হিংসা বিদ্বেষ , ধার্মিকতা, নিয়্যাত, আকাঙ্ক্ষা ও আমল
হিংসা বিদ্বেষ , ধার্মিকতা, নিয়্যাত, আকাঙ্ক্ষা ও আমল >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৩৭, অধ্যায়ঃ (২১-২৮)=৮টি
৩১/২১. অধ্যায়ঃ কপটতা ও খ্যাতিলাভের আকাঙ্ক্ষা
৩১/২২. অধ্যায়ঃ হিংসা-বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা
৩১/২৩. অধ্যায়ঃ বিদ্রোহ ও দুরাচার
৩১/২৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহভীতি ও ধার্মিকতা।
৩১/২৫. অধ্যায়ঃ সুধারণা ও সুপ্রশংসা
৩১/২৬. অধ্যায়ঃ নিয়্যাত [অভিপ্রায়]
৩১/২৭. অধ্যায়ঃ আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মৃত্যু
৩১/২৮. অধ্যায়ঃ নিয়মিত আমল পছন্দনীয়
৩১/২১. অধ্যায়ঃ কপটতা ও খ্যাতিলাভের আকাঙ্ক্ষা
৪২০২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মহামহিম আল্লাহ বলেন, আমি শরীকদের [মুশরিকদের] শেরেক হইতে মুক্ত। যে ব্যক্তি আমার জন্য কোন কাজ করিল এবং তাতে আমি ব্যতীত অন্য কিছুকে শরীক করিল, আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। সে কাজ তার জন্য যাকে সে শরীক করেছে। {৩৫৩৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২০৩. আবু সাদ বিন আবু ফাদালাহ আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন কিয়ামতের দিন, যে দিনের আগমনে কোন সন্দেহ নাই, পূর্বাপর সকলকে একত্র করবেন, তখন একজন ঘোষক ঘোষণা করিবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করিতে গিয়ে এর মধ্যে কাউকে শরীক করেছে, সে যেন গাইরুল্লাহর নিকট নিজের সওয়াব চেয়ে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা শরীকদের শেরেক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।{৩৫৩৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{৩৫৩৫} তিরমিজি ৩১৫৪, আহমাদ ১৭৪৩১। মিশকাত ৫৩১৮।হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪২০৪. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমাদের নিকট রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বের হয়ে আসলেন, আমরা তখন মসীহ দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি কি তোমাদের এমন বিষয় অবহিত করবো না, যা আমার মতে তোমাদের জন্য মসীহ দাজ্জালের চেয়েও ভয়ংকর? রাবী বলেন, আমরা বলিলাম, হাঁ, অবশ্যই। তিনি বলেনঃ গুপ্ত শেরেক। মানুষ নামায পড়তে দাঁড়ায় এবং লোকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সুন্দরভাবে নামায পড়ে।{৩৫৩৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{৩৫৩৬} আহমাদ ১০৮৫৯। মিশকাত ৫৩৩৩, সহিহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ২৭।হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪২০৫. শাদ্দাদ বিন আওস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি আমার উম্মাতের জন্য যেসব বিষয়ের ভয় করি তার মধ্যে অধিক আশংকাজনক হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শেরেক করা। অবশ্য আমি এ কথা বলছিনা যে, তারা সূর্য, চন্দ্র বা প্রতিমার পূজা করিবে, বরং আল্লাহ ব্যতীত অপরের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা এবং গোপন পাপাচার।{৩৫৩৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩৫৩৭} আহমাদ ১৬৬৭১,১৬৬৯০। আত তালীকুর রাগীব ১/৩৬, দঈফ আল-জামি ১৩৭৮।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪২০৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি সুনাম-সুখ্যাতি অন্বেষণের জন্য কাজ করিবে, আল্লাহ তার কাজের দোষ-ত্রুটি প্রচার করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য কাজ করিবে আল্লাহ তাহাকে সেটাই দেখাবেন।{৩৫৩৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।. {৩৫৩৮} আহমাদ ১০৯৬৪।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪২০৭. জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে আমল করিবে, আল্লাহও তাহাকে সেটাই দেখাবেন এবং যে ব্যক্তি সুনাম-সুখ্যাতির অন্বেষণে আমল করিবে, আল্লাহ তার আমল প্রচার করে দিবেন।{৩৫৩৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।৩৫৩৯} সহীহুল বুখারী ৬৪৯৯, মুসলিম ২৯৮৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩১/২২. অধ্যায়ঃ হিংসা-বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা
৪২০৮. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দু ব্যক্তি ছাড়া আর কারো ব্যাপারে ঈর্ষা করা বৈধ নয়। [এক] যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন এবং তাহাকে তা সৎকাজে ব্যয় করার মনোবলও দিয়েছেন। [দুই] যাকে আল্লাহ প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং সে তদ্দ্বারা [সঠিক] মীমাংসা করে এবং তা [লোককে] শিক্ষা দেয়।{৩৫৪০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৪০} সহীহুল বুখারী ৭৩, মুসলিম ৮১৬, আহমাদ ৩৬৪৩, ৪০৯৮। রাওদুন নাদীর ৮৯৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২০৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দুটি ক্ষেত্র ব্যতীত ঈর্ষা করা জায়েয নেই। [এক] যাকে আল্লাহ কুরআন দান করেছেন এবং সে দিন-রাত সর্বক্ষণ তার উপর কায়েম থাকে। [দুই] যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং সে তা দিন-রাত সর্বক্ষণ [আল্লাহর পথে] ব্যয় করে।{৩৫৪১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৪১} সহীহুল বুখারী ৭৫২৯, মুসলিম ৮১৫। আহমাদ ৪৫৩৬, ৪৯০৫, ৫৫৮৬, ৬৩৬৭। রাওদুন নাদীর ৮৯৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২১০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হিংসা বা পরশ্রীকাতরতা নেক আমলসমূহ খেয়ে ফেলে, যেমন আগুন জ্বালানী কাঠ খেয়ে ফেলে। দান-খয়রাত গুনাহসমূহ বিলীন করে দেয় যেমন পানি আগুনকে বিলীন করে [নিভিয়ে] দেয়। নামায মুমিনের নূর [আলো] এবং রোযা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষার ঢাল।{৩৫৪২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩৫৪২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ১৯০১,১৯০২, দঈফ আল-জামি ২৭৮১।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩১/২৩. অধ্যায়ঃ বিদ্রোহ ও দুরাচার
৪২১১. আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ [ন্যায়পরায়ণ শাসকের বিরুদ্ধে] বিদ্রোহ এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার মত মারাত্মক আর কোন গুনাহ নাই, যার শাস্তি আল্লাহ ত্বরিতে দুনিয়াতে দেন এবং আখেরাতের জন্যও জমা রাখেন।{৩৫৪৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৪৩} তিরমিজি ২৫১১, আবু দাউদ ৪৯০২, আহমাদ ১৯৮৬১, ১৯৮৮৫। সাহীহাহ ৯১৭, আত তালীকুর রাগীব ৩/২২৮।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২১২. উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সৎকর্ম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার সাওয়াব দ্রুত পাওয়া যায় এবং দুরাচার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি দ্রুত কার্যকর হয়।{৩৫৪৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল।{৩৫৪৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ৭৮৭।হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৪২১৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তির মন্দ প্রমাণিত হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার অপর মুসলমান ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে। {৩৫৪৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৪৫} মুসলিম ২৫৬৪, তিরমিজি ১৯২৭,আবু দাউদ ৪৮৮২।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২১৪. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার নিকট ওহী পাঠিয়েছেন যে, তোমরা নম্রতা অবলম্বন করো, বিনয়ী হও এবং তোমাদের কেউ যেন কারো প্রতি সীমালংঘন না করে। {৩৫৪৬}
{৩৫৪৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহিহাহ ৫৭০।হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩১/২৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহভীতি ও ধার্মিকতা।
৪২১৫. আতিয়্যাহ আস-সাদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন বান্দা ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত হওয়ার আশংকায় বৈধ অক্ষতিকর বিষয় ত্যাগ না করা পর্যন্ত মোত্তাকীদের পর্যায়ে উন্নীত হইতে পারে না।{৩৫৪৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩৫৪৭} তিরমিযি ২৪৫১। গায়াতুল মারাম ১৭৮, আত তালিকুর রাগিব ৩/১৭।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪২১৬. আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলা হলো, কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি বলেনঃ প্রত্যেক বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী সত্যভাষী ব্যক্তি। তারা বলেন, সত্যভাষীকে তো আমরা চিনি, কিন্তু বিশুদ্ধ অন্তরের ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, সে হলো পূত-পবিত্র নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ যার কোন গুনাহ নাই, নাই কোন দুশমনি, হিংসা-বিদ্বেষ, আত্মঅহমিকা ও কপটতা।{৩৫৪৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৪৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহিহা ৯৪৮।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২১৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ “হে আবু হুরাইরা! তুমি আল্লাহভীরু হয়ে যাও, তাহলে লোকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদতকারী হইতে পারবে। তুমি অল্পে তুষ্ট থাকো, তাহলে লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম কৃতজ্ঞ হইতে পারবে। তুমি নিজের জন্য যা পছন্দ করো, অন্যদের জন্যও তাই পছন্দ করিবে, তাহলে পূর্ণ মুমিন হইতে পারবে। তোমার প্রতিবেশীর প্রতি সদাচারী ও দয়াপরবশ হও, তাহলে মুসলমান হইতে পারবে। তোমার হাসি কমাও, কেননা অধিক হাসি অন্তরাত্নাকে ধ্বংস করে।{৩৫৪৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৪৯} তিরমিজি ২৩০৫।সহিহাহ ৫০৬, ৯২৭, ২০৪৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২১৮. আবু যার [রাদি.] , হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তদবীরের [বিচক্ষণতা, পরিণামদর্শিতা] তুল্য কোন জ্ঞান নেই, নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বিরত থাকার তুল্য ধার্মিকতা নেই এবং সচ্চরিত্র তুল্য কোন আভিজাত্য নেই। {৩৫৫০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩৫৫০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।দঈফাহ ১৯১০, আর রাদ্দু আলাল বালীক ২৯৯, দঈফ আল-জামি ৬৩০২।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪২১৯. সামুরাহ বিন জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আভিজাত্য হলো সম্পদ এবং মহত্ব ও মহানুভবতাই তাকওয়া।{৩৫৫১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৫১} তিরমিজি ৩২৭১, ইরওয়া ১৮৭০।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২০. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি এমন একটি বাক্য বা আয়াত জানি, সকলেই যদি তা গ্রহণ করতো তবে অবশ্যই তাহাদের জন্যে তা যথেষ্ট হতো। তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা কোন্ আয়াত? তিনি বলেন, তা হলো
وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا
“যে কেউ আল্লাহকে ভয় করলে তিনি তার জন্য নিষ্কৃতির পথ করে দেন” [সূরা তালাকঃ ২]। {৩৫৫২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩৫৫২} আহমাদ ২১০৪১, দারিমী ২৭২৫।মিশকাত ৫৩০৬।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩১/২৫. অধ্যায়ঃ সুধারণা ও সুপ্রশংসা
৪২২১. আবু যুহায়র আস সাকাফী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাবাওয়াহ বা বানাওয়াহ নামক স্হানে আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। রাবী বলেন, নাবাওয়াহ তায়েফের একটি স্হানের নাম। তিনি বলেনঃ অচিরেই তোমরা জান্নাতী লোকদেরকে জাহান্নামীদের থেকে পৃথকভাবে চিনতে পারবে। তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা কিভাবে? তিনি বলেনঃ সুপ্রশংসা ও কুপ্রশংসা দ্বারা। তোমরা যে মৃতের প্রশংসা করিবে সে জান্নাতী এবং যে মৃতের দুর্নাম করিবে সে জাহান্নামী। তোমরা [পৃথিবীতে] পরস্পরের বিরুদ্ধে আল্লাহর সাক্ষী।{৩৫৫৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ৩৫৫৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।তাখরীজুত তহাবিয়াহ ৪৮৯।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২২. কুলসূম আল-খুযাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ভালো কাজ করলে কিভাবে জানতে পারবো যে, আমি ভালো কাজ করেছি এবং মন্দ কাজ করলেই বা কিভাবে বুঝবো যে, আমি মন্দ কাজ করেছি? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন তোমার প্রতিবেশী বলে যে, তুমি ভালো কাজ করেছো, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছো এবং যখন তারা বলে যে, তুমি মন্দ করেছো তবেই তুমি মন্দ কাজ করেছো।{৩৫৫৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৫৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।তাখরীজুত মিশকাত ৪৯৮৮, সহিহাহ ১৩২৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২৩. আবদুল্লাহ [বিন মাসউদ] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বললো, আমি কিভাবে জানবো, যখন আমি ভালো কাজ করি এবং যখন আমি মন্দ কাজ করি? নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন তুমি তোমার প্রতিবেশীদের বলিতে শুনবে যে, তুমি ভালো কাজ করেছো, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছো। আর যখন তুমি তোমার প্রতিবেশীদের বলিতে শুনবে যে, তুমি মন্দ কাজ করেছো, তবেই তুমি মন্দ কাজ করেছো।{৩৫৫৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ{৩৫৫৫} আহমাদ ৩৭৯৮।মিশকাত ৪৯৮৮ আল-আহাদীসুস সহিহাহ ১৩২৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আল্লাহ মানুষের উত্তম প্রশংসায় যার দু কান পূর্ণ করেছেন এবং সেও তা শুনতে পেয়েছে, এমন ব্যক্তিই জান্নাতের অধিকারী। তিনি যার কান মানুষের দুর্নামে পূর্ণ করেছেন এবং সেও তা শুনতে পেয়েছে, এমন ব্যক্তিই জাহান্নামী।{৩৫৫৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহিহ।{৩৫৫৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।সহিহাহ ১৭৪০।হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৪২২৫. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি নাবী [সাঃআঃ] কে বলিলাম, কোন ব্যক্তি কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কাজ করে এবং লোকজন তার সেই কাজের জন্য তাহাকে ভালোবাসে। তিনি বলেনঃ এটা তো ঈমানদার ব্যক্তির জন্য আগাম সুসংবাদ।{৩৫৫৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৫৭} মুসলিম ২৬৪২, আহমাদ ২০৮৭২, ২০৯৬৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কোন কাজ করি, তা লোকের গোচরীভূত হয়ে যায়, তাতে আমি আনন্দবোধ করি। তিনি বলেনঃ তোমার জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব। গোপনে করার সাওয়াব এবং প্রকাশ হয়ে পড়ার সাওয়াব।{৩৫৫৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩৫৫৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।দঈফাহ ৪৩৪৪।হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩১/২৬. অধ্যায়ঃ নিয়্যাত [অভিপ্রায়]
৪২২৭. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ
তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যাবতীয় কাজের ফল নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক মানুষের জন্য তার নিয়্যাত [অভিপ্রায়] অনুযায়ী ফলাফল রয়েছে। অতএব যার হিজরত আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের দিকে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের জন্যই গণ্য হয়। আর যার হিজরত পার্থিব স্বার্থ লাভের জন্য, সে তাই লাভ করিবে অথবা তার হিজরত কোন নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হলে সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে তার হিজরত সেই উদ্দেশ্যের জন্য গণ্য হইবে।{৩৫৫৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৫৯} সহীহুল বুখারী ১, ৫৪, ২৫২৯,৩৮৯৮, ৫০৭০, ৬৬৮৯, ৬৯৫৩, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিজি ১৬৪৭, নাসায়ী ৭৫, ৩৪৩৭, ৩৭৯৪, আবু দাউদ ২২০১, আহমাদ ১৬৯, ৩০২, ইরওয়া ২২,সহিহ আবু দাউদ ১৯১১।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২৮. আবু কাবশা আল-আনমারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ এ উম্মাতের দৃষ্টান্ত চার ব্যক্তি সদৃশ। [এক] এক ব্যক্তিকে আল্লাহ ধন-সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন এবং সে তার জ্ঞান দ্বারা তার মাল ব্যবহার করে, যথার্থ খাতে তা ব্যয় করে। [দুই] এক ব্যক্তিকে আল্লাহ জ্ঞান দান করেছেন কিন্তু সম্পদ দান করেননি। সে বলে, ঐ ব্যক্তির অনুরূপ আমার সম্পদ থাকলে আমি তার মত তা কাজে লাগাতাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এ দুজন সমান পুরস্কার লাভের অধিকারী। [তিন] এক ব্যক্তিকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু জ্ঞান দান করেননি। সে তার মালে ভ্রষ্টনীতি গ্রহণ করে, তা অন্যায় পথে ব্যয় করে। [চার] এক ব্যক্তিকে আল্লাহ জ্ঞান ও সম্পদ কোনটাই দান করেননি। সে বলে, তার অনুরুপ আমার সম্পদ থাকলে তার মত [ভ্রষ্ট] কাজে লাগাতাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এই দুব্যক্তি সমান অপরাধী।
{উপরোক্ত হাদিসের মোট ৪ টি সনদের ২টি সনদ বর্ণিত হয়েছে, অপর ২টি সনদ হলোঃ}৩/৪২২৮ [১] . ইসহাক বিন মানসূর আল-মারওয়াযী, আবদুর রাযযাক, মামার, মানসূর, সালিম বিন আবুল জাদ, ইবনি আবু কাবশাহ [মাকবূল] , তার পিতা [আবু কাবশাহ] [রাদি.] ; মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল বিন সামুরাহ, আবু উসামাহ, মুফাদদাল, মানসূর [ইবনিল মুতামির, সালিম বিন আবুল জাদ, ইবনি আবু কাবশাহ [মাকবূর] , তার পিতা [আবু কাবশাহ] [রাদি.]। {৩৫৬০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬০} তিরমিজি ২৩২৫, আত-তালীকুর রাগীব, ১/২৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২২৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ লোকদের [হাশরের দিন] তাহাদের নিয়্যাত [অভিপ্রায়] অনুসারে উঠানো হইবে।{৩৫৬১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।আত-তালীকুর রাগীব, ১/২৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ লোকজনকে তাহাদের নিয়াত [উদ্দেশ্য] অনুসারে হাশরের ময়দানে একত্র করা হইবে।{৩৫৬২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬২} মুসলিম ২৮৭৮।আয যিলাল ৮৬৫।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩১/২৭. অধ্যায়ঃ আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মৃত্যু
৪২৩১. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] একটি বর্গাকৃতির চতুর্ভুজ আঁকলেন, এর মধ্যভাগে একটি সরল রেখা টানলেন, অতঃপর চতুর্ভুজের মধ্যবর্তী এ রেখার দুদিকে অনেকগুলো ক্ষুদ্র রেখা টানলেন, অতঃপর চতুর্ভুজের বহির্ভাগে একটি সরলরেখা টানলেন যা বর্গক্ষেত্রকে ছেদ করে অন্য প্রান্ত ভেদ করেছে। অতঃপর তিনি বলেন, তোমরা কি জানো, এটা কি? তারা বলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত। তিনি বলেনঃ এই মধ্যবর্তী রেখাটি হলো মানুষ। আর সরলরেখার দু দিকে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেখা আছে, এগুলো হলো বিপদাপদ, যা তাহাকে অহরহ দংশন করে। সে একটি বিপদ থেকে মুক্তি পেলে আরেকটি বিপদ তার উপর পতিত হয়। বর্গক্ষেত্রটি হলো তার জীবনকালের সীমা, যা তাহাকে বেষ্টন করে রেখেছে। আর [বর্গক্ষেত্র ভেদ করে] বাইরে আসা রেখাটি হলো তার কামনা-বাসনা।{৩৫৬৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৩} সহীহুল বুখারী ৬৪১৭, তিরমিজি ২৪৫৪, আহমাদ ৩৬৪৪, দারিমী ২৭২৯।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩২. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ এই হলো আদম সন্তান এবং এই হলো তার মৃত্যু, তার ঘাড়ের নিকট। তিনি তাহাঁর হাত তাহাঁর সামনের দিকে প্রসারিত করে বলিলেনঃ এই পর্যন্ত [হায়াতের চেয়েও বেশী] তার আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।{৩৫৬৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৪} সহীহুল বুখারী ৬৪১৮, তিরমিজি ২৩৩৪, আহমাদ ১১৮২৯, ১১৯৭৯, ১৩২৮৫, ১৩৩৮৪। মিশকাত ৫২৭৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] , হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দুটি জিনিসের ভালোবাসায় বৃদ্ধের মন যুবকই থেকে যায়। বেঁচে থাকার লালসা ও সম্পদের প্রাচুর্য।{৩৫৬৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৫} সহীহুল বুখারী ৬৪২০, ১০৪৬, তিরমিজি ২৩৩৮, আহমাদ ৮২১৭, ৮২৫১, ৮২৬৭।আত-তালীকুর রাগীব ৩/১০, সহিহাহ ১৯০৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আদাম সন্তান বৃদ্ধ হয়ে গেলেও তার দুটি স্বভাব যুবকই থেকে যায়ঃ সম্পদের লোভ ও বেঁচে থাকার লালসা।{৩৫৬৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৬} সহীহুল বুখারী ৬৪২১, মুসলিম ১০৪৭, তিরমিজি ২৩৩৯, আহমাদ ১২৫৮৬, ১৩২৮২। সহিহাহ ১৯০৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আদম সন্তান দু উপত্যকা ভর্তি সম্পদের অধিকারী হলেও সে এর সাথে তৃতীয়টি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করিবে। মাটি ছাড়া অন্য কিছু তার দেহ ভর্তি করিতে পারে না। কোন ব্যক্তি তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।{৩৫৬৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। রাওদুন নাদীর ৩৩২।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার উম্মাতের [গড়] আয়ু ষাট থেকে সত্তর বছর। তাহাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই এ বয়স অতিক্রম করিবে।{৩৫৬৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৮} তিরমিযি ২৩৩১,৩৫৫০। মিশকাত ৫২৮০, সহিহা ৭৫৭।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩১/২৮. অধ্যায়ঃ নিয়মিত আমল পছন্দনীয়
৪২৩৭. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সেই মহান সত্ত্বার শপথ, যিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে নিয়ে গেছেন, তিনি ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত অধিকাংশ সময় [নফল] নামায বসে পরতেন। বান্দা যে নেক আমল নিয়মিত করে তার অল্প হলেও তাহাঁর নিকট পছন্দনীয় ছিল।{৩৫৬৯}
তাহকিক আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৬৯} নাসায়ী ১৬৫৩, ১৬৫৪, ১৬৫৫, আহমাদ ২৬১৮৬।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩৮. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমার নিকট এক মহিলা উপস্থিত থাকা অবস্থায় নাবী [সাঃআঃ] আমার ঘরে প্রবেশ করিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এ মহিলা কে? আমি বলিলাম, অমুক মহিলা, সে রাতে ঘুমায় না। তিনি তার সলাতের কথা উল্লেখ করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আরে থামো! তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করা তোমাদের কর্তব্য। আল্লাহ্র শপথ! আল্লাহ [পুরস্কার প্রদানে] অবসন্ন হন না, যতক্ষণ না তোমরা অবসন্ন হয়ে পড়। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, কোন ব্যক্তির নিয়মিত আমলই তাহাঁর নিকট সর্বাধিক প্রিয় দ্বীন ছিল। {৩৫৭০}
তাহকিক আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৭০} সহিহুল বুখারী ৪৩, ১১৩২, ১১৫১, ১৯৭০, ১৯৮৭, ৬৪৬১, ৬৪৬২, ৬৪৬৪, ৬৪৬৫, মুসলিম ৭৪১, ৭৮২, ৭৮৩, ৭৮৫, ২৮১৮, নাসায়ী ৭৬২, ১৬৪২,আবু দাউদ ১৩৭০,১৩৬৮,আহমাদ ২৩৭২৪, ২৩৭৯৮, ২৪৭৮৯, ২৪৮৮৫, ২৪৯৪৫, ২৫০২৮, ২৫১০১, ২৫১৪৩, ২৫৪১৪, ২৫৫০৭, ২৫৭৭৫, ২৫৮১১, ২৫৮৫৮, মুওয়াত্তা মালিক ৪২২। ইরওয়া ১২৩৮।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৩৯. হানযালা আল-কাতিব আত-তামীমী আল-উসায়্যিদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি আমাদের জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এমনভাবে নসীহত করিলেন, যেন আমরা তা চাক্ষুস দেখিতে পাচ্ছি। তারপর আমি উঠে পরিবার ও সন্তানদের নিকট ফিরে আসি এবং আনন্দ স্ফুর্তি করি। রাবী বলেন, আমি আমাদের এ অবস্থার কথা স্মরণ করছিলাম, অতঃপর [ঘর থেকে] বের হয়ে গিয়ে আবু বাক্র সিদ্দিক [রাদি.] -এর সাথে সাক্ষাত করলাম এবং তাহাকে বলিলাম, আমি মোনাফেক হয়ে গেছি, মোনাফেক হয়ে গেছি। আবু বকর [রাদি.] বলেন, আমরাও তো তাই করি। অতঃপর হানযালা [রাদি.] গিয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হে হানযালা! তোমরা আমার নিকট উপস্থিত থাকলে যেরূপ থাকো, সর্বদা তদ্রূপ থাকলে অবশ্যই ফেরেশতাগণ তোমাদের বিছানায় অথবা পথিমধ্যে তোমার সাথে মোসাফাহা করতো। হে হানযালা! সেই অবস্থা সময় সময় হয়ে থাকে। {৩৫৭১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৭১} মুসলিম ২৭৫০, তিরমিজি ২৪৫২, ২৫১৪, আহমাদ ১৭১৫৭, ১৮৫৬৬। সহিহাহ ১৯৪৮।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪২৪০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা যথাসাধ্য আমল করো। কেননা সেই আমলই উত্তম যা নিয়মিত করা যায়, তা পরিমাণে কম হলেও। {৩৫৭২}
{৩৫৭২} আহমাদ ৮৩৯৪। সহিহ আবু দাউদ ১২৩৮।উক্ত হাদিসের রাবী আল-আব্বাস বিন উসমান আদ-দিমাশকি সম্পর্কে আবুল হাসান বিন সুমায় বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি কখনো কখনো সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৩২, ১৪/২৩৩ নং পৃষ্ঠা] ২. ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহাঁর হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহাঁর কিতাবসমূহ পুড়ে যাবার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন, কিতাবসমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করেছেন তা দুর্বল। আবুল কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বাক্র আল-বায়হাকি বলেন, তার হাদিস দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তকে দুর্বল বলিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার কিতাবসমূহ পুড়ে যাবার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো তবে আমি তার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতামনা। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা]হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৪২৪১. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক খন্ড পাথরের উপর নামাযরত এক ব্যক্তিকে অতিক্রম করে চলে গেলেন। তিনি মক্কার এক প্রান্তে পৌঁছে সেখানে কিছুক্ষণ কাটালেন। অতঃপর তিনি ফেরার পথে ঐ লোকটিকে পূর্বাবস্থায় নামাযরত দেখিতে পেলেন। তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাহাঁর দু হাত একত্র করে বলেনঃ হে লোকসকল! তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো। কথাটা তিনি তিনবার বলেন। কেননা তোমরা অবসাদগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ প্রতিদান দিতে ক্ষান্ত হন না। {৩৫৭৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।{৩৫৭৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহিহাহ ১৭৬০।হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply