিকাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম তিরমিযি বলেন, তার মুখস্ত করার আগে হাদিস বর্ণনার ব্যাপারে কিছু আহলে ইলম সমালোচনা করেছেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৩৮৬, ২৯/৩২২ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু আবু মাশার এর কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১২ টি খুবই দুর্বল, ২২ টি দুর্বল হাদিস পাওয়া যায় কিন্তু সহিহ শাহিদ হাদিস পাওয়া যায় না।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৭৫. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সুদের পাপের তিয়াত্তরটি স্তর রয়েছে। {২২৭৫}
{২২৭৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইবনিস সালাম এর তাখরিজুল ঈমান ৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৭৬. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সবশেষে সূদের আয়াত নাযিল হয়। কিন্তু আমাদেরকে বিস্তারিত ব্যাখ্যাদানের আগেই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেন। অতএব সূদ এবং [সূদের] সন্দেহ সৃষ্টিকারী জিনিস পরিহার করো। {২২৭৬}
{২২৭৬} আহমাদ ২৪৮, ৩৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৭৭. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সুদখোর, সুদদাতা, সুদের সাক্ষীদ্বয় এবং সুদের হিসাব রক্ষক বা দলীল লেখককে অভিসম্পাত করেছেন। {২২৭৭}
{২২৭৭} মুসলিম ১৫৯৭, তিরমিজি ১২০৬, আবু দাউদ ৩৩৩৩, আহমাদ ৩৭২৯, ৩৭৯৯, ৩৮৭১, ৪০৭৯, ৪২৭১, ৪৩১৫, ৪৩৮৯, ৪৪১৪, দারেমী ২৫৩৫, ইরওয়া ৫/১৮৪, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৪৯। উক্ত হাদিসের রাবী সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করেছেন তা সহিহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
২২৭৮. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ অবশ্যই মানুষ এমন এক যুগের সম্মুখীন হইবে যখন তাহাদের মধ্যে এমন একজনও পাওয়া যাবে না যে সুদখোর নয়। সে সুদ না খেলেও তার ধুলোবালি [মলিনতা] তাহাকে স্পর্শ করিবে। {২২৭৮}
{২২৭৮} নাসায়ী ৪৪৫৫, আবু দাউদ ৩৩৩১, মিশকাত ২৮১৮, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৫৩। আর-রাদ্দু আলাল বালীক ৩৩০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী সাঈদ বিন আবু খায়রাহ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান ছাড়া কেউ তাহাকে সিকাহ বলেননি। এই হাদিসটি ব্যাতিত তার সম্পর্কে অন্য কোথাও জানা যায় না। এছাড়াও সনদের হাসান আল-বুসায়রী তিনি আবু হুরাইরা [রাদি.] থেকে হাদিস শ্রবন করেননি। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২২৬৩, ১০/৪১৬ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৭৯. ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি সুদের দ্বারা সম্পদ বাড়িয়েছে, পরিণামে তার সম্পদ হ্রাসপ্রাপ্ত হইবেই। {২২৭৯}
{২২৭৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত-তালীক ৩/৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৫৯. অধ্যায়ঃ ওজন, পরিমাপ ও মেয়াদ নির্দিষ্ট করে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।
২২৮০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী দু বা তিন বছর মেয়াদে খেজুর আগাম ক্রয়-বিক্রয় করতো। তিনি বলেনঃ কেউ অগ্রিম খেজুর ক্রয়-বিক্রয় করিতে চাইলে সে যেন ওজন, পরিমাপ ও মেয়াদ নির্দিষ্ট করে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করে। {২২৮০}
{২২৮০} সহীহুল বুখারী ২২৩৯, ২২৪১, ২২৫৩, মুসলিম ১৬০৪, তিরমিজি ১৩১১ নাসায়ী ৪৬১৬, আবু দাউদ ৩৪৬৩, আহমাদ ১৮৭১, ১৯৩৮, ২৫৪৪, ৩৩৬০, দারেমী ২৫৮৩, বায়হাকী ফিস সুনান ২/২৪, ইবনি হিব্বান ৪৯২৫, দারাকুতনী ৩/৪, ইরওয়া ১৩৭৬, রাওদুন নাদীর ৪৫৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৮১. আবদুল্লাহ বিন সালাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, ইহুদিদের অমুক দল ইসলাম গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারা দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছে। আমার আশংকা হয় যে, তারা মুরতাদ হয়ে যায় কিনা। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কারো নিকট মাল থাকলে আমাদের সাথে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করুক। এক ইহুদি বললো, আমার নিকট এই এই পরিমাণ জিনিস আছে। সে তার নামও উল্লেখ করলো। আমার মনে হয় সে বলেছে, তিনশত দীনারে অমুক গোত্রের বাগান থেকে এই এই দরে ফল দিতে হইবে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলেনঃ দর এবং মেয়াদ ঠিকই আছে, কিন্তু অমুক গোত্রের বাগান এভাবে স্থান নির্ধারণ গ্রহণযোগ্য নয়। {২২৮১}
{২২৮১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৭/৪৮০, ইরওয়া ১৩৮১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. হামযাহ বিন ইউসুফ বিন আবদুল্লাহ বিন সালাম সম্পর্কে আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তার হাদিস সহিহ হওয়া থেকে বের হয়ে গেছে। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাকবুল। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইবনি হিব্বান তাহাকে মাজহুল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৫২০, ৭/৩৪৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৮২. আবুল মুজালিদ হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ও আবু বারযা [রাদি.]-এর মধ্যে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে মতভেদ হয়। তাই তারা আমাকে আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাদি.]-এর নিকট পাঠালেন। আমি তাহাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে এবং আবু বক্র [রাদি.] ও উমর [রাদি.] এর যুগে গম, যব, কিশমিশ ও খেজুর অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করতাম এমন লোকেদের সাথে যাদের কাছে তা বিদ্যমান থাকতো না। [রাবী আবুল মুজালিদ বলেন] আমি বিন আবযা [রাদি.] কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনিও অনুরূপ জবাব দেন। {২২৮২}
{২২৮২} সহীহুল বুখারী ২২৪৩, ২২৪৫, ২২৫৫, নাসায়ী ৪৬১৪, ৪৬১৫, আবু দাউদ ৩৪৬৪, আহমাদ ১৮৬৪৩, ইরওয়া ১৩৭০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২/৬০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি কোন জিনিস অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করলে তার পরিবর্তে অন্যটি নিতে পারবে না।
২২৮৩. আবু সাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তুমি কোন জিনিস অগ্রিম ক্রয় করলে সেই জিনিসের পরিবর্তে অন্যটি নিতে পারবে না।
{উপরোক্ত হাদিসে মোট ২টি সনদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সনদটি হলোঃ}
২/২২৮৩[১]. আবু সাইদ [রাদি.], তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ সনদসূত্রে রাবী সাদ [রাদি.]-এর উল্লেখ নাই। {২২৮৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ।{২২৮৩} আবু দাউদ ৩৪৬৮, ইরওয়া ১৩৭৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী শুজা ইবনিল ওয়ালীদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি আশা করি তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৭০২, ১২/৩৮২ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৬১. অধ্যায়ঃ কোন নির্দিষ্ট খেজুর গাছ, ফল আসার পূর্বে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।
২২৮৪. আন-নাজরানী হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.], কে জিজ্ঞেস করলাম, ফল আসার পূর্বে খেজুর গাছ অগ্রিম বিক্রয় করা যায় কিনা? তিনি বলেন, না। আমি বলিলাম, কেন? তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে এক ব্যক্তি ফল আসার পূর্বে একটি খেজুর বাগান অগ্রিম ক্রয় করে। কিন্তু [ঘটনাক্রমে] সে বছর খেজুর গাছে কোন ফল ধরেনি। ক্রেতা বললো, ফল না আসা পর্যন্ত এ বাগান আমার। আর বিক্রেতা বললো, নিশ্চয় আমি তোমার নিকট খেজুর বাগান কেবল এক বছরের জন্যই বিক্রয় করেছি। অতঃপর তারা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দরবারে মামলা দায়ের করলো। তিনি বিক্রেতাহাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ ক্রেতা কি তোমার খেজুর গাছ থেকে কিছু গ্রহণ করেছে? বিক্রেতা বললো, না। তিনি বলেনঃ তাহলে কিসের বদলে তুমি তার মাল হালাল করলে? তার থেকে যা গ্রহণ করেছো তা তাহাকে ফেরত দাও। আর [ভবিষ্যতে] গাছের খেজুর পুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তা অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করো না। {২২৮৪}
{২২৮৪} আবু দাউদ ৩৪৬৭, বায়হাকী ফিস সুনান ৭/৪৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আন-নাজরানী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী, ইবনি হাজার আল-আসকালানী, ঈমাম যাহাবী, উসমান বিন সাদ ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তারা সকলে বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭৭৭২, ৩৫/২৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২/৬২. অধ্যায়ঃ চতুষ্পদ জন্তু অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়।
২২৮৫. আবু রাফি [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির নিকট থেকে ধারে একটি উঠতি বয়সের উট কিনেন এবং বলেনঃ যাকাতের উট এলে তোমার ধার পরিশোধ করবো। অতঃপর যাকাতের উট এলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হে আবু রাফে! সেই লোকের উটটি পরিশোধ করো। অতএব আমি চার বছর বা ততোধিক বয়সের উট ছাড়া আর কোন উট পেলাম না। আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি বলেনঃ ওটাই তাহাকে দাও। কেননা লোকেদের মধ্যে সেই ব্যাক্তি উত্তম যে উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে। {২২৮৫}
{২২৮৫} মুসলিম ১৬০০, তিরমিজি ১৩১৮, নাসায়ী ৪৬১৭, আবু দাউদ ৩৩৪৬, আহমাদ ২৬৬৪০, মুয়াত্তা মালেক ১৩৮৪, দারেমী ২৫৬৫, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/২১, ইরওয়া ১৩৭১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুসলিম বিন খালিদ আয-যানজী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু জাফার আল-উকায়লী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯২৫, ২৭/৫০৮ নং পৃষ্ঠা]ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২২৮৬. ইরবাদ বিন সারিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় এক বেদুঈন [এসে] বললো, আমার উঠতি বয়সের উটটি পরিশোধ করুন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে একটি বড় উট দিলেন। বেদুঈন বললো, ইয়া রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ! এটি আমার উটের তুলনায় অধিক বয়স্ক। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে ঋণ পরিশোধে উত্তম। {২২৮৬}
{২২৮৬} নাসায়ী ৪৬১৯, আহমাদ ১৬৬৯৯, ইরওয়া ৫/২২৪, ২২৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদীনী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাহাকে সিকাহ বলিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২০৯৫, ১০/৪০ নং পৃষ্ঠা] ২. মুআবিয়াহ বিন সালিহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার হাদিসের মাঝে আমি কোন সমস্যা দেখি না। আবু বকর আল-বাযযার বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৫৮, ২৮/১৮৬ নং পৃষ্ঠা]ইসলামে ক্রয় বিক্রয় নীতিমালা -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply