শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল
শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (১৮৬-১৯৩)=৮টি
৫/১৮৬. অধ্যায়ঃ বাড়িতে নফল নামাজ পড়া।
৫/১৮৭. অধ্যায়ঃ চাশতের নামাজ।
৫/১৮৮. অধ্যায়ঃ ইস্তিখারার নামাজ
৫/১৮৯. অধ্যায়ঃ সলাতুল হাজাত [প্রয়োজন পূরণের নামাজ]।
৫/১৯০. অধ্যায়ঃ সলাতুত তাসবীহ
৫/১৯১. অধ্যায়ঃ শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত সম্পর্কে
৫/১৯২. অধ্যায়ঃ কৃতজ্ঞতাসূচক নামাজ ও সাজদাহ
৫/১৯৩. অধ্যায়ঃ নামাজ গুনাহের কাফফারা স্বরূপ।
৫/১৮৬. অধ্যায়ঃ বাড়িতে নফল নামাজ পড়া।
১৩৭৫. আসিম বিন আমর [তিনি সত্যবাদী কিন্তু শীয়া মতাবলম্বী] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইরাকের একটি প্রতিনিধি দল উমার [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাতের জন্য রওয়ানা হলেন। তারা তার নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাহাদের বলেন, তোমরা কারা? তারা বললো, তারা ইরাকীদের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, তোমরা অনুমতি নিয়ে এসেছো কী? তারা বললো, হাঁ। রাবি বলেন, তারা তাকে কোন ব্যক্তি তার ঘরে [নফল] নামাজ পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। উমার [রাঃআঃ] বলেন, আমি রসূলু্ল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, কোন ব্যক্তির ঘরে নামাজ পড়া হলো নূর [আলো]। অতএব তোমরা তোমাদের ঘরকে আলোকিত করো।
১/১৩৭৫ [১]. উমার [রাঃআঃ], নবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। {১৩৭৫}
তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ।{১৩৭৫} আহমাদ ৮৭ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীকুর রগীব ১৫৯।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৭৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কেউ নামাজ পড়লে তার কিছু অংশ সে যেন তার ঘরে পড়ে। কারন তার নামাজের উসীলায় আল্লাহ তার ঘরে প্রাচুর্য দান করেন। {১৩৭৬}
{১৩৭৬} আহমাদ ১০৭২৮, ১১১৭৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১৩৯২।শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৭৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা তোমাদের ঘরগুলো কবরে পরিণত করো না [ঘরেও কিছু সুন্নাত বা নফল নামাজ পড়ো]। {১৩৭৭}
{১৩৭৭} বোখারি ৪৩২, ১১৮৭; মুসলিম ৭৭১-২, তিরমিজি ৪৫১, নাসায়ি ১৫৯৮, আবু দাউদ ১৪৪৮, আহমাদ ৪৪৯৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৪৩৫, সহিহ আবু দাউদ, ৯৫৮, সহিহা ২৪১৮। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৭৮. আবদুল্লাহ বিন সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোনটি উত্তম- আমার ঘরের নামাজ অথবা মাসজিদের নামাজ? তিনি বলেন, তুমি কি আমার ঘর দেখো না, তা মাসজিদের কত নিকটে? তা সত্ত্বেও আমার মাসজিদে নামাজ পড়া অপেক্ষা আমার ঘরে নামাজ পড়া আমার নিকট অধিক প্রিয়। কিন্তু ফরয নামাজ হলে [তাe মাসজিদে পড়বে]। {১৩৭৮}
{১৩৭৮} আহমাদ ১৮৫২৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৯০, সহিহ তারগিব ৪৩৯, সহিহ আবু দাউদ ২০৫, মুখতামার শামায়িল ২৫১।শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/১৮৭. অধ্যায়ঃ চাশতের নামাজ।
১৩৭৯. আবদুল্লাহ ইবনিল হারিস হইতে বর্ণিতঃ
উসমান বিন আফ্ফান [রাঃআঃ]-এর আমলে বহু লোকের উপস্থিতিতে আমি চাশতের নামাজ [সলাতুদ দুহা] সম্পর্কে জিজ্ঞস করলাম। কিন্তু মায়মূনা [রাঃআঃ] ব্যতীত আর কেউ বলিতে পারেননি যে, নবী [সাঃআঃ] এ নামাজ আদায় করিয়াছেন কি না। তিনি আমাকে অবহিত করেন যে, নবী [সাঃআঃ] এই নামাজ আট রাকআত পড়েছেন। {১৩৭৯}
{১৩৭৯} বোখারি ২৮০, ৩৫৭, ১১০৪, ১১৭৬, ৩১৭১, ৪২৯২, ৬১৫৮; মুসলিম ৩৩১-৫, তিরমিজি ৪৭৪, ২৭৩৪; নাসায়ি ২২৫, ৪১৫; আবু দাউদ ১২৯০-৯১, আহমাদ ২৬৩৪৮, ২৬৩৫৬, ২৬৩৬৪, ২৬৮৩৩, ২৬৮৪০, ২৬৮৪২; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৫৮-৫৯, দারিমি ১৪৫২-৫৩, ইবনি মাজাহ ৪৬৫, ৬১৪, ১৩২৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৬৪, মুখতাযার শামায়িল ২৪৬, সহিহ আবু দাউদ ১১৬৮। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ সম্পর্কে আহমাদ বিন সালিহ তাকে সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে কিন্তু দলীল হিসেবে গ্রহনযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, কোন সমস্যা নেই। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৮০. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি ঃ যে ব্যক্তি বার রাকআত চাশতের নামাজ পড়লো, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি স্বর্ণের ইমারত নির্মাণ করেন। {১৩৮০}
{১৩৮০} তিরমিজি ৪৭৩ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৬৫৮, তিরমিজি ৪৭৩, মিশকাত ১৩১৬, জইফ তারগিব ৪০৩, ৪০৫ সকল বর্ণনায়, রওয়ুন লাসীর ১১১, মিশকাত ১৩১৬। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। ২. মুসা বিন [ফুলান বিন] আনাস সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৮১. মুআযাহ আল-আদাবীয়্যাহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাঃআঃ], কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী [সাঃআঃ] কি চাশতের নামাজ আদায় করতো? তিনি বলেন, হাঁ, চার রাকআত, আবার আল্লাহর মর্জি হলে তার বেশিও পড়তেন। {১৩৮১}
{১৩৮১} মুসলিম ৭১১-২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫৬২, মুখতাসার শাময়িল ২৪৪। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৮২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি চাশতের দু রাকআত নামাজের হেফাজত করলো, তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হলো, তা সমুদ্রের ফেনারাশির ন্যায় অধিক হলেও। {১৩৮২}
{১৩৮২} তিরমিজি ৪৭৬, আহমাদ ৯৪২৩, ১০০৭০, ১০১০২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫৪৪৯ জইফ, মিশকাত ১৩১৮, যঈফা ৪০২ জইফ, মিশকাত ১৩১৮, তালীকুর রগীব ২৩৫। উক্ত হাদিসের রাবি নাহহাস বিন কাহম সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি আতা এর নিকট থেকে মুনকারভাবে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইমাম নাসাঈ তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫/১৮৮. অধ্যায়ঃ ইস্তিখারার নামাজ
১৩৮৩. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ইসতিখারার নিয়ম শিক্ষা দিতেন, যেমন [গুরুত্ব সহকারে] তিনি আমাদের কুরআনের সূরাহ শিক্ষা দিতেন। তিনি বলিতেন ঃ তোমাদের কেউ যখন কোন কাজ করার ইচ্ছা করে, তখন সে যেন দু রাকআত নফল নামাজ পড়ে, অতঃপর বলে, “হে আল্লাহ! আমি তোমার ইল্ম অনুযায়ী তোমার নিকট কল্যাণের দিকে পরিচালিত করার প্রার্থনা করি এবং তোমার শক্তি থেকে শক্তি চাই, আমি তোমার মহান অনুগ্রহ প্রত্যাশা করি। কেননা তুমি ক্ষমতা রাখো এবং আমি ক্ষমতা রাখি না। তুমিই জানো, আমি জানি না, তুমি অদৃশ্য বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত। হে আল্লাহ! যদি তুমি জানো, আমার এ কাজ [উদ্দেশ্য উল্লেখ করিতে হইবে] আমার দীন-দুনিয়া এবং পরিণাম হিসেবে কল্যাণকর [অথবা বর্তমান ও ভবিষ্যতে আমার জন্য মংগলময়] মনে করো তবে আমাকে সে কাজের ক্ষমতা দাও এবং তা আমার জন্য সহজ করো এবং এতে আমায় বরকত দান করো। আর তুমি যদি মনে করো যে, [প্রথম বারের মত বলবে] আমার ধর্ম, আমার জীবন ও পরিণাম হিসেবে এটা অকল্যাণকর, তবে আমার থেকে তা দূরে রাখো এবং তা থেকে আমাকেও দূরে রাখো, আর আমার জন্য যা কল্যাণকর, সে কাজে আমাকে সন্তুষ্ট রাখো”। {১৩৮৩}
{১৩৮৩} বোখারি ১১৬৬, ৬৩৮২, ৭৩৯০; তিরমিজি ৪৮০, নাসায়ি ৩২৫৩, আবু দাউদ ১৫৩৮, আহমাদ ১৪২৯৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৬৮২, সহিহ আবু দাউদ, ১৩৭৬-১৩৭৯। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/১৮৯. অধ্যায়ঃ সলাতুল হাজাত [প্রয়োজন পূরণের নামাজ]।
১৩৮৪. আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা আল-আসলামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট বের হয়ে এসে বলেন, আল্লাহ্র নিকট অথবা তাহাঁর কোন মাখলুকের নিকট কারো কোন প্রয়োজন থাকলে, সে যেন উযু করে দু রাকআত নামাজ পড়ে, অতঃপর বলে ঃ
“পরম সহনশীল ও দয়ালু আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। মহান আরশের রব আল্লাহ অতীব পবিত্র। সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহ্র জন্যই যাবতীয় প্রশংসা। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট অবধারিত রহমাত, তোমার অফুরন্ত ক্ষমা, সকল সদাচারের ভান্ডার এবং প্রতিটি পাপাচার থেকে নিরাপত্তা প্রার্থনা করি। আমি তোমার নিকট আরো প্রার্থনা করি যে, তুমি আমার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দাও, আমার দুশ্চিন্তা দূর করে দাও, তোমার সন্তুষ্টিমূলক প্রতিটি প্রয়োজন পূরণ করে দাও।”
অতঃপর সে দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য যা চাওয়ার আছে তা প্রার্থনা করিবে। কারণ তা আল্লাহ্ই নির্ধারিত করেন। {১৩৮৪}
তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{১৩৮৪} তিরমিজি ৪৭৯ তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩২৭, তালীকুর রগীব ২৪২-২৪৩। উক্ত হাদিসের রাবি আবু আসিম আল আব্বাদানী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, আমি তাকে চিনি না। ২. ফাইদ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। বরং তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিসে মিথ্যা রয়েছে। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৩৮৫. উসমান বিন হুনায়ফ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক অন্ধ লোক নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, আপনি আল্লাহ্র কাছে আমার জন্য দুআ করুন। তিনি যেন আমাকে রোগমুক্তি দান করেন। তিনি বলেন, তুমি চাইলে আমি তোমার জন্য দুআ করিতে বিলম্ব করবো, আর তা হইবে কল্যাণকর। আর তুমি চাইলে আমি দুআ করবো। সে বললো, তাহাঁর নিকট দুআ করুন। তিনি তাকে উত্তমরূপে উযু করার পর দু রাকআত নামাজ পড়ে এ দুআ করিতে বলেন, “হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি, রহমতের নবী মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর উসীলা দিয়ে, আমি তোমার প্রতি নিবিষ্ট হলাম। হে মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]! আমার চাহিদা পুরণের জন্য আমি আপনার উসীলা দিয়ে আমার রবের প্রতি মনোযোগী হলাম, যাতে আমার প্রয়োজন মিটে। হে আল্লাহ! আমার জন্য তাহাঁর সুপারিশ কবূল করো”। {১৩৮৫}
{১৩৮৫} তিরমিজি ৩৫৭৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীক ইবনি খুযাইসাহ ১২০৯। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/১৯০. অধ্যায়ঃ সলাতুত তাসবীহ
১৩৮৬. আবু রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বললেনঃ হে চাচাজান! আমি কি আপনার অবাধ্য হইতে বিরত থাকব না, আমি কি আপনার উপকার করবো না, আমি কি আপনার সাথে আত্নীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবো না? তিনি বলেন, হাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বলেন, তাহলে আপনি চার রাকআত নামাজ পড়ুন। আপনি প্রতি রাকআতে সূরাহ ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরাও পড়ুন। আপনি কিরাআত পাঠ শেষ করে রুকূ করার আগে পনের বার বলুন ঃ
سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্লাহ পুতঃ পবিত্র, সকল প্রসংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, আল্লাহ মহান”।
আতঃপর রুকূতে গিয়ে ঐ দুআ দশবার পড়ুন, অতঃপর রুকূ থেকে আপনার মাথা তুলে ঐ দুআ দশবার পড়ুন, অতঃপর সাজদাহয় গিয়ে ঐ দুআ দশবার পড়ুন, অতঃপর আপনার মাথা তুলে দশবার ঐ দুআ পড়ুন, পুনরায় সাজদাহয় গিয়ে তা দশবার পড়ুন, পুনরায় সাজদাহ থেকে আপনার মাথা তুলে উঠে দাঁড়ানোর আগে তা দশবার পড়ুন। এভাবে প্রতি রাকআতে তা পঁচাত্তর বার এবং চার রাকআতে তিনশত বার হইবে। আপনার পাপরাশি বালুর স্তুপের সমপরিমান হলেও আল্লাহ তা মাফ করবেন। আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, হে আল্লাহর রসূল! প্রতিদিন এ নামাজ পড়ার সামর্থ কার আছে? তিনি বলেন, তাহলে প্রতি জুমুআর দিন তা পড়ুন। তাতেও সমর্থ না হলে প্রতি মাসে একবার পড়ুন। অবশেষে তিনি বলেন, তাহলে অন্তত বছরে একবার তা পড়ুন। {১৩৮৬}
{১৩৮৬} তিরমিজি ৪৮২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১২২৮, ১৩২৯, সহিহ তারগিব ৬৭৮। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৮৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আব্বাস বিন আবদুল মুত্তালিব [রাঃআঃ]-কে বললেনঃ হে আব্বাস! হে প্রিয় চাচাজান! আমি কি আপনাকে কিছু দান করবো না, আমি কি আপনার সাথে আত্নীয় সম্পর্ক বজায় রাখবো না, আমি কি আপনার অবাধ্য হইতে বিরত থাকবো না, আমি কি আপনাকে এমন কলেমা বলে দিব না, যা পড়লে আল্লাহ আপনার আগের-পরের, নতুন-পুরান, ভুলক্রমে, স্বেচ্ছায়, ছোট-বড়, গোপন-প্রকাশ্য সব ধরনের গুনাহ মাফ করে দিবেন? সেই দশটি কলেমা হলো ঃ আপনি চার রাকআত নামাজ পড়ুন এবং প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরাহ পড়ুন। প্রথম রাকআতের কিরাআত পাঠ শেষ হলে দাঁড়ানো অবস্থায় আপনি পনের বার বলুন ঃ
سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্লাহ পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আল্লাহ মহান”।
অতঃপর আপনি রুকূ করুন এবং রুকূ অবস্থায় তা দশবার বলুন, অতঃপর রুকূ থেকে আপনার মাথা তুলে তা দশবার বলুন। অতঃপর আপনি সাজদাহয় যান এবং সাজদাহবনত অবস্থায় তা দশবার বলুন, অতঃপর সাজদাহ থেকে আপনার মাথা তুলে তা দশবার বলুন, অতঃপর সাজদাহয় গিয়ে আবার তা দশবার বলুন, অতঃপর সাজদাহ থেকে আপনার মাথা তুলে তা দশবার বলুন। এভাবে তা প্রতি রাকআতে পঁচাত্তর বার হল। এ নিয়মে আপনি চার রাকআত নামাজ পড়ুন। আপনি প্রতিদিন একবার এ নামাজ আদায় করিতে সক্ষম হলে তাই করুন। আপনি তাতে সক্ষম না হলে প্রতি সপ্তাহে তা একবার পড়ুন। আপনি তাতেও সক্ষম না হলে প্রতি মাসে তা একবার পড়ুন। আপনি তাতেও সক্ষম না হলে অন্তত জীবনে তা একবার পড়ুন। {১৩৮৭}
{১৩৮৭} আবু দাউদ ১২৯৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত, ১৩২৮, তালীক ইবনি খুযাইমাহ ১২১৬, সহিহ আবু দাউদ ১১৭৩। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন উবায়দাহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হুজ্জাহ নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা উচিত নয়। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। ২. সুওয়ায়াদ বিন আবু সাঈদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/১৯১. অধ্যায়ঃ শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত সম্পর্কে
১৩৮৮. আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড় এবং এর দিনে সওম রাখ। কেননা এ দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিযিকপ্রার্থী আমি তাকে রিযিক দান করবো। কে আছো রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করবো। কে আছ এই প্রার্থনাকারী। ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত [তিনি এভাবে আহবান করেন]। {১৩৮৮}
তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান অথবা মাওযু।{১৩৮৮} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান অথবা মাওযু। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩০৮ মাওযূ, জইফ তারগিব ৬৩২ মাওযূ, যাঈফা ২১৩২ মাওযূ, মিশকাত ১৩০৮, যঈফাহ ২১৩২। উক্ত হাদিসের রাবি [আবু বকর বিন আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ] বিন আবু সাবরাহ সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি দুর্বল। ২. ইবরাহীম বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও অন্যত্রে তিনি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইমাম যাহাবী তাকে সত্যবাদী বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস
১৩৮৯. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আমি নবী [সাঃআঃ]-কে [বিছানায়] না পেয়ে তাহাঁর খোঁজে বের হলাম। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি জান্নাতুল বাকিতে, তাহাঁর মাথা আকাশের দিকে তুলে আছেন। তিনি বলেন, হে আয়িশা! তুমি কি আশঙ্কা করেছো যে, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল তোমার প্রতি অবিচার করবেন? আয়িশা [রাঃআঃ] বলেন, তা নয়, বরং আমি ভাবলাম যে, আপনি হয়তো আপনার কোন স্ত্রীর কাছে গেছেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করেন এবং কালব গোত্রের মেষপালের পশমের চাইতেও অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ মাফ করেন। {১৩৮৯}
{১৩৮৯} মুসলিম ৯৭৩-৭৪, তিরমিজি ৭৩৯, নাসায়ি ২০৩৭, আহমাদ ২৫৪৮৭। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১২৯৯। উক্ত হাদিসের রাবি হাজ্জাজ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু নির্ভরযোগ্য নয়। তিনি আমর থেকে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু দুর্বলদের থেকে তাদলীস করেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, আমি তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বর্জন করেছি। শবে বরাতের নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৯০. আবু মূসা আল-আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে আত্নপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত তাহাঁর সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করেন।
৩/১৩৯০ [১]. আবু মূসা আশআরী [রাঃআঃ], নবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। {১৩৯০}
তাহকীক আলবানি ঃ হাসান। {১৩৯০} হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ১৮১৯ হাসান, মিশকাত ১৩০৬ জইফ, সহীহা ১৫৬৩ সহিহ, মিশকাত ১৩০৬, ১৬০৭, ফিলাল ৫১০, সহিহ আবু দাউদ ১১৪৪, ১৫৬৩। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। ২. দাহহাক বিন আয়মান সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি কে? তা অজ্ঞাত। ৩. যুবায়র বিন সুলায়ম সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ৪. আব্দুর রহমান সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫/১৯২. অধ্যায়ঃ কৃতজ্ঞতাসূচক নামাজ ও সাজদাহ
১৩৯১. আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু জাহলের শিরচ্ছেদের সুসংবাদ প্রাপ্তি দিবসে দু রাকআত শোকরানা নামাজ পড়েন। {১৩৯১}
{১৩৯১} দারিমি ১৪৬২ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইবনি খুযাইমাহ ৯৯৯ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি সালামাহ বিন রাজা সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তাকে সিকাহ হিসেবে গন্য করিয়াছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি আদী বলেন, তিনি একাধিক হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যেগুলোর অনুসরণ করা যাবে না। ২. শাসা সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তার পরিচয় অজ্ঞাত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৯২. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ]-কে কোন প্রয়োজন বা কাজ পূর্ণ হওয়ার সুসংবাদ দেওয়া হলে তিনি [কৃতজ্ঞতার] সাজদাহয় লুটিয়ে পড়েন। {১৩৯২}
{১৩৯২} হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২২৭-২২৮।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৩৯৩. কাব বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ যখন তার তাওবা কবুল করেন তখন, তিনি [কৃতজ্ঞতার] সাজদাহয় লুটিয়ে পড়েন। {১৩৯৩}
{১৩৯৩} আহমাদ ১৫৩৫৪ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৭৭, সহিহ আবু দাউদ ২৪৭৯।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৩৯৪. আবু বাক্রাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট কোন খুশির খবর আসলে তিনি মহামহিম আল্লাহর সমীপে কৃতজ্ঞতার সাজদাহ্য় লুটিয়ে পড়তেন। {১৩৯৪}
{১৩৯৪} তিরমিজি ১৫৭৮, আবু দাউদ ২৭৭৪। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৭৪, সহিহ আবু দাউদ ২৪৭৯।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫/১৯৩. অধ্যায়ঃ নামাজ গুনাহের কাফফারা স্বরূপ।
১৩৯৫. আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যখন আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হাদীস শুনতাম, তখন আল্লাহ তার দ্বারা আমার যতটুকু উপকার করিতে চাইতেন করিতেন। আর অন্য কেউ তাহাঁর থেকে আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করলে আমি তাকে শপথ করাতাম। সে শপথ করার পর আমি তাকে বিশ্বাস করতাম। আবু বকর [রাঃআঃ] আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করিতেন এবং তিনি সত্য বলিতেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তি গুনাহ করার পর উত্তমরূপে উযু করে দু রাকআত নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। মিসআর [রাঃআঃ]-এর বর্ণনায় শুধু নামাজ উল্লেখ আছে [রাকআত সংখ্যা উল্লেখ নেই]। {১৩৯৫}
{১৩৯৫} তিরমিজি ৪০৬, ৩০০৬; আবু দাউদ ১৫২১, আহমাদ ২, ৪৮, ৫৭। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩২৪, সহিহ আবু দাউদ ১৩৬১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৩৯৬. আবু আয়্যুব ও উকবাহ বিন আমির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
[আসিম] বলেন, তারা সালাসিল যুদ্ধ আভিযানে অংশগ্রহন করিতে রওয়ানা হন। এরপর তারা সীমান্ত এলাকায় সারিবদ্ধভাবে ঘোড়া বিন্যস্ত করেন। পরে তারা মুআবিয়াহ [রাঃআঃ]-এর নিকট ফিরে আসেন। তখন তার নিকট উপস্থিত ছিলেন আবু আয়্যুব ও উকবাহ বিন আমির [রাঃআঃ]। আসিম [রাঃআঃ] বলেন, হে আবু আয়্যুব! এ বছরের যুদ্ধাভিযানে আমরা অংশগ্রহন করিতে পারিনি। আমরা অবহিত হয়েছি যে, যে ব্যক্তি চারটি মাসজিদে নামাজ পড়বে, তার গুনাহ মাফ করা হইবে। আবু আয়্যুব [রাঃআঃ] বলেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! আমি তোমাকে এর চেয়েও সহজ পথ বলে দিচ্ছি। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি ঃ কোন ব্যক্তি যথাবিধি উযু করে যথাবিধি নামাজ পড়লে, তার পূর্বেকার গুনাহ ক্ষমা করা হয়। হে উক্বা! হাদীসটি কি এরূপ? তিনি বলেন, হাঁ। {১৩৯৬}
{১৩৯৬} নাসায়ি ১৪৪ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ তালাক রগীব ৯৮,৯৯, সহিহ তারগিব ১৯১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৩৯৭. উসমান বিন আফ্ফান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি ঃ তুমি কি মনে করো, কারো বাড়ির আঙ্গিনায় যদি প্রবাহমান নদী থাকে, আর সে তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তবে তার শারীরে কি কোন ময়লা থাকে? তিনি বলেন, কিছুই থাকে না। তিনি বলেন, পানি যেভাবে ময়লা দূর করে দেয়, তদ্রূপ নামাজ ও গুনাহ দূর করে দেয়। {১৩৯৭}
{১৩৯৭} আহমাদ ৫২০ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৭-৪৮। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৯৮. আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি এক নারীর সাথে অপকর্ম করে, তবে যেনা নয়। আমি জানি না, আসলে কি ঘটেছিল। সম্ভবত যিনা ব্যতীত অন্য কিছু। সে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে ব্যাপারটি তাহাঁর কাছে বর্ণনা করে। তখন মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন [অনুবা-দ]
أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ
“নামাজ আদায় করো দিনের দুপ্রান্তভাগে ও রাতের প্রথমাংশে, সৎকর্ম অবশ্যই অসৎ কর্ম মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহণ করে এতো তাহাদের জন্য উপদেশ” [সূরাহ হূদ ঃ ১১৪] সেই ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! এ আয়াত কি আমার জন্যই? তিনি বলেন, যে ব্যক্তি এর উপর আমাল করিবে [তার জন্যও]। {১৩৯৮}
{১৩৯৮} বোখারি ৫২৬, ৪৬৮৭; মুসলিম ২৭৬১-২, তিরমিজি ৩১১২, আবু দাউদ ৪৪৬৮, আহমাদ ৩৬৪৫, ৪০৮৩; ইবনি মাজাহ ৪২৫৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২৩-২৪। উক্ত হাদিসের রাবি সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে সম্পর্কে ইমাম বোখারি মন্তব্য করিয়াছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। শবে বরাতের নামাজ , সলাতুত তাসবীহ, চাশত, ইস্তিখারা, নফল – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply