সুললিত কণ্ঠে কুরআন পড়া মুস্তাহাব। রিয়াদুস সালেহীন
সুললিত কণ্ঠে কুরআন পড়া মুস্তাহাব। রিয়াদুস সালেহীন >> রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন
পরিচ্ছেদ – ১৮২: সুললিত কণ্ঠে কুরআন পড়া মুস্তাহাব। মধুরকণ্ঠ কারীকে তা পড়ার আবেদন করা ও তা মনোযোগ সহকারে শোনা প্রসঙ্গে
1/1011 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: «مَا أَذِنَ اللهُ لِشَيءٍ مَا أَذِنَ لِنَبِيٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ يَتَغَنَّى بِالقُرْآنِ يَجْهَرُ بِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ
১/১০১১। আবূ হুরায়রা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-কে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, “মহান আল্লাহ এভাবে উৎকর্ণ হয়ে কোন কথা শোনেন না, যেভাবে সেই মধুরকণ্ঠী পয়গম্বরের প্রতি উৎকর্ণ হয়ে শোনেন, যিনি মধুর কণ্ঠে উচ্চ স্বরে কুরআন মাজীদ পড়তেন।” [বুখারী, মুসলিম] [1]
আল্লাহর উৎকর্ণ হয়ে শোনার মধ্যে এ কথার ইঙ্গিত রয়েছে যে, তিনি সেই তেলাওয়াতে সন্তুষ্ট হন এবং তা কবুল করেন।
2/1012 وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِي رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ: «لَقدْ أُوتِيتَ مِزْمَاراً مِنْ مَزَامِيرِ آلِ دَاوُدَ». متفقٌ عَلَيْهِ.
وفي رواية لمسلمٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ: «لَوْ رَأَيْتَنِي وَأنَا أسْتَمِعُ لِقِراءتِكَ الْبَارِحَةَ» ..
২/১০১২। আবূ মুসা আশ‘আরী রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, একদা রসুলুল্লাহ সাঃআঃ তাঁকে বলিলেন, “তোমাকে দাউদের সুললিত কণ্ঠের মত মধুর কণ্ঠ দান করা হয়েছে।” [বুখারী, মুসলিম][2]
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যে, রসুলুল্লাহ সাঃআঃ তাঁকে বলিলেন, “যদি তুমি আমাকে গত রাতে তোমার তেলাওয়াত শোনা অবস্থায় দেখিতে [তাহলে তুমি কতই না খুশি হইতে]!”
3/1013 وَعَنِ البَراءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي الْعِشَاءِ بالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ، فَمَا سَمِعْتُ أَحَداً أَحْسَنَ صَوْتاً مِنْهُ . متفقٌ عَلَيْهِ
৩/১০১৩। বারা’ ইবনি আযেব রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি রসুলুল্লাহ সাঃআঃ-কে এশার নামাযে সূরা ‘ওয়াত্তীন অয্যাইতূন’ পড়তে শুনিয়াছি। বস্তুতঃ আমি তাহাঁর চেয়ে মধুর কণ্ঠ আর কারো শুনিনি।” [বুখারী, মুসলিম] [3]
4/1014 وَعَنْ أَبي لُبَابَةَ بَشِيرِ بنِ عَبدِ المُنذِرِ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالقُرْآنِ فَلَيْسَ مِنَّا» رواه أَبُو داود بإسنادٍ جيدٍ.
৪/১০১৪। আবূ লুবাবাহ বাশীর ইবনি আব্দুল মুনযির রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিষ্ট স্বরে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের মধ্যে নয়।” [অর্থাৎ আমাদের ত্বরীকা ও নীতি-আদর্শ বহির্ভূত।] [আবূ দাউদ, উত্তম সূত্রে] [4]
5/1015 وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: «اِقْرَأْ عَلَيَّ القُرْآنَ»، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَقْرَأُ عَلَيْكَ، وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ ؟! قَالَ: «إنِّي أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِي». فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ سُورَةَ النِّسَاءِ، حَتَّى جِئْتُ إِلَى هَذِهِ الآيَةِ: فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيداً قَالَ: «حَسْبُكَ الآنَ» فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ، فَإذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ . متفقٌ عَلَيْهِ ৫/১০১৫। আব্দুল্লাহ ইবনি মাসঊদ রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বলিলেন, “[হে ইবনি মাসঊদ!] আমাকে কুরআন পড়ে শুনাও।” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে পড়ে শোনাব, অথচ আপনার উপরে তা অবতীর্ণ করা হয়েছে?’ তিনি বলিলেন, “অপরের মুখ থেকে [কুরআন পড়া] শুনতে আমি ভালবাসি।” সুতরাং তাহাঁর সামনে আমি সূরা নিসা পড়তে লাগলাম, পড়তে পড়তে যখন এই [৪১নং] আয়াতে পৌঁছলাম—যার অর্থ, “তখন তাহাদের কি অবস্থা হইবে, যখন প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকেও তাহাদের সাক্ষী-রূপে উপস্থিত করব?” তখন তিনি বলিলেন, “যথেষ্ট, এখন থাম।” অতঃপর আমি তাহাঁর দিকে ফিরে দেখি, তাহাঁর নয়ন যুগল অশ্রু ঝরাচ্ছে। [বুখারী, মুসলিম] [5]
[1] সহীহুল বুখারী ৭৫৪৪, ৫০২৩, ৫০২৪, ৭৪৮২, ৭৫২৭, মুসলিম ৭৯২, নাসায়ী ১০১৭, ১০১৮, আবূ দাউদ ১৪৭৩, আহমাদ ৭৬১৪, ৭৭৭৩, ৯৫১৩, দারেমী ৩৪৯০, ৩৪৯১, ৩৪৯৭
[2] সহীহুল বুখারী ৫০৪৮, মুসলিম ৭৯৩, তিরমিযী ৩৮৫৫
[3] সহীহুল বুখারী ৭৬৭, ৪৯৫২, ৭৫৪৬, মুসলিম ৪৬৪, তিরমিযী ৩১০, নাসায়ী ১০০০, ১০০১, আবূ দাউদ ১২২১, ইবনু মাজাহ ৮৩৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৭৬
[4] আবূ দাউদ ১৪৭১
[5] সহীহুল বুখারী ৪৫৮২, ৫০৪৯, ৫০৫৯, ৫০৫৫, ৫০৫৬, মুসলিম ৮০০, তিরমিযী ৩০২৪, ৩০২৫, আবূ দাউদ ৩৬৬৮, ইবনু মাজাহ ৪১৯৪, আহমাদ ৩৫৪০, ৩৫৯৫, ৪১০৭
Leave a Reply