মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস ও নিয়ম সমূহের বর্ণনা
মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস ও নিয়ম সমূহের বর্ণনা >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (৫৬-৭২)=১৭টি
- ৫/৫৬. অধ্যায়ঃ কিবলার বর্ণনা।
- ৫/৫৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলো, সে নামাজ না পড়া পর্যন্ত বসবে না।
- ৫/৫৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রসুন খেয়েছে সে যেন মাসজিদে প্রবেশ না করে।
- ৫/৫৯. অধ্যায়ঃ নামাজরত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া হলে সে কিভাবে উত্তর দিবে।
- ৫/৬০. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি অজ্ঞতাবশত কিবলার ভিন্ন দিকে নামাজ পড়ে।
- ৫/৬১. অধ্যায়ঃ নামাজরত ব্যক্তির থুথু ফেলা।
- ৫/৬২. অধ্যায়ঃ নামাজরত অবস্থায় কাঁকড় স্পর্শ করা।
- ৫/৬৩. অধ্যায়ঃ চাটাইয়ের উপর নামাজ পড়া।
- ৫/৬৪. অধ্যায়ঃ ঠাণ্ডা বা গরমের কারণে কাপড়ের উপর সিজদা করা।
- ৫/৬৫. অধ্যায়ঃ সলাতে পুরুষদের জন্য তাসবীহ এবং নারীদের জন্য হাততালি।
- ৫/৬৬. অধ্যায়ঃ জুতা পরে নামাজ আদায়।
- ৫/৬৭. অধ্যায়ঃ নামাজরত অবস্থায় চুল ও কাপড় গুটানো।
- ৫/৬৮ অধ্যায়ঃ সলাতে বিনয়ভাব জাগ্রত করা।
- ৫/৬৯. অধ্যায়ঃ এক কাপড়ে নামাজ পড়া।
- ৫/৭০. অধ্যায়ঃ কুরআন তিলাওয়াতের সিজদাসমূহ।
- ৫/৭১. অধ্যায়ঃ কুরআন মাজীদে তিলাওয়াতের সিজদার সংখ্যা।
- ৫/৭২. অধ্যায়ঃ নামাজকে পুর্নাঙ্গ করা।
৫/৫৬. অধ্যায়ঃ কিবলার বর্ণনা।
১০০৮. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বায়তুল্লাহ [কাবা ঘর] তাওয়াফ শেষে মাকামে ইবরাহীমে আসেন। তখন উমার [রাঃআঃ] বলেন, হে আল্লাহর রসূল! এটা তো আমাদের পিতা ইবরাহীম [আঃ] -এর মাকাম, যে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন
وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
“তোমারা মাকামে ইবরাহীমকে নামাজের স্থানরূপে গ্রহণ করো” [সূরা বাকারাঃআঃ ১২৫]। ওলীদ বিন মুসলিম [রাঃআঃ] বলেন, আমি ইমাম মালিক [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এভাবে وَاتَّخِذُوا “ওয়াত্তাখিযু” পড়েছেন? তিনি বলেন, হাঁ।{১০০৮}
{১০০৮} বোখারি ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭; মুসলিম ১২১৩, ১২১৫, ১২১১-৫, ১২১১-৩, ১২৬১-২, ১২৭৩, ১২৭৯, ১২৯৯; তিরমিজি ৮১৭, ৮৫৬-৫৭, ৮৬২, ৮৬৯, ৮৮৬, ৮৯৭, ৯৪৭, ২৯৬৭, ৩৭৮৬; নাসায়ি ২১৪, ২৯১, ৩৯২, ৪২৯, ৬০৪, ২৭১২, ২৭৪০, ২৭৪৩-৪৪, ২৭৫৬, ২৭৬১-৬৩, ২৭৯৮, ২৮০৫, ২৮৭২, ২৯৩৯, ২৯৪৪, ২৯৬১, ২৯৬২-৬৩, ২৯৬৯-৭৫, ২৯৮১-৮৫, ২৯৯৪, ৩০২১-২২, ৩০৫৩-৫৪, ৩০৭৪-৭৬, ৪১১৯; আবু দাউদ ১৭৮৫, ১৭৮৭-৮৯, ১৮১২, ১৮৮০, ১৮৯৫, ১৯০৫-৭, ১৯৪৪, ৩৯৬৯; আহমাদ ১৩৭০২, ১৩৮০১, ১৩৮২৬, ১৩৮৬৭, ১৪০০৯, ১৪০৩১, ১৪১৬১, ১৪২৫০, ১৪৪৮৪, ১৪৫২৫, ১৪৫৮৯, ১৪৬২১, ১৪৬৬৭, ১৪৭৩৫, ১৪৮২১, ১৪৮৫১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৮১৬, ৮৩৫-৩৬, ৮৪০; দারিমি ১৮০৫, ১৮৪০, ১৮৫০, ১৮৯৯; মাজাহ ২৯১৩, ২৯১৯, ২৯৫১, ২৯৬০, ২৯৬৬, ২৯৭২-৭৩, ২৯৮০, ৩০২৩, ৩০৭৪, ৩০৭৬, ৩১৫৮। তাহকিক আলবানিঃ । তাখরিজ আলবানিঃ ইবনি মাজাহ ২৯৬০ সহিহ, মিশকাত ২৫৫৫ সহিহ।উক্ত হাদিসের রাবি ১. আব্বাস বিন উসমান দিমাশকী সম্পর্কে ইমাম যাহাবী সিকাহ বললেও ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি কখনো কখনো সিকাহ রাবির বিপরীত বর্ণনা করেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মুনকার
১০০৯. আনাস বিন মালিক হইতে বর্ণিতঃ
উমার [রাঃআঃ] বলেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি মাকামে ইবরাহীমকে নামাজের স্থানরূপে গ্রহণ করিতেন! তখন নাযিল হলোঃ
وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
“তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়ানোর স্থানকে নামাজের স্থানরূপে গ্রহণ করো” [সূরা বাকারাঃআঃ ১২৫]।{১০০৯}
{১০০৯} বোখারি ৪০২, ৪৪৮৩; মুসলিম ২৩৯৯, তিরমিজি ২৯৫৯-৬০, আহমাদ ১৫৮, দারিমি ১৮৪৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১০. আল-বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আঠার মাস যাবত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে বাইতুল মাকদিসের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ি। তাহাঁর হিজরত করে মদীনাহ্য় আসার দুমাস পর কাবা শরীফের দিকে কিবলা পরিবর্তিত করা হয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন বাইতুল মাকদিসের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করিতেন, তখন অধিকাংশ সময় তিনি তাহাঁর মুখমণ্ডল আকাশের দিকে ফিরাতেন। আল্লাহ তাহাঁর নবীর মনের আকাঙ্খা জানতেন যে, তিনি কাবাকে পছন্দ করেন। জিবরাঈল [আঃ] আরোহণ করেন এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর দৃষ্টি তাহাঁর অনুসরণ করে। তিনি আসমান ও যমীনের মাঝখান দিয়ে অগ্রসর হন। নবী [সাঃআঃ] লক্ষ্য করেন, তিনি কী হুকুম নিয়ে আসেন তাহাঁর জন্য। তখন আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন
قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ
“আকাশের দিকে তোমর বারবার তাকানোকে আমি অবশ্য লক্ষ্য করছি ….” [সূরা বাকারাঃআঃ ১৪৪]।
এরপর আমাদের কাছে একজন আগন্তুক এসে বলেন, নিশ্চয় কিবলা তো কাবার দিকে পরিবর্তিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বায়তুল মাকদিসকে কিবলা করে আমাদের দুরাকআত নামাজ পড়া হয়েছে। আমরা রুকূতে থাকা অবস্থায় [নতুন] কিবলার দিকে ঘুরে গেলাম এবং আমাদের অবশিষ্ট নামাজ বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে পড়লাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, হে জিবরাঈল! আমাদের বাইতুল মাকদিসের নামাজের অবস্থা কী? তখন মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন
وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ
“আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমদের ঈমান নষ্ট করবেন” [সূরা বাকারাঃআঃ ১৪৩]। {১০১০}
{১০১০} বোখারি ৪১, ৩৯৯, ৪৪৮৬, ৪৪৯২, ৭২৫২; মুসলিম ৫২১-২, তিরমিজি ৩৪০, নাসায়ি ৪৮৮-৮৯, ৭৪২; আহমাদ ১৮০২৬, ১৮০৬৮। তাহকিক আলবানিঃ মুনকার। উক্ত হাদিসের রাবি আলকামাহ বিন আমর আদ-দারিমি সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
১০১১. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝখানে কিবলা অবস্থিত। {১০১১}
{১০১১} তিরমিজি ৩৪২, ৩৪৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৭১৫, ইরওয়াহ ২৯২। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৫৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলো, সে নামাজ না পড়া পর্যন্ত বসবে না।
১০১২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কেউ মাসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন দু রাকআত নামাজ না পড়া পর্যন্ত না বসে।{১০১২}
সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ সম্পর্কে মাসলামাহ বিন কাসিম তাকে সিকাহ বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তার বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। ২. কাসীর বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি আম্মার সিকাহ বললেও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার মাঝে দুর্বলতা আছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি তার মাঝে খারাফ কিছু দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে খারাফ কিছু নেই। ৩. মুত্তালিব বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইরসাল করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয় কারণ তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ইরসাল করেন।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১০১৩. হারিস বিন রিবঈ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কোন ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার আগে দু রাকআত নামাজ পড়ে।{১০১৩}
{১০১৩} বোখারি ৪৪৪, ১১৬৭; মুসলিম ৭১৪, তিরমিজি ৩১৬, নাসায়ি ৭৩০, আবু দাউদ ৪৬৭, আহমাদ ২২০১৭, ২২০২৩, ২২০৭২, ২২০৮৮, ২২১৪৬; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৮৮, দারিমি ১৩৯৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৬৭, সহিহ আবু দাউদ ৪৮৬। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৫৮. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি রসুন খেয়েছে সে যেন মাসজিদে প্রবেশ না করে।
১০১৪. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] জুমুআহর খুতবাহ দিতে দাঁড়ান অথবা তিনি জুমুআহর দিন খুতবাহ দেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বলেন, হে লোকসকল! তোমরা দুটি গাছ খেয়ে থাকো, আমার দৃষ্টিতে তা নিকৃষ্টঃ এই রসুন ও এই পিয়াজ। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর যুগে দেখতাম, যার মুখ থেকে এর দুর্গন্ধ পাওয়া যেতো, তার হাত ধরে তাকে আল-বাকী নামক স্থানের দিকে বের করে দেয়া হতো। অতএব যে ব্যক্তি তা খেতেই চায়, সে যেন তা রান্না করে খায়। {১০১৪}
{১০১৪} মুসলিম ৫৬৭, নাসায়ি ৭০৮, আহমাদ ৯০, ৪৪৩; মাজাহ ৩৩৬৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১৫. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি এই গাছ অর্থাৎ রসুন খায়, সে যেন তার দ্বারা আমাদের এই মাসজিদে [এসে] আমাদের কষ্ট না দেয়। ইবরাহীম বিন সাদ [রাঃআঃ] বলেন, আমার পিতা এর সাথে দুর্গন্ধযুক্ত তরকারী ও পিঁয়াজকে শামিল করিতেন। অর্থাৎ তিনি রসুন সম্পর্কিত আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদীসের সাথে ঐগুলোকেও যোগ করিতেন।{১০১৫}
{১০১৫} মুসলিম ৫৬৩, আহমাদ ৭৫২৯, ৭৫৫৫, ৯২৬০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ২০৬ পৃষ্ঠা। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি এই গাছের কিছু খায়, সে যেন মাসজিদে না আসে। {১০১৬}
{১০১৬} বোখারি ৮৫৩, ৪২১৫; মুসলিম ৫৬১-২, আবু দাউদ ৩৮২৫, দারিমি ২০৫৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৫৯. অধ্যায়ঃ নামাজরত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া হলে সে কিভাবে উত্তর দিবে।
১০১৭. আবদুল্লাহ ইন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ পড়ার জন্য কুবা মাসজিদে আসেন। তখন একদল আনসারী তাঁকে সালাম দিতে আসেন। আমি তাহাঁর সঙ্গী সুহাইব [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কিভাবে তাহাদের সালামের জবাব দিতেন? তিনি বলেন, তিনি তাহাঁর হাত দিয়ে ইশারা করিতেন।{১০১৭}
{১০১৭} নাসায়ি ১১৮৬-৮৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৬০। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১৮. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] একটি বিশেষ কাজে আমাকে পাঠান। আমি ফিরে এসে তাঁকে নামাজরত অবস্থায় পেলাম। আমি তাঁকে সালাম দিলে তিনি আমার দিকে ইশারা করেন। তিনি নামাজ শেষ করে আমাকে ডেকে বলেন, তুমি এইমাত্র আমাকে সালাম দিয়েছো এবং আমি তখন নামাজ পড়ছিলাম? {১০১৮}
{১০১৮} মুসলিম ৫৪০/১-২, নাসায়ি ১১৮৯-৯০, আবু দাউদ ৯২৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৫৯। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০১৯. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নামাজরত অবস্থায় সালাম দিতাম। আমাদের বলা হলোঃ নামাজের মধ্যে অবশ্যই একটা ব্যস্ততা আছে।{১০১৯}
{১০১৯} বোখারি ১১৯৯, ১২১৬, ৩৮৭৫; মুসলিম ৫৩৮, নাসায়ি ১২২০-২১, আবু দাউদ ৯২৩-২৪, আহমাদ ৩৫৫৩, ৩৮৭৪, ৩৯৩৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৫৬। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬০. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি অজ্ঞতাবশত কিবলার ভিন্ন দিকে নামাজ পড়ে।
১০২০. রবীআহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম] -এর সাথে ছিলাম। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় কিবলা নির্ণয় করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়লো। আমরা নামাজ পড়লাম এবং একটি চিহ্ন রাখলাম। এরপর সূর্য উদ্ভাসিত হলে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আমরা কিবলা ছাড়া অন্যদিকে নামাজ আদায় করেছি। আমরা বিষয়টি নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট উত্থাপন করলাম। তখন আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন
فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ
“তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও সেদিকই আল্লাহ্র দিক” [সূরা বাকারাঃআঃ ১১৫]। {১০২০}
{১০২০} তিরমিজি ৩৪৫ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২৯১। উক্ত হাদিসের রাবি আশআস বিন সাঈদ আবু রাবি আস সাম্মান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল মুদতারাব বলেছেন। ইবনি মাহদী তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। আমর বিন ফাল্লাস তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। ২. আসিম বিন উবায়দুল্লাহ বিন আমির বিন রাবিআহ সম্পর্কে ইবনি মাহদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক মুনকার। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তার মাধ্যমে দলীল গ্রহন করা যাবে না।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫/৬১. অধ্যায়ঃ নামাজরত ব্যক্তির থুথু ফেলা।
১০২১. তারিক বিন আবদুল্লাহ আল-মুহারিবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তুমি নামাজরত অবস্থায় তোমার সামনে ও ডানে থুথু ফেলবে না, বরং তোমরা বামে অথবা তোমার পায়ের নিচে থুথু ফেলবে। {১০২১}
{১০২১} তিরমিজি ৫৭১, নাসায়ি ৭২৬, আবু দাউদ ৪৭৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৯৭, সহিহা ১২২৩। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাসজিদে কিবলার দিকে থুথু পতিত দেখিতে পেয়ে লোকেদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, তোমাদের কারো কী হলো যে, তার রবের সামনে দাঁড়ায় এবং তার সামনের দিকে থুথু নিক্ষেপ করে? তোমাদের কেউ কি তার সামনে থেকে তার মুখে থুথু নিক্ষিপ্ত হওয়া পছন্দ করে? অতএব তোমাদের কেউ যখন থুথু ফেলবে, তখন সে যেন তা তার বাম দিকে ফেলে অথবা এভাবে কাপড়ে ফেলে। অতঃপর ইসমাঈল বিন উলাইয়্যা তার থুথু নিক্ষেপ করে তা রগড়িয়ে আমাকে দেখান।{১০২২}
{১০২২} বোখারি ৪০৯, ৪১১, ৪১৪, ৪১৬; মুসলিম ৫৪৮-৫০, নাসায়ি ৩০৯, ৭২৫; আবু দাউদ ৪৭৭, ৪৮০; আহমাদ ৭৩৫৭, ৭৪৭৮, ৭৫৫৪, ২৭৪৫৩, ৮০৯৮, ৯১০২, ৯৭৪৬, ১০৫০৮, ১০৬৪২, ১০৬৮০, ১০৮০১, ১১১৫৬, ১১২৩০, ১১৪২৭, ১১৪৬৯; দারিমি ১৩৯৮, মাজাহ ৭৬১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ২৮০।মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৩. হুযায়ফাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি শাবাস বিন রিবঈকে তার সামনে থুথু ফেলতে দেখে বলেন, হে শাবাছ! তোমার সামনের দিকে থুথু ফেলো না। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা করিতে নিষেধ করিতেন এবং বলিতেনঃ কোন ব্যক্তি যখন সলাতে দাঁড়ায় তখন আল্লাহ তার সামনে থাকেন, যতক্ষণ না সে নামাজ শেষ করে ফিরে যায় অথবা কোন নিকৃষ্ট আচরণ করে।{১০২৩}
{১০২৩} হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১৫৯৬। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে অধিক ভুল করেন। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান তাকে সিকাহ বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০২৪. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজরত অবস্থায় তাহাঁর কাপড়ে থুথু ফেলেন, অতঃপর তা ঘষে ফেলেন। {১০২৪}
{১০২৪} বোখারি ২৪১, ৪০৫, ৪১৭; নাসায়ি ৩০৮, আবু দাউদ ৩৮৯, দারিমি ১৩৯৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬২. অধ্যায়ঃ নামাজরত অবস্থায় কাঁকড় স্পর্শ করা।
১০২৫. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি [নামাজরত অবস্থায়] কাঁকড় স্পর্শ করলো সে বাজে কাজ করলো।{১০২৫}
{১০২৫} আহমাদ ৯২০০ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৬. মুআইকীব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] নামাজরত অবস্থায় পাথর স্পর্শ করা সম্পর্কে বলেছেন, তোমার যদি তা করিতেই হয় তবে মাত্র একবার। {১০২৬}
{১০২৬} বোখারি ১২০৭, মুসলিম ৫৪১-৩, তিরমিজি ৩৮০, নাসাঈ ১১৯২, আবু দাউদ ৯৪৬, আহমাদ ১৫৮৩, ২৩৯৭, দারিমি ১৩৮৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৫৫৭, সহিহ আবু দাউদ ৮৭২। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৭. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ সলাতে দাঁড়ানোর পর যেন আর কাঁকর না সরায়। কেননা তখন রহমাত তার অভিমুখী হয়। {১০২৭}
{১০৭} তিরমিজি ৩৭৯, আবু দাউদ ৯৪৫, দারিমি ১৩৮৮। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ৯৪৫ জইফ, ইরওয়া ৩৭৭, জামি সগীর ৩১৬ জইফ, নাসায়ি ১১৯১ জইফ, তিরমিজি ৩৭৯ জইফ, মিশকাত ১০০১, ইরওয়াহ ৩৭৭, জইফ আবু দাউদ ১৭৫।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫/৬৩. অধ্যায়ঃ চাটাইয়ের উপর নামাজ পড়া।
১০২৮. নবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী মায়মূনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চাটাইয়ের উপর নামাজ আদায় করিতেন। {১০২৮}
{১০২৮} বোখারি ৩৩৩, ৩৮৯, ৩৮১, মুসলিম ৫১৩ নাসায়ি ৭৩৮, আবু দাউদ ৬৫৬, আহমাদ ২৬২৬৫, ২৬২৬৮, ২৬৩০৯, ২৬৩১১, দারিমি ১৩৭৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৬৩। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০২৯. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চাটাইয়ের উপর নামাজ আদায় করিতেন।{১০২৯}
{১০২৯} মুসলিম ৫১৯, তিরমিজি ৩৩২, আহমাদ ১১০৯৭, ১১১৬৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
বসরায় অবস্থানকালে তার বিছানার উপর নামাজ আদায় করিয়াছেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর সঙ্গীদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর বিছানার উপর নামাজ আদায় করিতেন। {১০৩০}
{১০৩০} তিরমিজি ৩৩১, আহমাদ ২৪২২, ২৮০৯, ২৯৩৪, ৩৩৬১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৬৫। উক্ত হাদিসের রাবি দমআহ বিন সালিহ সম্পর্কে ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন, তবে আমি আশা করি কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি সিকাহ রাবির বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬৪. অধ্যায়ঃ ঠাণ্ডা বা গরমের কারণে কাপড়ের উপর সিজদা করা।
১০৩১. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান [মাকবূল] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট আসেন এবং আমাদেরকে সাথে নিয়ে আবদুল আশহাল গোত্রের মাসজিদে নামাজ পড়েন। সিজদা করাকালে আমি তাঁকে তাহাঁর উভয় হাত তাহাঁর কাপড়ের উপর রাখতে দেখেছি। {১০৩১}
{১০৩১} আহমাদ ১৮৪৭৪। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়া ৩১২ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন আবু হাবীবাহ সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৩২. সাবিত ইবনিস-সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবদুল আশহাল গোত্রে নামাজ পড়েন। তাহাঁর গায়ে জড়ানো ছিল একখানা চাদর। পাথরের ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য তিনি তাহাঁর দুহাত ঐ চাদরের উপর রাখেন।{১০৩২}
জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন আবু উওয়ায়স সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম নাসাঈ তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৩৩. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা প্রচণ্ড গরমের সময় নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে নামাজ পড়তাম। আমাদের কেউ [মাটিতে] তাহাঁর কপাল রাখতে অসমর্থ হলে তার কাপড় বিছিয়ে তার উপর সিজদা করতো। {১০৩৩}
{১০৩৩} বোখারি ৩৮৫, ৫৪২, ১২০৮, মুসলিম ৬২০, তিরমিজি ৫৮৪, নাসায়ি ১১১৬, আবু দাউদ ৬৬০, আহমাদ ১১৫৫৯ দারিমি ১৩৩৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩১১, সহিহ আবু দাউদ ৬৬৬। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬৫. অধ্যায়ঃ সলাতে পুরুষদের জন্য তাসবীহ এবং নারীদের জন্য হাততালি।
১০৩৪. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, পুরুষদের জন্য তাসবীহ এবং নারীদের জন্য হাততালি। {১০৩৪}
{১০৩৪} বোখারি ১২০৩, মুসলিম ৪২২, তিরমিজি ৩৬৯, নাসায়ি ১২০৭, ১২০৮, ১২০৯, ১২১০, আবু দাউদ ৯৩৯, ৯৪৪, আহমাদ ৭২৪৩, ৭৪৯৭, ২৭৪২১, ৮৬৭৪, ৯৩০২, ৯৩৮৯, ৯৭৬৪, ৯৮৫৬, ১০২১৩, ১০৪৭০, দারিমি ১৩৬৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৬৭। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৫. সাহল বিন সাদ আস-সাঈদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, পুরুষদের জন্য তাসবীহ এবং নারীদের জন্য হাততালি। {১০৩৫}
{১০৩৫} বোখারি ৬৮৪, ১২০৪, ১২১৮, ১২৩৪, ২৬৯০, ৭১৯০, মুসলিম ৪২১, নাসায়ি ৭৮৪, ৭৯৩, ১১৮৩, আবু দাউদ ৯৪০, আহমাদ ২২২৯৫, ২২৩০১, ২২৩০৯, ২২৩৪১, ২২৩৫৬, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৯২, দারিমি ১৩৬৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৬৮। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নারীদের জন্য হাততালি এবং পুরুষদের জন্য তাসবীহ পাঠের অনুমতি দিয়েছেন।
সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬৬. অধ্যায়ঃ জুতা পরে নামাজ আদায়।
১০৩৭. আওস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
কখনো কখনো নামাজরত অবস্থায় আমার দিকে ইশারা করিতেন। আমি তার জুতা জোড়া এগিয়ে দিতাম। তিনি বলিতেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তাহাঁর জুতাজোড়া পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করিতে দেখেছি।{১০৩৭}
{১০৩৭} আহমাদ ১৫৭২৪, ১৫৭৩৪, ১৫৭৪৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি আবু আওস সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তার জারাহ তাদীল সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৮. আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে খালি পায়েও এবং জুতা পরিহিত অবস্থায়ও নামাজ আদায় করিতে দেখেছি।{১০৩৮}
{১০৩৮} আবু দাউদ ৬৫৩, আহমাদ ৬৫৯০, ৬৭৮৯, ৬৯৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৬০। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৩৯. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জুতা পরিহিত অবস্থায় এবং মোজা পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করিতে দেখেছি।{১০৩৯}
{১০৩৯} আহমাদ ৪৩৯২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬৭. অধ্যায়ঃ নামাজরত অবস্থায় চুল ও কাপড় গুটানো।
১০৪০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আমি যেন [নামাজরত অবস্থায়] চুল বা পরিধেয় বস্ত্র না গুটাই। {১০৪০}
{১০৪০} বোখারি ৮০৯-১০, ৮১২, ৮১৫-১৬; মুসলিম ৪৯০/১-৫, তিরমিজি ২৭৩, নাসায়ি ১০৯৩, ১০৯৬-৯৮, ১১১৩, ১১১৫; আবু দাউদ ৮৮৯-৯০, আহমাদ ২৫২৩, ২৫৭৯, ২৫৮৩, ২৬৫৩, ২৭৭৩, ২৯৭৬; দারিমি ১৩১৮-১৯, ইবনি মাজাহ ৮৮৩-৮৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪১. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আদিষ্ট হয়েছি যে আমরা যেন চুল ও কাপড় না গুটাই এবং আবর্জনার স্থান অতিক্রম করলে উযু না করি। {১০৪১}
{১০৪১} আবু দাউদ ২০৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৮৩, সহিহ আবু দাউদ ১৯৯। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪২. আবু সাদ শুরাইবীল [ইব্নু সাদ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মুক্ত করা দাস আবু রাফি [আসলাম] [রাঃআঃ] -কে দেখলাম যে, তিনি হাসান বিন আলী [রাঃআঃ]-কে চুল বাঁধা অবস্থায় নামাজ আদায় করিতে দেখে তা খুলে দিলেন বা তাকে নিষেধ করিলেন এবং বলিলেন, রসূলুল্লাহব [সাঃআঃ] চুলের খোঁপা বেঁধে পুরুষদের নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন।{১০৪২}
{১০৪২} আহমাদ ২৬৬৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৩৮৬, সহিহ আবু দাউদ ৬৫৩। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬৮ অধ্যায়ঃ সলাতে বিনয়ভাব জাগ্রত করা।
১০৪৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা নামাজরত অবস্থায় তোমাদের দৃষ্টি আকাশের দিকে উঠাবে না, অন্যথায় তোমাদের দৃষ্টি ছিনিয়ে নেয়া হইতে পারে। {১০৪৩}
ইমাম ইবনি মাজাহ হাদিসটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪৪. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের নিয়ে নামাজ পড়েন। তিনি নামাজ শেষ করে লোকেদের দিকে তাহাঁর মুখ ফিরিয়ে বলেন, লোকেদের কী হলো যে, তারা আকাশের দিকে তাকায়। এ ব্যাপারে তিনি কঠোর মন্তব্য করেন। অবশ্যই তারা যেন তা থেকে বিরত থাকে, অন্যথায় আল্লাহ নিশ্চয় তাহাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিবেন। {১০৪৪}
{১০৪৪} বোখারি ৭৫০, নাসায়ি ১১৯৩, আবু দাউদ ৯১৩, আহমাদ ১১৬৫৪, ১১৬৯৪, ১১৭৩৬, ১১৭৪৫, ১২০১৮, ১৩২৯৯, দারিমি ১৩০২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৫৪৮, সহিহ আবু দাউদ ৮৪৭। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪৫. জাবির বিন সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
, নবী [সাঃআঃ] বলেন, লোকেরা যেন আকাশের দিকে তাহাদের চোখ তোলা থেকে অবশ্যই বিরত থাকে, অন্যথায় তারা তাহাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে না।{১০৪৫}
{১০৪৫} মুসলিম ৪২৮, আবু দাউদ ৯১২, আহমাদ ২০৩২৬, ২০৩৬৩, ২০৪৫৭, ২০৫৩৭, দারিমি ১৩০১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব সহিহ, আবু দাউদ ৮৪৬। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক পরমা সুন্দরী মহিলা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পেছনে সলাহ আদায় করতো। কতক লোক সামনের কাতারে এগিয়ে যেতো যাতে তার প্রতি তার দৃষ্টি না পড়ে এবং কতক লোক পেছনের শেষ কাতারে সরে যেতো। সে রুকুতে গিয়ে নিজ বগলের নিচ দিয়ে [তার প্রতি] তাকাতো। তখন আল্লাহ সেই মহিলাটি সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল করেন [অনুবাদ] ঃ “আমি তোমাদের মধ্যকার অগ্রগামীদেরকেও জানি এবং পশ্চাদগামীদেরকেও জানি”- [সূরা হিজরঃ ২৪]। {১০৪৬}
{১০৪৬} তিরমিজি ৩১২২, নাসায়ি ৮৭০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৪৭২। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬৯. অধ্যায়ঃ এক কাপড়ে নামাজ পড়া।
১০৪৭. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ! আমাদের কেউ কেউ এক কাপড়ে নামাজ পড়ে। নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের প্রত্যেকের কি দুটি করে পরিধেয় বস্ত্র আছে? {১০৪৭}
তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। সহিহ আবু দাউদ।{১০৪৭} বোখারি ৩৫৮, ৩৬৫, মুসলিম ৫১১-২, নাসায়ি ৭৬৩, আবু দাউদ ৬২৫, আহমাদ ৭১০৯, ৭২১০, ৭৫৫১, ৮৩৪৪, ১০০৪৬, ১০০৮৬, ১০১০৭, ১০১২৫, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩২০, দারিমি ১৩৭০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪৮. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তিনি এক কাপড় পরিহিত অবস্থায় তার দু প্রান্ত কাঁধের সাথে বেঁধে নামাজ পড়ছিলেন। {১০৪৮}
{১০৪৮} মুসলিম ৫১৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৪৯. উমার বিন আবু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে একটি কাপড় জড়িয়ে তার দুপ্রান্ত তাহাঁর দু কাঁধে বেঁধে নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। {১০৪৯}
{১০৪৯} বোখারি ৩৫৪, ৩৫৫, ৩৫৬, মুসলিম ৫১১-৩, তিরমিজি ৩৩৯, নাসায়ি ৭৬৪, আবু দাউদ ৬২৮, আহমাদ ১৫৮৯৪, ১৫৯০০, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩১৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৩৯। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৫০. কায়সান বিন জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বিরে উলিয়া নামক কূপের নিকট এক কাপড়ে নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। {১০৫০}
{১০৫০} আহমাদ ১৫০১৯, ইবনি মাজাহ ১০৫১। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন কায়সান সম্পর্কে ইমামগণ মাসতুর বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০৫১. কায়সান বিন জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে একটি কাপড় পড়ে যোহর ও আসরের নামাজ আদায় করিতে দেখেছি।{১০৫১}
{১০৫১} আহমাদ ১৫০১৯, ইবনি মাজাহ ১০৫০। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন কায়সান সম্পর্কে ইমামগণ মাসতুর বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫/৭০. অধ্যায়ঃ কুরআন তিলাওয়াতের সিজদাসমূহ।
১০৫২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বনী আদম যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা দেয় তখন শায়তান কাঁদতে কাঁদতে দূরে সরে যায় আর বলেঃ আফসোস! বনী আদমকে সিজদা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং সে সিজদা করছে। তাই তার প্রতিদান জান্নাত। আর আমাকে সিজদা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, আমি তা অমান্য করেছি। তাই আমার প্রতিদান হলো জাহান্নাম।{১০৫২}
{১০৫২} মুসলিম ৮১, আহমাদ ৯৪২০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৫৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] , এর সুত্রে আমাকে অবহিত করেন যে, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, আমি গতরাতে স্বপ্নে দেখলাম যে আমি একটি গাছের গোড়ায় নামাজ পরছি এবং তাতে আমি সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করছি। আমি সিজদা করলাম এবং গাছটিও আমার অনুরূপ সিজদা করলো। আমি গাছটিকে বলিতে শুনলাম, আর-বি “হে আল্লাহ! এই সিজদার দ্বারা আমার গুনাহ অপসারিত করুন, আমার জন্য পুরস্কার নির্ধারণ করুন এবং এটাকে আপনার নিকট সঞ্চয় হিসাবে জমা রাখুন”। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, আমি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করার পর সিজদা দিতে দেখেছি এবং তাঁকে তাহাঁর সিজদায় সেই দুআ করিতে শুনলাম, গাছটির যে দুআ ঐ ব্যক্তি তাঁকে অবহিত করেছিল। {১০৫৩}
{১০৫৩} তিরমিজি ৫৭৯, ৩৪২৪। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১০৩৬, সহিহা ২৭১০। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০৫৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর তিলাওয়াতের সিজদায় বলিতেনঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য সিজদা করলাম, তোমার উপর ঈমান আনলাম, তোমার নিকট আত্মসমর্পণ করলাম এবং তুমিই আমার প্রভু। আমার মুখমণ্ডল সেই মহান সত্তাকে সিজদা করলো, যিনি এর কানের শ্রবণশক্তি ও চোখের দৃষ্টিশক্তি দান করিয়াছেন। সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান।”{১০৫৪}
{১০৫৪} মুসলিম ৭৭১, তিরমিজি ৩৪২১, ৩৪২২, ৩৪২৩, আবু দাউদ ৭৬০, আহমাদ ৭৩১, ৮০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৩৮। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৭১. অধ্যায়ঃ কুরআন মাজীদে তিলাওয়াতের সিজদার সংখ্যা।
১০৫৫. হুজায়মাহ বিনতু হুওয়ায় [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবুদ-দারদা [রাঃআঃ] আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী [সাঃআঃ] এর সাথে এগারটি সিজদা করিয়াছেন। সূরা নাজম-এর সিজদাও তার অন্তর্ভুক্ত। {১০৫৫}
{১০৫৫} তিরমিজি ৫৬৮৭, আহমাদ ২৬৯৪৮, ইবনি মাজাহ ১০৫৬। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জইফ আবু দাউদ ২৩৮, ২৩৯। উক্ত হাদিসের রাবি উমার আদ-দিমাশকী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে তিনি কে? তা জানা যায়না। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৫৬. উইয়াইমির বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর সাথে এগারটি সিজদা করেছি, তার মধ্যে মুফাসসাল সূরা ছিল না [সিজদার সূরাসমূহ] ঃ সূরা আরাফ, রাদ, নাহল, বানূ ইসরাঈল, মারয়াম, হজ্জ , ফুরকান, নাম্ল, আস-সাজদা, সাদ ও হমীম সংযুক্ত সূরাসমূহ। {১০৫৬}
{১০৫৬} তিরমিজি ৫৬৮৭, আহমাদ ২৬৯৪৮, ইবনি মাজাহ ১০৫৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি উসমান বিন ফায়িদ সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে দুর্বলতা রয়েছে। ইবনি হিব্বান বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। ২. মাহদী বিন আব্দুর রহমান বিন উবায়দাহ বিন খাতির সম্পর্কে ইমামগণ মাজহুল বা অপরিচিত বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৫৭. আম্র ইবনিল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে কুরআনের পনেরোটি সাজদাহ্ পড়িয়েছেন। তন্মধ্যে মুফাসসাল সূরায় তিনটি এবং সূরা হাজ্জে দুটি সাজদাহ্ রয়েছে। {১০৫৭}
{১০৫৭} আবু দাউদ ১৪০১। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ১৪০১ জইফ, মিশকাত ১০২৯। উক্ত হাদিসের রাবি হারিস বিন সাঈদ আল-উতাকী সম্পর্কে ইবনি কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানা যায়না। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি অপরিচিত। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০৫৮. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে সূরা ইযাসা্মাউন শাক্কাত ও সূরা ইক্রা বিস্মে রব্বিকায় সিজদা করেছি। {১০৫৮}
{১০৫৮} বোখারি ৭৬৬, ৭৬৮, ১০৭৪, ১০৭৮, মুসলিম ৫৭১-৫, তিরমিজি ৫৭৩, নাসায়ি ৯৬১, ৯৬২, ৯৬৩, ৯৬৫, ৯৬৬, ৯৬৭, ৯৬৮, আবু দাউদ ১৪০৭, ১৪০৮, আহমাদ ৭১০০, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৭৮, দারিমি ১৪৬৮, ১৪৬৯, ১৪৭০, ১৪৭১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৬৮। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৫৯. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] ইযাস সামাউন শাক্কাত সূরাতে সিজদা করিয়াছেন। আবু বকর বিন আবু শায়বা [রহঃ] বলেন, এই হাদীসটি ইয়াহইয়া বিন সাঈদ [রহঃ] সুত্রে বর্ণিত। আমি তাকে ছাড়া আর কাউকে হাদীসটি উল্লেখ করিতে শুনিনি। {১০৫৯}
{১০৫৯} বোখারি ৭৬৬, ৭৬৮, ১০৭৪, ১০৭৮, মুসলিম ৫৭১-৫, তিরমিজি ৫৭৩, নাসায়ি ৯৬১, ৯৬২, ৯৬৩, ৯৬৫, ৯৬৬, ৯৬৭, ৯৬৮, আবু দাউদ ১৪০৭, ১৪০৮, আহমাদ ৭১০০, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৭৮, দারিমি ১৪৬৮, ১৪৬৯, ১৪৭০, ১৪৭১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৬৯। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৭২. অধ্যায়ঃ নামাজকে পুর্নাঙ্গ করা।
১০৬০. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করে নামাজ পড়লো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখন মাসজিদের এক পাশে অবস্থান করছিলেন। সে এসে তাঁকে সালাম দিল। তিনি বলেন, তোমার প্রতিও, তুমি ফিরে যাও, আবার নামাজ পড়ো। কেননা তুমি নামাজ পড়োনি। সে ফিরে যেয়ে নামাজ পড়লো, তারপর এসে নবী [সাঃআঃ] কে সালাম দিল। তিনি বলিলেন তোমার প্রতিও, ফিরে যাও এবং নামাজ পড়ো। কেননা তুমি নামাজ পড়োনি। তৃতীয়বারে সে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বলেন, তুমি নামাজ পড়ার ইচ্ছা করলে উত্তমরূপে উযু করো, তারপর কিবলামুখী হয়ে তাকবীর [তাহরীমা] বলো, এরপর কুরআনের যে অংশ তোমার কাছে সহজ সেখান থেকে কিরাআত পাঠ করো, তারপর ধীরস্থিরভাবে রুকূ করো, অতঃপর রুকূ থেকে দাঁড়িয়ে সোজা হও, তারপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা করো, অতঃপর মাথা তুলে সোজা হয়ে বসো। তুমি তোমার গোটা নামাজ এভাবে পড়ো। {১০৬০}
{১০৬০} ইবনি মাজাহ ৩৬৯৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২৮৯, সহিহ আবু দাউদ ৮০২। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৬১. হারিস বিন রিবঈ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর দশ জন সাহাবীর উপস্থিতিতে বলিতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজের ব্যপারে আমি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞাত। তারা বলেন, তা কিভাবে? আল্লাহ্র শপথ! আপনি আমাদের চেয়ে অধিক কাল তাহাঁর অনুসারণকারী নন এবং তাহাঁর সাহচর্য লাভের দিক থেকেও আমাদের অগ্রগামী নন। তিনি বলেন, হ্যাঁ। তারা বলেন, তাহলে আপনার বক্তব্য পেশ করুন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাতে দাঁড়িয়ে তাকবীর [তাহরীমা] বলিতেন, তারপর তাহাঁর উভয় হাত তাহাঁর দু কাঁধ বরাবর উঠাতেন এবং তাহাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্ব স্ব স্থানে স্থির থাকতো। অতঃপর তিনি কিরাআত পড়তেন, অতঃপর তাকবীর বলে তাহাঁর উভয় কাঁধ বরাবর তাহাঁর উভয় হাত উঠাতেন। তারপর তিনি রুকূ করিতেন এবং রুকূতে তাহাঁর উভয় হাত যথাযথভাবে দু হাঁটুর উপর রাখতেন, তাহাঁর মাথা অধিক উঁচু বা নিচু না করে সমানভাবে রাখতেন। অতঃপর তিনি সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে উভয় হাত উভয় কাঁধ বরাবর উঠাতেন, এমনকি তাহাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্ব স্ব স্থানে স্থির হয়ে যেত। অতঃপর তিনি যমীনের দিকে [সিজদায়] ঝুঁকে যেতেন এবং পার্শ্বদেশ থেকে উভয় হাত আলাদা রাখতেন, অতঃপর মাথা উঠিয়ে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসতেন এবং সিজদার সময় উভয় পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে খাড়া রাখতেন, তারপর সিজদা করিতেন, অতঃপর তাকবীর বলে [সিজদা থেকে উঠে] বাম পায়ের উপর বসতেন, এমনকি তাহাঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বস্থানে স্থির হয়ে যেত। অতঃপর তিনি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাকাআতেও প্রথম রাকাআতের অনুরূপ করিতেন। তিনি দ্বিতীয় রাকাআত থেকে দাঁড়ানোর সময় তাহাঁর উভয় হাত তাহাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন, যেমন উঠাতেন নামাজ শুরু করার সময়। তিনি অবশিষ্ট নামাজ এভাবে পড়তেন। শেষ সিজদা করে তিনি সালাম ফিরিয়ে এক পা আগে-পিছে করে, বাম দিকের পাছার উপর ভর করে বসতেন। তারা বলেন, আপনি যথার্থই বলেছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এভাবেই নামাজ আদায় করিতেন। {১০৬১}
{১০৬১} বোখারি ৮২৮, তিরমিজি ২৬০, ৩০৪; নাসায়ি ১০৩৯, ১১৮১; আবু দাউদ ৭৩০, ৯৬৩; আহমাদ ২৩০৮৮, দারিমি ১৩০৭, ১৩৫৬; ইবনি মাজাহ ৮৬২, ৮৬৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩০৫, সহিহ আবু দাউদ ৭২০, ৭২১। মসজিদে নামাজ পড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০৬২. আমরাহ [বিনতু আবদুর রাহমান] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজ কিরূপ ছিল? তিনি বলেন, তিনি উযু করার সময় বিসমিল্লাহ বলে পাত্রে তাহাঁর দুহাত রেখে পূর্ণরূপে উযু করিতেন, অতঃপর কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলিতেন এবং তাহাঁর উভয় হাত তাহাঁর উভয় কাঁধ পর্যন্ত উত্তোলন করিতেন, অতঃপর কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলিতেন এবং তাহাঁর উভয় হাত উভয় কাঁধ পর্যন্ত উত্তোলন করিতেন অতঃপর [কিরাআত শেষে] রুকূ করিতেন এবং তাহাঁর উভয় হাত উভয় হাঁটুতে রাখতেন এবং হাত দুটোকে পৃথক করে রাখতেন। তারপর মাথা উত্তোলন করে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং তোমাদের চাইতে সামান্য বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন। অতঃপর তিনি সিজদা করিতেন এবং তাহাঁর হাত দুটি কিবলামুখী করে রাখতেন। আমি যতটা দেখেছি, তিনি যথাসাধ্য তাহাঁর হাত দুটি [পাঁজর থেকে] পৃথক রাখতেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর মাথা তুলে তাহাঁর বা পায়ের উপর বসতেন এবং ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখতেন। তিনি বাঁদিকে ঝুঁকে বসতে অপছন্দ করিতেন। {১০৬২}
তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{১০৬২} আবু দাউদ ৭৭৬। তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান। উক্ত হাদিসের রাবি হারিসাহ বিন আবু রিজাল সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী ও আবু হাতিম আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
Leave a Reply