নামাজ আদায়ের নিয়ম – রাতের আহার, জামাত ও সুতরা
নামাজ আদায়ের নিয়ম – রাতের আহার, জামাত ও সুতরা >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (৩৪-৪০)=৭টি, হাদীসঃ (৯৩৩-৯৫৯)=২৭টি
- ৫/৩৪. অধ্যায়ঃ নামাজের সময় রাতের আহার পরিবেশন করা হলে।
- ৫/৩৫. অধ্যায়ঃ বৃষ্টিমুখর রাতে নামাজের জামাআত।
- ৫/৩৬. অধ্যায়ঃ সলাতী যা দিয়ে সুতরা বানাবে।
- ৫/৩৭. অধ্যায়ঃ নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম করা।
- ৫/৩৮. অধ্যায়ঃ যা নামাজ নষ্ট করে।
- ৫/৩৯. অধ্যায়ঃ সলাতীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারীকে যথাসাধ্য বাধা দাও।
- ৫/৪০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তার ও কিবলার মাঝখানে কিছু থাকা অবস্থায় নামাজ পড়লে।
৫/৩৪. অধ্যায়ঃ নামাজের সময় রাতের আহার পরিবেশন করা হলে।
৯৩৩। আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- বলেন, [একই সময়] নামাজের ইকামাত ও আহার দেয়া হলে, তোমরা আগে আহার করো। {৯৩২}
{৯৩২} বোখারি ৬৭২, ৫৪৬৪; মুসলিম ৫৫৭, তিরমিজি ৩৫৩, নাসায়ি ৮৫৩, আহমাদ ১১৫৬০, ১১৬৬৬, ১২২৩৪, ১২৯৯৯, ১৩০৭৯, ১৩১৮৮; দারিমি ১২৮১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৩৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, রাতের খাবার উপস্থিত করা হলে এবং [একই সময়ে] নামাজের ইকামাত দেয়া হলে তোমরা প্রথমে আহার করো। রাবি বলেন, ইবনি উমার [রাঃআঃ] একরাতে ইকমাত শ্রবণরত অবস্থায় আহার করেন। {৯৩৩}
{৯৩৩} বোখারি ৬৭৪, মুসলিম ৫৫৯, তিরমিজি ৩৫৪, আবু দাউদ ৩৭৫৭, আহমাদ ৫৭৭২, ৬৩২৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৩৫. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- বলেন, রাতের খাবার উপস্থিত হলে এবং নামাজের ইকামাতও দেয়া হলে তোমরা আগে আহার করে। {৯৩৪}
{৯৩৪} বোখারি ৬৭১, ৫৪৬৫; মুসলিম ৫৫৮, আহমাদ ২৩৬০০, ২৩৭২৫, ২৫০৯৩; দারিমি ১২৮০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৩৫. অধ্যায়ঃ বৃষ্টিমুখর রাতে নামাজের জামাআত।
৯৩৬. উসামা বিন উমায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
[আবুল মালীহ] বলেন, আমি এক বৃষ্টিমুখর রাতে বের হলাম। আমি ফিরে এসে ঘরের দরজা খুলতে বললাম। আমার পিতা [উসামা বিন উমায়র [রাঃআঃ] বলেন, কে? আমি বললাম, আবু মালীহ। তিনি বলেন, আমরা হুদায়বিয়ার দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। আমাদেরকে বৃষ্টিতে পেলো, যাতে আমাদের জুতার তলাও সিক্ত হয়নি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘোষক ডেকে বলেন, তোমাদের শিবিকায় নামাজ পড়ে নাও। {৯৩৫}
{৯৩৫} নাসায়ি ৮৫৪, আবু দাউদ ১০৫৭, আহমাদ ১৯৭৬৯, ২০১৮৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৪১, ৩৪২, সহিহ আবু দাউদ ৯৬৯। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৩৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বৃষ্টিপাতের রাতে অথবা শীতের রাতে বায়ু প্রবাহ হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর ঘোষক ডেকে বলিতেন, তোমরা তোমাদের আবাসস্থলে নামাজ পড়ো। {৯৩৬}
{৯৩৬} বোখারি ৬৩২, ৬৬৬; মুসলিম ৬৯১-২, নাসায়ি ৬৫৪, আবু দাউদ ১০৬০-৬৩, আহমাদ ৪৪৬৪, ৪৫৬৬, ৫১২৯, ৫২৮০, ৫৭৬৬; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৫৯, দারিমি ১২৭৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫৫৩, সহিহ আবু দাউদ ১৭০। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৩৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বৃষ্টিমুখর জুমুআহ্র দিনে বলেনঃ তোমরা তোমাদের নিজ নিজ আবাসে নামাজ পড়ো।{৯৩৭}
{৯৩৭} বোখারি ৬১৬, ৬৬৮, ৯০১; মুসলিম ৬৯৯, আবু দাউদ ১০৬৬, মাজাহ ৯৩৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি আব্বাদ বিন মানসুর সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে একাধিক হাদিস মুনকার ভাবে বর্ণিত হয়েছে, তিনি কাদারিয়া মতাবলম্বী। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি কাদারিয়া মতাবলম্বী। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
৯৩৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
জুমুআহ্র দিন মুয়ায্যিনকে আযান দেয়ার নির্দেশ দেন। দিনটি ছিল বৃষ্টিমুখর। মুয়াযযিন বলেন, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ। অতঃপর তিনি বলেন, লোকদের মাঝে ঘোষণা দাও যে, তারা যেন তাহাদের আবাসে নামাজ পড়ে। লোকেরা তাকে বললো, আপনি একি করিলেন? তিনি বলেন, আমার চেয়ে মহান ব্যক্তি এটাই করিয়াছেন। তোমরা কি আমাকে নির্দেশ দাও যে, আমি লোকদেরকে তাহাদের ঘর থেকে বের করি, আর তারা হাঁটু পর্যন্ত কাদা মেখে আমার নিকট উপস্থিত হোক? {৯৩৮}
{৯৩৮} বোখারি ৬১৬, ৬৬৮, ৯০১; মুসলিম ৬৯৯, আবু দাউদ ১০৬৬, মাজাহ ৯৩৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫৫৪, সহিহ আবু দাউদ ৯৭৭। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৩৬. অধ্যায়ঃ সলাতী যা দিয়ে সুতরা বানাবে।
৯৪০. তা্লহাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নামাজ পড়তাম, আর চতুষ্পদ জন্তু আমাদের সামনে দিয়ে অতিক্রম করতো। বিষয়টি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উত্থাপন করা হলে তিনি বলেনঃ তোমাদের কারো সামনে শিবিকার খুঁটির ন্যায় কিছু থাকলে তার সামনে দিয়ে যে কেউ অতিক্রম করলে তা তার কোন ক্ষতি করিবে না। {৯৩৯}
{৯৩৯} মুসলিম ৪৯৯, তিরমিজি ৩৩৫, আবু দাউদ ৬৮৫, আহমাদ ১৩৯১, ১৩৯৬। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৮৬। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৯৪১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] -এর সফরকালে তাহাঁর জন্য একটি বর্শা সাথে নেয়া হতো। তিনি তা মাটিতে গেড়ে তার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করিতেন। {৯৪১}
{৯৪১} বোখারি ৪৯৪, ৪৯৮, ৯৭২-৭৩; মুসলিম ৫০১-২, নাসায়ি ৭৪৭, ১৫৬৫; আবু দাউদ ৬৮৭, আহমাদ ৫৭০০, ৬২৫০, ৬২৮৩, ৬৩৫২; দারিমি ১৪১০, মাজাহ ১৩০৪, ১৩০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৪২. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর একটি চাটাই ছিল, যা দিনের বেলা বিছানো হতো এবং রাতে তিনি তা দিয়ে ঘের তৈরি করে সেদিকে মুখ করে নামাজ আদায় করিতেন।{৯৪২}
{৯৪২} বোখারি ৫৮৬২, মুসলিম ৭৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৪৩. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন, নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কেউ যখন নামায পড়বে তখন তার সামনে কোন একটি কিছু দিয়ে দিবে। যদি কোন কিছু না পাও তবে একটি লাঠি দাঁড় করাবে। তাও যদি না পাও তবে দাগ দিয়ে দিবে। এরপর তার সামনে দিয়ে কোন কিছু অতিক্রম করলেও [নামাযের] কোন ক্ষতি হইবে না। {৯৪৩}
{৯৪৩} আবু দাউদ ৬৮৯, আহমাদ ৭৩৪৫, ৭৪১১, ৭৫৬০। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ৬৮৯ জইফ, জামি সগীর ৫৬৯ জইফ, মিশকাত ৭৮১ জইফ, সহিহ তারগিব ৫৬০, সহিহ আবু দাউদ ৬৯৮। উক্ত হাদিসের রাবি আবু আমর বিন মুহাম্মাদ বিন আমর বিন হুরায়স সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে ইমাম যাহাবি বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫/৩৭. অধ্যায়ঃ নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম করা।
৯৪৪. যায়দ বিন খালিদ [রাঃআঃ] [বুশর বিন সাঈদ] হইতে বর্ণিতঃ
সলাতীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য সাহাবীগন আমাকে যায়দ বিন খালিদ [রাঃআঃ] এর নিকট পাঠালেন। তিনি আমাকে অবহিত করেন যে, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, সলাতীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চাইতে “চল্লিশ” পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম। সুফ্ইয়ান [রাঃআঃ] বলেন, চল্লিশ দ্বারা তিনি চল্লিশ বছর না মাস না দিন, না ঘন্টা বুঝিয়েছেন তা আমি অবগত নই। {৯৪৪}
{৯৪৪} বোখারি ৫১০, মুসলিম ৫০৭, তিরমিজি ৩৩৬, নাসায়ি ৭৫৬, আবু দাউদ ৭০১, আহমাদ ১৬৬০৩, ১৭০৮৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৬৫, দারিমি ১৪১৬-১৭, মাজাহ ৯৪৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ লিগাইরিহী। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
৯৪৫. যায়দ বিন খালিদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যায়দ বিন খালিদ [রাঃআঃ] আবু জুহাইম আল-আনসারী [রাঃআঃ] -এর নিকট জিজ্ঞেস করিতে পাঠানঃ নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী সম্পর্কে আপনি নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট কী শুনেছেন? তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছিঃ তোমাদের যে কেউ তার নামাজরত ভাইয়ের সামনে দিয়ে অতিক্রম করার পরিণতি সম্পর্কে যদি জানতো, তাহলে অবশ্যি সে চল্লিশ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম ভাবতো। রাবি বলেন, তিনি কি চল্লিশ বছর অথবা চল্লিশ মাস বা চল্লিশ দিন বলেছেন তা আমি অবগত নই।{৯৪৫}
{৯৪৫} বোখারি ৫১০, মুসলিম ৫০৭, তিরমিজি ৩৩৬, নাসায়ি ৭৫৬, আবু দাউদ ৭০১, আহমাদ ১৬৬০৩, ১৭০৮৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৬৫, দারিমি ১৪১৬-১৭, মাজাহ ৯৪৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগীর ৫৬০, সহিহ আবু দাউদ ৬৯৮। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৪৬. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের যে কেউ যদি জানতো যে, তার নামাজরত ভাইয়ের সামনে দিয়ে তার অতিক্রম করার পরিণতি কী, তাহলে সে এ ধরনের পদক্ষেপ ফেলার চাইতে এক শত বছর দাঁড়িয়ে থাকাকে অবশ্যি অধিক উত্তম মনে করতো। {৯৪৬}
আহমাদ ৮৬২০ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৮৫৯ জইফ, মিশকাত ৭৮৭ জইফ, জইফ তারগিব ২৯৯, সহিহ আবু দাউদ ৬৯৮। উক্ত হাদিসের রাবি উবায়দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান ইবনি মাওহিব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আল আজালী সিকাহ বলেছেন। সুফইয়ান বিন উয়ায়নাহ তাকে দুর্বল বলেছেন। ২. উবায়দুল্লাহ বিন আবদুল্লাহ বিন মাওহিব সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইমাম শাফিঈ বলেন, আমি তাকে চিনি না। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি অপরিচিত। ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫/৩৮. অধ্যায়ঃ যা নামাজ নষ্ট করে।
৯৪৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আরাফাতের ময়দানে নামাজ পড়ছিলেন। আমি ও ফাদল গাধায় চড়ে নামাজের একটি কাতারের সামনে দিয়ে অতিক্রম করলাম। আমরা গাধার পিঠ থেকে নেমে সেটিকে ছেড়ে দিয়ে নামাজের কাতারে শামিল হলাম। {৯৪৭}
{৯৪৭} বোখারি ৭৬, ৪৯৩, ৮৬১, ১৮৫৭, ৪৪১২; মুসলিম ৫০১-২, তিরমিজি ৩৩৭, নাসায়ি ৭৫২, ৭৫৪; আবু দাউদ ৭১৫-১৬, আহমাদ ১৮৯৪, ২৩৭২, ৩১৭৪, ৩৪৪৪; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৬৯, দারিমি ১৪১৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭০৯। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৪৮. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] -এর ঘরে নামাজ পড়ছিলেন। আবদুল্লাহ অথবা উমার বিন আবু সালামাহ তাহাঁর সামনে দিয়ে যেতে উদ্যত হলে তাহাঁর হাত দিয়ে ইশারা করলে তিনি ফিরে যান। তারপর যয়নব বিনতে উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] যেতে চাইলে তাকেও তিনি হাতের ইশারায় নিষেধ করেন, কিন্তু তিনি অতিক্রম করে চলে যান। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ শেষে বলেন, নারীরা [পুরুষের উপর] বিজয়ী। {৯৪৮}
{৯৪৮} আহমাদ ২৫৯৮৪ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. উসামাহ বিন যায়াদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল আজালী তাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু দলীল হিসেবে নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ২. কায়স সম্পর্কে ইমামগন বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৯৪৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, কালো বর্ণের কুকুর ও ঋতুবর্তী নারী নামাজ নষ্ট করে। {৯৪৯}
{৯৪৯} নাসায়ি ৭৫১, আবু দাউদ ৭০৩-৪, আহমাদ ৩২৩১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭০০। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫০. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, নারী, কুকুর ও গাধা নামাজ নষ্ট করে। {৯৫০}
{৯৫০} মুসলিম ৫১১, আহমাদ ৯২০৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫১. আবদুল্লাহ বিন মুগাফ্ফাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, নারী, কুকুর ও গাধা নামাজ নষ্ট করে। {৯৫১}
{৯৫১} আহমাদ ১৬৩৫৫, ২০০৪৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫২. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, সলাতীর সামনে শিবিকার খুঁটির ন্যায় কোন জিনিস না থাকলে নারী, গাধা ও কালো বর্ণের কুকুর তার নামাজ নষ্ট করে। অধস্তন রাবি বলেন, আমি বললাম, লাল বর্ণের কুকুর থেকে কালো বর্ণের কুকুরের পার্থক্য কি? তিনি বলেন, তুমি আমাকে যেরূপ জিজ্ঞেস করলে আমিও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তদ্রূপ জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেন, কালো কুকুর হলো শয়তান। {৯৫২}
{৯৫২} মুসলিম ৫১০, তিরমিজি ৩৩৮, নাসায়ি ৭৫০, আবু দাউদ ৭০২, আহমাদ ২০৮১৬, ২০৮৩৫, ২০৮৭০, ২০৯১৪, ২০৯২০; দারিমি ১৪১৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৯৯। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৩৯. অধ্যায়ঃ সলাতীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারীকে যথাসাধ্য বাধা দাও।
৯৫৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
[আল-হাসান আল-উরানী] বলেন, কিসে নামাজ নষ্ট করে তা ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -এর উপস্থিতিতে আলোচিত হলো। লোকেরা কুকুর, গাধা ও স্ত্রীলোকের কথা উল্লেখ করলো। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, ছয়-সাত মাসের বকরীর বাচ্চা সম্পর্কে আপনারা কী বলেন? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন নামাজ পড়ছিলেন। তাহাঁর সামনে দিয়ে ছয়-সাত মাসের একটি বকরীর বাচ্চা অতিক্রম করে যাচ্ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেটিকে কিবলার দিক থেকে হটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন। {৯৫৩}
{৯৫৩} আবু দাউদ ৭০৯, আহমাদ ২২২৩, ২৮০১, ৩১৫৭, ৩১৮৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭০২। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫৪. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের যে কেউ নামাজ আদায় করিতে চাইলে যেন সুতরা সামনে রেখে নামাজ পড়ে এবং তার নিকটবর্তী হয়। সে যেন তার সামনে দিয়ে কাউকে অতিক্রম করিতে না দেয়। অতএব যদি কেউ সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, তাহলে সে যেন তার সাথে লড়াই করে। কারণ সে একটা শয়তান। {৯৫৪}
{৯৫৪} বোখারি ৫০৯, ৩২৭৫; মুসলিম ৫০৫, নাসায়ি ৭৫৭, ৪৮৬২; আবু দাউদ ৬৯৭, ৬৯৯, ৭০০; আহমাদ ১০৯০৬, ১১০০১, ১১০৬৭, ১১১৪৬, ১১২১৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৬৪, দারিমি ১৪১১। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৯৪, ৬৯৫।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৯৫৫. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজ পড়ে, তখন সে যেন তার সামনে দিয়ে কাউকে অতিক্রম করিতে না দেয়। যদি সে অস্বীকার করে তবে সে যেন তার সাথে লড়াই করে। কেননা তার সাথে তার সহযোগী [শয়তান] রয়েছে। আল-হাসান বিন দাউদ আল-মুনকাদিরী [রহঃ] বলেন, নিশ্চয় তার সাথে উয্যা [প্রতিমা] রয়েছে। {৯৫৫}
{৯৫৫} মুসলিম ৫০৬, আহমাদ ৫৫৬০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ১/৫৬২। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৪০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তার ও কিবলার মাঝখানে কিছু থাকা অবস্থায় নামাজ পড়লে।
৯৫৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] রাতে নামাজ আদায় করতো এবং আমি তখন তাহাঁর ও কিবলার মাঝখানে জানাযাহর লাশের ন্যায় আড়াআড়িভাবে শোয়া থাকতাম। {৯৫৬}
{৯৫৬} বোখারি ৫১৪-১৫, ৫১৯, ৯৯৭, ১২০৯, ৬২৭৬, নাসায়ি ১৬৬-৬৭, ১৬৮; আবু দাউদ ৪১০-১৪, আহমাদ ২৩৬৪৯, ২৩৭৫৩, ২৪৬২৪, ২৫৩৫৬, ২৫৬৪৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৫৮, দারিমি ১৪১৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭০৩। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫৭. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তার বিছানা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সিজদার স্থানের দিকে ছিল। {৯৫৭}
{৯৫৭} আবু দাউদ ৪১৪৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫৮. মায়মূনাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করতো এবং আমি তাহাঁর সামনে থাকতাম। তিনি সিজদায় গেলে কখনো কখনো তাহাঁর পরিধেয় বস্ত্র [কাপড়] আমারা শরীরে লাগতো। {৯৫৮}
{৯৫৮} বোখারি ৩৩৩, ৩৭৯, ৩৮১, ৫১৭-১৮; মুসলিম ৫১১-২, নাসায়ি ৭৩৮, আবু দাউদ ৬৫৬, আহমাদ ২৬২৬৫, ২৬২৬৮; দারিমি ১৩৭৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজ আদায়ের নিয়ম – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৯৫৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাক্যালাপে রত ব্যক্তি ও ঘুমন্ত ব্যাক্তির পেছনে নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৯৫৯}
{৯৫৯} আবু দাউদ ৬৯৪ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৭৫, সহিহ আবু দাউদ ৬৯২। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদীনী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। ২. আবুল মিকদাম সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু যুরআহ আর-রাযী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি গায়ির সিকাহ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
Leave a Reply