ওযূর ফযীলত এবং আযানের ফযীলত
ওযূর ফযীলত এবং আযানের ফযীলত >> রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর ২ টি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন
ওযূর ফযীলত এবং আযানের ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ১৮৫ঃ ওযূর ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ১৮৬ঃ আযানের ফযীলত
পরিচ্ছেদ – ১৮৫: ওযূর ফযীলত
১০৩১. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, “নিশ্চয় আমার উম্মতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাদের ওযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে । সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তার চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে ।” (অর্থাৎ সে যেন তার ওযূর সীমার অতিরিক্ত অংশও ধুয়ে ফেলে ।) (বুখারী, মুসলিম)
(সহীহুল বুখারী শরীফ ১৩৬, মুসলিম ২৪৬, ইবনু মাজাহ ৪৩০৬, আহমাদ ৮২০৮, ৮৫২৪, ৮৯৪২, ১০৩৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৬০) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩২. উক্ত রাবী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, “(পরকালে) মু’মিনের অলংকার ততদূর হবে, যতদূর তার ওযূর (পানি) পৌঁছবে।” (মুসলিম)
(মুসলিম ২৫০, নাসাঈ ১৪৯, আহমাদ ৭১২৬, ৮৬২৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৩. উসমান ইবনে ‘আফ্ফান রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করিবে, তার পাপসমূহ তার দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে । এমনকি তার নখগুলোর নিচে থেকেও (পাপ) বেরিয়ে যাবে ।”
(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৪৫, আহমাদ ৪৭৪) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৪. উক্ত রাবী হইতে বর্ণিতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমার এই ওযূর মত ওযূ করতে দেখলাম । অতঃপর তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি এরূপ ওযূ করিবে, তার পূর্বকৃত পাপরাশি মাফ করা হবে এবং তার নামায ও মসজিদের দিকে চলার সওয়াব অতিরিক্ত হবে ।”
(সহীহুল বুখারী শরীফ ১৬০, ১৬৪, ১৯৩৪, ৬৪৩৩, মুসলিম ২২৯, ২২৬, ২২৭, ২৩১২, নাসাঈ ৮৪, ৮৫, ১৪৫, ১৪৬, ৮৫৬, আবু দাঊদ ১০৬, ১০৮, ১১০, ইবনু মাজাহ ২৮৫, আহমাদ ৪০২, ৪১৭, ৪২০, ৪৩১, ৪৩২, ৪৬১, ৪৭৪, ৪৮৫, ৪৯১, ৫০৫, ৫১৮, ৫২৮, ৫৫৪, মুওয়াত্তা মালিক ৬১, দারেমী ৬৯৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৫. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মুসলিম কিংবা মুমিন বান্দাহ যখন ওযূ করিবে এবং যখন সে নিজ মুখমণ্ডল ধৌত করিবে, তখন তার মুখমণ্ডল হইতে সেই গোনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যাবে, যে সব গোনাহ তার দু’টি চোখ দিয়ে দেখার ফলে সংঘটিত হয়েছিল । (অনুরূপভাবে) যখন সে নিজ হাত দু’টি ধোবে, তখন তা হইতে সে সব পাপ পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে নির্গত হয়ে যাবে, যে সব পাপ তার দুই হাত দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল । আর যখন সে নিজ পা দু’টি ধৌত করিবে, তখন তার পা দু’টি হইতে সে সমস্ত পাপরাশি পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যাবে, যেগুলি তার দু’টি পায়ে চলার ফলে সংঘটিত হয়েছিল । শেষ অবধি সে (ক্ষুদ্র) পাপরাশি হইতে পাক-পবিত্র হয়ে বেরিয়ে আসবে ।” (মুসলিম)
(মুসলিম ২৪৪, তিরমিজী ২, আহমাদ ৭৯৬০, মুওয়াত্তা মালিক ৬৩, দারেমী ৭১৮) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৬. উক্ত রাবী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একবার) কবরস্থানে এসে (কবরবাসীদের সম্বোধন ক’রে) বললেন, “হে (পরকালের) ঘরবাসী মুমিনগণ ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষণ হোক । যদি আল্লাহ চান তো আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব । আমার বাসনা যে, যদি আমরা আমাদের ভাইদেরকে দেখতে পেতাম ।” সাহাবীগণ নিবেদন করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আমরা কি আপনার ভাই নই ?’ তিনি বললেন, “তোমরা তো আমার সহচরবৃন্দ । আমার ভাই তারা, যারা এখনো পর্যন্ত আগমন করেনি ।” সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল ! আপনার উম্মতের মধ্যে যারা এখনো পর্যন্ত আগমন করেনি, তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনতে পারবেন ?’ তিনি বললেন, “আচ্ছা বল, যদি খাঁটি কাল রঙের ঘোড়ার দলে, কোনো লোকের কপাল ও পা সাদা দাগবিশিষ্ট ঘোড়া থাকে, তাহলে কি সে তার ঘোড়া চিনতে পারবে না ?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই পারবে, হে আল্লাহর রসূল !’ তিনি বললেন, “তারা এই অবস্থায় (হাশরের মাঠে) আগমন করিবে যে, ওযূ করার দরুন তাদের হাত-পা চমকাতে থাকবে । আর আমি ‘হাওযে’-এ তাদের অগ্রগামী ব্যবস্থাপক হব ।” (অর্থাৎ তাদের আগেই আমি সেখানে পৌঁছে যাব ।)
(সহীহুল বুখারী শরীফ ২৩৬৭, মুসলিম ২৪৯, নাসাঈ ১৫০, আবু দাঊদ ৩২৩৭, ইবনু মাজাহ ৪৩০৬, আহমাদ ৭৯৩৩, ৮৬৬১, ৯০৩৭, ৯৫৪৭, ৯৬৯৩, মুওয়াত্তা মালিক ৬০) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৭. উক্ত রাবী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একদা সমবেত সহচরদের উদ্দেশ্যে) বললেন, “তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলব না কি, যার দ্বারা আল্লাহ গোনাহসমূহকে মোচন করে দেবেন এবং (জান্নাতে) তার দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি করিবেন ?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহর রসূল !’ তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে ওযূ করা, অধিক মাত্রায় মসজিদে গমন করা এবং এক অক্তের নামায আদায় ক’রে পরবর্তী অক্তের নামাযের জন্য অপেক্ষা করা । আর এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ । এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ ।” (মুসলিম)
(মুসলিম ২৫১, তিরমিজী ৫১, নাসাঈ ১৪৩, আহমাদ ৭১৬৮, ৭৬৭২, ৭৯৩৫, ৭৯৬১, ৯৩৬১, মুওয়াত্তা মালিক ৩৮৬) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৮. আবু মালেক আশআরী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “(বাহ্যিক) পবিত্রতা অর্জন করা হল অর্ধেক ঈমান ।” (মুসলিম)
(মুসলিম ২২৩, তিরমিজী ৩৫১৭, ইবনু মাজাহ ২৮০, আহমাদ ২২৩৯৫, ২২৪০১, দারেমী ৬৫৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৩৯. উমার ইবনে খাত্তাব রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “পরিপূর্ণরূপে ওযূ ক’রে যে ব্যক্তি এই দুআ বলবে,
أَشهَدُ أَنْ لاَ إلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
‘আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ ।’ অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই । তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত দূত (রসূল) । তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করিবে ।”(মুসলিম)
মুসলিম ২৩৪, তিরমিজী ৫৫, নাসাঈ ১৪৮, ১৫১, আবু দাঊদ ১৬৯, ৯০৬, ইবনু মাজাহ ৪৭০, আহমাদ ১৬৯১২, ১৬৯৪২, ১৬৯৯৫) ইমাম তিরমিজী (উক্ত দুআর শেষে) এ শব্দগুলি অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন, ‘আল্লা-হুম্মাজ্আলনি মিনাত্ তাওয়া-বিনা অজ্আলনি মিনাল মুতাত্বাহহিরিন ।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ ! আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর । (তিরমিজী, সহীহ, তামামুল মিন্নাহ দ্রঃ) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
পরিচ্ছেদ – ১৮৬: আযানের ফযীলত
১০৪০. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “লোকেরা যদি জানত যে, আযান দেওয়া ও নামাযের প্রথম সারিতে দাঁড়াবার কি মাহাত্ম্য আছে, অতঃপর (তাতে অংশগ্রহণের জন্য) যদি লটারি ব্যতিরেকে অন্য কোনো উপায় না পেত, তবে তারা অবশ্যই সে ক্ষেত্রে লটারির সাহায্য নিত । (অনুরূপ) তারা যদি জানত যে, আগে আগে মসজিদে আসার কি ফযীলত, তাহলে তারা সে ব্যাপারে প্রতিযোগিতা করত । আর তারা যদি জানত যে, এশা ও ফজরের নামায (জামাতে) পড়ার ফযীলত কত বেশি, তাহলে মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছা ছেঁচড়ে আসতে হলেও তারা অবশ্যই আসত ।” (বুখারী-মুসলিম)
(মুসলিম ৩৮৭, ইবনু মাজাহ ৭২৫, আহমাদ ১৬৪১৯, ১৬৪৫৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪১. মুআবিয়াহ ইবনে আবু সুফয়ান রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছি, “কিয়ামতের দিনে সমস্ত লোকের চাইতে মুয়ায্যিনদের গর্দান লম্বা হবে ।”
(সহীহুল বুখারী শরীফ ৬০৯, ৩২৯৬, ৭৫৪৮, নাসাঈ ৬৪৪, ইবনু মাজাহ ৭২৩, আহমাদ ১০৬৪৮, ১০৯১২, ১১০০০, মুওয়াত্তা মালিক ১৫৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪২. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে স্বা‘স্বাআহ হইতে বর্ণিতঃ
একদা আবু সাঈদ খুদরী রাঃআঃ তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি ছাগল ও মরুভূমি ভালোবাসো । সুতরাং তুমি যখন তোমার ছাগলে বা মরুভূমিতে থাকবে আর নামাযের জন্য আযান দেবে, তখন উচ্চ স্বরে আযান দিয়ো । কারণ মুয়ায্যিনের আযান ধ্বনি যতদূর পর্যন্ত মানব-দানব ও অন্যান্য বস্তু শুনতে পাবে, কিয়ামতের দিন তারা তার জন্য সাক্ষ্য দেবে ।’ আবু সাঈদ রাঃআঃ বলেন, ‘আমি এটি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট শুনেছি ।’ (বুখারী)
(সহীহুল বুখারী শরীফ ৬০৮, ১২২২, ১২৩১, ১২৩২, ৩২৮৫, মুসলিম ৩৮৯, তিরমিজী ৩৯৭, নাসাঈ ৬৭০, ১২৫৩, আবু দাঊদ ৫১৬, ইবনু মাজাহ ১২১৬, ১২১৭, আহমাদ ৭৬৩৭, ৭৭৪৪, ৭৭৬৩, ৮৯১৯, ৯৬১৫, ৯৮৯৩, ১০৩৯০, ১০৪৯৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৫৪, ২২৪, দারেমী ১২০৪, ১৪৯৪) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪৩. আবু হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন নামাযের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান বাতকর্ম করতে করতে পিঠ ঘুরিয়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযান শুনতে না পায় । তারপর আযান শেষ হলে ফিরে আসে । শেষ পর্যন্ত যখন ‘তাকবীর’ দেওয়া হয়, তখন আবার পিঠ ঘুরিয়ে পালায় । অতঃপর যখন ‘তাকবীর’ শেষ হয়, তখন আবার ফিরে আসে । পরিশেষে (নামাযী) ব্যক্তির মনে এই কুমন্ত্রণা প্রক্ষেপ করে যে, অমুক জিনিসটা স্মরণ কর, অমুক বস্তুটা খেয়াল কর । সে সমস্ত বিষয় (স্মরণ করায়) যা পূর্বে তার স্মরণে ছিল না । শেষ পর্যন্ত এ ব্যক্তি এরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় যে, সে বুঝতে পারে না, কত রাক‘আত নামায সে আদায় করল ।” (বুখারী, মুসলিম)
(মুসলিম ৩৮৪, তিরমিজী ৩৬১৪, নাসাঈ ৬৭৮, আবু দাঊদ ৫২৩, আহমাদ ৬৫৩২) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪৪. আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আম্র ইবনে আ’স রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুআয্যিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলবে । তারপর আযান শেষে আমার উপর দরূদ পাঠ করিবে । কেননা, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করিবে, তার বিনিময়ে তার প্রতি আল্লাহ দশটি রহমত নাযেল করিবেন । অতঃপর তোমরা আল্লাহর নিকট আমার জন্য ‘অসীলা’ প্রার্থনা করিবে । কারণ, ‘অসীলা’ হচ্ছে জান্নাতের এমন একটি স্থান, যা সমস্ত বান্দার মধ্যে কেবল আল্লাহর একটি বান্দা (তার উপযুক্ত) হবে । আর আশা করি, আমিই সেই বান্দা হব । সুতরাং যে ব্যক্তি আমার জন্য অসীলা প্রার্থনা করিবে, তার জন্য (আমার) সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে ।” (মুসলিম)
(সহীহুল বুখারী শরীফ ৬১১, মুসলিম ৩৮৩, তিরমিজী ২০৮, নাসাঈ ৬৭৩, আবু দাঊদ ৫২২, ইবনু মাজাহ ৭২০, আহমাদ ১০৬৩৭, ১১১১২, ১১৩৩৩, ১১৪৫০, মুওয়াত্তা মালিক ১৫০, দারেমী ১২০১) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪৫. আবু সাঈদ খুদরী রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যখন তোমরা আযান ধ্বনি শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুআয্যিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলো” (বুখারী, মুসলিম)
(সহীহুল বুখারী শরীফ ৬১৪, ৪৭১৯, তিরমিজী ২১১, নাসাঈ ৬৮০, আবু দাঊদ ৫২৯, ইবনু মাজাহ ৭২২, আহমাদ ১৪৪০৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪৬. জাবের রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আযান শুনে (আযানের শেষে) এই দুআ বলবে,
‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-যিহিদ দা‘অতিত্ তা-ম্মাহ, অস্স্বালা-তিল ক্বা-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল অসীলাতা অলফাযীলাহ, অবআষহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী অ‘আত্তাহ ।’অর্থাৎ হে আল্লাহ এই পূর্ণা-ঙ্গ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠা লাভকারী নামাযের প্রভু ! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তুমি অসীলা (জান্নাতের এক উচ্চ স্থান) ও মর্যাদা দান কর এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ ।
সে ব্যক্তির জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে ।” (বুখারী)
(মুসলিম ৩৮৬, তিরমিজী ২১০, নাসাঈ ৬৭৯, আবু দাঊদ ৫২৫, ইবনু মাজাহ ৭২১, আহমাদ ১৫৬৮) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪৭. সা‘দ ইবনে আবী অক্কাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করিয়াছেন, “আযান শুনে যে ব্যক্তি এই দুআ পড়বে,
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إلَه إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبّاً، وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً، وَبِالإِسْلامِ دِيناً، غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ
‘আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ, রাদ্বীতু বিল্লা-হি রাব্বিঁউ অ বিমুহাম্মাদির রাসূলাঁউ অ বিলইসলা-মি দ্বীনা ।’
অর্থাৎ আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত রসূল । আল্লাহকে প্রতিপালক বলে মেনে নিতে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবীরূপে স্বীকার করতে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করতে আমি সম্মত ও তুষ্ট হয়েছি ।
সে ব্যক্তির (ছোট ছোট) গুনাহ ক্ষমা ক’রে দেওয়া হবে ।”
(সহীহুল বুখারী শরীফ ৫২৮, মুসলিম ৬৬৭, তিরমিজী ২৮৬৮, নাসাঈ ৪৬২, আহমাদ ৮৭০৫, ৯২২১, ৯৩৯৯, দারেমী ১১৮৩) হাদীসটির মানঃ সহীহ হাদীস
১০৪৮. আনাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আযান ও ইকামতের মধ্য সময়ে কৃত প্রার্থনা রদ করা হয় না ।” (অর্থাৎ এ সময়ের দুআ কবুল হয়) ।
(মুসলিম ৬৬৮, আহমাদ ১৩৮৬৩, ১৩৯৯৯, ১৪৪৩৯, দারেমী ১১৮২) হাদীসটির মানঃ হাসান হাদীস
Leave a Reply