শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – মৃতের পক্ষ থেকে হজ্জ
শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – মৃতের পক্ষ থেকে হজ্জ >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ২৫, অধ্যায়ঃ (১-১২)=১২টি
১৯/১. অধ্যায়ঃ হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া
১৯/২. অধ্যায়ঃ হজ্জ ফারদ হওয়ার বিবরণ
১৯/৩. অধ্যায়ঃ হজ্জ ও উমরার ফযিলত
১৯/৪. অধ্যায়ঃ যানবাহনে চড়ে হজ্জ আদায় করা
১৯/৫. অধ্যায়ঃ হাজ্জীগনের দুআর ফযিলত
১৯/৬. অধ্যায়ঃ কিসে হজ্জ ফারদ হয়
১৯/৭. অধ্যায়ঃ যে মহিলা সাথে অভিভাবক ব্যতীত হজ্জ করে
১৯/৮. অধ্যায়ঃ মহিলাদের জিহাদ হলো হজ্জ
১৯/৯. অধ্যায়ঃ মৃতের পক্ষ থেকে হজ্জ করা
১৯/১০. অধ্যায়ঃ জীবিত ব্যক্তি হজ্জ করিতে অপারগ হলে তাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করা
১৯/১১. অধ্যায়ঃ শিশুদের হজ্জ
১৯/১২. অধ্যায়ঃ হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত মহিলারা হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধলে
হজ্জের নিয়ম কানুন । আরবি মাস বৃদ্ধ মহিলা ও শিশুদের বর্ণনা
১৯/১. অধ্যায়ঃ হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া
২৮৮২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সফর শাস্তিরই একটি টুকরা। তা তোমাদের যে কোন ব্যক্তির ঘুম ও পানাহারকে বাধাগ্রস্ত করে। তোমাদের যে কেউ সফরে নিজ প্রয়োজন পূরণ হওয়ার সাথে সাথে যেন অবিলম্বে বাড়ি ফিরে আসে।
{উপরোক্ত হাদীসে মোট ৪টি সানাদের ৩টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}
২/২৮৮২ [১] . আবু হুরাইরা [রাদি.] , নবী [সাঃআঃ] সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে। {২৮৮২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৮২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮০৪, মুসলিম ১৯২৭, আহমাদ ৭১৮৪, ৯৪৪৭, ১০০৬৮, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৩৫, দারেমী ২৬৭০। রাওদুন নাদীর ৭৭৪। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকূব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২.৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ ব্লেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] ৩. সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উইয়ায়নাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বাল বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তাহার খবর মাকবূল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটির ১৩৮টি শাওয়াহিদ রয়েছে। তন্মধ্যে ১টি জাল, ১১টি খুবই দুর্বল, ৪৮টি দুর্বল, ৬৩টি হাসান, ১৫টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ বুখারী ১৮০৪, ৩০০১, ৫৪২৯, মুসলিম ৭১৫, দারেমী ২৬৭০, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৩৫, আহমাদ ৭১৮৪, ৯৪৪৭, ১০০৬৮, সহীহ ইবনি হিব্বান ২৭০৮, আল-ফাওয়াইদ ১১৩৫, ১১৩৬. শারহুস সুন্নাহ ২৬৮৭, ২৬৮৮।হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮৮৩. ইবনিল আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে সে যেন অবিলম্বে তা আদায় করে। কারণ মানুষ কখনও আসুস্থ হয়ে যায়, কখনও প্রয়োজনীয় জিনিস বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং কখনও অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে যায়। {২৮৮৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{২৮৮৩} আবু দাউদ ১৭৩২ আহমাদ ১৮৩৬, ১৯৭৪, ২৯৬৬, ৩৩৩০, দারেমী ১৭৮৪, মিশকাত ৯৯০, ইরওয়া ৯৯০, সহীহ আবু দাউদ ১৫২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৯/২. অধ্যায়ঃ হজ্জ ফারদ হওয়ার বিবরণ
২৮৮৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যখন এ আয়াত নাযিল হলো
وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً
“মানুষের মধ্যে যাহার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ্জ করা তাহার অবশ্য কর্তব্য” [সূরা আল ইমরান ঃ ৯৭] , তখন সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল! প্রতি বছরই কি হজ্জ ফারদ? তিনি নিরুত্তর থাকলেন। পুনরায় তাহারা বলেন, প্রতি বছরই কি? তিনি বলেন, না। কিন্তু আমি যদি বলতাম, হাঁ, তবে তদ্রুপই ওয়াজিব হতো। অতঃপর নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয়
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন করো না যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হইবে…” [সুরা মাইদাহঃ ১০১]। {২৮৮৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ।{২৮৮৪} তিরমিজি ৮১৪, ইরওয়া ৪/১৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আলী বিন আবদুল আলা সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম বুখারী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৯৯, ২০/৪৯৬ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল আলা সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, যারা হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন তিনি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবদুর রহমান বিন মাহদী তাহাকে বর্জন করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৮৪, ১৯/১৫৭ নং পৃষ্ঠা]হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮৮৫. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন, হে আলাহর রাসূল! প্রতি বছরই কি হজ্জ ফারদ? তিনি বলেনঃ আমি যদি বলি হাঁ, তবে তা অবশ্যই ওয়াজিব [ফারদ] হতো। আর যদি তা ওয়াজিব হতো তবে তোমরা তা আদায় করিতে অক্ষম হয়ে পড়তে। আর তোমরা যদি তা আদায় করিতে না পারতে তবে তোমাদের শাস্তি দেয়া হতো। {২৮৮৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৮৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৪/১৫১, মিশকাত ২৫২০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮৮৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আল-আকরা বিন হাসিব [রাদি.] মহানবী [সাঃআঃ] এর নিকট জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল! হজ্জ কি প্রতি বছর, না মাত্র একবার? তিনি বলেনঃ বরং একবার মাত্র। অতঃপর এর অধিক করার কারো সামর্থ্য থাকলে তা নফল। {২৮৮৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৮৬} নাসাঈ ২৬২০, আবু দাউদ ১৭২১, আহমাদ ২৩০৪, ২৬৩৭, ৩৫০০ ৩৪১০, দারেমী ১৭৮৮, ইরওয়া ১৪৯-১৫০, সহীহ আবু দাউদ ১৫১৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/৩. অধ্যায়ঃ হজ্জ ও উমরার ফযিলত
২৮৮৭. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মহানবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা ধারাবাহিকভাবে হজ্জ ও উমরাহ আদায় করো। কেননা এ দুটি ধারাবাহিকভাবে আদায় করিলে তা দারিদ্র ও গুনাহ দূরীভুত করে, যেমন হাপর লোহার মরিচা দূর করে।
{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}
২/২৮৮৭ [১] . উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] , মহানবী [সাঃআঃ] সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। {২৮৮৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৮৭} আহমাদ ১৬৮, মিশকাত ২৫২৪, ২৫২১৫, সহীহাহ ১২০০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয় এবং তিনি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তাহার দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করা যাবে না। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করাও যাবে না দলীল হিসেবেও গ্রহন করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩০১৪, ১৩/৫০০ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আসিম বিন উবায়দুল্লাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। উক্ত হাদিসটির ৮৮ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ২৪ টি খুবই দুর্বল, ২৩ টি দুর্বল, ১৭ টি হাসান, ২৪ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ৮১০, আহমাদ ১৬৮, ৩৬৬০, ১৫২৬৭, ১৫২৭০, ১৫২৭১, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮৭৯৬, মুজামুল আওসাত ৩৮১৪, ৪৯৭৭, ৪৯৯৭, ৫৫২৯, শারহুস সুন্নাহ ১৮৪৩। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮৮৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এক উমরাহ থেকে অপর উমরাহ মাঝখানের সময়ের জন্য কাফ্ফারাস্বরূপ এবং জান্নাতই হলো মাবরূর [ত্রুটিমুক্ত] হজ্জের প্রতিদান। {২৮৮৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৮৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৭৭৩, মুসলিম ১৩৪৯, তিরমিজি ৯৩৩, নাসাঈ ২৬২২, ২৬২৩, ২৬২৯, আহমাদ ৭৩০৭, ৯৬২৪, ৯৬৩২, মুয়াত্তা মালিক ৭৭৬, দারেমী ১৭৯৫, সহীহাহ ৩/১৯৭, ১৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮৮৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এই ঘরের হজ্জ করেছে এবং তাতে অশালীন কথাবার্তা বা আচরণ করেনি, সে এমন অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করিবে যেমন তাহার মা তাহাকে [নিষ্পাপ] প্রসব করেছে। {২৮৮৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৮৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫২১, মুসলিম ১৩৫০, তিরমিজি ৮১১, নাসাঈ ২৬২৭, আহমাদ ৭০৯৬, ৭৩৩৪, ৯০৫৬, ৯৯০৪, ১০০৩৭, দারেমী ১৭৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/৪. অধ্যায়ঃ যানবাহনে চড়ে হজ্জ আদায় করা
২৮৯০. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] [উটের পিঠে] একটি পুরাতন জিন ও পালানে উপবিষ্ট অবস্থায় হজ্জ করেন। তাহাঁর পরিধানে ছিল একটি চাদর যাহার মূল্য চার দিরহাম বা তাহারও কম। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! এ এমন হজ্জ, যাতে কোন প্রদর্শনেচ্ছা বা প্রচারেচ্ছা নেই। {২৮৯০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ {২৮৯০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫১৭, আত-তালীকুর রাগীব ২/১১৫, সহীহাহ ২৬১৭, মুখতাসারুশ শামাইল ২৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি রাবী বিন সাবীহ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি ব্যাক্তি হিসেবে সালিহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তা মাঝে কোন সমস্যা নেই তিনি একজন সালিহ ব্যাক্তি। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। আমর বিন আলী আল-ফাল্লাস বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ২. ইয়াযীদ বিন আবান সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। আবু বাকর আল-বুরকানী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৫৮, ৩২/৬৪ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু রাবী বিন সাবীহ ও তাহার উসতায ইয়াযীদ বিন আবান এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩১ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ১৭ টি দুর্বল, ১১ টি হাসান, ৩ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ মুজামুল আওসাত ১৩৭৮, মুসান্নাফ ইবনি আবু শায়বাহ ১৬০৩৭, সহীহ ইবনি খুযাইমাহ ২৬৬২। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮৯১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে মক্কা ও মদীনার মাঝপথে ছিলাম। আমরা একটি উপত্যকা অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ এটা কোন্ উপত্যকা? সাহাবীগণ বলেন, আল-আযরাক উপত্যকা। তিনি বলেনঃ আমি মূসা [আঃ] -কে দেখিতে পাচ্ছি। অতঃপর তিনি নিজের দু আংগুল কর্ণদ্বয়ে স্থাপন করে তাহাঁর দীর্ঘ কেশের কিছুটা বর্ণনা দেন, যা রাবী দাউদ পূর্ণ মনে রাখতে পারেননি। তিনি উচ্চৈঃস্বরে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করিতে করিতে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় এ উপত্যকা অতিক্রম করেন। রাবী বলেন, অতঃপর আমরা পথ অতিক্রম করে একটি টিলার উপর আসলাম। তিনি বলেন, এটা কোন টিলা? সাহাবীগণ বলেন, এটা হারশা অথবা লিফাত [লাফ্ত] নামীয় টিলা। তিনি বলেন, আমি যেন ইউনুস [আঃ] -কে একটি লাল বর্ণের উষ্ট্রীর উপর পশমী জুব্বা পরিহিত অবস্থায় দেখিতে পাচ্ছি, যাহার নাসারন্ধ্রের রমি ছিল খেজুর পাতাহার তৈরী এবং তিনি তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় এ উপত্যকা অতিক্রম করেন। {২৮৯১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৮৯১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫৫৫, মুসলিম ১৬৬, আহমাদ ১৮৫৭, ২৪৯৭, আত-তালীকুর রাগীব ২/১১৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/৫. অধ্যায়ঃ হাজ্জীগনের দুআর ফযিলত
২৮৯২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হজ্জযাত্রীগণ ও উমরার যাত্রীগণ আল্লাহর প্রতিনিধিদল। তাহারা তাহাঁর নিকট দুআ করিলে তিনি তাহাদের দুআ কবুল করেন এবং তাহাঁর নিকট মাফ চাইলে তিনি তাহাদের ক্ষমা করেন। {২৮৯২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ।{২৮৯২} নাসাঈ ২৬২৫, ৩০৭০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১০৮, ১০৯, মিশকাত ৩৫৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি সালিহ বিন আবদুল্লাহ বিন সালিহ সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৮২২, ১৩/৬৪ নং পৃষ্ঠা] ২. ইয়াকুব বিন ইয়াহইয়া বিন আব্বাদ বিন আবদুল্লাহ ইবনিয যুবায়র সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি হুজ্জাহ নয়। যুবায়র বিন বাক্কার বলেন, তিনি ফাদল এর দ্বারা পরিচিত ছিলেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭১০৭, ৩২/৩৭৪ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮৯৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর পথের সৈনিক, হজ্জযাত্রী ও উমরা যাত্রীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি। তাহারা আল্লাহর নিকট দুআ করিলে তিনি তা কবুল করেন এবং কিছু চাইলে তা তাহাদের দান করেন। {২৮৯৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{২৮৯৩}হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আত-তালীকুর রাগীব ২/১০৮, সহীহাহ ১৮২০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইমরান বিন উইয়ায়নাহ সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসে সন্দেহ ও ভুল রয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী ও আহমাদ বিন সালিহ আল-মিসরী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ২. আতা ইবনিস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করিয়াছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৮৯৪. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] এর নিকট উমরা আদায় করার অনুমতি চাইলে তিনি তাহাকে অনুমতি দেন এবং বলেনঃ “হে আমার ছোট ভাই! তোমার দুআর মধ্যে আমাদেরকেও শরীক করিবে, আমাদের ভুলে যেও না”। {২৮৯৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ।২৮৯৪} তিরমিজি ৩৫৬২, আবু দাউদ ১৪৯৮, জইফ আবু দাউদ ২৬৪, মিশকাত ২২৪৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয় এবং তিনি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তাহার দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করা যাবে না। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু বকর আল বাযযাহার বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করাও যাবে না দলীল হিসেবেও গ্রহন করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩০১৪, ১৩/৫০০ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮৯৫. আবু দারদা ও উম্মু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবু দারদা [রাদি.] এর কন্যা তাহার বিবাহ বন্ধনে ছিল। তিনি তাহার নিকট এলেন এবং সেখানে উম্ম দারদা [রাদি.] কেও উপস্থিত পেলেন কিন্তু আবু দারদা [রাদি.] কে পাননি। উম্মু দারদা [রাদি.] তাহাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি এ বছর হজ্জ করিতে চাও? সফওয়ান [রাদি.] বলেন, হাঁ। তিনি বলেন, তাহলে তুমি আমাদের কল্যাণ কামনা করে আল্লাহর নিকট দুআ করো। কেননা নবী [সাঃআঃ] বলিতেন ঃ কোন ব্যক্তি তাহার অপর ভাইয়ের জন্য তাহার অনুপস্থিতিতে দুআ করিলে তা কবুল হয়। তাহার মাথার নিকট একজন ফেরেশতা তাহার দুআর সময় আমীন বলিতে থাকেন। যখনই সে তাহার কল্যাণ কামনা করে দুআ করে, তখন ফেরেশতা বলেন, আমীন, তোমার জন্যও অনুরূপ কল্যাণ। রাবী বলেন, অতঃপর আমি বাজারের দিকে গেলাম এবং আবু দারদা [রাদি.] -র সাক্ষাত পেলাম। তিনিও নবী [সাঃআঃ] এর অনুরূপ হাদিস আমার নিকট বর্ণনা করেন। {২৮৯৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ {২৮৯৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ১৩৩৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/৬. অধ্যায়ঃ কিসে হজ্জ ফারদ হয়
২৮৯৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] এর সামনে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! কিসে হজ্জ ফরদ হয়? তিনি বলেনঃ পাথেয় ও বাহন থাকলে। সে [পুনরায়] বলল, হে আল্লাহর রাসূল! হাজ্জী কে? তিনি বলেনঃ যাহার [ইহরামের কারনে] এলোমেলো কেশ এবং দুর্গন্ধ শরীর। অপর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! হজ্জ কী? তিনি বলেন, উচ্চৈস্বরে তালবিয়া পাঠ ও রক্ত প্রবাহিত [কোরবানী] করা। ওয়াকী [রাদি.] -এর মতে “আল-আজ্জ” অর্থ “তালবিয়া পাঠ” এবং “আস-সাজ্জু” অর্থ “পশু কোরবানী করা”। {২৮৯৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল।২৮৯৬} তিরমিজি ৮১৩, ইরওয়া ৯৮৮, সহীহাহ ১৫০০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি ইবরাহীম বিন ইয়াযীদ আল-মাক্কী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবুল হাসান ইবনিল কাত্তান তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস দারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবদুল্লাহ বিন সুলায়মান ইবনিল আশআস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সহজ-সরল অর্থাৎ তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আলী ইবনিল জুনায়দ বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি দুর্বল আমি তাহার থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করিনি। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ আল-মাখরামী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ ইবনিল বুরাকী বলেন, তিনি মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬৭, ২/২৪২ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
২৮৯৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, পাথেয় ও বাহন অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার বাণী ঃ
مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً
“যাহার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে” [সূরা আল ইমরান ঃ ৯৭] [-এর তাৎপর্য এটাই]। {২৮৯৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। ২৮৯৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৯৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি ১. হিশাম বিন সুলায়মান আল-কুরাশী সম্পর্কে বলেন, তিনি ইবনি জুরায়জ ছাড়া অন্যদের হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাকবুল। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৫৭৯, ৩০/২১১ নং পৃষ্ঠা] ২. ইবনি আতা সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৭৪৭, ৩৪/৪৬২ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৯/৭. অধ্যায়ঃ যে মহিলা সাথে অভিভাবক ব্যতীত হজ্জ করে
২৮৯৮. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মহিলা যেন তিন দিন বা তাহার অধিক দূরত্বের পথ সাথে তাহার পিতা, ভাই, ছেলে, স্বামী অথবা কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত তিন দিন বা তাহার অধিক দূরত্বের পথ সফর না করে। {২৮৯৮}
তাহকীকঃ সহীহ।{২৮৯৮} মুসলিম ৮২৭, ১৩৪০, তিরমিজি ১১৬৯, আ১৭২৬, আহমাদ ২৭৬৩৭, ২৭৬৪২, ১১১২৩, ১১১৯৮, ২৭৯৫০, ১১২৩২, ১১২৮৪, ২৭৯৪৮, দারেমী ২৬৭৮, রাওদুন নাদীর ৬৬৮, সহীহ আবু দাউদ ১৫১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮৯৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে মহিলা আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের উপর ঈমান রাখে তাহার সাথে কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত তাহার জন্য এক দিনের পরিমাণ দূরত্বের পথ সফর করা বৈধ নয়। {২৮৯৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। {২৮৯৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১০৮৮, মুসলিম ১৩৩৯, তিরমিজি ১১৭০, আবু দাউদ ১৭২৩, আহমাদ ৭১৮১, ৭৩৬৬, ৭২৮৪, ৯১৮৫, ৯৩৪৭, ৯৪৪৮, ১০০২৯, ১০১৯৭, মুয়াত্তা মালিক ১৮৩৩, সহীহ আবু দাউদ ১৫১৬, ১৫১৭, ইরওয়া ৫৬৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯০০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক বেদুঈন নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলল, অমুক অমুক যুদ্ধে যোগদানের জন্য আমার নাম তালিকাভুক্ত হইয়াছে এবং আমার স্ত্রী হজ্জে যাওয়ার সংকল্প করেছে। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে তাহার সাথে হজ্জে যাও। {২৯০০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।২৯০০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮৬২, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৫, ৩২২১, ইরওয়া ৯৮১, মিশকাত ২৫৩৪, রাওদুন নাদীর ১০১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/৮. অধ্যায়ঃ মহিলাদের জিহাদ হলো হজ্জ
২৯০১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মহিলাদের জন্য কি জিহাদ বাধ্যতামূলক? তিনি বলেনঃ হাঁ, তাহাদের উপরও জিহাদ ফারদ, তবে তাতে অস্ত্রবাজি নাই। তা হচ্ছে হজ্জ ও উমরা। {২৯০১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।২৯০১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫২০, ২৮৭৫, নাসাঈ ২৬২৮, মিশকাত ২৫৩৪, ইরওয়া ৯৮১, রাওদুন নাদীর ১০১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯০২. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে কোন দুর্বল ব্যক্তির জিহাদ হলো হজ্জ। {২৯০২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{২৯০২} আহমাদ ২৬০৪৫, ২৬১৩৪, আত-তালীকুর রাগীব ২/১০৭, যইফাহ ৩৫১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৯/৯. অধ্যায়ঃ মৃতের পক্ষ থেকে হজ্জ করা
২৯০৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে বলিতে শুনলেন ঃ “শুবরুমার পক্ষ থেকে আমি তোমার দরবারে হাযির হয়েছি”। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেন ঃ শুবরুমা কে? সে বলল, আমার এক নিকটাত্মীয়। তিনি বলেনঃ তুমি কি কখনও হজ্জ করেছো? সে বলল, না। তিনি বলেনঃ তাহলে এই হজ্জ তোমার নিজের পক্ষ থেকে করো, অতঃপর শুবরুমার পক্ষ থেকে হজ্জ করো। {২৯০৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯০৩} আবু দাউদ ১৮১১, ইরওয়া ৯৯৪, মিশকাত ২৫২৯, রাওদুন নাদীর ৪১৮, সহীহ আবু দাউদ ১৫৮৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯০৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলল, আমি কি আমার পিতাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করিতে পারি? তিনি বলেনঃ হাঁ, তুমি তোমার পিতাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করো। তুমি যদি তাহার জন্য কল্যাণ ও নেকী বৃদ্ধি করিতে না পারো, তবে অন্তত তাহার জন্য অকল্যাণ ও পাপ বৃদ্ধি করো না। {২৯০৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি সহীহ।{২৯০৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯০৫. আবুল গাওস বিন হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] এর নিকট তাহার পিতাহার উপর ফরজ হওয়া হজ্জ সম্পর্কে ফতওয়া জিজ্ঞেস করেন, যিনি মারা গেছেন কিন্তু হজ্জ করিতে পারেননি। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি তোমার পিতাহার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করো। নবী [সাঃআঃ] আরও বলেনঃ মানতের সিয়ামও অনুরূপ অর্থাৎ তাহার পক্ষ থেকে তা আদায় করা যাবে। {২৯০৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল।২৯০৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. উসমান বিন আতা সম্পর্কে আবু বাকরা আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন, তিনি দুর্বল, তাহার ব্যাপারে হাদিস বানিয়ে বর্ণনার অভিযোগ রয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম বি হিব্বান বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করা সঠিক নয়। আবু নুআয়ম আল-আসবাহানী বলেন, তিনি তাহার পিতা থেকে মুনকাররূপে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিসের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় খুবই দুর্বল। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। আলী ইবনিল মাদানী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮৪৬, ১৯/৪৪১ নং পৃষ্ঠা] ২. আতা বিন মুসলিম সম্পর্কে আবু বাকরা আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস ভুলে যেতেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৪১, ২০/১০৬ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু উসমান বিন আতা ও আতা বিন মুসলিম এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬৮৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, ১ টি জাল, ৪২ টি খুবই দুর্বল, ১৪৫ টি দুর্বল, ১৮৭ টি হাসান, ৩১১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৫১৩, ১৮৫২, ১৮৫৪, ১৮৫৫, ২৭৬১, ৪৩৯৯, ৬২২৮, ৬৬৯৮, ৬৬৯৯, ৬৯৫৯, ৭৩১৫, মুসলিম ১১৪৯, ১১৫০, ১১৫১, ১৩৩৬, ১৬৩৯, তিরমিজি ৯২৮, ৯২৯, ৯৩০, ১৫৪৬, আবু দাউদ ১৮০৯, ১৮১০, দারেমী ১৮৩১, ১৮৩২, ১৮৩৩, ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৭, ২৩৩২, আহমাদ ১৮৯৩, ১৮৯৬, ২০০৬, ২১৪১, ২১৯০, ২৩৩২। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৯/১০. অধ্যায়ঃ জীবিত ব্যক্তি হজ্জ করিতে অপারগ হলে তাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করা
২৯০৬. আবু রাযীন আল-উকায়লী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা অতিশয় বৃদ্ধ। তিনি হজ্জ অথবা উমরা করিতে বা বাহনে উপবিষ্ট থাকতে অক্ষম। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি তোমার পিতাহার পক্ষ থেকে হজ্জ ও উমরা আদায় করো। {২৯০৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯০৬}তিরমিজি ৯৩০, নাসাঈ ২৬৩৭, আবু দাউদ ১৮১০, আহমাদ ১৫৭৫১, ১৫৭৫৭, ১৫৭৬৬, সহীহ আবু দাউদ ১৫৮৮, মিশকাত ২৫২৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯০৭. আবদুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
খাসআম গোত্রের এক মহিলা নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা অতিশয় বৃদ্ধ এবং অচল হয়ে পড়েছেন। বান্দাদের উপর আল্লাহর ফরযকৃত হজ্জ তাহার উপর ও ফরয হইয়াছে, কিন্তু তিনি তা আদায় করিতে সক্ষম নন। এখন আমি যদি তাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করি, তবে তা কি তাহার জন্য যথেষ্ট হইবে? রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেনঃ হাঁ। {২৯০৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি হাসান।{২৯০৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫১৩, ১৮৫৪, ১৮৫৫, ৪৩৯৯, ৬২২৮, মুসলিম ১৩৩৪, ১৩৩৫, তিরমিজি ২৯৮, নাসাঈ ২৬৩৪, ২৬৩৫, ২৬৪১, ২৬৪২, আহমাদ ১৮১৫, ১৮২৫, ১৮৯৩, ২২৬৬, ৩০৩৩, ৩২২৮, ৩৩৬৫, মুয়াত্তা মালিক ৮০৬, দারেমী ১৮৩১, ১৮৩২, ১৮৩৩, ১৮৩৫. তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল আযিয আদ-দারাওয়ারদী সম্পর্কে মুহাম্মাদ বোন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল আজালী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি যখন তাহার কিতাব হইতে কোন হাদিস বর্ণনা করেন তখন তা সহীহ কিন্তু যখন মানুষের কিতাব থেকে হাদিস বর্ণনা করিতেন তখন তিনি সন্দেহ করিতেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] আব্দুর রহমান ইবনিল হারিস বিন আয়্যাশ বিন আবু রাবীআহ আয-যুকারী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলেছেন, অন্যত্র বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আলী ইবনিল মাদানী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৮৭, ১৭/৩৭ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৯০৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমাকে হুসায়ন বিন আওফ [রাদি.] , অবহিত করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতাহার উপর হজ্জ ফরয হইয়াছে, কিন্তু তিনি হজ্জ করিতে সক্ষম নন-যদি না তাহাকে হাওদার সাথে বেঁধে দেয়া হয়। তিনি মুহুর্তকাল নীরব থাকার পর বলেনঃ তুমি তোমার পিতাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করো। {২৯০৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল।{২৯০৮} নাসাঈ ৫৩৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালেহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন কুরায়ব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার দুর্বলতা সহকারে তাহার হাদিস লিখা যায়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ, ইবনি হাজার আল-আসকালনী, ঈমাম দারাকুতনী ও ঈমাম যাহাবী তাহারা সকলে তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ বিন নুমায়র বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৭২, ২৬/৩৩৬ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯০৯. আল ফাদাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কুরবানীর দিন ভোরবেলা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সওয়ারীতে তাহাঁর পিছনে উপবিষ্ট ছিলেন। তখন খাষআম গোত্রের এক মহিলা তাহাঁর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল!বান্দাদের উপর আল্লাহর ধার্যকৃত হজ্জ আমার পিতাহার উপরও তাহার বৃদ্ধ বয়সে ফারদ হইয়াছে। কিন্তু তিনি বাহনে চড়তে সক্ষম নন। আমি কি তাহার পক্ষ থেকে হজ্জ করিব? তিনি বলেনঃ হাঁ। কেননা তোমার পিতাহার কোন ঋণ থাকলে তাও তোমাকেই পরিশোধ করিতে হতো। {২৯০৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯০৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫১৩, ১৮৫৪, ১৮৫৫, ৪৩৯৯, ৬২২৮, মুসলিম ১৩৩৪, ১৩৩৫, তিরমিজি ২৯৮, নাসাঈ ২৬৩৪, ২৬৩৫, ২৬৪১, ২৬৪২, আহমাদ ১৮১৫, ১৮২৫, ১৮৯৩, ২২৬৬, ৩০৩৩, ৩২২৮, ৩৩৬৫, মুওয়াত্তা মালিক ৮০৬, দারেমী ১৮৩১, ১৮৩২, ১৮৩৩, ১৮৩৫| ইরওয়া ৩৩২, সহীহ আবু দাঊদ ১৫৮৭| হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/১১. অধ্যায়ঃ শিশুদের হজ্জ
২৯১০. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হজ্জের সময় এক মহিলা তাহার শিশু সন্তানকে নবী [সাঃআঃ] এর সামনে উঁচিয়ে ধরে জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসূল! এই শিশুর জন্যও কি হজ্জ? তিনি বলেনঃ হাঁ, তবে সওয়াব হইবে তোমার। {২৯১০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। {২৯১০} তিরমিজি ২৯৪, হুজ্জাতুন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ৯৪, ইরওয়া ৯৮৫, সহীহ আবু দাউদ ১৫২৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯/১২. অধ্যায়ঃ হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত মহিলারা হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধলে
২৯১১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
শাজারা [যুল-হুলায়ফা] নামক স্থানে উমায়স কন্যা আসমা [রাদি.] এর নিফাস হলো। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বাকর [রাদি.] -কে নির্দেশ দিলেন যে, তিনি যেন তাহাকে গোসল করে ইহরাম বাঁধার নির্দেশ দেন। {২৯১১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯১১} মুসলিম ১২১৯, আবু দাউদ ১৭৪৩, দারেমী ১৮০৪, সহীহ আবু দাউদ ১৫৩০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯১২. আবু বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। তাহাঁর সাথে [তাহাঁর স্ত্রী] উমায়স-কন্যা আসমা [রাদি.] -ও ছিলেন। তিনি শাজারা নামক স্থানে মুহাম্মাদ বিন আবু বাকর-কে প্রসব করিলেন। আবু বাকর [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে তাহাঁকে এ সম্পর্কে অবহিত করেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন তাহাকে গোসল করার পর হজ্জের ইহরাম বাঁধার এবং লোকেদের অনুরূপ অনুষ্ঠানাদি পালনের নির্দেশ দেন, কিন্তু সে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিবে না। {২৯১২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯১২} নাসাঈ ২৬৬৪, সহীহ আবু দাউদ ১৫৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ বিন মাখলাদ আল-কাতওয়ানী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আলী আল জুরজানী বলেন, ইনশাআল্লাহ্ আমার আমার নিকট তাহার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হইবে না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৬৫২, ৮/১৬৩ নং পৃষ্ঠা] হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯১৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আসমা বিনতু উমাইস [রাদি.] [মুহাম্মাদ বিন আবু বাকরকে প্রসব করিলেন। তিনি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট বিধান জিজ্ঞেস করার জন্য লোক পাঠালেন। নবী [সাঃআঃ] তাহাকে নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন গোসল করে একটি কাপড় জড়িয়ে নেন ও ইহরাম বাঁধেন। {২৯১৩}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{২৯১৩} বুখারী ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭, মুসলীম ১২১৩, ১২১৫, ১২১৬/১-৫, ১২১৮/১-৩, ১২৬৩/১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯, তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬, নাসাঈ ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯, আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯, আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১, মুয়াত্তা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০, দারেমী ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯, হুজ্জাতুন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হজ্জের নিয়ম কানুন শিশু ও মহিলাদের হজ্জ করার শর্ত – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply