সকাল সন্ধ্যার দোয়া ও জিকির বাংলা আরবি সহ

সকাল সন্ধ্যার দোয়া ও জিকির বাংলা আরবি সহ

সকাল সন্ধ্যার দোয়া ও জিকির বাংলা আরবি সহ << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> আবু দাউদ>> তিরমিজি >> ইবনে মাজা

সকাল সন্ধ্যার দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উঠে [এই আয়াত] বলবেঃ

 فَسُبْحَانَ اللَّهِ حِينَ تُمْسُونَ وَحِينَ تُصْبِحُونَ * وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَعَشِيًّا وَحِينَ تُظْهِرُونَ

“সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌র পবিত্রতা ঘোষণা করো যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও এবং যখন সকালে উপনীত হও, আর আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে সকল প্রশংসা তাহাঁরই… তোমাদেরকে উত্থিত করা হইবে” [সূরাহ রূমঃ ১৭-১৯] পর্যন্ত।

তার ঐ দিনে যেসব [কল্যাণ] ছুটে গেলে, সে তা লাভ করিবে। আর যে তা সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে পড়বে সে লাভ করিবে ঐ রাতে যেসব [কল্যাণ] তার হাতছাড়া হয়েছে। {৫০৭৪}

[আবু দাউদ ৫০৭৬, খুবই দুর্বল]

২৭. সকাল ও বিকালের যিকিরসমূহ

মুআয ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি খুবাইব [রাদি.] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক বর্ষণমুখর খুবই অন্ধকার কালো রাতে আমাদের সলাত পড়াবার জন্য আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে খুঁজছিলাম। আমরা তাঁকে পেয়ে গেলাম। তিনি বলিলেনঃ বলো। আমি কিছুই বলিলাম না। পুনরায় তিনি বলিলেন, বলো। আমি কিছুই বলিলাম না। তিনি আবার বলিলেনঃ বলো। তখন আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! কি বলবো? তিনি বলিলেনঃ তুমি সন্ধ্যায় ও সকালে উপনীত হয়ে তিনবার সূরাহ কুল হুয়াল্লাহু [সূরা ইখলাস], সূরাহ নাস ও ফালাক্ব পড়বে; এতে তুমি যাবতীয় অনিষ্ট হইতে রক্ষা পাবে। {৫০৮০}

[আবু দাউদ ৫০৮২, হাসান হাদিস]

আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলিতেনঃ

 أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ

আমসাইনা ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহি লা ইলাহা ইল্লালল্লাহু ওয়া দাহু লা সারিকা লাহু, অর্থ “আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি এবং রাজ্য আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় প্রবেশ করেছে, সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র, আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাহাঁর কোন শরীক নেই”।

জারীর [রাদি.] বর্ণিত হাদিসে রয়েছে ঃ

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ رَبِّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَمِنْ سُوءِ الْكِبْرِ أَوِ الْكُفْرِ رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ وَعَذَابٍ فِي الْقَبْرِ 

লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর। রব্বি আস্আলুকা খাইরা মা ফী হাজিহিললায়লাতি ওয়া খাইরা মা বা‘দাহা, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররি মা ফী হাজিহিললায়লাতি ওয়া শাররি মা বা‘দাহা। রব্বি আউজুবিকা মিনাল কাসালি ওয়া মিনাল সুওইয়িল কিবরি আউইল কুফরি রব্বি আউজুবিকা মিন আজাবিন ফিন নার ওয়া আউজুবিকা ফিল কবর, “আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাহাঁর কোন শরীক নেই, তাহাঁরই জন্য সাম্রাজ্য, সকল প্রশংসা তাহাঁরই এবং তিনি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান। হে আমার রব! আমি আপনার নিকট এ রাতের কল্যাণ চাইছি এবং রাতের পরবর্তী কল্যাণও কামনা করছি। আর এ রাতের সকল প্রকার অমঙ্গল হইতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং তারপরে যা আছে তার অমঙ্গল হইতেও মুক্তি চাচ্ছি। হে আমার রব! আমি আপনার নিকট অলসতা, গর্ব-অহংকারের অনিষ্ট ও কুফরীর অনিষ্ট হইতে আশ্রয় চাইছি। হে রব! আমি আপনার নিকট জাহান্নামের শাস্তি ও কবরের শাস্তি হইতে আশ্রয় চাইছি”।

আর তিনি ভোরে উপনীত হয়েও এরুপ বলিতেনঃ

‏ أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ

আসবাহনা ওয়া আসবাহা মুলকু লিল্লাহ , আমরা ভোরে উপনীত হলাম এবং আল্লাহ্‌র বাদশাহী সকাল বেলাও আছে।

ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, শুবাহ হাদিসটি সালামাহ ইবনি কুহাইল হইতে ইবরাহীম ইবনি সুয়াইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, বার্ধক্যের অনিষ্ট হইতে এবং তিনি কুফরীর অনিষ্ট হইতে উল্লেখ করেননি।

আবু দাউদ ৫০৭১, সহিহ হাদিস

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ভোরে উপনীত হয়ে বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ

আল্লা-হুম্মা বিকা আসবাহ্‌না ওয়াবিকা আমসাইনা ওয়াবিকা নাহ্‌ইয়া, ওয়াবিকা নামূতু ওয়া ইলাইকান নুশূর, “হে আল্লাহ্‌! আপনার অনুগ্রহে আমরা ভোরে উপনীত হই, সন্ধ্যায় উপনীত হই এবং বাঁচি ও মরি। আর আপনার দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন”।

আর তিনি যখন সন্ধ্যায় উপনীত হইতেন তখন বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ

আল্লাহুম্মা বিকা আমসায়না ওয়া বিকা নাহইয়া ওয়া বিকা নামুতু ওয়া ইলাইকান নুশুর।’ “হে আল্লাহ্‌! আপনারই সাহায্যে আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হই এবং সকালে উপনীত হই, আপনার নামেই আমরা বাঁচি ও মরি এবং আপনারই দিকে আমাদের আমাদের প্রত্যাবর্তন”।

[আবু দাউদ ৫০৬৮, সহিহ হাদিস]

ইবনে মাজা, আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে উপরোক্ত দোয়াটি একটু ভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেন [ইবনে মাজা ৩৮৬৮]
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَى وَبِكَ نَمُوتُ وَإِذَا أَمْسَيْتُمْ فَقُولُوا
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ

আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলবেঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلاَئِكَتَكَ وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ

আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসবাহ্‌তু উশহিদুকা ওয়া উশহিদু হামালাতা ‘আরশিকা ওয়া মালা-ইকাতিকা ওয়া জামী‘আ খালক্বিকা, আন্নাকা আনতাল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা আনতা ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আব্দুকা ওয়া রাসূলুকা, “হে আল্লাহ্‌! আমি সকালে উপনীত হয়েছি এবং সাক্ষী রাখি আপনাকে ও আপনার আরশ বহনকারীদের, আপনার ফেরেশতাহাদেরকে, আপনার সমস্ত সৃষ্টিকে, নিশ্চয়ই আপনি একমাত্র আল্লাহ্‌, আপনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আপনার বান্দা ও রাসূল”

আল্লাহ তার এক-চতুর্থাংশ দেহ জাহান্নামের শাস্তি হইতে মুক্তি দিবেন। আর যে ব্যক্তি তা দুইবার বলবে, আল্লাহ তার শরীরের অর্ধেক জাহান্নামের আগুন হইতে মুক্তি দিবেন। আর যে ব্যক্তি তা তিনবার বলবে আল্লাহ তার শরীরের তিন-চতুর্থাংশ এবং চারবার বললে তার সমস্ত শরীর জাহান্নামের আগুন হইতে মুক্তি দিবেন। {৫০৬৭}

[আবু দাউদ ৫০৬৯, দুর্বল হাদিস]

সকাল হলে কী দুআ পড়বে।

শাদ্দাদ ইবনু আওস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেন, সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলোঃ

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ

আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্‌দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্‌ফির্‌লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্‌যুনূবা ইল্লা আনতা আ’উযুবিকা মিন শার্‌রি মা ছা’নাতু, “হে আল্লাহ! আপনিই আমার রব্ব। আপনি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন, আর আমি আপনারই গোলাম। আর আমি আমার সাধ্য মত আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর সুদৃঢ়ভাবে কায়িম আছি। আমি আমার প্রতি আপনার নিয়ামত স্বীকার করছি এবং কৃতগুনাহসমূহকে স্বীকার করছি। সুতরাং আমাকে মাফ করে দিন। কারণ আপনি ব্যতীত মাফ করার আর কেউ নেই। আমি আমার কৃতগুনাহের মন্দ ফলাফল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।”

যে লোক সন্ধ্যা বেলায় এ দুআ পড়বে, আর এ রাতেই মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। রাবী বলেন, অথবা তিনি বলেছেনঃ সে হইবে জান্নাতী। আর যে লোক সকালে এ দুআ পড়বে, আর এ দিনেই মারা যাবে সেও তেমনি জান্নাতী হইবে।

[সহীহ বুখারী ৬৩২৩]

ইমাম আবু দাউদ, বুরাইদা [রাঃআঃ] হইতে উপরোক্ত দোয়াটি একটু ভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেন [আবু দাউদ ৫০৭০]
للَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ بِنِعْمَتِكَ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ

সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সন্ধায় উপনীত হয়ে বলে,

رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا

রাদিতু বিল্লাহি রব্বা ওয়া বিল ইসলামি দিনা ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়ান, আল্লাহ তাআলা আমার রব, ইসলাম আমার দ্বীন এবং রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার রাসূল হওয়ায় আমি সর্বান্তকরণে পরিতৃপ্ত আছি,

তাকে পরিতৃপ্ত করা আল্লাহ তাআলার করণীয় হয়ে যায়।

[তিরমিজি ৩৩৮৯, দুর্বল হাদীস] [ইবনে মাজা ৩৮৭০, দুর্বল হাদিস]

ইমাম আবু দাউদ, আবু সাল্লাম [রাঃআঃ] হইতে উপরোক্ত দোয়াটি একটু ভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেন [আবু দাউদ ৫০৭২, দুর্বল হাদিস] رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً

ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সন্ধ্যায় ও সকালে উপনীত হয়ে নিম্নোক্ত দুআ পড়তেনঃ arbi

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي دِينِي وَدُنْيَاىَ وَأَهْلِي وَمَالِي اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي وَآمِنْ رَوْعَاتِي وَاحْفَظْنِي مِنْ بَيْنِ يَدَىَّ وَمِنْ خَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي وَمِنْ فَوْقِي وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِي

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসালুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফিদদুনইয়া ওয়াল আখিরাতি আল্লাহুম্মা ইন্নি আসালুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফিয় দিয়নিয় মিন বাইনি ইয়া দায়ইয়া ওয়া মিন খলফি ওয়া আন সিমালি ওয়া মিন ফাওকিয় ওয়া আউজু বিকা আন উগতালা মিন তাহনিয়, (হে আল্লাহ্‌! আমি তোমার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ্‌! আমি তোমার নিকট আমার দীন, আমার দুনিয়া, আমার পরিবার ও আমার সম্পদের স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ্‌! আমার লজ্জাস্থানকে গোপন রাখো, আমার ভয়কে শান্তিতে পরিণত করো এবং আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে ও আমার উপরের দিক থেকে আমাকে হেফাজত করো। আমি তোমার নিকট আমার নিচের দিক দিয়ে আমাকে ধ্বসিয়ে দেয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।) {৩২০৩}

[ইবনে মাজা ৩৮৭১, সহীহ হাদিস]

ইমাম আবু দাউদ, জুবাইর ইবনি আবু সুলাইমান, ইবনি জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ [আবু দাউদ ৫০৭৪, সহিহ হাদিস]
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي دِينِي وَدُنْيَاىَ وَأَهْلِي وَمَالِي اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَتِي ‏”‏ ‏”‏ عَوْرَاتِي وَآمِنْ رَوْعَاتِي اللَّهُمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَيْنِ يَدَىَّ وَمِنْ خَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي وَمِنْ فَوْقِي وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِ

বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ দুআ পড়েছেনঃ arbi

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ بِنِعْمَتِكَ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ

আল্লাহুম্মা আনতা রব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খলাক্তানি ওয়া  আনা আব্দুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাস তাতা’তু আউজু বিকা মিন সাররি মা সানা’তু আবু উ বি নি’মাতিকা ওয়া আবু উ বিজানবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফেরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা, (হে আল্লাহ্‌! তুমি আমার প্রভু, তুমি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নাই, তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো, আমি তোমার বান্দা, আমি তোমার প্রতিশ্রুতিতে যথাসাধ্য প্রতিষ্ঠিত থাকবো। আমি আমার কৃতকর্মের ক্ষতি থেকে তোমার আশ্রয় চাই, আমি তোমার নিয়ামতসমূহ স্বীকার করছি, আমি আমার অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমার অপরাধসমূহ মাফ করে দাও। কারণ তুমি ছাড়া গুনাহ মাফ করার আর কেউ নাই। )

রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি দিনে ও রাতে এ দুআ পড়লে এবং সেই দিনে বা রাতে মারা গেলে ইনশাআল্লাহ্‌ জান্নাতে দাখিল হইবে। {৩২০৪}

[ইবনে মাজা ৩৮৭২, সহীহ হাদিস]

আবদুল্লাহ ইবনি গান্নাম আল-বায়াদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উপনীত হয়ে বলেনঃ

اللَّهُمَّ مَا أَصْبَحَ بِي مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنْكَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ

আল্লা-হুম্মা মা আসবাহা বী-মিন নি‘মাতিন ফামিনকা ওয়াহ্‌দাকা লা শারীকা লাকা, ফালাকাল হাম্‌দু ওয়ালাকাশ্ শুক্‌রু, “হে আল্লাহ্‌! সকালে আমার প্রতি যে নেয়ামত পৌঁছেছে তা একমাত্র আপনার পক্ষ থেকেই পৌঁছলো, আপনি একক, আপনার কোন শরীক নেই, সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আপনারই প্রাপ্য-সে তার ঐ দিনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো।

আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে এরূপ বললো সে তার ঐ রাতের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলো। {৫০৭১}

[আবু দাউদ ৫০৭৩, দুর্বল হাদিস]

আল-হারিস ইবনি মুসলিম আত্‌-তামীমী [রাদি.] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে চুপে চুপে বলেন, যখন তুমি মাগরিবের সলাত হইতে অবসর হয়ে সাতবার বলবেঃ

اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ

[আল্লাহুম্মা আযিরনী মিনান্‌-নার] “হে আল্লাহ্‌! আমাকে জাহান্নাম হইতে রক্ষা করো। তুমি তা বলার পর ঐ রাতে মারা গেলে তোমার জন্য জাহান্নাম হইতে মুক্তি লেখা হইবে। আর যখন তুমি ফাজ্‌রের সলাত শেষ করিবে তখনও অনুরূপ বলবে, অতঃপর তুমি যদি ঐ দিন মারা যাও তাহলে তোমার জন্য জাহান্নাম হইতে মুক্তি লেখা হইবে।” মুহাম্মাদ ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবু সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে আল-হারিস [রাদি.] সূত্রে জানিয়েছেন, তিনি বলিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে তা চুপে চুপে বলিয়াছেন, যাতে আমি আমার ভাইদের নিকট তা বিশেষভাবে প্রচার করি। {৫০৭৭}

[আবু দাউদ ৫০৭৯, দুর্বল হাদিস]

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু বাক্‌র সিদ্দীক [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাকে এমন কিছু কালেমা শিখিয়ে দিন যা আমি সকাল-সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলবো। তিনি বলেনঃ তুমি বলো,

للَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ رَبَّ كُلِّ شَىْءٍ وَمَلِيكَهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ

আল্লা-হুম্মা ফা-ত্বিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, আলিমাল গাইবি ওয়াস সাহাদাতি রব্বা কুল্লি শাই’ইন ওয়া মালীকাহু,  আশহাদু আল-লা ইলা-হা ইল্লা আনতা। আ‘উযু বিকা মিন শাররি নাফ্‌সী ওয়া শাররিশ শাইত্বা-নি ওয়াশিরকিহী, “হে আল্লাহ্‌! আপনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞাতা, প্রত্যেক বস্তুর রব ও মালিক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমার মনের কু-প্রবৃত্তি, শয়তানের খারাবী ও তার শির্‌কী হইতে আপনার নিকট আশ্রয় চাইছি।”

তিনি বলেনঃ হে আবু বাক্‌র! তুমি এ কথাগুলো ভোরে, সন্ধ্যায় ও শোয়ার সময় বলবে।

[আবু দাউদ ৫০৬৭, সহিহ হাদিস]

ইমাম আবু দাউদ, আবু মালিক [রাদি.] এর বর্ণনায় দোয়াটি একটু ভিন্ন ভাবে বর্ণনা করেন। [আবু দাউদ ৫০৮৩, দুর্বল হাদিস]

اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ رَبُّ كُلِّ شَىْءٍ وَالْمَلاَئِكَةُ يَشْهَدُونَ أَنَّكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ فَإِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ أَنْفُسِنَا وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ وَشِرْكِهِ وَأَنْ نَقْتَرِفَ سُوءًا عَلَى أَنْفُسِنَا أَوْ نَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ

উসমান ইবনি আফ্‌ফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন ঃ প্রতিদিন ভোরে ও প্রতি রাতের সন্ধ্যায় যে কোন বান্দা এ দুয়াটি তিনবার পাঠ করিবে কোন কিছুই তার অনিষ্ট করিতে পারবে না ঃ

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ‏ 

“বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াযুর্‌রু মাআস্‌মিহি শাইয়ূন ফিল আরযি, ওয়ালা ফিস্‌ সামায়ি ওয়া হুয়াস্‌ সামীউল আলীম”। [অর্থ ঃ “আল্লাহ তাআলার নামে” যাঁর নামের বারাকাতে আকাশ ও মাটির কোন কিছুই কোন অনিষ্ট করিতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।”]

বান [রঃ]-এর শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। [উক্ত হাদীস রিওয়ায়াতকালে] এক লোক [অধঃস্তন বর্ণনাকারী] তার দিকে তাকাতে থাকলে তিনি তাকে বলেন, তুমি কি প্রত্যক্ষ করছো? শোন! আমি তোমার কাছে যে হাদীস রিওয়ায়াত করেছি তা অবিকল বর্ণনা করেছি। তবে আমি যেদিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছি ঐ দুয়াটি পাঠ করিনি এবং আল্লাহ তাআলা ভাগ্যের লিখন আমার উপর কার্যকর করিয়াছেন।

[তিরমিযী ৩৩৮৮ঃ হাসান সহীহ, ইবনে মাজা ৩৮৬৯]

আবু আয়্যাশ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উপনীত হয়ে বলেঃ

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর, “আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাহাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাহাঁরই, প্রশংসা তাহাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান”-

এটা তার জন্য ইসমাঈল [আঃ] বংশীয় একটি গোলাম আযাদ করার সমান হইবে, তার জন্য দশটি পুণ্য লেখা হইবে ও দশটি পাপ মোচন করা হইবে এবং তার দশটি মর্যাদা বুলন্দ করা হইবে এবং শয়তান হইতে নিরাপদ থাকিবে যতক্ষণ না সন্ধ্যা হয়। আর যদি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে তা বলে, তাহলে ভোর পর্যন্ত অনুরূপ ফাযীলাত পাবে। বর্ণনাকারী হাম্মাদের [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনায় রয়েছেঃ এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে স্বপ্নে দেখে প্রশ্ন করলো, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আবু আয়্যাশ [রাদি.] আপনার নামে এই এই বলেছে। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, আবু আয়্যাশ সত্যিই বলেছে। {৫০৭৫}

আবু দাউদ ৫০৭৭,সহিহ হাদিস

ইমাম ইবনে মাজা আবু আয়্যাশ আয যুরাকী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ [ইবনে মাজা ৩৮৬৭ সহীহ] سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ: عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ، وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ

(সুব্‌হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী ‘আদাদা খালক্বিহী, ওয়া রিদা নাফসিহী, ওয়া যিনাতা ‘আরশিহী, ওয়া মিদা-দা কালিমা-তিহী)। (৩ বার) আমি আল্লাহর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি- তাঁর সৃষ্ট বস্তুসমূহের সংখ্যার সমান, তাঁর নিজের সন্তোষের সমান, তাঁর ‘আরশের ওজনের সমান ও তাঁর বাণীসমূহ লেখার কালি পরিমাণ (অগণিত অসংখ্য)”।(৩ বার)

বনু হাশিমের আযাদকৃত গোলাম আবদুল হামীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তার মা নাবী [সাঃআঃ]-এর কন্যাদের কারো একজনের খেদমত করিতেন, মা তাহাকে বলিয়াছেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর কন্যা তার নিকট বর্ণনা করেছেন, নাবী [সাঃআঃ] তাহাদেরকে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে বলিতেনঃ তুমি সকালে উঠে বলবেঃ arbi

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ لاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ مَا شَاءَ اللَّهُ كَانَ وَمَا لَمْ يَشَأْ لَمْ يَكُنْ أَعْلَمُ أَنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَىْءٍ عِلْمًا فَإِنَّهُ مَنْ قَالَهُنَّ حِينَ يُصْبِحُ حُفِظَ حَتَّى يُمْسِيَ وَمَنْ قَالَهُنَّ حِينَ يُمْسِي حُفِظَ حَتَّى يُصْبِحَ

“আল্লাহ্‌র পবিত্রতা তাহাঁর প্রশংসার সঙ্গে; কারো কোন শক্তি নেই আল্লাহ্‌র শক্তি ব্যতিত; আল্লাহ যা চান তাই হয়, যা চান না তা হয় না। আমি জানি, আল্লাহ সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আর আল্লাহ্‌ সকল বস্তুকে জ্ঞানের আওতায় ঘিরে রেখেছেন।”

অতঃপর যে ব্যক্তি সকালে উঠে তা বলবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপদ থাকিবে। আর যে সন্ধ্যায় বলবে সে ভোর উপনীত হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ থাকিবে। {৫০৭৩}

আবু দাউদ ৫০৭৫, দুর্বল হাদিস

আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে নাবী [সাঃআঃ] বলিতেন ঃ

“আমরা রাতে উপনীত হলাম এবং আল্লাহ তাআলার বিশ্বজাহানও রাতে উপনীত হল। সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাহাঁর কোন শারীক নেই”।

বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা হয় তিনি আরো বলেছেনঃ

 أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ أُرَاهُ قَالَ فِيهَا لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ النَّارِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল আজরি ওয়াল কাসালি, ওয়াল হারামি, ওয়াল ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজাবিল কাবরি, ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া, ওয়াল মামাতি

“রাজত্ব তাহাঁরই এবং সকল প্রশংসাও তাহাঁরই। সর্ববিষয়ে তিনি সর্বশক্তিমান। [হে আল্লাহ] তোমার নিকট আমি এ রাতের মাঝে নিহিত মঙ্গল এবং এ রাতের পরে নিহিত মঙ্গল কামনা করি। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাইছি এ রাতের অমঙ্গল এবং এ রাতের পরে সমস্ত অমঙ্গল হইতে। তোমার কাছে আমি আশ্রয় চাই অলসতা ও বার্ধক্যের অনিষ্ট হইতে। আমি তোমার কাছে আরো আশ্রয় চাই [জাহান্নামের] আগুনের আযাব ও কবরের শাস্তি হইতে।”

তিনি ভোরে উপনীত হয়েও একই দুয়া করিতেন ঃ

أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ

আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুল্কু লিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি

“আমরা ভোরে উপনীত হলাম এবং আল্লাহ তাআলার বিশ্বজাহানও ভোরে উপনীত হল। সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য……।

তিরমিজি ৩৩৯০, সহীহ হাদীস

আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদেরকে শিক্ষা দিয়ে বলিতেন ঃ তোমাদের কেউ যখন ভোরে উপনীত হয় তখন সে যেন বলে,

اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ

(আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা নাহইয়া ওয়া বিকা নামুতু ওয়া ইলাইকাল মাসির)

“হে আল্লাহ! তোমার হুকুমে আমরা ভোরে উপনীত হই এবং তোমার নির্দেশেই সন্ধ্যায় উপনীত হই। তোমার নির্দেশেই আমরা জীবন ধারণ করি এবং তোমার নির্দেশেই মারা যাই। তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল।”

আর যখন সন্ধ্যায় উপনীত হয় তখন যেন বলে ঃ

اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ

(আল্লাহুম্মা বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা নাহইয়া ওয়া বিকা নামুতু ওয়া ইলাইহিন নুশুর)

“হে আল্লাহ! আমরা তোমার হুকুমেই সন্ধ্যায় উপনীত হই, তোমার নির্দেশেই সকালে উপনীত হই, তোমার নির্দেশেই জীবন ধারণ করি এবং তোমার নির্দেশেই মারা যাই। আবার তোমার কাছেই পুনরায় জীবিত হয়ে ফিরে যেতে হইবে”।

তিরমিজি ৩৩৯১, সহীহ হাদীস

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ ইবনে মাজা ৩৮৬৮, সহীহ
اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَى وَبِكَ نَمُوتُ وَإِذَا أَمْسَيْتُمْ فَقُولُوا
اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ نَحْيَى وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ 

আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু বকর [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কিছুর হুকুম দিন যা আমি সকালে ও বিকেলে উপনীত হয়ে বলিতে পারি। তিনি বললেনঃ তুমি বল,

اللَّهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ

(আল্লাহহুম্মা আলিমাল গাইবি ওয়াসসাহাদাতি ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি রব্বা কুল্লি সাইয়িন ওয়া মালিকাহু আসহাদু আন্না লা ইলাহা ইল্লা আন্তা আউজু বিকা ইল্লা আন্তা আউজু বিকা মিন সাররি নাফসি ওয়া মিন সাররি সাইতানি ওয়া সিরকিহি) “হে আল্লাহ্‌! অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাত, আকাশ ও যামীনের সৃষ্টিকর্তা, প্রতিটি জিনিসের প্রতিপালক ও মালিক, আমি সাক্ষ্য দেই যে, তুমি ছাড়া কোন মাবূদ নেই। আমি আমার শরীরের ক্ষতি হইতে এবং শাইতানের ক্ষতি ও শির্‌কি কার্যকালাপ হইতে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি।”

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি এই দুয়া সকালে, বিকেলে ও শয্যা গ্রহণকালে পাঠ করিবে।

[তিরমিজি ৩৩৯২, সহীহ হাদীস]

উসমান বিন আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যে কোন বান্দা প্রতিদিন সকালে ও প্রতি রাতে সন্ধ্যায় তিনবার করে এ দুআটি পড়লে কোন কিছুই তাহার ক্ষতি করিতে পারবে না ঃ

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَىْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।, আল্লাহ্‌র নামে যাঁর নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোন কিছুই কোন ক্ষতি করিতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা সর্বোজ্ঞ।

অধস্তন রাবী বলেন, আবান [রাদি.]-এর দেহের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। [উক্ত হাদিস বর্ণনাকালে] এক ব্যক্তি [অধস্তন রাবী] তাহার দিকে তাকাতে থাকলে তিনি তাহাকে বলেন, তুমি কি দেখছো? শোন! আমি তোমার নিকট যে হাদিস বর্ণনা করছি তা হুবহু বর্ণনা করেছি। তবে যেদিন আমি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছি সেদিন ঐ দুআ পড়িনি এবং আল্লাহ্‌ তায়ালা তাকদীরের লিখন আমার উপর কার্যকর করিয়াছেন। {৩২০১}

[ইবনে মাজা ৩৮৬৯ , সহীহ হাদিস]

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে একশো বার বলবেঃ

سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ 

“সুবাহানাল্লাহিল আযীম ওয়া বিহামদিহি” এবং সন্ধ্যায় উপনীত হয়েও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিকুলের কেউই তার মত মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হইবে না।

[আবু দাউদ ৫০৯১, সহিহ হাদিস]

আবদুর রহমান ইবনি আবু বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আমার পিতাহাকে বলিলাম, হে আব্বাজান! আমি আপনাকে প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় তিনবার বলিতে শুনিঃ

 اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ

আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাদানি, আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি সাম-ই, আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাসারি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা। “হে আল্লাহ! আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই।”

তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ বাক্যগুলো দ্বারা দুআ করিতে শুনিয়াছি। সেজন্য আমিও তাহাঁর নিয়ম অনুসরণ করিতে ভালোবাসি। আব্বাস [রাদি.]-এর বর্ণনায় রয়েছে তিনি বলিলেনঃ

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কুরফরি ওয়াল ফাকরি আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কবর লা ইলাহা ইল্লা আন্তা, “হে আল্লাহ! আপনার নিকট কুফরী ও দরিদ্রতা হইতে আশ্রয় চাইছি। হে আল্লাহ! আমি কবরের আযাব হইতে আপনার নিকট আশ্রয় চাইছি, আপনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই।”

তিনি এ দুআ সকালে তিনবার ও সন্ধ্যায় তিনবার করে বলিতেন। তাই আমিও তাহাঁর নিয়ম অনুসরণ করিতে ভালোবাসি। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির দুআ হলো ঃ

اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ

আল্লা-হুম্মা রহ্‌মাতাকা আরজু ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা ‘আইন, ওয়া আসলিহ্ লী শা’নি কুল্লাহু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, “হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমত প্রার্থী। কাজেই আমাকে এক পলকের জন্যও আমার নিজের নিকট সোপর্দ করবেন না এবং আমার সবকিছু সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করে দিন। আর আপনিই একমাত্র ইলাহ।”

[আবু দাউদ ৫০৯০]

يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغيثُ أَصْلِحْ لِي شَأْنِيَ كُلَّهُ وَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ

(ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যূমু বিরহ্‌মাতিকা আস্তাগীসু, আসলিহ্‌ লী শা’নী কুল্লাহু, ওয়ালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা ‘আইন)। ৮৮-(১৪) “হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী! আমি আপনার রহমতের অসীলায় আপনার কাছে উদ্ধার কামনা করি, আপনি আমার সার্বিক অবস্থা সংশোধন করে দিন, আর আমাকে আমার নিজের কাছে নিমেষের জন্যও সোপর্দ করবেন না।”

হাকেম ১/৫৪৫,


Posted

in

by

Comments

One response to “সকাল সন্ধ্যার দোয়া ও জিকির বাংলা আরবি সহ”

Leave a Reply