জুমার নামাজের বিবরণ -ওয়াক্ত, খুতবা, কিরাআত, আযান, দুআ

জুমার নামাজের বিবরণ -ওয়াক্ত, খুতবা, কিরাআত, আযান, দুআ

জুমার নামাজের বিবরণ -ওয়াক্ত, খুতবা, কিরাআত, আযান, দুআ >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (৭৮-৯৯)=২২টি

৫/৭৮. অধ্যায়ঃ জুমাআহ্‌র নামাজ ফার্‌দ।

১০৮১. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, হে মানবমন্ডলী! তোমরা মরার পূর্বেই আল্লাহ নিকট তওবা করো এবং কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ার পূর্বেই সৎ কাজের দিকে দ্রুত ধাবিত হও। তাহাঁর অধিক যিক্‌রের মাধ্যেমে তোমাদের রবের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করো এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে অধিক পরিমাণে দান-খয়রাত করো, এজন্য তোমাদের রিযিক বাড়িয়ে দেয়া হইবে, সাহায্য করা হইবে এবং তোমাদের অবস্থার সংশোধন করা হইবে। তোমরা জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আমার এই স্থানে আমার এই দিনে, আমার এই মাসে এবং আমার এই বছরে তোমাদের উপর কিয়ামতের দিন পর্যন্ত জুমার নামাজ ফার্দ করিয়াছেন। অতএব যে ব্যক্তি আমার জীবদ্দশায় বা আমার ইনতিকালের পরে, ন্যায়পরায়ণ অথবা যালেম শাসক থাকা সত্ত্বেও জুমার নামাজ তুচ্ছ মনে করে বা অস্বীকার করে তা বর্জন করিবে, আল্লাহ তার বিক্ষিপ্ত বিষয়কে একত্রে গুছিয়ে দিবেন না এবং তার কাজে বরকত দান করবেন না। সাবধান! তা নামাজ, যাকাত, হাজ্জ, সওম এবং অন্য কোন নেক আমার গ্রহণ করা হইবে না যতক্ষণ না সে তওবা করে। যে ব্যক্তি তওবা করে আল্লাহর তাআলা তার তওবা কবুল করেন। সাবধান! নবী পুরুষের, বেদুইন মুহাজিরের এবং পাপাচারী মুমিন ব্যক্তির ইমামতি করিবে না। তবে স্বৈরাচারী শাসক তাকে বাধ্য করলে এবং তার তরবারি ও চাবুকের ভয় থাকলে স্বতন্ত্র কথা। {১০৮১}

{১০৮১} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫৯১। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ওয়ালীদ বিন বুকায়র আবু জান্নাব সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ২. আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আদ আদাবী সম্পর্কে ওয়াকী ইবনিল জাররাহ বলেন, তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইবনি হিব্বান বলেন। তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য হইবে না। ইমাম দারাকুতনী তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন ।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১০৮২. আবদুর রহমান বিন কাব বিন মালিক হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার পিতা [কাব বিন মালিক] [রাঃআঃ] অন্ধ হয়ে গেলে আমি ছিলাম তার পরিচালক। আমি তাকে নিয়ে যখন জুমার নামাজ আদায় করিতে বের হতাম, তিনি আযান শুনলেই আবু উমামাহ আসআদ বিন যুরারাহ্ [রাঃআঃ] এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিতেন এবং দুআ করিতেন। আমি তাকে ক্ষমা প্রার্থনা ও দুআ করিতে শুনে কিছুক্ষণ থামলাম, অতঃপর মনে মনে বললাম, আল্লাহর শপথ! কি বোকামী! তিনি জুমার আযান শুনলেই আমি তাকে আবু উমামাহ [রাঃআঃ] -এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও দুআ করিতে শুনি, অথচ আমি তাকে তার কারণ জিজ্ঞেস করিনি? আমি তাকে নিয়ে যেমন বের হতাম, তদ্রুপ একদিন তাঁকে নিয়ে জুমার উদ্দেশে বের হলাম। তিনি যখন আযান শুনলেন তখন তা অভ্যাস মাফিক ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, হে পিতা! জুমার আযান শুনলেই আমি কি আপনাকে দেখি না যে, আপনি আসআদ বিন যুরারাহ্ [রাঃআঃ] এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তা কেন? তিনি বলেন, প্রিয় বৎস! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর মাক্কাহ থেকে [মাদীনাহয়] আসার পূর্বে তিনিই সর্বপ্রথম বনূ বাইয়াদার প্রস্তরম সমতল ভূমিতে অবস্থিত নাকীউল খাযামাত-এ আমাদের নিয়ে জুমার নামাজ পড়েন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা তখন কতজন ছিলেন? তিনি বলেন, চল্লিশজন পুরুষ। {১০৮২}

{১০৮২} আবু দাউদ ১০৬৯ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৮০।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১০৮৩. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, জুমার নামাজের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা আমাদের পূর্ববর্তীদের পথভ্রষ্ট করিয়াছেন। ইহূদীদের জন্য ছিল শনিবার এবং খ্রিস্টানদের জন্য রবিবার। কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত তারা হইবে আমাদের পশ্চাদগামী। আমরা পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে সর্বশেষ আগমনকারী, কিন্তু সৃষ্টিকুলের বিচার অনুষ্ঠানের দিক থেকে হবো সর্বপ্রথম। {১৯৮৩}

{১০৮৩} বোখারি ৮৯৮, মুসলিম ৮৫১-৩, ৮৫৬, নাসায়ি ১৩৬৭-৬৮, আহমাদ ৭২৬৮, ৭৩৫১, ৭৬৪৯, ৮০৫৩, ৮২৯৮, ১০১৫২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীকুর রগীব ২৫০, সহিহ তারগিব ৭০১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৫/৭৯. অধ্যায়ঃ জুমুআহর নামাজের ফাদীলাত।

১০৮৪. আবু লুবাবাহ বিন আবদুল মুনযির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, জুমার দিন হলো সপ্তাহের দিনসমূহের নেতা এবং তা আল্লাহ্‌র নিকট অধিক সম্মানিত। এ দিনটি আল্লাহর নিকট কুরবানীর দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে অধিক সম্মানিত। এ দিনে রয়েছে। এ দিনে রয়েছে পাঁচটি বৈশিষ্ট্যঃ এ দিন আল্লাহ আদম [আঃ] -কে সৃষ্টি করেন, এ দিনই আল্লাহ তাঁকে পৃথিবীতে পাঠান এবং এ দিনই আল্লাহ তাহাঁর মৃত্যু দান করেন। এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন বান্দা তখন আল্লাহ্‌র নিকট কিছু প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তা দান করেন, যদি না সে হারাম জিনিসের প্রার্থনা করে এবং এ দিনই কিয়ামাত সংঘটিত হইবে। নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ, আসমান-যমীন, বায়ু, পাহাড়-পর্বত ও সমুদ্র সবই জুমার দিন শংকিত হয়। {১০৮৪}

{১০৮৪} আহমাদ ১৫১২০ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩৬৩।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১০৮৫. আওস বিন আওস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের সর্বোত্তম দিন হলো জুমাআহর দিন। এ দিন আদম [আ.] -কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হইবে এবং তাতে বিকট শব্দ হইবে। অতএব তোমরা এ দিন আমার উপর প্রচুর পরিমানে দুরূদ পাঠ করো। তোমাদের দুরূদ অবশ্যই আমার নিকট পেশ করা হয়। এক ব্যক্তি বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! কিভাবে আমাদের দুরূদ আপনার নিকট পেশ করা হইবে, অথচ আপনি তো অচিরেই মাটির সাথে একাকার হয়ে যাবেন? তিনি বলেন, আল্লাহ নবীগণের দেহ ভক্ষণ মাটির জন্য হারাম করিয়াছেন। {১০৮৫}

{১০৮৫} নাই তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪, মিশকাত ১৩৬১, তাতীক ইবনি খুযাইমাহ, ১৭৫৮, সহিহ, আবু দাউদ ৯৬২। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৮৬. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, এক জুমুআহ পরবর্তী জুমাআহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহসমূহের কাফফারা স্বরূপ, যদি না কবীরা গুনাহ করা হয়। {১০৮৬}

{১০৮৬} মুসলিম ২৩৩, দি ২১৪, আহমাদ ৭০৮৯, ৮৯৪৪, ১০১৯৮, ২৭২৯০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৬৮৪। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৮০. অধ্যায়ঃ জুমার দিন গোসল করা।

১০৮৭. আওস বিন আওস আস-সাকাফী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি নবী [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  যে ব্যক্তি জুমাআহ্‌র দিন [স্ত্রী সহবাসজনিত] গোসল করলো এবং নিজে গোসল করলো এবং সকাল সকাল যানবাহন ছাড়া পদব্রজে মাসজিদে এসে ইমামের কাছিাকাছি বসলো, মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে খুতবাহ শুনলো এবং অনর্থক কিছু করলো না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের সওম রাখো ও তার রাত জেগে নামাজ পড়ার সমান নেকী রয়েছে। {১০৮৭}

{১০৮৭} তিরমিজি ৪৯৬, নাসায়ি ১৩৮১, ১৩৮৪, ১৩৯৮; আবু দাউদ ৩৪৫, আহমাদ ১৫৭২৮, ১৫৭৩৯, ১৫৭৪২, ১৬৫১৩, ১৫৪৬-৪৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩৮৮, সহিহ আবু দাউদ ৩৭২। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৮৮. ইবনি ইমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] -কে মিম্বারের উপর বলিতে শুনিয়াছিঃ  যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করিতে আসে সে যেন গোসল করে। {১০৮৮}

{১০৮৮} বোখারি ৮৭৭, ৮৯৪, ৯১৯; মুসলিম ৮৪৪-১২, তিরমিজি ৪৯২, ৪৯৪; নাসায়ি ১৩৭৬, ১৪০৫-৭; আহমাদ ৪৪৫২, ৪৫৩৯, ৪৯০১, ৪৯২৩, ৪৯৮৫, ৪৯৮৮, ৫০৫৮, ৫০৬৩, ৫১০৭, ৫১২০, ৫১৪৭, ৫১৮৮, ৫২৮৯, ৫৪২৭, ৫৪৫৮, ৫৪৬৪, ৫৭৪৩, ৫৭৯৪, ৫৯২৫, ৫৯৮৪, ৬২৩১, ৬২৯১, ৬৩৩৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৩১, দারিমি ১৫৩৫-৩৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৮৯. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, জুমার দিন প্রত্যেক বালেগ ব্যক্তির গোসল করা কর্তব্য। {১০৮৯}

{১০৮৯} বোখারি ৮৫৮, ৮৭৯-৮০, ৮৯৫, ২৬৬৫; মুসলিম ৮৪১-২, নাসায়ি ১৩৭৫, ১৩৭৭, ১৩৮৩; আবু দাউদ ৩৪১, ৩৪৪, আহমাদ ১০৬৪৪, ১০৮৫৭, ১১১৮৪, ১১২৩১, ১১২৬১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৩০, দারিমি ১৫৩৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৬৮, ৩৭১। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৮১. অধ্যায়ঃ জুমার দিনের গোসল ঐচ্ছিক।

১০৯০. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করে জুমার সলাতে এসে ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসলো এবং নীরবে মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শুনলো, তার এক জুমুআহ থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময়ের এবং আরও তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। আর যে ব্যক্তি কংকর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক কাজ করলো। {১০৯০}

{১০৯০} মুসলিম ৮৫৭, তিরমিজি ৪৯৮, আবু দাউদ ১০৫০, আহমাদ ৯২০০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৬৪। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৯১. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন উযু করলো, সে উত্তম কাজই করলো এবং ফরয আদায়ের জন্য তা তার পক্ষে যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তি গোসল করে, তবে গোসলই অধিক উত্তম। {১০৯১}

তাহকিক আলবানিঃ ফরয আদায়ের জন্য যথেষ্ট- এ কথা ব্যতীত সহিহ।

{১০৯১} ফরয আদায়ের জন্য যথেষ্ট- এ কথা ব্যতীত সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৮০, মিশকাত ৫৪০। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইসমাইল বিন মুসলিম সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। সুফইয়ান বিন উয়ায়নাহ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইবনি মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আমর ইবনিল ফাল্লাস বলেন, হাদিস বর্ণনায় তিনি দুর্বল তাছাড়া তিনি হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ২. ইয়াযীদ আর-রাকশী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনার চেয়ে রাস্তা কেটে বসে যাওয়া আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। আমর ইবনিল ফাল্লাস বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৮২. অধ্যায়ঃ সকাল সকাল জুমাআহ্‌র নামাজ আদায় করিতে যাওয়ার ফাদীলাত।

১০৯২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, জুমার দিন হলে মাসজিদের প্রতিটি দরজায় ফেরেশতাগণ অবস্থান করেন এবং লোকেদের আগমনের ক্রমানুসারে তাহাদের নাম লিখেন। যেমন প্রথম আগমনকারীর নাম প্রথমে। ইমাম যখন খুতবাহ দিতে বের হন, তখন তারা তাহাদের নথি গুটিয়ে নেন এবং মনোযোগ সহাকারে খুতবাহ শোনেন। সলাতে প্রথম আগমনকারীর সাওয়াব একটি উট কুরবানীকারীর সমান, তারপরে আগমনকারীর নেকী একটি গরুর কুরবানীকারীর সমান, তারপর আগমনকারীর নেকী একটি মেষ কুরবানীকারীর সমান, একনকি তিনি মুরগী ও ডিমের কথা উল্লেখ করেন। সাহ্‌ল বিন আবু সাহ্‌লের রিওয়ায়তে আরো আছেঃ এরপর যে ব্যক্তি আসে, সে কেবল নামাজ পড়ার নেকী পায়। {১০৯২}

{১০৯২} বোখারি ৮৮১, ৯২৯, ৩২১১; মুসলিম ৮৫০/১-২, তিরমিজি ৪৯৯, নাসায়ি ৮৬৪, ১৩৮৫-৮৮; আবু দাউদ ৩৫১, আহমাদ ৭২১৭, ৭৪৬৭, ৭৭০৮, ৯৬১০, ১০০৯৬, ১০১৯০, ১০২৬৮; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২২৭, দারিমি ১৫৪৩-৪৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৭১৩, সহিহ আবু দাউদ ৩৭৭। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৯৩. সামুরাহ বিন জুনদুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার সলাতে সকাল সকাল আগমনের একটি উদাহরণ দেনঃ যেমন উট কুরবানীকারী, গরু কুরবানীকারী, বকরী কুরবানীকারী, এমনকি তিনি মুরগী পর্যন্ত উল্লেখ করেন। {১০৯৩}

হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি সাঈদ বিন বাশীর সম্পর্কে শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী। ইবনি আদী বলেন, তিনি যা বর্ণনা করিয়াছেন তার মাঝে কোন সমস্যা দেখি না তবে সম্ভবত তিনি হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১০৯৪. আলকামাহ হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] -এর সাথে জুমার নামাজ আদায় করিতে বের হলাম। তিনি মাসজিদে গিয়ে তিন ব্যক্তিকে দেখেন যে, তারা তার আগে এসেছে। তিনি বলেন, চারজনের মধ্যে [আমি] চতুর্থ। তবে চারজনের মধ্যে চতুর্থ ব্যক্তি খুব দূরে নয়। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  কিয়ামতের দিন লোকেরা আল্লাহর সামনে বসবে জুমার সলাতে তাহাদের আগমনের ক্রমানুসারেঃ প্রথম আগন্তুক, দ্বিতীয় আগন্তুক, তৃতীয় আগন্তুক, চতুর্থ আগন্তুক এভাবে। তিনি বলেন, চারজনের চতুর্থ। আর চারজনের মধ্যে চতুর্থজন খুব দূরে নয়। {১০৯৪}

{১০৯৪} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ নাসায়ি ১৪৩০ সহিহ, জইফ তারগিব ৪৩৬ জইফ, যিলালি জান্নাহ ৬২০ জইফ, ফিলাল ৬২০, যঈফাহ ২৮১০। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল মাজীদ বিন আবদুল আযীয সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/৮৩. অধ্যায়ঃ জুমার দিন বেশভূষা অবলম্বন করা।

১০৯৫. আবদুল্লাহ বিন সালাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জুমার দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে মিম্বারের উপর বলিতে শুনছেনঃ তোমরা যদি তোমাদের কাজকর্মের পেশাকদ্বয় ছাড়া জুমার দিনের জন্য আরো দুটি পরিধেয় বস্ত্র ক্রয় করিতে।

১/১০৯৫ [১] . আবদুল্লাহ বিন সালাম [রাঃআঃ] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন …… পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। {১০৯৫}

তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।{১০৯৫} নাসায়ি ১৩৭৪, আবু দাউদ ১০৭৮, দারিমি ১৫২৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৮৯। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৯৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] জুমাআহ্‌র দিন লোকেদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি তাহাদেরকে দৈনন্দিনের পোশাক পরিহিত দেখেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কী হলো যে, তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য আছে সে কি তার কামকর্মের পোশাকদ্বয় ছাড়া জুমার নামাজের জন্য আরো একজোড়া পোশাক গ্রহণ করিতে পারে না? {১০৯৬}

{১০৯৬} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালাক ইবনি খুযাইমাহ ১৬৬৫, সহিহ আবু দাউদ ৯৮৯, মিশকাত ১৩৮৯, গয়াতুল মারাম ৭৭। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১০৯৭. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করে, উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তার উৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করে এবং আল্লাহ তার পরিবারের জন্য যে সুগন্ধির ব্যবস্থা করিয়াছেন, তা শরীরে লাগায়, এরপর জুমার সলাতে এসে অনর্থক আচরণ না করে এবং দুজনের মাঝে ফাঁক করে অগ্রসর না হয়, তার এক জুমুআহ থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহমসূহ ক্ষমা করা হয়। {১০৯৭}

{১০৯৭} আহমাদ ২১০২৯ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১০৯৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ এই দিনকে মুসলিমদের ঈদের দিনরূপে নির্ধারণ করিয়াছেন। অতএব যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করিতে আসবে সে যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। আর মিসওয়াক করাও তোমাদের কর্তব্য। {১০৯৮}

{১০৯৮} মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৪৬ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩৯৮, ১৩৯৯। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আলী বিন গুরাব সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার মাঝে দুর্বলতা আছে। উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। ২. সালিহ বিন আবুল আখতার সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম বোখারি তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫/৮৪. অধ্যায়ঃ জুমার নামাজের ওয়াক্ত।

১০৯৯. সাহল বিন সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা জুমার নামাজ পড়ার পরেই দুপুরের আহার করতাম এবং বিশ্রাম নিতাম। {১০৯৯}

{১০৯৯} বোখারি ৯৩৮-৩৯, ৯৪১, ২৩৪৯, ৫৪০৩, ৬২৪৮, ৬২৭৯; মুসলিম ৮৫৯, তিরমিজি ৫২৫, আবু দাউদ ১০৮৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৯৭। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০০. সালামাহ বিন আমর ইবনিল আকওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে জুমার নামাজ পড়ে ফেরার সময় দেয়ালের এতটুকু ছায়াও দেখতাম না যার ছায়া আমরা গ্রহণ করিতে পারি। {১১০০}

{১১০০} বোখারি ৪১৬৮, মুসলিম ৮৬০/১-২, নাসায়ি ১৩৯১, আবু দাউদ ১০৮৫, আহমাদ ১৬০৬১, ১৬১১১; দারিমি ১৫৪৫-৪৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫৯৮, সহিহ আবু দাউদ ৯৯৬। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০১. সাদ বিন আয়িয [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সময়ে সূর্য পশ্চিমাকাশে জুতার ফিতার ন্যায় ঢলে পড়ার পর আযান দিতেন। {১১০১}

{১১০১} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ নাসায়ি ৫২৪ সহিহ, তিরমিজি ১৪৯ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন সাদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে মন্তব্য রয়েছে। ২. সাদ বিন আম্মার সম্পর্কে ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১০২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা জুমার নামাজ পড়ে ফিরে আসার পর দুপুরের বিশ্রাম করতাম। {১১০২}

{১১০২} বোখারি ৯০৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৯৭। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৮৫. অধ্যায়ঃ জুমার দিনে খুতবা।

১১০৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] [জুমার নামাজের] দুটি খুতবাহ দিতেন এবং দু খুতবাহ্‌র মাঝখানে কিছুক্ষণ বসতেন। বিশর [রাঃআঃ] -এর বর্ণনায় আরো আছেঃ তিনি দাঁড়িয়ে খুতবাহ দিতেন। {১১০৩}

{১১০৩} বোখারি ৯২০, ৯২৮; মুসলিম ৮৬১, তিরমিজি ৫০৬, নাসায়ি ১৪১৬, আবু দাউদ ১০৯২, দারিমি ১৫৫৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬০৪, সহিহ আবু দাউদ ১০১২। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৪. আমর বিন হুরায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] -কে কালো পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় মিম্বারে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে দেখেছি। {১১০৪}

{১১০৪} মুসলিম ১৩৫৯, নাসায়ি ৫৩৪৩, ৫৩৪৬; আবু দাউদ ৪০৭৭, আহমাদ ১৮২৫৯, ইবনি মাজাহ ২৮২১, ৩৫৮৪, ৩৫৮৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মুখতাসার শামাইয়া ৯৩। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৫. জাবির বিন সামুরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুতবাহ দিতেন। তবে তিনি একবার কিছুক্ষণ বসতেন, অতঃপর [দ্বিতীয় খুতবাহ দিতে] দাঁড়াতেন। {১১০৫}

{১১০৫} মুসলিম ৮৬১-২, ৮৬১-২; তিরমিজি ৫৬০, নাসায়ি ১৪১৫, ১৪১৭-১৮, ১৫৮২-৮৪; আবু দাউদ ১০৯৪, ১১০১, ১১০৭; আহমাদ ২০২৮৯, ২০৩০৬, ২০৩২২, ২০৩৩৫, ২০৩৬০, ২০৩৮৩, ২০৪১৩, ২০৪২২, ২০৪২৭, ২০৪৩৯, ২০৪৫২, ২০৪৬৫, ২০৫২০, ২০৫২৯, ২০৪৪৬; দারিমি ১৫৫৭, ১৫৫৯; ইবনি মাজাহ ১১০৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৭১, সহিহ আবু দাউদ ১০০৩, ১০০৪। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৬. জাবির বিন সামুরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুতবাহ দিতেন, তারপর [প্রথম খুতবাহ শেষে] বসতেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে কুরআনের আয়াত পড়তেন এবং আল্লাহ্‌র যিকির করিতেন। তাহাঁর খুতবাহ ও নামাজ দুটোই ছিল নাতিদীর্ঘ। {১১০৬}

{১১০৬} মুসলিম ৮৬১-২, ৮৬১-২; তিরমিজি ৫৬০, নাসায়ি ১৪১৫, ১৪১৭-১৮, ১৫৮২-৮৪; আবু দাউদ ১০৯৪, ১১০১, ১১০৭; আহমাদ ২০২৮৯, ২০৩০৬, ২০৩২২, ২০৩৩৫, ২০৩৬০, ২০৩৮৩, ২০৪১৩, ২০৪২২, ২০৪২৭, ২০৪৩৯, ২০৪৫২, ২০৪৬৫, ২০৫২০, ২০৫২৯, ২০৪৪৬; দারিমি ১৫৫৭, ১৫৫৯; ইবনি মাজাহ ১১০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০০৯। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৭. সাদ বিন আয়িয [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুদ্ধক্ষেত্রে খুতবাহ দিলে ধনুকে ভর করে খুতবাহ দিতেন এবং জুমার খুতবাহ দিলে লাঠিতে ভর দিয়ে খুতবাহ দিতেন। {১১০৭}

{১১০৭} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৩৮৪ জইফ, যঈফাহ ৯৬৮। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আব্দুর রহামান বিন সাদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে মন্তব্য রয়েছে। ২. সাদ বিন আম্মার সম্পর্কে ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১০৮. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, নবী [সাঃআঃ] কি দাঁড়িয়ে খুতবাহ দিতেন, না বসে? তিনি বলেন, তুমি কি এ আয়াত পাঠ করোনিঃ “এবং তারা তোমাকে রেখে গেল দাঁড়ানো অবস্থায়” [সূরা জুমুআহঃ ১১]? {১১০৮}

সহিহ। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৯. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] মিম্বারে উঠে সালাম দিতেন। হাসান। {১১০৯}

হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর ইবনিল ফাল্লাস বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫/৮৬. অধ্যায়ঃ নীরবে মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শুনতে হইবে।

১১১০. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, জুমার দিন ইমামের খুতবাহ দানকালে যখন তুমি তোমার সাথীকে বললে, চুপ করো তখন তুমি অনর্থক কাজ করলে। {১১১০}

{১১১০} বোখারি ৯৩৪, মুসলিম ৮৫১-২, তিরমিজি ৫১২, নাসায়ি ১৪০১-২, আবু দাউদ ১১১২, আহমাদ ৭২৮৮, ৭৬২৯, ৭৭০৬, ৮৮৫৭, ৮৯০২, ৯৯২৭, ১০৩৪২, ১০৫০৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৩২, দারিমি ১৫৪৮-৪৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬১৯। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১১. উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার সলাতে [খুতবাহ দিতে] দাঁড়িয়ে সূরা তাবারাকা [মূল্‌ক] পাঠ করেন এবং আমাদের উদ্দেশে আল্লাহ্‌র দিনসমূহের ইতিহাস বর্ণনা করেন। আবুদ-দারদা অথবা আবু যার [রাঃআঃ] আমাকে খোঁচা মেরে বলেন, সূরাটি কখন নাযিল হয়েছে? আমি তো তা এখনই শুনলাম। তিনি তার দিকে ইশারা করে বলেন, চুপ করুন। সাহাবীরা চলে গেলে তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করলাম সূরাটি কখন নাযিল হয়েছে, অথচ আপনি আমাকে তা অবহিত করেননি? উবাই [রাঃআঃ] বলেন, আজকে আপনার নামাজ হয়নি, অনর্থক কাজই হয়েছে। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তাঁকে বর্ণনা করেন এবং উবাই [রাঃআঃ] যা বলেছেন, তাঁকে তাও অবহিত করেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, উবাই ঠিকই বলেছেন। {১১১১}

{১১১১} আহমাদ ২০৭৮০ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীকুর রগীব ২৫৭, সহীদ তারগিব ৭২০, ইরওয়াহ ৮০-৮১।জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৮৭. অধ্যায়ঃ ইমামের খুতবাহ দানকালে কোন ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলে।

১১১২. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] -এর খুতবাহ দানকালে সুলাইক আল-গাতাফানী [সাঃআঃ] মাসজিদে প্রবেশ করেন। তিনি বলেন, তুমি কি নামাজ পড়েছ? সে বললো, না। তিনি বলেন, তুমি দুরাকাআত পড়ে নাও। রাবি আম্‌র বিন দীনারের বর্ণনায় সুলাইক [রাঃআঃ] -এর নাম উল্লেখিত হয়নি। {১১১২}

{১১১২} বোখারি ৯৩০-৩১, ১১৭০; মুসলিম ৮৭১-৬, তিরমিজি ৫১০, নাসায়ি ১৩৯৫, ১৪০৯; আবু দাউদ ১১১৫-১৬, আহমাদ ১৩৭৫৯, ১৩৮৯৭, ১৩৯৯৬, ১৪৫৪২, ১৪৬৪৯; দারিমি ১৫৫১, ১৫৫৫; ইবনি মাজাহ ১১১৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০২১। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১৩. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] -এর খুতবাহ দানকালে এক ব্যক্তি এসে উপস্থিত হলো। তিনি বলেন, তুমি কি নামাজ পড়েছ? সে বললো, না। তিনি বলেন, তুমি দু রাকআত পড়ে নাও। {১১১৩}

{১১১৩} তিরমিজি ৫১১, নাসায়ি ১৪০৮, দারিমি ১৫৫২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ।. হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১১১৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খুতবারত অবস্থায় সুলাইক আল-গাতফানী [রাঃআঃ] এলেন। নবী [সাঃআঃ] তাকে বলেন, তুমি কি এখানে আসার পূর্বে দু রাকআত পড়েছ? সে বললো, না। তিনি বলেন, তুমি সংক্ষেপে দু রাকআত পড়ে নাও। {১১১৪}

তাহকিক আলবানিঃ তুমি আসার পূর্বে এ কথা ব্যতীত সহীহ্। এ কথাটি শায। {১১১৪} বোখারি ৯৩০-৩১, ১১৭০; মুসলিম ৮৭১-৬, তিরমিজি ৫১০, নাসায়ি ১৩৯৫, ১৪০৯; আবু দাউদ ১১১৫-১৬, আহমাদ ১৩৭৫৯, ১৩৮৯৭, ১৩৯৯৬, ১৪৫৪২, ১৪৬৪৯; দারিমি ১৫৫১, ১৫৫৫; ইবনি মাজাহ ১১১২। তাহকিক আলবানিঃ তুমি আসার পূর্বে এ কথা ব্যতীত সহীহ্ এ কথাটি শায। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৫/৮৮. অধ্যায়ঃ জুমার দিন লোকের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া নিষেধ।

১১১৫. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

জুমার দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খুতবারত অবস্থায় এক ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলো। সে লোকের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে দিকে যাচ্ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি বসো, তুমি [অন্যকে] কষ্ট দিয়েছ এবং অনর্থক কাজ করেছ। {১১১৫}

{১১১৫} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীকুর রগীব ১/২৫৬। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন মুসলিম সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। সুফইয়ান বিন উয়ায়নাহ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইবনি মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আমর ইবনিল ফাল্লাস বলেন, হাদিস বর্ণনায় তিনি দুর্বল তাছাড়া তিনি হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১৬. মুআয বিন আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন লোকের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে অগ্রসর হয়েছে, [কিয়ামাতের দিন] তাকে জাহান্নামের পুল বানানো হইবে। {১১১৬}

{১১১৬} তিরমিজি ৫১৩, আহমাদ ১৫১৮২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫৫১৬ জইফ, তিরমিজি ৫১৩ জইফ, মিশকাত ১৩৯২, জইফ তারগিব ৪৩৭, ইবনি খুযাইমাহ ১৮১০ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. রিশদীন বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তার থেকে হাদিস লিপিবদ্ধ করেন নি। আমর ইবনিল ফাল্লাস ও আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী মুনকারুল হাদিস ও তার মাঝে অমনোযোগিতার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। ২. যাব্বান বিন ফায়িদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে একাধিক মুনকার হাদিস বর্ণিত হয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হিব্বান তাকে মুনকার বলেছেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/৮৯. অধ্যায়ঃ ইমামের মিম্বার থেকে নামার পর কথা বলা।

১১১৭. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] জুমার দিন মিম্বার থেকে নেমে প্রয়োজনীয় কথা বলিতেন। {১১১৭}

{১১১৭} তিরমিজি ৫১৭, নাসায়ি ১৪১৯, আবু দাউদ ১১২০, আহমাদ ১১৮৭৫। তাহকিক আলবানিঃ শায। তাখরিজ আলবানিঃ জইফ আবু দাউদ ২০৯, কিন্তু ইশার কথা সহিহ, সহিহ আবু দাউদ ১৯৭। উক্ত হাদিসের রাবি আবু দাউদ সম্পর্কে ইবনি মাহদী বলেন, তিনি মানুষের মাঝে সত্যবাদী। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তার চেয়ে অধিক স্মৃতিসম্পন্ন ব্যাক্তি আর কাউকে দেখিনি।হাদিসের তাহকিকঃ শায

/৯০. অধ্যায়ঃ জুমার নামাজের কিরাআত

১১১৮. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[উবায়দুল্লাহ] বলেন, মারওয়ান ইবনিল হাকাম, আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] -কে মদিনায় তার স্থলাভিষিক্ত করে মাক্কাহয় যান। আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] আমাদের নিয়ে জুমার দিন নামাজ পড়লেন। তিনি প্রথম রাকআতে সূরা জুমুআহ এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ইযা জাআকাল মুনাফিকূন পড়েন। উবায়দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] নামাজ থেকে অবসর হলে আমি তাকে বললাম, আপনি এমন দুটি সূরা পড়লেন, যা আলী [রাঃআঃ] কূফায় পড়েছিলেন। আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে এ দুটি সুরাহ পড়তে শুনেছি। {১১১৮}

{১১১৮} মুসলিম ৮৭৭, ৫১৯; আবু দাউদ ১১২৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬৪, সহিহ আবু দাউদ ১০২৯। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১৯. নুমান বিন বাশীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[উবায়দুল্লাহ] বলেন, দহ্‌হাক বিন কায়স [রাঃআঃ] নুমান বিন বাশীর [রাঃআঃ] -কে লিখে পাঠান যে, নবী [সাঃআঃ] জুমার সলাতে সূরা জুমার সাথে আর কোন্ সূরা পড়তেন তা আপনি আমাদের অবহিত করুন। তিনি বলেন, তিনি বলেন, তিনি [সাঃআঃ] হাল আতাকা হাদীসুল গাশিয়াহ সূরা পড়তেন। {১১১৯}

{১১১৯} মুসলিম ৮৭১-২, তিরমিজি ৫৩৩, নাসায়ি ১৪২৩-২৪, আবু দাউদ ১১২২-২৩, আহমাদ ১৭৯১৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০২৮। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২০. আবু ইনাবাহ [আবদুল্লাহ বিন ইনাবাহ] আল-খাওলানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] জুমার সলাতে “সাব্বিহ ইসমা রব্বিকাল আলা” সূরা এবং হাল আতাকা হাদীসুল গাশিয়াহ সূরা পড়তেন। {১১২০}

{১১২০} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০২৭, ১০৩০। উক্ত হাদিসের রাবি সাঈদ বিন সিনান সম্পর্কে ইমাম বোখারি, মুসলিম ইবনিল হাজ্জাজ ও আহমাদ বিন সালিহ আল-মিশরী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৯১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি জুমুআর নামাজের এক রাকআত পেলো।

১১২১. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি জুমুআর নামাজের এক রাকআত পেলো, সে যেন তার সাথে আরো এক রাকআত মিলায় [পড়ে]। {১১২১}

{১১২১} মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৩৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬২২। উক্ত হাদিসের রাবি উমার বিন হাবীব সম্পর্কে আস-সাজী বলেন, তিনি সিকাহ রাবি থেকে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইবনি আদী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা থাকলেও তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমরা তার থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করিনি। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল ও মিথ্যুক। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে মন্তব্য রয়েছে। এ হাদিসের ৬৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে দারাকুতনী ১৫ টি, সুনানুল কুবরা ৫ টি, মুসান্নাফ ইবনি আবী শায়বাহ ৩ টি ও বাকীগুলো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাজের এক রাকআত পেলো, সে নামাজ পেয়ে গেলো। {১১২২}

{১১২২} বোখারি ৫৫৬, ৫৭৯-৮০; মুসলিম ৬০১-২, ৬০৮; তিরমিজি ১৮৬, ৫২৪; নাসায়ি ৫১৪-১৭, ৫৫৩-৫৬; আবু দাউদ ৪১২, ৮৯৩, ১১২১; আহমাদ ৭১৭৫, ৭২৪২, ৭৪০৮, ৭৪৮৫, ৭৫৪০, ৭৬০৯, ৭৭০৭, ৭৭৩৯, ৭৭৯৫, ৮৩৭৯, ৮৬৬৩, ৮৯৩২, ৯৬০২, ৯৬৩৮, ৯৭৭৯, ৯৯৬৬, ৯৯৮৬, ১০৩৭২; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫, ১৫; দারিমি ১২০, ১২২; ইবনি মাজাহ ৬৯৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৮৭, আবু দাউদ ১০২৬। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমুআর নামাজের বা অন্য নামাজের এক রাকআত পেলো, সে [পূর্ণ] নামাজ পেয়ে গেলো। {১১২৩}

{১১২৩} নাসায়ি ৫৫৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৯২. অধ্যায়ঃ জুমুআর নামাজের জন্য দূর থেকে আগমন।

১১২৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কুবাবাসীগণ জুমুআর দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে জুমুআর নামাজ আদায় করতো। {১১২৪}

জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন উমার [বিন হাফস বিন আসিম বিন উমার আল উমরী আল কারশী] সম্পর্কে ইয়াকুব শায়বাহ বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিসে ইদতিরাব রয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সানাদের মাঝে অতিরিক্ত করেন ও সিকাহ রাবির বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আলী ইবনিল মাদীনী তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/৯৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমুআর নামাজ ত্যাগ করলো।

১১২৫. আবুল জাদ আদদমরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি সাহাবী ছিলেন। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি অবহেলা করে একাধারে তিন জুমুআহ্ ত্যাগ করলো, তার অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়। {১১২৫}

{১১২৫} তিরমিজি ৫০০, নাসায়ি ১৩৬৯, আবু দাউদ ১০৫২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩৭১, তালীক ইবনি খুযাইমাহ ১৮৫৭-১৮৫৮, সহিহ আবু দাউদ ৯৬৫। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন আমর সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি সালিহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি কখনো কখনো হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি আদী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় সমস্যা নেই। ইমাম নাসাঈ তাকে সিকাহ বলেছেন। উক্ত হাদিসের রাবি যুহায়র সম্পর্কে উসমান আদ-দারেমী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই। সালিহ জাযারাহ তাকে সিকাহ বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১১২৬. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি অপ্রয়োজনে পরপর তিন জুমুআহ ত্যাগ করলো, আল্লাহ তার অন্তুরে মোহর মেরে দেন। {১১২৬}

{১১২৬} আহমাদ ১৪১৪৯ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৬৫।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১১২৭. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, শোন! তোমাদের কেউ বকরী চরাবার জন্য এক বা দু মাইল দূরে চলে গেল, অতঃপর সেখানে ঘাস না পেয়ে আরও দূরে চলে গেল, তারপর জুমুআর দিন এলো, কিন্তু সে এসে জুমুআর সলাতে উপস্থিত হলো না। তারপর আরেক জুমুআহ এলো এবং সে তাতেও হাযির হলো না, তারপর আরেক জুমুআহ এলো এবং সে তাতেও হাযির হলো না, শেষে তার অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়। {১১২৭}

{১১২৭} হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ তালীকুর রগীব ২৬০ সহিহ তারগিব ৭৩৩। উক্ত হাদিসের রাবি মাদী বিন সুলায়মান সম্পর্কে ইমাম তিরমিযি তার হাদিসের ব্যাপারে সহিহ বলেছেন। ইমাম নাসাঈ তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১১২৮. সামুরাহ বিন জুনদুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় জুমুআর নামাজ ত্যাগ করলো, সে যেন এক দীনার দান-খয়রাত করে। যদি সে তা না পায়, তাহলে যেন অর্ধ দীনার দান-খয়রাত করে। {১১২৮}

{১১২৮} নাসায়ি ১৩৭২, আবু দাউদ ১০৫৬, আহমাদ ১৯৫৮৩, ১৯৬৪৬। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৩৭৪, জইফ আবু দাউদ ১৯৫-১৯৮। উক্ত হাদিসের রাবি নুহ বিন কায়স সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/৯৪. অধ্যায়ঃ জুমুআর ফরয নামাজের পূর্বের নামাজ [কাবলাল জুমুআহ্]।

১১২৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] জুমুআর [ফরয] নামাজের পূর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করিতেন এবং তাতে মাঝখানে সালাম ফিরাতেন না। {১১২৯}

তাহাকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।

{১১২৯} জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৫৫০ জইফ জিদ্দান, যঈফা ১০০১ বাতিল। উক্ত হাদিসের রাবি বাকিইয়্যাহ সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, যখন তিনি সিকাহ রাবি থেকে হাদিস বর্ণনা করেন তখন তাকে সিকাহ হিসেবে গন্য করা হইবে। ইমাম নাসাঈ বলেন, যখন তিনি হাদ্দাসানা বা আখবারনা শব্দদয় দ্বারা হাদিস বর্ণনা করেন তখন তিনি সিকাহ হিসেবে গন্য হইবেন। ২. মুবাশশির বিন উবায়দ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন ও মিথ্যুক এবং তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইমাম যাহাবী বলেন, হাদীস বিশারদগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৫/৯৫. অধ্যায়ঃ জুমুআর ফরয নামাজের পরের নামাজ [বাদাল জুমুআহ্]।

১১৩০. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জুমুআর [ফরয] নামাজ পড়ার পর তার ঘরে এসে দু রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। অতঃপর তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাই করিতেন। {১১৩০}

{১১৩০} বোখারি ৯৩৭, ১১৬৯, ১১৭৩; মুসলিম ৭২৯, ৮৮১-২; তিরমিজি ৫২১-২২, নাসায়ি ৮৭৩, ১৪২৭-২৮, আবু দাউদ ১১২৭-২৮, ১১৩০, ১১৩২, ১২৫২; আহমাদ ৪৪৯২, ৪৫৭৭, ৪৯০২, ৫২৭৪, ৫৪২৫, ৫৪৫৬, ৫৬৫৫, ৫৭৭৩, ৬০২০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪০০, দারিমি ১৪৩৭, ১৫৭৩-৭৪; ইবনি মাজাহ ১১৩১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৯১, সহিহ আবু দাউদ ১০৩২, ১০৩৩।জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩১. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] জুমুআর [ফরয] নামাজ পড়ার পর দু রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। {১১৩১}

{১১৩১} বোখারি ৯৩৭, ১১৬৯, ১১৭৩; মুসলিম ৭২৯, ৮৮১-২; তিরমিজি ৫২১-২২, নাসায়ি ৮৭৩, ১৪২৭-২৮, আবু দাউদ ১১২৭-২৮, ১১৩০, ১১৩২, ১২৫২; আহমাদ ৪৪৯২, ৪৫৭৭, ৪৯০২, ৫২৭৪, ৫৪২৫, ৫৪৫৬, ৫৬৫৫, ৫৭৭৩, ৬০২০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪০০, দারিমি ১৪৩৭, ১৫৭৩-৭৪; ইবনি মাজাহ ১১৩০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬২৪ সহিহ, আবু দাউদ ১০৩৭। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩২ আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা জুমুআর [ফরয] নামাজের পর আরো নামাজ আদায় করিতে চাইলে চার রাকআত [সুন্নাত] পড়বে। {১১৩২}

{১১৩২} মুসলিম ৮৮১-৩, তিরমিজি ৫২৩, নাসায়ি ১৪২৬, আবু দাউদ ১১৩১, আহমাদ ৭৩৫২, ৯৪০৬, ১০১০৮; দারিমি ১৫৭৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬২৫, সহিহ আবু দাউদ ১৩৬। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৯৬. অধ্যায়ঃ জুমুআর দিন নামাজের পূর্বে গোলাকার হয়ে বসা এবং ইমামের খুতবাহ দানকালে নিতম্বের উপর বসা।

১১৩৩. আবদুল্লাহ বিন আম্‌র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআর দিন [ফরয] নামাজ পড়ার পূর্বে মাসজিদে গোলাকার হয়ে বসতে নিষেধ করিয়াছেন। {১১৩৩}

{১১৩৩} তিরমিজি ৩২২, নাসায়ি ৭১৪, আবু দাউদ ১০৭৯, আহমাদ ৬৬৩৮। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ তালীক ইবনি খুযাইমাহ ১৩০৪, ১০৩৫, ১৮১৬; সহিহ আবু দাউদ ৯৯১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১১৩৪. আবদুল্লাহ বিন আম্‌র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জুমুআর দিন ইমামের খুতবাহ দানকালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিতম্বের উপর বসতে নিষেধ করিয়াছেন। {১১৩৪}

{১১৩৪} হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০১৭। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। বাকিইয়্যাহ সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, যখন তিনি সিকাহ রাবি থেকে হাদিস বর্ণনা করেন তখন তাকে সিকাহ হিসেবে গন্য করা হইবে। ইমাম নাসাঈ বলেন, যখন তিনি হাদ্দাসানা বা আখবারনা শব্দদয় দ্বারা হাদিস বর্ণনা করেন তখন তিনি সিকাহ হিসেবে গন্য হইবেন। ৩. আবদুল্লাহ বিন ওয়াকীদ সম্পর্কে ইমামগণ তাকে মাজহুল বা অপরিচিত বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫/৯৭. অধ্যায়ঃ জুমুআর দিনের আযান।

১১৩৫. সায়িব বিন ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময়ে মাত্র একজন মুযাযযিন ছিল। তিনি যখন [খুতবাহ দিতে] বের হইতেন, তখন সে আযান দিতো এবং তিনি যখন [মিম্বার থেকে] নামতেন, তখন সে ইকামাত দিতো। আবু বাক্‌র ও উমার [রাঃআঃ]-এর আমলেও এ নিয়মই চালু থাকে। উসমান [রাঃআঃ]-এর আমলে মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে গেলে তিনি বাজারে অবস্থিত আয-যাওরা নামক স্থান থেকে তৃতীয় আযান দেয়ার ব্যবস্থা করেন। অতঃপর তিনি যখন বের হইতেন, তখন মুয়াযযিন আযান দিতো এবং তিনি মিম্বার থেকে নামলে সে ইকামাত দিতো। {১১৩৫}

{১১৩৫} বোখারি ৯১২-১৩, ৯১৫-১৬; তিরমিজি ৫১৬, নাসায়ি ১৩৯২-৯৪, আবু দাউদ ১০৮৭, আহমাদ ১৫৩০১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৯৮, ৯৯৯। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৯৮. অধ্যায়ঃ ইমামের খুতবাহ দানকালে তার দিকে মুখ করে বসা।

১১৩৬. আদী বিন সাবিত, তার পিতা [সাবিত] {[আরবী] বা তার অবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি} হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] [খুতবাহ দেয়ার জন্য] মিম্বারে উঠে দাঁড়ালে তাহাঁর সহাবীগন তাহাঁর দিকে তাহাদের মুখ ঘুরিয়ে বসতেন। {১১৩৬}

{১১৩৬} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২০৮। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/৯৯. অধ্যায়ঃ জুমুআর দিন দুআ কবূল হওয়ার একটি মুহূর্ত আছে।

১১৩৭. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, জুমুআর দিন একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম বান্দা সেই মুহূর্তে নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর নিকট কল্যান প্রার্থনা করলে নিশ্চয়ই তিনি তাকে তা দান করেন। তিনি হাতের ইশারায় বলেন যে, সেই মুহূর্তটি খুবই সীমিত। {১১৩৭}

{১১৩৭} বোখারি ৯৩৫, ৫২৯৫, ৬৪০০; মুসলিম ৮৫১-৩, তিরমিজি ৪৯১, নাসায়ি ১৪৩০-৩২, আবু দাউদ ১০৪৬, আহমাদ ৭১১১, ৭৪২৩, ৭৬৩১, ৭৭১১, ৭৭৬৪, ৮৯৫৩, ৯৮৭৪, ৯৯২৯-৩০, ৯৯৭০, ১০০৮২, ১০১৬৭, ২৭২৩৪, ২৭২৬৯, ২৭৩৩৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪২-৪৩, দারিমি ১৫৬৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৭০২। জুমার নামাজের বিবরণ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩৮. আম্‌র বিন আওফ আল-মুযানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি ঃ জুমুআর দিন এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোন বান্দাহ আল্লাহ্‌র কাছে কিছু প্রার্থনা করলে তিনি তার প্রার্থিত বস্তু তাকে দান করেন। জিজ্ঞেস করা হলো ঃ কোন মুহূর্ত? তিনি বলেন, নামাজ শুরু হওয়ার মুহূর্ত থেকে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ের মধ্যে [সেই মুহূর্তটি]। {১১৩৮}

তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{১১৩৮} তিরমিজি ৪৯০ তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ ইবনি মাজাহ ১১৩৯ হাসান সহিহ, সহিহ তারগিব ৭০২ হাসান সহিহ, জইফ তারগীর ৪৪৩। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আওফ সম্পর্কে ইমাম শাফিঈ বলেন, তিনি মিথ্যুকদের একজন অথবা মিথ্যার একটি রুকন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিস দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার হাদিস নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি মিথ্যুকদের একজন।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

১১৩৯. আবদুল্লাহ বিন সালাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বসে থাকা অবস্থায় আমি বললাম, আমরা আল্লাহ্‌র কিতাবে জুমুআর দিনের এমন একটি মুহূর্ত সম্পর্কে উল্লেখ পেয়েছি যে, সেই মুহূর্তে কোন মুমিন বান্দা নামাজরত আবস্থায় আল্লাহ্‌র নিকট কিছু প্রার্থনা করলে, তিনি তার প্রয়োজন পূরন করেন। আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার দিকে ইশারা করে বললেনঃএক ঘন্টার সামান্য সময় মাত্র। আমি বললাম, আপনি যথার্থই বলেছেন, এক ঘন্টার সামান্য সময়ই। আমি বললাম, সেটি কোন মুহূর্ত? তিনি বলেন, সেটি হলো দিনের শেষ মুহূর্ত। আমি বললাম, তা নামাজের সময় নয়? তিনি বলিলেন, হাঁ। মুমিন বান্দা এক নামাজ শেষ করে বসে বসে অন্য নামাজের প্রতীক্ষায় থাকলে সে নামাজের মধ্যেই থাকে। {১১৩৯}

{১১৩৯} আহমাদ ২৩২৬৯ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীকু রগীব ২৫১, মিশকাত ১৩৫৯।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply