নামাজের কিরাত – কিরাআত এর সময় নিরব থাকা ও জোরে আমীন বলা
নামাজের কিরাত – কিরাআত এর সময় নিরব থাকা ও জোরে আমীন বলা >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (৪-১৪)=১১টি, হাদীসঃ (৮১২-৮৫৭)=৪৬টি
৫/৪. অধ্যায়ঃ কিরআত শুরু করা।
৫/৫. অধ্যায়ঃ ফজরের নামাজের কিরাআত।
৫/৬. অধ্যায়ঃ জুমুআহ্র দিন ফজরের নামাজের কিরাআত।
৫/৭. অধ্যায়ঃ যোহর ও আসর নামাজের কিরাআত।
৫/৮. অধ্যায়ঃ যোহর ও আসর সলাতে কখনো সশব্দে কুরআন তিলাওয়াত।
৫/৯. অধ্যায়ঃ মাগরিবের নামাজের কিরাআত।
৫/১০. অধ্যায়ঃ ইশার নামাজের কিরাআত।
৫/১১. অধ্যায়ঃ ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া।
৫/১২. অধ্যায়ঃ ইমামের নীরবতা অবলম্বনের দুটি স্থান।
৫/১৩. অধ্যায়ঃ ইমাম যখন কিরাআত পড়েন তখন তোমরা নীরব থাকো।
৫/১৪. অধ্যায়ঃ সশব্দে আমীন বলা।
৫/৪. অধ্যায়ঃ কিরআত শুরু করা।
৮১২. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আলহামদু লিল্লাহি রাবিবল আলামীন [সূরা ফাতিহাহ] দ্বারা কিরাআত শুরু করিতেন। {৮১০}
{৮১০} মুসলিম ৪৯৮, আবু দাউদ ৭৮৩, আহমাদ ২৩৫১০, ২৪৮৫৪, ২৫০৮৯, ২৫৮৭০; দারিমি ১২৩৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩১৬, সহিহ আবু দাউদ ৭৫২। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮১৩. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] , আবু বকর [রাঃআঃ] ও উমার [রাঃআঃ] “আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” দ্বারা কিরাআত শুরু করিতেন। {৮১১}
{৮১১} বোখারি ৭৪৩, মুসলিম ৩৯৯, তিরমিজি ২৪৬, নাসায়ি ৯০২-৩, ৯০৬-৭; আবু দাউদ ৭৮২, আহমাদ ১১৫৮০, ১১৬৭৪, ১১৭২৫, ১২৩০৩, ১২৪৭৬, ১২৬৯০, ১২৭১২, ১২৯২৪, ১৩২৬৮, ১৩৩৭৩, ১৩৪৭৮, ১৩৫৪৫, ১৩৬৩৭, ১৩৬৬৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৭৯, দারিমি ১২৪০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৫১। উক্ত হাদিসের রাবি জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস সম্পর্কে মুসলিম বিন কায়স বলেন, ইনশাআল্লাহ্ [আল্লাহ্ চায়তো] তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি মুদতারাব ভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার একাধিক মুনকার হাদিস রয়েছে। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮১৪. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] “আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” দ্বারা কিরাআত শুরু করিতেন। {৮১২}
সহিহ লিগাইরিহী।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
৮১৫. আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইসলামে নতুন কিছু উদ্ভাবন বা প্রচলনের বিরুদ্ধে আমার পিতার চাইতে অধিক কঠোর মনোভাবাপন্ন লোক আমি খুব কমই দেখেছি। তিনি আমাকে [সালাতের মধ্যে] বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়তে শুনে বলেন, প্রিয় বৎস! বিদআত থেকে বিরত থাকো। কেননা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] , আবু বকর [রাঃআঃ] , উমার [রাঃআঃ] ও উসমান [রাঃআঃ] -এর সাথে নামাজ আদায় করেছি, কিন্তু আমি তাহাদের কাউকে বিসমিল্লাহ পড়তে শুনিনি। অতএব তুমি “আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” দ্বারাই কিরাআত শুরু করিবে। {৮১৩}
{৮১৩} তিরমিজি ২৪৪, নাসায়ি ৯০৮, আহমাদ ১৬৩৪৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি [ইয়াযীদ] বিন আবদুল্লাহ বিন মুগাফফাল এর জারাহ তাদীল সম্পর্কে কোনটিই আলোচনা করা হয়নি। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫/৫. অধ্যায়ঃ ফজরের নামাজের কিরাআত।
৮১৬. কুতবাহ বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] কে ফজরের সালাতে “ওয়ান-নাখলা বাসিকাতিল লাহা তালউন নাদীদ” [সূরা কাফ থেকে] তিলাওয়াত করিতে শুনেছেন। {৮১৪}
{৮১৪} মুসলিম ৪৫৭, তিরমিজি ৩০৬, নাসায়ি ৯৫০, আহমাদ ১৮৪২৪, দারিমি ১২৯৭-৯৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬৩।নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮১৭. আমর ইবনি হুরাইস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর সাথে নামাজ পড়লাম এবং তিনি ফজরের সলাতে [সূরা তাকবীর] পড়লেন। আমি যেন [এখনো] তার কিরাআত পাঠ শুনছি। {৮১৫}
{৮১৫} মুসলিম ৪৫৬, নাসায়ি ৯৫১, আবু দাউদ ৮১৭, আহমাদ ১৮২৫৮, দারিমি ১২৯৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৭৬।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮১৮. আবু বারযাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফজরের সলাতে ষাট থেকে এক শত আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করিতেন। {৮১৬}
{৮১৬} বোখারি ৫৪১, মুসলিম ৪৬১, নাসায়ি ৪৯৫, ৫২৫, ৫৩০, ৯৪৮, আবু দাউদ ৩৯৮, আহমাদ ১৯২৬৫, ১৯৩৬৮, ১৯২৯৪, ১৯৩০১, ১৯০১০; দারিমি ১৩০০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮১৯. আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে সাথে নিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি যোহরের প্রথম রাকাআত দীর্ঘ করিতেন এবং দ্বিতীয় রাকাআত সংক্ষেপ করিতেন। তিনি ফজরের সলাতেও এরূপ করিতেন। {৮১৭}
{৮১৭} বোখারি ৭৫৯, ৭৭৬, ৭৭৮, ৭৭৯; মুসলিম ৪৫১, নাসায়ি ৯৭৪-৭৮, আবু দাউদ ৭৯৮, দারিমি ১২৯১, ১২৯৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৬৩।নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২০. আব্দুল্লাহ ইবনিস সায়িব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফজরের সলাতে “সূরা মুমিনূন” তিলাওয়াত করিলেন। তিনি তিলাওয়াত করিতে করিতে ঈসা [আলায়হিস সালাম] -এর প্রসঙ্গ পর্যন্ত উপনীত হলে তাহাঁর হাঁচি [বা কফ] আসে। তিনি তখন রুকূতে চলে গেলেন। {৮১৮}
{৮১৮} মুসলিম ৪৫৫, নাসায়ি ৮৮২, ১০০৭; আবু দাউদ ৬৪৯, আহমাদ ১৪৯৬৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৯৭, সহিহ আবু দাউদ ৫৫৬।নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৬. অধ্যায়ঃ জুমুআহ্র দিন ফজরের নামাজের কিরাআত।
৮২১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআহর দিন ফজরের সলাতে সূরা আলিফ-লাম-মিম তানযীল আস-সাজদা এবং হাল আতা আলাল ইনসানে [সূরা আদ-দাহর] তিলাওয়াত করিতেন। {৮১৯}
{৮১৯} মুসলিম ৮৭৯, তিরমিজি ৫২০, সা ৯৫৬, ১৪২১; আবু দাউদ ১০৭৪, আহমাদ ১৯৯৪, ২৪৫২, ২৭৯৬, ৩০৩১, ৩০৮৬, ৩১৫০, ৩৩১৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৯৫, সহিহ আবু দাউদ ৯৮৫। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২২. সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআহর দিন ফজরের সলাতে আলিফ-লাম-মীম তানযীল এবং হাল আতা আলাল ইনসান সূরাদ্বয় তিলাওয়াত করিতেন। {৮২০}
সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি হারিস বিন নাহবান সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার থেকে হাদিস লিখা হয় না। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইমাম বোখারি বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২৩. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআহর দিন ফজরের সলাতে আলিফ-লাম-মীম-তানযীল এবং হাল আতা আলাল ইংসান সূরাদ্বয় তিলাওয়াত করিতেন। {৮২১}
{৮২১} বোখারি ৮৯১, ১০৬৮; মুসলিম ৮৮০/১-২, নাসায়ি ৯৫৫, আহমাদ ৯২৭৭, ৯৭৫২; দারিমি ১৫৪২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬২৮। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২৪. আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআহর দিন ফজরের সলাতে আলিফ-লাম-মীম তাংযীল এবং হাল আতা আলাল ইংসান সুরাদ্বয় তিলাওয়াত করিতেন।{৮২২}
সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/৭. অধ্যায়ঃ যোহর ও আসর নামাজের কিরাআত।
৮২৫. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, এতে তোমার জন্য কোন কল্যাণ নেই। আমি বললাম, আপনি স্পষ্ট করে বলুন, আল্লাহ আপনাকে অনুগ্রহ করুন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর জন্য যোহর নামাজের নিয়ম ইকামত দেয়া হতো। আমাদের কেউ আল-বাকী নামক স্থানে গিয়ে তার প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে এসে উযুর করতো, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে যোহরের প্রথম রাকআতেই পেতো। {৮২৩}
{৮২৩} মুসলিম ৪৫৪, নাসায়ি ৯৭৩, আহমাদ ১০৯১৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২৬. আবু মামার হইতে বর্ণিতঃ
আমি খাব্বাব [রাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর যোহর ও আসর নামাজের কিরাআত কিসের মাধ্যমে বুঝতেন? তিনি বলেন, তাহাঁর দাড়ি নড়াচড়ার মাধ্যমে। {৮২৪}
{৮২৪} বোখারি ৭৪৬, ৭৬০-৬১, ৭৭৭; আবু দাউদ ৮০১, আহমাদ ২০৫৫২, ২০৫৭৩, ২৬৬৭৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৬৪। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২৭. আবু হূরায়রাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজের সাথে অমুকের নামাজের চাইতে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ আর কারো নামাজ দেখিনি। রাবি বলেন, তিনি যোহরের প্রথম দুরাকাআত দীর্ঘ করিতেন এবং পরবর্তী দুরাকআত সংক্ষেপ করিতেন এবং আসরের নামাজ সংক্ষেপ করিতেন।{৮২৫}
{৮২৫} নাসায়ি ৯৮২, আহমাদ ৮১৬৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৮৫৩। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮২৮. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তিরিশজন সাহাবী সমবেত হয়ে বলেন, আসুন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নীরবে পঠিত [যোহর ও আসর] নামাজের কিরাআত সম্পর্কে অনুমান করি। তাহাদের মধ্যে দুজন সাহাবীও তাহাদের এ অনুমানে মতভেদ করেননি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যোহরের প্রথম রাকআতে ত্রিশ আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকআতে তার অর্ধেক সংখ্যক আয়াত তিলাওয়াত করিতেন। এভাবে তারা অনুমান করিলেন যে, তিনি আসরের সলাতে যুহরের দ্বিতীয় রাকআতে পঠিত কিরাআতের সমপরিমাণ কিরাআত পড়তেন। {৮২৬}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ, তবে সহিহ মুসলিমে কিয়াস শব্দ ব্যতীত মারফূ সূত্রে বর্ণনা রয়েছে। {৮২৬} মুসলিম ৪৫২, নাসায়ি ৪৭৫-৭৬, আবু দাউদ ৮০৪, আহমাদ ১১৩৯৩, দারিমি ১২৮৮। তাহকিক আলবানিঃ জইফ, তবে সহিহ মুসলিমে কিয়াস শব্দ ব্যতীত মারফূ সূত্রে বর্ণনা রয়েছে। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ আল আম্মী সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী সালিহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৫/৮. অধ্যায়ঃ যোহর ও আসর সলাতে কখনো সশব্দে কুরআন তিলাওয়াত।
৮২৯. আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরসহ যোহরের নামাজ পড়াকালে প্রথম দুরাকাআতে কখনো কখনো আমাদের শুনিয়ে কিরাআত পাঠ করিতেন। {৮২৭}
{৮২৭} বোখারি ৭৬২, ৭৭৬, ৭৭৮-৭৯; মুসলিম ৪৫১-২, নাসায়ি ৯৭৪-৭৬, আবু দাউদ ৭৯৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৬৩। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩০. আল- বারা বিন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে যুহরের নামাজ করিতেন। আমরা সূরা লুকমান ও সূরা যারিয়াত থেকে তাহাঁর পঠিত আয়াতের পর আয়াত শুনতে পেতাম। {৮২৮}
{৮২৮} নাসায়ি ৯৭১ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ যঈফা ৪১২০ জইফ। হাদিসের রাবি আবু ইসহাক সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও তাদলিসের অভিযগে অভিযুক্ত করিয়াছেন। হাশিম বিন বারীদ আবু ইসহাক থেকে আনআন শব্দে বর্ণনা করায় সানাদটি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৫/৯. অধ্যায়ঃ মাগরিবের নামাজের কিরাআত।
৮৩১. লুবাবাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে মাগরিবের সলাতে “ওয়াল মুরসলাতে উরফা” সূরা থেকে তিলাওয়াত করিতে শুনেছেন। {৮২৯}
{৮২৯} বোখারি ৭৬৩, ৪৪২৯; মুসলিম ৪৬২, তিরমিজি ৩০৮, নাসায়ি ৯৮৫-৮৬, আবু দাউদ ৮১০, আহমাদ ২৬৩২৭, ২৬৩৪০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৭৩, দারিমি ১২৭৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৭১। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩২. জুবায়র বিন মুতইম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে মাগরিবের সলাতে সূরা তূর থেকে তিলাওয়াত করিতে শুনেছি। জুবায়র [রাঃআঃ] অন্য হাদীসে বলেন, আমি যখন তাঁকে তিলাওয়াত করিতে শুনলাম [অনুবা-দ] ঃ “তারা কি সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তা?….তাহলে তাহাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ পেশ করুন” [সূরা তূরঃ ৩৫-৩৮] , তখন আমার অন্তর উড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো। {৮৩০}
{৮৩০} বোখারি ৭৬৫, ৩০৫০, ৪০২৩, ৪৮৫৪; মুসলিম ৪৬৩, নাসায়ি ৯৮৭, আবু দাউদ ৮১১, আহমাদ ১৬২৯৩, ১৬৩২১, ১৬৩৩২, ২৭৫৯৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৭২, দারিমি ১২৯৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৭২। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] মাগরিবের সলাতে সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাস তিলাওয়াত করিতেন। {৮৩১}
{৮৩১} শায। সঠিক কথা হলো উক্ত সূরাদ্বয় রাসুল [সাঃ] মাগরিবের সুন্নাত সালাতে তিলাওয়াত করিতেন। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৮৫০। হাদিসের তাহকিকঃ শায
৫/১০. অধ্যায়ঃ ইশার নামাজের কিরাআত।
৮৩৪. বারা বিন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে ইশার সলাতে পড়েন। তিনি বলেন, আমি তাঁকে সূরা ওয়াত-তীন ওয়ায-যাইতূন পড়তে শুনেছি।
সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩৫. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আরো বলেন, আমি তাহাঁর চাইতে উত্তম ও সুমধুর কন্ঠে তিলাওয়াত আর কোন মানুষের নিকট শুনিনি। {৮৩৩}
{৮৩৩} বোখারি ৭৬৭, ৭৬৯, ৪৯৫২, ৭৫৪৬; মুসলিম ৪৬১-৩, তিরমিজি ৩১০, নাসায়ি ১০০০-১, আবু দাউদ ১২২১, আহমাদ ১৮০৩৩, ১৮০৫৬, ১৮২০৬, ১৮২২৩, ১৮২৩৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৭৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩৬. মুআয বিন জাবাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
মুআয বিন জাবাল [রাঃআঃ] তার সংগীদের নিয়ে ইশার নামাজ পড়লেন এবং তাহাদের নামাজ দীর্ঘায়িত করিলেন। নবী [সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, তুমি সূরা ওয়াশ-শামস, সুরাহ আলা, সুরাহ লায়ল ও আলাক ইত্যাদি [ক্ষুদ্র সূরা] পাঠ করিবে। {৮৩৪}
{৮৩৪} বোখারি ৭০১, ৭০৫, ৬১০৬; মুসলিম ৪৬৫, নাসায়ি ৮৩৫, আবু দাউদ ৭৯০, আহমাদ ১৩৮৯৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/১১. অধ্যায়ঃ ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া।
৮৩৭. উবাদাহ ইবনিস-সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহাহ পাঠ করেনি, তার নামাজ হয়নি। {৮৩৫}
{৮৩৫} বোখারি ৭৫৬, মুসলিম ৩৯১-৩, তিরমিজি ২৪৭, নাসায়ি ৯১০-১১, ৯২০; আবু দাউদ ৮২২-২৪, আহমাদ ২২১৬৯, ২২১৮৬, ২২২৩৭, ২২২৪০; দারিমি ১২৪২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩০২, সহিহ আবু দাউদ ৭৮০। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩৮. আবুস সায়িব, আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি কোন নামাজ পড়লো এবং তাতে উম্মুল কুরআন [সূরা ফাতিহা] পড়েনি তার নামাজ অসম্পুর্ন। আবুস সাইব [রাঃআঃ] বলেন, আমি বললাম, হে আবু হুরায়রা! আমি কখনো কখনো ইমামের সাথে নামাজ পড়ি। তিনি আমার বাহুতে খোঁচা দিয়ে বলেন, হে ফারিসী! তুমি তা মনে মনে পড়ো। {৮৩৬}
{৮৩৬} মুসলিম ৩৯৫, তিরমিজি ২৯৫৩, নাসায়ি ৯০৯, আবু দাউদ ৮১৯-২১, আহমাদ ৭২৪৯, ৭৭৭৭, ৭৮৪১, ৯২৪৫, ৯৫৮৪, ৯৬১৬, ৯৮৪২, ৯৯৪৬; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৮৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৭৯। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৩৯. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি ফারদ্ অথবা অন্য সলতে সূরা ফাতিহা ও অন্য কোন সূরা পড়েনি তার নামাজ হয়নি। {৮৩৭}
{৮৩৭} আবু দাউদ ৮১৮ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫২৬৬, ৬২৯৯ জইফ, তিরমিজি ৪৮১ , সহিহ আবু দাউদ ৭৭৭, এর মূল মুসলিম আছে। উক্ত হাদিসের রাবি আবু সুফইয়ান তরীফ আস-সাদী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৪০. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ যে কোন সলাতে সূরা ফাতিহা না পড়া হলে তা অসম্পূর্ণ। {৮৩৮}
{৮৩৮} আহমাদ ২৪৫৭৫, ২৫৮২৪। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৮৪১. আব্দুল্লাহ বিন আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে কোন সলাতে সূরা ফাতিহা না পড়লে তা অসম্পূর্ণ তা অসম্পূর্ণ।
হাসান সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৮৪২. আবুদ-দারদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করলো, ইমামের কিরাআত পড়ার সাথে সাথে আমিও কি কিরাআত পড়বো? তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলো, প্রত্যেক সলাতেই কি কিরাআত আছে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, হাঁ। উপস্থিত লোকেদের মধ্যে একজন বললো, এটি বাধ্যতামূলক হয়ে গেলো। {৮৪০}
{৮৪০} নাসায়ি ৯২৩, আহমাদ ২৬৯৮২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুআবিয়াহ বিন ইয়াহইয়া সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮৪৩. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যোহর ও আসর নামাজের প্রথম দুরাকআতে ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহাহ ও অন্য সূরা এবং শেষ দুরাকাআতে কেবল সূরা ফাতিহাহ পড়তাম। {৮৪১}
{৮৪১} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫০৬। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫/১২. অধ্যায়ঃ ইমামের নীরবতা অবলম্বনের দুটি স্থান।
৮৪৪. সামুরাহ বিন জুনদুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নিরবতা অবলম্বনের দুটি স্থান রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে কণ্ঠস্থ করেছি। ইমরান ইবনিল হুসায়ন [রাঃআঃ] তা অস্বিকার করেন [এবং বলেন, আমরা একটি স্থান জানি]। আমরা বিষয়টি মদীনাতে উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] -কে লিখে জানালাম। তিনি লিখেন, সামুরা [রাঃআঃ] বিষয়টি স্মরণ রেখেছেন। অধস্তন রাবি সাঈদ [রাঃআঃ] বলেন, আমরা কাতাদাহ [রাঃআঃ] -কে বললাম, সেই নিরবতা অবলম্বনের স্থান দুটি কী কী? তিনি বলেন, যখন তিনি তাহাঁর সলাতে প্রবেশ করিতেন এবং যখন তিনি কিরাআত শেষ করিতেন, অতঃপর তিনি বলেন, যখন তিনি “গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায যআল্লীন” পড়তেন। রাবি বলেন, কিরাআত পাঠ শেষ করে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য তিনি নিরবতা অবলম্বন করিতেন, এটা লোকেদের ভালো লাগতো। {৮৪২}
{৮৪২} তিরমিজি ২৫১, আবু দাউদ ৭৭৭, আহমাদ ১৯৫৭৭, ১৯৬১৯, ১৯৬৫৩, ১৯৭১৬, ১৯৭৩১, ১৯৭৫৩; দারিমি ১২৪৩, মাজাহ ৮৪৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫০৫ মিশকাত ৮০৮, জইফ আছে, দাউদ ১৩৩৯, ৯৩৫। উক্ত হাদিসের রাবি জামীল ইবনিল হাসান বিন জামীল আল আতাকী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অপরিচিত। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তিনি ভাল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৪৫. সামুরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি নামাজের মধ্যে নীরবতা অবলম্বনের দুটি স্থান স্মৃতিতে ধরে রেখেছিঃ একটি কিরাআত শুরু করার পূর্বে এবং অপরটি রূকুর সময়। ইমরান ইবনিল হুসায়ন [রাঃআঃ] তা অস্বীকার করেন। তারা বিষয়টি সম্পর্কে মদীনাতে উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] -কে লিখেন। তিনি সামুরা [রাঃআঃ] -এর মত সমর্থন করেন। {৮৪৩}
{৮৪৩} তিরমিজি ২৫১, আবু দাউদ ৭৭৭, আহমাদ ১৯৫৭৭, ১৯৬১৯, ১৯৬৫৩, ১৯৭১৬, ১৯৭৩১, ১৯৭৫৩; দারিমি ১২৪৩, মাজাহ ৮৪৪। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ৭৭৭ জইফ।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫/১৩. অধ্যায়ঃ ইমাম যখন কিরাআত পড়েন তখন তোমরা নীরব থাকো।
৮৪৬. আবু হুরায়রাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, অনুসরণ করার জন্যই তো ইমাম নিযুক্ত করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন তাকবীর বলেন, তোমরাও তাকবীর বলো। যখন তিনি কিরাআত পড়েন তখন তোমরা নীরব থাকো। যখন তিনি “গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায-যুআলীন” বলেন, তখন তোমরা আমীন বলো। যখন তিনি রুকু করেন, তখন তোমরাও রুকু করো। আর যখন তিনি “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলেন, তখন তোমরা “আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ” বলো। যখন তিনি সিজদা করেন, তখন তোমরাও সিজদা করো। তিনি বসা অবস্থায় নামাজ পড়লে তোমরাও সকলে বসা অবস্থায় নামাজ পড়ো।{৮৪৪}
{৮৪৪} বোখারি ৭২২, ৭৩৪; মুসলিম ৪১৪-১৭, নাসায়ি ৯২১-২২, আবু দাউদ ৬০৩, আহমাদ ৭১০৪, ৮২৯৭, ৮৬৭২, ৯০৭৪, ৯১৫১, ২৭২০৯, ২৭২১৫, ২৭২৭৩, ২৭৩৮৩; দারিমি ১৩১১, মাজাহ ৯৬০, ১২৩৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৮৫৭।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৮৪৭. আবু মূসা আল-আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন ইমামের কিরাআত পাঠের সময় তোমরা নীরব থাকিবে। তিনি তাশাহুদ পাঠের জন্য বসলে তোমাদের যে কোন মুসল্লির প্রথম যিকির যেন হয় তাশাহুদ।{৮৪৫}
{৮৪৫} মুসলিম ৪০৪, ৮৩০, ১০৬৪, ১১৭২, ১১৭৩, ১২৮০; আবু দাউদ ৯৭২, আহমাদ ১৯০১০, ১৯০৫৮, ১৯১৩০, ১৯১৬৬; দারিমি ১৩১২, মাজাহ ৯০১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ২৬৩। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৪৮. আবু হুরায়রাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের নিয়ে নামাজ পড়লেন, আমাদের মতে তা ছিল ফজরের নামাজ। নামাজ শেষে তিনি বলেন, তোমাদের কেউ কি কিরাআত পড়েছে? এক ব্যক্তি বললো, আমি পড়েছি। তিনি বলেন, তাই তো [মনে মনে] বলছিলাম আমার কুরআন পাঠে বিঘ্ন ঘটছে কেন! {৮৪৬}
{৮৪৬} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৮৫৫, সহিহ, আবু দাউদ ৭৮১। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৪৯. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে নামাজ পড়লেন…উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ। এই বর্ণনায় আরো আছেঃ যে সলাতে ইমাম সশব্দে কিরাআত পড়েন, তখন থেকে সেই সলাতে তারা কিরাআত পাঠ ত্যাগ করেন।{৮৪৭}
{৮৪৭} তিরমিজি ৩১২, নাসায়ি ৯১৯, আবু দাউদ ৮২৬, আহমাদ ৭২২৮, ৭৭৬০, ৭৭৭৪, ৭৯৪৭, ৯৯৪৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৯৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৫০. জাবীর বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যাদের ইমাম আছে ইমামের কিরাআতই তার কিরাআত। {৮৪৮}
{৮৪৮} আহমাদ ১৪২৩৩ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওযা ৮৫০। উক্ত হাদিসের রাবি জাবির [বিন ইয়াযীদ ইবনি হারিস] সম্পর্কে ওয়াকী ইবনিল জাররাহ সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আল জাওযুজানী তাকে মিথ্যুক বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫/১৪. অধ্যায়ঃ সশব্দে আমীন বলা।
৮৫১. আবু হুরায়রাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যখন কুরআন পাঠকারী [ইমাম] আমীন বলেন, তখন তোমরাও আমীন বলো। কেননা ফেরেশতাগণও তখন আমীন বলেন অতএব যার আমীন বলা ফেরেশতাহাদের আমীন বলার সাথে হয় তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করা হয়। {৮৪৯}
{৮৪৯} বোখারি ৭৮০-৮২, ৪৪৭৫, ৬৪০২; মুসলিম ৪১০/১-৪, তিরমিজি ২৫০, নাসায়ি ৯২৫-৩০, আবু দাউদ ৯৩৫-৩৬, আহমাদ ৭১৪৭, ৭২০৩, ৭৬০৪, ২৭৩৩৮, ২৭২১৫, ৯৫১২, ৯৬০৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৯৫-৯৭, দারিমি ১২৪৫-৪৬, মাজাহ ৮৫২, ৮৫৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৪৪, সহিহ আবু দাউদ ৮৬৬। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৫২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন কুরান পাঠকারী [ইমাম] আমীন বলে, তখন তোমরাও আমীন বলো। যার আমীন বলা ফেরেশতাহাদের আমীন বলার সাথে হয়, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। {৮৫০}
{৮৫০} বোখারি ৭৮০-৮২, ৪৪৭৫, ৬৪০২; মুসলিম ৪১০/১-৪, তিরমিজি ২৫০, নাসায়ি ৯২৫-৩০, আবু দাউদ ৯৩৫-৩৬, আহমাদ ৭১৪৭, ৭২০৩, ৭৬০৪, ২৭৩৩৮, ২৭২১৫, ৯৫১২, ৯৬০৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৯৫-৯৭, দারিমি ১২৪৫-৪৬, মাজাহ ৮৫১, ৮৫৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৫৩. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকেরা আমীন বলা ত্যাগ করেছে। অথচ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায যআললীন বলার পর আমীন বলিতেন, এমনকি প্রথম সারির লোকেরা তা শুনতে পেতো এবং এতে মাসজিদে প্রতিধ্বনি হতো।{৮৫১}
{৮৫১} বোখারি ৭৮০-৮২, ৪৪৭৫, ৬৪০২; মুসলিম ৪১০/১-৪, তিরমিজি ২৫০, নাসায়ি ৯২৫-৩০, আবু দাউদ ৯৩৫-৩৬, আহমাদ ৭১৪৭, ৭২০৩, ৭৬০৪, ২৭৩৩৮, ২৭২১৫, ৯৫১২, ৯৬০৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৯৫-৯৭, দারিমি ১২৪৫-৪৬, মাজাহ ৮৫১, ৮৫২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ৯৩৪ জইফ, ৯৩৫ ৯৭২ সহিহ; জামি সগীর ৬৭২ সহিহ, ৭০৭, ২৩৫৯ সহিহ, ৪৩৬৬ জইফ, ইবনি মাজাহ ৮৪৬ হাসান সহিহ; নাসায়ি ৮৩০ সহিহ, ৯০৫ জইফ, ৯২৭, ৯২৯, ৯৩২, ১০৬৪ সহিহ; তিরমিজি ২৪৮ সহিহ; মিশকাত ৮২৫ মুত্তাফাকুন আলাইহি, ৮২৬ সহিহ, ৮৪৫ সহিহ; সহিহ তারগিব ৫১৪, ৫১৬, ৫১৭ সহিহ, ২৬৯ জইফ; যঈফা ৯৫২ জইফ; ইবনি খুযাইমাহ ১৮৫৪, ১৫৯৩ সহিহ; সহিহা ৪৬৫, জইফ, আবু দাউদ ৪৬৬। উক্ত হাদিসের রাবি ১. বিশর বিন রাফি সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি মুনকার ভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ২. আবু আবদুল্লাহ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী ও ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায় না।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৫৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে ওয়ালাদ দাল্লীন বলার [পড়ার] পর আমিন বলিতে শুনেছি। {৮৫২}
{৮৫২} হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৫৫. ওয়ায়িল বিন হুজর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর সাথে নামাজ পড়লাম। তিনি “ওয়ালায যআল্লীন” বলার পর “আমীন” বলেছেন। আমরা তা তাঁকে বলিতে শুনেছি। {৮৫৩}
{৮৫৩} তিরমিজি ২৪৮, নাসায়ি ৮৭৯, ৯৩২; আবু দাউদ ৯৩২-৩৩, আহমাদ ১৮৩৬২, ১৮৩৬৫, ১৮৩৮৮; ১২৪৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত সহিহা ৪৬৫৪, সহিহ আবু দাউদ ৮৬৩, ৮৬৪। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৫৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, ইয়াহুদীরা তোমাদের কোন ব্যপারে এত বেশী ঈর্ষান্বিত নয় যতটা তারা তোমাদের সালাম ও আমীনের ব্যাপারে ঈর্ষান্বিত। {৮৫৪}
{৮৫৪} হাদিসটি ইমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ৬৯১। নামাজের কিরাত ও আমিন এর হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮৫৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ইহূদীরা তোমাদের আমীন বলায় যত বেশী ঈর্ষান্বিত হয়, আর কোন জিনিসে তত ঈর্ষান্বিত হয় না। তাই তোমরা অধিক পরিমাণে আমীন বলো। {৮৫৫}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ জিদ্দান, অধিক বলার কথা ব্যতীত সহিহ সূত্রে বর্ণিত আছে।{৮৫৫} জইফ জিদ্দান, অধিক বলার কথা ব্যতীত সহিহ সূত্রে বর্ণিত আছে।। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫০৫৩ জইফ জিদ্দান, জইফ তারগিব ৫১৫ সহিহ, জইফ তারগিব ২৭০ জইফ জিদ্দান।উক্ত হাদিসের রাবি তালহাহ বিন আমর সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন,তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
Leave a Reply