পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস – নাপাকী, উযু, মিসওয়াক, ফিতরাত ই.
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস – নাপাকী, উযু, মিসওয়াক, ফিতরাত ই. >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১, অধ্যায় (১-৮)= ৮ টি। হাদীস (২৬৭-২৯৫) =২৯ টি
১. অধ্যায়ঃ নাপাকী হইতে উযু ও গোসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ
২. অধ্যায়ঃ ইবনে মাজাহ আল্লাহ পবিত্রতা ব্যতীত সলাত কবূল করেন না
৩. অধ্যায়ঃ ইবনে মাজাহ পবিত্রতা সলাতের চাবি
৪. অধ্যায়ঃ উযুর সংরক্ষণ
৫. অধ্যায়ঃ ঈমানের অর্ধেক উযু
৬. অধ্যায়ঃ পবিত্রতা অর্জনের প্রতিফল
৭. অধ্যায়ঃ মিসওয়াকের বর্ণনা
৮. অধ্যায়ঃ ফিতরাত বা স্বভাবজাত কার্য
১. অধ্যায়ঃ নাপাকী হইতে উযু ও গোসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ
ইবনে মাজাহ – ২৬৭. সাফীনাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক মুদ্দ পানি দিয়ে উযু করিতেন এবং এক সা পানি দিয়ে গোসল করিতেন। {২৬৫}
{২৬৫} মুসলিম ৩২৬, তিরমিজি ৫৬, আহমাদ ২১৪২৩, দারিমি ৬৮৮, সহিহ আবু দাউদ ৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৮. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক মুদ্দ পানি দিয়ে উযু করিতেন এবং এক সা পানি দিয়ে গোসল করিতেন। {২৬৬}
{২৬৬} আবু দাউদ ৯২, আহমাদ ২৪৪৯৪, ২৫৪৪৩, ২৫৫৮৯, ২৫৮৬১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৬৯. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক মুদ্দ পানি দিয়ে উযু করিতেন এবং এক সা পানি দিয়ে গোসল করিতেন। {২৬৭}
{২৬৭} বোখারি ২৫২, নাসায়ি ২৩০, আবু দাউদ ৯৩, আহমাদ ১৩৮৩৮, ১৪৫৫৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৩। উক্ত হাদিসের রাবি রাবি বিন বাদর সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে দুর্বল বলেছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ সনদ রয়েছে, তন্মধ্যে সহিহ বোখারিতে ৩ টি সহিহ মুসলিমে ৪ টি তিরমিযি ১ টি আবু দাউদ ৩ টি ইবনি মাজাহ ৪ টি মুসনাদে আহমাদ ২১ টি ও বাকিগুলো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭০. আকীল বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, উযুতে এক মুদ্দ এবং গোসলে এক সা পানি যথেষ্ট। এক ব্যক্তি বললো, আমাদের জন্য [এ পরিমাণ পানি] যথেষ্ট নয়। তিনি বলিলেন, এ পরিমাণ পানি তো তোমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তির জন্যও যথেষ্ট ছিল, যাঁর মাথার চুলও বেশী অর্থাৎ নবী [সাঃআঃ]। {২৬৮}
{২৬৮} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১৯১৯১, ২৪৪৭। উক্ত হাদিসের রাবি ১. হিব্বান আলী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন আল মাঈন আল আজালী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ২. ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ সম্পর্কে আহমাদ বিন সালিহ তাকে সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে কিন্তু দলীল হিসেবে গ্রহন করা গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, কোন সমস্যা নেই। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ রয়েছে, তন্মধ্যে সহিহ বোখারিতে ৩ টি সহিহ মুসলিমে ৪ টি তিরমিযি ১ টি আবু দাউদ ৩ টি ইবনি মাজাহ ৪ টি মুসনাদ আহমাদ ২২ টি বাকিগুলো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।বনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২. অধ্যায়ঃ ইবনে মাজাহ আল্লাহ পবিত্রতা ব্যতীত সলাত কবূল করেন না
২৭১. উসামাহ বিন উমায়র আল-হুযালী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ পবিত্রতা ব্যতীত সলাত কবূল করেন না এবং হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের দান-খয়রাত কবূল করেন না। {২৬৯}
{২৬৯} নাসায়ি ১৩৯, আবু দাউদ ৫৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৩।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ পবিত্রতা ছাড়া সলাত কবূল করেন না এবং হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের দান-খয়রাত কবূল করেন না। {২৭০}
{২৭০} মুসলিম ২২৪, তিরমিজি ১, আহমাদ ৪৬৮৬, ৪৯৪৯, ৫১০২, ৫১৮৩, ৫৩৯৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১২০।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭৩. আনাস মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ আল্লাহ পবিত্রতা ছাড়া সলাত কবূল করেন না এবং হারাম পন্থায় অর্জিত মালের দান-খয়রাতও কবূল করেন না।
সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭৪. আবু বাক্রাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ পবিত্রতা ছাড়া সলাত কবূল করেন না এবং হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের দান-খয়রাত কবূল করেন না।
সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি খালীল বিন যাকারিয়্যা সম্পর্কে সালিহ জাযারাহ বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আল আযাদী বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আস সাজী বলেন, তিনি কিছু হাদিসে বিরোধিতা করিয়াছেন। ইবনি আদী বলেন, মুনকারুল হাদিস। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩. অধ্যায়ঃ ইবনে মাজাহ পবিত্রতা সলাতের চাবি
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৭৫. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, পবিত্রতা হলো সলাতের চাবি, তার তাকবীর হলো হারামকারী এবং তার সালাম হলো হালালকারী। {২৭৩}
{২৭৩} তিরমিজি ৩, আবু দাউদ ৬১, ৬১৮; আহমাদ ১০০৯, ১০৭৫; দারিমি ৬৮৭। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩১২, ইরওয়াহ ৩০১।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৭৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, পবিত্রতা হলো সলাতের চাবি, তাকবীর হলো তার হারামকারী এবং সালাম হলো তার হালালকারী। {২৭৪}
{২৭৪} তিরমিজি ২৩৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু সুফইয়ান তরীফ আস-সাদী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪. অধ্যায়ঃ উযুর সংরক্ষণ
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৭৭. সাওবান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা [দ্বীনের উপর] অবিচল থাকো, যদিও তোমরা আয়ত্তে রাখতে পারবে না। জেনে রাখো, তোমাদের আমালসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হলো সলাত। কেবল মুমিন ব্যক্তিই যত্ন সহকারে উযু করে। {২৭৫}
{২৭৫} আহমাদ ২১৮৮৩, ২১৯২৭; দারিমি ৬৫৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ২৯২, ইরওয়া।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭৮. আবদুল্লাহ বিন আম্র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা [দ্বীনের উপর] স্থির থাকো, যদিও তোমরা তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। জেনে রাখো! তোমাদের সর্বোত্তম আমাল হলো সলাত। কেবল মুমিন ব্যক্তিই যত্ন সহকারে উযু করে। {২৭৬}
{২৭৬} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২/১৩৭। উক্ত হাদিসের রাবি লায়স সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুদতারাবুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭৯. আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা দ্বীনের উপর স্থির থাকো। তোমরা দ্বীনের উপর অবিচল থাকলে তা কল্যাণকর। তোমাদের কার্যাবলীর মধ্যে সর্বোত্তম কাজ হলো সলাত আদায় করা। মুমিন ব্যক্তিই যত্ন সহকারে উযু করে। {২৭৭}
{২৭৭} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৯৫৩ সহিহ, ইরওয়াউল গালীল ২/১৩৭। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইসহাক বিন আসীদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও তিনি অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি প্রসিদ্ধ নন। আবু আহমাদ আল হাকিম বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইবনি আবদুল বার বলেন, তার হাদিস মুনকার। ইমাম যাহাবী বলেন, তার সম্পর্কে জানা যায় নি।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫. অধ্যায়ঃ ঈমানের অর্ধেক উযু
২৮০. আবু মালিক আল-আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, সুষ্ঠুভাবে উযু করা ঈমানের অর্ধেক। আল-হামদুলিল্লাহ [নেকীর] পাল্লা ভারী করে। সুবহানাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী ভরে দেয়। সলাত হলো নূর, যাকাত হলো দলীল, ধৈর্য হলো আলোকমালা এবং কুরআন হলো তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষের প্রমাণ। প্রত্যেক মানুষ ভোরে উপনীত হয়ে নিজেকে বিক্রয় করে, এতে সে হয় তাকে মুক্ত করে অথবা ধ্বংস করে। {২৭৮}
{২৭৮} মুসলিম ২২৩, তিরমিজি ৩৫১৭, আহমাদ ২২৩৯৫, ২২৪০১; দারিমি ৬৫৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬. অধ্যায়ঃ পবিত্রতা অর্জনের প্রতিফল
২৮১. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করে কেবল সলাত আদায়ের জন্যে মাসজিদে রওনা হলে তার মাসজিদে পৌঁছা পর্যন্ত তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার একধাপ মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং তার একটি গুনাহ্ মাফ করেন। {২৭৯}
{২৭৯} আহমাদ ৭৩৮২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৮২. আবদুল্লাহ আস-সুনাবিহী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি উযু করে কুলি করলো এবং নাকে পানি পৌঁছালো, তার গুনাহ্সমূহ তার মুখ ও নাক থেকে বের হয়ে যায়। সে তার মুখমণ্ডল ধৌত করলে তার গুনাহ্সমূহ তার মুখমণ্ডল থেকে বের হয়ে যায়, এমনকি তার দু চোখের ভ্রুর নিম্নাংশ থেকেও গুনাহ্সমূহ বেরিয়ে যায়। সে তার উভয় হাত ধৌত করলে তার দু হাত থেকে গুনাহ্সমূহ বেরিয়ে যায়। সে তার মাথা মাসহ করলে তার মাথা থেকে গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়, এমনকি তার দু কান থেকেও গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। সে তার উভয় পা ধৌত করলে পদদ্বয় থেকেও গুনাহসমূহ ঝরে যায়, এমনকি তার পদদ্বয়ের নখের নিম্নভাগ থেকেও গুনাহ্ বের হয়ে যায়। এরপর তার সলাত ও তার মসজিদে যাতায়াতের সাওয়াব [উল্লিখিত বিষয়ের] অতিরিক্ত। {২৮০}
{২৮০} নাসায়ি ১০৩, আহমাদ ১৮৫৮৫, ১৮৮৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৬২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ১/৭৬/১৮০।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩. আম্র বিন আবাসাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বান্দা যখন উযু করে এবং তার উভয় হাত ধৌত করে, তখন তার দু হাত থেকে গুনাহসমূহ নির্গত হয়ে যায়। যখন সে তার মুখমণ্ডল ধৌত করে, তখন তার মুখমণ্ডল থেকে তার গুনাহসমূহ নির্গত হয়ে যায়। যখন সে তার উভয় হাত ধৌত করে এবং তার মাথা মাসহ করে, তখন তার দু হাত ও মাথা থেকে তার গুনাহসমূহ নির্গত হয়ে যায়। এরপর যখন সে তার পদদ্বয় ধৌত করে, তখন তার পদদ্বয় থেকে তার গুনাহসমূহ নির্গত হয়ে যায়। {২৮১}
{২৮১} মুসলিম ৮৩২, নাসায়ি ১৪৭, আহমাদ ১৬৫৭১, ১৬৫৮০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াযীদ বিন তলক সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল বলেছেন। ২. আব্দুর রহামান ইবনিল বায়লামানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। সালিহ জাযারাহ বলেন, তার হাদিস মুনকার। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আল আযাদী বলেন মুনকারুল হাদিস। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৪. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি আপনার উম্মাতের যেসব লোককে দেখেননি তাহাদের কিভাবে চিনবেন? তিনি বলেন, উযুর কারণে তাহাদের মুখমণ্ডল ও তাহাদের উযুর অন্যান্য অঙ্গ থেকে বিচ্ছুরিত আলোর সাহায্যে। {২৮২}
{২৮২} আহমাদ ৩৮১০, ৪৩১৭। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৮৫. উসমান বিন আফ্ফান [রাঃআঃ]-এর মুক্তদাস হুমরান হইতে বর্ণিতঃ
আমি উসমান বিন আফ্ফান [রাঃআঃ]-কে এক স্থানে উপবিষ্ট দেখলাম। তিনি উযুর পানি নিয়ে ডাকলেন এবং উযু করিলেন, অতঃপর বলেন, আমি রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমার এ স্থানে বসে আমার ন্যায় উযু করিতে দেখেছি। অতঃপর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমার উযুর ন্যায় উযু করিবে, তার পূর্বেকার সমস্ত গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হইবে। রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] আরো বলেছেন, কিন্তু তোমরা তাতে আত্নতুষ্টির ধোঁকায় পড়ো না।
৫/২৮৫[১]. উসমান [রাঃআঃ], নবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। {২৮৩}তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।{২৮৩} বোখারি ১৬০, ১৬৪; মুসলিম ২২৬/১-২, ২২৯; নাসায়ি ৮৪, ৮৫, ১১৬; আবু দাউদ ১০৬, ১০৮, ১১০; আহমাদ ৪২০, ৪৬১, ৪৭৪, ৪৯১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৬১, দারিমি ৬৯৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৭. অধ্যায়ঃ মিসওয়াকের বর্ণনা
২৮৬. হুযায়ফাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন রাতে তাহাজ্জুদের সলাত আদায় করিতে উঠতেন, তখন তিনি মিসওয়াক দিয়ে তার মুখ পরিষ্কার করিতেন। {২৮৪}
{২৮৪} বোখারি ২৪৬, ৮৮৯, ১১৩৬; মুসলিম ২৫৫/১-২, নাসায়ি ২, ১৬২১, ১৬২২, ১৬২৩; আবু দাউদ ৫৫, আহমাদ ২২৭৩১, ২২৮০২, ২২৮৫৭, ২২৯০৬, ২২৯৪৮; দারিমি ৬৮৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৭১,ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৮৭. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাহাদেরকে প্রতি ওয়াক্ত সলাতের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম। {২৮৫}
{২৮৫} বোখারি ৮৮৭, ৭২৪০; মুসলিম ২৫২, তিরমিজি ২২, নাসায়ি ৭, আবু দাউদ ৪৬, আহমাদ ৭২৯৪, ৭৩৬৪, ৭৪৫৭, ৭৭৯৪, ৮৯২৮, ৮৯৪১, ৯২৬৪, ৯৩০৮, ৯৬১২, ১০২৪০, ১০৩১৮, ১০৪৮৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৪৭, ১৪৮; দারিমি ৬৮৩, ১৪৮৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৭০।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতে দু দু রাকআত করে [নফল] সলাত আদায় করিতেন এবং [সলাত থেকে] অবসর হয়ে মিসওয়াক করিতেন। {২৮৬}
{২৮৬} মুসলিম ২৫৬, আবু দাউদ ৫৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ইমাম বোখারি মন্তব্য করিয়াছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৮৯. আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা মিসওয়াক করো। কেননা মিসওয়াক মুখ পবিত্র ও পরিস্কার করে এবং মহান প্রভুর সন্তুষ্টি লাভের উপায়। আমার কাছে যখনই জিবরাঈল [আঃ] এসেছেন তখনই আমাকে মিসওয়াক করার উপদেশ দিয়েছেন। শেষে আমার আশঙ্কা হয় যে, তা আমার ও আমার উম্মাতের জন্য ফার্দ করা হইবে। আমি যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হওয়ার আশঙ্কা না করতাম, তাহলে তাহাদের জন্য তা ফার্দ করে দিতাম। আমি এত বেশি মিসওয়াক করি যে, আমার মাড়িতে ঘা হওয়ার আশঙ্কা হয়। {২৮৭}
{২৮৭} আহমাদ ২১৭৬৬ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জইফ তারগিব ১৪৪, তালীকুর রগীব ১/১০১, ১০২। উক্ত হাদিসের রাবি আলী বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, মুনকারুল হাদিস ও দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯০. শুরায়হ্ বিন হানী হইতে বর্ণিতঃ
আমি আয়িশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী [সাঃআঃ] আপনার নিকট এসে প্রথমে কোন কাজটি করিতেন তা আমাকে অবহিত করুন। তিনি বলেন, তিনি প্রবেশ করেই প্রথমে মিসওয়াক করিতেন। {২৮৮}
{২৮৮} মুসলিম ২৫৩/১-২, নাসায়ি ৮, আবু দাউদ ৫১, আহমাদ ২৭৬০১, ২৪২৭৪, ২৪৯৫৮, ২৫২০, ২৫৬৪, ২৫৪৬৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৭২।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৯১. আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের মুখ হলো কুরআনের রাস্তা। অতএব তোমরা দাঁতন করে তা পবিত্র ও সুগন্ধযুক্ত করো। {২৮৯}
{২৮৯} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১২১৩। উক্ত হাদিসের রাবি বাহর বিন কানীয সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন তার থেকে হাদিস গ্রহন করেন নি। ইমাম যুহরী বলেন তিনি নির্ভরযোগ্যদের মধ্যে নন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন এবং তার থেকে হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ২. উসমান বিন সাজ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও আল-আযদী বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আল উকায়লি বলেন তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে কিন্তু দলীল হিসেবে নয়।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৮. অধ্যায়ঃ ফিতরাত বা স্বভাবজাত কার্য
২৯২. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ফিতরাত পাঁচটি অথবা পাঁচটি জিনিস স্বভাবজাতঃ খতনা করা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা, নখসমূহ কাটা, বগলের পশম তুলে ফেলা এবং মোচ কাটা। {২৯০}
{২৯০} বোখারি ৫৮৮৯, ৫৮৯১, ৬২৯৭; মুসলিম ২৫৭/১-২, তিরমিজি ২৭৫৬, নাসায়ি ৯১০১১, ৫২২৫; আবু দাউদ ৪১৯৮, আহমাদ ৭০৯২, ৭২২০, ৭৭৫৪, ৯০৬৬, ৯৯৬৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৭০৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৭৩।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৯৩. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, দশটি জিনিস ফিতরাত বা স্বভাবজাত। মোচ কাটা, দাড়ি বাড়ানো, মিসওয়াক করা, নাকের ছিদ্র পানি দিয়ে পরিষ্কার করা, নখ কাটা, আঙ্গুলের সংযোগ স্থলের ময়লা ধুয়ে ফেলা, বগলের লোম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা ও পানি দিয়ে শৌচ করা। যাকারিয়্যা [রহঃ] বলেন মুসআব [রহঃ] বলেছেন, আমি দশম জিনিসের কথা ভুলে গেছি, সেটি হয়তো কুলি করা। {২৯১}
{২৯১} তিরমিজি ২৭৫৭, নাসায়ি ৫০৪০, আবু দাউদ ৫৩, আহমাদ ২৪৫৩৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুসআব বিন শায়বাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইমাম যাহবী সিকাহ বলেছেন। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে একাধিক মুনকার হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম নাসাঈ বলেন, মুনকারুক হাদিস। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নন। ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৯৪. আম্মার বিন ইয়াসির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, কুলি করা, নাকের ছিদ্রপথে পানি পৌঁছানো, মিসওয়াক করা, মোচ কাটা, নখ কাটা, বগলের লোম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা, আঙ্গুলের সংযোগ স্থলগুলো ধৌত করা, শৌচ করা, খতনা করা ইত্যাদি মানব স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত।
৩/২৯৪.[ক] আলী ইবনে যায়দ থেকে উপর্যুক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। {২৯২}
তাহকিক আলবানিঃ হাসান।{২৯২} আবু দাউদ ৫৩, আহমাদ ১৭৮৬৩। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আলী বিন যায়দ বিন জুদআন সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল আজালী বলেন, কোন সমস্যা নেই। ২. সালামাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আম্মার বিন ইয়াসার সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তার হাদিস থেকে দলীল গ্রহণযোগ্য নয়।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
পবিত্রতা সম্পর্কে হাদিস ২৯৫. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মোচ কাটা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা, বগলের লোম উপড়ে ফেলা ও নখ কাটার ব্যাপারে আমাদের চল্লিশ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। আমরা যেন তা বেশি সময় ছেড়ে না দেই। {২৯৩}
{২৯৩} মুসলিম ২৫৮, তিরমিজি ২৭৫৮, ২৭৫৯; নাসায়ি ১৪, আবু দাউদ ৪২০০, আহমাদ ১১৮২৩, ১২৬৯৮, ১৩২৬৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।ইবনে মাজাহ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply