হজের কোরবানি , ইহরাম অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানো

হজের কোরবানি , ইহরাম অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানো

হজের কোরবানি , ইহরাম অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানো >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৫, অধ্যায়ঃ (৭১-১০১)=৩১টি

১৯/৭১. অধ্যায়ঃ মাথা কামানো
১৯/৭২. অধ্যায়ঃ যে ব্যাক্তি নিজ মাথার চুল একত্রে জমাতবদ্ধ করে
১৯/৭৩. অধ্যায়ঃ কোরবানির বর্ণনা
১৯/৭৪. অধ্যায়ঃ হজ্জের অনুষ্ঠানাদিতে অগ্রপশ্চাৎ করা
১৯/৭৫. অধ্যায়ঃ তাশরীকের দিনসমূহে [১১-১২-১৩ যিলহজ্জ] জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা
১৯/৭৬. অধ্যায়ঃ কোরবানীর দিনের ভাষণ
১৯/৭৭. অধ্যায়ঃ বাইতুল্লাহ যিয়ারত
১৯/৭৮. অধ্যায়ঃ যমযমের পানি পান করা
১৯/৭৯. অধ্যায়ঃ কাবা ঘরের অভ্যন্তরভাগে প্রবেশ করা
১৯/৮০. অধ্যায়ঃ মিনার রাতগুলোতে মক্কায় অবস্হান
১৯/৮১. অধ্যায়ঃ মুহাস্‌সাবে যাত্রা বিরতি
১৯/৮২. অধ্যায়ঃ বিদায়ী তাওয়াফ
১৯/৮৩. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীলোক বিদায়ী তাওয়াফ না করে প্রস্থান করিতে পারে
১৯/৮৪. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]ের হজ্জ
১৯/৮৫. অধ্যায়ঃ হজ্জের উদ্দেশে যাওয়ার পথে বাধাগ্রস্ত হলে
১৯/৮৬. অধ্যায়ঃ বাধাগ্রস্ত হলে তাহার ফিদ্‌য়া
১৯/৮৭. অধ্যায়ঃ ইহরাম অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানো
১৯/৮৮. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তি কী ধরনের তৈল মাখতে পারে
১৯/৮৯. অধ্যায়ঃ কেউ ইহরাম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলে
১৯/৯০. অধ্যায়ঃ কেউ ইহরাম অবস্থায় শিকার করিলে তাহার কাফ্‌ফারা
১৯/৯১. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তি যে সব প্রানী হত্যা করিতে পারবে
১৯/৯২. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তির জন্য যে ধরণের শিকার নিষিদ্ধ
১৯/৯৩. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তির উদ্দেশ্যে শিকার না করা হলে সে তাহার গোশত খেতে পারে
১৯/৯৪. অধ্যায়ঃ কোরবানী পশুর গলায় মালা পরানো
১৯/৯৫. অধ্যায়ঃ মেষ-বকরীর গলায় মালা পরানো
১৯/৯৬. অধ্যায়ঃ উটের কুঁজ ফেড়ে দেয়া
১৯/৯৭. অধ্যায়ঃ কোরবানী পশুকে কাপড়ের ঝুল পরানো
১৯/৯৮. অধ্যায়ঃ মর্দা ও মাদী উভয় ধরনের পশুই কোরবানী দেয়া যায়
১৯/৯৯. অধ্যায়ঃ মীকাত অতিক্রম করেও কোরবানীর পশু নেয়া যায়
১৯/১০০. অধ্যায়ঃ কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ করা
১৯/১০১. অধ্যায়ঃ কোরবানীর পশু পথিমধ্যে অচল হয়ে পড়লে

১৯/৭১. অধ্যায়ঃ মাথা কামানো

৩০৪৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আল্লাহ! যারা মাথা মুণ্ডন করিয়েছে তাহাদের ক্ষমা করুন। সাহাবীগন বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যারা নিজেদের মাথার চুল ছাঁটিয়েছে? তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! যারা নিজেদের মাথা মুণ্ডন করিয়েছে তাহাদের ক্ষমা করুন। এ কথা তিনি তিনাবার বলেন। সাহাবীগন বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! যারা নিজেদের মাথার চুল ছাঁটিয়েছে তাহাদের জন্যও। তিনি বলেনঃ যারা চুল ছাঁটিয়েছে তাহাদের জন্যও। {৩০৪৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৪৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭২৮, মুসলিম ১৩০২, আহমাদ ৭১১৮, ৯০৭৭, ইরওয়া ৪/২৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৪৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যারা মাথা মুণ্ডন করিয়েছে আল্লাহ তাআলা তাহাদের প্রতি দয়া করুন। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যারা চুল ছাঁটিয়েছে তাহাদের প্রতিও। তিনি বলেনঃ যারা মাথা মুণ্ডন করিয়েছে আল্লাহ তাআলা তাহাদের প্রতি দয়া করুন। তাহারা বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! যারা চুল ছাঁটিয়েছে তাহাদের প্রতিও। তিনি বলেনঃ যারা চুল ছাঁটিয়েছে তাহাদের প্রতিও। {৩০৪৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৪৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭২৭, মুসলিম ১৩০১, তিরমিজি ৯১৩, আবু দাউদ ১৯৭৯, আহমাদ ৪৬৪৩, ৪৮৭৯, ৫৪৮৩, ৫৯৬৯, ৬১৯৮, ৬২৩৩, ৬৩৪৭, মুয়াত্তা মালিক ৯০১, দারেমী ১৯০৬, ইরওয়া ১০৮৪, সহীহ আবু দাউদ ১৭২৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৪৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জিজ্ঞেস করা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! যারা মাথা মুণ্ডন করিয়েছে আপনি তাহাদের জন্য তিনবার, আর যারা চুল ছাঁটিয়েছে তাহাদের জন্য একবার মাত্র দুআ করিয়াছেন, এর কারন কী? তিনি বলেনঃ যারা মাথা মুণ্ডন করিয়েছে তাহারা সন্দেহ করেনি [অর্থাৎ উত্তম কাজ সন্দেহমুক্তভাবে সমাধা করেছে]। {৩০৪৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{৩০৪৫} আবু দাউদ ৩৩০১, ইরওয়া ৪/২৮৫, ২৮৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইউনুস বিন বুকায়র সম্পর্কে আবু বকর বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭১৭১, ৩২/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯/৭২. অধ্যায়ঃ যে ব্যাক্তি নিজ মাথার চুল একত্রে জমাতবদ্ধ করে

৩০৪৬. হাফসাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! লোকেরা ইহরামমুক্ত হইয়াছে, আর আপনি এখনও উমরার ইহরাম থেকে মুক্ত হননি, এর কারণ কী? তিনি বলেনঃ আমি আমার মাথার চুল জমাটবদ্ধ করে নিয়েছি এবং সাথে কোরবানির পশু এনেছি। তাই কোরবানী না করা পর্যন্ত আমি ইহরামমুক্ত হইতে পারি না। {৩০৪৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৪৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৬৬, ১৬৯৭, ১৭২৫, ৪৩৯৮, ৫৯১৬, মুসলিম ১২২৯, নাসাঈ ২৬৮২, ২৭৮১, আবু দাউদ ১৮০৬, আহমাদ ২৫৮৯৩, ২৫৮৯৭, মুয়াত্তা মালিক ৮৯৭, সহীহ আবু দাউদ ১৫৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৪৭. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি শুনিয়াছি যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহার মাথার চুল একত্রে জমাটবদ্ধ অবস্থায় লাব্বাইক ধ্বনি করিয়াছেন। {৩০৪৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৪৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৪০, ৫৯৮৪, ৫৯১৫, নাসাঈ ২৬৮৩, আবু দাউদ ১৭৪৭, আহমাদ ৫৯৮৫, ৬১১১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৭৩. অধ্যায়ঃ কোরবানির বর্ণনা

৩০৪৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন মিনার সমস্ত এলাকাই কোরবানীর স্থান, মক্কার প্রতিটি প্রশস্ত সড়কই রাস্তা এবং কোরবানীর স্থান, আরাফাতের গোটা এলাকাই অবস্থানস্থল এবং মুযদালিফার সমস্ত এলাকাও অবস্থানস্থল। {৩০৪৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।{৩০৪৮} আবু দাউদ ১৯৩৬, ১৯৩৭, দারেমী ১৮৭৯, রাওদুন নাদীর ৪৬৮, সহীহাহ ২৪৬৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৯/৭৪. অধ্যায়ঃ হজ্জের অনুষ্ঠানাদিতে অগ্রপশ্চাৎ করা

৩০৪৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হজ্জের অনুষ্ঠানাদিতে অগ্র-পশ্চাৎ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি দুহাতের ইশারায় বলেনঃ কোন ক্ষতি নেই। {৩০৪৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। {৩০৪৯} ইবনি মাজাহ ৩০৫০, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৮৪, ১৭২১, ১৭২২, ১৭২৩, ১৭৩৪, ১৭৩৫, ৬৬৬৬, মুসলিম ১৩০৭, নাসাঈ ৩০৬৭, আবু দাউদ ১৯৮৩, সহীহ আবু দাউদ ১৭৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৫০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

, মিনার দিবসে লোকেরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করিলে তিনি বলেতেন, কোন দোষ নেই, কোন ক্ষতি নেই। অতএব এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বলল, কোরবানীর পূর্বে আমি মাথা মুণ্ডন করিয়েছি। তিনি বলেনঃ কোন দোষ নেই। আরেকজন বলল, আমি সন্ধ্যায় কাঁকর নিক্ষেপ করেছি। তিনি বলিলেন, কোন ক্ষতি নেই। {৩০৫০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৫০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৮৪, ১৭২১, ১৭২২, ১৭২৩, ১৭৩৪, ১৭৩৫, ৬৬৬৬, মুসলিম ১৩০৭, নাসাঈ ৩০৬৭, আবু দাউদ ১৯৮৩, সহীহ আবু দাউদ ১৭৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৫১. আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] এর নিকট মাসাআলা জানতে চাওয়া হলো যে, কোন ব্যক্তি মাথা মুণ্ডনের পূর্বে কোরবানী করেছে অথবা কোন ব্যক্তি কোরবানীর পূর্বে কামিয়েছে। তিনি বলেনঃ তাতে কোন দোষ নেই। {৩০৫১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৫১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৮৩, ১২৪, ১৭৩৬, ১৭৩৮, ৬৬৬৫, মুসলিম ১৩০৬, তিরমিজি ৯১৬, আবু দাউদ ২০১৪, আহমাদ ৬৪৪৮, ৬৪৫৩, ৬৭৬১, ৬৮৪৮, ৬৯১৮, ৬৯৯৩, মুয়াত্তা মালিক ৯৫৯, দারেমী ১৯০৭, ১৯০৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৫২. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোরবানীর দিন লোকেদের উদ্দেশে মিনায় বসলেন। এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কোরবানী করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করেয়েছি। তিনি বলেনঃ কোন দোষ নেই। অপর এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি কংকর নিক্ষেপের পূর্বে কোরবানী করেছি। তিনি বলেনঃ কোন দোষ নেই। সেদিন কোন অনুষ্ঠান কোন অনুষ্ঠানের আগে বা পরে সম্পন্ন করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ কোন দোষ নেই। {৩০৫২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।{৩০৫২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৯/৭৫. অধ্যায়ঃ তাশরীকের দিনসমূহে [১১-১২-১৩ যিলহজ্জ] জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা

৩০৫৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জামরাতুল আকাবায় পূর্বাহ্ণে পাথর নিক্ষেপ করিতে দেখেছি। তিনি এরপরের [দিনগুলোতে] পাথর নিক্ষেপ করেন অপরাহ্ণে। {৩০৫৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।{৩০৫৩} মুসলিম ১২৯৯, তিরমিজি ৮৯৪, নাসাঈ ৩০৬২, ৩০৬৩, আবু দাউদ ১৯৭১, আহমাদ ১৩৯৪৪, ১৪০০৯, ১৪২৬১, দারেমী ১৮৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৩০৫৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [অপরাহ্ণে] সূর্য ঢলে যাওয়ার পর জামরায় কাঁকর নিক্ষেপ করিতেন, কাঁকর নিক্ষেপের পর তাহাঁর নামায পরার সময় হয়ে যেতো। {৩০৫৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল।{৩০৫৪} তিরমিজি ৮৯৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস সম্পর্কে মুসলিম বিন কায়স বলেন, ইনশাআল্লাহ্‌ [আল্লাহ্‌ চায়তো] তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি মুদতাহারাব ভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার একাধিক মুনকার হাদিস রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৯১, ৪/৪৮৯ নং পৃষ্ঠা] ২. ইবরাহীম বিন উসমান বিন আবু শায়বাহ সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল, তাহার হাদিস মানুষেরা বর্জন করিয়াছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু আলী আল-হাফিয আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ঈমাম যাহাবী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তিনি দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ তাহার হাদিস পরিত্যাগ করিয়াছেন। নুরুদ্দীন আল-হায়সামী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২১২, ২/১৪৭ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৭৬. অধ্যায়ঃ কোরবানীর দিনের ভাষণ

৩০৫৫. আমর ইবনিল আহ্ওয়াস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি নবী [সাঃআঃ] কে বিদায় হজ্জে বলিতে শুনেছিঃ হে লোকসকল! কোন্ দিনটি সর্বাধিক সম্মানিত? তিনি তিনবার এ কথা বলেন। তাহারা বলেন, হজ্জের বড় দিন। তিনি বলেনঃ তোমাদের রক্ত [জীবন] , তোমাদের সম্পদ, তোমাদের মান-সম্ভ্রম তোমাদের পরস্পরের জন্য [তাতে হস্তক্ষেপ করা] হারাম, যেভাবে তোমাদের এ দিনে, এই মাসে এবং এই শহরে হারাম। সাবধান! কেউ অপরাধ করিলে সেজন্য তাহাকেই গ্রেপ্তার করা হইবে। পিতাহার অপরাধের জন্য পুত্রকে দায়ী করা যাবে না এবং পুত্রের অপরাধের জন্য পিতাহাকে দায়ী করা যাবে না। জেনে রাখো ! তোমাদের এই শহরে শয়তান নিজের জন্য ইবাদাত পাওয়া থেকে চিরকালের জন্য নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু কতগুলো কাজ যা তোমরা তুচ্ছজ্ঞানে করিতে গিয়ে শয়তানের আনুগত্য করো এবং তাতে সে খুশি হয়ে যায়। সাবধান! জাহিলী যুগের সকল রক্তের [হত্যার] দাবি রহিত হলো। এসব দাবির মধ্যে আমি সর্ব প্রথম আল-হারিস বিন আবদুল মুত্তালিবের রক্তের দাবি রহিত করছি, সে লাইস গোত্রে প্রতিপালিত হওয়াকালে হুযাইল গোত্রের লোকেরা তাহাকে হত্যা করে। সাবধান! জাহিলী যুগের সমস্ত সূদের দাবি রহিত হলো। তবে তোমরা মূলধন ফেরত পাবে, তোমরাও জুলুম করিবে না এবং জুলুমের শিকারও হইবে না। শোনো হে আমার উম্মাত! আমি কি পৌঁছে দিয়াছি? একথা তিনি তিনবার জিজ্ঞেস করেন। তাহারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন। একথাও তিনি তিনবার বলেন। {৩০৫৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৫৫} তিরমিজি ২১৫৯, ৩০৮৭, আবু দাউদ ৩৩৩৪, ইরওয়া ৫/২৭৯, সহীহ আবু দাউদ ১৭০০ [এর অনুরূপ] তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৫৬. জুবায়র বিন মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিনার মসজিদুল খায়ফ-এ দাঁড়িয়ে বলেনঃ আল্লাহ তাআলা সেই ব্যক্তিকে সজীব ও আলোকোজ্জ্বল করে রাখুন যে আমার কথা শোনে, অতঃপর তা [অন্যদের নিকট] পৌঁছে দেয়। জ্ঞানের অনেক বাহক মূলত জ্ঞানী নয়। কোন কোন জ্ঞানের বাহক যাহার নিকট জ্ঞান বয়ে নিয়ে যায়, সে তাহার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। তিনটি বিষয়ে মুমিন ব্যক্তির অন্তর প্রতাহারণা করিতে পারে না। [১] একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর [সন্তোষ লাভের] জন্য আমাল [কাজ] করা, [২] মুসলিম শাসকবর্গকে সদুপদেশ প্রদানে এবং [৩] মুসলিম জামাআতের [সমাজের] সাথে সংঘবদ্ধ থাকার ব্যপারে। কারণ মুসলমানদের দুআ তাহাদেরকে পেছন থেকে পরিবেষ্টন করে রাখে। {৩০৫৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।৩০৫৬}আহমাদ ১৬২৯৬, ১৬৩১২, দারেমী ২২৭, যিলাল ১০৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] ২. আব্দুস সালাম বিন আবুল জানুব সম্পর্কে আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে জড়িত। আবু যুরআহ আর-রাযী ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪১৬, ১৮/৬৩ নং পৃষ্ঠাউক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুহাম্মাদ বিন ইসহাক ও আব্দুস সালাম বিন আবুল জানুব এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৯৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ১ টি জাল, ৩৩ টি খুবই দুর্বল, ১১৪ টি দুর্বল, ৬৭ টি হাসান, ৭৮ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ২৬৫৬, ২৬৫৭, ২৬৫৮, আবু দাউদ ৩৬৬০, দারেমী ২২৭, ২২৮, ২২৯, ২৩০।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৫৭. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] আরাফাতের ময়দানে তাহাঁর স্বীয় উষ্ট্রীতে আরোহিত অবস্হায় বলেনঃ তোমরা কি জানো আজ কোন দিন, এটা কোন মাস এবং এটা কোন শহর? তাহারা বলেন, এটা [মক্কা] সন্মানিত শহর , সন্মানিত মাস ও সন্মানিত দিন। তিনি আরো বলেনঃ সাবধান ! তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের রক্ত তোমাদের পরস্পরের প্রতি তেমনি হারাম যেমনি তোমাদের এই মাসের সন্মান রয়েছে তোমাদের এই শহরে তোমাদের এই দিনে। শুনে রাখো ! আমি তোমাদের আগেই হাওযে কাওসারে উপস্থিত থাকবো। অন্যান্য উম্মাতের তুলনায় তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে আমি গৌরব করিব। তোমরা যেন আমার চেহারা কালিমালিপ্ত না করো। সাবধান! কিছু লোককে আমি মুক্ত করিতে পারবো। আর কিছু লোককে আমার নিকট থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হইবে। তখন আমি বলবো , হে আল্লাহ ! এরা তো আমার সাহাবী ! তিনি বলবেনঃ তোমার পরে এরা কী বিদআতী কাজ করেছে, তা তুমি জানো না। {৩০৫৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৫৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি যাফির বিন সুলায়মান সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না, তাহার দুর্বলতাহার সাথে তাহার থেকে হাদিস লিখা যায়। আবুল হাসান ইবনিল মুদানী বলেন, আমি তাহার হাদিস বর্জন করেছি। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৪৭, ৯/২৬৭ নং পৃষ্ঠা] ২. আবু সিনান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। মুহাম্মাদ বিন আম্মার বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২২৯৪, ১০/৪৯২ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৫৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] যে বছর হজ্জ করেন, সেই বছর কোরবানির দিন জামরাসমূহের মধ্যস্থলে দাঁড়ালেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেনঃ আজ কোন দিন? সাহাবীগণ বলিলেন, কোরবানীর দিন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেনঃ এটা কোন শহর? তাহারা বলিলেন, এটা আল্লাহর সন্মানিত শহর। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, এটি কোন মাস? তাহারা বলিলেন, আল্লাহর সন্মানিত মাস। তিনি বললেনঃ এটি হজ্জের বড় দিন। তোমাদের রক্ত , তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের মান-সম্ভ্রম [ প্রভৃতির উপর হস্তক্ষেপ ] তোমাদের জন্য হারাম , যেমন এই শহরের হুরমাত [ সন্মান] এই মাসে এবং এই দিনে। তিনি পুনরায় বলেনঃ আমি কি পৌছে দিয়াছি? তাহারা বলেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বলিতে শুরু করিলেনঃ হে আল্লাহ! সাক্ষী থাকুন। অতঃপর তিনি লোকেদের বিদায় দেন। তখন তাহারা বলেন, এটা বিদায় হজ্জ। {৩০৫৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৫৮} আবু দাউদ ১৯৪৫, সহীহ আবু দাউদ ১৭০০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৭৭. অধ্যায়ঃ বাইতুল্লাহ যিয়ারত

৩০৫৯. আয়েশা [রাদি.] ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] রাত পর্যন্ত তাওয়াফে যিয়ারত বিলম্ব করেন। {৩০৫৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ শায।{৩০৫৯} তিরমিজি ৯২০, আবু দাউদ ২০০০, আহমাদ ২৬০৭, ২৮১১, ২৫২৭১, ইরওয়া ৪/২৬৪, ২৬৫, জইফ আবু দাউদ ৩৪২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ শাজ।হাদিসের তাহকিকঃ শায

৩০৬০. আবদুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাওয়াফে যিয়ারতের সাত চক্করে রমল [ বাহু দুলিয়ে বীরত্বপূর্ণ পদক্ষেপ] করেননি। আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তাওয়াফে যিয়ারতে রমল করিতে হয় না। {৩০৬০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬০} আবু দাউদ ২০০১, সহীহ আবু দাউদ ১৭৪৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৭৮. অধ্যায়ঃ যমযমের পানি পান করা

৩০৬১. মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান বিন আবু বাকর [মাকবুল] হইতে বর্ণীতঃ

আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.] এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এক ব্যাক্তি তাহাঁর নিকট এলে তিনি জিজ্ঞেস করনে, তুমি কোথা থেকে এসেছো? সে বলল যমযমের নিকট থেকে। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন , তুমি কি তা থেকে প্রয়োজনমত পান করেছ? সে বলল ,তা কিরুপে? তিনি বলিলেন , তুমি তা থেকে পান করার সময় কিবলামুখী হইবে , আল্লাহর নাম স্মরন করিবে , তিনবার নিঃশ্বাস নিবে এবং তৃপ্তি সহকারে পান করিবে। পানি পান শেষে তুমি মহামহিম আল্লাহর প্রশংসা করিবে। কারন , রাসুলাল্লাহ [ [সাঃআঃ] ] বলেছেনঃ আমাদের ও মুনাফিকদের মধ্যে নিদর্শন এই যে, তাহারা তৃপ্তি সহকারে যমযমের পানি পান করে না। {৩০৬১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩০৬১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১১২৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান বিন আবু বাকর সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাকবুল। ঈমাম বুখারি তাহার তারিখুল কাবীর এর মাঝে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন এবং বলেছেন, তিনি ইবনি উমার থেকে ও তাহার থেকে আমর বিন দীনার হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তাহার থেকে দুইজন রাবী হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু কেউ তাহাকে সিকাহ বলেননি। সানাদের বাকী রাবীগুলো সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৩৯১, ২৫/৫৯৩ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩০৬২. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাযিঃ] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, যমযমের পানি যে উপকার লাভের আশায় পান করা হইবে , তা অর্জিত হইবে। {৩০৬২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬২} আহমাদ ১৪৪৩৫, ১৪৫৭৮, ইরওয়া ১১২৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ ইবনিল মুআম্মাল সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার অনেক হাদিস আছে যেগুলোর অনুসরণ করা যাবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ বিন নুমায়র বলেন, তিনি সিকাহ [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫৫৯, ১৬/১৮৭ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটির ৪৮ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ৮ টি খুবই দুর্বল, ১৯ টি দুর্বল, ৯ টি হাসান, ১২ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আহমাদ ১৪৪৩৫, ১৪৫৭৮, দারাকুতনী ২৭১৩, মুজামুল আওসাত ৮৪৯, ৩৮১৫, ৯০২৭, শুআবুল ঈমান ৪১২৭, ৪১২৮। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৭৯. অধ্যায়ঃ কাবা ঘরের অভ্যন্তরভাগে প্রবেশ করা

৩০৬৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন কাবা ঘরে প্রবেশ করেন। তাহাঁর সাথে ছিলেন বিলাল ও উসমান বিন শায়বাহ [রাদি.]। তাঁরা ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। তাঁরা বেরিয়ে এলে আমি বিলালাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] কোন স্হানে নামায পড়েছেন? তিনি আমাকে অবহিত করেন যে, তিনি ভিতরে প্রবেশ করে ডান দিকের দুস্তম্ভের মাঝখানে দাড়িয়ে তাহার দিকে মুখ করে সলাত আদায় করেন। অতপর আমি নিজেকে তিরস্কার করলাম যে, আমি কেন জিজ্ঞেস করলাম না যে, রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] কত রাকাত নামায পরেছেন। {৩০৬৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৯৭, ৪৬৮, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ১১৭১, ১৫৯৮, ১৫৯৯, ২৯৮৮, ৪৪০০, মুসলিম ১৩২৯, তিরমিজি ৮৭৪, নাসাঈ ৬৯২, ৭৪৯, ২৯০৫, ২৯০৬, ২৯০৭, ২৯০৮, আবু দাউদ ২০২৩, আহমাদ ৪৮৭৩, ৫১৫৪, ৫৮৯১, ৫৯৮৩, ৬১৯৫, ২৩৩৭৭, ২৩৩৮৮, ২৩৪০২, মুয়াত্তা মালিক ৯১০,দারেমী ১৮৬৬, সহীহ আবু দাউদ ১৭৬৪-১৭৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৬৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] আমার নিকট থেকে আনন্দিত চোখে ও উৎফুল্ল চিত্তে বেরিয়ে গেলেন, কিন্তু বিষণ্ণ অবস্হায় ফিরে এলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমার নিকট থেকে চক্ষু শীতল অবস্থায় বেরিয়ে গেলেন, অথচ দুশ্চিন্তাযুক্ত অবস্হায় ফিরে এলেন। তিনি বলেনঃ আমি কাবা ঘরে প্রবেশ করার পর ভাবলাম, আমি যদি এটা না করতাম! আমার আশঙ্কা হচ্ছে যে, আমার উম্মাতের কষ্ট হইবে। {৩০৬৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩০৬৪} তিরমিজি ৮৭৩, আবু দাউদ ২০২৯, যইফাহ ৩৩৪৬, জইফ আবু দাউদ ৩৪৭, জইফ আল-জামি আস-সাগীর ২০৮৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন আবদুল মালিক সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ ও ইবনিল জারুদ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবদুর রহমান বিন মাহদী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। মুহ্মমাদ বিন আম্মার বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৬৪, ৩/১৪১ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৮০. অধ্যায়ঃ মিনার রাতগুলোতে মক্কায় অবস্হান

৩০৬৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব [রাদি.] মিনার দিনগুলোর রাত মক্কায় কাটানোর জন্য রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন। কারন হাজ্জীদের পানি পান করানোর দায়িত্ব তাহার উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি তাহাকে অনুমতি দিলেন। {৩০৬৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৩৪, ১৭৪৫, মুসলিম ১৩১৫, আবু দাউদ ১৯৫৯, আহমাদ ৪৬৭৭, ৪৭১৭, ৪৮১২, ৫৫৮১, দারেমী ১৯৪৩, ইরওয়া ১০৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৬৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] আব্বাস [রাদি.] ব্যাতীত আর কাউকে মিনার রাতগুলোতে মক্কা অবস্থানের অনুমতি দেননি। কারন তাহার উপর পানি সরবরাহের দায়িত্ব অর্পিত ছিল। {৩০৬৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল।{৩০৬৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৩৬, আহমাদ ১৮৪৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন মুসলিম সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, আমরা তাহার হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করি না। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু আলী আল-হাফিয আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৩, ৩/১৯৮ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৮১. অধ্যায়ঃ মুহাস্‌সাবে যাত্রা বিরতি

৩০৬৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আল-আবতাহ্‌ নামক স্থানে যাত্রাবিরতি সুন্নাত নয়। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – সেখানে এজন্য যাত্রাবিরতি করেন যাতে মদীনার উদ্দেশ্যে তাহাঁর রওয়ানা করা সহজ হয়। {৩০৬৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭৬৫, মুসলিম ১৩১১, তিরমিজি ৯২৩, আবু দাউদ ২০০৮, আহমাদ ২৩৬২৩, ২৫০৪৭, ২৫১৯২, ২৫৩৫৭, ২৫৩৯৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৬৮. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] রাতের বেলা বাতহা নামক স্থান থেকে মদীনার উদ্দেশে রওনা হন। {৩০৬৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬৮} আহমাদ ২৩৯৭২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুআবিয়াহ বিন হিশাম সম্পর্কে আবুল ফারাজ আল-জাওযী বলেন, তাহার থেকে কেউ হাদিস শ্রবন করেনি তবে যারা হাদিস শ্রবন করেছে তাহারা তা বর্জন করেছে। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৬৭, ২৮/১২৮ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৬৯. . ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – আবু বাকর, উমার ও উসমান [রাদি.] বাতহা নামক স্থানে যাত্রাবিরতি করিতেন। {৩০৬৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৬৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭৬৯, মুসলিম ১৩১০, তিরমিজি ৯২১, আবু দাউদ ২০১২, ২০১৩, আহমাদ ৪৮০৪, ৫৭২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮২. অধ্যায়ঃ বিদায়ী তাওয়াফ

৩০৭০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

লোকেরা বিক্ষিপ্তভাবে সব দিকে যাচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ শেষবারের মত বাইতুল্লাহ তাওয়াফ না করা পর্যন্ত কেউ যেন প্রস্থান না করে। {৩০৭০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭৫৫, মুসলিম ১৩২৭, ১৩২৮, আবু দাউদ ২০০২, আহমাদ ১৯৩৭, দারেমী ১৯৩২, রাওদুন নাদীর ৫৫৯, সহীহ আবু দাউদ ১৭৪৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৭১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

শেষবারের মত বাইতুল্লাহ তাওয়াফ না করা পর্যন্ত কোন ব্যক্তিকে [মক্কা থেকে] প্রস্থান করিতে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন। {৩০৭১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রাওদুন নাদীর ৫৫৯, সহীহ আবু দাউদ ১৭৪৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবরাহীম বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবুল হাসান ইবনিল কাত্তান তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস দারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবদুল্লাহ বিন সুলায়মান ইবনিল আশআস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সহজ-সরল অর্থাৎ তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আলী ইবনিল জুনায়দ বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি দুর্বল আমি তাহার থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করিনি। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ আল-মাখরামী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ ইবনিল বুরাকী বলেন, তিনি মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬৭, ২/২৪২ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইবরাহীম বিন ইয়াযীদ এর কারণে সানাদটি খুবই দুর্বল। হাদিসটির ১৬৮ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ১ টি জাল, ১৩ টি খুবই দুর্বল, ৪৭ টি দুর্বল, ৩৮ টি হাসান, ৬৯ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৭৫৪, মুসলিম ১২১১, তিরমিজি ৯৪৪, ৯৪৬, আবু দাউদ ২০০২, ২০০৪, দারেমী ১৯৩২, মুয়াত্তা মালিক ৯৪৬, আহমাদ ১৯৩৭, ৩১৩০, ১০৫০১৪, ১৫০১৫, ১৫০১৬, সহীহ ইবনি খুযাইমাহ ২৮০৮, ২৮০৯, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, দারাকুতনী ২৬৬৪, ২৭৬০, শারহুস সুন্নাহ ১৯৭১। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮৩. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীলোক বিদায়ী তাওয়াফ না করে প্রস্থান করিতে পারে

৩০৭২. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাওয়াফে ইফাদা করার পর সাফিয়্যা বিনতু হুয়ায় [রাদি.] ঋতুবতী হলেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি তা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – কে জানালাম। তিনি বলেন, সে কি আমাদের আটক রাখবে? আমি বললাম, তিনি তাওয়াফে ইফাযা করিয়াছেন, অতঃপর ঋতুবতী হইয়াছেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – বলিলেন তাহলে রওয়ানা হইতে পারো। {৩০৭২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩২৮, ১৫৬১, ১৭৩৩, ১৭৫৭, ১৭৬২, ১৭৭২, ৪৪০১, ৫৩২৯, ৬১৫৭, ৭২২৯, মুসলিম ১২১১, তিরমিজি ৯৪৩, নাসাঈ ৩৯১, আবু দাউদ ২০০৩, আহমাদ ২৩৫৮১, ২৩৫৮৯, ২৪০০৪, ২৪০৩৭, ২৪১৫৩, ২৪৩৮৫, ২৪৭৮১, ২৪৮৯৭, ২৪৯১৪, ২৪৯৯১, ২৫০৭৫, ২৫১৩৪, ২৫১৯৩, ২৫২৪৯, ২৫৩৪৭,২৫৪১৩, ২৫৬২৮, মুয়াত্তা মালিক ৯৪৩, ৯৪৫, দারেমী ৯৪২, ১৯১৭, সহীহ আবু দাউদ ১৭৪৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৭৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.] সম্পর্কে জানতে চাইলে আমরা বললাম, সে ঋতুবতী হইয়াছে। তিনি বলেনঃ বন্ধ্যা, ন্যাড়া, সে তো আমাদের আটকে ফেলেছে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি কোরবানীর দিন তাওয়াফ করিয়াছেন। তিনি বলেনঃ তাহলে অসুবিধা নেই। তোমরা তাহাকে রওনা হইতে বলো। {৩০৭৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩২৮, ১৫৬১, ১৭৩৩, ১৭৫৭, ১৭৬২, ১৭৭২, ৪৪০১, ৫৩২৯, ৬১৫৭, ৭২২৯, মুসলিম ১২১১, তিরমিজি ৯৪৩, নাসাঈ ৩৯১, আবু দাউদ ২০০৩, আহমাদ ২৩৫৮১, ২৩৫৮৯, ২৪০০৪, ২৪০৩৭, ২৪১৫৩, ২৪৩৮৫, ২৪৭৮১, ২৪৮৯৭, ২৪৯১৪, ২৪৯৯১, ২৫০৭৫, ২৫১৩৪, ২৫১৯৩, ২৫২৪৯, ২৫৩৪৭,২৫৪১৩, ২৫৬২৮, মুয়াত্তা মালিক ৯৪৩, ৯৪৫, দারেমী ৯৪২, ১৯১৭, ইরওয়া ৪/২৬১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮৪. অধ্যায়ঃ রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]ের হজ্জ

৩০৭৪. মুহাম্মাদ বিন আলী বিন হুসায়ন বিন আলী বিন আবু তালিব হইতে বর্ণীতঃ

আমরা জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] এর নিকট গেলাম। আমরা তাহার নিকট উপস্থিত হলে তিনি সাক্ষাতপ্রার্থীদের পরিচয় জানতে চান। আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করিলে আমি বলি যে, আমি ইবনিল হুসাইনের পুত্র মুহাম্মাদ। অতএব তিনি [স্নেহভরে] আমার দিকে তাহার হাত বাড়ালেন এবং তা আমার মাথার উপর রাখলেন। তিনি প্রথমে আমার পরিচ্ছদের উপর দিকের বোতাম, অতঃপর নিচের বোতাম খুললেন, অতঃপর তাহার হাত আমার বুকের উপর রাখলেন। আমি তখন উঠতি বয়সের যুবক। তিনি বলেন, তোমাকে মোবারকবাদ জানাই। তুমি যা জানতে চাও জিজ্ঞেস করো। আমি তাহাকে জিজ্ঞেস করলাম, এ সময় তিনি [বাধ্যর্কজনিত কারণে] দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। ইতোমধ্যে সলাতের ওয়াক্ত হলো। তিনি নিজেকে একটি চাদরে আবৃত করে উঠে দাঁড়ালেন। তিনি যখনই চাদরের প্রান্তভাগ নিজের কাঁধের উপর রাখতেন, তা [আকারে] ছোট হওয়ার কারণে নিচে পড়ে যেতো। তাহার আরেকটি বড় চাদর তাহার পাশেই আলনায় রাখা ছিল। তিনি আমাদের নিয়ে সলাত আদায় করিলেন। অতঃপর আমি বললাম, আপনি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর [বিদায়] হাজ্জ্ সম্পর্কে অবহিত করুন। জাবির [রাদি.] স্বহস্তে [৯] সংখ্যার প্রতি ইংগিত করে বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নয় বছর [মদীনায়] অবস্থান করেন এবং [এ সময়কালের মধ্যে] হজ্জ করেননি। অতঃপর ১০ম বর্ষে লোকেরদের মধ্যে ঘোষণা করালেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [এ বছর] হজ্জে যাবেন। সুতরাং মদীনায় অসংখ্য লোকের সমাগম হলো। তাহাদের প্রত্যেকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর অনুসরণ করিতে এবং তাহাঁর অনুরূপ আমল করিতে আগ্রহী। অতএবং তিনি রওয়ানা হলেন এবং আমরাও তাহাঁর সাথে রওয়ানা হলাম। আমরা যুল-হুলাইফা নামক স্থানে পৌঁছলে আসমা বিনতু উমাইস [রাদি.] মুহাম্মাদ বিন আবু বাকরকে প্রসব করিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট লোক পাঠিয়ে জানতে চাইলেন, এমন অবস্থায় আমি কী করিব? তিনি বলেনঃ তুমি গোসল করো, এক খণ্ড কাপড় দিয়ে পট্টি বাঁধো এবং ইহরামের পোশাক পরিধান করো।

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – মসজিদে [ইহরামের দুরাকআত] সলাত আদায় করিলেন, অতঃপর কাসওয়া নামক উষ্ট্রীতে আরোহণ করিলেন। অবশেষে বায়দা নামক স্থানে তাহাঁর উষ্ট্রী যখন তাহাঁকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো, তখন আমি [জাবির] সামনের দিকে যতদূর দৃষ্টিযায় তাকিয়ে দেখলাম, লোকে লোকারণ্য, কতক সওয়ারীতে এবং কতক পদব্রজে অগ্রসর হচ্ছে। ডান দিকে, বাঁ দিকে এবং পেছনেও একই দৃশ্য। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝখানে ছিলেন এবং তাহাঁর উপর কুরআন নাযিল হচ্ছিল। একমাত্র তিনিই এর আসল তাৎপর্য জানেন এবং তিনি যা করিতেন আমরাও তাই করতাম। তিনি আল্লাহর তাওহীদ সম্বলিত এই তালবিয়া পাঠ করিলেনঃ লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইকা ইন্নাল-হামদা ওয়ান-নিয়মাতা লাকা ওয়াল-মুলকা লা শারীকা লাকা” [আমি তোমার দরবারে হাজির আছি যে আল্লাহ, আমি তোমার দরবারে হাজির, আমি তোমার দরবারে হাজির। তোমার কোন শরীক নাই, আমি তোমার দরবারে উপস্থিত। নিশ্চিত সমস্ত প্রশংসা, সমস্ত নিয়ামত তোমারই এবং রাজত্বও, তোমার কোন শরীক নাই]।

লোকেরাও উপরোক্ত তালবিয়া পাঠ করিল যা [আজকাল] পাঠ করা হয়। লোকেরা তাহাঁর তালবিয়ার সাথে কিছু শব্দ বাড়িয়ে বলেন, কিন্তু তিনি তাহাদের বাধা দেননি। আর রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] উপরোক্ত তালবিয়াই পাঠ করেন।

জাবির [রাদি.] বলেন, আমরা হজ্জ ছাড়া অন্য কিছুর নিয়াত করিনি, আমরা উমরার কথা জানতাম না। অবশেষ আমরা তাহাঁর সাথে বাইতুল্লাহ শরীফে পৌঁছলে তিনি রুকন [হাজরে আসওয়াদ] চুম্বন করিলেন, অতঃপর [সাতবর কাবা ঘর] তাওয়াফ করিলেন, [প্রথম] তিনবার দ্রুত গতিতে এবং চারবার স্বাভাবিক গতিতে। অতঃপর তিনি মাকামে ইবরাহীমে পৌঁছে তিলাওয়াত করিলেনঃ “তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে সলাতের স্থানরূপে গ্রহণ করো” [সূরা বাকারাদি. ১২৫]

তিনি মাকামে ইবরাহীমকে তাহাঁর ও বাইতুল্লাহর মাঝখানে রেখে [দুই রাকআত সলাত আদায় করিলেন]। [জাফর বলেন] আমার পিতা [মুহাম্মাদ] বলিতেন, আমি যতদূর জানি, তিনি [জাবির] বরং রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেছেনঃ তিনি দু রাক্‌আত নামাযে সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাস পড়েছেন।

অতঃপর মহানবী [সাঃআঃ] বাইতুল্লাহ ফিরে এলেন এবং হাজরে আসওয়াদে চুমা দিলেন। অতঃপর তিনি দরজা দিয়ে সাফা পাহাড়ের দিকে বের হলেন এবং সাফার নিকটবর্তী হয়ে তিলাওয়াত করিলেনঃ “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয় আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্যতম” [সূরা বাকারাদি. ১৫৮] এবং [আরও বলিলেন] আল্লাহ তাআলা যা দিয়ে আরম্ভ করিয়াছেন আমরাও তা দিয়ে আরম্ভ করিব। অতএব তিনি সাফা পাহাড় থেকে শুরু করিলে এবং তাহার এতোটা উপরে আরোহন করিলেন যে, বাইতুল্লাহ শরীফ দেখিতে পেলেন। তিনি [কিবলামুখী হয়ে] আল্লাহর একত্ব ও মহত্ব ঘোষণা করিলেন এবং এ দুআ পড়েন ঃ “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল-মুলক ওয়া লাহুল-হামদু ইউহ্‌যী ওয়া ইউমীতু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাইয়েন কাদীর। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্‌দাহু লা-শারীকা লাহু আনজাযা ওয়াদাহু ওয়অ নাসারা আবদাহু ওয়আ হাযামাল আহযাবা ওয়াহ্‌দাহু” [আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তাহাঁর কোন শরীক নাই, তাহাঁর জন্য রাজত্ব এবং তাহাঁর জন্য সমস্ত প্রশংসা, তিনি প্রতিটি জিনিসের উপর শক্তিমান। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করিয়াছেন, নিজের বান্দাকে সাহায্য করিয়াছেন এবং একাই সমস্ত সম্মিলিত শক্তিকে পরাভূত করিয়াছেন]।

তিনি এ দুআ তিনবার পড়লেন এবং মাঝখানে অনুরূপ আরো কিছু দুআ পড়লেন। অতঃপর তিনি নেমে মারওয়া পাহাড়ের দিকে অ্গ্রসর হলেন, যাবত না তাহাঁর পা মোবারক উপত্যকার সমতল ভূমিতে গিয়ে ঠেকলো। তিনি দৌড়ে চললেন যাবত না উপত্যকার মধ্যভাগ অতিক্রম করিলে। মারওয়া পাহাড়ে উঠার সময় হেঁটে উঠলেন, অতঃপর এখানেও তাই করিলেন, যা তিনি সাফা পাহাড়ে করেছিলেন। শেষ তাওয়াফে তিনি মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছে [লোকেদের সম্বোধন করে] বললেনঃ যদি আমি আগে বুঝতে পারতাম যে, আমার কী করা উচিত তাহলে আমি সাথে করে কোরবানীর পশু আনতাম না এবং [হজ্জের] ইহরামকে উমরায় পরিবর্তিত করতাম। অতএব তোমাদের মধ্যে যাহার সাথে কোরবানীর পশু নাই, সে যেন ইহরাম খুলে ফেলে এবং একে উমরায় পরিণত করে। তখন নবী [সাঃআঃ] এবং যাদের সাথে কোরবানীর পশু ছিল তাহারা ব্যতীত সকলেই ইহরাম খুলে ফেলেন এবং চুল ছোট করিলেন। এ সময় সুরাকা বিন মালিক বিন জুশুম [রাদি.] দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ ব্যবস্থা কি আমাদের এ বছরের জন্য, না সর্বকালের জন্য? রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] নিজ হাতের আংগুলগুলো পরস্পরের ফাঁকে ঢুকিয়ে দুবার বললেনঃ উমরা হজ্জের মধ্যে প্রবেশ করিল, না, বরং সর্বকালের জন্য।

এ সময় আলী [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য কোরবানীর পশু নিয়ে এলেন এবং যারা ইহরাম খুলে ফেলেছে, ফাতিমা [রাদি.] কেও তাহাদের অন্তুর্ভুক্ত দেখিতে পেলেন। তিনি রঙ্গীন কাপড় পরিহিত ছিলেন এবং চোখে সুরমা দিয়াছিলেন। আলী [রাদি.] তা অপছন্দ করিলেন। ফাতিমা [রাদি.] বলিলেন, আমার পিতা আমাকে এরূপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। [রাবী বলেন] এরপর আলী [রাদি.] ইরাকে অবস্থানকালে বলিতেন, তখন আমি রাসূলুল্লহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হলাম ফাতিমার উপর অসন্তুষ্ট অবস্থায়, সে যা করেছে সে সম্পর্কে মাসআলা জানার জন্য। আমি তাহাঁকে বললাম যে, আমি তাহার এ কাজ অপছন্দ করেছি। রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ ফাতিমা ঠিকই করেছে, ঠিকই বলেছে! তুমি হজ্জের ইহরাম বাঁধার সময় কী বলেছিলে? আলী [রাদি.] বলেন, আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহ! আমি ইহরাম বাঁধলাম যে নিয়াতে ইহরাম বেঁধেছেন আপনার রাসূল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার সাথে কোরবানীর পশু আছে, অতএব তুমি [আলী] ইহরাম খুলো না।

জাবির [রাদি.] বলেন, আলী [রাদি.] ইয়ামেন থেকে যে পশুপাল নিয়ে আসেন এবং নবী [সাঃআঃ] নিজের সাথে করে যে পশুগুলো নিয়ে এসেছিলেন এর সর্বমোট সংখ্যা দাঁড়ায় একশত। নবী [সাঃআঃ] এবং যাদের সাথে কোরবানীর পশু ছিল তাহারা ব্যতীত আর সকলেই ইহরাম খুলে ফেলেন এবং চুল ছোট করে। অতঃপর তাহারবিয়ার দিন [৮ যিলহজ্জ] শুরু হলে লোকেরা পুনরায় ইহরাম বাঁধলো এবং মিনার দিকে রওয়ানা হলো। আর নবী [সাঃআঃ] সওয়ার হয়ে গেলেন এবং তথায় যোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের সলাত আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত তথায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিলেন এবং তাহাঁর জন্য নামিরা নামক স্থানে গিয়ে তাঁবু টানানোর জন্য নির্দেশ দিলেন, অতঃপর নিজেও রওয়ানা হয়ে গেলেন।

কুরাইশগণ নিশ্চিত ছিল যে, নবী [সাঃআঃ] মাশআরুল হারাম নামক স্থানে অবস্থান করবেন, যেমন কুরাইশগণ জাহিলী যুগে এখানে অবস্থান করতো [মানহানি হওয়ার আশঙ্কায় তাহারা সাধারনের সাথে একত্রে আরাফাতে অবস্থান করতো না]। কিন্তু রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সামনে অগ্রসর হইতে থাকলেন যাবত না আরাফাতে পৌঁছলেন। তিনি দেখিতে পেলেন, নামিরায় তাহাঁর জন্য তাঁবু খাটানো হইয়াছে। তিনি এখানে অবতরণ করিলেন।

অবমেষ সূর্য [পশ্চিমাকাশে] ঢলে পড়লে তিনি তাহাঁর কাসওয়া নামক উষ্ট্রী সাজানোর জন্য নির্দেশ দিলে তা সাজানো হলো। অতঃপর তিনি উপত্যকার মাঝখানে আসেন এবং লোকেদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেনঃ

“তোমাদের জীবন ও সম্পদ তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম, যেভাবে এই দিনে, এই মাসে এবং এই শহরে হারাম”।

“সাবধান! জাহিলী যুগের সকল জিনিস [অপ-সংষ্কৃতি] রহিত হলো। আমাদের [বংশের] রক্তের দাবির মধ্যে সর্বপ্রথম আমি রবীআ ইবনিল হারিসের রক্তের দাবি রহিত করলাম”। সে সাদ গোত্রে শিশু অবস্থায় লালিত-পালিত হওয়াকালীন হুযাইল গোত্রের লোকেরা তাহাকে হত্যা করেছিল।

“জাহিলী যুগের সূদও রহিত করা হলো। আমাদের বংশের প্রাপ্য সূদের মধ্যে সর্ব প্রথম আমি আবদুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস [রাদি.] -র প্রাপ্য সমুদয় সূদ রহিত করলাম”।

“তোমরা স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করিবে। তোমরা তাহাদেরকে আল্লাহর জামানতে গ্রহণ করেছো এবং আল্লাহর কালামের মাধ্যমে তাহাদের লজ্জাস্থান নিজেদের জন্য হালাল করেছো। তাহাদের উপর তোমাদের অধিকার এই যে, তাহারা যেন তোমাদের অন্দর মহলে এমন কোন লোককে যেতে না দেয় যাকে তোমরা অপছন্দ করো। যদি তাহারা অনুরূপ কাজ করে তবে তাহাদেরকে হাল্কাভাবে মারপিট করিবে। আর তোমাদের উপর তাহাদের অধিকার এই যে, তোমরা ন্যয়সঙ্গতভাবে তাহাদের পোশাক ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করিবে”।

“আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি যা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকলে তোমরা পথভ্রষ্ট হইবে না। তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব”।

“তোমাদেরকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইবে, তখন তোমরা কী বলবে? উপস্থিত জনতা বলল, আমরা সাক্ষ্য দিবো যে, আপনি [আল্লাহর বাণী] পৌঁছে দিয়েছেন, আপনার কর্তব্য পালন করিয়াছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন”। অতঃপর তিনি নিজের তর্জনী [শাহাদাত আঙ্গুল] আকাশের দিকে উত্তোলন করেন এবং জনতাহার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন, হে আল্লাহ, আপনি সাক্ষী থাকুন [তিনবার]

অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাসওয়ার উপর সওয়ার হয়ে আল মাওকিফ [অবস্থানস্থল] এ এলেন, নিজের কাসওয়া নামক উষ্ট্রীর পেট পাথরের স্তুপের দিকে করে দিলেন এবং পায়ে হাঁটার পথ নিজের সামনে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ালেন। সূর্য গোলক সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল। তিনি উসামা [রাদি.] -কে তাহাঁর বাহনের পেছন দিকে বসালেন এবং কাসওয়ার নাসারন্ধ্রের দড়ি সজোরে টান দিলেন, ফলে এর মাথা জিনপোষ স্পর্শ করিল [এবং তা অগ্রযাত্রা শুরু করিল]। তিনি তাহাঁর ডান হাতের ইশারায় বলেনঃ “হে জনমণ্ডলী! শান্তভাবে, শান্তভাবে [ধীরে সুস্থে মধ্যম গতিতে] অগ্রসর হও”। তখনই তিনি বালুর স্তূপের নিকট পৌঁছতেন, কাসওয়ার নাসারন্ধ্রের দড়ি কিছুটা ঢিল দিতেন, যাতে তা উপর দিকে উঠতে পারে।

এভাবে তিনি মুযদালিফায় পৌঁছলেন এবং এখানে এক আযানে ও দু ইকামতে মাগরিব ও ইশার সলাত আদায় করিলেন। এই দু সলাতের মাঝখানে অন্য কোন সলাত আদায় করেননি। অতপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শুয়ে ঘুমালেন যাবত না ফজরের ওয়াক্ত হলো। অতঃপর ঊষা পরিস্কার হয়ে গেলে তিনি আযান ও ইকামাতসহ ফজরের সলাত আদায় করিলেন। অতঃপর কাসওয়ার পিঠে আরোহন করে মাশআরুল-হারাম নামক স্থানে আসেন। এখানে তিনি [কিবলামুখী হয়ে] আল্লাহর প্রশংসা করিলেন, তাহাঁর মহত্ব বর্ণনা করিলেন, কলেমা তাওহীদ পড়লেন এবং তাহাঁর একত্ব ঘোষণা করিলেন। আকাশ যথেষ্ট পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত তিনি দাঁড়িয়ে এরূপ করিতে থাকলেন। সূর্য উদয়ের পূর্বে তিনি আবার রওয়ানা হলেন এবং ফাযল বিন আব্বাসকে সওয়ারীতে তাহাঁর পিছনে বসালেন।

সে ছিল সুদর্শন যুবক এং তাহার মাথার চুল ছিল অত্যন্ত সুন্দর। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন অগ্রসর হলেন তখন [পাশাপাশি] একদল মহিলাও যাচ্ছিল। ফাযল তাহাদের দিকে তাকাতে লাগলো। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের হাত অন্যদিক থেকে ফাযলের চেহারার উপর রাখলেন। সে আবার অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে দেখিতে লাগলো। এভাবে তিনি বাতনে মুহাসসির নামক স্থানে পৌঁছলেন এবং সাওয়ারীর গতি কিছুটা দ্রুততর করিলে। তিনি মধ্যপথ দিয়ে অগ্রসর হলেন যা জামরাতুল কুবরায় গিয়ে পৌঁছেছে। তিনি বৃক্ষের নিকটের জামরায় এলেন এবং নিচের খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে এখানে সাতটি কাঁকর নিক্ষেপ করিলে এবং নিজ হাতে তেষট্টিটি পশু যবেহ করিলেন। অতঃপর যে কয়টি অবশিষ্ট ছিল তা আলী [রাদি.] কে যবেহ করিতে বলিলেন এবং তিনি তা কোরবানী করিলেন। তিনি নিজ পশুতে আলীকেও শরীক করিলেন। অতঃপর তিনি প্রতিটি পশুর কিছু অংশ নিয়ে একত্রে রান্না করার নির্দেশ দিলে। অতএব তাই করা হলো। তাঁরা উভয়ে এই গোশত থেকে আহার করিলেন এবং ঝোল পান করিলেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহর দিকে রওয়ানা হলেন এবং মক্বায় পৌঁছে যোহরের সলাত আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি [নিজ গোত্র] বনূ আবদুল মুত্তালিবে এলেন। তাহারা লোকেদের যমযমের পানি পান করাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ হে আবদুল্ মুত্তালিবের বংশধর! পানি তোলো। আমি যদি আশঙ্কা না করতাম যে, পানি পান করানোর ব্যাপারে লোকেরা তোমাদের পরাভূত করিবে, তাহলে আমি নিজেও তোমাদের সাথে পানি তুলতাম। তাহারা তাহাঁকে এক বালতি পানি দিলো এবং তিনি তা থেকে কিছু পান করিলেন। {৩০৭৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭৪} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, ইরওয়া ১১২০, সহীহ আবু দাউদ ১৬৬৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৭৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা রাসূলু্ল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে তিন পর্যায়ে বিভক্ত হয়ে হজ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আমাদের কতক একসাথে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাঁধে কতক শুধু বেঁধেছিল তাহাদের জন্য হজ্জের অনুষ্ঠানাদি শেষ না করা পর্যন্ত [ইহরামের ফলে] কোন [সাময়িক] নিষিদ্ধ জিনিস হালাল হয়নি। অনুরূপ যারা শুধুমাত্র হজ্জের ইহরাম বেঁধেছিল তাহাদের জন্যও হজ্জের অনুষ্ঠানাদি শেষ না করা পর্যন্ত [ইহরামের ফলে] কোন [সাময়িক] নিষিদ্ধ জিনিস হালাল হয়নি। আর যারা শুধু উমরার ইহরাম বেঁধেছিল, তাহাদের জন্য বাইতুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝখানে সাঈ করার পর [ইহরামের কারণে] যা কিছু হারাম ছিল তা হালাল হয়ে গেল, হাজের ইহরাম বাঁধার পূর্ব পর্যন্ত {৩০৭৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি হাসান।{৩০৭৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৯৪, ৩০৫, ৩১৬, ৩১৭, ৩১৯, ১৫১৮, ১৫৫৬, ১৫৬০, ১৫৬১, ১৫৬২, ১৬৩৮, ১৬৪৩, ১৬৫০, ১৭০৯, ১৭২০, ১৭৬২, ১৭৮৩, ১৭৮৬, ১৭৮৭, ১৭৮৮, ২৩১৭, ২৯৫২, ২৯৮৪, ৪৩৯৫, ৪৪০৮, ৫৫৪৮, ৫৫৫৯, ৭২২৯, ১২১১, ১২১২, ১২২৮, ১২৭৭, তিরমিজি ৯৩৪, ৯৪৫, ২৯৬৫, নাসাঈ ২৪২, ২৯০, ২৪৮, ২৬৫০, ২৭১৭, ২৭১৮, ২৭৪১, ২৭৬৩, ২৭৬৪, ২৮০৩, ২৮০৪, ২৯৯০, ২৯৯১, আবু দাউদ ৭৫০, ১৭৭৮, ১৭৭৯, ১৭৮১, ১৭৮২, আহমাদ ২৩৫৫৬, ২৩৫৭৩, ২৩৫৮৯, ২৪০৪৪, ২৪৩৫৫, ২৪৩৮৫, ২৪৭৭৯, ২৪৭৮৮, ২৪৯১৩, ২৫০৫০, ২৫৩১০, ২৫৫৩৪, ২৫৫৫৪, ২৭৬৫৪, ২৫৮১২, মুয়াত্তা মালিক ৭৪৬, ৮৯৬, ৯৪০, ৯৪১, দারেমী ১৪৬, ১৯০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।উক্ত হাদিসের রাবি আবু আমর বিন মুহাম্মাদ বিন আমর বিন হুরায়স সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫১৩, ২৬/২১২ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩০৭৬. সুফিয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিনবার হজ্জ করেছেনঃ হিজরতের পূর্বে দুবার এবং হিজরতের পর মদীনা থেকে একবার [যা বিদায় হজ্জ নামে প্রসিদ্ধ]। শেষোক্তটি তিনি কিরান হজ্জ করিয়াছেন অর্থাৎ একত্রে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাঁধেন। এ হজ্জে নবী [সাঃআঃ] যতোটি কোরবানীর পশু এনেছিলেন এবং আলী [রাদি.] যতোটি পশু এনেছিলেন তাহার মোট সংখ্যা ছিল একশত। এর মধ্যে একটি উট ছিল আবু জাহলের, যাহার নাসারন্ধ্রে রূপার লাগাম আঁটা ছিল। নবী [সাঃআঃ] স্বহস্তে ৬৩টি এবং আলী [রাদি.] অবশিষ্টগুলি কোরবানী করেন। সুফিয়ানকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এ হাদিস কে তাহার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন? তিনি বলেন, জাফর সাদিক, তিনি তাহার পিতাহার সূত্রে, তিনি জাবির [রাদি.] -র সূত্রে। অন্যদিকে বিন আবু লাইলা, তিনি আল-হাকামের সূত্রে, তিনি মিকসামের সূত্রে, তিনি বিন আব্বাস [রাদি.] এর সূত্রে।

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭৬} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, হুজ্জাতুন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ৬৭-৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮৫. অধ্যায়ঃ হজ্জের উদ্দেশে যাওয়ার পথে বাধাগ্রস্ত হলে

৩০৭৭. আল-হাজ্জাক বিন আমর আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি নবী [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ যাহার হাড় ভেঙ্গে গেলো অথবা যে লেংড়া হয়ে গেলো। ইহরাম বাঁধার পর] , সে ইহরামমুক্ত হয়ে গেলো। সে পুনর্বার হজ্জ করিবে। [আবু বাক্‌র বিন আবু শায়বাহ, ইয়াহইয়অ বিন সাঈদ ও ইবনি উলায়্যাহ, হাজ্জাজ বিন আবু উসমান, ইয়াহইয়া বিন আবু কাসীর, ইকরামাহ, ইবনি আব্বাস ও আবু হুরাইরাহ [রাদি.] , [ইকরিমাহ বলেন] , আমি এ হাদিস বিন আব্বাস [রাদি.] ও আবু হুরাইরাহ [রাদি.] -র নিকট বর্ণনা করিলে তাহারা উভয়ে বলেন, তিনি [হাজ্জাজ] সত্য বলেছেন। {৩০৭৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭৭} ইবনি মাজাহ ৩০৭৮, তিরমিজি ৯৪০, নাসাঈ ২৮৬০, ২৮৬১, আবু দাউদ ১৮৬২, আহমাদ ১৫৩০৪, দারেমী ১৮৯৪, সহীহ আবু দাউদ ১৬২৭, ১৬২৮, মিশকাত ২৭১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৭৮. আল-হাজ্জাজ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির হাড় ভেঙ্গে গেলে বা সে পঙ্গু হয়ে গেলে বা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে অথবা বাধাগ্রস্ত হলে সে হালাল হয়ে যাবে। তাহাকে পরবর্তী বছর হজ্জ করিতে হইবে। সালামাহ বিন শাবীব, আবদুর রায্‌যাক, মামার, ইয়াহইয়া বিন আবু কাসীর, ইকরিমাহ, ইবনি আব্বাস ও আবু হুরাইরাহ [রাদি.] , [ইকরিমাহ] বলেন, আমি এ হাদিস ইবনি আব্বাস ও আবু হুরাইরাহ [রাদি.] এর নিকট বর্ণনা করিলে তাহারা উভয়ে বলেন, তিনি সত্য বলেছেন। আবদুর রাযযাক বলেন, আমি এ হাদিস হিশাম আদ-দাসতাওয়াঈর কিতাবে লিপিবদ্ধ পেয়েছে। আমি তা নিয়ে মামার-এর নিকট এলে তিনি আমার সামনে তা পাঠ করেন অথবা আমি তাহার সামনে তা পাঠ করি। {৩০৭৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৭৮} তিরমিজি ৯৪০, নাসাঈ ২৮৬০, ২৮৬১, আবু দাউদ ১৮৬২, আহমাদ ১৫৩০৪, দারেমী ১৮৯৪, সহীহ আবু দাউদ ১৬২৭, ১৬২৮, মিশকাত ২৭১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮৬. অধ্যায়ঃ বাধাগ্রস্ত হলে তাহার ফিদ্‌য়া

৩০৭৯. আবদুল্লাহ হইতে বর্ণীতঃ

আমি মসজিদের মধ্যে কাব বিন উজরাহ [রাদি.] এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। আমি তাহার নিকট নিম্নোক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম [অনুবাদ] ঃ

فَفِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ

“তবে রোযা অথবা সদাকা অথবা কোরবানীর মাধ্যমে ফিদ্‌য়া দিবে” [সূরা বাকারাদি. ১৯৬] কাব [রাদি.] বলেন, এ আয়াত আমার সম্পর্কে নাযিল হয়েছিল। আমার মাথার অসুখ ছিল। আমাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট নিয়ে যাওয়া হলো। উকুন আমার মুখমণ্ডলে ছড়িয়েছিল। তখন তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে যে কষ্ট ভোগ করিতে দেখছি তেমনটি আর কখনও দেখিনি। তুমি কি একট বকরী সংগ্রহ করিতে পারবে? আমি বললাম, না। রাবী বলেন, তখন এ আয়াত নাযিল হলোঃ

فَفِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ

“তবে রোযা অথবা সদাকা অথবা কোরবানীর মাধ্যমে ফিদ্‌য়া দিবে”। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তিন দিন রোযা রাখতে হইবে, আর সদাকার ক্ষেত্রে ছয়জন মিসকীনকে খাদ্যদ্রব্য দিতে হইবে, মাথাপিছা অর্ধ সা [এক কেজি দুশ পঞ্চাশ গ্রাম] এবং কোরবানীর ক্ষেত্রে একটি বকরী। {৩০৭৯}

{৩০৭৯} ইবনি মাজাহ ৩০৮০, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮১৪, ১৮১৫, ১৮১৬, ১৮১৮, ৪১৫৯, ৪১৯০, ৪১৯১, ৪৫১৭, ৫৬৬৫, ৫৭০৩, ৬৭০৮, মুসলিম ১২০১, তিরমিজি ৯৫৩, ২৯৭৩, ২৯৭৪, নাসাঈ ২৮৫১, ২৮৫২, আবু দাউদ ১৮৫৬, ১৮৫৭, ১৮৫৮, ১৮৫৯, ১৮৬০, আহমাদ ১৭৬৩৫, ১৭৬৪৩, ১৭৬৫৪, ১৭৬৬৫, মুয়াত্তা মালিক ৯৫৪, ৯৫৫, ৯৫৬, ইরওয়া ৪/২৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৮০. কাব বিন উজরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উকুন আমাকে কষ্ট দিতে থাকলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে মাথা কামানোর নির্দেশ দেন এবং তিনি দিন রোযা রাখতে অথবা ছয়জন মিসকীনকে আহার করাতে বলেন। তিনি জানতেন যে আমার নিকট কোরবানী করার মত কিছু ছিলো না। {৩০৮০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ{৩০৮০} ইবনি মাজাহ ৩০৮০, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮১৪, ১৮১৫, ১৮১৬, ১৮১৮, ৪১৫৯, ৪১৯০, ৪১৯১, ৪৫১৭, ৫৬৬৫, ৫৭০৩, ৬৭০৮, মুসলিম ১২০১, তিরমিজি ৯৫৩, ২৯৭৩, ২৯৭৪, নাসাঈ ২৮৫১, ২৮৫২, আবু দাউদ ১৮৫৬, ১৮৫৭, ১৮৫৮, ১৮৫৯, ১৮৬০, আহমাদ ১৭৬৩৫, ১৭৬৪৩, ১৭৬৫৪, ১৭৬৬৫, মুয়াত্তা মালিক ৯৫৪, ৯৫৫, ৯৫৬, ইরওয়া ৪/২৩২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮৭. অধ্যায়ঃ ইহরাম অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানো

৩০৮১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় ও রোযা অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করিয়েছেন। {৩০৮১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৮১} বুখারী ১৮৩৫, ১৯৩৮, ১৯৩৯, ২১০৩, ২২৭৮, ২২৭৯, ৫৬৯১, ৫৬৯৪, ৫৬৯৫, ৫৬৯৯,৫৭০১, মুসলিম ১২০২, তিরমিজি ৭৭৫, ৭৭৬, ৭৭৭, ৮৩৯, নাসাঈ ২৮৪৫, ২৮৪৬, ২৮৪৭, আবু দাউদ ১৮৩৫, ১৮৩৬, ২৩৭২, ২৩৭৩, আহমাদ ১৮৫২, ১৯২২, ১৯৪৪, ২১০৯, ২১৮৭, ২২২৯, ২২৪৩, ২২৪৯,২৩৩৩, ২৩৫১, ২৫৩২, ২৫৮৪, ২৬৫৪, ২৭১১, ২৭৮৫৩, ২৮৮৩, ৩০৬৫, ৩০৬৮, ৩২০১, ৩২২৩, ৩২৭২, ৩৫১৩,৩৫৩৭ দারেমী ১৮১৯, ১৮২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ বিন আদী বলেন, তিনি কুফার শীয়াদের একজন। আবু বাকর আল-বায়হাকী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার হাদিস কেউ বর্জন করিয়াছেন এমর্মে আমার জানা নেই। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি ভালো ছিল না। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, আমি আহলে ইলমদের বলিতে শুনিয়াছি, তাহারা তাহাকে দুর্বল বলিতেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল বাকী ইবনিল কানি বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৯১, ৩২/১৩৫ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৮, ১৯৩৯, ২১০২, ২১০৩, ২২১০, ২২৭৭, ২২৭৮, ২২৭৯, ২২৮০, ২২৮১, ৫৬৯১, ৫৬৯৫, ৫৬৯৯, ৫৭০১, মুসলিম ১২০২, ১৫৭৮, ১৫৭৯, ১৫৮০, ২২০৯, তিরমিজি ৭৭৫, ৭৭৬, ৭৭৭, ৮৩৯, ১২৭৮, আবু দাউদ ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৭, ২৩৭২, ২৩৭৩, ৩৪২৩, ৩৪২৪, ৩৮৬৩, ৩৮৬৭, দারেমী ১৮১৯, ১৮২০, ১৮২১, ১৮২২, মুয়াত্তা মালিক ৭৮৪, ১৮২১, আহমাদ ৬৯৪, ১১৩২, ১১৩৩, ১১৩৯, ১৮৫২, ১৩৫৯১। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৮২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একটি কঠিন ব্যথার কারণে নবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় রক্তমোক্ষণ করিয়েছেন। {৩০৮২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৮২}আহমাদ ১৪৪৯২, সহীহ আবু দাউদ ১৬১০, ১৬১১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি আবুদ দায়ফ সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৩০৫, ২৫/৪০৪ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইবনি আবুদ দায়ফ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৮, ১৯৩৯, ২১০২, ২১০৩, ২২১০, ২২৭৭, ২২৭৮, ২২৭৯, ২২৮০, ২২৮১, ৫৬৯১, ৫৬৯৫, ৫৬৯৯, ৫৭০১, মুসলিম ১২০২, ১৫৭৮, ১৫৭৯, ১৫৮০, ২২০৯, তিরমিজি ৭৭৫, ৭৭৬, ৭৭৭, ৮৩৯, ১২৭৮, আবু দাউদ ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৭, ২৩৭২, ২৩৭৩, ৩৪২৩, ৩৪২৪, ৩৮৬৩, ৩৮৬৭, দারেমী ১৮১৯, ১৮২০, ১৮২১, ১৮২২, মুয়াত্তা মালিক ৭৮৪, ১৮২১, আহমাদ ৬৯৪, ১১৩২, ১১৩৩, ১১৩৯, ১৮৫২, ১৩৫৯১।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৮৮. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তি কী ধরনের তৈল মাখতে পারে

৩০৮৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] ইহরাম অবস্থায় ঘ্রাণহীন যায়তুনের তৈল মাথায় মাখতেন। {৩০৮৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দূর্বল।{৩০৮৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৩৮, তিরমিজি ৯৬২, আহমাদ ৪৭৬৮, ৪৮১৪, ৫২২০, ৬০৫৩, ৬২৮৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ফারকাদ আস-সাবাখী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস গ্রহনে শিথিল ও হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭১৫, ২৩/১৬৪ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৮৯. অধ্যায়ঃ কেউ ইহরাম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলে

৩০৮৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ইহরামধারী ব্যক্তিকে তাহার জন্তুযান নিচে ফেলে দিলে তাহার ঘাড় ভেঙ্গে সে মারা যায়। মহানবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তাহাকে কুলপাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দাও, তাহার পরনের বস্ত্রদ্বয় দিয়ে তাহাকে কাফন দাও এবং তাহার মুখমণ্ডল ও মাথা ঢেকো না। কারণ তাহাকে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হইবে।

{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}/ ৩০৮৪ [১] . ইবনি আব্বাস [রাদি.] থেকে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হইয়াছে। তবে তিনি বলেন, তাহার জন্তুযান তাহার ঘাড় মটকে দেয়। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরও বলেনঃ তাহাকে সুগন্ধি মাখিয়া না। কারণ তাহাকে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হইবে। {৩০৮৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৮৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১২৬৫, ১২৬৬, ১২৬৭, ১২৬৮, মুসলিম ১২০৬, তিরমিজি ৯৫১, নাসাঈ ১৯০৪, ২৮৫৪, ২৮৫৫, ২৮৫৬, ২৮৫৭, ২৮৫৮, আবু দাউদ ৩২৩৮, ৩২৪১, আহমাদ ১৮৫৩, ১৯১৭, ২৩৯০, ২৫৮৬, ৩০২২, ৩০৩৬, ৩২২০, দারেমী ১৮৫২, ইরওয়া ১০১৬, আহকামুল জানাইয ১২, ১৩, রাওদুন নাদীর ৩৯১, ৩৯২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯০. অধ্যায়ঃ কেউ ইহরাম অবস্থায় শিকার করিলে তাহার কাফ্‌ফারা

৩০৮৫. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরামধারী ব্যক্তি কর্তৃক হায়েনা শিকারের কাফ্‌ফারা একটি ভেড়া নির্ধারণ করিয়াছেন এবং হায়েনাকেও শিকারের অন্তুর্ভুক্ত করিয়াছেন। {৩০৮৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।৫} ইবনি মাজাহ ৩২৩৬, তিরমিজি ৮৫১, ১৭৯১, নাসাঈ ২৮৩৬, ৪৩২৩, আবু দাউদ ২৮০১, আহমাদ ১৩৭৫১, ১৪০১৬, ১৪০৪০, দারেমী ১৯৪১, ১৯৪২, আত-তালীক আলা ইবনি খুযাইমাহ ২২৪৮, ইরওয়া ১০৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৮৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ইহরামধারী ব্যক্তি পাখির ডিম আত্মসাৎ করিলে তাহাকে তাহার মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে [কাফফারা স্বরূপ]। {৩০৮৬}

তাহকীক আলবানী দুর্বল।{৩০৮৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১০৩০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আলী বিন আবদুল আযীয সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী তাহার হাদিস উল্লেখ করে বলেন, তাহার এই হাদিস ব্যাতিত অন্য কোথাও তাহার পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়না, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল, মানুষ তাহার হাদিস বর্জন করেছে। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু সাঈদ বিন ইউনুস বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন ও তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১০৩, ২১/৫৫ নং পৃষ্ঠা] ২. আবুল মুহাযযিম সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৯১. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তি যে সব প্রানী হত্যা করিতে পারবে

৩০৮৭. আশিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ পাঁচটি প্রানী আছে যা হারামের বাইরে ও ভেতরে হত্যা করা বৈধঃ সাপ, বুকে না পিঠে সাদা চিহ্নযুক্ত কাক, ইঁদুর, হিংস্র কুকুর ও চিল। {৩০৮৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৮৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭২৯, ৩৩১৪, ১১৯৮, তিরমিজি ৮৩৭, নাসাঈ ২৮২৯, ২৮৮১, ২৮৮২, ২৮৮৭, ২৮৮৮, ২৮৯০, ২৮৯১,আহমাদ ২৩৫৩২, ২৪০৪৮, ২৪১৪০, ২৪৩৯০, ২৪৭৮২, ২৫১৫০, ২৫২২৫, ২৫৪১৫, ২৫৬০১, ২৫৬৯১, ২৫৭১২, দারেমী ১৮১৭, ইরওয়া ৪/২২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৮৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন পাঁচটি প্রানী আছে যা কোন ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় হত্যা করিলে তাহার কোন দোষ হইবে নাঃ বিছা, কাক, চিল, ইঁদুর ও পাগলা কুকুর। {৩০৮৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৮৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮২৮, ৩৩১৫, মুসলিম ১১৯৯, নাসাঈ ২৮২৮, ২৮৩০, ২৮৩২, ২৮৩৩, ২৮৩৪, ২৮৩৫, ২৮৯০, আবু দাউদ ২৮৪৬, আহমাদ ৪৫২৯, ৪৮৬১, ৪৯১৮, ৫০৭২, ২৭৭৯০, ৫১১১, ৫১৩৮, ৫৩০২, ৫৪৫২, ৫৫১৬, ৬১৯৩, মুয়াত্তা মালিক ৭৯৮, ৭৯৯, ৮০০, দারেমী ১৮১৬, ইরওয়া ৪/২২৩, সহীহ আবু দাউদ ১৬১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৮৯. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মুহরিম ব্যক্তি নিম্নোক্ত প্রাণীগুলো হত্যা করিতে পারেঃ সাপ, বিছা, আক্রমণকারী হিংস্র প্রাণী, পাগল কুকুর ও ক্ষতিকর ইঁদুর। আবু সাঈদ [রাদি.] -র নিকট জিজ্ঞাসা করা হলো, ইঁদুরকে ক্ষতিকর বলা হলো কেনো? তিনি বলেন, কেননা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহার জন্য জেগেছিলেন এবং সে ঘরে আগুল ধরানোর জন্য জ্বলন্ত সলিতা নিয়েছিল। {৩০৮৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩০৮৯}তিরমিজি ৮৩৮, আবু দাউদ ১৮৪৮, আহমাদ ১০৬০৭, ১১৩৪৬, ইরওয়া ৪/২২৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] ২. ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ বিন আদী বলেন, তিনি কুফার শীয়াদের একজন। আবু বাকর আল-বায়হাকী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার হাদিস কেউ বর্জন করিয়াছেন এমর্মে আমার জানা নেই। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি ভালো ছিল না। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, আমি আহলে ইলমদের বলিতে শুনিয়াছি, তাহারা তাহাকে দুর্বল বলিতেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল বাকী ইবনিল কানি বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৯১, ৩২/১৩৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৯২. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তির জন্য যে ধরণের শিকার নিষিদ্ধ

৩০৯০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সাব বিন জাসসামাহ [রাদি.] আমাদের অবহিত করে বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তখন আল-আবওয়া অথবা ওয়াদ্দান এলাকায় ছিলাম। আমি তাহাঁকে বন্য গাধার গোশত পেশ করলাম। তিনি তা আমাকে ফেরত দিলেন। তিনি আমার চেহারায় অনুতাপের লক্ষণ দেখে বলেনঃ আমরা অন্য কোন কারণে তা ফেরত দেইনি, বরং আমরা ইহরাম অবস্থায় আছি। [তাই তা ফেরত দিয়াছি]। {৩০৯০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮২৫, ২৫৭৩, ২৫৯৬, মুসলিম ১১৯৩, তিরমিজি ৮৪৯, নাসাঈ ২৮১৯, ২৮২০, ২৮২৩, আহমাদ ১৫৯৮৭, ১৫৯৮৮, ১৬২২১, ১৬২৩৫, ১৭৮১৬, মুয়াত্তা মালিক ৭৯৩, দারেমী ১৮২৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৯১. আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] এর সামনে শিকারকৃত প্রাণীর গোশত পেশ করা হলো। তিনি ইহরাম অবস্থায় থাকার কারণে তা আহার করেননি। {৩০৯১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ{৩০৯১} আহমাদ ৮৩২, সহীহ আবু দাউদ ১৬২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল কারিম সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য হইবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী ও আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি আবদুল বার আল-আন্দালাসী বলেন, তাহার দুর্বলতাহার ব্যাপারে সকলে একমত। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। মুহাম্মাদ বিন ইসমাইল বলেন, আহলে ইলমের নিকট তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫০৬, ১৮/২৫৯ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আবদুল কারিম এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ২ টি জাল, ৪ টি খুবই দুর্বল, ২০ টি দুর্বল, ৮ টি হাসান, ২৯ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৮২৫, ২৫৭৩, ২৫৯৬, মুসলিম ১১৯৬, তিরমিজি ৮৪৯, আবু দাউদ ১৮৪৯, ১৮৫০, দারেমী ১৮২৮, ১৮৩০, মুয়াত্তা মালিক ৭৯৩, আহমাদ ৮৩২, ২৫২৬, ৩৪০৭, ১৫৯৮৭, সহীহ ইবনি খুযাইমাহ ২৪৭৩, ২৪৭৫। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৩. অধ্যায়ঃ ইহরামধারী ব্যক্তির উদ্দেশ্যে শিকার না করা হলে সে তাহার গোশত খেতে পারে

৩০৯২. তালহা বিন উবায়দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাহাকে একটি [শিকারকৃত] বন্য গাধা প্রদান করে তা তাহার সঙ্গীদের মধ্যে বন্টন করার নির্দেশ দেন। তখন তাহারা ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। {৩০৯২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি ত্রুটি যুক্ত ও মাতানের মাঝে ভুল রয়েছে, এক্ষেত্রে নাসাঈর রেওয়াতটি সঠিক।{৩০৯২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি ত্রুটিযুক্ত ও মাতানের মাঝে ভুল রয়েছে, এক্ষেত্রে নাসাঈর রেওয়াতটি সঠিক। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৩০৯৩. আবু কাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হুদাইবিয়ার বছর আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রওয়ানা হলাম। তাহাঁর সাহাবীগণ ইহরাম বাঁধলেন, কিন্ত আমি বাঁধিনি। আমি একটি গাধা দেখিতে পেয়ে তাহার উপর ঝাপিয়ে পড়লাম এবং তা শিকার করলাম। অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট তাহার অবস্থান বর্ণনা করলাম। আমি আরও উল্লেখ করলাম যে, আমি তখনও ইহরাম বাঁধিনি। এবং তা আপনার জন্য শিকার করেছি। নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবী এ গোশত খাওয়ার নির্দেশ দিলেন। কিন্ত আমি তাহাঁর জন্য এটা শিকার করেছি বলায় তিনি তা আহার করিলেন না। {৩০৯৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮২১, ১৮২২, ১৮২৩, ১৮২৪, ২৫৭০, ২৮৫৪, ২৯১৪, ৪১৪৯, ৫৪০৭, ৫৪৯১, ৫৪৯২, মুসলিম ১১৯৬, তিরমিজি ৮৪৭, নাসাঈ ২৮১৬, ২৮২৪, ২৮২৫, ২৮২৬, আবু দাউদ ২৮৫২, আহমাদ ২২২০, ২২০৬১, ২২০৬৮, ২২০৮৪, ২২০৯৭, ২২১০৬, ২২১১৮, মুয়াত্তা মালিক ৭৮৬, ৭৮৮, দারেমী ১৮২৬, ১৮২৭, ইরওয়া ৪/২১৪, ২১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৪. অধ্যায়ঃ কোরবানী পশুর গলায় মালা পরানো

৩০৯. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মদীনা থেকে [মক্কায়] কোরবানীর পশু পাঠাতেন। আমি তাহাঁর কোরবানীর পশুর জন্য মালা তৈরি করে দিতাম। অতঃপর তিনি এমন কোন জিনিস বর্জন করিতেন না, যা ইহরামধারী ব্যক্তি বর্জন করে থাকে। {৩০৯৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯৪} ইবনি মাজাহ ৩০৯৫, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৯৬, ১৬৯৭, ১৬৯৯, ১৭০০, ১৭০১, ১৭০২, ১৭০৩, ১৭০৪, ১৭০৫, ২৩১৭, ৫৫৬৬, মুসলিম ১৩২১, তিরমিজি ৯০৮, ৯০৯, নাসাঈ ২৭৭৫, ২৭৭৬, ২৭৭৭, ২৭৭৮, ২৭৭৯, ২৭৮০, ২৭৮৩, ২৭৮৪, ২৭৮৫, ২৭৮৬, ২৭৮৭, ২৭৮৮, ২৭৮৯, ২৭৯০, ২৭৯৩, ২৭৯৪, ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৭৯৭, আবু দাউদ ১৭৫৫, ১৭৫৭, ১৭৫৮,১৭৫৯, আহমাদ ২৩৫৪৮, ২৩৫৬৪, ২৩৯৭১, ২৪০০৩,২৪০৩৬, ২৪০৮২, ২৪১৮৯, ২৪২৬০, ২৪৪৩৫, ২৪৮৮৩, ২৪৯৩৭, ২৪৯৭০, ২৪৯৮৯, ২৫০৩৭, ২৫০৪৯, ২৫১১৩, ২৫২০৮, ২৫২৪৭, ২৫২৮৯, ২৫৩০৪, ২৫৩৪৪, ২৫৩৪৬, ২৫৩৫৯, ২৫৪৬০, ২৫৪৭৮, ২৫৬২৩, ২৫৭২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭৬২, দারেমী ১৯১১, ১৯৩৫, ১৯৩৬, সহীহ আবু দাউদ ১৫৪২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৯৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি নবী [সাঃআঃ] এর কোরবানী পশুর জন্য মালা তৈরি করে দিতাম এবং তিনি তা পশুর গলায় পরিয়ে দিতেন। এরপর তা পাঠিয়ে দেয়া হতো এবং তিনি [সেখানে] অবস্থান করিতেন। আর তিনি এমন কোন বস্ত বর্জন করিতেন না যা ইহরামধারী ব্যক্তি বর্জন করে থাকে। {৩০৯৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৯৬, ১৬৯৭, ১৬৯৯, ১৭০০, ১৭০১, ১৭০২, ১৭০৩, ১৭০৪, ১৭০৫, ২৩১৭, ৫৫৬৬, মুসলিম ১৩২১, তিরমিজি ৯০৮, ৯০৯, নাসাঈ ২৭৭৫, ২৭৭৬, ২৭৭৭, ২৭৭৮, ২৭৭৯, ২৭৮০, ২৭৮৩, ২৭৮৪, ২৭৮৫, ২৭৮৬, ২৭৮৭, ২৭৮৮, ২৭৮৯, ২৭৯০, ২৭৯৩, ২৭৯৪, ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৭৯৭, আবু দাউদ ১৭৫৫, ১৭৫৭, ১৭৫৮,১৭৫৯, আহমাদ ২৩৫৪৮, ২৩৫৬৪, ২৩৯৭১, ২৪০০৩,২৪০৩৬, ২৪০৮২, ২৪১৮৯, ২৪২৬০, ২৪৪৩৫, ২৪৮৮৩, ২৪৯৩৭, ২৪৯৭০, ২৪৯৮৯, ২৫০৩৭, ২৫০৪৯, ২৫১১৩, ২৫২০৮, ২৫২৪৭, ২৫২৮৯, ২৫৩০৪, ২৫৩৪৪, ২৫৩৪৬, ২৫৩৫৯, ২৫৪৬০, ২৫৪৭৮, ২৫৬২৩, ২৫৭২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭৬২, দারেমী ১৯১১, ১৯৩৫, ১৯৩৬, সহীহ আবু দাউদ ১৫৪২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৫. অধ্যায়ঃ মেষ-বকরীর গলায় মালা পরানো

৩০৯৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোরবানীর উদ্দেশ্যে বাইতুল্লা্‌হয় মেষ-বকরী পাঠান এবং গলায় মালা পরান। {৩০৯৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৯৬, ১৬৯৭, ১৬৯৯, ১৭০০, ১৭০১, ১৭০২, ১৭০৩, ১৭০৪, ১৭০৫, ২৩১৭, ৫৫৬৬, মুসলিম ১৩২১, তিরমিজি ৯০৮, ৯০৯, নাসাঈ ২৭৭৫, ২৭৭৬, ২৭৭৭, ২৭৭৮, ২৭৭৯, ২৭৮০, ২৭৮৩, ২৭৮৪, ২৭৮৫, ২৭৮৬, ২৭৮৭, ২৭৮৮, ২৭৮৯, ২৭৯০, ২৭৯৩, ২৭৯৪, ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৭৯৭, আবু দাউদ ১৭৫৫, ১৭৫৭, ১৭৫৮,১৭৫৯, আহমাদ ২৩৫৪৮, ২৩৫৬৪, ২৩৯৭১, ২৪০০৩,২৪০৩৬, ২৪০৮২, ২৪১৮৯, ২৪২৬০, ২৪৪৩৫, ২৪৮৮৩, ২৪৯৩৭, ২৪৯৭০, ২৪৯৮৯, ২৫০৩৭, ২৫০৪৯, ২৫১১৩, ২৫২০৮, ২৫২৪৭, ২৫২৮৯, ২৫৩০৪, ২৫৩৪৪, ২৫৩৪৬, ২৫৩৫৯, ২৫৪৬০, ২৫৪৭৮, ২৫৬২৩, ২৫৭২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭৬২, দারেমী ১৯১১, ১৯৩৫, ১৯৩৬, সহীহ আবু দাউদ ১৫৪০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৬. অধ্যায়ঃ উটের কুঁজ ফেড়ে দেয়া

৩০৯৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] কোরবানী উটের কুঁজ ডান পাশ দিয়ে ফেড়ে দেন এবং তা থেকে রক্ত পরিস্কার করেন। আলী তাহার [রাদি.] বর্ণনায় বলেন, এটা যুল-হুলাইফা নামক স্থানে। আর তিনি একজোড়া জুতাহার মালা পরিয়ে দেন। {৩০৯৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৪৫, মুসলিম ১২৪৩, তিরমিজি ৯০৬, নাসাঈ ২৭৭৩, ২৭৭৪, ২৭৮২, ২৭৯১, আবু দাউদ ১৭৫২, আহমাদ ১৮৫৮, ২২৯৬, ২৫২৪, ৩১৩৯, ৩১৯৬, ৩২৩৪, ৩৫১৫, দারেমী ১৯১২, সহীহ আবু দাউদ ১৫৩৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি আবুল হাসান আল-আরাজ সম্পর্কে আবু উবায়দ আল-আজিরী বলেন, তিনি খাওয়ারিজদের সাথে বের হয়ে গেছেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার খাওারিজী মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। কাতাদাহ বিন দাআমাহ বলেন, তিনি হারুরী ছিলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৩১০, ৩৩/২৪২ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০৯৮. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] কোরবানীর পশুর গলায় মালা পরান, কুঁজ ফেড়ে দেন এবং তা [মক্কায়] পাঠিয়ে দেন। অতঃপর তিনি এমন কোন কিছু পরিহার করেননি যা ইহরামধারী ব্যক্তি পরিহার করে। {৩০৯৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। {৩০৯৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৯৬, ১৬৯৭, ১৬৯৯, ১৭০০, ১৭০১, ১৭০২, ১৭০৩, ১৭০৪, ১৭০৫, ২৩১৭, ৫৫৬৬, মুসলিম ১৩২১, তিরমিজি ৯০৮, ৯০৯, নাসাঈ ২৭৭৫, ২৭৭৬, ২৭৭৭, ২৭৭৮, ২৭৭৯, ২৭৮০, ২৭৮৩, ২৭৮৪, ২৭৮৫, ২৭৮৬, ২৭৮৭, ২৭৮৮, ২৭৮৯, ২৭৯০, ২৭৯৩, ২৭৯৪, ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৭৯৭, আবু দাউদ ১৭৫৫, ১৭৫৭, ১৭৫৮,১৭৫৯, আহমাদ ২৩৫৪৮, ২৩৫৬৪, ২৩৯৭১, ২৪০০৩,২৪০৩৬, ২৪০৮২, ২৪১৮৯, ২৪২৬০, ২৪৪৩৫, ২৪৮৮৩, ২৪৯৩৭, ২৪৯৭০, ২৪৯৮৯, ২৫০৩৭, ২৫০৪৯, ২৫১১৩, ২৫২০৮, ২৫২৪৭, ২৫২৮৯, ২৫৩০৪, ২৫৩৪৪, ২৫৩৪৬, ২৫৩৫৯, ২৫৪৬০, ২৫৪৭৮, ২৫৬২৩, ২৫৭২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭৬২, দারেমী ১৯১১, ১৯৩৫, ১৯৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৭. অধ্যায়ঃ কোরবানী পশুকে কাপড়ের ঝুল পরানো

৩০৯৯. আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে নির্দেশ দেন, আমি যেন তাহাঁর কোরবানী পশু দেখাশুনা করি, ঝুল ও চামড়া [দরিদ্রের মধ্যে] বন্টন করি এবং কসাইকে যেন তা থেকে [পারিশ্রমিক বাবদ] কিছু না দেই। তিনি বলেনঃ তাহাকে আমি নিজের পক্ষ থেকে দিবো। {৩০৯৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩০৯৯} ইবনি মাজাহ ৩১৫৭, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭০৭, ১৭১৬, ১৭১৭, ১৭১৮, ২২৯৯, মুসলিম ১৩১৭, আবু দাউদ ১৭৬৯, আহমাদ ১২১৩, ১৩২৭, দারেমী ১৯৪০, ইরওয়া ১১৬১, সহীহ আবু দাউদ ১৫৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহী। হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৮. অধ্যায়ঃ মর্দা ও মাদী উভয় ধরনের পশুই কোরবানী দেয়া যায়

৩১০০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] কোরবানীর জন্য যে পশু পাঠান তাহার মধ্যে আবু জাহলের একটি উটও ছিল এবং এর নাসারন্ধ্রের দড়ি ছিল রূপার তৈরি। {৩১০০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩১০০} আবু দাউদ ১৭৪৯, আহমাদ ২০৮০, ২৩৫৮, ২৪৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহী+হ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি আবু লায়লা সম্পর্কে ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, আমি তাহার চেয়ে দুর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন আর কাউকে দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তিনি জইফ বা দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল। ইবনি মাঈন বলেন, সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪০৬, ২৫/৬২২ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১০১. সালামাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] এর কোরবানীর পশুর মধ্যে একটি উটও ছিল। {৩১০১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩১০১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন উবাদাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি ভালো ব্যাক্তি তবে হাফিয নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম তিরমিজি ও আবু মুহাম্মাদ বিন হাযম বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার থেকে হাদিস বর্ণনা করা আমার মতে বৈধ নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব ও ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, মাতালিবুল আলায়ায় তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করা হইয়াছে। ঈমাম মুসলিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় খুবই দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫০৬, ২৯/১০৪ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুসা বিন উবাদাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২০৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ১২ টি খুবই দুর্বল, ২৫ টি দুর্বল, ২৯ টি হাসান, ১৩৭ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ৮১৫, আবু দাউদ ১৭৪৯, ১৭৬৪, ১৭৯৭, মুয়াত্তা মালিক ৮৪৭, ৮৯৮, আহমাদ ২০৮০, ২৩৫৮, ২৪২৪, ২৪৬২, ২৮৭৫, ১৪১৩৯, ১৪৭৫৩, মুজামুল আওসাত ১০৪০, ৬৩০৭, ৯১৯৭।হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৯৯. অধ্যায়ঃ মীকাত অতিক্রম করেও কোরবানীর পশু নেয়া যায়

৩১০২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] কুদায়দ নামক স্থান থেকে তাহাঁর কোরবানী পশু ক্রয় করেন। {৩১০২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল, হাদিসটি ইবনি উমার থেকে মাওকুফ সুত্রে বর্ণিত হইয়াছে, {সহীহ হলোঃ নবী বড় হজ্জের সময় তাহার হাদিসকে [কুরবানীর পশুকে] যুল হুলায়ফাহ থেকে তাড়িয়ে নিতেন}।{৩১০২} তিরমিজি ৯০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল, হাদিসটি ইবনি উমার থেকে মাওকুফ সুত্রে বর্ণিত হইয়াছে। {সহীহ হলঃ নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বড় হজ্জের সময় তাহার হাদিকে [কুরবানীর পশুকে] যুল হুলায়ফা থেকে তাড়িয়ে নিতেন।}উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন ইয়ামান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হুজ্জাহ ছিলেন না তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য হইবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৫৩, ৩২৫৫ নং পৃষ্ঠা] হজের কোরবানি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/১০০. অধ্যায়ঃ কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ করা

৩১০৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে তাহার কোরবানীর পশু হাঁকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে বলেনঃ এর পিঠে চড়ে যাও। সে বলল, এটা কোরবানীর পশু। তিনি বলেনঃ তুমি তাহার পিঠে চড়ে যাও। তোমার জন্য আফসোস। {৩১০৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩১০৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৮৯, ১৭০৬, ২৭৫৫, ৬১৬০, মুসলিম ১৩২২, নাসাঈ ২৭৯৯, আবু দাউদ ১৭৬০, আহমাদ ৭৩০৩, ৭৪০৪, ৭৬৭৯, ২৭৩৩৯, ৯৬৬৩, ৯৭৭৭, ৯৮৩৬, ৯৮৭৩, ৯৯৪২, ১০১৮৮, মুয়াত্তা মালিক ৮৪৮, সহীহ আবু দাউদ ১৫৪৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১০৪. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] এর সামনে দিয়ে একটি উট নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন তিনি বলেনঃ এর পিঠে চড়ে যাও। লোকটি বলল, এটা কোরবানীর উট। তিনি বলেনঃ তুমি এর পিঠে চড়ো। আনাস [রাদি.] বলেন, আমি তাহাকে নবী [সাঃআঃ] এর সাথে উটের পিঠে চড়ে যেতে দেখেছি। এর গলায় একটি জুতা বাঁধা ছিল। {৩১০৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩১০৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৯০, ২৭৫৪, ৬১৫৯, মুসলিম ১৩২৩, তিরমিজি ৯১১, নাসাঈ ২৮০০, ২৮০১, আহমাদ ১১৫৪৮, ১১৬২৯, ১২৩০০, ১২৩২৪, ১২৩৬৩, ১২৪৮১, ১২৬৭৭, ১৩০০২, ১৩০৪৪, ১৩২২০, ১৩৩৩৯, ১৩৪৯৭, ১৩৫১৯, ১৩৬৮৪, দারেমী ১৯১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/১০১. অধ্যায়ঃ কোরবানীর পশু পথিমধ্যে অচল হয়ে পড়লে

৩১০৫. যুআইব আল-খুযাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাহাকে কোরবানীর পশু নিয়ে [মক্কায়] পাঠাতেন, অতঃপর বলিতেন ঃ এগুলোর মধ্যে কোন পশু অচল হয়ে পড়লে এবং তুমি তাহার মৃত্যুর আশঙ্কা করিলে সেটি যবেহ করিবে, অতঃপর তাহার রক্তের মধ্যে তাহার গলায় জুতা ফেলে রাখবে, অতঃপর তাহার পাছার উপর ক্ষতচিহ্ন করিবে। তবে তাহার গোশত তুমিও খাবে না এবং তোমার সঙ্গীদের মধ্যেও কেউ খাবে না। {৩১০৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{৩১০৫} মুসলিম ১৩২৬, আহমাদ ১৭৫১৩, সহীহ আবু দাউদ ১৫৪৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১০৬. নাজিয়াহ আল-খুযাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরের বর্ণনামতে তিনি ছিলেন নবী [সাঃআঃ] এর কোরবানীর উটের রক্ষনাবেক্ষনকারী] তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কোনো উট অচচল হয়ে পড়লে আমি কী করিব? তিনি বলেনঃ সেটি যবেহ করিবে এবং তাহার গলায় জুতা তাহার রক্তের মধ্যে ফেলে দিবে, অতঃপর তাহার পাছার উপর ক্ষতচিহ্ন করিবে এবং লোকেদের জন্য তা ফেলে রাখবে, তাহারা তা আহার করিবে। {৩১০৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।৩১০৬} তিরমিজি ৯১০, আবু দাউদ ১৭৬২, আহমাদ ১৮৪৬৫, দারেমী ১৯০৯, সহীহ আবু দাউদ ১৫৪৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply