খারিজিদের আকিদা , জাহমিয়াহ সম্প্রদায় ও নিন্দনীয় নীতির প্রচলন
খারিজিদের আকিদা , জাহমিয়াহ সম্প্রদায় ও নিন্দনীয় নীতির প্রচলন >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ০, অধ্যায় (৩৩-৩৬)= ৪ টি। হাদীস (১৬৭-২১০) =৪৩ টি
৩৩. অধ্যায়ঃ খারিজীর আলোচনা
৩৪. অধ্যায়ঃ জাহমিয়াহ্ সম্প্রদায় যা অমান্য করে
৩৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন উৎকৃষ্ট নীতি বা নিন্দনীয় নীতির প্রচলন করে।
৩৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন বিলুপ্ত সুন্নাতকে পুনর্জীবিত করে তার বিনিময় যা পাবে
৩৩. অধ্যায়ঃ খারিজীর আলোচনা
১৬৭ – আলী বিন আবু তালিব [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি খারিজীদের উল্লেখ করে বলেন, তাহাদের মাঝে খাটো হাতবিশিষ্ট এক ব্যক্তির উদ্ভব হইবে। যদি তোমরা স্বেচ্ছায় সৎকাজ ছেড়ে না দিতে, তবে আমি তোমাদের নিকট সেই হাদীস বর্ণনা করতাম যাতে আল্লাহ্ তাআলা মুহাম্মাদ [সাঃআ:]-এর যবানিতে তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারীদের সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করিয়াছেন। অধস্তন রাবী উবায়দুল্লাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি বললাম, আপনি কি এ কথা মুহাম্মাদ [সাঃআ:]-এর নিকট শুনেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ, কাবার প্রভুর শপথ! তিনি তিনবার এ কথা বলেন। {১৬৫}
{১৬৫} মুসলিম ১০৬৬, আবু দাউদ ৪৭৬৩, আহমদ ৬৭৪, ৭৩৭, ৮৫০, ৯০৬, ৯৮৫, ১১৯২, ১২২৮, ১২৫৮, ১৩৮১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৮ – আবদুল্লাহ বিন মাসুদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, শেষ যমানায় ক্ষুদ্র দাঁতবিশিষ্ট ও স্থুলবুদ্ধিসম্পন্ন এক সম্প্রদায়ের উদ্ভব হইবে। তারা মানুষকে ভালো ভালো কথা বলবে, কুরআন পাঠ করিবে কিন্তু তা তাহাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। তারা ইসলাম থেকে এত দ্রুত বেগে খারিজ হয়ে যাবে, যেমন ধনুক থেকে তীর দ্রুত বেগে শিকারের দিকে ছুটে যায়। অতএব যে ব্যক্তি তাহাদের সাক্ষাৎ পাবে সে যেন তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যারা তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে, আল্লাহ্র নিকট তাহাদের জন্য তার বিনিময় রয়েছে। {১৬৬}
{১৬৬} তিরমিজি ২১৮৮, আহমদ ৩৮২১, দারিমী ২০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৬৯ – আবু সালামাহ [আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান বিন আওফ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআ:]-কে বললাম, আপনি কি [খারীজী] হারূরিয়াদের সম্পর্কে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে কিছু বলিতে শুনেছেন? তিনি বলেন, আমি তাঁকে একটি সম্প্রদায়ের কথা আলোচনা করিতে শুনিয়াছি যারা হইবে অত্যধিক ইবাদাতকারী এবং তাহাদের সলাত-সওমের তুলনায় তোমাদের নিকট তোমাদের সলাত-সওম খুবই নগণ্য মনে হইবে। তারা দ্বীন থেকে দ্রুত গতিতে বের হয়ে যাবে, যেমন ধনুক থেকে তীর শিকারের দিকে দ্রুত গতিতে চলে যায়। সে তার তীর তুলে নিয়ে তার ফলার অগ্রভাগ পরখ করিবে কিন্তু কিছুই দেখিতে পাবে না, অতঃপর তার তীরের [ফলা সংলগ্ন] কাঠ পরখ করিবে তাতেও কোন চিহ্ন দেখিতে পাবে না। অতঃপর তীরের ফলা পরখ করে তাতেও কিছু দেখিতে পাবে না, অতঃপর তীরের পালক পরখ করে তার সন্দেহ হইবে যে, সে কিছু চিহ্ন দেখিতে পাচ্ছে কিনা। {১৬৭}
{১৬৭} বোখারী ৩৬১০, ৪৩৫১, ৪৬৬৭, ৫০৫৮, ৬০৬৩, ৬৯৩১, ৬৯৩৩, ৭৪৩২, ৭৫৬২; মুসলিম ১০৬৪/১-৪, ১০৬৫/১-৫; নাসায়ী ২৫৭৮, ৪১০১; আবু দাউদ ৪৭৬৪, আহমদ ১০৬২৫, ১১০৯৬, ১১১৮৫, ১১২৫৪, ১১২৯৮; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন আমর সম্পর্কে ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আবু হাতীম আর-রাযী তার থেকে হাদিস গ্রহন করিয়াছেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৭০ – আবু যার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, আমার পরে আমার উম্মাতের মধ্যে অচিরেই একটি দলের উদ্ভব হইবে, যারা কুরআন পড়বে কিন্তু তা তাহাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। তারা এত দ্রুতবেগে ধর্মচ্যুত হইবে, যেমন তীর ধনুক থেকে শিকারের দিকে দ্রুত ছুটে যায়, অতঃপর তারা দ্বীনের পথে ফিরে আসবে না। এরা হলো সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট। আবদুল্লাহ ইবনিস-সামিত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি বিষয়টি হাকাম বিন আম্র আল-গিফারীর ভাই রাফি বিন আম্র [রাঃআ:]-এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বলেন, আমিও হাদীসটি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর নিকট শুনিয়াছি। {১৬৮}
{১৬৮} মুসলিম ১০৬৭, আহমদ ২১০২১, দারিমী ২৪৩৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭১ – ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, অবশ্যই আমার উম্মাতের একটি দল কুরআন পড়বে, কিন্তু তারা ইসলাম থেকে দ্রুত বিচ্যুত হয়ে যাবে, যেমন তীর ধনুক থেকে দ্রুত শিকারের দিকে বেরিয়ে যায়। {১৬৯}
{১৬৯} আহমদ ২৭৭৭৪ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ২২০১।নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৭২ – জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] জিরানাহ নামক স্থানে গনীমাতের মাল ও সোনারূপা বণ্টন করছিলেন। এগুলো বিলাল [রাঃআ:]-এর কোলে ছিল। এক ব্যক্তি বললো, হে মুহাম্মাদ! ইনসাফ করুন। কেননা, আপনি ইনসাফ করছেন না। তিনি বলেন, তোমার জন্য দুঃখ হয়, আমিই যদি ইনসাফ না করি, তবে আমার পরে কে ইনসাফ করিবে? উমার [রাঃআ:] বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাকে ছেড়ে দিন, আমি এই মুনাফিকের ঘাড় উড়িয়ে দেই। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, তার সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি দলের উদ্ভব হইবে, যারা কুরআন পড়বে, কিন্তু তা তাহাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। তারা এমনভাবে ধর্মচ্যুত হইবে, যেমন ধনুক থেকে তীর শিকারের দিকে দ্রুত ছুটে যায়। {১৭০}
{১৭০} বোখারী ৩১৩৮, মুসলিম ১০৬৩, আহমদ ১৪৩৯০, ১৪৪০৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: ফিলাল ৯৪৩। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৩ – ইবনি আবু আওফা [রাঃআ:] বলেন হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, খারিজীরা হলো জাহান্নামের কুকুর। {১৭১}
{১৭১} সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: মিশকাত ৩৫৫৪। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৪ – ইবনি উমার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, একটি দল আবির্ভূত হইবে, যারা কুরআন পড়বে, কিন্তু তা তাহাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। যখনই তারা আবির্ভূত হইবে, তখনই তাহাদের হত্যা করা হইবে। ইবনি উমার [রাঃআ:] বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনেছিঃ যখনই এক দল আবির্ভূত হইবে তখনই তাহাদের ধ্বংস করা হইবে। এভাবে বিশের অধিক বার তা ঘটবে, অতঃপর তাহাদের মধ্য থেকে দাজ্জাল আবির্ভূত হইবে। {১৭২}
{১৭২} হাসান। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ২৪৫৫। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৭৫ – আনাস বিন মালিক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, শেষ যমানায় এ উম্মাতের মধ্যে একটি সম্প্রদায় আবির্ভূত হইবে, যারা কুরআন পড়বে কিন্তু তা তাহাদের কণ্ঠনালীর নিচে যাবে না। তাহাদের চিহ্ন হইবে মুণ্ডিত মাথা। তোমরা তাহাদের দেখিতে পেলেই কিংবা তাহাদের সাক্ষাৎ পেলেই তাহাদের হত্যা করিবে। {১৭৩}
{১৭৩} আবু দাউদ ৪৭৬৫ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: মিশকাত ৩৫৪৩। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬ – আবু উমামাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আসমানের নিচে সর্বাধিক নিকৃষ্ট নিহত ব্যক্তি তারা, যারা জাহান্নামের কুকুর [খারিজীরা] এবং সর্বোত্তম নিহত তারা যারা তাহাদের হত্যা করিতে গিয়ে নিহত হয়েছে। এরা [খারিজীরা] ছিল মুসলিম, পরে কাফির হয়ে যায়। [আবু গালিব বলেন] আমি বললাম, হে আবু উমামাহ! এটা কি আপনার মন্তব্য? তিনি বলেন, বরং আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]–কে তা বলিতে শুনিয়াছি। {১৭৪}
{১৭৪} তিরমিজি ৩০০০ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: হাসান। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: মিশকাত ৩৫৫৪। উক্ত হাদিসের রাবী আবু গালিব সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী তাকে সিকাহ বললেও মুহাম্মাদ বিন সাঈদ তাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি আদী বলেন, কোন সমস্যা নেই। মুসা বিন হারুন তাকে সিকাহ বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৩৪. অধ্যায়ঃ জাহমিয়াহ্ সম্প্রদায় যা অমান্য করে
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৭৭ – জারীর বিন আবদুল্লাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি পূর্ণিমার রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, অচিরেই তোমরা তোমাদের প্রভুকে দেখিতে পাবে, যেমন তোমরা এই চাঁদ দেখিতে পাচ্ছো। তাঁকে দেখিতে তোমাদের কোন অসুবিধা হইবে না। ফাজ্র ও আসরের সলাতে তোমরা পরাভূত না হয়ে সামর্থ্যবান হলে তাই করো [সলাত কাযা করো না]। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন [অনুবাদ]: “এবং তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে”-[সূরাহ কাফ ৫০ : ৩৯]। {১৭৫}
{১৭৫} বোখারী ৫৫৪, ৪৮৫১, ৭৪৩৪, ৭৪৩৫, ৭৫৩৬; মুসলিম ৬৩৩, তিরমিজি ২৫৫১, আবু দাউদ ৩৭২৯, আহমদ ১৮৭০৮, ১৮৭২৩, ১৮৭২৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮ -আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, পূর্ণিমার রাতের চাঁদ দেখিতে তোমাদের কি কোন অসুবিধা হয়? তারা বলেন, না। তিনি বলেন, তদ্রূপ কিয়ামাতের দিন তোমাদের প্রভুর দর্শন লাভে তোমাদের কোন অসুবিধা হইবে না। {১৭৬}
{১৭৬} বোখারী ৮০৬, ৬৫৭৪, ৭৪৩৮, মুসলিম ১৮২, ২৯৬৮, তিরমিজি ২৫৪৯, ২৫৫৪, ২৫৫৭, আবু দাউদ ৪৭৩০, আহমদ ৭৬৬০, ১০৫২৩, দারিমী ২৮০১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াহইয়া বিন ঈসা সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি আদী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯ -আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমারা কি আমাদের রবকে দেখিতে পাবো? তিনি বলেন, তোমরা কি ঠিক দুপুরে মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখিতে বাধাগ্রস্ত হও? আমরা বললাম, না। তিনি আবার বলিলেন, পূর্ণিমার রাতে মেঘমুক্ত আকাশে তোমাদের চাঁদ দেখিতে কি অসুবিধা হয়? তারা বলেন, না। তিনি বলেন, ঐ দুটি দেখিতে তোমাদের যেমন কষ্ট হয় না, তদ্রূপ তাহাঁর দর্শন লাভেও তোমাদের কোন কষ্ট হইবে না। {১৭৭}
{১৭৭} আহমদ ১০৭৩৬ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৮০ – আবু রযীন [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমরা কি কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্কে দেখিতে পাবো এবং তাহাঁর সৃষ্টির মাঝে এর নিদর্শন কী? তিনি বলিলেন, হে আবু রযীন! তোমাদের প্রত্যেকে কি চাঁদকে পৃথকভাবে দেখিতে পায় না? তিনি বলেন, আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেন, আল্লাহ্ অতীব মহান এবং এটাই হলো তাহাঁর সৃষ্টির মাঝে [তাহাঁর] নিদর্শন। {১৭৮}
{১৭৮} আবু দাউদ ৭৪৩১, আহমদ ১৫৭৫৩, ১৫৭৬৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: হাসান। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: ফিলাল ৪৫৯, ৪৬৩। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮১ – আবু রযীন [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, যখন আল্লাহ্র বান্দারা [সামান্য বিপদেই] হতাশ হয় এবং [বিপদ কেটে উঠার জন্য] আল্লাহ্ ভিন্ন অপরের নৈকট্য অন্বেষী হয়, তখন আমাদের প্রভু তার এ আচরণে হাসেন। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! মহান প্রভু কি হাসেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমি বললাম, আমরা কখনো পুণ্যের কাজ ত্যাগ করবো না, যাতে আমাদের প্রভু হাসেন। {১৭৯}
{১৭৯} আহমদ ১৫৭৫৪, ১৫৭৬৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: দুর্বল। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: জামি সগীর ৩৫৮৫ জঈফ জিদ্দান, যিলালিল জান্নাহ ৫৫৪ জঈফ, সহীহা ৬/২৮১০ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী ওয়াকী বিন হুদুস সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। ইমাম যাহাবী তাকে সমর্থন করিয়াছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮২ – আবু রাযীন [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের প্রতিপালক তাহাঁর সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করার পূর্বে কোথায় ছিলেন? তিনি বলেন, মেঘমালার মধ্যে, যার নিচেও বায়ু ছিল না এবং উপরেও বায়ু পানি ছিল না। অতঃপর পানির উপর তিনি তাহাঁর আরশ সৃষ্টি করেন। {১৮০}
{১৮০} তিরমিজি ৩১০৯, আহমদ ১৫৭৫৫, ১৫৭৬৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: দুর্বল। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: তিরমিজি ৩১০৯ জঈফ, মিশকাত ৫৭২৫ জঈফ, যিললুল জান্নাহ ৬১২। উক্ত হাদিসের রাবী ওয়াকী বিন হুদুস সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও ইবনিল কাত্তান বলেন তার অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় নি। ইমাম যাহাবী তাকে সমর্থন করিয়াছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৮৩ – সফওয়ান বিন মুহ্রিয আল-মাযিনী হইতে বর্ণিতঃ
একদা আমরা আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআ:]-এর সাথে ছিলাম। তিনি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করছিলেন। তখন এক ব্যক্তি তার কাছে এসে বলেন, হে ইবনি উমার! আপনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে একান্তে কথা বলা সম্পর্কে কিভাবে বলিতে শুনেছেন? তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি : কিয়ামাতের দিন ঈমানদার ব্যক্তিকে তার প্রতিপালক প্রভুর খুব নিকটবর্তী করা হইবে, এমনকি তিনি তার থেকে পর্দা সরিয়ে নিবেন, অতঃপর তার থেকে তার গুণাহসমূহের স্বীকারোক্তি আদায় করবেন। তিনি বলবেন : তুমি কি চিনতে পেরেছ? সে বলবে, হে প্রভু! হ্যাঁ, আমি চিনতে পেরেছি, এমনকি আল্লাহ্র মর্জিমাফিক সে স্বীকার করিতে থাকিবে। তিনি বলবেন, আমি তোমার এ গুণাহসমূহ দুনিয়াতে লুকিয়ে রেখেছি এবং আজ তোমার সেই গুণাহ ক্ষমা করে দিলাম। অতঃপর তার ডানহাতে তার সৎকাজের হিসাব সম্বলিত একটি পুস্তিকা প্রদান করা হইবে। অপরদিকে কাফের ও মুনাফিকদের উপস্থিত সকলের সামনে ডাক দিয়ে বলা হইবে,
هَؤُلاَءِ الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى رَبِّهِمْ أَلاَ لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الظَّالِمِينَ
“এরাই তাহাদের প্রতিপালক প্রভুর প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। সাবধান! জালিমদের প্রতি আল্লাহ্র অভিসম্পাত” – [সূরাহ হূদ ১১:১৮]। {১৮১}
{১৮১} বোখারী ২৪৪১, মুসলিম ২৭৬৮, আহমদ ৫৪১৩, ৫৭৯১।তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৪ – জাবির বিন আবদুল্লাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, জান্নাতবাসীরা তাহাদের ভোগ-বিলাসে মশগুল থাকিবে, এমতাবস্থায় তাহাদের সামনে একটি নূরের আলোকচ্ছটা বিচ্ছুরিত হইবে। তারা তাহাদের মাথা তুলে দেখিতে পাবে যে, তাহাদের মহান প্রভু তাহাদের উপর দিক থেকে উদ্ভাসিত হয়েছেন। তিনি বলবেন, হে জান্নাতবাসীগণ! আস্সালাম আলাইকুম [তোমাদের উপর অনন্ত শান্তি বর্যিত হোক]। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, এটাই হলো আল্লাহ্র বাণীর প্রমাণ
سَلاَمٌ قَوْلاً مِنْ رَبٍّ رَحِيمٍ
“সালাম [অনন্ত শান্তি] পরম দয়ালু প্রভুর পক্ষ থেকে সম্ভাষণ”-[সূরাহ ইয়াসিন ৩৬ : ৫৮]। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, আল্লাহ্ তাআলা তাহাদের প্রতি তাকাবেন এবং তারাও তাহাঁর প্রতি অপলক নেত্রে তাকাবে। জান্নাতীরা যতক্ষণ আল্লাহ্র দীদারে মশগুল থাকিবে ততক্ষণ তারা অন্য কোন ভোগ-বিলাসের প্রতি ফিরেও তাকাবে না। অবশেষে তিনি তার দৃষ্টি থেকে অন্তর্হিত হইবেন এবং তাহাঁর নূর ও বারাকাত তাহাদের জন্য তাহাদের আবাসে অবারিত থাকিবে। {১৮২}
{১৮২} দুর্বল। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: জামি সগীর ২৩৬৩ জঈফ, মিশকাত ৫৬৬৪ জঈফ, জঈফ তারগীব তারহীব মুনকার; তাখরীজুত তহাবীয়াহ ১৮২। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবু আসিম আল আব্বাদানী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, আমি তাকে চিনি না। ২. ফাদলুর রুক্কাশী সম্পর্কে আহমদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস ও তার হাদিসে সন্দেহ আছে। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি পরিত্যাজ্য।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮৫ – আদী বিন হাতিম [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই তার মহান প্রভু কথা বলবেন এবং তার ও প্রভুর মধ্যখানে কোন দোভাষী থাকিবে না। সে তার ডান দিকে তাকালে তার কৃতকর্ম ব্যতীত কিছুই দেখবে না। সে তার বাম দিকে তাকালে তার কৃতকর্ম ব্যতীত কিছুই দেখবে না। সে তার সামনের দিকে তাকালে জাহান্নাম তাকে অভ্যর্থনা জানাবে। অতএব কারো জাহান্নামের আগুন থেকে আত্নরক্ষা করার সামর্থ্য থাকলে সে যেন এক টুকরা খেজুর দান করে হলেও তাই করে। {১৮৩}
{১৮৩} বোখারী ১৪১৩, ১৪১৭, ৩৫৯৫, ৬০২৩, ৬৫২৯, ৬৫৬৩, ৭৪৪৩, ৭৫১২; মুসলিম ১০১৬/১,২,৩,৪; নাসায়ী ২৫৫২-৫৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৬ – আবদুল্লাহ্ বিন কায়স আল-আশআরী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, দু’টি জান্নাত এবং তার পাত্রসমূহ ও অন্যান্য সব কিছুই হইবে রূপার তৈরি। আরও দু’টি জান্নাত এবং তার পাত্রসমূহ ও অন্যান্য সব কিছুই হইবে সোনার তৈরি। আদন নামক জান্নাতে জান্নাতীগণ ও তাহাদের বারাকাতময় মহান প্রভুর দীদার লাভের মাঝখানে তাহাঁর চেহারার উপর তাহাঁর গৌরবের চাদর ব্যতীত আর কোন প্রতিবন্ধক থাকিবে না। {১৮৪}
{১৮৪} বোখারী ৪৮৭৮, মুসলিম ১৮০, তিরমিজি ২৫২৮, আহমদ ১৯১৮৩, ১৯২৩২; দারিমী ২৮২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ।নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৮৭ – সুহায়ব [বিন সিনান] [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এ আয়াত তিলাওয়াত করেন
لِلَّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ
“যারা কল্যাণকর কাজ করে, তাহাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ ও আরো অধিক” – [সূরাহ য়ূনুস ১০ : ২৬]। অতঃপর তিনি বলেন, জান্নাতীরা জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করার পর এক ঘোষণাকারী ডেকে বলবে : জান্নাতবাসীগণ! নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহ্ তাআলার একটি প্রতিশ্রুতি রয়েছে যা তিনি এখন পূর্ণ করবেন। তারা বলবে, তা কী? আল্লাহ্ তাআলা কি আমাদের [সৎ কর্মের] পাল্লা ভারী করেননি, আমাদের চেহারাগুলো আলোকিত করেননি, আমাদেরকে জান্নাতে দাখিল করেননি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেননি? রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, তখন আল্লাহ্ তাআলা আবরণ উন্মুক্ত করবেন এবং তারা তাহাঁর দিকে তাকাবে। আল্লাহ্র শপথ! আল্লাহ্ তাহাদেরকে তাহাঁর দীদারের চাইতে অধিক প্রিয় ও অধিক নয়নপ্রীতিকর আর কিছু দান করেননি। {১৮৫}
{১৮৫} মুসলিম ১৮১, তিরমিজি ২৫৫২, ৩১০৫; আহমদ ১৮৪৫৬, ১৮৪৬২, ২৩৭০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৮ – আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য যিনি সব রকমের ডাক শুনেন। এক মহিলা তার অভিযোগ নিয়ে নবি [সাঃআ:]-এর কাছে আসে। তখন আমি ঘরের এক কোণে অবস্থানরত ছিলাম। সে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, কিন্তু আমি তার বক্তব্য শুনতে পাইনি। তখন আল্লাহ্ তাআলা এ আয়াত নাযিল করেন
قَدْ سَمِعَ اللَّهُ قَوْلَ الَّتِي تُجَادِلُكَ فِي زَوْجِهَا
“আল্লাহ্ অবশ্যই সেই নারীর কথা শুনেছেন, যে তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে … ” -[সূরাহ মুজাদালা ৫৮ : ১]। {১৮৬}
{১৮৬} নাসায়ী ৩৪৬০ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: ফিলাল ৬২৫, ইরওয়াহ ৭/১৭৫। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮৯ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, তোমাদের প্রতিপালক সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টির পূর্বেই তাহাঁর হাতে তাহাঁর নিজের ব্যাপারে লিপিবদ্ধ করেন : আমার দয়া আমার ক্রোধের উপর অগ্রবর্তী হয়েছে। {১৮৭}
{১৮৭} বোখারী ৩১৯৪, মুসলিম ২৭৫১/১,২; তিরমিজি ৩৫৪৩, আহমদ ৭৪৪৮, ৭৪৭৬, ২৭৩৪৩, ৮৪৮৫, ৮৭৩৫, ৮৯১৪, ৯৩১৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: হাসান সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ১৬২৯। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১৯০ – তালহাহহ্ বিন খিরাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আমি জাবির বিন আবদুল্লাহ্ [রাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি: উহূদের যুদ্ধের দিন আবদুল্লাহ্ বিন আম্র বিন হারাম [রাঃআ:] শহীদ হলে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং বলেন, হে জাবির! আল্লাহ্ তাআলা তোমার পিতা সম্পর্কে যা বলেছেন, আমি কি তোমাকে তা অবহিত করবো না? ইয়াহইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় আছে : রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, হে জাবির! আমার কী হলো, আমি তোমাকে ভগ্ন হৃদয় দেখছি কেন? জাবির [রাঃআ:] বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতা শহীদ হয়েছেন এবং তিনি অনেক সন্তান ও ঋণের বোঝা রেখে গেছেন। তিনি বলেন, আমি কি তোমাকে সুসংবাদ দিবো না যে, আল্লাহ্ তাআলা তোমার পিতার সাথে কিভাবে সাক্ষাৎ করিয়াছেন? তিনি বলেন, অবশ্যই, হে আল্লাহ্র রসূল! তিনি বলেন, আল্লাহ্ তাআলা কখনো অন্তরাল ছাড়া কারো সাথে কথা বলেননি, কিন্তু তোমার পিতার সাথে অন্তরাল ছাড়াই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, কে আমার বান্দা! আমার কাছে কামনা করো, আমি তোমাকে দান করবো। তোমার পিতা বললো, হে প্রভু! আমাকে জীবন দান করুন, যাতে আমি আপনার রাস্তায় পুনরায় শহীদ হতে পারি। মহান ও পবিত্র প্রতিপালক আল্লাহ্ বলেন, আমি তো আগেই লিপিবদ্ধ করে দিয়েছি যে, লোকেরা [মৃত্যুর পর] [পৃথিবীতে] ফিরে যাবে না। তোমার পিতা বললো, হে প্রভু! তাহলে আমার পশ্চাতবর্তীদের কাছে [আমার সৌভাগ্যের] এ খবর পৌঁছে দিন। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ্ তাআলা এ আয়াত নাযিল করেন
وَلاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
“যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয়েছে, তোমরা তাহাদের কখনো মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত এবং তারা তাহাদের প্রভুর নিকট থেকে জীবিকাপ্রাপ্ত”-[সূরাহ আল ইমরান: ৩ :১৬৯]। {১৮৮}
{১৮৮} বোখারী ৭৪৪৪, তিরমিজি ৩০১০, দারিমী ২৮২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: হাসান। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: ফিলাল ৬০২। উক্ত হাদিসের রাবী মুসা বিন ইবরাহীম সম্পর্কে ইমাম যাহাবী তাকে সমর্থন করলেও ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৯১ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা দু’ ব্যক্তিকে দেখে হাসবেন, যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করার পর দু’জনই জান্নাতবাসী হইবে। তাহাদের একজন আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হইবে। অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা হত্যাকারীর তাওবাহ কবূল করবেন, ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করে আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হইবে। {১৮৯}
{১৮৯} বোখারী ২৮২৬, মুসলিম ১৮৯০/১,২; নাসায়ী ৩১৬৫-৬৬, আহমদ ৭২৮২, ২৭৪৪৬, ৯৬৫৭, ১০২৫৮, মুওয়াত্ত্বা মালিক ১০০০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ১০৭৪। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯২ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামাতের দিন যমীন ও আসমানকে গুটিয়ে তাহাঁর ডান হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে বলবেন : আমিই রাজাধিরাজ, পৃথিবীর রাজা-বাদশারা [আজ] কোথায়? {১৯০}
{১৯০} বোখারী ৪৮১২, ৭৩৮২, ৭৪১৩; মুসলিম ২৭৮৭, আহমদ ৮৬৪৬, দারিমী ২৭৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: যিলাল ৫৪৯। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯৩ – আব্বাস বিন আবদুল মুত্তালিব [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি বাতহা নামক স্থানে একদল লোকের সাথে ছিলাম এবং রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]ও তাহাদের সাথে ছিলেন। তখন একখণ্ড মেঘ তাকে অতিক্রম করে। তিনি মেঘখণ্ডের দিকে তাকিয়ে বলেন, তোমরা এটাকে কী নামে অভিহিত করো? তারা বলেন, মেঘ। তিনি বলেন, এবং মুয্ন। তারা বলেন, মুয্নও বটে। তিনি বলেন, আনানও। আবু বাক্র [রাঃআ:] বলেন, তারা সবাই বলিলেন, আনানও বটে। তিনি বলেন, তোমাদের ও আস’মানের মাঝে তোমরা কত দূরত্ব মনে করো? তারা বলেন, আমরা অবগত নই। তিনি বলেন, তোমাদের ও আসমা’নের মাঝে ৭১ বা ৭২ বা ৭৩ বছরের দূরত্ব রয়েছে। এক আসমান থেকে তার ঊর্ধ্বের আস’মানের দূরত্বও তদ্রূপ। এভাবে তিনি সাত আস’মানের সংখ্যা গণনা করেন। অতঃপর সপ্তম আকাশের উপর একটি সমুদ্র আছে যার শীর্ষভাগ ও নিম্নভাগের মধ্যকার ব্যবধান [গভীরতা] দু’ আস’মানের মধ্যকার দুরত্বের সমান। তার উপর রয়েছেন আটজন ফেরেশ্তা, যাদের পায়ের পাতা ও হাঁটুর মধ্যকার ব্যবধান দু’ আসমা’নের মধ্যকার দুরত্বের সমান। তাহাদের পিঠের উপরে আল্লাহ্র আরশ অবস্থিত, যার উপর ও নিচের ব্যবধান [উচ্চতা] দু’ আসমা’নের মধ্যকার দুরত্বের সমান। তার উপরে রয়েছেন বরকতময় মহান আল্লাহ্। {১৯১}
{১৯১} তিরমিজি ৩৩২০, আবু দাউদ ৪৭২৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: জঈফ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: আবু দাউদ ৪৭২৩ জঈফ, মিশকাত ৫৭২৬ জঈফ, যঈফা ১২৪৭, যিলালুল জান্নাহ ৫৭৭। উক্ত হাদিসের রাবী ওয়ালীদ বিন আবু সাওর আল হামদানী সম্পর্কে ইবনি নুমায়র বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন ও মুনকারুল হাদিস। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান ও সাকিহ জাযারাহ তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতীম আর-রাযী বলেন, তার থেকে যাচাই করে হাদিস লিখা যায়। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৯৪ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেন, আল্লাহ্ তাআলা আসমা’নে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা জারী করলে মালায়িকাহ বিনয়াবনত হয়ে তাহাদের পাখাসমূহ দোলাতে থাকেন। ফলে তা থেকে মসৃণ পাথরের উপর জিঞ্জিরের আঘাতের আওয়াজের অনুরূপ আওয়াজ হতে থাকে। “অতঃপর তাহাদের অন্তরের ভীতিকর অবস্থা দূরীভূত হলে তারা পরস্পর জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের রব কী বলেছেন? তারা বলেন, তিনি সত্যই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ মহান” – [সূরাহ সাবা ৩৪ : ২৩]। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, তাহাদের পারস্পারিক আলোচনা শয়তান ওৎ পেতে শোনে এবং ভূপৃষ্ঠে অবস্থানকারী তাহাদের সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে তা পৌঁছে দেয়। কখনো তা নিম্নে অবস্থানকারীদের কাছে পৌঁছানোর পূর্বে তাহাদের প্রতি উল্কাপিণ্ড নিক্ষেপ করা হয়। শ্রুত কথা তারা পৃথিবীতে এসে গণক বা যাদুকরের মুখে ঢেলে দেয়। আবার কখনো তারা কিছুই শুনতে পায় না, বরং [নিজেদের পক্ষ থেকে] তা গণক ও যাদুকরের মুখে তাহাদের কথার সাথে শত মিথ্যা যোগ করে ঢেলে দেয়। তাই কেবল সত্য সেটিই হয় যা তারা আসমান থেকে শোনে। {১৯২}
{১৯২} বোখারী ৪৭০১, ৪৮০০, ৭৪৮১; তিরমিজি ৩২২৩, আবু দাউদ ৩৯৮৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ৩/২৮৩। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে সিকাহ বলেছেন। ইমাম বোখারী তাকে সত্যবাদী বলেছেন। ইবনি আদী বলেন, কোন সমস্যা নেই। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৯৫ – আবু মুসা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] পাঁচটি বিষয় নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়ালেন। তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ ঘুমান না এবং ঘুমানো তাহাঁর জন্য সঙ্গতও নয়। তিনি মীযান [তুলাদণ্ড] নীচু করেন এবং উঁচু করেন। রাতের কর্মকাণ্ড দিনের কর্মকাণ্ডের পূর্বেই এবং দিনের কর্মকাণ্ড রাতের কর্মকাণ্ডের পূর্বেই তাহাঁর নিকট পৌঁছানো হয়। তাহাঁর পর্দা হচ্ছে নূর [জ্যোতি]। তিনি তাহাঁর পর্দা তুলে নিলে তাহাঁর চেহারার জ্যোতি বা মহিমা তাহাঁর সৃষ্টির দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত সব কিছু ভস্মীভূত করে দিত। {১৯৩}
{১৯৩} মুসলিম ১৭৯/১,২; আহমদ ১৯০৩৬, ১৯০৯০, ১৯১৩৫; ইবনি মাজাহ ১৯৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: যিলাল ৬১৪। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৯৬ – আবু মুসা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ ঘুমান না এবং ঘুমানো তাহাঁর জন্য শোভাও পায় না। তিনি দাঁড়িপাল্লা উঠা-নামা করান। তাহাঁর পর্দা হলো নূর। তিনি তাহাঁর পর্দা তুলে নিলে তাহাঁর চেহারার জ্যোতি [বা মহিমা] মানুষের দৃষ্টিসীমার সব কিছুকে জ্বালিয়ে দিত। অধস্তন রাবী আবু উবায়দাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ আয়াত তিলাওয়াত করেন :
أَنْ بُورِكَ مَنْ فِي النَّارِ وَمَنْ حَوْلَهَا وَسُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
“ধন্য তারা যারা আছে এ আলোর মাঝে এবং যারা আছে তার চারপাশে। জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্ পবিত্র ও মহিমান্বিত” [সূরাহ নামল : ৮] {১৯৪}
{১৯৪} মুসলিম ১৭৯/১,২; আহমদ ১৯০৩৬, ১৯০৯০, ১৯১৩৫; ইবনি মাজাহ ১৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আল-মাসউদী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি নুমায়র বলেন, তিনি সিকাহ তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। মুহাম্মাদ বিন সা’দ বলেন তিনি সিকাহ তবে মৃত্যুর পূর্বে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। আলী ইবনিল মাদীনী তাকে সিকাহ বলেছেন। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৯৭ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, আল্লাহ্র ডান হাত পরিপূর্ণ, কোন কিছুই তার পূর্ণতাকে হ্রাস করিতে পারে না। তিনি রাত-দিন অবধারিত দান করেন। তাহাঁর অপর হাতে রয়েছে তুলাদন্ড। তিনি তুলাদন্ড উঠানামা করান। নবি [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, তুমি কি দেখো না যে, আল্লাহ্ আসমান-যমীন সৃষ্টির সূচনা থেকে অবাধে খরচ করছেন, তারপরও তাতে তাহাঁর হাতে যা আছে তার সামান্যও কমেনি। {১৯৫}
{১৯৫} বোখারী ৪৬৮৪, মুসলিম ৯৯৩, তিরমিজি ৩০৪৫, আহমদ ৭২৫৬, ২৭৩৫৭, ১০১২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: যিলাল ৭৮০। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে সিকাহ বলেছেন। আলী ইবনিল মাদীনী তাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ১৯৮ – আব্দুল্লাহ বিন উমার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলিতে শুনেছিঃ মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ [কিয়ামাতের দিন] আসমান ও যমীনসমূহকে ধরে তাহাঁর হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে নিবেন। তিনি তাহাঁর হাত সংকুচিত করবেন এবং সম্প্রসারিত করবেন, অতঃপর বলবেনঃ “আমি মহাপ্রতাপশালী। দাম্ভিকরা কোথায়?” রাবী বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ডানদিক ও বামদিকে ঝুঁকতে থাকলেন, এমনকি আমি দেখলাম যে, মিম্বারটি নিচে থেকে আন্দোলিত হচ্ছে। আমি ভাবলাম, মিম্বারটি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সমেত উল্টে পড়ে যাবে না তো! {১৯৬}
{১৯৬} বোখারী ৭৪১৩, মুসলিম ২৭৮৮/১,২; আবু দাউদ ৪৭৩২, দারিমী ২৭৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: যিলাল ৫৪৬। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৯৯ – আন-নাওওয়াস বিন সামআন আল-কিলাবী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বলিতে শুনেছিঃ প্রতিটি অন্তঃকরণ দয়াময় আল্লাহ্র দু’ আঙ্গুলের মাঝখানে অবস্থিত। তিনি চাইলে তা সোজা পথে প্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং তিনি চাইলে তা বক্র পথে চালিত করেন। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিতেনঃ
يَا مُثَبِّتَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قُلُوبَنَا عَلَى دِينِكَ
”হে অন্তরসমূহের স্থিরতাদানকারী! আমাদের অন্তরসমূহকে আপনার দ্বীনের উপর স্থির রাখুন।” তিনি আরো বলেন, তুলাদন্ডও দয়াময় আল্লাহ্র হাতে। তিনি কিয়ামত পর্যন্ত কোন সম্প্রদায়কে উন্নত করবেন এবং কোন সম্প্রদায়কে অবনত করবেন। {১৯৭}
{১৯৭} আহমদ ১৭১৭৮ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ২০৯১। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০০ – আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ্ তিনটি বিষয়ে হাসেন [আনন্দিত হন]ঃ সলাতের কাতারের জন্য, যে ব্যক্তি গভীর রাতে সলাতরত থাকে এবং যে ব্যক্তি সৈন্যবাহিনীকে পিছু হটতে দেখেও জিহাদরত থাকে।’ {১৯৮}
{১৯৮} নাই তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: জঈফ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: যঈফাহ ৩১০৩। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আব্দুল্লাহ বিন ইসমাঈল সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও আবু হাতীম আর-রাযী ও ইমাম যাহাবী বলেন তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ২. মুজালিদ [বিন সাঈদ বিন উমায়র] সম্পর্কে ইমাম বোখারী ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ তাকে সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমদ বিন হাম্বল তেমন সমস্যা নেই। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। অন্যত্র তিনি তাকে দুর্বল বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ২০১ – জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হাজ্জের মৌসুমে নিজেকে লোকদের সামনে পেশ করিতেন এবং বলিতেনঃ কুরায়শরা আমাকে আমার প্রভুর কালাম প্রচারে বাধা দিচ্ছে। তোমাদের মাঝে এমন কে আছে যে আমাকে তার গোত্রের কাছে নিরাপদে নিয়ে যাবে? {১৯৯}
{১৯৯} তিরমিজি ২৯২৫, আবু দাউদ ৪৭৩৪, আহমদ ১৪৭৭০, দারিমী ৩৩৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ১৯৪৭। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২ – আবুদ-দারদা’ [ঊওয়াইমির বিন মালিক] [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আল্লাহ্র বানীঃ
كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِي شَأْنٍ
“তিনি প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত”-[সুরাহ আর-রহমান ৫৫ : ২৯] সম্পর্কে বলেন, আল্লাহ্র কাজের মধ্যে তিনি গুনাহ ক্ষমা করেন, বিপদাপদ দূর করেন, এক দলকে উন্নীত করেন এবং অপর দলকে অবনমিত করেন। {২০০}
{২০০} হাসান। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: যিলাল ৩০১। উক্ত হাদিসের রাবী আল ওয়াযীর বিন সাবীহ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র তিনি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। দুহাইয়ম বলেন কোন সমস্যা নেই। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৩৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন উৎকৃষ্ট নীতি বা নিন্দনীয় নীতির প্রচলন করে।
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ২০৩ – জারীর বিন আব্দুল্লাহ বিন জাবির [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন উত্তম পন্থার প্রচলন করলো এবং লোকে তদানুযায়ী কাজ করলো, তার জন্য তার নিজের পুরস্কার রয়েছে, উপরন্তু যারা তদানুযায়ী কাজ করেছে তাহাদের সমপরিমাণ পুরস্কারও সে পাবে, এতে তাহাদের পুরস্কার মোটেও হ্রাস পাবে না। আর যে ব্যক্তি কোন মন্দ প্রথার প্রচলন করলো এবং লোকেরা তদানুযায়ী কাজ করলো, তার জন্য তার নিজের পাপ তো আছেই, উপরন্তু যারা তদানুযায়ী কাজ করেছে, তাহাদের সমপরিমাণ পাপও সে পাবে, এতে তাহাদের পাপ থেকে মোটেও হ্রাস পাবে না। {২০১}
{২০১} মুসলিম ১০১৭, তিরমিজি ২৬৭৫, নাসায়ী ২৫৫৪, আহমদ ১৮৬৭৫, ১৮৬৯৩, ১৮৭০১; দারিমী ৫১২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৪ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি [সাহায্যের জন্য] নবি [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কাছে এলে তিনি তাকে সাহায্য করার জন্য [লোকেদের] উৎসাহিত করিলেন। এক ব্যক্তি বললো, আমার পক্ষ থেকে এই এই পরিমাণ। রাবী বলেন, উক্ত মজলিসে এমন কেউ অবশিষ্ট রইল না, যে কম বেশি কিছু ঐ ব্যক্তিকে দান করেনি। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, কোন ব্যক্তি কোন উত্তম পন্থার প্রচলন করলে এবং তদানুযায়ী কাজ করা হলে সে তার পূর্ণ প্রতিদান পাবে এবং যারা সেই পন্থা অনুসরণ করে তাহাদের সমপরিমাণ পুরস্কারও ঐ ব্যক্তি পাবে, এতে তাহাদের প্রতিদানে কোন ঘাটতি হইবে না। পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তি কোন মন্দ পন্থার প্রচলন করলে এবং তদানুযায়ী কাজ করা হলে পূর্ণ পাপের বোঝা তার উপর বর্তাবে এবং যারা উক্ত পন্থার অনুসরণ করিবে তাহাদের সমপরিমাণ পাপও ঐ ব্যক্তির উপর বর্তাবে, এতে তাহাদের পাপের বোঝা মোটেও হালকা হইবে না। {২০২}
{২০২} সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: তালাকুর রগীর ১/৪৮। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ২০৫ – আনাস বিন মালিক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, যে কোন আহবানকারী ভ্রষ্টতার দিকে আহবান করলে তার অনুসরণকারীদের সমপরিমাণ পাপ তার উপর বর্তাবে এবং তাতে তার অনুসরণকারীদের পাপের বোঝা মোটেও হালকা হইবে না। আবার যে কোন ব্যক্তি সৎপথের দিকে আহবান করলে সে তার অনুসরণকারীদের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে এবং এতে তাহাদের সাওয়াব মোটেই হ্রাসপ্রাপ্ত হইবে না। {২০৩}
{২০৩} তিরমিজি ৩২২৮, দারিমী ৫১৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ লিগাইরিহী।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
২০৬ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, যে ব্যক্তি হিদায়াতের দিকে ডাকে, সে তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে এবং তাতে তার অনুসারীদের পুরস্কারে কোনরূপ ঘাটতি হইবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে আহবান করে, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ গুনাহ হয় এবং এতে তার অনুসারীদের পাপের বোঝা কিছুমাত্র কমবে না। {২০৪}
{২০৪} মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিজি ২৬৭৪, আবু দাউদ ৪৬০৯, দারিমী ৫১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহীহাহ ৮৬৫। উক্ত হাদিসের রাবী আলা বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আহমদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ তার খারাফি সম্পর্কে কারো থেকে কোন কিছু শুনিনি। ইমাম তিরমিযি বলেন, হাদিস বিশারদদের নিকট তিনি সিকাহ। ইমাম নাসাঈ বলেন কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদি বলেন, আমি কোন সমস্যা দেখি না। ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বলেছেন। নিন্দনীয় নীতি খারিজিদের আকিদা- এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ২০৭ – আবু জুহাইফাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, কোন ব্যক্তি কোন ভাল প্রথার প্রচলন করলে এবং তার পরে তদনুসারে কাজ করলে তার জন্য এ কাজের পুরস্কার রয়েছে, অধিকন্তু তার অনুসারীদের সমপরিমাণ পুরস্কারও রয়েছে। অবশ্য তাতে তাহাদের পুরস্কারে কোন ঘাটতি হইবে না। পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তি কোন মন্দ প্রথার প্রচলন করলে এবং তার পরে তদানুযায়ী কাজ করা হলে তার জন্য এ কাজের গুনাহ রয়েছে এবং যারা তদনুসারে কাজ করিবে, তাহাদের গুনাহের সমপরিমাণ তার উপর বর্তাবে, এতে তাহাদের গুনাহের পরিমাণ কিছুই কমবে না। {২০৫}
হাসান সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২০৮ – আবু হুরাইরা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, কোন ব্যক্তি কোন জিনিসের [মতবাদের] দিকে আহবান করলে কিয়ামাতের দিন তাকে সেই আহবানসহ দাঁড় করানো হইবে, সে মাত্র এক ব্যক্তিকে আহবান করে থাকলেও। {২০৬}
{২০৬} নাই তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: জঈফ। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: তারগীব ৪৩ জঈফ, তালাকুল রগীব ১/৫০, যিলালুল জান্নাহ ১১২। উক্ত হাদিসের রাবী লায়স সম্পর্কে ইমাম বোখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেব। আহমদ বিন হাম্বল বলেন, মুদতারাবুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু হাতিম এবং আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন বিলুপ্ত সুন্নাতকে পুনর্জীবিত করে তার বিনিময় যা পাবে
২০৯ – আম্র বিন আওফ আয-মুযানী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, যে ব্যক্তি আমার একটি [মৃত] সুন্নাত জীবিত করলো এবং লোকেরা তদানুযায়ী আমাল করলো, সেও আমালকারীদের সমপরিমাণ পুরস্কার পাবে এবং তাতে আমালকারীদের পুরস্কার আদৌ হ্রাস পাবে না। পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তি বিদআতের প্রচলন করলে এবং তদানুযায়ী আমাল করা হলে তার উপর আমালকারীদের সমপরিমাণ পাপ বর্তাবে এবং তাতে আমালকারীদের পাপের বোঝা আদৌ হালকা হইবে না। {২০৭}
{২০৭} তিরমিজি ২৬৭৭ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবী যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, সাওরীর হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করিয়াছেন। আলী ইবনিল মাদীনী তাকে সিকাহ বললেও আহমদ বিন সালিহ আল-মিসরী তাকে সত্যবাদী বলেছেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
সুনানে ইবনে মাজাহ নং ২১০ – আমর বিন আওফ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আমার [মৃত্যুর] পরে বিলুপ্ত হওয়া আমার কোন সুন্নাত জীবিত করলো, সে তদানুযায়ী আমালকারীদের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে এবং তাতে আমালকারীদের সামান্যও হ্রাস পাবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এমন কোন বিদআতের প্রচলন করলো, যার প্রতি আল্লাহ্ ও তাহাঁর রসূল সন্তুষ্ট নন, তার উপর বিদআত অনুসরণকারীদের সমপরিমাণ গুনাহ বর্তাবে এবং তাতে অনুসরণকারীদের পাপের পরিমান কিছুই হ্রাস পাবে না। {২০৮}
{২০৮} তিরমিজি ২৬৭৭ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানি: খুবই দুর্বল। তাখরিজ নাসিরুদ্দিন আলবানি: জামি সগীর ৯৬৫ জঈফ, ৫৩৫৯ জঈফ জিদ্দান, তিরমিজি ২৬৭৭ জঈফ, মিশকাত ১৬৮ জঈফ, তারগীব ৩ ,৪২ জঈফ জিদ্দান, যিলালুল জান্নাহ ৪২ মিশকাত ১৬৮। উক্ত হাদিসের রাবী ১. ইসমাঈল বিন আবু উওয়ারস সম্পর্কে ইমাম নাসাঈ ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমদ বিন হাম্বল বলেন, কোন সমস্যা নেই। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনার ব্যপারে অমনোযোগী। ২. ইমাম শাফিঈ বলেন, তিনি মিথ্যুকদের একজন অথবা মিথ্যার একটি রুকন। আহমদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি মিথ্যুকদের অন্যতম সদস্য।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
Leave a Reply