বিতর, চাশত, তাহাজ্জুদ, তারাবী ও তাহিয়্যাতুল মসজিদ

তাহিয়্যাতুল মসজিদ, বিতর, চাশত, তাহাজ্জুদ, তারাবীহ নামাজ

তাহিয়্যাতুল মসজিদ, বিতর, চাশত, তাহাজ্জুদ, তারাবীহ নামাজ >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর ১০ টি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

তাহিয়্যাতুল মসজিদ, বিতর, চাশত, তাহাজ্জুদ, তারাবীহ নামাজ

পরিচ্ছেদ – ২০৫ঃ বিত্রের প্রতি উৎসাহ দান, তা সুন্নতে মুআক্কাদাহ এবং তা পড়ার সময়
পরিচ্ছেদ – ২০৬ঃ চাশ্তের নামাযের ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২০৭ঃ সূর্য উঁচুতে ওঠার পর থেকে ঢলা পর্যন্ত চাশতের নামাজ পড়া বিধেয়। উত্তম হল দিন উত্তপ্ত হলে এবং সূর্য আরো উঁচুতে উঠলে এ নামাজ পড়া
পরিচ্ছেদ – ২০৮ঃ তাহিয়্যাতুল মাসজিদ
পরিচ্ছেদ – ২০৯ঃ ওযূর পর তাহিয়্যাতুল ওযূর দু’ রাকআত নামাজ পড়া উত্তম
পরিচ্ছেদ – ২১০ঃ জুমআর দিনের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব
পরিচ্ছেদ – ২১১ঃ শুক্রের সিজদার বিবরণ
পরিচ্ছেদ – ২১২ঃ রাতে উঠে [তাহাজ্জুদ] নামাজ পড়ার ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ২১৩ঃ কিয়ামে রমযান বা তারাবীহর নামাজ মুস্তাহাব
পরিচ্ছেদ – ২১৪ঃ শবেকক্ষদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক স‎ম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে

পরিচ্ছেদ – ২০৫: বিত্‌রের প্রতি উৎসাহ দান, তা সুন্নতে মুআক্কাদাহ এবং তা পড়ার সময়

১১৩৯. আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘বিত্‌রের নামাজ, ফরয নামাযের ন্যায় অপরিহার্য নয়। কিন্তু নবী সাঃআঃ এটিকে প্রচলিত করেছেন (অর্থাৎ এটি সুন্নত) । তিনি বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ বিত্‌র (বিজোড়) সেহেতু তিনি বিত্‌র (বিজোড়কে) ভালবাসেন । অতএব হে কুরআনের ধারকবাহকগণ ! তোমরা বিত্‌র পড় ।”

(আবু দাঊদ ১৪১৬, তিরমিজি ৪৫৩, নাসায়ী ১৬৭৫, ইবনু মাজাহ ১১৬৯) হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১১৪০. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাতের প্রতিটি ভাগেই রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিত্র পড়েছেন; রাতের প্রথম ভাগে, এর মধ্য ভাগে ও শেষ ভাগে । তাঁর বিত্রের শেষ সময় ছিল ভোরবেলা পর্যন্ত ।’

(মুসলিম ৭৪৫, তিরমিজি ৪৫৬, নাসায়ী ১৬৮১, আবু দাঊদ ১৪৩৫, ইবনু মাজাহ ১১৮৫, আহমাদ ২৪৪৫৩, দারেমী ১৫৮৭)

(অর্থাৎ এর প্রথম সময় এশার পর পরই শুরু হয় আর শেষ সময় ফজর উদয়কাল অবধি অবশিষ্ট থাকে । এর মধ্যে যে কোন সময় ১,৩,৫,৭, প্রভৃতি বিজোড় সংখ্যায় বিত্র পড়া বিধেয় ।) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪১. ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “তোমরা তোমাদের রাতের শেষ নামাজ বিত্র কর ।”

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৯৯৫, নাসায়ী , ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, ৭৫১, তিরমিজি ৪৩৭, ৪৬১, নাসায়ী ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবু দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪২. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “ফজর হওয়ার পূর্বেই তোমরা বিত্র পড়ে ফেল ।”

(মুসলিম ৭৫৪, তিরমিজি ৪৬৮, নাসায়ী ১৬৮৩, ১৬৮৪, ইবনু মাজাহ ১১৮৯, আহমাদ ১০৭১, ১০৯০৯, ১০৯৩১, ১১২০৮, দারেমী ১৫৮৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪৩. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ রাতে তাঁর (তাহাজ্জুদ) নামাজ পড়তেন । আর তিনি (আয়েশা) তাঁর সামনে আড়াআড়ি শুয়ে থাকতে ন। অতঃপর যখন (সব নামাজ পড়ে) বিত্‌র বাকি থাকত, তখন তাঁকে তিনি জাগাতেন এবং তিনি (আয়েশা) বিত্‌র পড়তেন । (মুসলিম)

(মুসলিম ৭৪৪, সহীহুল বুখারী ৫১২-১৫, ৫১৯, নাসায়ী ১৬৬-৬৮, ৭৫৯, আবু দাঊদ ৭১০-১৪, আহমাদ ২৪৬৫৮, ২৫১৬৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪৪. ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “ফজর হওয়ার আগে ভাগেই বিত্‌র পড়ে নাও ।” (আবু দাঊদ, তিরমিজি হাসান সহীহ)

(সহীহুল বুখারী ৯৯৫, ৪৭২, নাসায়ী , ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, ৭৫১, তিরমিজি ৪৩৭, ৪৬১, নাসায়ী ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবু দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮) হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১১৪৫. জাবের (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি শেষ রাতে উঠতে না পারার আশংকা করবে, সে যেন শুরু রাতেই বিত্‌র পড়ে নেয় । আর যে ব্যক্তি রাতের শেষ ভাগে উঠে (ইবাদত) করার লালসা রাখে, সে যেন রাতের শেষ ভাগেই বিত্‌র সমাধা করে । কারণ, রাতের শেষ ভাগের নামাযে ফিরিশ্‌তারা হাজির হন এবং এটিই উত্তম আমল ।

(মুসলিম ৭৫৫, তিরমিজি ৪৫৫, ইবনু মাজাহ ১১৮৭, আহমাদ ১৩৯৭২, ১৪২১৫, ১৪৩৩৫, ২৭০২১) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২০৬: চাশ্‌তের নামাযের ফযীলত

১১৪৬.আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু আমাকে এই তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন; (১) প্রতি মাসে তিনটি (১৩, ১৪, ১৫ তারিখে) রোযা রাখার । (২) চাশ্‌তের দু’ রাকআত (সুন্নত) পড়ার । (৩) এবং ঘুমাবার আগে বিত্‌র পড়ে নেওয়ার ।’ (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৭৮, ১৯৮১, মুসলিম ৭২১, তিরমিজি ৭৬০, নাসায়ী ১৬৭৭-৭৮, ২৪০৬, আবু দাঊদ ১৪৩২, আহমাদ ৭০৯৮, ৭১৪০, ৭৪০৯, ৭৪৬০, ৭৫৩৮, ৭৫৪১, ৭৬১৫, ৮০৪৪, ৮১৮৪, ৮৮৪৫, ৯৬০০, ১০১০৫, দারেমী ১৪৫৪, ১৭৪৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪৭. আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “তোমাদের কেউ এমন অবস্থায় সকালে উঠে যে, তার (দেহের) প্রতিটি জোড়ের সদকা দেওয়ার জন্য সে দায়বদ্ধ হয় । সুতরাং প্রত্যেক ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা সদকাস্বরূপ, প্রত্যেক ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা সদকাস্বরূপ, প্রত্যেক ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা সদকাস্বরূপ, প্রতিটি ‘আল্লাহু আকবার’ বলা সদকাস্বরূপ, সৎকাজের আদেশ দেওয়া সদকাস্বরূপ এবং মন্দকাজে বাধা দেওয়া সদকাস্বরূপ । আর এ সমস্ত কিছুর পরিবর্তে দু’ রাকআত (চাশ্‌তের) নামাজ পড়লে তা যথেষ্ট হবে ।”

(মুসলিম ৭২০, আবু দাঊদ ১২৮৫-৮৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪৮. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) চাশ্‌তের চার রাকআত নামাজ পড়তেন এবং আল্লাহ যতটা চাইতেন সেই মত তিনি আরও বেশী পড়তেন ।’ (মুসলিম)

(মুসলিম ৭১৯, ইবনু মাজাহ ১৩৮১, আহমাদ ২৩৯৩৫, ২৪১১৭, ২৪৩৬৮, ২৪৫৯৯, ২৪৭০৪, ১১৭৬, ৩১৭১, ৪২৯২, ৬১৫৮, মুসলিম ৩৩৬, তিরমিজি ৪৭৪, ২৭৩৪, নাসায়ী ২২৫, ৪১৫, আবু দাঊদ ১২৯০-৯১, ইবনু মাজাহ ৪৬৫, ৬১৪, ১৩২৩, ১৩৭৯, আহমাদ ২৬৩৪৭, ২৬৩৫৬, ২৬৮৩৩, মুওয়াত্তা মালিক ৩৫৯, দারেমী ১৪৫২-৫৩) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৪৯. উম্মে হানী ফাখেতাহ বিন্তে আবু তালেব সাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘মক্কা বিজয়ের বছরে আমি আল্লাহর রসূল সাঃআঃ-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে দেখি যে, তিনি গোসল করছেন । যখন তিনি গোসল সম্পন্ন করলেন, তখন আট রাকআত নামাজ পড়লেন । আর তখন ছিল চাশ্‌তের সময় ।’ (বুখারী ও মুসলিম, এ শব্দগুলি মুসলিমের একটি বর্ণনার সংক্ষিপ্তসার)

(মুসলিম ৭১৯, ইবনু মাজাহ ১৩৮১, আহমাদ ২৩৯৩৫, ২৪১১৭, ২৪৩৬৮, ২৪৫৯৯, ২৪৭০৪, ১১৭৬, ৩১৭১, ৪২৯২, ৬১৫৮, মুসলিম ৩৩৬, তিরমিজি ৪৭৪, ২৭৩৪, নাসায়ী ২২৫, ৪১৫, আবু দাঊদ ১২৯০-৯১, ইবনু মাজাহ ৪৬৫, ৬১৪, ১৩২৩, ১৩৭৯, আহমাদ ২৬৩৪৭, ২৬৩৫৬, ২৬৮৩৩, মুওয়াত্তা মালিক ৩৫৯, দারেমী ১৪৫২-৫৩)হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২০৭: সূর্য উঁচুতে ওঠার পর থেকে ঢলা পর্যন্ত চাশতের নামাজ পড়া বিধেয় । উত্তম হল দিন উত্তপ্ত হলে এবং সূর্য আরও উঁচুতে উঠলে এ নামাজ পড়া

১১৫০. যায়দ ইবন আরক্বাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

একদা তিনি দেখলেন, একদল লোক চাশ্‌তের নামাজ পড়ছে । তিনি বললেন, ‘যদি ওরা জানত যে, নামাজ এ সময় ছাড়া অন্য সময়ে পড়া উত্তম । আল্লাহর রসূল সাঃআঃ বলেছেন, “আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের নামাজ যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে ।” (মুসলিম)

(মুসলিম ৭৪৮, আহমাদ ১৮৭৭, ১৮৭৮৪, ১৮৮৩২, ১৮৮৬০, দারেমী ১৪৫৭) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২০৮: তাহিয়্যাতুল মাসজিদ

১১৫১. আবু কাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ মসজিদ প্রবেশ করবে, তখন সে যেন দু’ রাকআত নামাজ না পড়া অবধি না বসে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৪৪, ১১৬৭, মুসলিম ৭১৪, তিরমিজি ৩১৬, নাসায়ী ৭৩০, আবু দাঊদ ৪৬৭, ইবনু মাজাহ ১০২৩, আহমাদ ২২০১৭, ২২০৭২, ২২০৮৮, ২২১৪৬, দারেমী ১৩৯৩) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৫২. জাবের (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী সাঃআঃ-এর নিকট এলাম, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন । তিনি বললেন, “দু’ রাকআত নামাজ পড় ।” (বুখারী, মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৪৩, ১৮০১, ২০৯৭, ২৩০৯, ২৩৯৪, ২৪৭০, ২৬০৩, ২৬০৪, ২৭১৮, ২৮৬১, ২৯৬৭, ৩০৮৭, ৩০৯০, ৫০৭৯, ৫২৪৫-৫২৪৭, মুসলিম ৭১৫, তিরমিজি ১১০০, ১১৭২, ২৭১২, নাসায়ী ৩২১৯, ৩২২০, ৩২২৬, ৪৫৯০, ৪৫৯১, ৪৬৩৭-৪৬৪১, আবু দাঊদ ২০৪৮, ২৭৭৬-২৭৭৮, ৩৩৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৬০, আহমাদ ১৩৭১৮, ১৩৭৬৪, ১৩৭৭২, ১৩৭৮০, ১৩৮১৪, ১৩৮২০, ১৩৮২২, দারেমী ২২১৬, ২৬৩১) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২০৯: ওযূর পর তাহিয়্যাতুল ওযূর দু’ রাকআত নামাজ পড়া উত্তম

১১৫৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিলাল (রাদি.)-কে উদ্দেশ্য ক’রে বললেন, “হে বিলাল ! আমাকে সর্বাধিক আশাপ্রদ আমল বল, যা তুমি ইসলাম গ্রহণের পর বাস্তবায়িত করেছ । কেননা, আমি (মি’রাজের রাতে) জান্নাতের মধ্যে আমার সম্মুখে তোমার জুতার শব্দ শুনেছি ।” বিলাল (রাদি.) বললেন, ‘আমার দৃষ্টিতে এর চাইতে বেশী আশাপ্রদ এমন কোন আমল করিনি যে, আমি যখনই রাত-দিনের মধ্যে যে কোন সময় পবিত্রতা অর্জন (ওযূ, গোসল বা তায়াম্মুম) করেছি, তখনই ততটুকু নামাজ পড়েছি, যতটুকু নামাজ পড়া আমার ভাগ্যে লিপিবদ্ধ ছিল ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৪৯, মুসলিম ২৪৫০৮, আহমাদ ৮১৯৮, ৯৩৮০) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২১০: জুমআর দিনের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব

জুমআর জন্য গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, এ দিনে দুআ করা, নবী সাঃআঃ-এর উপর দরূদ পড়া ও এ দিনের কোন এক সময়ে দুআ কবুল হওয়ার বিবরণ এবং জুমআর পর বেশী বেশী মহান আল্লাহর যিক্‌র করা মুস্তাহাব

মহান আল্লাহ বলেছেন,

অর্থাৎ অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও । (সূরা জুমআহ ১০ আয়াত)

১১৫৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “যার উপর সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমআর দিন । এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাঁকে বেহেশ্‌তে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে বেহেশ্‌ত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে ।”

(মুসলিম ৮৫৪, তিরমিজি ৪৮৮, ৪৯১, নাসায়ী ১৩৭৩, ১৪৩০, আহমাদ ৭৬৩০, ৮১৪১, ৯৯৩০, ১০১৬৭, ১০২৬৭, ১০৫৮৭, ২৭৬০৮, ২৭২৩৪) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৫৫. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ সম্পাদন ক’রে জুমআর নামাজ পড়তে আসবে এবং নীরবে মনোযোগসহকারে (খুতবা) শুনবে, তার সেই জুমআহ হতে পরবর্তী জুমআর মধ্যবর্তী সময় তথা আরও তিন দিনের (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে । আর যে ব্যক্তি কাঁকর স্পর্শ করবে, সে বাজে কাজ করবে ।”

(মুসলিম ৮৫৭, তিরমিজি ৪৯৮, আবু দাঊদ ১০৫০, ইবনু মাজাহ ১০৯০, আহমাদ ৯২০০) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৫৬. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “পাঁচ অক্ত নামাজ, এক জুমআহ হতে পরের জুমআহ পর্যন্ত, এক রমযান হতে অন্য রমযান পর্যন্ত (কৃত নামাজ-রোযা) সেগুলির মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) পাপরাশির প্রায়শ্চিত্ত (মোচনকারী) হয় (এই শর্তে যে,) যখন মহাপাপ থেকে বিরত থাকা যাবে ।”

(মুসলিম ২৩৩, তিরমিজি ২৪১, ইবনু মাজাহ ১০৭৬, আহমাদ ৭০৮৯, ৮৪৯৮, ৮৯৪৪, ৯০৯২, ১০১৯৮, ২৭২৯০) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৫৭.আবু হুরাইরা ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে তাঁর কাঠের মিম্বারের উপর দাঁড়ানো অবস্থায় এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “লোকেরা যেন জুমআহ ত্যাগ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকে; নচেৎ আল্লাহ অবশ্যই তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন, তারপর তারা অবশ্যই উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে ।”

(মুসলিম ৮৬৫, নাসায়ী ১৩৭০, ইবনু মাজাহ ৭৯৪, ১১২৭, আহমাদ ২১৩৩, ২২৯০, ৩০৮৯, ৫৫৩৫, দারেমী ১৫৭০)

হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৫৮. ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন জুমআতে আসার ইচ্ছা করবে, তখন সে যেন গোসল করে ।”

(সহীহুল বুখারী ৯১৯, ৮৭৭, ৮৯৪, তিরমিজি ৪৯৩, নাসায়ী ১৩৭৬, ১৪০৫, ১৪০৭, ইবনু মাজাহ ১০৮৮, আহমাদ ৩০৫০, ৪৪৫২, ৪৫৩৯, ৪৯০১, ৪৯২৩, ৪৯৮৫, ৪৯৮৮, মুওয়াত্তা মালিক ২৩১, দারেমী ১৫৩৬)হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৫৯. আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক সাবালকের উপর জুমআর দিনের গোসল ওয়াজেব ।”

(সহীহুল বুখারী ৯১৯, ৮৭৭, ৮৯৪, তিরমিজি ৪৯৩, নাসায়ী ১৩৭৬, ১৪০৫, ১৪০৭, ইবনু মাজাহ ১০৮৮, আহমাদ ৩০৫০, ৪৪৫২, ৪৫৩৯, ৪৯০১, ৪৯২৩, ৪৯৮৫, ৪৯৮৮, মুওয়াত্তা মালিক ২৩১, দারেমী ১৫৩৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬০. সামুরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিনে ওযূ করল তাহলে তা যথেষ্ট ও উত্তম । আর যে গোসল করল, (তার) গোসল হল সর্বোত্তম ।”

(তিরমিজি ৪৯৭, আবু দাঊদ ৩৫৪, নাসায়ী ১৩৮০, আহমাদ ১৯৫৮৫, ১৯৬১২, ১৯৬৬১, ১৯৬৬৪, ১৯৭৪৬) হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১১৬১. সালমান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে কোন ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল ও সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করে, নিজস্ব তেল গায়ে লাগায় অথবা নিজ ঘরের সুগন্ধি (আতর) ব্যবহার করে, অতঃপর (মসজিদে) গিয়ে দু’জনের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করেই (যেখানে স্থান পায়, বসে যায়) এবং তার ভাগ্যে যত রাকআত নামাজ জোটে, আদায় করে । তারপর ইমাম খুতবা আরম্ভ করলে নীরব থাকে, সে ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট জুমআহ থেকে পরবর্তী জুমআহ পর্যন্ত কৃত সমুদয় (সাগীরা) গুনাহরাশিকে মাফ ক’রে দেওয়া হয় ।”

(সহীহুল বুখারী ৮৮৩, ৯১০, নাসায়ী ১৪০৩, আহমাদ ২৩১৯৮, ২৩২০৬, ২৩২১৩, দারেমী ১৫৪১) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন নাপাকির গোসলের ন্যায় গোসল করল এবং (সূর্য ঢলার সঙ্গে সঙ্গে) প্রথম অক্তে মসজিদে এল, সে যেন একটি উঁট দান করল । যে ব্যক্তি দ্বিতীয় সময়ে এলো, সে যেন একটি গাভী দান করল । যে ব্যক্তি তৃতীয় সময়ে এল, সে যেন একটি শিংবিশিষ্ট দুম্বা দান করল । যে ব্যক্তি চতুর্থ সময়ে এল, সে যেন একটি মুরগী দান করল । আর যে ব্যক্তি পঞ্চম সময়ে এল, সে যেন একটি ডিম দান করল । তারপর ইমাম যখন খুত্‌বাহ প্রদানের জন্য বের হন, তখন (লেখক) ফিরিশ্‌তাগণ যিক্‌র শোনার জন্য হাজির হয়ে যান ।”

(সহীহুল বুখারী ৮৮১, ৯২৯, ৩২১১, মুসলিম ৮৫০, ১৮৬০, তিরমিজি ৪৯৯, নাসায়ী ৮৬৪, ১৩৭৫-১৩৮৮, আবু দাঊদ ৩৫১, ইবনু মাজাহ ১০৯২, আহমাদ ৭২১৭, ৭৪৬৭, ৭৫২৮, ৭৬৩০, ৭৭০৮, ৯৫৮২, ৯৬১০, ১০১৯০, মুওয়াত্তা মালিক ২২৭, দারেমী ১৫৪৩) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬৩. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একদা জুমআর দিন সম্বন্ধে আলোচনা ক’রে বললেন, “ওতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নামাজ অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তা দান ক’রে থাকেন ।” এ কথা বলে তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত ।

(সহীহুল বুখারী ৯৩৫, ৫২৯৫, ৬৪০০, মুসলিম ৮৫২, তিরমিজি ৪৯১, নাসায়ী ১৪৩০-১৪৩২, আবু দাঊদ ১০৪৬, ইবনু মাজাহ ১১৩৭, আহমাদ ৭১১১, ৭৪২৩, ৭৬৩১, ৭৭১১, ৭৭৬৪, ৮৯৫৩, ৮৯৮৬, ৯৮৭৪, ৯৯২৯, ৯৯৭০, ১১২৩০, মুওয়াত্তা মালিক ২২২, ২৪২, দারেমী ১৫৬৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬৪. আবু বুর্দাহ ইবনে আবু মুসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদি.) বললেন, ‘আপনি কি জুমআর দিনের বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে আপনার পিতাকে, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হতে বর্ণনা করতে শুনেছেন ?’ তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হ্যাঁ । আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর রসূল সাঃআঃ-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “সেই মুহূর্তটুকু ইমামের মেম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ের ভিতরে ।”

(মুসলিম ৮৫৩, আবু দাঊদ ১০৪৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬৫. আওস ইবনে আওস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম একটি দিন হচ্ছে জুমআর দিন । সুতরাং ঐ দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ কর । কেননা, তোমাদের পাঠ করা দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয় ।”

(আবু দাঊদ ১০৪৭, ১৫৩১, নাসায়ী ১৩৭৪, ইবনু মাজাহ ১৬৩৬, আহমাদ ১৫৭২৯, দারেমী ১৫৭২) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২১১: শুক্‌রের সিজদার বিবরণ

১১৬৬. সাদ ইবনু আবী ওয়ক্কাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে আমরা মক্কা থেকে মদিনার পানে রওয়ানা দিলাম । আমরা যখন ‘আযওয়ারা নামক স্থানের নিকটবর্তী হলাম, তিনি সওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন এবং তাঁর দুই হাত তুলে কিছুক্ষণ দুআ করলেন, তারপর সাজদাহ করলেন, দীর্ঘ সময় সাজদায় থাকলেন, তারপর উঠলেন এবং আবার দুই হাত তুলে কিছু সময় দুআ করলেন, তারপর আবার সাজদায় নত হলেন । তিনি তিনবার এমন করলেন এবং বললেন: আমি আমার প্রভুর নিকট আবেদন করেছিলাম এবং আমার উম্মতের জন্য সুপারিশ করেছিলাম । আল্লাহ আমাকে আমার এক-তৃতীয়াংশ উম্মত (জান্নাতে) দিয়েছেন । আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য আমি সাজদাহ করলাম । তারপর আমি মাথা উঠিয়ে আমার উম্মতের জন্য আমার প্রভুর কাছে আবেদন করলাম । তিনি আমাকে আমার আরও এক-তৃতীয়াংশ উম্মত (জান্নাতে) দিলেন । এজন্যও আমি কৃতজ্ঞতার সাজদাহ করলাম । তারপর মাথা তুলে আমার উম্মতের জন্য আবেদন করলাম । তিনি আমাকে আরও এক-তৃতীয়াংশ উম্মত (জান্নাতে) দিলেন । এজন্যও আমি কৃতজ্ঞতার সাজদাহ করলাম ।

(আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির সনদ দুর্বল যেমনটি আমি “ইরওয়াউল গালীল” গ্রন্থে (নং ৪৬৭) এবং “য‘ঈফা” গ্রন্থে নং (৩২২৯/৩২৩০) আলোচনা করেছি । এর এক বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া ইবনুল হাসান সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেনঃ তিনি মাদানী তার অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় না । তার থেকে মূসা ইবনু ইয়াকূব বর্ণনা করেছেন । এর সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ তিনি মাজহূলুল হাল । প্রকৃতপক্ষে আস‘আস ইবনু ইসহাক মাজহূলুল হাল আর মূসা ইবনু ইয়াকূব হচ্ছেন মাজহূলুল আইন । (বিস্তারিত দেখুন “য‘ঈফা” গ্রন্থের উক্ত নম্বরে) । আবু দাঊদ ২৭৭৫ ।) (অবশ্য শুক্‌রের সিজদাহ অন্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত । মহানবী সাঃআঃ-কে কোন সুসংবাদ দেওয়া হলে তিনি সিজদাহ করতেন ।) (ইবনে মাজাহ ১১৪১নং) হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২১২: রাতে উঠে (তাহাজ্জুদ) নামাজ পড়ার ফযীলত

১১৬৭. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাঃআঃ রাত্রির একাংশে (নামাযে) এত দীর্ঘক্ষণ কিয়াম করতেন যে, তাঁর পা ফুলে ফাটার উপক্রম হয়ে পড়ত । একদা আমি তাঁকে বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আপনি এত কষ্ট সহ্য করছেন কেন ? অথচ আপনার তো পূর্ব ও পরের গুনাহসমূহকে ক্ষমা ক’রে দেওয়া হয়েছে ।’ তিনি বললেন, “আমি কি শুকরগুযার বান্দা হব না ?”

(সহীহুল বুখারী ৪৮৩৭, ১১১৮, ১১১৯, ১১৪৮, ১১৬১, ১১৬২, ১১৬৮, মুসলিম ৭৩১, ২৮২০, তিরমিজি ৪১৮, নাসায়ী ১৬৪৮-১৬৫০, আবু দাঊদ ১২৬২, ১২৬৩, ইবনু মাজাহ ১২২৬, ১২২৭) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬৮. মুগীরা ইবনে শু‘বা হইতে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে

(বুখারী ও মুসলিম) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৬৯. আলী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

একদা নবী সাঃআঃ তাঁর ও ফাতেমার নিকট রাত্রি বেলায় আগমন করলেন এবং বললেন, “তোমরা (স্বামী-স্ত্রী) কি (তাহাজ্জুদের) নামাজ পড় না ?”

(সহীহুল বুখারী ১১২৭, ৪৭২৪, ৭৩৪৭, ৭৪৬৫, মুসলিম ৭৭৫, নাসায়ী ১৬১১, ১৬১২, আহমাদ ৫৭২, ৭০৭, ৯০২)হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭০. সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার ইবনে খাত্তাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) (একবার) বললেন, “আব্দুল্লাহ ইবনে উমার কতই না ভাল মানুষ হত, যদি সে রাতে (তাহাজ্জুদের) নামাজ পড়ত ।” সালেম বলেন, ‘তারপর থেকে (আমার আব্বা) আব্দুল্লাহ রাতে অল্পক্ষণই ঘুমাতেন ।’

(সহীহুল বুখারী ৪৪০, ১১২২, ১১৫৮, ৩৭৩৯, ৩৭৪১, ৭০১৬, ৭০২৯, ৭০৩১, মুসলিম ২৪৭৮, ২৪৭৯, তিরমিজি ৩২১, নাসায়ী ৭২২, ইবনু মাজাহ ৭৫১, ৩৯১৯ আহমাদ ৪৪৮০, ৪৫৯৩, ৪৫৮৫, ৬২৯৪, দারেমী ১৪০০, ২১৫২) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭১. আব্দুল্লাহ ইবনে আম্‌র ইবনে আস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেন, “হে আব্দুল্লাহ ! তুমি অমুক ব্যক্তির মত হয়ো না । সে রাতে উঠে নামাজ পড়ত, তারপর রাতে উঠা ছেড়ে দিল ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৩১, ১১৫২, ১১৫৩, ১৯৭৪-১৯৮০, ২৪১৮-২৪২৩, ৫০৫২-৫০৫৪, ৫১৯৯, ৬২৭৭, মুসলিম ১১৫৯, তিরমিজি ৭৭০, নাসায়ী ১৬৩০, ২৩৪৪, ২৩৮৮-২৩৯৪, ২৩৯৬, ২৩৯৭, ২৩৯৯-২৪০৩, আবু দাঊদ ১৩৮৮-১৩৯১, ২৪২৭, ২৪৪৮, ইবনু মাজাহ ১৩৪৬, ১৭১২, আহমাদ ৬৪৪১, ৬৪৫৫, ৬৪৮০, ৬৪৯১, ৬৭২১, ৬৭২৫, ৬৭৫০, দারেমী ১৭৫২, ৩৪৮৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭২. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এমন একটি লোকের কথা নবী সাঃআঃ-এর নিকট উল্লেখ করা হল, যে সকাল পর্যন্ত ঘুমিয়ে রাত্রি যাপন করে । তিনি বললেন, “এ এমন এক মানুষ, যার দু’কানে শয়তান প্রস্রাব ক’রে দিয়েছে ।” অথবা বললেন, “যার কানে প্রস্রাব করে দিয়েছে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৪৪, ৩২৭০, মুসলিম ৭৭৪, নাসায়ী ১৬০৮, ১৬০৯, ইবনু মাজাহ ১৩৩০, আহমাদ ৩৫৪৭, ৪০৪৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা যায় তখন তার গ্রীবাদেশে শয়তান তিনটি করে গাঁট বেঁধে দেয়; প্রত্যেক গাঁটে সে এই বলে মন্ত্র পড়ে যে, ‘তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি ঘুমাও ।’ অতঃপর যদি সে জেগে উঠে আল্লাহর যিক্‌র করে, তাহলে একটি গাঁট খুলে যায় । তারপর যদি ওযূ করে, তবে তার আর একটি গাঁট খুলে যায় । তারপর যদি নামাজ পড়ে, তাহলে সমস্ত গাঁট খুলে যায় । আর তার প্রভাত হয় স্ফূর্তিভরা ভালো মনে । নচেৎ সে সকালে ওঠে কলুষিত মনে ও অলসতা নিয়ে ।”

(বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ১১৪২, ৩২৬৯, মুসলিম ৭৭৬, নাসায়ী ১৬০৭, আবু দাঊদ ১৩০৬, ইবনু মাজাহ ১৩২৯, আহমাদ ৭২৬৬, ৭৩৯২, ১০০৭৫, মুওয়াত্তা মালিক ৪২৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭৪. আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “হে লোক সকল ! তোমরা ব্যাপকভাবে সালাম প্রচার কর, (ক্ষুধার্তকে) অন্ন দাও এবং লোকে যখন রাতে ঘুমিয়ে থাকবে তখন নামাজ পড় । তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে ।”

(তিরমিজি ২৪৮৫, ইবনু মাজাহ ১৩৩৪, ৩২৫১, দারেমী ১৪৬০) হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১১৭৫. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “রমযান মাসের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা । আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামাজ হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুদের) নামাজ ।”

(মুসলিম ১১৬৩, তিরমিজি ৪৩৮, ৭৪০, আবু দাঊদ ২৪২৯, ইবনু মাজাহ ১৭৪২, আহমাদ ৭৯৬৬, ৮১৮৫, ৮৩০২, ৮৩২৯, ১০৫৩২, দারেমী ১৭৫৭, ১৭৫৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭৬. আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “রাতের নামাজ দু’ দু’ রাকআত করে । অতঃপর যখন ফজর হওয়ার আশংকা করবে, তখন এক রাকআত বিত্‌র পড়ে নেবে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, তিরমিজি ৪৩৭, ৬৪১, ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবু দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, ৫০৬৬, ৫১০১, ৫১৯৫, ৫৩৭৬, ৪৫৩১, ৪৫৪৭, ৪৫৬৬, ৫৫১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭৭. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রাতের বেলায় দু’ দু’ রাকআত করে নামাজ পড়তেন এবং এক রাকআত বিত্‌র পড়তেন ।’ (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ৪৭২, ৪৭৩, ৯৯১, ৯৯৩, ৯৯৫, ৯৯৮, ১১৩৭, মুসলিম ৭৪৯, তিরমিজি ৪৩৭, ৬৪১, ১৬৬৬, ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯, ১৬৭০, ১৬৭১, ১৬৭২, ১৬৭৩, ১৬৭৪, ১৬৮২, ১৬৯২, ১৬৯৪, আবু দাঊদ ১৪২১, ১৪৩৮, ইবনু মাজাহ ১১৭৪, ১১৭৫, ১১৭৬, ১৩২২, আহমাদ ৪৪৭৮, ৪৫৪৫, ৪৬৯৬, ৪৭৭৬, ৪৮৩২, ৪৮৪৫, ৪৯৫১, ৫০১২, ৫০৬৬, ৫১০১, ৫১৯৫, ৫৩৭৬, ৪৫৩১, ৪৫৪৭, ৪৫৬৬, ৫৫১২, মুওয়াত্তা মালিক ২৬১, ২৬৯, ২৭৫, ২৭৬, দারেমী ১৪৫৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭৮. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘কোন কোন মাসে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এমনভাবে রোযা ত্যাগ করতেন যে, মনে হত তিনি সাঃআঃ উক্ত মাসে আর রোযাই রাখবেন না । অনুরূপভাবে কোন মাসে এমনভাবে (একাদিক্রমে) রোযা রাখতেন যে, মনে হত তিনি ঐ মাসে আর রোযা ত্যাগই করবেন না । (তাঁর অবস্থা এরূপ ছিল যে,) যদি তুমি তাঁকে রাত্রিতে নামাজ পড়া অবস্থায় দেখতে না চাইতে, তবু বাস্তবে তাঁকে নামাজ পড়া অবস্থায় দেখতে পেতে । আর তুমি যদি চাইতে যে, তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখবে না, কিন্তু বাস্তবে তুমি তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেতে ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৪১, ১৯৭২, ১৯৭৩, মুসলিম ১১৫৮, তিরমিজি ৭৬৯, ২০১৫, নাসায়ী ১৬২৭, আগ ১১৬০১, ১১৭১৯, ১২২১৩, ১২৪২১, ১২৪৭১, ১২৬৫৪, ১২৭৬২, ১২৯৬০, ১২৯৯০, ১৩০৬১, ১৩২৩৮, ১৩৩০৪, ১৩৩৭০, ১৩৮৬, ১৩৪০৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৭৯. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এগার রাকআত নামাজ পড়তেন, অর্থাৎ রাতে । তিনি মাথা তোলার পূর্বে এত দীর্ঘ সাজদাহ করতেন যে, ততক্ষণে তোমাদের কেউ পঞ্চাশ আয়াত পড়তে পারবে । আর ফরয নামাযের পূর্বে দু’ রাকআত সুন্নত নামাজ পড়ে ডান পাশে শুয়ে আরাম করতেন । শেষ পর্যন্ত তাঁর নিকট নামাযের ঘোষণাকারী এসে হাযির হত ।’ (বুখারী)

(সহীহুল বুখারী ৬২৬, ৯৯৪, ১১২৩, ১১৩৯, ১১৪০, ১১৬০, ১১৬৫, ৬৩১০, মুসলিম ৭২৪, ৭৩৬, ৭৩৭, ৭৩৮, তিরমিজি ৪৩৯, ৪৪০, নাসায়ী ৬৮৫, ১৬৯৬, ১৭৪৯, ১৭৬২, আবু দাঊদ ১২৫৪, ১২৫৫, ১২৬২, ১৩৩৪, ১৩৩৮, ১৩৩৯, ১৩৪০, ইবনু মাজাহ ১১৯৮, ১৩৫৮, আহমাদ ২৩৫৩৭, ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৬৬৮, ২৩৬৯৭, ২৩৭০৫, ২৩৯২৫, ২৩৯৪০, ২৪০১৬, ২৪০২৪, ২৪০৫৬, ২৪২১১, ২৪৩৩৯, ২৪৩৭৯, ২৪৪৮৬, ২৪৫৮১, ২৪৭৪৫, ২৪৮১৬, ২৪৯০৭, ২৪৯৫৮, ২৫৫২০, মুওয়াত্তা মালিক ২৪৩, ২৬৪, দারেমী ১৪৪৭, ১৪৭৩, ১৪৭৫, ১৪৮৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮০. উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রমযান ও অন্যান্য মাসে (তাহাজ্জুদ তথা তারাবীহ) ১১ রাকআতের বেশী পড়তেন না । প্রথমে চার রাকআত পড়তেন । সুতরাং তার সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রশ্নই করো না । তারপর (আবার) চার রাকআত পড়তেন । সুতরাং তার সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্বন্ধে প্রশ্নই করো না । অতঃপর তিন রাকআত (বিত্‌র) পড়তেন । (একদা তিনি বিত্‌র পড়ার আগেই শুয়ে গেলেন ।) আমি বললাম, “হে আল্লাহর রসূল ! আপনি কি বিত্‌র পড়ার পূর্বেই ঘুমাবেন ?” তিনি বললেন, “আয়েশা ! আমার চক্ষুদ্বয় ঘুমায়; কিন্তু অন্তর জেগে থাকে ।” (বুখারী ও মুসলিম)

(সহীহুল বুখারী ১১৪৭, ২০১৩, ৩৫৬৯, মুসলিম ৭৩৮, তিরমিজি ৪৩৯, নাসায়ী ১৬৯৭, আবু দাঊদ ১৩৪১, আহমাদ ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৭৪৮, ২৩৯২৫, ২৩৯৪০, ২৪০১৬, ২৪০৫৬, ২৪১৯৪, ২৪২১১, ২৫২৭৭, ২৫৭৫৬, ২৫৮২৬, মুওয়াত্তা মালিক ২৬৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮১. উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ রাতের প্রথম দিকে ঘুমাতেন ও শেষের দিকে উঠে নামাজ পড়তেন ।

(সহীহুল বুখারী ১১৪৬, মুসলিম ৭৩৯, নাসায়ী ১৬৪০, ১৬৮০, ইবনু মাজাহ ১৩৬৫, আহমাদ ২৩৮১৯, ২৪১৮৫, ২৪৫৪, ২৫৬২৪) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮২. ইবনে মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমি নবী সাঃআঃ-এর সঙ্গে এক রাতে নামাজ পড়েছি । তিনি এত দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে রইলেন যে, শেষ পর্যন্ত আমি একটা মন্দ কাজের ইচ্ছা করে ফেলেছিলাম ।’ ইবনে মাসঊদ (রাদি.)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘সে ইচ্ছাটা কি করেছিলেন ?’ তিনি বললেন, ‘আমার ইচ্ছা হয়েছিল যে, তাঁকে ছেড়ে দিয়ে বসে পড়ি ।’

(সহীহুল বুখারী ১১৩৫, মুসলিম ৭৭৩, ইবনু মাজাহ ১৪১৮, আহমাদ ৩৬৩৮, ৩৭৫৭, ৩৯২৭, ৪১৮৭) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৩. হুযাইফা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী সাঃআঃ-এর সঙ্গে এক রাতে নামাজ পড়লাম । তিনি সূরা বাকারাহ আরম্ভ করলেন । আমি (মনে মনে) বললাম, ‘একশত আয়াতের মাথায় তিনি রুকু করবেন ।’ (কিন্তু) তিনি তারপরও কিরাআত চালু রাখলেন । আমি (মনে মনে) বললাম, ‘তিনি এরই দ্বারা (সূরা শেষ করে) রুকু করবেন ।’ কিন্তু তিনি সূরা নিসা পড়তে আরম্ভ করলেন এবং সম্পূর্ণ পড়লেন । তিনি স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে তেলাওয়াত করতেন । যখন এমন আয়াত আসত, যাতে তাসবীহ পাঠ করার উল্লেখ আছে, তখন (আল্লাহর) তাসবীহ পাঠ করতেন । যখন কোন প্রার্থনা সম্বলিত আয়াত অতিক্রম করতেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন । যখন কোন আশ্রয় প্রার্থনার আয়াত অতিক্রম করতেন, তখন তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করতেন । (অতঃপর) তিনি সাঃআঃ রুকু করলেন । সুতরাং তিনি রুকুতে ‘সুবহানা রাবিবয়াল আযীম’ পড়তে আরম্ভ করলেন । আর তাঁর রুকু ও কিয়াম (দাঁড়িয়ে কিরাআত পড়া অবস্থা) এক সমান ছিল । তারপর তিনি রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ, রাববানা অলাকাল হাম্‌দ’ (অর্থাৎ আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রশংসা শুনলেন, যে তা তাঁর জন্য করল । হে আমাদের পালনকর্তা তোমার সমস্ত প্রশংসা) পড়লেন । অতঃপর বেশ কিছুক্ষণ (কওমায়) দাঁড়িয়ে থাকলেন রুকুর কাছাকাছি সময় জুড়ে । তারপর সাজদাহ করলেন এবং তাতে তিনি পড়লেন, ‘সুবহানাল্লা রাবিবয়াল আ‘লা’ (অর্থাৎ আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি) । আর তাঁর সাজদা দীর্ঘ ছিল তার কিয়াম (দাঁড়িয়ে কিরাআত পড়া অবস্থা)র কাছাকাছি ।

(মুসলিম ৭৭২, তিরমিজি ২৬২, নাসায়ী ১০০৮, ১০০৯, ১০৪৬, ১০৬৯, ১১৩৩, ১১৪৫, ১৬৬৪, ১৬৬৫, আবু দাঊদ ৮৭১, ৮৭৪, ইবনু মাজাহ ৮৮৮, ৮৯৭, ১৩৫১, আহমাদ ২২৯৭৯, ২২৭৫০, ২২৭৮৯, ২২৮০০, ২২৮৩৩, ২২৮৫৪, ২২৮৫৮, ২২৫৬৬, ২২৮৯০, ২২৯০২, দারেমী ১৩০৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৪. জাবের (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে সর্বোত্তম নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, তিনি বললেন, “দীর্ঘ কিয়ামযুক্ত নামাজ ।”

(মুসলিম ৭৫৬, তিরমিজি ৩৮৭, ইবনু মাজাহ ১৪২১, আহমাদ ১৩৮২১, ১৪৭৮৮) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৫. আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনে আ-স (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম নামাজ, দাঊদ عليه السلام -এর নামাজ এবং আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম রোযা, দাঊদ عليه السلام -এর রোযা; তিনি অর্ধরাত নিদ্রা যেতেন এবং রাতের তৃতীয় ভাগে ইবাদত করার জন্য উঠতেন । অতঃপর রাতের ষষ্ঠাংশে আবার নিদ্রা যেতেন ।

(সহীহুল বুখারী ১১৩১, ১১৫২, ১১৫৩, ১৯৭৪ থেকে ১৯৮০, ৩৪১৮, ৩৪১৯, ৩৪২০, ৫০৫২, ৫০৫৩, ৫০৫৪, ৫১৯৯, ৬১৩৪, ৬২৭৭, মুসলিম ১১৫০৯, তিরমিজি ৭৭০, নাসায়ী ১৬৩০, ২৩৪৪, ২৩৮৮ থেকে ২৩৯৪, ২৩৯৬, ২৩৯৭, ২৩৯৯ থেকে ২৪০৩, আবু দাঊদ ১৩৮৮ থেকে ১৩৯১, ২৪২৭, ২৪৪৮, ইবনু মাজাহ ১৩৪৬, ১৭১২, আহমাদ ৬৪৪১, ৬৪৫৫, ৬৪৮০, ৬৪৯১, ৬৭২১, ৬৭২৫, ৬৭৫০, ৬৭৯৩, ৬৮০২, ৬০৮২৩, ৬৮২৪, ৬৮৩৪, ৬৮৩৭, ৬৮৭৫, ৬৮৮২, ৬৯৮৪, ৭০৫৮, দারেমী ১৭৫২, ৩৪৮৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৬. জাবের (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বললেন, আমি নবী সাঃআঃ-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “রাত্রিকালে এমন একটি সময় আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি তা পেয়েই দুনিয়া ও আখিরাত বিষয়ক যে কোন উত্তম জিনিস প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দিয়ে থাকেন । ঐ সময়টি প্রত্যেক রাতে থাকে ।”

(মুসলিম ৭৫৭, আহমাদ ১৩৯৪৫, ১৪৩৩৬, ২৭৫৬৩) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ার জন্য উঠবে, সে যেন হাল্কাভাবে দু’ রাকআত পড়ার মাধ্যমে নামাজ শুরু করে ।”

(মুসলিম ৭৬৮, আবু দাঊদ ১৩২৩, আহমাদ ৭১৩৬, ৭৬৯০, ৮৯৩১) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৮. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাঃআঃ যখন রাতে (তাহাজ্জুদের) জন্য উঠতেন, তখন দু’ রাকআত সংক্ষিপ্ত নামাজ পড়ার মাধ্যমে আরম্ভ করতেন ।’

(মুসলিম ৭৬৭, আহমাদ ২৩৪৯৭, ২৫১৪৯) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৮৯. উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘দৈহিক ব্যথা-বেদনা বা অন্য কোন অসুবিধার কারণে যদি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর রাতের নামাজ ছুটে যেত, তাহলে তিনি দিনের বেলায় ১২ রাকআত নামাজ পড়তেন ।”

(মুসলিম ৭৪৬, তিরমিজি ৪৪৫, নাসায়ী ১৭২২, ১৭২৩, ১৭২৪, ১৭২৫, ১৭৮৯, আবু দাঊদ ১৩৪২, ১৩৪৬, ১৩৫০, ২৪৩৪, ইবনু মাজাহ ১১৯১, আহমাদ ২৩৭৪৮, ২৫৬৮৭, দারেমী ১৪৭৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯০. উমার ইবনে খাত্তাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি স্বীয় অযীফা (দৈনিক যথা নিয়মে তাহাজ্জুদের নামাজ) অথবা তার কিছু অংশ না পড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, অতঃপর যদি সে ফজর ও যোহরের মধ্যবর্তী সময়ে তা পড়ে নেয়, তাহলে তার জন্য তা এমনভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়, যেন সে তা রাতেই পড়েছে ।”

(মুসলিম ৭৪৭, তিরমিজি ৪০৮, নাসায়ী ১৭৯০ থেকে ১৭৯২, আবু দাঊদ ১৩১৩, ১৩৪৩, ২২০, ৩৭৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭০, দারেমী ১৪৭৭) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯১. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি দয়া করুন, যে রাতে উঠে নামাজ পড়ে এবং নিজ স্ত্রীকেও জাগায় । অতঃপর যদি সে (জাগতে) অস্বীকার করে, তাহলে তার মুখে পানির ছিটা মারে । অনুরূপ আল্লাহ সেই মহিলার প্রতি দয়া করুন, যে রাতে উঠে নামাজ পড়ে এবং নিজ স্বামীকেও জাগায় । অতঃপর যদি সে (জাগতে) অস্বীকার করে, তাহলে সে তার মুখে পানির ছিটা মারে ।”

( আবু দাঊদ ১৩০৮, নাসায়ী ১৬১০, ইবনু মাজাহ ১৩৩৬, আহমাদ ৭৩৬২) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯২. উক্ত রাবী (রাদি.) ও আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যখন কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে রাতে জাগিয়ে উভয়ে নামাজ পড়ে অথবা তারা উভয়ে দু’ রাকআত করে নামাজ আদায় করে, তবে তাদেরকে (অতীব) যিক্‌রকারী ও যিক্‌রকারিনীদের দলে লিপিবদ্ধ করা হয় ।

(আবু দাঊদ ১৩০৯, ইবনু মাজাহ ১৩৩৫) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯৩. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ নামাযের মধ্যে তন্দ্রাভিভূত হবে, তখন সে যেন নিদ্রা যায়, যতক্ষণ না তার নিদ্রার চাপ দূর হয়ে যায় । কারণ, যখন কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে নামাজ পড়বে, তখন সে খুব সম্ভবত: ক্ষমা প্রার্থনা করতে গিয়ে নিজেকে গালি দিতে লাগবে ।”

(বুখারী ও মুসলিম) (সহীহুল বুখারী ২১২, মুসলিম ৭৮৬, তিরমিজি ৩৫৫, নাসায়ী ১৬২, আবু দাঊদ ১৩১০, ইবনু মাজাহ ১৩৭০, আহমাদ ২৩৭৬৬, ২৫১৩৩, ২৫১৭১, ২৫৬৯৯, ২৫৭৭৭, মুওয়াত্তা মালিক ২৫৯, দারেমী ১৩৮৩) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ রাতে উঠবে ও (ঘুমের চাপের কারণে) জিহ্বায় কুরআন পড়তে এমন অসুবিধা বোধ করবে যে, সে কি বলছে তা বুঝতে পারবে না, তখন সে যেন শুয়ে পড়ে।”

(মুসলিম ৭৮৭, আবু দাঊদ ১৩১১, ইবনু মাজাহ ১৩৭২, আহমাদ ২৭৪৫০) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২১৩: কিয়ামে রমযান বা তারাবীহর নামাজ মুস্তাহাব

১১৯৫. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও নেকীর আশায় রমযান মাসে কিয়াম করবে (তারাবীহ পড়বে), তার পূর্বেকার পাপসমূহ মাফ ক’রে দেওয়া হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিজি ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবু দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯৬. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কিয়ামে রমযান (তারাবীহ) সম্পর্কে দৃঢ় আদেশ (ওয়াজিব) না করেই, তার প্রতি উৎসাহ দান করতেন এবং বলতেন, “যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে নেকীর আশায় রমযানে কিয়াম (তারাবীহর নামাজ আদায়) করবে, তার অতীতের পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে ।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিজি ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবু দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছেদ – ২১৪: শবেক্বদরের ফযীলত এবং সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি প্রসঙ্গে

১১৯৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ বলেছেন, “যে ব্যক্তি শবেক্বদরে (ভাগ্যরজনী অথবা মহীয়সী রজনীতে) ঈমানসহ নেকীর আশায় কিয়াম করে (নামাজ পড়ে), তার অতীতের গুনাহ মাফ ক’রে দেওয়া হয় ।”

(সহীহুল বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিজি ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবু দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯৮. আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী সাঃআঃ-এর কিছু সাহাবাকে স্বপ্নযোগে (রমযান মাসের) শেষ সাত রাতের মধ্যে শবেক্বদর দেখানো হল । আল্লাহর রসূল সাঃআঃ বললেন, “আমি দেখছি যে, শেষ সাত রাতের ব্যাপারে তোমাদের স্বপ্নগুলি পরস্পরের মুতাবিক । সুতরাং যে ব্যক্তি শবেক্বদর অনুসন্ধানী হবে, সে যেন শেষ সাত রাতে তা অনুসন্ধান করে ।”

(সহীহুল বুখারী ২০১৫, ৪৯৯১, মুসলিম ১১৬৫, আহমাদ ৪৪৮৫, ৪৫৩৩, ৪৬৫৭, ৪৭৯৩, ৪৯১৯, ৫০১১, ৫২৬১, ৫৪০৭, ৫৪২০, ৫৪৬১, ৫৬১৯, ৫৮৯৬, ৬৪৩৮, মুওয়াত্তা মালিক ৭০৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১১৯৯. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী সাঃআঃ রমযানের শেষ দশ দিনে এতেকাফ করতেন এবং বলতেন, “তোমরা রমযানের শেষ দশকে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর ।”

(সহীহুল বুখারী ২০২০, ২০১৭, মুসলিম ১১৬৯, তিরমিজি ৭৯২, আহমাদ ২৩৭১৩, ২৩৭৭১, ২৩৯২৪, ২৫১৬২)হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২০০. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাঃআঃ) বলেছেন, “রমযান মাসের শেষ দশকের বিজোড় (রাত) গুলিতে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর।”

(সহীহুল বুখারী ২০২০, ২০১৭, মুসলিম ১১৬৯, তিরমিজি ৭৯২, আহমাদ ২৩৭১৩, ২৩৭৭১, ২৩৯২৪, ২৫১৬২) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২০১. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘যখন রমযানের শেষ দশক প্রবেশ করত, তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রাতে নিজে জাগতেন, নিজ পরিজনদেরকেও জাগাতেন, কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং কোমরে লুঙ্গি বেঁধে নিতেন।’

(মুসলিম ১১৭৪, তিরমিজি ৭৯৬, নাসায়ী ১৬৩৯, আবু দাউদ ১৩৭৬, ২৩৮৬৯, ইবনু মাজাহ ১৭৬৭, ১৭৬৮, ২৩৬১১, ২৩৮৫৬, ২৪৩৯২, ২৫৬৫৬) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২০২. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) (আল্লাহর ইবাদতের জন্য) যত পরিশ্রম করতেন, অন্য কোন মাসে তেমন পরিশ্রম করতেন না। (অনুরূপভাবে) রমযানের শেষ দশকে যত মেহনত করতেন অন্য দিনগুলিতে তত মেহনত করতেন না।’ (মুসলিম, প্রথমাংশ মুসলিম শরীফে নেই। হয়তো বা অন্য কপিতে আছে।)

(সহীহুল বুখারী ২০২৪, মুসলিম ১১৭৫, তিরমিজি ৭৯৬, নাসায়ী ১৬৩৯ ) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

১২০৩. উক্ত রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন, যদি আমি (ভাগ্যক্রমে) শবেক্বদর জেনে নিই, তাহলে তাতে কোন্‌ (দুআ) পড়ব?’ তিনি বললেন, এই দুআ,

اَللهم إنَّكَ عَفُوٌ تُحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنّي

“আল্লাহুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউউন তুহিব্বুল ‘আফওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী।” অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা ভালবাসো। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

(তিরমিজি ৩৫১৩, ইবনু মাজাহ ৩৮৫০) হাদিসের মানঃ সহীহ হাদিস

Comments

Leave a Reply