Dua for Safar সফরের দোয়া জিকির তাকবীর তাসবীহ

Dua for Safar সফরের দোয়া জিকির তাকবীর তাসবীহ

সফরের দোয়া । বাহনে উঠা, বাজারে প্রবেশ, মুক্বীম এর দুয়া << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

সফরের দোয়া

পরিচ্ছেদ ১ঃ সফরকালে দুয়া চাওয়া
পরিচ্ছেদ ২ঃ কোন লোককে বিদায় দেয়ার সময় যে দুয়া পাঠ করিতে হয়
পরিচ্ছেদ ৩ঃ বাহনে আরোহণের দো‘আ
পরিচ্ছেদ ৪ঃ সফরের শুরুর দো‘আ
পরিচ্ছেদ ৫ঃ কোন জায়গায় যাত্রাবিরতি করলে যে দুয়া পাঠ করিবে
পরিচ্ছেদ ৬ঃ গ্রাম বা শহরে প্রবেশের দো‘আ
পরিচ্ছেদ ৭ঃ বাজারে প্রবেশের দো‘আ
পরিচ্ছেদ ৮ঃ বাহন হোঁচট খেলে পড়ার দো‘আ
পরিচ্ছেদ ৯ঃ মুক্বীম বা অবস্থানকারীদের জন্য মুসাফিরের দো‘আ
পরিচ্ছেদ ১০ঃ মুসাফিরের জন্য মুক্বীম বা অবস্থানকারীর দো‘আ
পরিচ্ছেদ ১১ঃ সফরে চলার সময় তাকবীর ও তাসবীহ
পরিচ্ছেদ ১২ঃ রাত্রির শেষ প্রহরে মুসাফিরের দো‘আ
পরিচ্ছেদ ১৩ঃ সফর থেকে ফেরার যিকির
পরিচ্ছেদ ১৪ঃ সফর হইতে ফিরে এসে যে দুয়া পাঠ করিবে

পরিচ্ছেদ ১ঃ সফরকালে দুয়া চাওয়া

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি বলিল, হে আলাহর রাসুল ! আমি সফরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি, অতএব উপদেশ দিন। তিনি বললেনঃ অবশ্যই তুমি আল্লাহ তাআলার ভয় [তাক্বওয়া] অবলম্বন করিবে এবং প্রতিতি উচ্চ জায়গায় যাওয়ার সময় তাকবীর ধ্বনি দিবে। যখন লোকটি চলে যাচ্ছিল সে সময় রাসুলাল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ

اللَّهُمَّ اطْوِ لَهُ الأَرْضَ وَهَوِّنْ عَلَيْهِ السَّفَرَ

আল্লাহুম্মায়ি লাহুল আরদা ওয়া হাওঅয়িন আলায়হিস সাফরি, হে আল্লাহ ! তার পথের ব্যবধান কমিয়ে দাও এবং তার জন্য সফর সহজতর করে দাও “।

[তিরমিজি ৩৪৪৫, হাসান ]

পরিচ্ছেদ ২ঃ কোন লোককে বিদায় দেয়ার সময় যে দুয়া পাঠ করিতে হয়

ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন কোন লোককে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বিদায় দেয়ার সময় তাকে নিজের হাতে ধরতেন এবং যতক্ষন পর্যন্ত সে নিজের হাত নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হইতে না ছাড়াতেন সে পর্যন্ত তিনিও তার হাত ছাড়তেন না। তিনি বলিতেনঃ

أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَآخِرَ عَمَلِكَ

আসতাওদিয়ুল্লাহি দিনিকা ওয়া আ¬মানাতাকা ওয়া আখিরা আমালিকা, (তোমার দ্বীন , ঈমান ও সর্বশেষ আমলের ব্যাপারে আমি আল্লাহ তাআলাকে আমানতদার নিযুক্ত করলাম )।

[তিরমিজি ৩৪৪২, সহীহ। তিরমিজি ৩৪৪৩ সালিম [রঃ] হইতে একই দুয়া বর্ণীত, সহীহ]

পরিচ্ছেদ ৩ঃ বাহনে আরোহণের দো‘আ

بِسْمِ اللَّهِ، وَالْحَمْدُ للَّهِ ﴿سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ، وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ﴾، «الْحَمْدُ لِلَّهِ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ  إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي؛ فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ

(বিস্‌মিল্লা-হি, আলহাম্‌দু লিল্লা-হি, সুব্‌হা-নাল্লাযী সাখখারা লানা হা-যা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন। ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনক্বালিবূন, আলহামদুলিল্লা-হ, আলহামদুলিল্লা-হ, আলহামদুলিল্লা-হ, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী ফাগফির লী। ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা)। “আল্লাহর নামে; আর সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি একে আমাদের জন্য বশীভূত করে দিয়েছেন, অন্যথায় আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আর আমরা অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করবো আমাদের রব্বের দিকে। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র-মহান; আমি আমার নিজের ওপর যুলুম করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে মাফ করে দিন। কেননা, আপনি ছাড়া গুনাহ মাফ করার আর কেউ নেই।”

আবু দাঊদ ৩/৩৪, ২৬০২; তিরমিযী ৫/৫০১, নং ৩৪৪৬। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৫৬। আর আয়াত দু’টি হচ্ছে, সূরা আয-যুখরুফের ১৩-১৪।

পরিচ্ছেদ ৪ঃ সফরের শুরুর দো‘আ

اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، ﴿سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ * وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ﴾ «اللَّهُمَّ إِنّا نَسْأَلُكَ فِي سَفَرِنَا هَذَا البِرَّ وَالتَّقْوَى، وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضَى، اللَّهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هَذَا وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهُ، اللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ، وَالْخَليفَةُ فِي الْأَهْلِ، اللَّهُمَّ  إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ، وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ، وَسُوءِ الْمُنْقَلَبِ فِي الْمَالِ وَالْأَهْلِ

(আল্লা-হু আকবার আল্লা-হু আকবার আল্লা-হু আকবার। সুব্‌হা-নাল্লাযী সাখখারা লানা হা-যা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীনা। ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনক্বালিবূন। আল্লা-হুম্মা ইন্না নাস’আলুকা ফী সাফারিনা হা-যাল-বিররা ওয়াত্তাকওয়া, ওয়ামিনাল ‘আমালি মা তারদ্বা। আল্লা-হুম্মা হাউইন ‘আলাইনা সাফারানা হা-যা ওয়াতউই ‘আন্না বু‘দাহু। আল্লা-হুম্মা আনতাস সা-হিবু ফিস সাফারি ওয়াল-খালীফাতু ফিল আহ্‌লি। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযু বিকা মিন ওয়া‘আসা-ইস্ সাফারি ওয়া কা’আবাতিল মানযারি ওয়া সূ-ইল মুনক্বালাবি ফিল মা-লি ওয়াল আহল)। “আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়। পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি আমাদের জন্য একে বশীভূত করে দিয়েছেন, অন্যথায় আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আর আমরা অবশ্যই আমাদের রব্বের নিকট প্রত্যাবর্তন করব।

হে আল্লাহ! আমরা এই সফরে আপনার কাছে চাই পূণ্য ও তাকওয়া এবং এমন কাজ যা আপনি পছন্দ করেন। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য এই সফরকে সহজ করে দিন এবং এর দুরত্বকে আমাদের জন্য কমিয়ে দিন। হে আল্লাহ! আপনিই সফরে আমাদের সাথী এবং আমাদের পরিবার-পরিজনের তত্ত্বাবধায়ণকারী। হে আল্লাহ! আমরা আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট-ক্লেশ থেকে, অবাঞ্ছিত অবস্থার দৃশ্য থেকে এবং সম্পদ ও পরিবারে অনিষ্টকর প্রত্যাবর্তন থেকে।”

আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফেরার সময়ও তা পড়তেন এবং তাতে যোগ করতেন,

آيِبُونَ، تائِبُونَ، عَابِدُونَ، لِرَبِّنَا حَامِدُونَ

(আ-ইবূনা তা-ইবূনা ‘আ-বিদূনা, লিরব্বিনা হা-মিদূন)। “আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমাদের রব্বের প্রশংসাকারী।”

মুসলিম ২/৯৭৮, হাদীস নং ১৩৪২।

পরিচ্ছেদ ৫ঃ কোন জায়গায় যাত্রাবিরতি করলে যে দুয়া পাঠ করিবে

খাওলা বিনতুল হাকীম আস-সুলামিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলাল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ কোন লোক যদি কোন জায়গায় অবতরন করে বলে,

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ  

আউজু বি কালিমা তিল্লাহিত তাম্মাতি মিন সাররি মা খালাক, আমি আল্লাহ তাআলার সম্পূর্ণ বাক্যর দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করি তাহাঁর সকল সৃষ্টির ক্ষতি হইতে)

সে উক্ত জায়গা ত্যাগ করা পর্যন্ত কোন কিছুই তার অনিষ্ট করিতে পারবে না।

[তিরমিজি ৩৪৩৭, সহীহ]

পরিচ্ছেদ ৬ঃ গ্রাম বা শহরে প্রবেশের দো‘আ

اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَمَا أَظْلَلْنَ، وَرَبَّ الأَرَضِينَ السَّبْعِ وَمَا أَقْلَلْنَ، وَرَبَّ الشَّياطِينِ وَمَا أَضْلَلْنَ، وَرَبَّ الرِّيَاحِ وَمَا ذَرَيْنَ، أَسْأَلُكَ خَيْرَ هَذِهِ الْقَرْيَةِ، وَخَيْرَ أَهْلِهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ أَهْلِهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا

(আল্লা-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তিস্ সাব‘ঈ ওয়ামা আযলালনা, ওয়ারব্বাল আরাদীনাস সাব‘ঈ ওয়ামা আক্বলালনা, ওয়া রব্বাশ শাইয়া-তী-নি ওয়ামা আদ্বলালনা, ওয়া রব্বাররিয়া-হি ওয়ামা যারাইনা, আস’আলুকা খাইরা হা-যিহিল কারইয়াতি ওয়া খাইরা আহলিহা ওয়া খাইরা মা ফীহা। ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি আহলিহা ওয়া শাররি মা ফীহা)। “হে আল্লাহ! সাত আসমান এবং তা যা কিছু ছায়া দিয়ে রেখেছে তার রব্ব! সাত যমীন এবং তা যা ধারণ করে রেখেছে তার রব্ব! শয়তানদের এবং ওদের দ্বারা পথভ্রষ্টদের রব্ব! বাতাসসমূহ এবং তা যা উড়িয়ে নেয় তার রব্ব! আমি আপনার নিকট চাই এ জনপদের কল্যাণ, এ জনপদবাসীর কল্যাণ এবং এর মাঝে যা আছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই এ জনপদের অনিষ্ট থেকে, তাতে বসবাসকারীদের অনিষ্ট থেকে এবং এর মাঝে যা আছে তার অনিষ্ট থেকে।”

হাকেম, আর তিনি একে সহীহ বলেছেন এবং ইমাম যাহাবী সেটা সমর্থন করেছেন ২/১০০; ইবনুস সুন্নী, নং ৫২৪। তাছাড়া হাফেয ইবন হাজার তাঁর তাখরীজুল আযকার ৫/১৫৪, একে হাসান বলেছেন। আল্লামা ইবন বায রাহেমাহুল্লাহ বলেন, ‘হাদীসটি নাসাঈ হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন।’ দেখুন, তুহফাতুল আখইয়ার, পৃ. ৩৭।

পরিচ্ছেদ ৭ঃ বাজারে প্রবেশের দো‘আ

মুহাম্মাদ ইবনি ওয়াসি [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

আমি মক্কায় পৌঁছালে আমার ভাই সালিম ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] আমার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি তার বাবা হইতে, তার দাদার সনদে আমার কাছে হাদীস রিওয়ায়াত করেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক বাজারে প্রবেশ করে বলে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكُ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَىٌّ لاَ يَمُوتُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ‏

লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু, ইউহইয়ি ওয়া ইউউমিতু ওয়া হুয়া হায়্যু লা ইয়ামুতু বি ইয়াদিহিল খয়রু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর, “আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি এক, তাহাঁর কোন অংশীদার নেই, সকল ক্ষমতা তাহাঁরই, সমস্ত প্রশংসা তাহাঁর জন্য, তিনিই প্রাণ দান করেন ও মৃত্যু দেন, তিনি চিরজীবি, তিনি কক্ষনো মৃত্যুবরণ করবেন না, তাহাঁর হাতেই মঙ্গল এবং তিনিই সবসময় প্রত্যেক বস্তুর উপর ক্ষমতার অধিকারী”,

তার জন্য আল্লাহ তাআলা দশ লক্ষ নেকী বরাদ্দ করেন, তার দশ লক্ষ গুনাহ মাফ করেন এবং তার দশ লক্ষ গুণ সম্মান বৃদ্ধি করেন।

[তিরমিজি ৩৪২৮, হাসান] [তিরমিজি ৩৪২৯, সালিম ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও তার দাদা হইতে একই দোয়া বর্ণীত, হাসান]

পরিচ্ছেদ ৮ঃ বাহন হোঁচট খেলে পড়ার দো‘আ

بِسْمِ اللَّهِ

(বিসমিল্লা-হ) “আল্লাহর নামে।”

আবূ দাউদ, ৪/২৯৬, নং ৪৯৮২। আর শাইখ আলবানী একে সহীহ বলেছেন, সহীহ আবি দাউদে, ৩/৯৪১।

পরিচ্ছেদ ৯ঃ মুক্বীম বা অবস্থানকারীদের জন্য মুসাফিরের দো‘আ

أَسْتَوْدِعُكُمُ اللَّهَ الَّذِي لاَ تَضِيعُ وَدَائِعُهُ

(আস্তাউদি‘উ কুমুল্লা-হাল্লাযী লা তাদ্বী‘উ ওয়াদা-ই‘উহু)। “আমি তোমাদেরকে আল্লাহর হিফাযতে রেখে যাচ্ছি, যার কাছে রাখা আমানতসমূহ কখনও বিনষ্ট হয় না।”

আহমাদ ২/৪০৩, নং ৯২৩০; ইবন মাজাহ, ২/৯৪৩, নং ২৮২৫। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ ২/১৩৩।

পরিচ্ছেদ ১০ঃ মুসাফিরের জন্য মুক্বীম বা অবস্থানকারীর দো‘আ

أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكَ، وَأَمَانَتَكَ، وَخَوَاتِيمَ عَمَلِكَ

(আস্তাউদি‘উল্লা-হা দীনাকা ওয়া আমা-নাতাকা ওয়া খাওয়া-তীমা ‘আমালিকা)। “আমি আপনার দীন, আপনার আমানত (পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ) এবং আপনার সর্বশেষ আমলকে আল্লাহর হিফাযতে রাখছি।”

আহমাদ ২/৭, ৪৫২৪, তিরমিযী ৫/৪৯৯, নং ৩৪৪৩। আর শাইখ আলবানী একে সহীহু সুনানিত তিরমিযীতে ৩/৪১৯ সহীহ হাদীস বলেছেন।

زَوَّدَكَ اللَّهُ التَّقْوَى، وَغَفَرَ ذَنْبَكَ، وَيَسَّرَ لَكَ الخَيْرَ حَيْثُ ما كُنْتَ

(যাওয়াদাকাল্লাহুত তাক্বওয়া, ওয়াগাফারা যানবাকা, ওয়া ইয়াসসারা লাকাল খাইরা হাইসু মা কুনতা)। “আল্লাহ আপনাকে তাকওয়ার পাথেয় প্রদান করুন, আপনার গুনাহ ক্ষমা করুন, আর যেখানেই থাকুন না কেন আপনার জন্য কল্যাণকে সহজ করে দিন।”

তিরমিযী, নং ৩৪৪৪; আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৫৫।

পরিচ্ছেদ ১১ঃ সফরে চলার সময় তাকবীর ও তাসবীহ

২১৪- ‘জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “আমরা যখন উঁচুতে আরোহণ করতাম তখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলতাম, আর যখন নিচের দিকে নামতাম তখন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলতাম।”

বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৬/১৩৫, নং ২৯৯৩।

পরিচ্ছেদ ১২ঃ রাত্রির শেষ প্রহরে মুসাফিরের দো‘আ

سَمَّعَ سَامِعٌ بِحَمْدِ اللَّهِ، وَحُسْنِ بَلاَئِهِ عَلَيْنَا، رَبَّنَا صاحِبْنَا، وَأَفْضِلْ عَلَيْنَا، عَائِذاً بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ

(সাম্মা‘আ সা-মি‘উন বিহামদিল্লা-হ, ওয়া হুসনি বালা-ইহী ‘আলাইনা, রাব্বানা সা-হিবনা, ওয়া আফদিল ‘আলাইনা, ‘আ-ইযান বিল্লা-হি মিনান না-রী) “আমরা যে আল্লাহর প্রশংসা করলাম, আর আমাদের ওপর তাঁর উত্তম নেয়ামতের ঘোষণা দিলাম, তা একজন শ্রোতা আমার এ কথা শুনে অন্যের কাছে পৌঁছে দিক। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের সাথী হোন, আর আমাদের ওপর অনুগ্রহ বর্ষণ করুন। আগুন থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয়প্রার্থী হয়ে (এ দো‘আ করছি)।”

মুসলিম, ৪/২০৮৬, নং ২৭১৮। আর হাদীসে ব্যবহৃত سَمِعَ سامِعٌ শব্দের অর্থ, ‘একজন সাক্ষ্যদাতা সাক্ষ্য প্রদান করুন যে, আমরা আল্লাহর প্রশংসা করেছি তার যাবতীয় নেয়ামতের উপর, তাঁর উত্তম দান-দয়ার উপর।’ আর যদি হাদীসে ব্যবহৃত শব্দটিকে سَمَّعَ سامِعٌ ধরা হয়, তখন অর্থ হবে, ‘একজন শ্রোতা আমার এ কথা শুনে তা অন্যের কাছে পৌঁছে দিক।’ আর এ-কথাটি তিনি বলেছেন শেষ রাত্রির দো‘আ ও যিকর সম্পর্কে সচেতন করার জন্য। শারহুন নাওয়াওয়ী ‘আলা সহীহ মুসলিম, ১৭/৩৯।

পরিচ্ছেদ ১৩ঃ সফর থেকে ফেরার যিকির

প্রতিটি উঁচু স্থানে তিন বার তাকবীর দিবে, তারপর বলবে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، آيِبُونَ، تَائِبُونَ، عَابِدُونَ، لِرَبِّنا حَامِدُونَ، صَدَقَ اللَّهُ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزابَ وَحْدَهُ

(লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর, আ-ইবূনা, তা-ইবূনা, ‘আ-বিদূনা, লি রাব্বিনা হা-মিদূন। সাদাক্বাল্লা-হু ওয়া‘দাহু, ওয়া নাসারা ‘আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু) “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমাদের রব্বের প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা বাস্তবায়ন করেছেন, তিনি তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন, আর তিনি সকল বিরোধী দল-গোষ্ঠীকে একাই পরাস্ত করেছেন।”

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো যুদ্ধ অথবা হজ্জ থেকে ফিরতেন, তখন এগুলো বলতেন। বুখারী, ৭/১৬৩, নং ১৭৯৭; মুসলিম, ২/৯৮০, নং ১৩৪৪।

পরিচ্ছেদ ১৪ঃ সফর হইতে ফিরে এসে যে দুয়া পাঠ করিবে

আল-বারাআ ইবনি আযিয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

সফর হইতে প্রত্যাবর্তন করে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিতেনঃ

 آيِبُونَ تَائِبُونَ عَابِدُونَ لِرَبِّنَا حَامِدُونَ 

আ-য়িবুনা তা-য়িবুনা আবিদুনা লিরব্বানা হামিদুন, (আমরা [সফর হইতে হিফাযাতে] ফিরে আসা ব্যক্তি , তাওবাহকারী , ইবাদাতকারী , আমাদের প্রভুর প্রশংসাকারী)

[তিরমিজি ৩৪৪০ সহীহঃ]


Posted

in

by

Tags:

Comments

One response to “Dua for Safar সফরের দোয়া জিকির তাকবীর তাসবীহ”

Leave a Reply