গীবত সম্পর্কে হাদিস – গালি, বিদ্রোহ, বিনয় , অভিশাপ , বদদুআ
গীবত সম্পর্কে হাদিস – গালি, বিদ্রোহ, বিনয় , অভিশাপ , বদদুআ >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ৪৩, অনুচ্ছেদঃ ৩৪-৫৮=২৫টি
অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ মানুষ সম্পর্কে সাবধানতা
অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ হাঁটার নিয়ম
অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ এক পায়ের উপর অপর পা রাখা
অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ কথাও এক ধরনের আমানত
অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ চোগলখোর
অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোক সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪০ঃ গীবত সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪১ঃ যে ব্যক্তি তাহাঁর ভাইয়ের সম্মান রক্ষার্থে তাহাঁর পক্ষ নেয়
অনুচ্ছেদ-৪২ঃ যে ব্যক্তির দোষ চর্চা গীবত নয়
অনুচ্ছেদ-৪৩ঃ কেউ কাউকে অপবাদ দিলে সে তার জন্য বৈধ
অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ ছিদ্রান্বেষণ নিষেধ
অনুচ্ছেদ-৪৫ঃ মুসলিমদের দোষ গোপন রাখা
অনুচ্ছেদ-৪৬ঃ ভ্রাতৃত্ব
অনুচ্ছেদ-৪৭ঃ যারা পরস্পরকে গালি দেয়
অনুচ্ছেদ-৪৮ঃ বিনয় ও নম্রতা
অনুচ্ছেদ-৪৯ঃ প্রতিশোধ গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৫০ঃ মৃত ব্যক্তিকে গালি দেয়া নিষেধ
অনুচ্ছেদ-৫১ঃ বিদ্রোহ নিষিদ্ধ
অনুচ্ছেদ-৫২ঃ হিংসা-বিদ্বেষ
অনুচ্ছেদ-৫৩ঃ অভিশাপ দেয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৫৪ঃ যে ব্যক্তি অত্যাচারীকে বদদুআ করে
অনুচ্ছেদ-৫৫ঃ কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে
অনুচ্ছেদ-৫৬ঃ সন্দেহ করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৫৭ঃ আন্তরিকতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৫৮ঃ পরষ্পরের মধ্যে মিমাংসা করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ মানুষ সম্পর্কে সাবধানতা
৪৮৬১. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি ফাগওয়া আল-খুযাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে ডাকলেন। তিনি মক্কা বিজয়ের পর কুরাইশদের মধ্যে কিছু সম্পদ বন্টনের জন্য আমাকে আবু সুফিয়ানের [রাদি.] নিকট প্রেরণের ইচ্ছা করিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি একজন সঙ্গী যোগাড় করো। বর্ণনাকারী বলেন, আমর ইবনি উমাইয়াহ আদ-দামরী আমার নিকট এসে বলিলেন, অবগত হলাম, আপনি সফরে যেতে চান এবং একজন সঙ্গী খুঁজছেন। তিনি বলিলেন, আমি বলিলাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আমিই সঙ্গী। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট গিয়ে জানালাম, আমি একজন সাথী পেয়েছি তিনি তার পরিচয় জানতে চাইলে আমি বলিলাম, আমর ইবনি উমাইমাহ আদ-দামরী। তিনি বলিলেন, তুমি যখন তার গোত্রের এলাকায় পৌঁছবে তখন তার ব্যাপারে খুব সাবধানতা অবলম্বন করিবে। কেননা প্রবাদ আছে “আপন ভাইকেও নিজের জন্য নিরাপদ ভেবো না”। অতঃপর আমরা যাত্রা করে আল-আবওয়া নামক স্থানে পৌঁছলে আমর ইবনি উমাইয়াহ বললো, আমি আমার গোত্রের নিকট এক দরকারে যাচ্ছি। তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করো। আমি বলিলাম আপনি যান, কিন্তু যেন রাস্তা ভুলে না যান। তিনি চলে যাবার পর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাবধানবাণী মনে পড়ে গেলো, তখনই আমি আমার হাওদা উটের উপর শক্ত করে বেঁধে তাড়াহুড়া করে দ্রুত আল-আসাফ নামক স্থানে পৌছলে তিনিও দলবল নিয়ে আমার পিছু নিলেন। আমি অতি দ্রুত অগ্রসর হয়ে তাহাদেরকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেলাম। ফলে তারা ফিরে গেলো। আমর ইবনি উমাইয়াহ আমার নিকট এসে বললো,গোত্রের লোকদের নিকট আমার দরকারী কাজ ছিলো। আমি বলিলাম হ্যাঁ। এরপর আমরা সামনে অগ্রসর হয়ে মাক্কাহয় পৌঁছলাম এবং আবু সুফিয়ানের নিকট মালগুলো হস্তান্তর করলাম। ৪৮৫৯
দুর্বল ঃ যঈফাহ হা/১২০৫ আহমাদ। সানাদে আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন ফাগওয়া খুযাঈ রয়েছে। ঈমাম যাহাবী মীযান গ্রন্থে বলেন তাহাকে চেনা যায়নি। হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেন ঃ মাসতূর[লুপ্ত]। সহিহ ও যয়ীফ সুনানে আবু দাউদ ৫ম খন্ড ৫১০ পৃষ্টা, অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ মানুষ সম্পর্কে সাবধানতা। আল্লামা আলবানী একাডেমী প্রকাসীত। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৮৬২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিয়াছেনঃ মুমিন ব্যক্তি একই গর্তে দুইবার দংশিত হয় না
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ হাঁটার নিয়ম
৪৮৬৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন নাবী [সাঃআঃ] যখন পথ চলতেন তখন মনে হতো তিনি যেন সামনে ঝুঁকে হাঁটছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৬৪. আবুত তুফাইল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আমি দেখেছি। আমি বলিলাম,কেমন দেখেছেন? তিনি বলিলেন সাদা রং মিশ্রিত ও সুদর্শন। আর তিনি যখন হাঁটতেন তখন মনে হতো, তিনি যেন নীচু স্থানে নামছেন।৪৮৬২
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ এক পায়ের উপর অপর পা রাখা
৪৮৬৫. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে বারণ করেছেন। কুতাইবাহর [রাদি.] বর্ণনায় রয়েছেঃ কোন ব্যক্তি যেন তার এক পায়ের উপর অপর পা না উঠায়। কুতাইবাহর [রাদি.] বর্ণনায় আরো রয়েছেঃ অর্থাৎ চিৎ হয়ে শোয়া অবস্থায়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৬৬. আব্বাস ইবনি তামীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার চাচার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে মাসজিদে তাহাঁর এক পায়ের উপর অপর পা রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৬৭. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়াব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উমার ইবনিল খাত্তাব ও উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] উভয়েই তা করিতেন।
সনদ সহিহ উসমান সূত্রে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ কথাও এক ধরনের আমানত
৪৮৬৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তি কোন কথা বলার পর মুখ ঘুরালে [কেউ শুনেছে কিনা তা দেখলে] তা আমানতস্বরূপ।
এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৮৬৯.জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সকল মাজলিস আমানতস্বরূপ, তবে তিনটি মাজলিস ব্যতীত [১] অবৈধভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত মাজলিস অথবা [২] যেনার মাজলিস অথবা [৩] অন্যায়ভাবে সম্পদ আত্মসাত করার মাজলিস।৪৮৬৭
দুর্বল ; যঈফাহ হা/১৯০৯। সানাদে জাবিরের ভাতিজার জাহালাতের কারণে এর সনদ দুর্বল। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৮৭০. আব্দুর রহমান ইবনি সাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন মহান আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় আমানত হইবে স্বামী স্ত্রীর পরস্পর যৌন সম্ভোগ সম্পর্কিত বিষয়। যে গোপনীয় বিষয় স্বামী প্রকাশ করে দিলো। ৪৮৬৮
সনদের আমর ইবনি হামযাহ সম্পর্কে হাফিয আত-তাক্বরীর গ্রন্থে বলেন ঃ দুর্বল।
এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ চোগলখোর
৪৮৭১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিয়াছেনঃ চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোক সম্পর্কে
৪৮৭২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ হলো দ্বিমুখী চরিত্রের লোক। তারা এক দলের নিকট এক চেহারা নিয়ে এবং অপর দলের নিকট অন্য চেহারা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৭৩. আম্মার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দুনিয়াতে দ্বিমুখী স্বভাবের লোকের ক্বিয়ামতের দিন আগুনের দুটি জিহ্বা হইবে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪০ঃ গীবত সম্পর্কে
৪৮৭৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে প্রশ্ন করা হলো, গীবত কী? তিনি বলিলেন, তোমরা ভাইয়ের ব্যাপারে তোমার এমন কিছু বলা যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয়। পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে বর্তমান থাকে? তিনি বলিলেন, তুমি যা বলো তা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর তুমি যা বলো তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তাহাকে মিথ্যা অপবাদ দিলে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৭৫ আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] –কে বলিলাম, সাফিয়্যাহ [রাদি.]-এর ব্যাপারে আপনার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে এরূপ অর্থাৎ তিনি খাটো। তিনি বলিলেনঃ তুমি এমন একটি কথা বলেছো, যা সমুদ্রে মিশিয়ে দিলে তাতে সমুদ্রের রং পাল্টে যাবে। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নকল করলাম। তিনি বলিলেন, আমাকে এতো এতো সম্পদ দেয়া হলেও আমি কারো অনুকরণ পছন্দ করবো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৭৬. সাঈদ ইবনি যায়িদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, অন্যায়ভাবে কোন মুসলিমের মানসম্মানে হস্তক্ষেপ করা ব্যাপকতর সুদের অন্তর্ভুক্ত [মহাপাপ]। {আহমাদ}
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৭৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ অন্যায়ভাবে কোন মুসলিমের মানসম্মানে আঘাত হানা কবীরাহ গুনাহের অন্তর্ভুক্ত এবং একবার গালি দেওয়ার পরিবর্তে দুইবার গালি দেয়াও কবীরাহ গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।৪৮৭৫
৪৮৭৫ আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৮৭৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মিরাজের রাতে আমি এমন এক কওমের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরী এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাহাদের মুখমণ্ডলে ও বুকে আঁচড় মারছে। আমি বলিলাম, হে জিবরীল ! এরা কারা? তিনি বলিলেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো [গীবত করতো] এবং তাহাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৭৯. আবুল মুগীরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে ইবনিল মুসাফ্ফা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবুল মুগীরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে ইবনিল মুসাফ্ফা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের অনুরুপ বর্ণিত। {৪৮৭৭}
আমি এটি সহিহ এবং যঈফে পাইনি।
{৪৮৭৭} এর পূর্বেরটি দেখুন । এই হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৪৮৮০. আবু বারযাহ আল-আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ হে সেসব লোক যারা কেবল মুখেই ঈমান এনেছে কিন্তু ঈমান অন্তরে প্রবেশ করেনি ! তোমরা মুসলিমদের গীবত করিবে না ও দোষত্রুটি তালাশ করিবে না। কারণ যারা তাহাদের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াবে আল্লাহও তাহাদের দোষত্রুটি খুঁজবেন। আর আল্লাহ কারো দোষত্রুটি তালাশ করলে তাহাকে তার ঘরের মধ্যেই অপদস্থ করে ছাড়বেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৪৮৮১. আল-মুসতাওরিদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি অপর মুসলিমের গীবত করে এক লোকমা ভক্ষণ করিবে আল্লাহ তাহাকে এজন্য জাহান্নাম হইতে সমপরিমাণ ভক্ষণ করাবেন। আর যে ব্যক্তি অপর মুসলিমের দোষত্রুটি বর্ণনার পোশাক পরবে আল্লাহ তাহাকে অনুরূপ জাহান্নামের পোশাক পরাবেন। আর যে ব্যক্তি অপর ব্যক্তির [কুৎসা] রটিয়ে খ্যাতি ও প্রদর্শনীর স্তরে পৌঁছবে, মহান আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন তাহাকে ঐ খ্যাতি ও প্রদর্শনীর জায়গাতেই [জাহান্নামে] স্থান দিবেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৮২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ একজন মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের সম্পদ, সম্মান ও জীবনের হস্তক্ষেপ করা হারাম। কোন ব্যক্তির নিকৃষ্ট প্রমাণিত হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ মনে করিবে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪১ঃ যে ব্যক্তি তাহাঁর ভাইয়ের সম্মান রক্ষার্থে তাহাঁর পক্ষ নেয়
৪৮৮৩. সাহল ইবনি মুআয ইবনি আনাস আল্-জুহানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে মুনাফিক হইতে রক্ষা করিবে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তার শরীর জাহান্নাম হইতে রক্ষার জন্য একজন ফেরেশতা প্রেরণ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে অপমান করার উদ্দেশ্যে তাহাকে দোষারোপ করিবে তাহাকে মহান আল্লাহ জাহান্নামের সেতুর উপর প্রতিরোধ ব্যবস্থা করবেন যতক্ষণ না তার কৃতকর্মের ক্ষতিপূরণ হয়।
এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৮৮৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ ও আবু ত্বালহা ইবনি সাহল আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি অপর মুসলিমের মান-ইজ্জত নষ্ট হওয়ার স্থানে তাহাকে ত্যাগ করে , আল্লাহ তাহাকে এমন স্থানে সাহায্য করা হইতে বিমূখ থাকিবেন যেখানে সে তাহাঁর সাহায্য কামনা করে। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের মান-ইজ্জত নষ্ট হওয়ার স্থানে তাহাকে সাহায্য করে আল্লাহ তাহাকে এমন স্থানে সাহায্য করবেন যেখানে সে তাহাঁর সাহায্য প্রত্যাশা করে। {৪৮৮২}
দুর্বল ঃ মিশকাত হা/৪৯৮৮৩। {৪৮৮২} আহমাদ ,ত্বাবারানী । সানাদে ইয়াহইয়া ইবনি সুলাইম এবং ইসমাঈল বাশীর উভয়ে অজ্ঞাত । এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪২ঃ যে ব্যক্তির দোষ চর্চা গীবত নয়
৪৮৮৫.জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা এক বেদুঈন আসলো এবং তার উট বসিয়ে তা রশি দিয়ে বেঁধে মাসজিদে প্রবেশ করলো এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর পিছনে সলাত আদায় করলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সালাম ফিরালে সে তার উটের নিকট এসে তার বাঁধন খুলে তাতে আরোহণ করলো, অতঃপর উচ্চ আওয়াজে বললো, হে আল্লাহ ! আমাকে ও মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-কে দয়া করুন এবং আমাদের দয়ার সঙ্গে কাউকে শরীক করবেন না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ বলো দেখি, সে বেশি মূর্খ নাকি তার উট? সে কি বলেছে তোমরা কি তা শুনোনি? সাহাবীগণ বলিলেন, হ্যাঁ, শুনিয়াছি। {৪৮৮৩}
“ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ বলো দেখি, সে বেশি মূর্খ না তার উট? …।” এ অংশটি বাদে বর্ণনাটি সহিহ।
অথবা দুর্বল, এ অংশে অতিরিক্ত যোগে ঃ “ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ বলো দেখি, সে বেশি মূর্খ না তার উট? …।”
{৪৮৮৩} আহমাদ। বর্ণনাকারী জুরাইরীর শাইখ অজ্ঞাত । এই হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-৪৩ঃ কেউ কাউকে অপবাদ দিলে সে তার জন্য বৈধ
৪৮৮৬
ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ কি আবু দায়গাম বা আবু দামদাম-এর অনুরূপ হইতে অপারগ? তিনি প্রত্যেক দিনের শুরুতে বলিতেন ঃ হে আল্লাহ ! আমি আমার মান-সম্মানকে তোমাদের বান্দাদের জন্য সদাক্বাহ করলাম।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু
৪৮৮৭. আবদুর রহমান ইবনি আজলান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কেউ কি আবু দামদামের অনুরূপ হইতে অক্ষম? লোকেরা প্রশ্ন করলো, আবু দামদাম কে? তিনি বলেন, তোমাদের আগেকার জাতির এক ব্যক্তি… পূর্বোক্ত হাদিসের অর্থানুরূপ। সে বললো, যে ব্যক্তি আমাকে মন্দ করে তার জন্য আমার মান-ইজ্জত উৎসর্গিত।৪৮৮৫
যঈফঃ ইরওয়া হা/২৩৬৬।
৪৮৮৫ আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সানাদে তাবেঈ আবদুর রহমান ইবনি আজলান এর অবস্থা অজ্ঞাত। যেমন হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলিয়াছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ ছিদ্রান্বেষণ নিষেধ
৪৮৮৮. মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে বলিতে শুনেছিঃ তুমি যদি মানুষের গোপন দোষ তালাশ করো তাহলে তাহাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করিবে বা ক্ষতির সীমানায় পৌঁছে দিবে। অতঃপর আবু দারদা [রাদি.] বলিলেন, একথা মুআবিয়াহ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]হইতে শুনেছেন, মহান আল্লাহ তাহাকে এর মাধ্যমে লাভবান করুন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৮৯. জুবাইর ইবনি নুফাইর, কাসীর ইবনি মুররাহ, আমর ইবনিল আসওয়াদ, আল-মিক্বদাম ইবনি মাদীকারিব ও আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, শাসক জনগণকে অপরাধী সন্দেহ করলে তাহাদেরকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে ফেলবে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৯০. যায়িদ ইবনি ওয়াহব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তিকে ইবনি মাসউদের [রাদি.] নিকট এনে বলা হলো, এ সেই লোক যার দাড়ি থেকে মদ টপকে পড়ছে। আবদুল্লাহ [রাদি.] বলিলেন, আমাদের জন্য গোয়েন্দাগিরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু যদি প্রকাশ্যে কোন অন্যায় আমাদের সামনে ধরা পড়ে তাহলে এজন্য আমরা তাহাকে ধরবো।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৫ঃ মুসলিমদের দোষ গোপন রাখা
৪৮৯১. উক্ববাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি [অন্য কারোর] গোপনীয় দোষ দেখিতে পেয়েও তা গোপন করলো সে যেন জীবন্ত কবরস্থ কন্যাকে জীবন দিলো।৪৮৮৯
দুর্বলঃ যঈফাহ হা/১২৬৫। ৪৮৮৯বুখারীর আদাবুল মুফরাদ, তায়ালিসি।এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৮৯২. কাব ইবনি আলক্বামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আবুল হাইসাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কে উল্লেখ করিতে শুনেছেন যে, তিনি উক্ববাহ ইবনি আমিরের [রাদি.] সচিব দুখাইনাকে বলিতে শুনেছেন, আমাদের এক প্রতিবেশী পরিবার মদপান করতো। আমি তাহাদেরকে বারণ করার পরও তারা বিরত হয়নি। আমি উক্ববাহ ইবনি আমির [রাদি.] কে বলিলাম, আমাদের এক প্রতিবেশী পরিবার মদপান করে। আমি তাহাদেরকে নিষেধ করেছি কিন্তু তারা বিরত হয়নি। তাই আমি এখন পুলিশ আনতে যাচ্ছি। তিনি বলিলেন, তাহাদেরকে ছেড়ে দাও। আমি পুনরায় উক্ববাহ [রাদি.] এর নিকট গিয়ে অভিযোগ করলাম, আমাদের সেই প্রতিবেশীরা মদপান পরিহারে অস্বীকার করেছে। আমি পুলিশ আনতে যাচ্ছি। তিনি এবার বলিলেন, তোমার জন্য দুঃখ! তাহাদেরকে তাহাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। কারণ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে বলিতে শুনিয়াছি… অতঃপর মুসলিম ইবনি ইবরাহীম বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, লাইস বলেন, বরং তাহাদেরকে উপদেশ দাও এবং ধমকাও। ৪৮৯০
৪৮৯০ আহমাদ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৬ঃ ভ্রাতৃত্ব
৪৮৯৩. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার উপর নির্যাতন করিবে না এবং তাহাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মিটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মিটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের বিপদ দূর করিবে, আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিনে তার বিপদ দূর করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৭ঃ যারা পরস্পরকে গালি দেয়
৪৮৯৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ পরস্পর তিরস্কারকারীর মধ্যে যে প্রথমে আরম্ভ করে উভয়ের দোষ তার উপর বর্তাবে, যতক্ষণ না অপরজন সীমালঙ্ঘন করে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৮ঃ বিনয় ও নম্রতা
৪৮৯৫. ইয়াদ ইবনি হিমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মহান আল্লাহ আমার নিকট [এ মর্মে] ওয়াহী পাঠিয়েছেন যে, তোমরা বিনয়ী হও, যতক্ষণ না একে অপরের উপর যুলুম করে এবং অহংকার করে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৪৯ঃ প্রতিশোধ গ্রহণ
৪৮৯৬. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়াব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে বসা ছিলেন। এ সময় এক লোক আবু বাকর [রাদি.] কে গালি দিলো এবং কষ্ট দিলো, কিন্তু আবু বাকর [রাদি.] কোন জবাব না দিয়ে চুপ করে রইলেন। অতঃপর পুনরায় সে আবু বাকর [রাদি.] কে গালি দিলো এবং কষ্ট দিলো, কিন্তু তিনি কোন জবাব না দিয়ে চুপ করে রইলেন। তৃতীয়বার সে আবু বাকর [রাদি.] কে গালি এবং কষ্ট দিলে এবার তিনি তার প্রতিশোধ নিলেন। আবু বাকর [রাদি.] যখন প্রতিশোধ নিলেন তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উঠে দাঁড়ালেন। আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমার উপর রাগ করেছেন? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আসমান হইতে একজন ফেরেশতা নেমে ছিলেন এবং তোমার পক্ষ হয়ে জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু যখন তুমি তার প্রতিশোধ নিলে তখন শয়তান এখানে উপস্থিত হয়েছে। শয়তান এখানে উপস্থিত হওয়ায় আমি আর বসতে পারি না। {৪৮৯৪}
{৪৮৯৪} আহমাদ, ত্বাবারনী। এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৮৯৭.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি আবু বাকর [রাদি.] কে গালি দিচ্ছিল… অতঃপর পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ।
এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৮৯৮.ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি প্রতিশোধ গ্রহণ ও আল্লাহর বাণী সম্পর্কে প্রশ্ন করতাম, “তবে নির্যাতিত হওয়ার পর যারা প্রতিশোধ নেয় তাহাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হইবে না” [সূরাহ শূরাদি. ৪১]। আলী ইবনি যায়িদ ইবনি জুদআন তার বিমাতা উম্মু মুহাম্মাদ সূত্রে আমার নিকট বর্ণনা করেন, ইবনি আওন বলেন, তাহাদের বর্ণনানুযায়ী তার বিমাতা উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ [রাদি.] এর নিকট যাতায়াত করিতেন। মুহাম্মাদ বলেন, উম্মুল মুমিনীন বলিয়াছেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট আসলেন, তখন আমার নিকট যাইনাব বিনতু জাহশ [রাদি.] উপস্থিত ছিলেন। তিনি [সাঃআঃ] হাত দিয়ে কিছু করিতে [আমাকে স্পর্শ করিতে] চাইলেন। আমি হাতের ইশারায় যাইনাবের উপস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে জানালাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেমে গেলেন। এরপর যাইনাব [রাদি.] অগ্রসর হয়ে আয়িশাহ [রাদি.] কে গালি দিতে লাগলেন। তখন নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে গালি দিতে বারণ করিলেন কিন্তু তিনি বিরত হলেন না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আয়িশাহ [রাদি.] কে বলিলেন, তুমিও তাহাকে গালি দাও। তারপর আয়িশাহ [রাদি.]-ও তাহাকে গালি দিলেন এবং তাহাকে পরাভূত করিলেন। অতঃপর যাইনাব [রাদি.] আলী [রাদি.] এর নিকট গিয়ে অভিযোগ করিলেন যে, আয়িশাহ [রাদি.] তোমাদের গালি দিয়েছে এবং এ কাজ করেছে। অতঃপর ফাত্বিমাহ ফিরে গিয়ে তাহাদেরকে বলিলেন, আমি তাঁকে [আব্বাকে] এই এই কথা বলেছি এবং এর উত্তরে তিনি এই এই কথা বলিয়াছেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আলী [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে এ বিষয়ে আলোচনা করিলেন। {৪৮৯৬}
{৪৮৯৬} আহমাদ। সানাদে আলী ইবনি যায়িদ দুর্বল। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫০ঃ মৃত ব্যক্তিকে গালি দেয়া নিষেধ
৪৮৯৯.আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কোন সঙ্গী মারা গেলে তাঁকে ছেড়ে দাও এবং তার সম্পর্কে কটুক্তি করো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯০০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা তোমাদের মৃত ব্যক্তিদের ভাল দিকগুলো আলোচনা করো এবং তাহাদের দোষচর্চা পরিহার করো। {৪৮৯৮}
দুর্বলঃ যঈফাহ হা/১৬৭৮। {৪৮৯৮} তিরমিজি, ইবনি হিব্বানের মাওয়ারিদ, বায়হাক্বী। সানাদে ইমরান ইবনি আনাস সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ দুর্বল। এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫১ঃ বিদ্রোহ নিষিদ্ধ
৪৯০১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে বলিতে শুনেছিঃ বনী ইসরাইলের মধ্যে দুব্যক্তি ছিলো। তাহাদের একজন পাপ কাজ করতো এবং অন্যজন সর্বদা ইবাদতে লিপ্ত থাকতো। যখনই ইবাদতে রত ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে দেখতো তখনই তাহাকে খারাপ কাজ পরিহার করিতে বলতো। একদিন সে তাহাকে পাপ কাজে লিপ্ত দেখে বললো, তুমি এমন কাজ হইতে বিরত থাকো। সে বললো, আমাকে আমার রবের উপর ছেড়ে দাও। তোমাকে কি আমার উপর পাহারাদার করে পাঠানো হয়েছে? সে বললো, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না অথবা তোমাকে আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। অতঃপর দুজনকেই মৃত্যু দিয়ে আল্লাহর নিকট উপস্থিত করা হলে তিনি ইবাদতগুজারী ব্যক্তিকে প্রশ্ন করিলেন, তুমি কি আমার সম্পর্কে জানতে? অথবা তুমি কি আমার হাতে যা আছে তার উপর ক্ষমতাবান ছিলে? এবং পাপীকে বলিলেন, তুমি চলে যাও এবং আমার রহমতে জান্নাতে প্রবেশ করো। আর অপর ব্যক্তির ব্যাপারে তিনি বলিলেন, তোমরা একে জাহান্নামে নিয়ে যাও। আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেন, সেই মহান সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার জীবন! সে এমন উক্তি করেছে যার ফলে তার দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই বরবাদ হয়ে গেছে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯০২.আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মহান আল্লাহ বিদ্রোহী ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর মত অন্য কাউকে দুনিয়াতে অতি দ্রুত আযাব দেয়ার পরও আখিরাতের আযাবও তার জন্য জমা করে রাখেননি।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫২ঃ হিংসা-বিদ্বেষ
৪৯০৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা অবশ্যই হিংসা পরিহার করিবে। কারণ আগুন যেভাবে কাঠকে বা ঘাসকে খেয়ে ফেলে, তেমনি হিংসাও মানুষের নেক আমলকে খেয়ে ফেলে। {৪৯০১}
দুর্বলঃ যঈফাহ হা/১৯০২। {৪৯০১} বুখারীর আত-তারীক, আযদ ইবনি হুমাইদ আল-মুনতাখাব মিনাল মুসনাদ, ইবনি আবদুল বার আত-তামহীদ। ঈমাম বুখারী বলেনঃ বর্ণনাটি সহিহ নয়। সানাদে ইবরাহীমের দাদা অজ্ঞাত। কেননা তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৯০৪. সাহল ইবনি আবু উমামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি ও তার পিতা উমার ইবনি আবদুল আযীযের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি খুবই সংক্ষেপে সলাত আদায় করিলেন, যেন তা মুসাফিরের সলাত বা প্রায় অনুরূপ। তিনি সালাম ফিরানোর পর আমার পিতা প্রশ্ন করিলেন, আল্লাহ আপনার প্রতি সদয় হোন! আমাকে বলুন, এটা কি ফরয সলাত না নফল সলাত? তিনি বলেন, এটা ফরয সলাত এবং তা অবশ্যই রসুলুল্লাহর [সাঃআঃ] সলাত। আমি ভুল করিনি, তবে তার যতটুকু বিস্মৃত হয়েছি। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে বলিতেনঃ তোমরা নিজেদের উপর কঠিন করো না; ফলে তোমাদের উপর কঠোরতা চাপিয়ে দেয়া হইবে। অতীতে এক সম্প্রদায় নিজেদের জন্য কঠোরতা অবলম্বন করেছিল, ফলে আল্লাহও তাহাদের উপর কঠোর বিধান চাপিয়ে দেন। অতঃপর তাহাদের শেষ উত্তরসূরি দৃষ্টিগোচর হয় মাঠে ও নির্জন ঘরে। “কিন্তু সন্ন্যাসবাদ, তারা নিজেরাই তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অবলম্বন করেছিল। আমি তাহাদেরকে এ বিধান দেইনি” [সূরাহ হাদীদঃ ২৭]। পরবর্তী দিন সকালে তিনি গিয়ে বলিলেন,উপদেশ গ্রহণ করিতে পারো? অতএব তারা সদলবলে সফর করিলেন এবং একটি এলাকায় পৌঁছালেন যার অধিবাসীরা ধবংসপ্রাপ্ত হয়েছে, অতীতের মধ্যে বিলীন হয়েছে এবং বাসস্থানের ছাদসহ ধবংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করিলেন, তুমি কি এ জনপদ চিনতে পেরেছো? তিনি বলেন, এ হলো সেই জাতির জনপদ যাদের স্বৈরাচারীতা ও হিংসা-বিদ্বেষ তাহাদের ধবংস করেছে। নিশ্চয়ই হিংসা নেক কাজের নূরকে নিভিয়ে দেয় এবং স্বৈরাচার তাহাকে সত্যে বা মিথ্যায় পরিণত করে। চোখ যেনা করে এবং হাত-পা, শরীর, জবান ও লজ্জাস্থান তাহাকে বাস্তবায়িত করে অথবা ত্যাগ করে। {৪৯০২}
দুর্বলঃ যঈফাহ হা/৩৪৬৮। {৪৯০২} সনদের সাঈদ সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ মাক্ববূল। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৩ঃ অভিশাপ দেয়া সম্পর্কে
৪৯০৫. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যখন কোন বান্দা কোন বস্তুকে অভিশাপ দেয় তখন ঐ অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর সেই অভিশাপের আকাশে উঠার পথকে বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন তা পুনরায় দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তনের জন্য রওয়ানা হয়, কিন্তু দুনিয়াতে আসার পথও বন্ধ করে দেয়ায় সে ডানে বামে যাওয়ার চেষ্টা করে। অবশেষে অন্য কোন পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ করা হয়েছে তার নিকট ফিরে আসে। তখন সেই বস্ত যদি ঐ অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার উপর ঐ অভিশাপ পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর উপরই তা পতিত হয়।
এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৯০৬. সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা আল্লাহর অভিশাপ, আল্লাহর গযব বা জাহান্নাম দ্বারা অভিশাপ দিও না।
এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৯০৭. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ অভিশম্পাতকারীরা [কিয়ামতে] সুপারিশকারী হইতে পারবে না এবং সাক্ষীদাতাও হইতে পারবে না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯০৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি বাতাসকে অভিশাপ দিলো। মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছেঃ নাবী [সাঃআঃ] এর যুগে এক ব্যক্তির চাদর বাতাসে ওলটপালট হয়ে গেলে সে বাতাসকে অভিশাপ দিলো। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি বাতাসকে লানত করো না, কেননা সে নির্দেশপ্রাপ্ত। যা অভিশাপযোগ্য নয় কেউ তাহাকে অভিশাপ দিলে তা অভিশাপকারীর ওপরই পতিত হয়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৪ঃ যে ব্যক্তি অত্যাচারীকে বদদুআ করে
৪৯০৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তার কিছু জিনিস চুরি হওয়ায় তিনি চোরকে লানত দিতে থাকলেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ তুমি চোরের আযাব কম করো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৫ঃ কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে
৪৯১০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা পরস্পরকে ঘৃণা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের গোয়েন্দাগিরি করো না, বরং আল্লাহ্র বান্দারা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। যে কোন মুসলিমের জন্য তার কোন ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক বিচ্ছেদ করা জায়িয নয়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯১১. আবু আইয়ুব আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন; কোন মুসলিমের জন্য তার কোন ভাইয়ের সঙ্গে [ঝগড়া করে] তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা বৈধ নয়। দুজন পথিমধ্যে মুখোমুখি হলে একজন এদিকে এবং অপরজন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ দুজনের মধ্যে যে প্রথমে সালাম দেয় সে-ই উত্তম।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯১২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন ঈমানদারের জন্য বৈধ নয়, সে কোন ইমানদারের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রাখবে। অতঃপর তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর উভয়ের দেখা হলে একজন সালাম দিলে এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি তার সালামের উত্তর দিলে উভয়ই সালামের সওয়াব পাবে। তার দ্বিতীয়জন সালামের উত্তর না দিলে গুনাহগার হইবে। ঈমাম আহ্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] – এর বর্ণনায় রয়েছেঃ সালামদাতা সম্পর্কচ্ছেদের গুনাহ থেকে মুক্ত হইবে।৪৯১০
দুর্বলঃ গায়াতুল মারাম হা/৪০৫, ইরওয়া হা/২০২৯। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪৯১৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা উচিত নয়। অতঃপর সে তার দেখা পেয়ে তাহাকে তিনবার সালাম দিলে সে যদি একবারও উত্তর না দেয় তবে সে তার গুনাহসহ প্রত্যাবর্তন করলো।
এই গীবত সম্পর্কে হাদিস এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৯১৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা হালাল নয়। অতঃপর যে ব্যক্তি তিন দিনের বেশি সময় সম্পর্ক ছিন্ন থাকা অবস্থায় মারা গেলো, সে জাহান্নামে প্রবেশ করলো।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯১৫. আবু খিরাশ আস্-সুলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ যে তার ভাইয়ের সাথে এক বছর সম্পর্ক ছিন্ন রাখলো সে যেন তাহাকে হত্যা করলো।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯১৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয়। অতঃপর ঐদিন আল্লাহ্র সাথে শির্ককারী ও দুই ভাইয়ে শত্রুতা পোষণকারীরা ছাড়া সকলকেই ক্ষমা করা হয়। বলা হয়, তোমরা এ দুজনকে শত্রুতা ত্যাগ করার সুযোগ দাও। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] চল্লিশ দিন যাবত তাহাঁর কোন এক স্ত্রীর হইতে বিচ্ছিন্ন ছিলেন, ইবনি উমার [রাদি.] আমৃত্যু তাহাঁর এক পুত্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সম্পর্কচ্ছেদ মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হয়ে থাকলে তাতে গুনাহ নেই। উমার ইবনি আবদুল আযীয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এক ব্যক্তি হয়ে তার চেহারা আড়াল করে রেখেছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৬ঃ সন্দেহ করা সম্পর্কে
৪৯১৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সাবধান! তোমরা সন্দেহ করা হইতে মুক্ত থাকো। কারণ সন্দেহ করা হচ্ছে সবচেয়ে বড় মিথ্যাচার। পরস্পরের বিরুদ্ধে তথ্য তালাশ করো না এবং গোয়েন্দাগিরি করো না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৭ঃ আন্তরিকতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে
৪৯১৮.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ এক মুমিন অপর মুমিনের জন্য আয়নাস্বরূপ এবং এক মুমিন অপর মুমিনের ভাই। তারা একে অপরের ক্ষতি করা হইতে রক্ষা করে এবং তার অনুপস্থিতিতে তাহাকে রক্ষা করে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫৮ঃ পরষ্পরের মধ্যে মিমাংসা করা সম্পর্কে
৪৯১৯. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আমি কি তোমাদের সিয়াম, সালাত, সদাকাহ্র চেয়েও ফযিলত পূর্ণ কাজের কথা বলবো না? সাহাবীগণ বলিলেন, হ্যাঁ অবশ্যই হে আল্লাহ্র রাসূল! তিনি বলিলেনঃ পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করা। আর পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া বাধানো ধ্বংসের কারণ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯২০. হুমাইদ ইবনি আব্দুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার মায়ের হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সে মিথ্যাবাদী নয় যে দুজনের মধ্যে মীমাংসার জন্য কিছু কথা বাড়িয়ে বলে। আহ্মাদ ও মুসনদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]– এর বর্ণনায় রয়েছেঃ যে ব্যক্তি লোকদের মধ্যে মীমাংসার জন্য কিছু উত্তম কথা বলে এবং কিছু বাড়িয়ে বলে, সে মিথ্যুক নয়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪৯২১. . উম্মু কুলসুম বিনতু উকবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, শুধু তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কোথাও মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] – কে আমি শুনিনি। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ যে ব্যক্তি সম্পর্ক স্থাপনের জন্য যেসব কথা বলে থাকে সে কারণে তাহাকে আমি মিথ্যাবাদী মনে করি না। অনুরূপভাবে যুদ্ধের সময় কৌশল হিসেবে যেসব কথা বলা হয় এবং স্বামী স্ত্রীকে যা বলে এবং স্ত্রী স্বামীকে যা বলে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply