কাবা তাওয়াফ করা , মুলতাযাম, ইফরাদ, তামাততু, সাফা ও মারওয়া

কাবা তাওয়াফ করা , মুলতাযাম, ইফরাদ, তামাততু, সাফা ও মারওয়া

কাবা তাওয়াফ করা , মুলতাযাম, ইফরাদ, তামাততু, সাফা ও মারওয়া >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৫, অধ্যায়ঃ (২৫-৪৩)=১৯টি

১৯/২৫. অধ্যায়ঃ হারাম এলাকায় প্রবেশ
১৯/২৬. অধ্যায়ঃ মক্কায় প্রবেশ।
১৯/২৭. অধ্যায়ঃ হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা।
১৯/২৮. অধ্যায়ঃ লাঠির সাহায্যে রুকন [হাজরে আসওয়াদ] কে চুমা দেওয়া
১৯/২৯. অধ্যায়ঃ বায়তুল্লাহর চারপাশে তাওয়াফের সময় রমল করা
১৯/৩০. অধ্যায়ঃ ইদতিবা [বিশেষ পদ্ধতিতে চাদর পরিধান]
১৯/৩১. অধ্যায়ঃ হাতীমও তাওয়াফের অন্তর্ভূক্ত।
১৯/৩২. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের ফযীলত।
১৯/৩৩. অধ্যায়ঃ তাওয়াফ শেষে দু রাকআত নামায পড়া।
১৯/৩৪. অধ্যায়ঃ অসুস্থ ব্যক্তির বাহনে চড়ে তাওয়াফ করা।
১৯/৩৫. অধ্যায়ঃ মুলতাযাম-এর বর্ণনা।
১৯/৩৬. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী মহিলা তাওয়াফ ব্যতীত হজ্জের অবশিষ্ট অনুষ্ঠানাদি পালন করিবে
১৯/৩৭. অধ্যায়ঃ ইফরাদ হজ্জ।
১৯/৩৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি একই ইহরামে হজ্জ ও উমরা [কিরান হজ্জ] আদায় করে
১৯/৩৯. অধ্যায়ঃ কিরান হজ্জ পালনকারীর তাওয়াফ
১৯/৪০. অধ্যায়ঃ উমরাহ সহ তামাত্তু হজ্জের বর্ণনা
১৬/৪১. অধ্যায়ঃ হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করা
১৯/৪২. অধ্যায়ঃ যারা বলেন, হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সীমিত [খাস] ছিল
১৯/৪৩.অধ্যায়ঃ সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করা [দৌড়ানো]

১৯/২৫. অধ্যায়ঃ হারাম এলাকায় প্রবেশ

২৯৩৯. আবদুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আম্বিয়া-ই কিরাম [রাদি.] হেরেমর এলাকায় পদব্রজে ও নগ্নপদে প্রবেশ করিতেন এবং বায়তুল্লাহ তাওয়াফহসহ হজ্জের যাবতীয় অনুষ্ঠান নগ্নপদে ও পদব্রজে সমাপন করিতেন। {২৯৩৯}

তাহকী্ক আলবানীঃ দুর্বল।২৯৩৯}হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুবারাক বিন হাসসান আবু আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য, তাহার মিথ্যা বলার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও আহমাদ বিন আবু খায়সামাহ বলেন, তিনি কুফুরী নয় এমন কওলী বা আমলী কোন ফিসক এর সাথে জড়িত। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান তাহাকে সিকাহ বলেছেন। ঈমাম বুখারী তাহার তারিখুল কাবীর এর মাঝে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭৬২, ২৭/১৭৩ নং পৃষ্ঠা] কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/২৬. অধ্যায়ঃ মক্কায় প্রবেশ।

২৯৪০ . ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূ্লুল্লাহ [সাঃআঃ] উচ্চ ভূমি দিয়ে মক্কায় প্রবেশ করিতেন এবং যখন বের হইতেন তখন নিম্ন ভূমি দিয়ে বের হইতেন। {২৯৪০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৭৫, ১৫৭৬, মুসলিম ১২৫৭, নাসাঈ ২৮৬৫, আবু দাউদ ১৮৬৬, আহমাদ ৪৬১১, ৪৭১১, ৪৮২৮, ৫৬০৮, ৬২৪৮, ৬৪২৬, দারেমী ১৯২৮, সহীহ আবু দাউদ ১৬২৯, ১৬৩০, ১৬৩৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৪১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] দিনের বেলায় মক্কায় প্রবেশ করেন। {২৯৪১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪১}সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৩৩, ১৫৭৪, ১৬৯৯, মুসলিম ১২৫৯, তিরমিজি ৮৫৪, নাসাঈ ২৮৬২, আবু দাউদ ১৮৬৫, আহমাদ ৪৬৪২, ৫২০৮, দারেমী ১৯২৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৪২. উসামাহ বিন যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি বললাম, ইয়া রাসূ্লাল্লাহ ! আমরা আগামীকাল কোথায় অবতরণ করিব? এটা তাহাঁর [বিদায়] হজ্জের সময়কার কথা। তিনি বলেন,আকীল কি আমাদের জন্য একটি বাড়িও অবশিষ্ট রেখেছে? তিনি পুনরায় বলেনঃ আমরা আগামীকাল বনূ কিনানার ঘাঁটিতে [অর্থাৎ মুহাসসাবে] অবতরণ করিব যেখানে কুরায়াশগণ কুফরীর উপর অবিচল থাকার শপথ করেছিলো। অর্থাৎ বনূ কিনানাহ কুরায়াশদের নিকট থেকে বনু হাশিমের বিরুদ্ধে এই মর্মে প্রতিশ্রুতি আদায় করে যে, তাহারা শেষোক্ত গোত্রের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করিবে না এবং ব্যবসায়িক লেনদেনও করিবে না। মামার [রাদি.] বলেন, যুহরী [রাদি.] বলেছেন,আল- খায়ফ অর্থ উপত্যকা। {২৯৪২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৮৮, ৩০৫৮, ৪২৮৩, মুসলিম ১৩৫১, আবু দাউদ ২০১০, ২৯১০। সহীহ আবু দাউদ ১৭৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/২৭. অধ্যায়ঃ হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা।

২৯৪৩. আবদুল্লাহ বিন সারজিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আল-উসায়লিহ্ অর্থাৎ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] কে দেখলাম যে, তিনি হাজরে আসওয়াদে চুমা দিচ্ছেন আর বলছেন, আমি অবশ্যই তোমাকে চুম্বন করছি। আমি নিশ্চিত জানি যে, তুমি একটি পাথর মাত্র, তুমি ক্ষতিও করিতে পারো না এবং উপকারও করিতে পার না। আমি যদি রাসূ্লুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তোমায় চুমা দিতে না দেখতাম , তাহলে আমিও তোমায় চুমা দিতাম না। {২৯৪৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৯৭, ১৬০৫, ১৬১০, মুসলিম ১২৭০, ১২৭১, তিরমিজি ৮৬০, নাসাঈ ১৫৫৮, ২৯৩৬, ২৯৩৭, ২৯৩৮, আবু দাউদ ১৮৭৩, আহমাদ ১০০, ১৩২, ১৭৭, ২২৭, ২৫৫, ২৭৬, ৩২৭, ৩৬৩, ৩৮২, ৩৮৩, মুয়াত্তা মালিক ১৮৬৪, ১৮৬৫, রাওদুন নাদীর ৭২৩, সহীহ আবু দাউদ ১৬৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৪৪. সাঈদ বিন জুবায়র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি রাসূ্লুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্বিয়া্মতের দিন এই পাথরকে উপস্থিত করা হইবে। তাহার দুটি চোখ থাকিবে, তা দিয়ে সে দেখবে, যবান থাকিবে তা দিয়ে সে কথা বলবে এবং সে এমন লোকের অনুকূলে সাক্ষ্য দিবে যে তাহাকে সত্যতাহার সাথে চুমা দিয়েছে। {২৯৪৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪৪}তিরমিজি ৯৬১, আহমাদ ২২১৬, ২৩৯৪, ২৬৩৮, ২৭৯৩, ৩৫০১, দারেমী ১৮৩৯, মিশকাত ২৫৭৮, আত-তালীক আলা ইবনি খুযাইমাহ ২৭৩৫, ২৭৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৪৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূ্লুল্লাহ [সাঃআঃ] পাথরের দিকে মুখ করিলেন, অতঃপর তাহার উপর নিজের দুই ঠোঁট স্থাপন করে দীর্ঘক্ষণ কাঁদলেন। অতঃপর তিনি অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে দেখলেন যে, উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] ও কাঁদলেন। তিনি বলেন,হে উমার ! এটাই অশ্রু প্রবাহিত করার উপযুক্ত স্থান। {২৯৪৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল।{২৯৪৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১১১১, জইফ আল-জামি ৬০৯০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন আওন সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি যা বর্ণনা করেন তা আমভাবে তাহার অনুসরণ করা যাবে না। আবুল ফাতহ আল-আযদী ও আবু বিশর আদ দাওলাবী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার হাদিস পরিতাজ্য। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫২৮, ২৬/২৪০ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

২৯৪৬. আবদুল্লাহ বিন উমার] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাইতুল্লাহর কোন রুকনে চুমা খেতেন না, কেবলমাত্র রুকনুল আসওয়াদ [কালো পাথর] এবং এর নিকটের জুমাহ গোত্রের দিককার কোণে [রুকনে ইয়ামানিতে] চুমা খেতেন। {২৯৪৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৯৬, ১২০৩, মুসলিম ১২২৭, ১২৬১, ১২৬৭, ১২৬৮, নাসাঈ ২৭৩২, ২৯৪২, ২৯৪৬, ২৯৪৮, ২৯৫১, আবু দাউদ ১৮০৫, ১৮৭৬, ১৮৯১, আহমাদ ৪৯৬৩, ৫২১৬, ৫৭২৬, ৫৯০৭, ৬০১১, ৬৩৯৭, ৬৪২৭, ৮১৭, দারেমী ১৮৪২, সহীহ আবু দাউদ ১৬৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/২৮. অধ্যায়ঃ লাঠির সাহায্যে রুকন [হাজরে আসওয়াদ] কে চুমা দেওয়া

২৯৪৭. শায়বাহর কন্যা সাফিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের বছর যখন নিশ্চিত [নিরাপদ] হলেন তখন তিনি স্বীয় উটে আরোহণ করে [বাইতুল্লাহ] তাওয়াফ করেন এবং নিজের হাতের লাঠির সাহাস্যে রুকন [হাজরে আসওয়াদ] কে চুম্বন করেন। অতঃপর তিনি কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন এবং তথায় কাঠের তৈরী একটি কবুতর দেখিতে পান। তিনি তা ভেঙ্গে ফেলেন এবং অতঃপর তা কাবার দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরে নিক্ষেপ করেন। আমি তা দেখেছিলাম। {২৯৪৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{২৯৪৭} আবু দাউদ ১৮৭৮, সহীহ আবু দাউদ ১৬৪৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইউনুস বিন বুকায়র সম্পর্কে আবু বকর বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭১৭১, ৩২/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]দিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

২৯৪৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বিদায় হজ্জে একটি উটে আরোহণ করে তাওয়াফ করেন এবং একটি লাঠির সাহায্যে [ইশারায়] রুকনকে চুম্বন করেন। {২৯৪৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬০৮, ১৬১৩, ১৬৩২, ৫২৯৩, মুসলিম ১২৭২, তিরমিজি ৮৩৫, নাসাঈ ৭১৩, ২৯৫৪, আবু দাউদ ১৮৭৭, ১৮৮১, আহমাদ ১৮৪৪, ২১১৯, ২২২৮, ২৭৬৮, দারেমী ১৮৪৫, আস-সহীহ ১৬৪০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৪৯. আবু তোফায়েল আমর বিন ওয়াসেলাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে দেখেছি তিনি তাহাঁর সওয়ারীতে আরোহণ করে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন, নিজ লাঠির সাহায্যে রুকন স্পর্শ করেন এবং লাঠিতে চুমা দেন। {২৯৪৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৪৯} মুসলিম ১২৭৫, আবু দাউদ ১৮৭৯, আহমাদ ১৩২৮৬, ইরওয়া ১১১৪, সহীহ আবু দাউদ ১৬৪২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মারুফ বিন খাররাবুয আল-মাক্কী সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি সন্দেহের সাথে হাদিস বর্ণনা করিতেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৮৬, ২৮/২৬৩ নং পৃষ্ঠা] ২. হাদিয়্যাহ বিন আবদুল ওয়াহহাব সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনি আবু আসিম বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৫৫৪, ৩০/১৫৮ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/২৯. অধ্যায়ঃ বায়তুল্লাহর চারপাশে তাওয়াফের সময় রমল করা

২৯৫০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন বাইতুল্লাহ তাওয়াফ শুরু করিতেন তখন প্রথম তিন চক্করে [তাওয়াফে] রামল করিতেন [বাহু দুলিয়ে বীরদর্পে প্রদক্ষিণ করিতেন] এবং চার চক্করে সাধারণভাবে হেঁটে তাওয়াফ করিতেন- হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ [প্রদক্ষিণ] শুরু করে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত। ইবনি উমার [রাদি.] ও তাই করিতেন। {২৯৫০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৫০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৬, ৩৯৬, ৪৯২, ১৫৪১, ১৫৭৩, ১৫৭৪, ১৬০৩, ১৬০৪, ১৬১৬, ১৬১৭, ১৬২৪, ১৬৪৪, ১৬৪৬, ১৬৪৭, ১৬৯২, ১৭৯৪, ২৭০২, মুসলিম ১১৮৬, ১১৮৭, ১২২৭, ১২২৮, ১২৩৪, ১২৫৯, ১২৬০, ১২৬১, ১২৬৮, ১২৫৭, তিরমিজি ৮১৮, ৮২৪, ৮৬১, ৮৬৪, নাসাঈ ২৭৩২, ২৭৫৭, ২৭৫৮, ২৯৩০, ২৯৪০, ২৯৪১, ২৯৪২, ২৯৪৩, ২৯৪৬, ২৯৬০, ২৯৬৬, ২৯৭৬, আবু দাউদ ১৭৭১, ১৭৭২, ১৭০৫, ১৮৬৫, ১৮৯১, ১৮৯৩, ১৯০৪, ৪০৬৪, ৪২১০, আহমাদ ৪৪৪৮, ৪৫৭১, ৪৬০৪, ৪৬১৪, ৪৮২৯, ৪৮৭২, ৪৯৬৩, ৫১৭৯, ৫২১৬, ৫৩৭৮, ৫৪২১, ৫৭০৩, ৫৭২৬, ৫৮৬০, ৫৯০৭, ৬০১১, ৬২০২, ৬৩৯৭, ৬৪২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭১৪, ৭৪০, ৭৪২, ৮১৭, ৯২৩, দারেমী ১৮৩৮, ১৮৪২, ১৯২৭, ১৯৩১, সহীহ আবু দাউদ ১৬৫২, ১৬৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি আহমাদ বিন বাশীর সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। উসমান বিন সাদ আদ-দারেমী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৪/১/২৭৩ নং পৃষ্ঠা] কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৫১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত তিনবার রামল করিতেন এবং চারবার সাধারণ গতিতে তাওয়াফ করিতেন। {২৯৫১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৫১} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, রাওদুন নাদীর ২১২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৫২. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এখন এই দু রামলের মধ্যে কী ফায়দা আছে? এখন তো আল্লাহ তাআলা ইসলামকে শক্তিশালী করিয়াছেন এবং কুফর ও তাহার অনুসারীদের নিশ্চিহ্ন করিয়াছেন। আল্লাহর শপথ! আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যুগে যেসব আমল করেছি তাহার কিছুই ত্যাগ করব না। {২৯৫২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।২৯৫২} আবু দাউদ ১৮৮৭, আহমাদ ৩১৯, সহীহ আবু দাউদ ১৬৪৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হিশাম বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার মুখস্তশক্তি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু দলীলযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। তাহার শিয়া মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ আছে। [তাহজিবুল কামাল রাবী নং ৬৫৭৭, ৩০/২০৪ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

২৯৫৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] হুদায়বিয়ার ঘটনার পরবর্তী বছরে উমরা পালনকালে মক্কায় প্রবেশের প্রাক্কালে তাহাঁর সাহাবীগণকে বলেনঃ অচিরেই তোমাদের সম্প্রদায় আগামীকাল তোমাদের দেখিতে পাবে। অতএব তাহারা যেন তোমাদের সতেজ ও চালাক চতুর দেখিতে পায়। তাহারা মসজিদে প্রবেশ করে রুকন [পাথর] চুম্বন করেন এবং রামল করেন। তখন নবী [সাঃআঃ] তাহাদের সাথে ছিলেন। তাহারা রুকনে ইয়ামানীতে পৌঁছে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত স্বাভাবিক গতিতে অগ্রসর হন। তাহারা পুনরায় রামল করে রুকনে ইয়ামানীতে পৌঁছান; অতঃপর রুকনুল আসওয়াদ পর্যন্ত স্বাভাবিক গতিতে চলেন। তাহারা তিনবার রামল করেন ও চারবার স্বাভাবিক গতিতে হাঁটেন। {২৯৫৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৫৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬০২, ১৬৪৯, ৪২৫৬, ৪২৫৭, মুসলিম ১২৬৪, ১২৬৫, ১২৬৬, তিরমিজি ৮৬৩, নাসাঈ ২৯৭৯, আবু দাউদ ১৮৮৯, ১৮৯০, আহমাদ ২৬৮১, ২৬৮৩, ২৭৮৩, সহীহ আবু দাউদ ১৬৪৮, ১৬৫০, ১৬৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৩০. অধ্যায়ঃ ইদতিবা [বিশেষ পদ্ধতিতে চাদর পরিধান]

২৯৫৪. ইয়ালা বিন উমায়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর ডান কাঁধ খোলা রেখে এবং বাম কাঁধের উপর চাদরের উভয় কোণ একত্রে লটকিয়ে তাওয়াফ করেন। কাবীসা [রাদি.] বলেন, তাহাঁর পরিধানে ছিল একটি চাদর। {২৯৫৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।

{২৯৫৪} তিরমিজি ৮৫৯, আবু দাউদ ১৮৮৩, আহমাদ ১৭৪৯২, ১৭৪৯৫, ১৭৫০৪, দারেমী ১৮৪৩, সহীহ আবু দাউদ ১৬৪৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি কাবীসাহ বিন উকবাহ সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আবদুর রহমান বিন ইউসুফ বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৪৩, ২৩/৪৮১ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯/৩১. অধ্যায়ঃ হাতীমও তাওয়াফের অন্তর্ভূক্ত।

২৯৫৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট হিজর [হাতীম] সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেনঃ তা বাইতুল্লার অন্তর্ভূক্ত। আমি বললাম, তাহাকে কাবার অন্তর্ভূক্ত করিতে কোন জিনিস তাহাদের বাধা দিলো? তিনি বলেনঃ অর্থাভাব তাহাদের অপারগ করে দিয়াছিল। আমি বললাম, তাহার দরজা এতো উঁচুতে স্থাপিত হওয়ার কারণ কী যে, তাতে সিঁড়ি ব্যতীত উঠা যায় না? তিনি বলেনঃ তা তোমার সম্প্রদায়ের কান্ড। তাহাদের মর্জি হলে কেউ তাতে প্রবেশ করিতে পারতো, আর যাদেরকে ইচ্ছা তাতে প্রবেশে বাধা দিতো। তোমার সম্প্রদায়ের কুফরী ত্যাগের যুগ যদি অতি নিকট না হতো এবং [কাবা ঘর ভাঙার কারণে] তাহাদের মধ্যে বিতৃষ্ণার উদ্রেক হওয়ার আশঙ্কা না থাকতো, তাহলে তুমি দেখিতে পেতে আমি কিভাবে তা পরিবর্তন করতাম! তা থেকে যা বাদ দেওয়া হয়েছিল আমি পুনরায় তা এর অন্তর্ভূক্ত করতাম আবং তাহার দরজা ভূমি বরাবর স্থাপন করতাম। {২৯৫৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৫৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১২৬, ১৫৮৩, ১৫৮৫, ১৫৮৬, ৩৩৬৮, ৪৪৮৪, ৭২৪৩; মুসলিম ১৩৩৩; তিরমীযী ৮৭৫, ৮৭৬; নাসাঈ ২৯০০, ২৯০১, ২৯০২, ২৯০৩, ২৯১০, ২৯১২; আবু দাউদ ২০২৮; আহমাদ ৩৭৭৬, ২৪১৮৮, ২৪৩০৬, ২৪৯১০, ২৪৯৩৫, ২৪৪৯৮, ২৫৫৬৯, ২৫৬২০, ২৫৭২৪; মুওয়াত্তা মালিক ৮১৩, দারীমী ১৮৬৮, ১৮৬৯; ইরওয়া ১১০৬; সহীহাহ ৪৩।তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৩২. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের ফযীলত।

২৯৫৬. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিল এবং দু রাকাআত নামায পড়লো, তা একটি ক্রীতদাসকে দাসত্বমুক্ত করার সমতুল্য। {২৯৫৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৫৬} তিরমিজি ৯৫৯, সহীহাহ ২৭৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৫৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি ইবনি হিশামকে রকনে ইয়ামানী সম্পর্কে আতা বিন আবু রাবাহ [রাদি.] এর নিকট জিজ্ঞেস করিতে শুনিয়াছি। তিনি তখন বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করছিলেন। আতা [রাদি.] বলেন, আবু হুরাইরাহ [রাদি.] আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যে, নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ [রুকনে ইয়ামানীতে] সত্তরজন ফেরেশতা মোতায়েন আছেন। অতএব যে ব্যক্তি বলে,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

“আল্লাহুম্মা ইন্নী আসয়ালুকাল আফওয়া, ওয়াল-আফিয়াতা ফিদ-দুনয়া ওয়াল-আখিরাতে রব্বানা আতিনা ফিদ-দুনয়া হাসানাতান ওয়াফিল-আখিরাতে হাসানাতান ওয়াকিনা আযাবান-নার,” তখন ফেরেশতাগণ বলেন, আমীন। [“হে আল্লাহ আমি আপনার নিকট ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করি দুনিয়া ও আখিরাতের। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়ার কল্যাণ দান করুন, আখেরাতেরও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন”]।

আতা বিন আবু রাবাহ [রাদি.] রুকনুল-আসওয়াদ [হাজরে আসওয়াদ] পৌঁছালে ইবনি হিশাম [রাদি.] বলেন, হে আবু মুহাম্মদ! এই রুকনল আসওয়াদ সম্পর্কে আপনি কী জানতে পেরেছেন? আতা [রাদি.] বলেন, আবু হুরাইরাহ [রাদি.] আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ “যে কেউ তাহার সামনা-সামনি হলো, সে যেন দয়াময় আল্লাহর হাতের সামনাসামনি হলো। ইবনি হিশাম পুনরায় তাহাকে জিজ্ঞেস করেন, হে আবু মুহাম্মদ! তাওয়াফ সম্পর্কে কী এসেছে? আতা [রাদি.] বলেন, আবু হুরাইরাহ [রাদি.] আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ “যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং কোন কথা না বলে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে, সুবহানাল্লাহ ওয়াল-হামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ, তাহার দশটি গুনাহ মুছে যাবে, তাহার জন্য দশটি নেকি লেখা হইবে এবং তাহার মর্যাদা দশগুণ বৃদ্ধি করা হইবে। আর যে ব্যক্তি তাওয়াফরত অবস্থায় কথা বলে, সে তাহার পদদ্বয় কেবল রহমাতের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে, যেমন কারো পদদ্বয় পানিতে ডুবে থাকে।” {২৯৫৭}তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দূর্বল।{২৯৫৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ২৫৯০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১২১, জইফ আল-জামি ৫৬৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা] ২. হুমায়দ বিন আবু সাবিয়্যাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী ও আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি কুফুরী নয় এমন কওলী বা আমলী কোন ফিসক এর সাথে জড়িত। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি অপরিচিত। ঈমাম যাহাবী তাহাকে মুনকার হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৫২৯, ৭/৩৭৩ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৩৩. অধ্যায়ঃ তাওয়াফ শেষে দু রাকআত নামায পড়া।

২৯৫৮. আল-মুত্তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে দেখেছি যে, তিনি সাত চক্কর তাওয়াফ শেষ করে হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলেন এবং মাতাফের প্রান্তে দু রাকআত সালাত আদায় করিলেন। তাহাঁর ও তাওয়াফের মাঝে আর কেউ ছিল না। ইবনি মাজাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা [সুতরাবিহীন অবস্থায় সলাত আদায় করা] কেবল মক্কার জন্য নির্দিষ্ট। {২৯৫৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দূর্বল।{২৯৫৮} নাসাঈ ৭৫৮, ২৯৫৯, আবু দাউদ ২০১৬, আহমাদ ২৬৬৯৯, যইফাহ ৯২৮, হুজ্জাতুন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ১২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। মুসনাদে আহমাদ ২৭২৪১ নং হাদিসে উক্ত হাদিসটিকে দুর্বল ও ইদতিরাব বলেছেন। উক্ত হাদিসের সানাদের মাঝে ইনকিতা রয়েছে, তাহলোঃ কাসীর তাহার পিতা থেকে হাদিসটি শ্রবন করেননি। তাছাড়া তাহার পিতাহাকে ইবনি হিব্বান ব্যাতিত কেউ তাওসীক করেননি। [সুনান ইবনি মাজাহ আল-আরনাওয়াত ৪/১৮৩ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৯৫৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [মক্কায়] পৌঁছে সাতবার বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন, অতঃপর দু রাকআত সালাত আদায় করেন। [ওয়াকী বলেন, অর্থাৎ মাকামে ইবরাহীমের নিকটে] , অতঃপর সাফা পর্বতের দিকে রওয়ানা হন। {২৯৫৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৫৯}বুখারী ১৬৬, ৩৯৬, ৪৯২, ১৫৪১, ১৫৭৩, ১৫৭৪, ১৬০৩, ১৬০৪, ১৬১৬, ১৬১৭, ১৬২৪, ১৬২৭, ১৬৪৪, ১৬৪৬, ১৬৪৭, ১৬৯২, ১৭৯৪, ২৭০২, মুসলিম ২০৩৩, ২০৩৭, ২১৫৯, ২১৬০, ২১৭২, ২২০৬, ২২০৭, ২২০৯, ২২১০, ২২১২, ২২২৫, ২৩৯৭, তিরমিজি ৮১৮, ৮২৪, ৮৬১, ৮৬৪, নাসাঈ ২৭৩২, ২৭৫৭, ২৭৫৮, ২৯৩০, ২৯৪০, ২৯৪১, ২৯৪২, ২৯৪৩, ২৯৪৬, ২৯৬০, ২৯৬৬, ২৯৭৬, আবু দাউদ ১৭৭১, ১৭৭২, ১৮০৫, ১৮৬৫, ১৮৯১, ১৮৯৩, ১৯০৪, ৪০৬৪, ৪২১০, আহমাদ ৪৪৪৮, ৪৫৭১, ৪৬০৪, ৪৬১৪, ৪৮২৯, ৪৮৭২, ৪৯৬৩, ৫১৭৯, ৫২১৬, ৫৩৭৮, ৫৪২১, ৫৭০৩, ৫৭২৬, ৫৮৬০, ৫৯০৭, ৬০১১, ৬২০২, ৬৩৯৭, ৬৪২৭, মালিক ৭১৪, ৭৪০, ৭৪২, ৮১৭, ৯২৩, দারেমী ১৮৩৮, ১৮৪১, ১৮৪২, ১৯২৭, ১৯৩১, রাওদুন নাদীর ৫২৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন সাবিত আল-আবদী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমভাবে তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। মুহাম্মাদ বিন সুলায়মান বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫১০৪, ২৪/৫৫৪ নং পৃষ্ঠা] কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৬০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাইতুল্লাহ তাওয়াফ শেষে মাকামে ইবরাহীমে এলেন। তখন উমার [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এট আমাদের পিতা [পূর্ব পুরুষ] ইবরাহীম [আঃ] এর স্থান, যে সম্পর্কে মহামহিম আল্লাহ বলেনঃ

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى

“তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে সালাতের স্থানরুপে গ্রহণ করো।” [সুরা বাকারাদি. ১২৫]। ওয়ালীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি ঈমাম মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এভাবে পাঠ করেছেনঃ

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى

“ওয়াত্তাখিযু মিম-মাকামি ইবরাহীমা মুসাল্লা”? তিনি বলেন, হাঁ। {২৯৬০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।২৯৬০} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি আল-আব্বাদ বিন উসমান আদ-দিমাশকী সম্পর্কে আবুল হাসান বিন সুমায় বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি কখনো কখনো সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৩২, ১৪/২৩৩ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৩৪. অধ্যায়ঃ অসুস্থ ব্যক্তির বাহনে চড়ে তাওয়াফ করা।

২৯৬১. উম্মু সালমাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রোগগ্রস্ত হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে লোকদের পেছনে পেছনে জন্তুযানে আরোহিত অবস্থায় তাওয়াফ করার নির্দেশ দিলেন। উম্মু সালমাহ [রাদি.] বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে নামায পরতে দেখেছি এবং তাতে তিনি “ওয়াত-তূর ওয়া কিতাবিম-মাসতূর” সূরা তিলাওয়াত করেন। ইবনি মাজাহ [রঃ] বলেন, এটা আবু বকর বর্ণিত হাদিস। {২৯৬১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৬১}সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৬৪, ১৬১৯, ১৬২৬, ১৬৩৩, ৪৮৫৩, মুসলিম ১২৭৬, নাসাঈ ২৯২৫, ২৯২৬, ২৯২৭, আবু দাউদ ১৮৮২, আহমাদ ২৫৯৪৬, ২৬১৭৪, মুয়াত্তা মালিক ৮৩২, সহীহ আবু দাউদ ১৬৪৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৩৫. অধ্যায়ঃ মুলতাযাম-এর বর্ণনা।

২৯৬২. আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] এর সাথে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করলাম। আমরা সাতবার তাওয়াফ শেষে কাবার পশ্চাতে নামায পড়লাম। অতঃপর আমি বললাম, আমরা কি আল্লাহর নিকট জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করিব না? তিনি বলেন, আমি আল্লাহর নিকট জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি অগ্রসর হয়ে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন, অতঃপর হাজরে আসওয়াদ ও কাবার দরজার মাঝ বরাবর দাঁড়ান, অতঃপর তাহার নিজের বুক, হস্তদ্বয় ও গাল তাহার সাথে লাগান এবং বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এরূপ করিতে দেখেছি। {২৯৬২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।২৯৬২} আবু দাউদ ১৮৯৯, সহীহাহ ২১৩৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আল মুসান্না ইবনিস সাব্বাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, পূর্ব ঈমামগণ তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়, তিনি মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় খুবই দুর্বল। আলী ইবনিল জুনায়দ বলেন, তাহার মিথ্যা বলার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। মুহাম্মাদ বিন সাহনুন, মুহাম্মাদ বিন সাদ ও মুহাম্মাদ বিন আম্মার তাহার সকলে বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭৭৩, ২৭/২০৩ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আল মুসান্না ইবনিস সাব্বাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ৪ টি খুবই দুর্বল, ৭ টি দুর্বল, ১ টি হাসান, ১৪ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আবু দাউদ ১৮৯৯, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৯০৪৩, শুআবুল ঈমান ৪০৫৮। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৯/৩৬. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী মহিলা তাওয়াফ ব্যতীত হজ্জের অবশিষ্ট অনুষ্ঠানাদি পালন করিবে

২৯৬৩. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রওয়ানা হলাম। আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল হজ্জ আদায় করা। আমরা সারিফ নামক স্থানে অথবা তাহার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছালাম, তখন আমার মাসিক ঋতু শুরু হলো। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট এলেন এবং আমি তখন কাঁদছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেনঃ তোমার কী হইয়াছে, তুমি কি ঋতুগ্রস্ত হয়েছো? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেনঃ এটি এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ তাআলা আদম কন্যাদের জন্য নির্ধারিত করিয়াছেন। তুমি হজ্জের সমস্ত অনুষ্ঠান পালন করো, শুধুমাত্র বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করো না। আয়েশা [রাদি.] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর স্ত্রীদের পক্ষ থেকে একটি গরু কোরবানী করেন। {২৯৬৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৬৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৯৪, ৩০৫, ৩১৬, ৩১৭, ৩১৯, ১৫১৮, ১৫৫৬, ১৫৬০, ১৫৬১, ১৫৬২, ১৬৩৮, ১৬৪৩, ১৬৫০, ১৭০৯, ১৭২০, ১৭৬২, ১৭৮৩, ১৭৮৬, ১৭৮৭, ১৭৮৮, ২৩১৭, ২৯৫২, ২৯৮৪, ৪৩৯৫, ৪৪০৮, ৫৫৪৮, ৫৫৫৯, ৭২২৯, ১২১১, ১২১২, ১২২৮, ১২৭৭, তিরমিজি ৯৩৪, ৯৪৫, ২৯৬৫, নাসাঈ ২৪২, ২৯০, ২৪৮, ২৬৫০, ২৭১৭, ২৭১৮, ২৭৪১, ২৭৬৩, ২৭৬৪, ২৮০৩, ২৮০৪, ২৯৯০, ২৯৯১, আবু দাউদ ৭৫০, ১৭৭৮, ১৭৭৯, ১৭৮১, ১৭৮২, আহমাদ ২৩৫৫৬, ২৩৫৭৩, ২৩৫৮৯, ২৪০৪৪, ২৪৩৫৫, ২৪৩৮৫, ২৪৭৭৯, ২৪৭৮৮, ২৪৯১৩, ২৫০৫০, ২৫৩১০, ২৫৫৩৪, ২৫৫৫৪, ২৭৬৫৪, ২৫৮১২, মুয়াত্তা মালিক ৭৪৬, ৮৯৬, ৯৪০, ৯৪১, দারেমী ১৪৬, ১৯০৪, ইরওয়া ১৯১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৩৭. অধ্যায়ঃ ইফরাদ হজ্জ।

২৯৬৪. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইফরাদ হজ্জ করেন। {২৯৬৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৬৪} মুসলিম ১২১১, তিরমিজি ৮২০, নাসাঈ ২৭১৫, ২৭১৬, আবু দাউদ ১৭৭৭, আহমাদ ২৩৫৫৭, ২৫৫৩২, মুয়াত্তা মালিক ৭৪৭, দারেমী ১৮১২, সহীহ আবু দাউদ ১৫৫৮-১৫৬৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৬৫. উম্মুল মুমিনীন আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইফরাদ হজ্জ করেন। {২৯৬৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৬৫} মুসলিম ১২১১, তিরমিজি ৮২০, নাসাঈ ২৭১৫, ২৭১৬, আবু দাউদ ১৭৭৭, আহমাদ ২৩৫৫৭, ২৫৫৩২, মুয়াত্তা মালিক ৭৪৭, দারেমী ১৮১২, সহীহ আবু দাউদ ১৫৫৮-১৫৬৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৬৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইফরাদ হজ্জ করিয়াছেন। {২৯৬৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৬৬}বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযিয আদ-দারাওয়ারদী সম্পর্কে মুহাম্মাদ বোন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল আজালী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি যখন তাহার কিতাব হইতে কোন হাদিস বর্ণনা করেন তখন তা সহীহ কিন্তু যখন মানুষের কিতাব থেকে হাদিস বর্ণনা করিতেন তখন তিনি সন্দেহ করিতেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৬৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর, উমার ও উসমান [রাদি.] ইফরাদ হজ্জ করেন। {২৯৬৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সনদটি দূর্বল।{২৯৬৭}হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি কাসিম বিন আবদুল্লাহ আল-উমারী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমভাবে তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, আমি তাহার থেকে হাদিস কখনই গ্রহন করিনি ও তাহার থেকে গ্রহন করার ইচ্ছাও করিনি। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও জাল [বানোয়াট] হাদিস বর্ণনা করিতেন মানুষ তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ ও আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত। ঈমাম যাহাবী তাহাকে বর্জন করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭৯৮, ২৩/৩৭৫ নং পৃষ্ঠা] কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯/৩৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি একই ইহরামে হজ্জ ও উমরা [কিরান হজ্জ] আদায় করে

২৯৬৮. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।আমি তাহাকে বলিতে শুনেছিঃ “আমি উমরা ও হজ্জের উদ্দেশ্যে হাজির”। {২৯৬৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৬৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৫১, ১৫৫৮, ১৭১৫, ৪৩৫৪, ১২৩২, ১২৫১, তিরমিজি ৮২১, ৯৫৬, নাসাঈ ২৭২৯, ২৭৩০, ২৭৩১, আবু দাউদ ১৭৯৫, ১৭৯২, আহমাদ ১৩৩৯৫, ১৩৪১৯, দারেমী ১৯২৪, সহীহ আবু দাউদ ১৫৭৫, ১৫৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন আবু ইসহাক সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৮৩, ৩১/১৯৯ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৬৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ “আমি উমরা ও হজ্জের উদ্দেশ্যে আপনার দরবারে হাজির হচ্ছি”। {২৯৬৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।২৯৬৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৫১, ১৫৫৮, ১৭১৫, ৪৩৫৪, ১২৩২, ১২৫১, তিরমিজি ৮২১, ৯৫৬, নাসাঈ ২৭২৯, ২৭৩০, ২৭৩১, আবু দাউদ ১৭৯৫, ১৭৯২, আহমাদ ১৩৩৯৫, ১৩৪১৯, দারেমী ১৯২৪, সহীহ আবু দাউদ ১৫৭৫, ১৫৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭০. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[সূবায় বিন মাবাদ বলেন] “আমি ছিলাম একজন নাসারা [খৃষ্টান]। অতঃপর ইসলাম গ্রহন করি। আমি হজ্জ ও উমরার উদ্দেশ্যে ইহরাম বাধলাম। সালমান বিন রবীআ ও যায়েদ বিন সূহান [রাদি.] উভয়ে আমাকে কাদিসিয়ায় হজ্জ ও উমরার একত্রে তালবিয়া পাঠ করিতে শুনেন। তখন তাহারা বলেন “এই ব্যাক্তি তো উটের চেয়েও পথভ্রষ্ট। তাহাদের এ মন্তব্য যেন আমার উপর একটি পাহাড় নিক্ষেপ করিল। তাই আমি উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তাহাকে অবহিত করলাম। তিনি তাহাদের উভয়কে তিরষ্কার করিলেন এবং আমাকে বলিলেন, তুমি মহানবী [সাঃআঃ] এর সুন্নাত পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছো,তুমি নবী [সাঃআঃ] এর সুন্নাত অনুযায়ী আমল করেছো। হিশাম [রাদি. আঃ] তাহার বর্ণিত হাদীসে বলেন , শাকীক [রাদি. আঃ] বলেছেন,আমি ও মাসরূক অনেকবার [সুবাই ইব্‌ন মাবাদের নিকট ] গিয়েছি এবং এ হাদিস সম্পর্কে তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করেছি। {উপরোক্ত হাদীসে মোট ৫টি সনদের ২ টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর তিনটি সনদ হলোঃ}

৪/২৯৭০ [১] . উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] থেকে বর্ণিত। [সুবায়] বলেন, যুবক বয়সে আমি খৃষ্টান ছিলাম। অতঃপর ইসলাম গ্রহন করি এবং ইবাদত –বন্দেগী করার চেষ্টা করি। আমি একই সাথে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাধলাম…….। পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। {২৯৭০} তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।২৯৭০} নাসাঈ ২৭১৯, ২৭২১, আবু দাউদ ২৭৯৮, ইরওয়া ৯৮৩, রাওদুন নাদীর ৩৮, তাখরীজুল মুখতাহার ১২৮-১৩০, সহীহ আবু দাউদ ১৫৭৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু তালহা [রাদি.] আমাকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই ইহরামে হজ্জ ও উমরা আদায় করেন [কিরান হজ্জ করেন]। {২৯৭১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। {২৯৭১} আহমাদ ১৫৯১১, ১৫৯১৯, সহীহ আবু দাউদ ১৫৭৫, ১৫৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৩৯. অধ্যায়ঃ কিরান হজ্জ পালনকারীর তাওয়াফ

২৯৭২. জাবির বিন আব্দুল্লাহ, ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহার সাহাবীগন মক্কায় পৌছে হজ্জ ও উমরা উভয়ের জন্যে একবার [সাত চক্র] মাত্র তাওয়াফ করেন। {২৯৭২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭২} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, সহীহ আবু দাউদ ১৫৯১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি লায়স সম্পর্কে ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুদতাহারাবুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০১৭, ২৪/২৭৯ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] হজ্জ ও উমরার উদ্দেশ্যে এক তাওয়াফ করেন। {২৯৭৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। ২৯৭৩} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, সহীহ আবু দাউদ ১৫৯১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি আশআস [বিন সাওয়ার] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন সিকাহ বললেও অন্যত্রে তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। উসমান বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫২৪, ৩/২৬৪ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আশআস [বিন সাওয়ার] এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৯৫ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৭৩২, মুসলিম ১২১২, ১২১৩, তিরমিজি ৯৪৮, আবু দাউদ ১৮৯৭, দারেমী ১৮৪৪, আহমাদ ২২২৪, ৪৯৪৪, ১৪৬৬৭, ২৪৪১০, সহীহ ইবনি খুযাইমাহ ২৫৭৭, ২৫৭৮, দারাকুতনী ২৫৬৯, ২৫৭০, ২৫৭২, ২৫৯০, ২৫৯১, ২৫৯৩, ২৫৯৫, ২৫৯৬, ২৫৯৯, ২৬০১, ২৬০২, ২৬০৩, মুজামুল আওসাত ৫৫৮০, ৮০৭৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি কিরান হজ্জের ইহরাম বেঁধে [মক্কায়] আগমন করেন। তিনি সাতবার বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন এবং সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করেন, অতঃপর বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপই করিয়াছেন। {২৯৭৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৬, ৩৯৬, ৪৯২, ১৫৪১, ১৫৭৩, ১৫৭৪, ১৬০৩, ১৬০৪, ১৬১৬, ১৬১৭, ১৬২৪, ১৬৪৪, ১৬৪৬, ১৬৪৭, ১৬৯২, ১৭৯৪, ২৭০২, মুসলিম ১১৮৬, ১১৮৭, ১২২৭, ১২২৮, ১২৩৪, ১২৫৯, ১২৬০, ১২৬১, ১২৬৮, ১২৫৭, তিরমিজি ৮১৮, ৮২৪, ৮৬১, ৮৬৪, নাসাঈ ২৭৩২, ২৭৫৭, ২৭৫৮, ২৯৩০, ২৯৪০, ২৯৪১, ২৯৪২, ২৯৪৩, ২৯৪৬, ২৯৬০, ২৯৬৬, ২৯৭৬, আবু দাউদ ১৭৭১, ১৭৭২, ১৭০৫, ১৮৬৫, ১৮৯১, ১৮৯৩, ১৯০৪, ৪০৬৪, ৪২১০, আহমাদ ৪৪৪৮, ৪৫৭১, ৪৬০৪, ৪৬১৪, ৪৮২৯, ৪৮৭২, ৪৯৬৩, ৫১৭৯, ৫২১৬, ৫৩৭৮, ৫৪২১, ৫৭০৩, ৫৭২৬, ৫৮৬০, ৫৯০৭, ৬০১১, ৬২০২, ৬৩৯৭, ৬৪২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭১৪, ৭৪০, ৭৪২, ৮১৭, ৯২৩, দারেমী ১৮৩৮, ১৮৪২, ১৯২৭, ১৯৩১, রাওদুন নাদীর ৫৩৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি মুসলিম বিন খালিদ আয-যানজী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার হাদিস বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু জাফার আল-উকায়লী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯২৫, ২৭/৫০৮ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ বলেনঃ কোন ব্যাক্তি হজ্জ ও উমরার জন্যে একত্রে ইহরাম বাধলে এদূভয়ের জন্য এক তাওয়াফই যথেষ্ট।সে হজ্জের যাবতীয় অনুষ্ঠান পালন না করা পর্যন্ত ইহরাম মুক্ত হইতে পারেনা। সে হজ্জ ও উমরা থেকে একই সাথে ইহরাম মুক্ত হইবে। {২৯৭৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭৫} তিরমিজি ৯৪৮, আহমাদ ৫৩২৭, দারেমী ১৮৪৪, রাওদুন নাদীর ৫৩৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৪০. অধ্যায়ঃ উমরাহ সহ তামাত্তু হজ্জের বর্ণনা

২৯৭৬. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আল-আকীক নামক স্থানে অবস্থানকালে বলিতে শুনেছিঃ আমার প্রতিপালক থেকে একজন দূত এসে বলেন, এই বরকতময় উপত্যকায় নামাজ পড়ুন এবং বলুনঃ উমরা ও হজ্জের [ইহরাম]। হাদিসের মূল পাঠ দুহায়ম এর বর্ণনা অনূযায়ী। {২৯৭৬}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৩৪, ২৩৩৭, ৭৩৪৩, আবু দাউদ ১৮০০, আহমাদ ১৬৪, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৪৭, সহীহ আবু দাউদ ১৫৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন মুসআব সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১২, ২৬/৪৬০ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭৭. সুরাকা বিন জুসুম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণদানের উদ্দেশ্যে এই উপত্যকায় দাঁড়িয়ে বলেনঃ জেনে রাখো! কেয়ামত পর্যন্ত হজ্জের সাথে উমরা আদায় করা যেতে পারে। {২৯৭৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭৭} নাসাঈ ২৮০৬, ২৭০৭, আহমাদ ১৭০২, সহীহ আবু দাউদ ১৫৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭৮. ইমরান ইবনিল হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নিশ্চয় আমি তোমার নিকট একটি হাদিস বর্ণনা করিব। আশা করি আল্লাহ তাআলা আজকের দিনের পর থেকে এ হাদিস দ্বারা তোমাকে উপকৃত করবেন। জেনে রাখো! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর পরিবারের একদল সদস্য যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের মধ্যে উমরা আদায় করেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাতে বাঁধা দেননি এবং তা রহিতকারী কোন আয়াতও নাযিল হয়নি। কিন্তু পরবর্তী কালে এক ব্যাক্তি [উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] ] এ সম্পর্কে নিজ ইচ্ছামত যা বলার তাই বলেন। {২৯৭৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৭২, ৪৫১৮, মুসলিম ১২২৬, সহীহাহ ১৫৫৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৭৯. ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[আবু মূসা আল–আশআরী] তিনি তামাত্তু হজ্জের অনুকূলে ফতোয়া দিতেন। এক ব্যাক্তি তাহাকে বলল, আপনি আপনার কতক ফতোয়া দেয়া ছেড়ে দিন বা ত্যাগ করুন। আপনার জানা নেই যে, আপনার পরে আমীরুল মুমিনীন [উমার] হজ্জের ব্যাপারে নতুন হুকুম জারী করিয়াছেন। অবশেষে আমি [আবু মূসা] তাহার সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি তাহাকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন উমার [রাদি.] বলেন, আমি অবশ্যই জানি যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহার সাহাবীগণ তামাত্তু হজ্জ করিয়াছেন। কিন্তু আমার নিকট এটা খুবই খারাপ লাগে যে, লোকেরা গাছের নীচে স্ত্রীদের সাথে সহবাস করিবে, অতঃপর মাথার চুল থেকে পানি পতিত অবস্থায় হজ্জে যাবে। {২৯৭৯}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৭৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৫৯, ১৭২৪, ১৭৯৫, ৪৩৪৬, ৪৩৯৭, মুসলিম ১২২১, ১২২২, নাসাঈ ২৭৩৫, ২৭৩৮, ২৭৪২, আহমাদ ২৭৫, ৩৫৩, ১৯০১১, ১৯০৪০, ১৯১৭২, দারেমী ১৮১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৬/৪১. অধ্যায়ঃ হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করা

২৯৮০. জাবির বিন আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা কেবল হজ্জের নিয়তে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ইহরাম বাঁধলাম, এর সাথে উমরার নিয়ত করিনি। যিলহজ্জ মাসের চারদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা মক্কায় উপনীত হলাম। আমরা বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ সমাপ্ত করিলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ইহরাম [ভঙ্গ করে] উমরার ইহরামে পরিনত করার নির্দেশ দেন এবং স্ত্রীদের সাথে মেলামেশার অনুমতি দেন। আমরা আরয করলাম, আমাদের লজ্জাস্থান থেকে বীর্য নির্গত হওয়ার পরপরই আরাফতের দিকে অগ্রসর হবো। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সৎকর্মশীল ও সর্বাধিক সত্যবাদী। আমার সাথে কোরবানির পশু না থাকলে আমিও ইহরাম খুলে ফেলতাম। সুরাকা বিন মালিক [রাদি.] জিজ্ঞেস করেন, এ সুযোগ কি আমাদের এ বছরের জন্য, না চিরকালের জন্য? তিনি বলেনঃ না, চিরকালের জন্য। {২৯৮০}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ {২৯৮০}বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, সহীহ আবু দাউদ ১৫৬৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৮১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যিলকাদ মাসের পাঁচ দিন বাকি থাকতে আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রওনা হলাম। হজ্জ করাই ছিল আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। আমরা গন্তব্যে [মক্কায়] বা তাহার কাছাকাছি পৌঁছলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নির্দেশ দেন, যাহার সাথে কোরবানির পশু নেই সে যেন ইহরাম খুলে ফেলে। অতএব যাদের সাথে কোরবানির পশু ছিল তাহারা ব্যতীত আর সকলেই ইহরাম খুলে ফেলেন। কোরবানির দিন আমাদের জন্য গরুর গোশত নিয়ে আসা হল এবং বলা হল রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর স্ত্রীদের পক্ষ থেকে কোরবানি করিয়াছেন। {২৯৮১}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ {২৯৮১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৯৪, ৩০৫, ৩১৬, ৩১৭, ৩১৯, ১৫১৮, ১৫৫৬, ১৫৬০, ১৫৬১, ১৫৬২, ১৬৩৮, ১৬৪৩, ১৬৫০, ১৭০৯, ১৭২০, ১৭৬২, ১৭৮৩, ১৭৮৬, ১৭৮৭, ১৭৮৮, ২৩১৭, ২৯৫২, ২৯৮৪, ৪৩৯৫, ৪৪০৮, ৫৫৪৮, ৫৫৫৯, ৭২২৯, ১২১১, ১২১২, ১২২৮, ১২৭৭, তিরমিজি ৯৩৪, ৯৪৫, ২৯৬৫, নাসাঈ ২৪২, ২৯০, ২৪৮, ২৬৫০, ২৭১৭, ২৭১৮, ২৭৪১, ২৭৬৩, ২৭৬৪, ২৮০৩, ২৮০৪, ২৯৯০, ২৯৯১, আবু দাউদ ৭৫০, ১৭৭৮, ১৭৭৯, ১৭৮১, ১৭৮২, আহমাদ ২৩৫৫৬, ২৩৫৭৩, ২৩৫৮৯, ২৪০৪৪, ২৪৩৫৫, ২৪৩৮৫, ২৪৭৭৯, ২৪৭৮৮, ২৪৯১৩, ২৫০৫০, ২৫৩১০, ২৫৫৩৪, ২৫৫৫৪, ২৭৬৫৪, ২৫৮১২, মুয়াত্তা মালিক ৭৪৬, ৮৯৬, ৯৪০, ৯৪১, দারেমী ১৪৬, ১৯০৪, ইরওয়া ১১৫৯, সহীহ আবু দাউদ ১৫৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৮২. আল-বারা বিন আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহার সাহাবীগণ রওনা হলেন। আমরা হজ্জের ইহরাম বাঁধলাম। আমরা মক্কায় পৌঁছলে তিনি বলেনঃ তোমাদের হজ্জকে উমরায় পরিণত করো। লোকেরা বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আমরা তো হজ্জের নিয়তে ইহরাম বেঁধেছি, তা কিরুপে উমরায় পরিনত করিব? তিনি বলেনঃ লক্ষ্য কর, আমি তোমাদের যা নির্দেশ করি তা করো। তাহারা তাহাদের কথার পুনরাবৃত্তি করিলে তিনি অসন্তুষ্ট হয়ে স্থান ত্যাগ করেন এবং এই অবস্থায় আয়েশা [রাদি.] -র নিকট যান। তিনি তাহাঁর চেহারায় অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করে বলেন, আপনাকে কে অসন্তুষ্ট করেছে, আল্লাহ তাহাকে অসন্তুষ্ট করুন? তিনি বলেনঃ আমি কীভাবে অসন্তুষ্ট না হয়ে পারি, আমি কোনো কাজের হুকুম করি, অথচ তা মান্য করা হইবে না? {২৯৮২}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{২৯৮২}হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। যইফাহ ৪৭৫৩, জইফ আল-জামি ৬১৩৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু ইসহাক সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু জাফার আন-নাহহাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি একজন মুদাল্লিস তথা হাদিস বর্ণনায় তাদলীসকারী। আবু আমর ইবনিস সালাহ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৪০০, ২২/১০২ নং পৃষ্ঠা] তাছাড়া তিনি বারা বিন আযিব থেকে হাদিসটি শ্রবন করিয়াছেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৯৮৩. আসমা বিনতু আবু বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা ইহরাম অবস্থায় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রওনা হলাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যাদের সাথে কোরবানির পশু আছে তাহারা যেন ইহরাম অবস্থায় থাকে। আর যাদের সাথে কোরবানির পশু নেই তাহারা যেন ইহরাম ভঙ্গ করে। রাবী বলেন, আমার সাথে কোরবানির পশু না থাকায় আমিও ইহরাম ভঙ্গ করলাম, কিন্তু [আমার স্বামী] যুবাইর [রাদি.] -র সাথে কোরবানির পশু থাকায় তিনি ইহরাম ভঙ্গ করিতে পারেননি। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্র পরে যুবাইর [রাদি.] -র নিকট আসলে তিনি বলেন, তুমি আমার নিকট থেকে উঠে যাও। আমি বললাম, আপনি কি আশঙ্কা করছেন যে, আমি আপনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বো? {২৯৮৩}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৮৩} মুসলিম ১২৩৬, নাসাঈ ২৯৯২, আহমাদ ২৬৪২১, ২৬৪২৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৪২. অধ্যায়ঃ যারা বলেন, হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করা সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সীমিত [খাস] ছিল

২৯৮৪. বিলাল ইবনিল হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করে উমরা করার সুযোগ কি কেবল আমাদের পর্যন্তই সীমিত, না সাধারণভাবে সব লোকের জন্য উন্মুক্ত? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ বরং আমাদের জন্যই সীমিত। {২৯৮৪}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{২৯৮৪} নাসাঈ ২৮০৮, ১৮০৮, আহমাদ ১৫৪২৬, দারেমী ১৮৫৫, জইফ আবু দাউদ ৩১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] ২. আল-হারিস বিন বিলাল ইবনিল হারিস সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাকবুল। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। রাবীআহ বিন আবদুর রহমান তাহার থেকে এককভাবে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার সানাদটি মারুফ নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০১১, ৫/২১৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৯৮৫. আবু যাহার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করার সুযোগ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহাবীগণের মধ্যে সীমিত ছিল। {২৯৮৫}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ {২৯৮৫} মুসলিম ১২২৪, নাসাঈ ২৮০৯, ২৮১০, ২৮১১, ২৮১২, আবু দাউদ ২৮৭, রাওদুন নাদীর ৯৪৯, ৯৫০, সহীহ আবু দাউদ ১৫৮৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯/৪৩.অধ্যায়ঃ সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করা [দৌড়ানো]

২৯৮৬. হিশাম বিন উরওয়াহ হইতে বর্ণীতঃ

আমার পিতা আমাকে অবহিত করে বলেছেন, আমি আয়েশা [রাদি.] – কে বললাম, আমি যদি সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ না করি তবে তা আমার জন্য দূষণীয় মনে করি না। তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ বলেছেনঃ

إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا

“সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। অতএব যে কেউ কাবা ঘরের হজ্জ অথবা উমরাহ সম্পন্ন করে, এই দুটির মাঝে সাঈ করিলে তাহার কোনো পাপ নেই” [সূরা বাকারাদি. ১৫৮]।

আয়েশা [রাদি.] বলেন, তুমি যেরূপ বুঝেছ যদি তাই হত তবে এভাবে বলা হতঃ “তবে এ দুটির মাঝে সাঈ না করিলে তাহার কোনো গুনাহ নেই”। উপরোক্ত আয়াত আনসার সম্প্রদায়ের কতক লোকের সম্পর্কে নাযিল হইয়াছে। তাহারা যখন ইহরাম বাঁধতো [জাহিলী যুগে] মানাত দেবতাহার উদ্দেশ্যে বাঁধতো। তাই সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করা [তাহাদের বিশ্বাস অনুযায়ী] তাহাদের জন্য হালাল ছিলো না। তাহারা [ইসলামোত্তর যুগে] মহানবী [সাঃআঃ] এর সাথে হজ্জ করিতে এসে বিষয়টি তাহাঁর সামনে উত্থাপন করিলে তখন আল্লাহ তাআলা উপরোক্ত আয়াত নাযিল করেন। [আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমার জীবনের শপথ! যে ব্যক্তি হজ্জ করিতে এসে সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করিবে না মহান আল্লাহ তাহার হজ্জ পূর্ণ করবেন না। {২৯৮৬}

{২৯৮৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৪৩, ১৭৯০, ৪৪৮৫, ৪৮৬১, মুসলিম ১২৭৭, তিরমিজি ২৯৬৫, নাসাঈ ২৯৬৭, ২৯৬৮, আবু দাউদ ২৯০১, আহমাদ ২৪৫৮৮, ২৪৭৭০, ২৫৩৭৭, মুয়াত্তা মালিক ৮৩৮, ইরওয়া ১০৭১, সহীহ আবু দাউদ ১৬৫৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৮৭. শায়বার উম্মু ওয়ালাদ হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করিতে দেখেছি এবং তিনি তখন বলছিলেনঃ আল-আবতাহ্ উপত্যকা অতিক্রম করিতে হইবে। {২৯৮৭}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯৮৭} নাসাঈ ২৯৮০, সহীহাহ ২৪৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯৮৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি যদি সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করে দৌড়াই তবে তা এজন্য যে, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে সাঈ করিতে দেখেছি। আমি যদি তা হেঁটে অতিক্রম করি তবে তা এজন্য যে, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তা হেঁটে অতিক্রম করিতে দেখেছি। আমি তো একজন অতি বৃদ্ধ। {২৯৮৮}

তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। {২৯৮৮}সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৬৬, ৩৯৬, ৪৯২, ১৫৪১, ১৫৭৩, ১৫৭৪, ১৬০৩, ১৬০৪, ১৬১৬, ১৬১৭, ১৬২৪, ১৬৪৪, ১৬৪৬, ১৬৪৭, ১৬৯২, ১৭৯৪, ২৭০২, মুসলিম ১১৮৬, ১১৮৭, ১২২৭, ১২২৮, ১২৩৪, ১২৫৯, ১২৬০, ১২৬১, ১২৬৮, ১২৫৭, তিরমিজি ৮১৮, ৮২৪, ৮৬১, ৮৬৪, নাসাঈ ২৭৩২, ২৭৫৭, ২৭৫৮, ২৯৩০, ২৯৪০, ২৯৪১, ২৯৪২, ২৯৪৩, ২৯৪৬, ২৯৬০, ২৯৬৬, ২৯৭৬, আবু দাউদ ১৭৭১, ১৭৭২, ১৭০৫, ১৮৬৫, ১৮৯১, ১৮৯৩, ১৯০৪, ৪০৬৪, ৪২১০, আহমাদ ৪৪৪৮, ৪৫৭১, ৪৬০৪, ৪৬১৪, ৪৮২৯, ৪৮৭২, ৪৯৬৩, ৫১৭৯, ৫২১৬, ৫৩৭৮, ৫৪২১, ৫৭০৩, ৫৭২৬, ৫৮৬০, ৫৯০৭, ৬০১১, ৬২০২, ৬৩৯৭, ৬৪২৭, মুয়াত্তা মালিক ৭১৪, ৭৪০, ৭৪২, ৮১৭, ৯২৩, দারেমী ১৮৩৮, ১৮৪২, ১৯২৭, ১৯৩১, আত-তালীক আলা ইবনি খুযাইমাহ ২৭৭০-২৭৭২, সহীহ আবু দাউদ ১৬৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি জাররাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা ছিলো। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৯১০, ৪/৫১৭ নং পৃষ্ঠা]আতা ইবনিস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করিয়াছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা] কাবা তাওয়াফ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply