কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত
কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬, অধ্যায়ঃ (৩৬-৬৫)=৩০টি
৬/৩৬. অধ্যায়ঃ কবরস্থানে গেলে যা বলিতে হয়।
৬/৩৭. অধ্যায়ঃ কবরস্থানে বসা
৬/৩৮ অধ্যায়ঃ লাশ কবরে রাখা।
৬/৩৯. অধ্যায়ঃ লাহ্দ কবর উত্তম ।
৬/৪০. অধ্যায়ঃ শাক্ক কবর ।
৬/৪১ অধ্যায়ঃ কবর খনন করা ।
৬/৪২ অধ্যায়ঃ কবরে নিদর্শন স্থাপন করা ।
৬/৪৩. অধ্যায়ঃ কবরের উপর কিছু নির্মাণ করা, তা পাকা করা এবং তাতে কিছু লিপিবদ্ধ করা নিষেধ ।
৬/৪৪ অধ্যায়ঃ কবরে মাটি বিছিয়ে দেয়া
৬/৪৫ অধ্যায়ঃ কবর মাড়ানো এবং তাহাঁর উপর বসা নিষেধ ।
৬/৪৬. অধ্যায়ঃ জুতা খুলে কবরস্থান অতিক্রম করা
৬/৪৭. অধ্যায়ঃ কবর যিয়ারত করা।
৬/৪৮. অধ্যায়ঃ মুশরিকদের কবর যিয়ারত।
৬/৪৯. অধ্যায়ঃ মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারতের ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে।
৬/৫০. অধ্যায়ঃ জানাজায় মহিলাদের অংশগ্রহন।
৬/৫১. অধ্যায়ঃ বিলাপ করে কান্নাকাটি করা নিষেধ
৬/৫২. অধ্যায়ঃ শোকে মুখমন্ডল ক্ষতবিক্ষত করা এবং জামা ছেঁড়া নিষেধ
৬/৫৩. অধ্যায়ঃ মৃতের জন্য কান্নাকাটি করা
৬/৫৪. অধ্যায়ঃ মৃতের জন্য বিলাপ করলে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হয়
৬/৫৫. অধ্যায়ঃ বিপদে ধৈর্য ধারণ করা
৬/৫৬. অধ্যায়ঃ বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে সান্ত্বনা দেয়ার সওয়াব।
৬/৫৭. অধ্যায়ঃ সন্তানের মৃত্যুতে পিতা-মাতার সওয়াব।
৬/৫৮. অধ্যায়ঃ কোন মহিলার গর্ভপাত হলে।
৬/৫৯. অধ্যায়ঃ মৃতের বাড়িতে খাদ্য পাঠানো।
৬/৬০. অধ্যায়ঃ মৃতের বাড়িতে ভীড় জমানো নিষেধ এবং খাদ্য তৈরি করাও নিষেধ।
৬/৬১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সফররত অবস্থায় মারা গেলো ।
৬/৬২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রোগাক্রান্ত অবস্থায় মারা গেলো ।
৬/৬৩. অধ্যায়ঃ মৃত ব্যক্তির হাড় ভাঙ্গা নিষেধ।
৬/৬৪. অধ্যায়ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর [অন্তিম] রোগ।
৬/৬৫. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর ইনতিকাল ও তার কাফন-দাফন।
৬/৩৬. অধ্যায়ঃ কবরস্থানে গেলে যা বলিতে হয়।
১৫৪৬. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে হারিয়ে ফেললাম [বিছানায় পেলাম না]। তিনি জান্নাতুল বাকীতে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে বলেন, “হে কবরবাসী মুমিনগণ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তোমরা আমাদের জন্য অগ্রগামী এবং নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হব। হে আল্লাহ! তাহাদের পুরস্কার থেকে আমাদের বঞ্চিত করো না, এবং তাহাদের পরে আমাদের বিপদে ফেলো না।” {১৫৪৫}
তাহকিক আলবানিঃ এ বাক্যে দঈফ, ইরওয়াহ ৩/২৩৭, রাকা প্রথম অংশ সহিহ। {১৫৪৫} মুসলিম ৯৭৪, নাসায়ি ২০৩৭, ২০৩৯, আহমাদ ২৩৯০৪, ২৩৯৫৪, ২৪২৮০, ২৪৯৪৩, ২৫৩২৭ তাহকিক আলবানিঃ এ বাক্যে জইফ, ইরওয়াহ ৩/২৩৭, রাকা প্রথম অংশ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন মুসা সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু শিয়া মতাবলম্বী। আবু হাতীম ও মুতায়্যান তাকে সত্যবাদী বলেছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন কোন সমস্যা নেই। ইবনি হিব্বান বলেন তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ২. আসিম বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয় এবং তিনি দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তার দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করা যাবে না।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৫৪৭. বুরাইদাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে তারা যখন কবরস্থানে যেতেন, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের শিক্ষা দিতেনঃ
আর-বি
“হে কবরবাসী, মুমিন ও মুসলিমগণ! তোমাদেরকে সালাম। আমরাও ইনশাআল্লাহ তোমাদের সাথে মিলিত হবো। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের ও তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি”। {১৫৪৬}
{১৫৪৬} মুসলিম ৯৭৫, নাসায়ি ২০৪০, আহমাদ ২২৪৭৬, ২২৫৩০ ইরওয়াহ ৩/২৩৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৩৭. অধ্যায়ঃ কবরস্থানে বসা
১৫৪৮. বারা বিন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে একটি জানাজায় বের হলাম। তিনি কেবলামুখী হয়ে বসে পড়েন। {১৫৪৭}
{১৫৪৭} নাসায়ি ২০০১, আবু দাউদ ৩২১২, ৪৭৫৩, আহমাদ ১৮০৬৩, ১৮১৫১ আহকাম ১৫৬-১৫৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৪৯. বারা বিন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে একটি জানাজায় বের হলাম। আমরা কবরস্থানে পৌঁছলে তিনি বসে পড়েন [এবং আমরাও নীরবে অনড় হয়ে বসে পড়লাম], যেন আমাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। {১৫৪৮}
{১৫৪৮} নাসায়ি ২০০১, আবু দাউদ ৩২১২, ৪৭৫৩, আহমাদ ১৮০৬৩, ১৮১৫১ মিশকাত ১৭১৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৩৮ অধ্যায়ঃ লাশ কবরে রাখা।
১৫৫০. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
লাশ কবরে রাখার সময় নবী[সাঃআঃ] বলিতেনঃ
بِسْمِ اللهِ وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللهِ
“বিস্মিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ”। আবু খালিদ [রহঃ] বলেন, লাশকে তার কবরে রাখার সময় তিনি বলিতেনঃ
بِسْمِ اللهِ وَعَلَى سُنَّةِ رَسُولِ اللهِ
“বিস্মিল্লাহি ওয়া আলা সুন্নাতি রাসূলিল্লাহ”। হিশাম [রহঃ] তার হাদীসে বলেন,
بِسْمِ اللهِ وَفِي سَبِيلِ اللهِ وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللهِ
“বিস্মিল্লাহি ওয়া ফী সাবীলিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ”। {১৫৪৯}
{১৫৪৯} তিরমিজি ১০৪৬, আবু দাউদ ৩২১৩, আহমাদ ৪৭৯৭, ৪৯৭০, ৫২১১, ৫৩৪৭, ৬০৭৬ মিশকাত ১৭০৭, ইরওয়াহ ৭৪৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৫১. আবু রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [খাটিয়া থেকে] সাদ [রাঃআঃ] এর লাশ পায়ের দিক থেকে কবরে নামান এবং তার কবরে পানি ছিটিয়ে দেন। {১৫৫০}
{১৫৫০} মিশকাত ১৭১৯। তাহকিক আলবানিঃ অত্যন্ত জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবদুল মালিক বিন মুহাম্মাদ আর রকশী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু সানাদে অধিক ভুল করেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ২. মিনদাল বিন আলী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই, তবে অন্যত্রে বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি নুমায়র বলেন, তিনি কিছু হাদিসের মাঝে সংমিশ্রণ করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ৩. মুহাম্মাদ বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও তার মাঝে একাধিক মুনকার হাদিস পাওয়া যায়। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৫৫২. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর লাশ কিবলার দিক থেকে কবরে রাখার জন্য গ্রহণ করা হয়, তাহাঁর মুখমণ্ডল কিবলামুখী রাখা হয় এবং তাহাঁর পায়ের দিক থেকে রওযা মুবারকে নামানো হয়। {১৫৫১}
{১৫৫১} তাহকিক আলবানিঃ মুনকার। উক্ত হাদিসের রাবি আতিয়্যাহ বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ বলেন, তিনি লায়্যিন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার উপর নির্ভর করা যায় না। হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
১৫৫৩. সাঈদ ইবনিল মুসায়্যাব হইতে বর্ণিতঃ
সাঈদ ইবনিল মুসায়্যাব বলেন, আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর সাথে এক জানাজায় উপস্থিত ছিলাম। তিনি কবরে লাশ রাখার সময় বলেন,
بِسْمِ اللهِ وَفِي سَبِيلِ اللهِ وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللهِ
“বিসমিল্লাহি ওয়া ফী সাবীলিল্লাহা আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ”।
কবরের উপর মাটি সমান করে দেওয়ার সময় তিনি বলেন,
আর-বি “হে আল্লাহ! তাকে শয়তান ও কবরের আযাব থেকে রক্ষা করুন। হে আল্লাহ! তার পার্শ্বদেশ থেকে মাটি সরিয়ে দিন এবং তার রূহ উঠিয়ে নিন এবং সন্তুষ্টির সাথে তাকে সাক্ষাত দান করুন”।
আমি বললাম, হে ইবনি উমার! আপনি কি এ কথা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছেন, না আপনার নিজের থেকে বলছেন? তিনি বলেন, আমি সামর্থ্য রাখি, তবে আমি একথা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছি। {১৫৫২}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ, প্রথম দিকের কিছু অংশ সহিহ।{১৫৫২} তিরমিজি ১০৪৬, আবু দাউদ ৩২১৩, আহমাদ ৪৭৯৭, ৪৯৭০, ৫২১১, ৫৩৪৭, ৬০৭৬ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। প্রথম দিকের কিছু অংশ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. হাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, দুর্বল। ২. ইদরীস আল-আওদী সম্পর্কে ইমাম যাহাবী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৬/৩৯. অধ্যায়ঃ লাহ্দ কবর উত্তম ।
১৫৫৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাদের জন্য লাহ্দ এবং অন্যদের জন্য শ্বাক কবর। {১৫৫৩}
{১৫৫৩} তিরমিজি ১০৪৫ ;নাসায়ি ২০০৯; আবু দাউদ ৩২০৮ মিশকাত ১৭০১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৫৫. জারীর বিন আবদুল্লাহ্ আল-বাজালী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাদের জন্য লাহ্দ অন্যদের জন্য শ্বাক কবর।{১৫৫৪}
{১৫৫৪} তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৫৬. সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমার জন্য তোমরা লাহ্দ কবর তৈরি করো এবং নিদর্শনস্বরূপ সেখানে ইট পুঁতে দিও, যেমন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর বেলায় করা হয়েছিল।{১৫৫৫}
{১৫৫৫} মুসলিম ৯৬৬; নাসায়ি ২০০৭, ২০০৮; আহমাদ ১৪৯২, ১৬০৪ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৪০. অধ্যায়ঃ শাক্ক কবর ।
১৫৫৭. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] যখন ইন্তিকাল করেন তখন মদিনায় এক ব্যক্তি লাহ্দ কবর খনন করতো এবং অপর ব্যক্তি শাক্ক কবর খনন করতো। সাহাবীগণ বলেন, আমরা আমাদের প্রভুর দরবারে ইস্তিখারা করবো এবং তাহাদের উভয়ের কাছেই সংবাদ পাঠাবো। তাহাদের মধ্যে যে আগে আসবে [তাকে রাখবো] এবং অন্যজনকে বাদ দিবো। অতএব তাহাদের দুজনকেই ডেকে পাঠানো হল এবং লাহ্দ কবর খননকারী আগে পৌঁছে গেলো। অতএব সাহাবীগণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জন্য লাহ্দ কবর খনন করেন। {১৫৫৬}
{১৫৫৬} আহমাদ ১২০০৭ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৫৫৮. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন ইন্তিকাল করেন, তখন সাহাবীগণ তাঁকে লাহ্দ অথবা শাক্ক কবরে দাফন করার ব্যাপারে মতভেদ করেন, এমনকি তারা এ নিয়ে বাদানুবাদে লিপ্ত হন এবং তাহাদের কণ্ঠস্বর উঁচু হয়ে যায়। উমার [রাঃআঃ] বলেন, তোমরা জীবিত ও মৃত কোন অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উচ্চ কণ্ঠে বিতণ্ডা করো না অথবা অনুরূপ কিছু বলেছেন। তোমরা শাক্ক ও লাহ্দ খননকারী সকলের নিকট খবর পাঠাও। অতএব লাহ্দ কবর খননকারী [আগে] আসলো এবং সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জন্য লাহ্দ কবর খনন করলো, অতঃপর তাঁকে দাফন করা হলো। {১৫৫৭}
{১৫৫৭} মিশকাত দ্বিতীয় তাহকীক ১৭০০। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি উবায়দ বিন তুফায়ল আল-মুকরী সম্পর্কে হাদিস বিশারদগণ বলেন, তিনি অপরিচিত। ২. আব্দুর রহমান বিন আবু মুলায়কাহ আল কুরাশী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি খিরাশ তাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তার একাধিক দুর্বল হাদিস রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬/৪১ অধ্যায়ঃ কবর খনন করা ।
১৫৫৯. আল-আদরা আস-সুলামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি এক রাতে নবী [সাঃআঃ] কে পাহারা দিতে আসলাম। এক ব্যক্তি উচ্চকণ্ঠে কুরআন পড়ছিলো। নবী [সাঃআঃ] বেরিয়ে এলে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ঐ ব্যক্তি তো একজন রিয়াকার। রাবি বলেন, লোকটি মদিনায় মারা গেলে লোকজন তার দাফন-কাফনে শংকাগ্রস্ত হয়ে পড়লো। তারা তার লাশ বহন করে নিয়ে গেলো। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা তার প্রতি সদয় হও, আল্লাহ তার প্রতি সদয় হয়েছেন। কারণ সে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলকে ভালোবাসতো। রাবি বলেন, তার কবর খনন করলে নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তার কবর আরো প্রশস্ত করো। আল্লাহ তার প্রতি সদয় হয়েছেন। তাহাঁর কোন সাহাবী বলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আপনি নিশ্চয় তাহাঁর ব্যাপারে চিন্তান্বিত। তিনি বলেন, হাঁ, নিশ্চয় সে আল্লাহ্ ও তাহাঁর রসূলকে ভালোবাসতো। {১৫৫৮}
{১৫৫৮} তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদীনী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। ২. মুসা বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হুজ্জাহ নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা উচিত নয়। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। ৩. সাঈদ বিন আবু সাঈদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি অপরিচিত।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫৬০. হিশাম বিন আমির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা প্রশস্ত করে কবর খনন করো এবং সদয় হও। {১৫৫৯}
{১৫৫৯} তিরমিজি ১৭১৩; নাসায়ি ২০১১; আবু দাউদ ৩২১৫ মিশকাত ১৭০৩। ইরওয়াহ ৭৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ । হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৪২ অধ্যায়ঃ কবরে নিদর্শন স্থাপন করা ।
১৫৬১. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসমান বিন মাযঊন [রাঃআঃ] এর কবর একটি পাথর দিয়ে চিহ্নিত করে রাখেন। {১৫৬০}
{১৫৬০} উক্ত হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাকে সিকাহ বলেছেন। ২. কাসীর বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি আম্মার সিকাহ বললেও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার মাঝে দুর্বলতা আছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি তার মাঝে খারাফ কিছু দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে খারাফ কিছু নেই।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৬/৪৩. অধ্যায়ঃ কবরের উপর কিছু নির্মাণ করা, তা পাকা করা এবং তাতে কিছু লিপিবদ্ধ করা নিষেধ ।
১৫৬২. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কবর পাকা করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৫৬১}
{১৫৬১} মুসলিম ৯৭০; তিরমিজি ১০৫২, নাসায়ি ২০২৭, ২০২৮, ২০২৯; আবু দাউদ ৩২২৫, আহমাদ ১৩৭৩৫, ১৪১৫৫, ১৪২৩৭, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৬৩. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কবরের উপর কিছু লিখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৫৬২}
{১৫৬২} তিরমিজি ১০৫২; নাসায়ি ২০২৭; আবু দাউদ ৩২২৫, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৬৪. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] কবরের উপর কিছু নির্মাণ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৫৬৩}
{১৫৬৩} মুসলিম। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৪৪ অধ্যায়ঃ কবরে মাটি বিছিয়ে দেয়া
১৫৬৫. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়লেন, অতঃপর মৃতের কবরের নিকট এসে তার মাথার দিকে তিনবার মাটি ছড়িয়ে দিলেন। {১৫৬৪}
{১৫৬৪} ইরওয়াহ ৭৫১, মিশকাত ১৭২০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৪৫ অধ্যায়ঃ কবর মাড়ানো এবং তাহাঁর উপর বসা নিষেধ ।
১৫৬৬. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কবরের উপর তোমাদের কারো বসার চাইতে জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর বসা তার জন্য উত্তম। {১৫৬৫}
{১৫৬৫} মুসলিম ৯৭১; না২০৪৪; আবু দাউদ ৩২২৮,আহমাদ ৮০৪৬, ৮৮১১, ৯৪৩৯ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৬৭. উকবা বিন আমির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন মুসলমানের কবরের উপর দিয়ে আমার হেঁটে যাওয়া অপেক্ষা জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর দিয়ে অথবা তরবারির উপর দিয়ে আমার হেঁটে যাওয়া অথবা আমার জুতাজোড়া আমার পায়ের সাথে সেলাই করা আমার নিকট অধিক প্রিয়। কবরস্থানে পায়খানা করা এবং বাজারের মাঝে পায়খানা করার মাঝে আমি কোন পার্থক্য দেখি না। {১৫৬৬}
{১৫৬৬} তাহকিক আলবানিঃ সহিহ, ইরওয়াহ ৬৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৪৬. অধ্যায়ঃ জুতা খুলে কবরস্থান অতিক্রম করা
১৫৬৮. বাশীর ইবনিল খাসাসিয়াহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে পায়চারি করছিলাম। তিনি বলেন, হে ইবনিল খাসাসিয়া! তুমি আল্লাহর নিকট এর চাইতে বড় নিয়ামত কি আশা করো যে, তুমি তার রসূল [সাঃআঃ] এর সাথে সকালবেলা পায়চারি করছো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আল্লাহ্র নিকট এর চেয়ে বেশী কিছু আশা করি না। কেননা আল্লাহ্ আমাকে সব ধরনের কল্যাণ দান করিয়াছেন। অতঃপর তিনি মুসলমানদের কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, এসব লোক বিপুল কল্যাণ লাভ করেছে। অতঃপর তিনি মুশরিকদের কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, এসব লোক ইতোপূর্বে প্রচুর কল্যাণ লাভ করেছে। রাবি বলেন, তিনি এক ব্যক্তিকে জুতা পরিহিত অবস্থায় কবরস্থান অতিক্রম করিতে দেখে বলেন, হে জুতা পরিধানকারী! তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেলো।
১/১৫৬৮ [১]. আব্দুর রহমান বিন মাহদী বলেন, আবদুল্লাহ বিন উসমান এমন বলিতেন। হাদীসটি যাইয়েদ, এর রাবি সমূহ মজবুত। {১৫৬৭} তাহকিক আলবানিঃ হাসান।{১৫৬৭} নাসায়ি ২০৪৮; আবু দাউদ ৩২৩০; আহমাদ ২০২৬০ আহকাম ১৩৬-১৩৭। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬/৪৭. অধ্যায়ঃ কবর যিয়ারত করা।
১৫৬৯. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা কবর যিয়ারত করো। কেননা, তা তোমাদেরকে আখেরাত স্মরণ করিয়ে দেয়। {১৫৬৮}
{১৫৬৮} মুসলিম ৯৭৬ ;নাসায়ি ২০৩৪; আবু দাউদ ৩২৩৪; আহমাদ ৯৩৯৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৭০. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কবর যিয়ারতের অনুমতি দিয়েছেন। {১৫৬৯}
{১৫৬৯} আহকাম ১৮১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৭১. ইবনি মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করিতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর যিয়ারত করো। কেননা তা দুনিয়া বিমুখ বানায় এবং আখেরাত স্মরণ করিয়ে দেয়। {১৫৭০}
{১৫৭০} আহমাদ ৪৩০৭ মিশকাত ১৭৬৯, আহকামুল জানায়ীয। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আয়্যুব বিন হানী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি আদী বলেন, আমি তাকে চিনি না।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬/৪৮. অধ্যায়ঃ মুশরিকদের কবর যিয়ারত।
১৫৭২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ], হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তার মায়ের কবর যিয়ারত করেন। তিনি কান্নাকাটি করেন এবং তার সাথের লোকদেরও কাঁদান। অতঃপর তিনি বলেন, আমি আমার রবের নিকট তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দেননি। আমি আমার রবের নিকট তার কবর যিয়ারতের অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দেন। অতএব তোমরা কবর যিয়ারত করো। কেননা তা তোমাদের মৃত্যু স্মরণ করিয়ে দেয়। {১৫৭১}
{১৫৭১} মুসলিম ৯৭৬ ;নাসায়ি ২০৩৪; আবু দাউদ ৩২৩৪; আহমাদ ৯৩৯৫ ইরওয়াহ ৭৭২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৭৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক বেদুইন নবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখতেন এবং তিনি এই এই কাজ করিতেন। তিনি কোথায় আছেন? তিনি বলেন, জাহান্নামে। রাবি বলেন, এতে সে ব্যথিত হলো। সে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার পিতা কোথায় আছে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি যখন কোন মুশরিকের কবর অতিক্রম করো, তখন তাঁকে জাহান্নামের দুঃসংবাদ দিও। রাবি বলেন, সেই বেদুইন পরে ইসলাম গ্রহন করে এবং বলে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিশ্চয়ই আমাকে একটি কাজের দায়িত্ব দিয়েছেনঃ আমি কোন কাফেরের কবর অতিক্রম করলেই তাঁকে দোযখের দুঃসংবাদ দিয়েছি। {১৫৭২}
{১৫৭২} হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহিহা ১৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৪৯. অধ্যায়ঃ মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারতের ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে।
১৫৭৪. হাস্সান বিন সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘন ঘন কবর যিয়ারতকারিণীদের অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৫৭৩}
{১৫৭৩} আহমাদ ১৫২৩০ মিশকাত ১৭৮৭০, ইরওয়াহ ৩/২৩৩। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫৭৫. ইবনূ আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘন ঘন কবর যিয়ারতকারিণীদের অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৫৭৪}
{১৫৭৪} তিরমিজি ৩২০;নাসায়ি ২০৪৩;আবু দাউদ ৩২৩৬;আহমাদ ২০৩১,২৫৯৮,২৯৭৭, ৩১০৮ ইরওয়াহ ৭৬২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫৭৬. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘন ঘন কবর যিয়ারতকারিণীদের বদদোয়া করিয়াছেন। {১৫৭৫}
{১৫৭৫} তিরমিজি ১০৫৬;আহমাদ ৮৪৫৬ ইরওয়াহ ৭৬২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন তালিব সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় অজ্ঞাত।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬/৫০. অধ্যায়ঃ জানাজায় মহিলাদের অংশগ্রহন।
১৫৭৭. উম্মু আতিয়্যাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে জানাজায় অংশগ্রহন করিতে নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়নি। {১৫৭৬}
{১৫৭৬} সহীহুল বোখারি ৩১৩,১২৭৮,৫৩৪১; মুসলিম ৯৩৮; আবু দাউদ ৩১৬৭; আহমাদ ২৬৭৫৮ আহকাম ৬৯-৭০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৭৮. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বেরিয়ে এসে মহিলাদের বসা দেখিতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কেন বসে আছ? তারা বলিলেন, আমরা লাশের অপেক্ষা করছি। তিনি বলিলেন, তোমরা কি লাশের গোসল করাবে? তারা বলিলেন, না। তিনি বলিলেন, তোমরা কি লাশ বহন করিবে? তারা বলিলেন, না। তিনি বলিলেন, যারা লাশ কবরে রাখবে তাহাদের সাথে তোমরাও কি লাশ কবরে রাখবে? তারা বলিলেন, না। তিনি বলিলেন, তোমরা ফিরে যাও, তোমাদের জন্য গুনাহ ব্যতীত কোন সওয়াব নাই।
তাহকিক আলবানিঃ জইফ, যঈফাহ ২৭৪২।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬/৫১. অধ্যায়ঃ বিলাপ করে কান্নাকাটি করা নিষেধ
১৫৭৯. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] এর বরাতে বলেন,
وَلَا يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ
“তারা উত্তম কাজে তোমাদের অমান্য করিবে না।”[সূরা মুমতাহিনাঃ ১২] এর অর্থ বিলাপ করিবে না। {১৫৭৭}
তাহকিক আলবানিঃ হাসান, তালীক ইবনি মাজাহ।{১৫৭৭} তিরমিজি ৩৩০৭ তাহকিক আলবানিঃ হাসান, তালীক ইবনি মাজাহ। উক্ত হাদিসের রাবি শাহর বিন হাওসাব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান এবং আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ তাকে বর্জন করিয়াছেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫৮০. মুআবিয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
হিমস নামক স্থানে ভাষণ দানকালে তার ভাষণে উল্লেখ করেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিলাপ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৫৭৮}
{১৫৭৮} বোখারি উম্মে আতিয়্যাহ হইতে। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. আবদুল্লাহ বিন দিনার সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইমাম দারাকুতনী তাকে দুর্বল বলেছেন। ৩. আবু হারীয সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি অপরিচিত। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮১. আবু মালিক আল-আশআরী হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বিলাপকারিণী তওবা না করে মারা গেলে আল্লাহ তাআলা তাকে আলকাতরাযুক্ত কাপড় এবং লেলিহান শিখার বর্ম পরাবেন। {১৫৭৯}
{১৫৭৯} মুসলিম ৯৩৪; আহমাদ ২২৩৯৬, ২২৩৯৭, ২২৪০৫ তালীকুর রগীব ৪/১৭৭, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মৃতের জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি করা জাহিলী প্রথা। অতএব যে বিলাপকারিণী মৃত্যুর পূর্বে তওবা করেনি, কিয়ামাতের দিন তাকে আলকাতরাযুক্ত জামা পরিয়ে উঠানো হইবে, অতঃপর তাকে লেলিহান বর্ম পরানো হইবে। {১৫৮০}
{১৫৮০} তাহকিক আলবানিঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি উমার বিন রাশীদ আল-ইয়ামামী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আল আজালী বলেন, কোন সমস্যা নেই। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন লাশের সাথে বিলাপকারিণী থাকলে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার অনুসরণ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৫৮১}
{১৫৮১} আহমাদ ৫৬৩৫, তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আবু ইয়াহইয়া সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। বাযযার বলেন, আমি তার দোষ-ত্রুটি সম্পর্কে অজ্ঞাত।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬/৫২. অধ্যায়ঃ শোকে মুখমন্ডল ক্ষতবিক্ষত করা এবং জামা ছেঁড়া নিষেধ
১৫৮৪. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি [মৃত্যু শোকে] বুকের কাপড় ছিঁড়ে, মুখমন্ডলে আঘাত করে এবং জাহিলী যুগের ন্যায় চিৎকার করে কান্নাকাটি করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। {১৫৮২}
{১৫৮২} সহীহুল বোখারি ১২৯৪; মুসলিম ১০৩;তিরমিজি ৯৯৯; নাসায়ি ১৮৬০,১৮৬২,১৮৬৪; আহমাদ ৩৬৫০, ৪১০০, ৪২০৩, ৪৩৪৮, ৪৪১৬ ইরওয়াহ ৭৭০, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮৫. আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চেহারা ক্ষতবিক্ষতকারিণী, বক্ষদেশের জামা ছিন্নকারিণী, ধবংস ও মৃত্যু কামনাকারিণী ও শোকগাথার আয়োজনকারিণীকে অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৫৮৩}
{১৫৮৩} সহিহা ২১৪৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮৬. আব্দুর রহমান বিন ইয়াযীদ ও আবু বুরদা হইতে বর্ণিতঃ
তারা বলেন, আবু মূসা [আশআরী] [রাঃআঃ], যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর, তখন তার স্ত্রী উম্মু আবদুল্লাহ গলা ফাটিয়ে চিৎকার করিতে করিতে আসে। তিনি চেতনা ফিরে পেয়ে তাকে বলিলেন, তুমি কি জানো না, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যার প্রতি অসন্তুষ্ট, আমিও তার প্রতি অসন্তুষ্ট। তিনি তার নিকট বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি [মৃত্যুশোকে মাথা মুন্ডন করে, চিৎকার করে কান্নাকাটি করে এবং জামা ছিঁড়ে, আমি তার থেকে দায়মুক্ত। {১৫৮৪}
{১৫৮৪} মুসলিম ১০৪; নাসায়ি ১৮৬১, ১৮৬৩, ১৮৬৫, ১৮৬৬, ১৮৬৭;আবু দাউদ ৩১৩০;আহমাদ ১৯০৪১, ১৯০৫৩, ১৯১১৯, ১৯১২৯, ১৯১৯১, ইরওয়াহ ৭৭১, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৫৩. অধ্যায়ঃ মৃতের জন্য কান্নাকাটি করা
১৫৮৭. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] এক জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। উমার [রাঃআঃ] এক মহিলাকে কাঁদতে দেখে ধমকালেন। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ হে উমার! তাকে ছেড়ে দাও। কেননা অশ্রুবর্ষণকারী, দেহ-মন বেদনাক্লিষ্ট এবং প্রতিশ্রুত সময় নিকটবর্তী। {১৫৮৫}
১/১৫৮৭[১]. <আবু বকর বিন আবু শায়বাহ><আফফান><হাম্মাদ বিন সালামাহ><হিশাম বিন উরওয়াহ><ওয়াহাব বিন কায়সান><মুহাম্মাদ বিন আমর বিন আতা><সালামাহ বিন আযরাক [মাকবূল]> <আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ]>
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ।{১৫৮৫} যঈফাহ ৩৬০৩। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি সালামাহ বিন আযরাক সম্পর্কে ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫৮৮. উসামাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর এক কন্যার শিশু পুত্রের মৃত্যু আসন্ন হলে তিনি নবী [সাঃআঃ] এ তার নিকট আসার জন্য লোক মারফত বলে পাঠান। নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কন্যাকে বলে পাঠান যে, সবই আল্লাহর যা তিনি নেন তাও তাহাঁর এবং যা তিনি দান করেন তাও তাহাঁর। প্রতিটি বস্তুর জন্য তাহাঁর নিকট একটি নির্ধারিত কাল রয়েছে। অতএব তোমার ধৈর্যধারণ ও সওয়াবের আশা করা উচিত। নবী [সাঃআঃ] এর কন্যা কসম খেয়ে পুনরায় তাহাঁর কাছে লোক পাঠান। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উঠে রওয়ানা হন এবং আমিও তাহাঁর সাথে উঠে রওয়ানা হই। তাহাঁর সাথে আরো ছিলেন মুআয বিন জাবাল, উবাদা বিন সামিত ও উবাই বিন কাব [রাঃআঃ]। আমরা গিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলে শিশুটিকে যখন তারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে দিল, তখন তার রূহ তার বুকের মাঝে ধড়ফড় করছিল। রাবি বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেন, এ যেন পুরাতন মশক। রাবি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কেঁদে ফেললেন। উবাদা বিনস সামিত [রাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! একী? তিনি বলেনঃ মায়া-মমতা, যা আল্লাহ আদম-সন্তানদের মধ্যে রেখে দিয়েছেন। আল্লাহ তাহাঁর দয়ালু বান্দাদের অবশ্য দয়া করেন। {১৫৮৬}
{১৫৮৬} সহীহুল বোখারি ১২৮৪, ৫৬৫৫, ৬৬০২, ৭৩৭৭, ৭৪৪৮; মুসলিম ৯২৩; নাসায়ি ১৮৬৮, আবু দাউদ ৩১২৫; আহমাদ ২১২৬৯, ২১২৮২, ২১২৯২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮৯. আসমা বিনতে ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর শিশু পুত্র ইবরাহীম ইন্তিকাল করলে তিনি নীরবে কাঁদেন। তাঁকে সান্ত্বনা দানকারী আবু বাকর অথবা উমার [রাঃআঃ] বলেন, আপনি আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব রক্ষার ব্যপারে অধিক যোগ্য। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ চোখ অশ্রু বর্ষণ করছে, হৃদয় ব্যথিত হচ্ছে এবং আমরা এমন কিছু বলছিনা, যা আমাদের প্রভুকে অসন্তুষ্ট করে। যদি তা [মৃত্যু] অবধারিত না হতো, কিয়ামাতের দিন একত্র হওয়ার ওয়াদা না থাকত এবং পরবর্তীদের জন্য পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত না থাকতো, তাহলে হে ইবরাহীম! আমরা তোমার ব্যাপারে যে কষ্ট পেয়েছি, তার চেয়ে অধিক কষ্ট পেতাম। আমরা তোমার জন্য অবশ্যই দুঃখিত। {১৫৮৭}
{১৫৮৭} সহিহা ১৭৩২, তাহকিক আলবানিঃ হাসান। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫৯০ হামনাহ বিনতে জাহশ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তাকে বলা হলো যে, তার ভাইকে শহীদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহ তার প্রতি দয়াপরবশ হোন। “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন” [আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চিত তাহাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী]। তারা বললো, আপনার স্বামীকে শহীদ করা হয়েছে। তিনি বলেনঃ আফসোস! আমরা তার জন্য চিন্তিত। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ নিশ্চয় স্বামীর সাথে মহিলাদের এমন ভালবাসার সম্পর্ক রয়েছে যা অন্য কিছুতে নেই। {১৫৮৮}
{১৫৮৮} যঈফাহ ৩২৩৩। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসহাক বিন মুহাম্মাদ আল ফারাবি সম্পর্কে আস-সাজী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ২. আবদুল্লাহ বিন উমার সম্পর্কে ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৫৯১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার আবদুল আশহাল গোত্রের মহিলাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তারা উহুদ যুদ্ধে শহীদ তাহাদের আত্মীয়দের জন্য কান্নারত ছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কিন্তু হামযা! তার জন্য কান্নাকাটি করার কেউ নেই। ইতোমধ্যে কয়েকজন আনসার মহিলা এসে হামযা [রাঃআঃ] এর জন্য কান্নাকাটি করিতে লাগল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘুম থেকে জেগে উঠে বলিলেন, তাহাদের জন্য আফসোস! এতদিন পর কিসে তাহাদের কান্নার প্রেরণা যোগাল? তাহাদের নিকট গিয়ে বলো, তারা যেন ফিরে যায়। আজকের দিনের পর থেকে তারা যেন কোন শহীদের জন্য কান্নাকাটি না করে। {১৫৮৯}
তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ, তালীক ইবনি মাজাহ।{১৫৮৯} হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তালীক ইবনি মাজাহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৫৯২. ইবনি আবু আওফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [মৃতের জন্য] বিলাপ করিতে বা শোকগাঁথা গাইতে নিষেধ করিয়াছেন। {১৫৯০}
{১৫৯০} যঈফাহ ৪৭২৪। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবরাহীম আল হাজারী সম্পর্কে আল আযদী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু যুরআহ আর-রাযী ও মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬/৫৪. অধ্যায়ঃ মৃতের জন্য বিলাপ করলে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হয়
১৫৯৩. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মৃতের জন্য বিলাপ করে কান্নার কারণে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হয়। {১৫৯১}
{১৫৯১} সহীহুল বোখারি ১২৮৮, ১২৯০, ১২৯২, মুসলিম ৯২৭, তিরমিজি ১০০২,নাসায়ি ১৮৫৩, ১৮৫৮,আহমাদ ১৮১, ২৪৯, ২৬৬, ২৯০, ৩১৭, ৩৩৬, ৩৫৬, ৩৬৮, ৩৮৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৯৪. আবু মূসা আল-আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, জীবিতদের কান্নার কারণে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হয়, যখন তারা বলেঃ হে আমাদের বাহুদয়, হে আমাদের ভরণপোষণের সংস্থানকারী, হে আমাদের সাহায্যকারী, হে আমাদের পাহাড়সম পরমাত্মীয় ইত্যাদি। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তুমি কি এরূপ ছিলে? তুমি কি এরূপ ছিলে? আসীদ [রাঃআঃ] বলেন, আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ মহাপবিত্র। নিশ্চয় আল্লাহ বলেছেনঃ
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
”কোন বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করিবে না”[সূরা ফাতিরঃ ১৮]। রাবি বলেন, তোমার জন্য দুঃখ হয়। আমি তোমার নিকট আবু মূসা [রাঃআঃ] এর সূত্রে হাদীস বর্ণনা করছি এবং তিনি তা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তুমি কি মনে করো, আবু মূসা [রাঃআঃ] নবী [সাঃআঃ] এর উপর মিথ্যা আরোপ করছেন অথবা তুমি কি মনে করো, আমি আবু মূসা [রাঃআঃ] এর উপর মিথ্যারোপ করছি? {১৫৯২}
{১৫৯২} তিরমিজি ১০০৩ মিশকাত ১৭৪৬। তাহকিক আলবানিঃ হাসান।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫৯৫. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ইয়াহূদী নারী মারা গেল। নবী [সাঃআঃ] তার জন্য তাহাদের কান্নাকাটি শুনতে পেয়ে বলেন, তার পরিবার-পরিজন তার জন্য ক্রন্দন করছে, অথচ তাকে তার কবরে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। {১৫৯৩}
{১৫৯৩} সহীহুল বোখারি ১২৮৮, ১২৮৯, ৩৯৭৯; মুসলিম ৯২৮, ৯৩২, তিরমিজি ১০০৪, ১০০৬; নাসায়ি ১৮৫৫, ১৮৫৬, ১৮৫৭, ১৮৫৮; আহমাদ ২৩৫৯৫, ২৩৭৮১, ২৪২৩৭, ২৪৫৫৬, ২৫৬৪৮, ২৭৬৬৩; মুয়াত্তা মালেক ৫৫৩ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৫৫. অধ্যায়ঃ বিপদে ধৈর্য ধারণ করা
১৫৯৬. আনাস ইবন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বিপদের প্রথম আঘাতে ধৈর্য ধারণই হচ্ছে প্রকৃত ধৈর্য। {১৫৯৪}
{১৫৯৪} সহীহুল বোখারি ১২৮৩, ১৩০২, ৭১৫৪, মুসলিম ৯২৬,তিরমিজি ৯৮৭, ৯৮৮, নাসায়ি ১৮৬৯, আবু দাউদ ৩১২৪, আহমাদ ১২০৪৯ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৯৭. আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, মহান আল্লাহ্ বলেছেনঃ হে বনী আদম! যদি তুমি সওয়াবের আশায় প্রথম আঘাতেই ধৈর্য ধারণ করো তাহলে আমি তোমাকে সওয়াবের বিনিময় হিসাবে জান্নাত দান না করে সন্তুষ্ট হবো না। {১৫৯৫}
{১৫৯৫} মিশকাত ১৭৫৮। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. কাসিম সম্পর্কে আল আজালী বলেন, তার হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু তিনি সিকাহ নন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৫৯৮. আবু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] – কে বলিতে শুনেছেনঃ কোন মুসলমান যখন বিপদে পড়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহ্র নির্দেশিত
إِنَّا لِلهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” [আমরা আল্লাহ্র জন্য এবং নিশ্চিত আমরা তাহাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী]
পাঠ করে এবং বলে,
আর-বি -হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট বিপদে সওয়াবের প্রত্যাশা করি, তুমি আমাকে এর পুরস্কার দান করো এবং আমাকে এর বিনিময় দান করো,
তখন আল্লাহ্ তাকে পুরস্কৃত করেন এবং এর চেয়ে উত্তম বিনিময় দান করেন। রাবি [উম্মু সালামাহ] বলেন, আবু সালামাহ [রাঃআঃ] ইনতিকাল করলে তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যে হাদীস আমার কাছে বর্ণনা করেছিলেন তা স্মরণ করলাম। আমি বললাম
إِنَّا لِلهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”। হে আল্লাহ্! আমার বিপদের পুরস্কার আপনার কাছেই আশা করি। অতএব আমাকে তার বিনিময়ে পুরস্কৃত করুন। অতঃপর আমি যখন বলিতে চাইলাম, আমাকে এর চেয়ে উত্তম কিছু দান করুন, তখন আমি মনে মনে বললাম, আবু সালামহ [রাঃআঃ] অপেক্ষা আমাকে উত্তম কিছু দান করুন। তারপর আমি তা বললাম”। অতএব আল্লাহ আমাকে বিনিময়স্বরূপ মুহাম্মাদ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] দান করেন এবং আমার বিপদে তিনি আমাকে পুরস্কৃত করেন। {১৫৯৬}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৯৯. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর ও লোকেদের মাঝখানের দরজা খুলে অথবা পর্দা তুলে দেখেন যে, লোকজন আবু বকর [রাঃআঃ] – এর পিছনে নামাজ পড়ছে। তিনি তাহাদেরকে উক্ত অবস্থায় দেখে আল্লাহ্র প্রশংসা করেন এবং আশা করেন যে, আল্লাহ্ যেন আবু বাক্রকে তাহাদের প্রতিনিধি নির্ধারণ করেন, যেভাবে তিনি তাহাদেরকে দেখিতে পেয়েছেন। এরপর তিনি বলেনঃ হে লোকসকল! কোন লোকের উপর অথবা কোন মুমিন ব্যক্তির উপর কোন বিপদ আসলে সে যেন অপরের উপর আপতিত বিপদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে, বরং আমার উপর আপতিত বিপদের কোন কথা স্মরণ করে প্রশান্তি লাভ করে। কেননা আমার পরে আমার কোন উম্মাতের উপর, আমার বিপদের তুলনায় কঠিন বিপদ আপতিত হইবে না। {১৫৯৭}
{১৫৯৭} সহিহা ১১০৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন উবায়দাহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হুজ্জাহ নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা উচিত নয়। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬০০. ফাতিমাহ বিনতুল হুসায়ন হইতে বর্ণিতঃ
তার পিতা [হুসায়ন বিন আলী [রাঃআঃ], বলেন, নবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ কারো উপর বিপদ আসার পর তা স্মরণ করে
إِنَّا لِلهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”
পাঠ করলে, আল্লাহ তার বিপদের দিন থেকে শুরু করে বিপদমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে সওয়াব দান করিতে থাকেন। {১৫৯৮}
তাহকিক আলবানিঃ অত্যন্ত দঈফ।{১৫৯৮} আহমাদ ১৭৩৬ যঈফাহ ৪৫৫১। তাহকিক আলবানিঃ অত্যন্ত জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি হিশাম বিন যিয়াদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি গায়ির সিকাহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৬/৫৬. অধ্যায়ঃ বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে সান্ত্বনা দেয়ার সওয়াব।
১৬০১. আমর বিন হাযম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ যে ব্যক্তি তার মুমিন ভাইকে তার বিপদে সান্ত্বনা দিবে, আল্লাহ্ তায়ালা কিয়ামাতের দিন তাকে সম্মানের পোশাক পরাবেন। {১৫৯৯}
{১৫৯৯} ইরওয়াহ ৭৬৪, সহীহায় নতুন ছাপা ১৯৫। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ বিন মাখলাদ সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু শীয়া মতাবলম্বী। ইবনি আদী বলেন, তার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। ২. কায়স আবু উমারাহ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আল উকায়লী তাকে দুর্বল বলেছেন। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৬০২. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিপদগ্রস্ত লোককে সান্ত্বনা দেয় তার জন্য রয়েছে অনুরূপ সওয়াব। {১৬০০}
{১৬০০} তিরমিজি ১০৭৩ ইরওয়াহ ৭৬৫, মিশকাত ১৭৩৭। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আলী বিন আসিম সম্পর্কে ইয়াযীদ বিন হারুন বলেন, আমরা তাকে সর্বদা মিথ্যুক হিসেবে জানি। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল ও সংমিশ্রণ করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে মিথ্যুক বলেছেন। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বিশারদগনের নিকট নির্ভরযোগ্য নন। কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬/৫৭. অধ্যায়ঃ সন্তানের মৃত্যুতে পিতা-মাতার সওয়াব।
১৬০৩. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ কোন ব্যক্তির তিনটি সন্তান মারা গেলে সে জাহান্নাম পার হয়ে যাবে, তবে শপথ পূর্ণ না করার জন্য [শাস্তি পাবে]। {১৬০১}
{১৬০১} সহীহুল বোখারি ১০২, মুসলিম ২৬৩২, ২৬৩৪, তিরমিজি ১০৬০ নাসায়ি ১৮৭৫, ১৮৭৬, আহমাদ ৭২২৪, ৭৬৬৪, ৯৭৭০, ৯৮৫৩, ১০৫৪০, মুয়াত্তা মালেক ৫৫৪ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬০৪. উতবাহ বিন আবদ আস-সুলামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] – কে বলিতে শুনিয়াছিঃ কোন মুসলিম ব্যক্তির তিনটি নাবালেগ সন্তান মারা গেলে, সে জান্নাতের আটটি দরজার যেটি দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করিতে পারবে। {১৬০২}
{১৬০২} তালীকুর রগীব ৩/৮৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৬০৫. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ কোন মুসলিম পিতা-মাতার তিনটি নাবালেগ সন্তান মারা গেলে, আল্লাহ্ তার বিশেষ অনুগ্রহে তাদরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। {১৬০৩}
{১৬০৩} সহীহুল বোখারি ১২৪৮, ১৩৮১; তিরমিজি ১০০৩; নাসায়ি ১৮৭২; ১৮৭৩; আহমাদ ১২১২৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬০৬. আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তিনটি নাবালেগ সন্তান আগাম পাঠায় [মারা যায়], তার জন্য তারা হইবে জাহান্নামের মজবুত ঢালস্বরূপ। তখন আবু যার [রাঃআঃ] বলেন, আমি দুটি সন্তান আগাম পাঠিয়েছি। নবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ দুটি হলেও। সায়্যিদুল কুররা উবাই কাব [রাঃআঃ] বলেন, আমি একটি সন্তান আগাম পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, একটি হলেও। {১৬০৪}
{১৬০৪} তিরমিজি ১০৬১; আহমাদ ৪০৬৬ মিশকাত ১৭৫৫, তালীকুর রগীব ৩/৬৩। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু মুহাম্মাদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি আওওয়াম বিন হাওশাব থেকে এককভাবে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬/৫৮. অধ্যায়ঃ কোন মহিলার গর্ভপাত হলে।
১৬০৭. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার নিকট গর্ভপাতজনিত সন্তান, যা আগে পাঠানো হয়, দুনিয়ায় রেখে যাওয়া অশ্বারোহী সন্তান অপেক্ষা অধিক পছন্দনীয়। {১৬০৫}
{১৬০৫} যঈফাহ ৪৩০৭। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ বিন মাখলাদ সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু শীয়া মতাবলম্বী। ইবনি আদী বলেন, তার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। ২. ইয়াযীদ বিন আবদুল মালিক আন-নাওফালী সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম বোখারি তাকে খুবই দুর্বল বলেছেন। কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬০৮. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গর্ভপাত হওয়া সন্তানের রব তার পিতা-মাতাকে যখন জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন তখন সে তার প্রভুর সাথে বিতর্ক করিবে। তাকে বলা হইবে, ওহে প্রভুর সাথে বিতর্ককারী গর্ভপাত হওয়া সন্তান! তোমার পিতা-মাতাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। অতএব সে তাহাদেরকে নিজের নাভিরজ্জু দ্বারা টানতে টানতে শেষে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। {১৬০৬}
{১৬০৬} তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি, মানদাল সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. হাসান ইবনিল হাকাম আন-নাখঈ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় প্রচুর ভুল ও সন্দেহ করেন। ৩. আসমা বিনতু আবিস বিন রাবিআহ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে অজ্ঞাত। কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬০৯. মুযান বিন জাবাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! গর্ভপাত হওয়া সন্তানের মাতা তাতে সওয়াব আশা করলে ঐ সন্তান তার নাভিরজ্জু দ্বারা তাকে টেনে জান্নাতে নিয়ে যাবে। {১৬০৭}
{১৬০৭} আহমাদ ২১৫৮৫ মিশকাত ১৭৫৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন উবায়দুল্লাহ বিন মুসলিম আল হাদরামী সম্পর্কে ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন,তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ নন তবে তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। এ হাদিসের ৯৯ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে আবু দাউদে ১ টি, ইবনি মাজাহ ৪ টি, আহমাদ ২ টি, সহিহ ইবনি হিব্বান ২ টি ও বাকীগুলো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৫৯. অধ্যায়ঃ মৃতের বাড়িতে খাদ্য পাঠানো।
১৬১০. আবদুল্লাহ্ বিন জাফার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
জাফর [রাঃআঃ] এর শহীদ হওয়ার সংবাদ এসে পৌছলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা জাফরের পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরি করো। কেননা তাহাদের উপর এমন বিপদ অথবা বিষয় এসেছে যা তাহাদের ব্যস্ত রেখেছে। {১৬০৮}
{১৬০৮} তিরমিজি ৯৯৮; আহমাদ ৩১৩২ মিশকাত ১৭৩৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৬১১. আসমা বিনত উমাইস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
জাফর [রাঃআঃ] শহীদ হওয়ার সংবাদ পৌঁছার পর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের পরিবারের নিকট এসে বলেন, জাফরের পরিবার তাহাদের মৃতের কারণে ব্যস্ত রয়েছে। অতএব তোমরা তাহাদের জন্য খাদ্য তৈরী করো। আবদুল্লাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, এটা সুন্নাত হিসেবে পরিগণিত হয়। তবে তা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হলে বর্জন করা হয়। {১৬০৯}
{১৬০৯} আহমাদ ২৬৫৪৬ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইবনি মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। ২. উম্মু ঈসা আল জাযযার সম্পর্কে হাদিস বিশারদগণ বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬/৬০. অধ্যায়ঃ মৃতের বাড়িতে ভীড় জমানো নিষেধ এবং খাদ্য তৈরি করাও নিষেধ।
১৬১২. জারীর বিন আবদুল্লাহ আল-বাজালী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
মৃতের বাড়িতে ভীড় জমানো ও খাদ্য প্রস্তুত করে পাঠানোকে আমরা বিলাপের অন্তর্ভূক্ত মনে করতাম। {১৬১০}
{১৬১০} তাখরীজুল ঈমান ৯৫/১০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৬১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সফররত অবস্থায় মারা গেলো ।
১৬১৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সফররত অবস্থায় মৃত্যু হলো শহীদী মৃত্যু। {১৬১১}
{১৬১১} মিশকাত ১৫৯৪, যহীফাহ ৪২৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি জামীল ইবনিল হাসান সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি অপরিচিত। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই। ২. আবুল মুনযীর হুযায়ল ইবনিল হাকাম সম্পর্কে ইমাম বোখারি ও ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক মুনকার করেন।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬১৪. আবদুল্লাহ বিন আম্র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
মদিনায় জন্মগ্রহণকারী এক ব্যাক্তি মদিনায় মারা যায়। নবী [সাঃআঃ] তার জানাজার নামাজ পড়েন, অতঃপর বলেন, আহ্! এ ব্যাক্তি যদি অন্যত্র মারা যেতো! উপস্থিত লোকেদের একজন বললো, হে আল্লাহর রসূল! তা কেন? তিনি বলেনঃ কোন ব্যাক্তি তার জন্মভূমি ব্যতীত অন্যত্র মারা গেলে তার মৃত্যুর স্থান থেকে জন্মস্থান পর্যন্ত দূরত্বের পরিমাপ করে তার ততখানি স্থান তার জন্য জান্নাতে নির্ধারিত করা হয়। {১৬১২}
{১৬১২} নাসায়ি ১৮৩২ মিশকাত ১৫৯৩। তাহকিক আলবানিঃ হাসান।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬/৬২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রোগাক্রান্ত অবস্থায় মারা গেলো ।
১৬১৫. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন যে ব্যক্তি রোগাক্রান্ত অবস্থায় মারা যায়, সে শাহাদাত মৃত্যু লাভ করে। কবরের বিপর্যয় হইতে তাকে রক্ষা করা হয় এবং সকাল-সন্ধ্যা তার জন্য জান্নাত থেকে রিযিক সরবরাহ করা হয়। {১৬১৩}
{১৬১৩} মিশকাত ১৫৯৫, যঈফাহ ৪৬৬১। তাহকিক আলবানিঃ অত্যন্ত জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবরাহীম বিন মুহাম্মাদ বিন আবু আতা সম্পর্কে ইমাম শাফিঈ বলেন, তিনি সিকাহ। মালিক বিন আনাস বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি মিথ্যুক। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন বরং তিনি যা বর্ণনা করিয়াছেন তার সবগুলোতেই মিথ্যা ঢুকিয়েছেন। হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৬/৬৩. অধ্যায়ঃ মৃত ব্যক্তির হাড় ভাঙ্গা নিষেধ।
১৬১৬. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মৃত ব্যাক্তির হাড় ভাঙ্গা, তা তার জীবিত অবস্থায় ভাঙ্গার সমতুল্য। {১৬১৪}
{১৬১৪} আবু দাউদ ৩২০৭, ২৩৭৮৭, ২৪১৬৫, ২৪২১৮, ২৪৮২৮, ২৫১১৭, ২৫৭৪৩ ইরওয়াহ ৭৬৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬১৭. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মৃত ব্যাক্তির হাড় ভাঙ্গা, জীবিত ব্যাক্তির হাড় ভাঙ্গার মতই মারাত্মক গুনাহের কাজ। {১৬১৫}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ। গুনাহের কথা ব্যতীত সহিহ সূত্রে বর্ণিত আছে।{১৬১৫} হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৩/২১৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ, গুনাহের কথা ব্যতীত সহিহ সূত্রে বর্ণিত আছে। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন যিয়াদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি কে? তা অজ্ঞাত। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৬/৬৪. অধ্যায়ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর [অন্তিম] রোগ।
১৬১৮.য়দুল্লাহ বিন আবদুল্লাহ হইতে বর্ণিতঃ
আমি আয়িশাহ্ [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আম্মা! আমকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর [অন্তিম] রোগ সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বলেন, তিনি রোগাক্রান্ত হলে আমরা অনুভব করলাম যে, তিনি কিশমিশ ভক্ষণকারীর ন্যায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন। তখনও তিনি তার স্ত্রীদের কাছে পালাক্রমে যাতায়াত করেতেন। তার রোগ বেড়ে গেলে তিনি তাহাদের নিকট আয়িশার ঘরে অবস্থান করার অনুমিত চাইলেন এবং তারা যেন পালাক্রমে তার নিকট আসেন। আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুব্যাক্তির উপর ভর করে তার পদদয় হেচড়াতে হেচড়াতে আমার ঘরে আসেন। তাহাদের দুজনের একজন ছিলেন আব্বাস [রাঃআঃ]। আমি [উবাইদুল্লাহ] এ হাদীস ইব্ন আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন, তুমি কি জানো অপর ব্যাক্তি কে, যার নাম আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] উল্লেখ করেননি? তিনি হলেন আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ]। {১৬১৬}
{১৬১৬} সহীহুল বোখারি ১৯৮, ৬৬৪, ৬৬৫, ৬৭৯, ৬৮২, ৬৮৩, ৬৮৭, ৭১২, ৭১৩, ৭১৬, ২৫৮৮, ৩০৯৯, ৩৩৮৪, ৪৪৪২, ৫৭১৪, ৭৩০৩; মুসলিম ৪১৮;তিরমিজি ৩৬৭২;নাসায়ি ৮৩৩, ৮৩৪; আবু দাউদ ২১৩৭; আহমাদ ২৩৫৪১, ২৫৩৪১, ২৫৩৮৬, ২৫৬০৬, মুয়াত্তা মালেক ৪১৪, দারেমী ৮২, ১৪৫৭ তাহকিক আলবানিঃ কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬১৯ . আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] নিন্মোক্ত বাক্যে আশ্রয় প্রার্থনা করিতেনঃ হে মানুষের প্রভু! আপনি বিপদ দূর করুন এবং রোগমুক্তি দান করুন। আপনি ব্যতীত অপর কারো রোগ মুক্তি দানের ক্ষমতা নেই। আপনি এমন নিরাময় দান করুন যার পর আর কোন রোগ থাকিবে না।” অতঃপর নবী [সাঃআঃ] এর অন্তিম রোগ আরো বেড়ে গেলে আমি উক্ত দুআ পড়ে তারঁ হাত ধরে তার শরীরে মলে দিতাম। তিনি তাহাঁর হাত আমার হাত থেকে মুক্ত করে নিলেন এবং বললেনঃ “হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে আমার পরম বন্ধুর সাথে মিলিত করুন।” আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর শেষ কথা যা শুনেছি তা এই। {১৬১৭}
{১৬১৭} সহীহুল বোখারি ৪৪৩৬, ৫৬৭৪, ৫৬৭৫, মুসলিম ২১৯১, ২৪৪৪, তিরমিজি ৩৪৯৬ আহমাদ ২৩৬৫৫, ২৩৬৬২, ২৩৭১৪, ২৪২৫৩, ২৪৩১৭, ২৪৩৭০, ২৪৪১৪, ২৪৪২৫, ২৪৪৩৮, ২৪৪৭৪, ২৫২১২, ২৫৭১১, ২৫৮৩৭, ২৫৮৬৮, মুয়াত্তা মালেক ৫৬২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।দিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২০. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যখন কোন নবী রোগাক্রান্ত হন, তখন তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের মধ্য থেকে যে কোনটি গ্রহন করার এখতিয়ার দেয়া হয়। আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, তিনি যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত হন তখন তার থেকে উচ্চ শব্দ বের হতো। আমি তাঁকে বলিতে শুনলামঃ “নবী [সাঃআঃ]গণ, সত্যনিষ্ঠগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মপরায়ণ, যাদের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহ করিয়াছেন তাহাদের সঙ্গে “[সূরা নিসা ঃ ৬৯]। তখন আমি বুঝতে পারলাম, তাকেও এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। {১৬১৮}
{১৬১৮} সহীহুল বোখারি ৪৪৩৬, ৫৬৭৪, ৫৬৭৫, মুসলিম ২১৯১, ২৪৪৪, তিরমিজি ৩৪৯৬ আহমাদ ২৩৬৫৬, ২৩৬৬২, ২৩৭১৪, ২৪২৫৩, ২৪৩১৭, ২৪৩৭০, ২৪৪১৪, ২৪৪২৫, ২৪৪৩৮, ২৪৪৭৪, ২৫২১২, ২৫৭১১, ২৫৮৩৭, ২৫৮৬৮, মুয়াত্তা মালেক ৫৬২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ । কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রীগণ সকলে একত্র হলেন, তাহাদের একজন ও বাদ ছিলেন না। এরপর ফাতিমাহ [রাঃআঃ] আসলেন। আর তার হাঁটাচলার ধরন ছিল যেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর অনুরূপ। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ খোশ আমদেদ হে আমার প্রিয় কন্যা। তিনি তাকে নিজের বাম পাশে বসান, অতঃপর তার সাথে চুপেচুপে কিছু কথা বলেন। এতে ফাতিমাহ [রাঃআঃ] কাঁদেন। তিনি পুনরায় তার সাথে গোপনে কিছু কথা বলেন। এতে তিনি হাসেন। পরে আমি ফাতিমাহ [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কেন কাঁদলে? তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর গোপন তথ্য প্রকাশ করবো না। আমি বললাম, দুশ্চিন্তার পরে আজকের মত খুশি আমি আর কখনো দেখিনি। তার কাঁদার সময় আমি তাকে বললাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি আমাদের বাদ দিয়ে তোমার সঙ্গে বিশেষ কোন আলাপ করিয়াছেন, তারপর তুমি কাঁদলে? আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সঙ্গে যে বিষয়ে আলাপ করেছিলেন, আমি পুনরায় তা তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর গোপন তথ্য ফাস করবো নাহ। তিনি {রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]} ইনতিকাল করার পর আমি ফাতিমাহ [রাঃআঃ]-কে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেন, জিবরাঈল [আঃ] প্রতি বছর আমাকে একবার কুরআন পড়ে শুনাতেন। এ বছর তিনি আমাকে দুবার পড়ে শুনিয়েছেন। মনে হয় আমার মৃত্যু নিকটবর্তী হয়েছে। তুমিই আমার পরিবারের মধ্যে সবার আগে আমার সঙ্গে মিলিত হইবে। আমি তোমার জন্য কত উত্তম পূর্বসূরি। এ কথায় আমি কাঁদলাম। এরপর তিনি আমাকে গোপনে বলিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তুমি মুমিন নারীদের বা এ উম্মাতের নেত্রী হইবে? এতে আমি হেসেছি। {১৬১৯}
{১৬১৯} সহীহুল বোখারি ৩৬২৪, মুসলিম ২৪৫০, তিরমিজি ৩৮৭২, আহমাদ ২৩৯৬২, ২৫৫০১, ২৫৮৭৪ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২২. মাসরূক হইতে বর্ণিতঃ
আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর চাইতে আর কারো অত কঠিন মৃত্যুযন্ত্রণা দেখিনি। {১৬২০}
{১৬২০} সহীহুল বোখারি ৫৬৪৬, মুসলিম ২৫৭০, তিরমিজি ২৩৯৭ তাহকিক আলবানিঃ সহীহ্।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২৩. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মুমূর্ষু অবস্থায় দেখলাম যে, তিনি তার নিকটস্থ পানির পাত্রে তার হাত ডুবিয়ে পানি নিয়ে তা তার মুখমণ্ডলে মলছেন, অতঃপর বলেন, “হে আল্লাহ! আপনি আমাকে মৃত্যুযন্ত্রণায় সাহায্য করুন। {১৬২১}
{১৬২১} তিরমিজি ৯৭৮, আহমাদ ২৩৮৩৫, ২৩৮৯৫, ২৩৯৬০, ২৪৬৫০ মিশকাত ১৫৬৪। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন সারজিন সম্পর্কে হাদিস বিশারদগণ বলেন, তিনি অপরিচিত।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬২৪. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি সোমবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে শেষবারের মত দেখেছি, যখন তিনি [জানালার] পর্দা সরালেন। আমি তার মুখমণ্ডলের দিকে তাকালাম, যেন কুরআনের একটি পৃষ্ঠা। তখন লোকজন আবু বকর [রাঃআঃ] এর পিছনে সালারত ছিল। আবু বকর [রাঃআঃ] তার স্থান ত্যাগ করিতে চাইলে, তিনি তাকে ইশারায় স্বস্থানে স্থির থাকতে বলেন এবং পর্দা নামিয়ে দেন। এ দিনের শেষ ভাগে তিনি ইন্তেকাল করেন। {১৬২২}
{১৬২২} মুসলিম ৪১৯, নাসায়ি ১৮৩১ খতাসার শামায়িল ৩২২, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২৫. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মৃত্যু ব্যাধিগ্রস্ত অবস্থায় বলেছিলেনঃ “নামাজ এবং তোমাদের অধীনস্থ দাস-দাসী”। বারবার একথা বলিতে বলিতে শেষে তার জবান মুবারক জড়িয়ে যায়। {১৬২৩}
{১৬২৩} ইরওয়াহ ৭/২৩৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২৬. আসওয়াদ হইতে বর্ণিতঃ
লোকেরা আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] এর নিকট উল্লেখ করে যে, আলী [রাঃআঃ] ছিলেন [মহানবী [সাঃআঃ] এর] ওসী [প্রতিদিন]। আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, মহানবী [সাঃআঃ] কখন তাকে ওসী নিয়োগ করিলেন? অবশ্যই আমি তাকে আমার বুকের সাথে বা কোলে হেলান দিয়ে রেখেছিলাম। তিনি একটি পাত্র চাইলেন। তিনি আমার কোলেই ঢলে পড়ে ইন্তেকাল করিলেন। আমি তা বুঝতেই পারলাম না। তবে তিনি আবার কখন ওসিয়াত করিলেন। {১৬২৪}
{১৬২৪} সহীহুল বোখারি ২৭৪১, ৪৪৫৯, মুসলিম ১৬৩৬, নাসায়ি ৩৩, ১৮৩০, ৩৬২৪, আহমাদ ২৩৫১৯ মুখতাসার শামায়িল ৩২৩, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬/৬৫. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর ইনতিকাল ও তার কাফন-দাফন।
১৬২৭. আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেন তখন আবু বকর [রাঃআঃ] আওয়ালী নামক স্থানে তার স্ত্রী বিনতে খারিজার ঘরে ছিলেন। লোকজন বলিতে লাগলো, নবী [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেননি, বরং ওহী নাযিলের সময় তার যে অবস্থা হতো, এটা তাই। ইতোমধ্যে আবু বকর [রাঃআঃ] এসে তার মুখমণ্ডল থেকে কাপড় সরিয়ে তার দুচোখের মাঝখানে চুমু দিয়ে বলেন, আপনি দ্বিতীয়বার মারা যাবেন না। আপনি আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত। আল্লাহ্র শপথ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অবশ্যই ইনতিকাল করিয়াছেন। উমার [রাঃআঃ] তখন মসজিদের এক কোণ থেকে বলছিলেন, আল্লাহ্র শপথ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেন নি। আর তিনি ব্যাপক ভাবে মুনাফিকদের শক্তি খর্ব না করা পর্যন্ত ইনতিকাল করবেন না। তখন আবু বকর [রাঃআঃ] মিম্বারে উঠে দাড়িয়ে বলেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহ ইবাদাত করতো সে যেন মনে রাখে, আল্লাহ চিরঞ্জীব, তিনি কখন মরবেন না। আর যে ব্যাক্তি মুহাম্মাদের ইবাদাত করতো সে জেনে রাখুক, মুহাম্মাদ তো ইনতিকাল করিয়াছেন। “মুহাম্মাদ একজন রসূল মাত্র, তার পূর্বে অনেক রসূল গত হয়েছে। সুতরাং যদি সে মারা যায় অথবা সে শহীদ হয়, তবে কি তোমরা পৃষ্ঠা প্রদর্শন করিবে? কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহ্র ক্ষতি করিতে পারবে না, বরং আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদের পুরষ্কৃত করবেন” [সূরা আল ইমরানঃ১৪৪]। উমার [রাঃআঃ] বলেন, আমার মনে হলো, আমি যেন এ আয়াত আজই পড়ছি। {১৬২৫}
{১৬২৫} সহীহুল বোখারি ১২৪২, ৩৬৭০, ৪৪৫৪, ৪৪৫৭, ৫৭১২, নাসায়ি ১৮৩৯, ১৮৪০, ১৮৪১, আহমাদ ২৪৩৪২, ২৭৮০৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন আবু বকর সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি খিরাশ তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তার হইতে বর্ণিত একাধিক দুর্বল হাদিস রয়েছে।কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
সাহাবায়ে কিরাম রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কবর খননে সিদ্ধান্ত নিলে, তারা আবু উবাইদাহ ইবনিল জাররাহ [রাঃআঃ] এর নিকট খবর পাঠান। তিনি মাক্কাহবাসীদের কবর খননের ন্যায় কবর খনন করিতেন। তারা আবু তালহা [রাঃআঃ] এর নিকট ও খবর পাঠান। তিনি মদীনাবাসীদের জন্যে লাহাদ আকৃতির কবর খনন করিতেন। তারা তাহাদের উভয়ের নিকট দুজন লোক পাঠান। তারা বলেন, হে আল্লাহ! আপনার রসূলের জন্যে আপনি পছন্দ করুন। তারা আবু তালহা [রাঃআঃ] কে পেয়ে গেলেন এবং তাকে নিয়ে আসা হলো, কিন্তু আবু উবাইদাহ [রাঃআঃ] কে পাওয়া গেলো না। অতএব আবু তালহা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জন্যে লাহদ কবর খনন করেন। রাবি বলেন, মঙ্গলবার তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাফনের কাজ সম্পন্ন করলে তাকে তার ঘরে খাটের উপর রাখা হয়। এরপর লোকজন দলে দলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট প্রবেশ করেন এবং তার জন্য দুআ করেন। পুরুষদের পালা শেষ হলে মহিলারা প্রবেশ করেন। তাহাদের পালা শেষ হলে বালকরা প্রবেশ করে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জানাজায় কেউ ইমামতি করেননি। তাহাঁর করব কোথায় খনন করা হইবে, এ নিয়ে একদল বলেন, তাকে তার মসজিদে দাফন করা হইবে। অপরদল বলেন, তাকে তার সহাবীদের সাথে [একই গোরস্থানে] দাফন করা হইবে। আবু বকর [রাঃআঃ] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ যে স্থানে নবী [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেন, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। রাবি বলেন, যে বিছানায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেন, তারা তা সরিয়ে নেন এবং তাহাঁর জন্য সেখানে কবর খনন করেন। অতঃপর তাকে বুধবার মধ্য রাতে দাফন করা হয়। আলী বিন আবু তালিব, ফাদল বিন আব্বাস, তার ভাই কুসাম এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুক্তাদাস শুক্রান [রাঃআঃ] তাহাঁর কবরে নামেন। আবু লায়লা আওস বিন খাওলী [রাঃআঃ] আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] কে বলেন, আল্লাহর শপথ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ব্যাপারে আমাদেরও অংশ রয়েছে। আলী [রাঃআঃ] তাকে বলেন তুমি ও নামো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুক্তদাস শুক্রান রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পরিহিত চাঁদরটি সাথে নিয়েছিলেন। তিনি তাও কবরে দাফন করেন এবং বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আপনার পরে তা আর কেউ কখনো পরবে না। অতএব তা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে দাফন করা হয়। {১৬২৬}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ, কিন্তু শাক্ক ও লাহাদ কবরের ঘটনা প্রমাণিত; এমনিভাবে যেখানে নবী [সাঃআঃ]-গণ ইনতিকাল করেন সেখানেই তাকে দাফন করা হয় এটা প্রমাণিত।{১৬২৬} আহমাদ ৪০ তাহকিক আলবানিঃ জইফ, কিন্তু শাক্ক ও লাহাদ কবরের ঘটনা প্রমাণিত; এমনিভাবে যেখানে নাবী [আঃ]–গণ ইনতিকাল করেন সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয় এটা প্রমাণিত। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ। ২. হুসায়ন বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাকে মুনকার বলেছেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, আমি তার হাদিস বর্জন করেছে। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল তার থেকে হাদিস গ্রহন করলেও তা দলীলযোগ্য নায়। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৬২৯. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মৃত্যু যন্ত্রণা তীব্রভাবে অনুভব করেন, তখন ফাতিমাহ [রাঃআঃ] বলেন, হায় আমার আব্বার কত কষ্ট। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আজকের দিনের পরে তোমার আব্বার আর কোন কষ্ট থাকিবে নাহ। তোমার আব্বার নিকট এমন জিনিস উপস্থিত হয়েছে, যা কিয়ামত পর্যন্ত কাউকে ছাড়বে না। {১৬২৭}
{১৬২৭} সহীহুল বোখারি ৪৪৬২, আহমাদ ১৬০২৬, সহিহা ১৬৩৮, মুখতাসার শামাযিল ৩৩৪, বোখারি শেষ বাক্য বাদ দিয়ে। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৬৩০. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
ফাতিমাহ [রাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, হে আনাস! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর মাটি ঢেলে দিতে তোমাদের অন্তরাত্মা কিভাবে সায় দিতে পারলো।
৪/১৬৩০[১]. আনাস [রাঃআঃ], রসূলুল্লাহ [রাঃআঃ] ইনতিকাল করলে ফাতিমাহ [রাঃআঃ] বলেন, হায় আমার আব্বা! জিবরাঈল [আঃ] তার থেকে পৃথক হয়ে গেলেন। হায় আমার আব্বা! তিনি তার রবের নিকটবর্তী হলেন। হায় আব্বা! জান্নাতুল ফিরদাওস তাহাঁর ঠিকানা। হায় আব্বা! তিনি তার রবের ডাকে সাড়া দিলেন। হাম্মাদ [রহঃ] বলেন, আমি সাবিত [রহঃ] কে এ হাদীস বর্ণনা কালে দেখলাম যে, তিনি কাঁদছেন, এমনকি তার হাড়ের জোড়াগুলোও কাঁপছে। {১৬২৮}{১৬২৮} সহীহুল বোখারি ৪৪৬২, নাসায়ি ১৮৪৪, আহমাদ ১২০২৬, ১২৬১৯, দারেমী ৮৭ ।কবর খননের নিয়মব হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১৬৩১. সাবিত আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেদিন মদিনায় উপনীত হন, তখন মাদীনাহ্র প্রতিটি বস্তু জ্যোতির্ময় হয়ে উঠে। আর যেদিইন তিনি ইন্তেকাল করেন, সেদিন মাদীনাহ্র প্রতিটি বস্তু অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। {১৬২৯ }
{১৬২৯} তিরমিজি ৩৬১৮, আহমাদ ১২৮৯৯, দারেমী ৮৮ তাহকিক আলবানিঃ মিশকাত ৫৯৬২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৩২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যমানায় আমরা আমাদের স্ত্রীদের সাথে খোশালাপ করিতে এবং মেলামেশা করিতে এজন্য ভয় পেতাম যে, না জানি আমাদের সম্পর্কে কুরআনের আয়াত নাযিল হয়ে যায়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ইন্তিকালের পর থেকে আমরা তাহাদের সাথে খোলামেলাভাবে কথাবার্তা বলিতে শুরু করি { ১৬৩০}
{১৬৩০} সহীহুল বোখারি ৫১৮৭, আহমাদ ৫২৬২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৩৩. উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে থাকা আবস্থায় আমাদের দৃষ্টি ছিলো একই দিকে [তার দিকে]। তাহাঁর ইন্তিকালের পর আমরা [আস্থির হয়ে] এদিক সেদিক দৃষ্টি দিতে লাগলাম [এখন কী করবো] {১৬৩১}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ, হাসান বাসরীর আনআনাহ বর্ণনা করার কারণে।{১৬৩১} তাহকিক আলবানিঃ জইফ, হাসান বাসরীর আনআনাহ বর্ণনা করার কারণে। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল ওয়াহহাব বিন আতা আল-ইজলী সম্পর্কে সালিহ জাযারাহ তাকে সিকাহ বললেও ইমাম বোখারি বলেন, হাদিস বিশারদগণ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি গায়র সিকাহ।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬৩৪. নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ বিন আবু উমাইয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যমানায় লোকেদের অবস্থা এরূ ছিলো যে, সলাতী যখন সলাতে দাঁড়াতেন, তখন তাহাদের কারো দৃষ্টি তার পদদয়ের স্থান অতিক্রম করতো না। রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] ইনতিকাল করার পর মানুষের অবস্থা এরূপ হয় যে, যখন তাহাদের কেউ সলাতে দাঁড়াতেন তখন তার দৃষ্টি সাজদাহর স্থান অতিক্রম করতো না। অতঃপর আবু বাকর [রাঃআঃ] ইনতিকাল করেন এবং উমার [রাঃআঃ] খলীফা হন। তখন লোকেদের অবস্থা এরূপ হলো যে, তাহাদের কেউ যখন সলাতে দাঁড়াতেন তখন তার দৃষ্টি কিবলার দিক অতিক্রম করতো না। উসমান বিন আফফান [রাঃআঃ] খলীফা হওয়ার পর থেকে বিশৃংখলার সূত্রপাত হয়। অতএব লোকজন [নামাজরত অবস্থায়] ডানে-বামে তাকাতে থাকে। {১৬৩২}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ। উক্ত হাদীসের রাবি মূসা বিন আবদুল্লাহ বিন আবু উমায়্যাহ আল-মাখযূমী সম্পর্কে হাদীস বিশারদগণ বলেন, তিনি অপরিচিত।{১৬৩২} হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তালীকুর রগীব ১/১৯২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন আবদুল্লাহ বিন আবু উমায়্যাহ আল-মাখযুমী সম্পর্কে হাদিস বিশারদগণ বলেন, তিনি অপরিচিত।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬৩৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর ইনতিকালের পর আবু বকর [রাঃআঃ] উমার [রাঃআঃ]-কে বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেমন উম্মু আয়মানের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করিতে যেতেন, চলুন আমরাও তেমন তার সাথে দেখা করিতে যাই। তিনি বলেন, আমরা তার নিকট গিয়ে উপস্থিত হলে তিনি কাঁদতে থাকেন। তারা দুজন তাকে বলেন, আপনি কাঁদছেন কেন! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জন আল্লাহর নিকট যা আছে তা তাহাঁর জন্য কল্যাণকর। কিন্তু আমি এজন্য কাঁদছি যে, আসমান থেকে ওহী নাযিল হওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। রাবি বলেন, তার এ কথা তাহাদেরকে উভয়কে কাঁদতে উদ্বুদ্ধ করলো এবং তারাও তার সাখে কাঁদতে লাগলেন। {১৬৩৩}
{১৬৩৩} মুসলিম ২৪৫৪, তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৩৬। আওস বিন আওস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, এদিনই শিংগায় ফুঁ দেয়া হইবে এবং এদিনই কিয়ামাত সংঘটিত হইবে। অতএব তোমরা এদিন আমার প্রতি অধিক সংখ্যায় দুরূদ ও সালাম পেশ করো। কেননা তোমাদের দুরূদ আমার সামনে পেশ করা হয়। এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের দুরূদ আপনার নিকট কিভাবে পেশ করা হইবে, অথচ আপনি তো মাটির সাথে মিশে যাবেন? তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা নবী [সাঃআঃ]গণের দেহ ভক্ষণ যমীনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। {১৬৩৪}
{১৬৩৪} নাসায়ি ১৩৭৪, আবু দাউদ ১০৪৭, ১৫৩১, আহমাদ ১৫৭২৯, দারেমী ১৫৭২ তাহকিক আলবানিঃ সহীহ্। কবর খননের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৩৭. আবু-দারদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা জুমুআহ্র দিন আমার উপর অধিক দুরূদ পাঠ করিবে। কেননা তা আমার নিকট পৌঁছানো হয়, ফেরেশতাগন তা পৌঁছে দেন। যে ব্যক্তিই আমার উপর দুরূদ পাঠ করে তা থেকে সে বিরত না হওয়া পর্যন্ত তা আমার নিকট পৌঁছতে থাকে। রাবি বলেন, আমি বললাম, [আপনার] ইনতিকালের পরেও? তিনি বলেন, হাঁ, ইনতিকালের পরেও। আল্লাহ তাআলা নবী [সাঃআঃ]গণের দেহ ভক্ষণ যমীনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। আল্লাহ্র নবী [সাঃআঃ] জীবিত এবং তাঁকে রিযিক দেয়া হয়। {১৬৩৫}
{১৬৩৫} মিশকাত ১৩৬৬, ইরওয়াহ ১/৩৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ, কিন্তু সহীহের প্রভাবিত।কবর খননের নিয়ম , দোয়া, দাফন, যিয়ারত – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply