ঋতুবতী নারী – হায়িদগ্রস্ত, নিফাসগ্রস্তা, ইস্তিহাদা ইত্যাদি
ঋতুবতী নারী – হায়িদগ্রস্ত, নিফাসগ্রস্তা, ইস্তিহাদা ইত্যাদি >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১, অধ্যায় (১১৫-১৩৯)=২৫ টি, হাদীস (৬২০-৬৬৬)=৪৭ টি
১১৫. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর হায়িদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হলে
১১৬. অধ্যায়ঃ কোন নারীর ইস্তিহাদা ও হায়িদের রক্ত গোলমাল হয়ে গেলে হায়িদের মেয়াদের উপর নির্ভর করা যাবে না
১১৭. অধ্যায়ঃ যে কুমারী মেয়ের প্রথমেই ইস্তিহাদা এসেছে অথবা সে তার হায়িদের মেয়াদ ভুলে গেছে
১১৮. অধ্যায়ঃ পরিধেয় বস্ত্রে হায়িদের রক্ত লাগলে
১১৯. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারী কাযা সলাত আদায় করিবে না
১২০. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারীর মাসজিদ থেকে কিছু নেয়া
১২১. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারীর থেকে তার স্বামী সেবা গ্রহণ করিতে পারে
১২২. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করা নিষেধ
১২৩. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করলে তার জরিমানা [কাফ্ফারা]
১২৪. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর গোসলের নিয়ম
১২৫. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর সাথে একতে পানাহার এবং তার উচ্ছিষ্ট
১২৬. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারী মসজিদে প্রবেশ করিবে না
১২৭. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্তা নারী পবিত্র হওয়ার পর হলুদ বর্ণের ও মেটে বর্ণের রক্ত দেখলে
১২৮. অধ্যায়ঃ নিফাসগ্রস্তা নারীরা কত দিন অপেক্ষা করিবে
১২৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি হায়িদগ্রস্ত স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করলো
১৩০. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে পানাহার
১৩১. অধ্যায়ঃ হায়িদের কাপড় পরে সলাত পড়া
১৩২. অধ্যায়ঃ বালেগা মেয়ে ওড়না জড়িয়ে সলাত পড়বে
১৩৩. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্তা নারীর কলপ ব্যবহার
১৩৪. অধ্যায়ঃ পট্টির উপর মাসহ করা
১৩৫. অধ্যায়ঃ কাপড়ে থুথু লাগলে
১৩৬. অধ্যায়ঃ পাত্রের পানিতে মুখের লালা পড়লে
১৩৭. অধ্যায়ঃ ইবনে মাজাহ অপরের লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো নিষেধ
১৩৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির নাপাকির গোসলে তার শরীরের সামান্য কিছু অংশে পানি না পৌঁছলে তাকে যা করিতে হইবে
১৩৯. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি উযু করলো কিন্তু কোন স্থানে পানি পৌঁছেনি
১১৫. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর হায়িদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হলে
৬২০. তিমাহ বিনতু আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাহাঁর কাছে ঋতুস্রাব সম্পর্কে অভিযোগ করেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তা এক প্রকার শিরাজনিত রোগ। সুতরাং তুমি লক্ষ্য রাখবে যে, তোমার হায়িদ শুরু হলে নামাজ পড়বে না। হায়িদকাল উত্তীর্ণ হলে পর তুমি পবিত্রতা অর্জন করিবে, অতঃপর দুহায়িদের মধ্যবর্তীকাল নামাজ পড়বে। {৬১৭}
{৬১৭}নাসায়ি ৩৪৯, ৩৫৮, আবু দাউদ ২৮০, ২৮৬, ৩০৪, আহমাদ ২৬৮১৪, ২৭০৮৩-৮৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৭২, ইরওয়াহ ২১১৯। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২১. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতে আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার অনবরত রক্তস্রাব হইতেই থাকে এবং আমি পবিত্র হইতে পারি না। আমি কি নামাজ ছেড়ে দিবো? তিনি বলেন, না, বরং এটি হচ্ছে একটি শিরাজনিত রোগ এবং এটা হায়িদের রক্ত নয়। অতএব তোমার ঋতুস্রাব দেখা দিলে তুমি নামাজ ছেড়ে দিবে। অতঃপর ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে তুমি রক্ত ধুয়ে ফেলে নামাজ পড়বে। {৬১৮}
{৬১৮} বোখারি ২২৮, ৩০৬, ৩২০, ৩২৫, ৩৩১; মুসলিম ৩৩৩, তিরমিজি ১২৫, নাসায়ি ২১২, ৩৫৯, ৩৬৩-৬৭; আবু দাউদ ২৮২, ২৮৬, ৩০৪; আহমাদ ২৩৬২৫, ২৫০৯৪, ২৫১৫৩, ২৫৭২৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৩৭, দারিমি ৭৭৪, ৭৭৯; ইবনি মাজাহ ৬২৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৮৯, সহিহ, আবু দাউদ ২৮০। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২২. উম্মু হাবীবাহ বিনতে জাহ্শ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার ইস্তিহাদার রক্ত খুব বেশি দিন ধরে নির্গত হতো। আমি এ ব্যাপারে সমাধান জানতে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম এবং তাঁকে বিষয়টি অবহিত করলাম। রাবি বলেন, আমি তাঁকে আমার বোন যয়নবের নিকট পেলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার সাথে আমার একটি বিশেষ প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, তা কী, হে শ্যালিকা? আমি বললাম, আমার খুব বেশি পরিমাণে দীর্ঘ সময় ধরে ইস্তিহাদার রক্ত আসে, যা আমাকে নামাজ-সাওম থেকে বিরত রাখে। এ ব্যপারে আপনি আমাকে কী হুকুম করেন? তিনি বলেন, আমি তোমাকে তুলার পট্টি ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছি। কেননা তা রক্ত প্রতিরোধক। আমি বললাম, তা পরিমাণে আরো বেশি। …… পরবর্তী বর্ণনা শারীকের হাদীসের অনুরূপ। {৬১৯}
{৬১৯} তিরমিজি ১২৮, আবু দাউদ ২৮৭, ২৮৮; আহমাদ ২৬৬০৩, ২৬৮৯৯, ২৬৯২৮; দারিমি ৭৮১, ইবনি মাজাহ ৬২৭। তাহকিক আলবানিঃ হাসান।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬২৩. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট সমাধান জানতে চেয়ে বলেন, আমার অনবরত রক্তস্রাব হয়, আমি কখনো পবিত্র হই না। আমি কি নামাজ ছেড়ে দিবো? তিনি বলেন, না, বরং তুমি তোমার হায়িদের মেয়াদে নামাজ ত্যাগ করো। আবু বকর [রাঃআঃ]-এর রিওয়ায়াতে আছেঃ প্রতি মাসে হায়িদের সমপরিমাণ মেয়াদ নির্ধারণ করো, অতঃপর গোসল করে কাপড়ের পট্টি বেঁধে নামাজ পড়ো। {৬২০}
{৬২০} নাসায়ি ২০৮, ৩৫৪, ৩৫৫; আবু দাউদ ২৭৪, আহমাদ ২৬১৭৬, ২৬২০০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৩৮, দারিমি ৭৮০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৬৪-২৬৮। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২৪. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতে আবু হুবায়শ [রাঃআঃ] নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার রক্তস্রাব হইতেই থাকে এবং আমি কখনো পবিত্র হইতে পারি না। আমি কি নামাজ ছেড়ে দিবো? তিনি বলেন, না, এটা এক প্রকার শিরাজনিত রোগ, এটা হায়িযের রক্ত নয়। তুমি তোমার হায়িযের মেয়াদকাল নামাজ থেকে বিরত থাকো, অতঃপর গোসল করো এবং প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য উযু করে নামাজ পড়ো, যদিও নামাজের পাটিতে রক্ত পড়ে। {৬২১}
তাহকিক আলবানিঃ পাটিতে রক্ত পড়ার কথা ব্যতীত সহিহ।{৬২১} বোখারি ২২৮, ৩০৬, ৩২০, ৩২৫, ৩৩১; মুসলিম ৩৩৩, তিরমিজি ১২৫, নাসায়ি ২১২, ৩৫৯, ৩৬৩-৬৭; আবু দাউদ ২৮২, ২৮৬, ৩০৪; আহমাদ ২৩৬২৫, ২৫০৯৪, ২৫১৫৩, ২৫৭২৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৩৭, দারিমি ৭৭৪, ৭৭৯; ইবনি মাজাহ ৬২১। তাহকিক আলবানিঃ পাটিতে রক্ত পড়ার কথা ব্যতীত সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৮, ৩১২। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২৫. উবায়দ বিন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, ইস্তিহাদায় [রক্তপ্রদরে] আক্রান্ত নারী তার হায়িযের মেয়াদকাল নামাজ ত্যাগ করিবে। এরপর সে গোসল করিবে এবং প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য উযু করিবে এবং নামাজ-সাওম করিবে। {৬২২}
{৬২২}তিরমিজি ১২৬, আবু দাউদ ২৯৭, দারিমি ৭৯৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩১১, ইরওয়াহ ২০৭। উক্ত হাদিসের রাবি আবুল ইয়াকযান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইবনি মাহদী তার হাদিস প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. সাবিত বিন উবায়দ সম্পর্কে সকল হাদিস বিশারদগণ অজ্ঞাত। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১১৬. অধ্যায়ঃ কোন নারীর ইস্তিহাদা ও হায়িদের রক্ত গোলমাল হয়ে গেলে হায়িদের মেয়াদের উপর নির্ভর করা যাবে না
৬২৬. নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আবদুর রহমান বিন আওফ [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা বিনতে জাহ্শ [রাঃআঃ]-এর ইস্তিহাদা [রক্তপ্রদর] হলো। তিনি সাত বছর তার স্ত্রীত্বে ছিলেন। তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে অভিযোগ করলে তিনি বলেন, এটা হায়িদের রক্ত নয়, বরং তা একটি শিরাজনিত রোগ। তোমার হায়িদ শুরু হলে তুমি নামাজ ছেড়ে দিবে এবং হায়িদের রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে তুমি গোসল করে নামাজ পড়বে। আয়িশা [রাঃআঃ] বলেন, এরপর তিনি প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য গোসল করে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি তার বোন যয়নব বিনতে জাহ্শ [রাঃআঃ]-এর পানির পাত্রে বসতেন, এমনকি রক্তের লাল রংয়ে পানি রঞ্জিত হয়ে যেত। {৬২৩}
{৬২৩}বোখারি ৩২৭, মুসলিম ৩২১-২, তিরমিজি ১২৯, নাসায়ি ২০৩-৭, ২০৯, ২১০; আবু দাউদ ২৭৯, ২৮৫, ২৮৮, ২৯১; আহমাদ ২৪০১৭, ২৫০১৭; দারিমি ৭৭৫, ৭৭৮, ৭৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৮২, ২৮৩, ২৯৩, ২৯৮, ৩০০।ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১১৭. অধ্যায়ঃ যে কুমারী মেয়ের প্রথমেই ইস্তিহাদা এসেছে অথবা সে তার হায়িদের মেয়াদ ভুলে গেছে
৬২৭. হামনাহ বিনতু জাহ্শ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জীবদ্দশায় তার ইস্তিহাদা শুরু হলে তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলেন, আমার প্রচুর পরিমাণে হায়িদের রক্ত আসে। তিনি তাকে বলেন, তুমি তুলার পট্টি ব্যবহার করো। হামনা [রাঃআঃ] তাকে বলেন, তা অত্যধিক। আমার সারাক্ষণই স্রাব হইতে থাকে। তিনি বলেন, তাহলে স্রাব নির্গত স্থানে কাপড়ের পট্টি বাঁধো এবং প্রতি মাসের ছয় বা সাত দিন হায়িদের মেয়াদ গণ্য করো, যোহরের নামাজ বিলম্বে [ওয়াক্তের শেষ দিকে] ও আসরের নামাজ জলদি [ওয়াক্তের প্রথমভাগে] পড়ো এবং এই নামাজদ্বয়ের জন্য একবার গোসল করো। অনুরূপভাবে মাগরিবের নামাজ বিলম্বে ও ইশার নামাজ জলদি পড়ো এবং এই দু নামাজের জন্য একবার গোসল করো। এ পন্থা আমার নিকট অধিকতর প্রিয়। {৬২৪}
{৬২৪} তিরমিজি ১২৮, আবু দাউদ ২৮৭, ২৮৮, আহমাদ ২৬৬০৩, ২৬৮৯৯, ২৬৯২৮; দারিমি ৭৮১, ইবনি মাজাহ ৬২২। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৯২। এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১১৮. অধ্যায়ঃ পরিধেয় বস্ত্রে হায়িদের রক্ত লাগলে
৬২৮. উম্মু কায়স বিনতু মিহসান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে পরিধানের কাপড়ে হায়িদের রক্ত লেগে যাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তুমি তা পানি ও বরই পাতা দিয়ে ধৌত করো এবং কাঠি দিয়ে হলেও তা খুঁচিয়ে পরিষ্কার করো। {৬২৫}
{৬২৫} নাসায়ি ২৯২, ৩৯৫; আবু দাউদ ৩৬৩, আহমাদ ২৬৪৫৮, ২৬৪৬১; দারিমি ১০১৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৮৮, যঈফাহ ৩০০।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৬২৯. আসমা বিনতু আবু বাক্র সিদ্দীক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পরিধানের কাপড়ে হায়িদের রক্ত লেগে গেলে তার বিধান জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বলেন, তা খুঁটে ফেলে ধৌত করো এবং তা পরেই নামাজ পড়ো। {৬২৬}
{৬২৬} বোখারি ২২৭, ৩০৭; মুসলিম ২৯১, তিরমিজি ১৩৮, নাসায়ি ২৯৩, আবু দাউদ ৩৬০-৬১, আহমাদ ২৬৩৮০, ২৬৩৯২, ২৬৪৪১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৩৬, দারিমি ৭৭২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৮৫, ৩৮৬। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৩০. নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কারো হায়িদ হওয়ার পর পবিত্র অবস্থায় পৌঁছে সে তার পরিধেয় থেকে রক্তের দাগ খুঁটে তুলে রগড়িয়ে ধৌত করতো, অতঃপর গোটা কাপড়ে পানি ছিটিয়ে দিতো, অতঃপর সেই কাপড়ে নামাজ আদায় করতো। {৬২৭}
{৬২৭} বোখারি ৩০৮, আবু দাউদ ৩৫৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৮৫। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১১৯. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারী কাযা নামাজ আদায় করিবে না
৬৩১. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
জনৈকা মহিলা তাকে জিজ্ঞেস করলো, ঋতুবতী নারী কি কাযা নামাজ আদায় করিবে? আয়িশা [রাঃআঃ] তাকে বলেন, তুমি কি হারূরিয়া [খারিজী] নারী? নবী [সাঃআঃ]-এর জীবদ্দশায় আমাদের হায়িদ হতো, অতঃপর আমরা পবিত্র হতাম, কিন্তু তিনি আমাদেরকে কাযা নামাজ আদায় করার নির্দেশ দেননি। {৬২৮}
{৬২৮} বোখারি ৩২১, মুসলিম ৩৩১-৩, তিরমিজি ১৩০, ৭৮৭; নাসায়ি ৩৮২, ২৩১৮; আবু দাউদ ২৬২, আহমাদ ২৩৫১৬, ২৪১১২, ২৪১৩৯, ২৪৩৬৫, ২৪৫৮৫, ২৪৯৯৩, ২৫৪২০; দারিমি ৯৭৯-৮০, ৯৮৬, ৯৮৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫৪। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারীর মাসজিদ থেকে কিছু নেয়া
৬৩২. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ মাসজিদ থেকে চাটাইটি তুলে আমাকে এনে দাও। আমি বললাম, আমি তো হায়িদগ্রস্ত। তিনি বললেনঃ তোমার হায়িদের নাপাকী তো আর তোমার হাতে লেগে নেই। {৬২৯}
{৬২৯} মুসলিম ২৯৮, তিরমিজি ১৩৪, নাসায়ি ২৭১, ৩৮৪; আবু দাউদ ২৬১, আহমাদ ২৩৬৬৪, ২৪১৭৪, ২৪২২৬, ২৪২৭৩, ২৪২৮৬, ২৪৩১১, ২৪৮৭৬, ২৪৯৩২, ২৫২৬৮, ২৫৩৮৮, ২৫৫৫৩; দারিমি ৭৭১, ১০৬৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫৩, ইরওয়াহ ১৯৪। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৩৩. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাহাঁর মাথা আমার নিকট এগিয়ে দিতেন। আমি তখন ঋতুবতী ছিলাম। আমি তাহাঁর মাথা ধুয়ে চুল আঁচড়ে দিতাম। {৬৩০}
{৬৩০}বোখারি ২৯৫-৯৬, ৩০১, ২০২৮-২৯, ২০৩১, ২০৪৬, ৫৯২৫; মুসলিম ২৯১-৫, তিরমিজি ৮০৪, নাসায়ি ২৭৫-৭৭, ৩৮৬-৮৯; আবু দাউদ ২৪৬৭, ২৪৬৯; আহমাদ ২৩৭১৮, ২৩৭৫৯, ২৪১৬২, ২৪২১০, ২৪৮৪১, ২৪৯৫৬, ২৫০৩৫, ২৫১৫৪, ২৫৩৯৪, ২৫৪১০, ২৫৪৪২, ২৫৪৪৯, ২৫৫৭১, ২৫৭২৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৩৫, ৬৯৩; দারিমি ১০৫৮-৫৯, ১০৬৬, ১০৬৮-৬৯; ইবনি মাজাহ ১৭৭৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫২। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৩৪. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হায়িদগ্রস্ত থাকাকালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর মাথা আমার কোলে রেখে কুরআন তিলাওয়াত করিতেন। {৬৩১}
{৬৩১} বোখারি ২৯৭, ৭৫৪৯; মুসলিম ৩০১, নাসায়ি ২৭৪, ৩৮১; আবু দাউদ ২৬০, আহমাদ ২৪৫০৯, ২৪৭১৮, ২৫১৫৫, ২৫৬৮৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫২। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারীর থেকে তার স্বামী সেবা গ্রহণ করিতে পারে
৬৩৫. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কারো হায়িদ শুরু হলে নবী [সাঃআঃ] তাকে তার লজ্জাস্থানে শক্ত করে পাজামা বাঁধার নির্দেশ দিতেন, অতঃপর তিনি তার সাথে আলিঙ্গন করিতেন। তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার প্রবৃত্তিকে বশে রাখতে পারে, যেমন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর প্রবৃত্তিকে বশে রাখতে সক্ষম ছিলেন! {৬৩২}
{৬৩২} বোখারি ৩০১-২, মুসলিম ২৯১-২, নাসায়ি ২৮৫-৮৬, ৩৭৩-৭৫; আবু দাউদ ২৬৮, ২৭৩; আহমাদ ২৪৩৯৪, ২৪৫০০, ২৪৫৮০, ২৪৮৮২, ২৪৯৬৫, ২৫০৩৫, ২৫১৫৪, ২৫২২২, ২৫৪৪৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১২৭-২৮, ৭৯৫; দারিমি ১০৩৩, ১০৩৭, ১০৪৭; ইবনি মাজাহ ৬৩৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৬৩। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৩৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কেউ হায়িদগ্রস্ত হলে নবী [সাঃআঃ] তাকে তার [লজ্জাস্থানে] পাজামা শক্তভাবে বাঁধার নির্দেশ দিতেন, অতঃপর তাকে আলিঙ্গন করিতেন। {৬৩৩}
{৬৩৩} বোখারি ৩০১-২, মুসলিম ২৯১-২, নাসায়ি ২৮৫-৮৬, ৩৭৩-৭৫; আবু দাউদ ২৬৮, ২৭৩; আহমাদ ২৪৩৯৪, ২৪৫০০, ২৪৫৮০, ২৪৮৮২, ২৪৯৬৫, ২৫০৩৫, ২৫১৫৪, ২৫২২২, ২৫৪৪৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১২৭-২৮, ৭৯৫; দারিমি ১০৩৩, ১০৩৭, ১০৪৭; ইবনি মাজাহ ৬৩৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৬০। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৩৭. উম্মু সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে একত্রে তাহাঁর লেপের ভিতর ছিলাম। নারীদের যে হায়িদ হয় আমার তা শুরু হয়েছে বুঝতে পেরে, আমি লেপের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কী হায়িদ হয়েছে? আমি বললাম, নারীদের যেরূপ হায়িদ হয় আমিও সেরুপ অনুভব করছি। তিনি বলেন, এটা তো এমন জিনিস, যা আল্লাহ আদম [আঃ]-এর কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করিয়াছেন। উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] বলেন, আমি বের হয়ে গিয়ে নিজের অবস্থা ঠিকঠাক করে ফিরে আসলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, এসো এবং আমার সঙ্গে লেপের মধ্যে ঢোকো। তিনি বলেন, আমি তাহাঁর সাথে লেপের মধ্যে ঢুকলাম। {৬৩৪}
{৬৩৪} বোখারি ২৯৮, ৩২২-২৩, ১৯২৯; মুসলিম ২৯৬, নাসায়ি ২৮৩, ৩৭১, ২৫৯৮৬, ২৬০২৬, ২৬১৬৩; দারিমি ১০৪৪-৪৫। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানি।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬৩৮. মুআবিয়াহ বিন আবু সুফ্ইয়ান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ [রাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি ঋতুবতী অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে কিরূপ করো? তিনি বলেন, আমাদের কারো হায়িদ শুরু হলে, তখনই তিনি তার পাজামা দু উরুর মাঝ বরাবর শক্ত করে বেঁধে নিতেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে শুয়ে পড়তেন। {৬৩৫}
{৬৩৫}হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২২. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করা নিষেধ
৬৩৯. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করলো অথবা স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করলো অথবা গণকের নিকট গেল এবং সে যা বলল তা বিশ্বাস করলো, সে অবশ্যই মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর উপর নাযিলকৃত জিনিসের [আল্লাহ্র কিতাবের] বিরুদ্ধাচরণ করলো। {৬৩৬}
{৬৩৬} তিরমিজি ১৩৫, আবু দাউদ ৩৯০৪, আহমাদ ৯০৩৫, ৯৮১১; দারিমি ১১৩৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২০০৬, মিশকাত ৫৫১। উক্ত হাদিসের রাবি আল আসরাম সম্পর্কে আলী ইবনিল মাদীনী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন সিকাহ বলেছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইমাম বোখারি বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। বাযযার বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৩. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করলে তার জরিমানা [কাফ্ফারা]
৬৪০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি তার ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করলো, তার সম্পর্কে নবী [সাঃআঃ] বলেন, সে এক দীনার বা অর্ধ দীনার দান-খয়রাত করিবে। {৬৩৭}
{৬৩৭} তিরমিজি ১৩৬-৩৭, নাসায়ি ২৮৯, ৩৭০; আবু দাউদ ২৬৪-৬৬, ২১৬৮-৬৯, আহমাদ ২০৩৩, ২১২২, ২২০২, ২৪৫৪, ২৫৯০, ২৭৮৪, ২৮৩৯, ৩১৩৫, ৩৪১৮, ৩৪৬৩; ১১০৫ ইবনি মাজাহ ৬৫০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৫৫৩, সহিহ আবু দাউদ ২৫৬, ইরওয়াহ ১৯৭। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৪. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর গোসলের নিয়ম
৬৪১. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] তাকে তার হায়িদগ্রস্ত অবস্থায় বলেন, তোমার মাথার চুল খুলে গোসল করো। অধস্তন রাবি আলী [রহঃ]-এর বর্ণনায় আছেঃ তোমার মাথার চুল খুলে ফেলো। {৬৩৮}
{৬৩৮} আহমাদ ২৪৭৭৯, ২৪৯১৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৩৪, সহিহা ১৮৮, সহিহ আবু দাউদ ১৫৫৯। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৪২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আসমা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট হায়িদের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেনঃ তোমাদের যে কোন নারী বরই পাতাযুক্ত পানি নিয়ে যেন উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে যতটা উত্তমরূপে সম্ভব; অতঃপর মাথায় পানি ঢেলে তা মর্দন করিবে, যেন তার চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়, অতঃপর তার গোটা শরীরে পানি ঢেলে দিয়ে এক টুকরা সুগন্ধিযুক্ত পশমী কাপড় অথবা তুলা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। আসমা [রাঃআঃ] বলেন, আমি তার সাহায্যে কিরূপে পবিত্রতা অর্জন করবো? তিনি বলেন, সুবহানাল্লাহ! তার সাহায্যেই তুমি পবিত্রতা অর্জন করিবে। আয়িশা [রাঃআঃ] চুপিসারে বলেন, তুমি তা দিয়ে রক্তের চিহ্ন মুছে ফেলবে। আসমা [রাঃআঃ] বলেন, আমি তাঁকে নাপাকির গোসল সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তোমাদের যে কোন নারী তার গোসলের পানি নিয়ে যেন যতটা সম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, অতঃপর তার মাথায় পানি ঢেলে তা উত্তমরূপে মর্দন করে, যাতে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়, অতঃপর গোটা দেহে পানি ঢালবে। আয়িশা [রাঃআঃ] বলেন, আনসার মহিলারা কতই না উত্তম। ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করিতে লজ্জা তাহাদের বিরত রাখে না। {৬৩৯}
{৬৩৯} বোখারি ৩১৪-১৫, ৭৩৫৭; মুসলিম ৩৩১-২, নাসায়ি ২৫১, ৪২৭; আবু দাউদ ৩১৪, আহমাদ ২৪৩৮৬, ২৪৬২১, ২৫০২৪; দারিমি ৭৭৩। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৩১-৩৩৩ মুসলিম, বুখারিতে নাপকির গোসলের জিজ্ঞাসার কথা ব্যতীত রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২৫. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর সাথে একতে পানাহার এবং তার উচ্ছিষ্ট
৬৪৩. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড় চুষতাম, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেটি নিয়ে আমার মুখ লাগানো স্থানে তাহাঁর মুখ রেখে তা চুষতেন। আবার আমি ঋতুবতী থাকাকালে যে পাত্রে পানি পান করতাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেটি নিয়ে আমার মুখ লাগানো স্থানে তাহাঁর মুখ লাগিয়ে পান করিতেন। {৬৪০}
{৬৪০} মুসলিম ৩০০, নাসায়ি ৭০, ২৭৯-৮২, ৩৭৭-৮০; আবু দাউদ ২৫৯, আহমাদ ২৫০৬৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫১। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৪৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
বাড়িতে ইহূদীরা ঋতুবতী মহিলাদের সাথে একত্রে বসতো না এবং পানাহার করত না। রাবি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বিষয়টি উত্থাপন করা হলে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাযিল করেন
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ
“লোকে আপনাকে ঋতুস্রাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলুনঃ তা অশুচি। অতএব তোমরা ঋতুস্রাবকালে স্ত্রীসঙ্গ ত্যাগ করো” [সূরাহ বাকারাঃআঃ ২২২]। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা তাহাদের সাথে সঙ্গম ব্যতীত আর সবকিছুই করিতে পারো। {৬৪১}
{৬৪১} মুসলিম ৩০২, তিরমিজি ২৯৭৭, নাসায়ি ২৮৮, ৩৬৯; আবু দাউদ ২৫৮, ২১৬৫; আহমাদ ১১৯৪৫, ১৩১৬৪; দারিমি ১০৫৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৫০। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্ত নারী মসজিদে প্রবেশ করিবে না
৬৪৫. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এই মাসজিদের বারান্দায় প্রবেশ করে উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করেন যে, নাপাক ব্যক্তি ও হায়িদগ্রস্তা নারীর মাসজিদে প্রবেশ করা হালাল নয়। {৬৪২}
{৬৪২}জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবুল খাত্তাব আল হাজারী সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি অপরিচিত। ২. মাহদুজ আয যুহলী সম্পর্কে ইমামগণ বলেন, তিনি অপরিচিত। ৩. জাসরাহ সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তার নিকট আশ্চর্য ধরনের হাদিস শুনা যায়। ইবনি হাজার তাকে বাতিল বলেছেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৭. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্তা নারী পবিত্র হওয়ার পর হলুদ বর্ণের ও মেটে বর্ণের রক্ত দেখলে
৬৪৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যে নারী [হায়িদ থেকে] পবিত্র হওয়ার পর সন্দেহজনক কিছু দেখিতে পায় তার সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তা শিরাজনিত রোগ বা শিরাসমূহ থেকে নির্গত। মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া [রহঃ] বলেন, হাদীসে “পবিত্র হওয়ার পর” বলিতে “গোসল করার পর” বুঝানো হয়েছে। {৬৪৩}
{৬৪৩} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩০৩। উক্ত হাদিসের রাবি আবু বাকর সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তার সম্পর্কে কিছু জানা যায় না, তিনি অপরিচিত।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৪৭. উম্মু আতিয়্যাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা হলদে ও মেটে বর্ণের স্রাব দেখলে তাকে কিছুই মনে করতাম না। {৬৪৪}
তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।
২/৬৪৭[১]. উম্মু আতিয়্যাহ [রাঃআঃ], তিনি বলেন, আমরা হলদে ও মেটে বর্ণের স্রাবকে হায়িদের মধ্যে গণ্য করতাম না। মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া বলেন, আমাদের কাছে এটাই গ্রহণযোগ্য। {৬৪৫}
তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ।{৬৪৪} {১} তাখরিজ কুতুবুত সিত্তাহঃ বোখারি ৩২৬, নাসায়ি ৩৬৮, আবু দাউদ ৩০৭, দারিমি ৮৬৫, ৮৭১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩২৬।{৬৪৫} {২} তাখরিজ কুতুবুত সিত্তাহঃ তিরমিজি ১৩৯, আবু দাউদ ৩১১-১২, আহমাদ ২৬০২১, ২৬০৫৩, ২৬০৯৮; দারিমি ৯৫৫। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৯৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
১২৮. অধ্যায়ঃ নিফাসগ্রস্তা নারীরা কত দিন অপেক্ষা করিবে
৬৪৮. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে নিফাসগ্রস্তা নারীরা চল্লিশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতো। আমরা তখন আমাদের মুখমন্ডলে ওয়ারস ঘাস থেকে নিঃসৃত হলদে বর্ণের রস কলপ হিসাবে ব্যবহার করতাম। {৬৪৬}
{৬৪৬} হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩২৯, ইরওয়া ২০১।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৬৪৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিফাসগ্রস্তা নারীদের নিফাসকাল চল্লিশ দিন নির্ধারণ করিতেন। এই মেয়াদের আগেই কেউ পবিত্র হলে তা স্বতন্ত্র ব্যাপার। {৬৪৭}
তাহকিক আলবানিঃ দঈফ জিদ্দান।{৬৪৭} তিরমিজি ১৩৬-৩৭, নাসায়ি ২৮৯, ৩৭০; আবু দাউদ ২৬৪-৬৬, ২১৬৮-৬৯, আহমাদ ২০৩৩, ২১২২, ২২০২, ২৪৫৪, ২৫৯০, ২৭৮৪, ২৮৩৯, ৩১৩৫, ৩৪১৮, ৩৪৬৩; ১১০৫; ইবনি মাজাহ ৬৪০। তাহকিক আলবানিঃ জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩২৯, যঈফাহ ৫৬৫৩। উক্ত হাদিসের রাবি সাল্লাম বিন সুলায়ম সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে একাধিক মুনকার হাদিস বর্ণিত হয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল তার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদীনী তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন। ইমাম বোখারি বলেন, হাদিস বিশারদগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। জাওযুজানী বলেন, তিনি সিকাহ নন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল।এই হাদিসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১২৯. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি হায়িদগ্রস্ত স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করলো
৬৫০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি তার হায়িদগ্রস্তা স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে, নবী [সাঃআঃ] তাকে অর্ধ-দীনার সদাকা [দান-খয়রাত] করার নির্দেশ দিয়েছেন। {৬৪৮}
{৬৪৮} তিরমিজি ১৩৩, আবু দাউদ ২১২, আহমাদ ১৮৫২৮, ২১৯৯৯; দারিমি ১০৭৩। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ২৬৬ জইফ, ২১৬৮ সহিহ, ইবনি মাজাহ ৬৪০ সহিহ, নাসায়ি ২৮৯, ৩৭০ সহিহ, তিরমিজি ১৩৬ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ ইবনিল জাররাহ সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ ও ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩০. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে পানাহার
৬৫১. আবদুল্লাহ বিন সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে একত্রে পানাহার করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তুমি তার সাথে একত্রে পানাহার করিতে পারো। {৬৪৯}
{৬৪৯} মুসলিম ৫১৪, নাসায়ি ৭৬৮, আবু দাউদ ৩৭০, আহমাদ ২৩৫২৪, ২৪৬০৬, ২৫১৫৮। তাহক্বীক আলবানিঃ সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩১. অধ্যায়ঃ হায়িদের কাপড় পরে নামাজ পড়া
৬৫২. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিতেন, আমি হায়িদগ্রস্তা অবস্থায় তাহাঁর পাশে অবস্থান করতাম। আমার গায়ে পরিহিত পশমী চাদরের কিছু অংশ তাহাঁর উপর পতিত থাকতো। {৬৫০}
{৬৫০} তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৩৯৪।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৫৩. মায়মূনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রেশমী চাদর পরিহিত অবস্থায় নামাজ পড়লেন, যার কতকাংশ আমার দেহে এবং কতকাংশ তাহাঁর দেহে ছিল। তখন আমি হায়িদগ্রস্তা ছিলাম। {৬৫১}
{৬৫১} আবু দাউদ ৩৬৯, আহমাদ ২৬২৬৪। তাহকবীক্ব আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৯৩, ৬৯৩।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩২. অধ্যায়ঃ বালেগা মেয়ে ওড়না জড়িয়ে নামাজ পড়বে
৬৫৪. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] তার নিকট প্রবেশ করিলেন। তার মুক্তদাসী পর্দার আড়ালে চলে গেল। নবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেনঃ তার কি হায়িদ হয়েছে [বালেগ হয়েছে]? আয়িশা [রাঃআঃ] বলেন, হাঁ। তিনি তাহাঁর পাগড়ীর একাংশ ছিঁড়ে তাকে দিয়ে বলেন, এটা দিয়ে তোমার মাথা ঢেকে নাও। {৬৫২}
{৬৫২} তিরমিজি ৩৭৭, আবু দাউদ ৩৪১-৪২, আহমাদ ২৪৬৪১, ২৫৩০৫, ২৫৬৯৪; ইবনি মাজাহ ৬৫৫। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জিলবাবিল মারআহ ৯৪ পৃষ্ঠা। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল কারীম সম্পর্কে আয়্যুব আস-সাখতিয়ানি বলেন, তিনি সিকাহ নন। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম নাসাঈ তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬৫৫. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, আল্লাহ প্রাপ্তবয়স্কা নারীর নামাজ ওড়না পরা ব্যতীত কবূল করেন না। {৬৫৩}
{৬৫৩} তিরমিজি ৩৭৭, আবু দাউদ ৩৪১-৪২, আহমাদ ২৪৬৪১, ২৫৩০৫, ২৫৬৯৪; ইবনি মাজাহ ৬৫৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৯৬, সহিহ আবু দাউদ ৬৪৮।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৩. অধ্যায়ঃ হায়িদগ্রস্তা নারীর কলপ ব্যবহার
৬৫৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক মহিলা আয়িশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলো, ঋতুবতী নারী কি খেযাব লাগাতে পারে? তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অবস্থানকালে খেযাব লাগাতাম। তিনি আমাদের তা থেকে বিরত থাকতে বলেননি। {৬৫৪}
সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৪. অধ্যায়ঃ পট্টির উপর মাসেহ করা
৬৫৭. আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বাহুর একটি হাড় ভেঙ্গে গেল। আমি নবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে পট্টির উপর মাসহ করিতে নির্দেশ দেন। {৬৫৫}
তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{৬৫৫} জইফ জিদ্দান। উক্ত হাদিসের রাবি আমর বিন খালিদ সম্পর্কে ওয়াকী ইবনিল জাররাহ বলেন, আমাদের নিকট তার মিথ্যা প্রকাশিত হয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক। যায়দ বিন আলি থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে মিথ্যুক বলেছেন। ইসহাক বিন রাহওয়ায় বলেন, তিনি হাদিস তৈরি করে বর্ণনা করেন। ইমাম বুখারি বলেন তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তাকে মিথ্যুক বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৩৫. অধ্যায়ঃ কাপড়ে থুথু লাগলে
৬৫৮. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে হুসাইন বিন আলী [রাঃআঃ]-কে তাহাঁর কাঁধে বহন করিতে দেখেছি এবং তার মুখের লালা নবী [সাঃআঃ]-এর শরীরে গড়িয়ে পড়ছিল। {৬৫৬}
{৬৫৬} আহমাদ ৯৪৮৭, ইবনি মাজাহ ৭৬১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৬. অধ্যায়ঃ পাত্রের পানিতে মুখের লালা পড়লে
৬৫৯. ওয়ায়িল বিন হুজর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি দেখলাম যে, নবী [সাঃআঃ]-এর সামনে এক বালতি পানি আনা হলো। তিনি তা থেকে কুলি করিলেন এবং তাতে কস্তুরীসম বা কস্তুরীর চেয়েও সুঘ্রাণযুক্ত তাহাঁর মুখের লালা নিক্ষেপ করিলেন এবং নাকের ময়লা বালতির পানিতে ঝেড়ে ফেললেন। {৬৫৭}
জইফ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬৬০. মাহমুদ ইবনির রবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি কূপ থেকে পানি তোলা বালতিটি তুলে রেখে দিলেন, যার মধ্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর মুখের লালা নিক্ষেপ করেছিলেন। {৬৫৮}
{৬৫৮} বোখারি ৭৭, ৪২৪-২৫, ৬৬৭, ৬৮৬, ৮৩৮, ৮৪০, ৪০১০, ৫৪০১; মুসলিম ৩৩, নাসায়ি ৭৮৮, ৮৪৪, ১৩২৭; আহমাদ ২৩১২৬, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪১৭; ইবনি মাজাহ ৭৫৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩৭. অধ্যায়ঃ ইবনে মাজাহ অপরের লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো নিষেধ
৬৬১. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, কোন নারী যেন অপর নারীর লজ্জাস্থানের দিকে না তাকায়। একইভাবে কোন পুরুষ যেন অপর পুরুষের লজ্জাস্থানের দিকে না তাকায়। {৬৫৯}
{৬৫৯} তিরমিজি ২৭৯৩ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ গায়াতুল মারাম ১৮৫, ইরওয়াহ ১৮০৮।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৬২. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কখনো রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর লজ্জাস্থানের দিকে তাকাইনি বা দেখিনি। {৬৬০}
{৬৬০} আহমাদ ২৩৮২৩, ইবনি মাজাহ ১৯২২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির নাপাকির গোসলে তার শরীরের সামান্য কিছু অংশে পানি না পৌঁছলে তাকে যা করিতে হইবে
৬৬৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] নাপাকির গোসল করিলেন, তারপর দেখিতে পেলেন যে, তাহাঁর শরীরের সামান্য অংশে পানি পৌঁছায়নি। তিনি এক আঁজলা পানি আনিয়ে তা সেই স্থানে প্রবাহিত করিলেন। ইসহাক [রহঃ]-এর বর্ণনায় আছে ঃ তিনি তাহাঁর পশম ভিজালেন। {৬৬১}
{৬৬১} আহমাদ ২১৮১ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু আলী আর রাহাবী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি অধিক মুনকার হাদিস বর্ণনা করেন। তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা যাবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬৬৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, আমি নাপাকির গোসল করে ফজরের নামাজ পড়লাম। তারপর সকাল হলে আমি দেখিতে পেলাম যে, নখ পরিমাণ স্থানে পানি পৌঁছায়নি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি স্থানটুকু তোমার হাত দিয়ে মাসহ্ করলেই তোমার জন্য তা যথেষ্ট হতো। {৬৬২}
তাহকীক আলবানি ঃ দঈফ জিদ্দান।{৬৬২} জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৪৪৯ জইফ, আলমুখ তারাহ ৪৪৫। উক্ত হাদিসের রাবি সুওয়ায়দ বিন সাঈদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি আশা করি তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক তাদলীস করেন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি ইদতিরাব করে হাদিস বর্ণনা করেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৩৯. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি উযু করলো কিন্তু কোন স্থানে পানি পৌঁছেনি
৬৬৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি উযু করে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলো, সে নখ পরিমাণ স্থান ছেড়ে দিয়েছিল, যেখানে পানি পৌঁছেনি। নবী [সাঃআঃ] তাকে বলেন, তুমি ফিরে গিয়ে উত্তমরূপে উযু করো।{৬৬৩}
{৬৬৩}আবু দাউদ ১৭৩, আহমাদ ১২০৭৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৮৬, সহিহ আবু দাউদ ১৬৭।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৬৬. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে উযু করার সময় তার পায়ের নখ পরিমাণ স্থান অধৌত বা শুকনা ছেড়ে দিতে দেখলেন। তিনি তাকে পুনর্বার উযু করে নামাজ পড়ার নির্দেশ দেন। রাবি বলেন, সে ফিরে গেল [এবং উযু করে নামাজ পড়লো]। {৬৬৪}
{৬৬৪} মুসলিম ২৪৩, আবু দাউদ ১৭৩, আহমাদ ১৩৫, ১৫৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১২৭, সহিহ আবু দাউদ ১৬৫। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি হুমায়দ সম্পর্কে ইয়াকুব বিব শায়বাহ বলেন, তিনি অধিক মুনকারভাবে হাদিস বর্ণনা করিতেন। ইমাম বুখারি বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে মন্তব্য রায়েছে। আবু যুরআহ আর-রাযী ও ইবনি খিরাশ বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলিতেন। ঋতুবতী নারী – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply