ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া এবং জিকির সমূহ

ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া এবং জিকির সমূহ

ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া এবং জিকির সমূহ << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া

কোন ব্যক্তি তাহার ঘর থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে
ঘরে প্রবেশের সময় যিকির

কোন ব্যক্তি তাহার ঘর থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে

উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যখন তাহাঁর ঘর থেকে বের হইতেন তখন বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَىَّ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা আন আদিল্লা আও আজিল্লা আও আজলিমা আও উজলামা আও আজহালা আও ইউজহালা আলাইয়া, ( “হে আল্লাহ্‌! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে, পদঙ্খলন ঘটা থেকে, অত্যাচার করা থেকে, অত্যাচারিত হওয়া থেকে, অজ্ঞতাসুলভ আচরণ করা থেকে বা আমার প্রতি কারো অজ্ঞতাসুলভ আচরণ থেকে।)

[ইবনে মাজাহ ৩৮৮৪ সহীহ]

আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঘর হইতে কেউ বাইরে রাওয়ানা হওয়াকালে যদি বলে,

 بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّ

বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়া লা কুওঅয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, “আল্লাহ তাআলার নামে, আল্লাহ তাআলার উপরই আমি নির্ভর করলাম, আল্লাহতা আলার সাহায্য ব্যতীত বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারো নেই”,

তবে তাকে বলা হয় [আল্লাহ তাআলাই] তোমার জন্য যথেষ্ট, [অনিষ্ট হইতে] তুমি হিফাযাত অবলম্বন করেছ। আর তার হইতে শাইতান দূরে সরে যায়।

[তিরমিজি ৩৪২৬, সহীহ হাদীস]

আবু হুরাইরাহ [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যখন তাহাঁর ঘর থেকে বের হইতেন তখন বলিতেনঃ

 بِسْمِ اللَّهِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ التُّكْلاَنُ عَلَى اللَّهِ

বিসমিল্লাহি লা হাওলা ওয়া লা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিত তুকলানু আলাল্লাহি, আল্লাহ্‌র নামে, আল্লাহ্‌ ছাড়া ক্ষতি রোধ করা বা কল্যাণ হাসিল করার শক্তি কারো নেই। ভরসা আল্লাহ্‌র উপর”। {৩২১৭}

[ইবনে মাজাহ ৩৮৮৫, দুর্বল হাদিস]

উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যখন নাবী [সাঃআঃ] ঘর হইতে বাইরে রাওয়ানা হইতেন তখন বলিতেনঃ

بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ نَزِلَّ أَوْ نَضِلَّ أَوْ نَظْلِمَ أَوْ نُظْلَمَ أَوْ نَجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَيْنَا

বিস্মিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্না তাউজু বিকা মিন আন নাজিল্লা আও নাদিল্লা আও নাজলিমা আও নুজলামা আও নাজহালা আও ইউজহালা আলাইনা

“আল্লাহ তাআলার নামে, আল্লাহ তাআলার উপর আমি নির্ভর করলাম। হে আল্লাহ ! আমরা পদস্থলন হইতে কিংবা পথভ্রষ্ঠতা হইতে কিংবা যুলম করা হইতে কিংবা অত্যাচারিত হওয়া হইতে কিংবা অজ্ঞতাবশত কারো প্রতি মন্দ আচরণ হইতে বা আমাদের প্রতি কারো অজ্ঞতা প্রসূত আচরণ হইতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই”।

[তিরমিজি ৩৪২৭, সহীহ হাদীস]

আবদুল্লাহ বিন সারজিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে রওয়ানার প্রাক্কালে বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمُنْقَلَبِ وَالْحَوْرِ بَعْدَ الْكَوْرِ وَدَعْوَةِ الْمَظْلُومِ وَسُوءِ الْمَنْظَرِ فِي الأَهْلِ وَالْمَالِ ‏

আলাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন ওয়া’সাইস সাফারি ওয়া কাল-বারিল মুনকলাবি ওয়াল হাওরি বা’দাল কাওরি ওয়া দা’ওয়াতিল মাজলুমি ওয়া সুয়েল মাঞ্জারি ফিল আহলে ওয়াল মালা, (হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট সফরের ব্যর্থতা, প্রাচুর্যের পরে রিক্ততা, নির্যাতিতের বদদোয়া এবং পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদের প্রতি কুদৃষ্টি থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি )।

আবু মুআবিয়ার বর্ণনায় আরো আছে ঃ তিনি ফিরে এসেও অনূরূপ বলিতেন।

[ইবনে মাজাহ ৩৮৮৮, সহীহ]

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সফরে বের হইতেন, সে সময় প্রথমে সওয়ারীতে আরোহণ করিতেন, তারপর নিজের আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করিতেন। অধঃস্তন বর্ণনাকারী শুবাহ আঙ্গুল উঁচু করে ইশারা করে দেখিয়েছেন। তারপর রাসুলাল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ وَالْخَلِيفَةُ فِي الأَهْلِ اللَّهُمَّ اصْحَبْنَا بِنُصْحِكَ وَاقْلِبْنَا بِذِمَّةٍ ‏.‏ اللَّهُمَّ ازْوِ لَنَا الأَرْضَ وَهَوِّنْ عَلَيْنَا السَّفَرَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمُنْقَلَبِ

আল্লাহুম্মা আ্নতাস সহিবু ফিস সাফারি, ওয়াল খলীফাতু ফিল আহলি। আল্লাহুম্মাশ হাবনা বি নুশহিকা ওয়াকলিবনা বিজিম্মাতি। আল্লাহুম্মাজ ওয়া লানাল আরদা ওয়া হাইন আলাইনাস সাফরা। আল্লাহুম্মা ইন্নী আয়ু’যু বিকা মিন ওয়াছা-ইসসাফারি ওয়া কিতাবাতিল মানযরি ওয়াসূইলমুনকলাবি

হে প্রভু! সফরে তুমি আমার সঙ্গী এবং আমার [অনুপস্হিতিতে] আমার পরিবার –পরিজনের [আমার] প্রতিনিধি। হে আল্লাহ ! মঙ্গল সহকারে তুমি আমাদের সঙ্গী হও এবং তোমার জামানতে আমাদেরকে ফিরাও। হে আল্লাহ! মাটিকে [সফরের দীর্ঘ পথ] আমাদের জন্য সংকুচিত করে দাও এবং সফর আমাদের জন্য সহজ কর। হে আল্লাহ ! তোমার নিকট আমি সফরের ক্লান্তি হইতে এবং ফিরে আসার দুশ্চিন্তা ও ব্যর্থতা হইতে আশ্রয় প্রার্থনা করি “।

[তিরমিজি ৩৪৩৮, সহীহ]

আবদুল্লাহ ইবনিস সারজিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সফরে রাওয়ানা হইতেন , সে সময় বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ وَالْخَلِيفَةُ فِي الأَهْلِ اللَّهُمَّ اصْحَبْنَا فِي سَفَرِنَا وَاخْلُفْنَا فِي أَهْلِنَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمُنْقَلَبِ وَمِنَ الْحَوْرِ بَعْدَ الْكَوْنِ وَمِنْ دَعْوَةِ الْمَظْلُومِ وَمِنْ سُوءِ الْمَنْظَرِ فِي الأَهْلِ وَالْمَالِ

আলাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন ওয়া’সাইস সাফারি ওয়া কালাবারতল মুনকলাবি ওয়া মিনাল হাওরি বা’দাল কাওনি ওয়া মিন দা’ওয়াতিল মাজলুমি ওয়া মিন সুয়েল মাঞ্জারি ফিল আহলে ওয়াল মালা

“ হে আল্লাহ ! তুমি সফরে আমার সঙ্গী এবং আমার [অনুপস্হিতিতে] আমার পরিবার-পরিজনের তুমিই [আমার] স্হলাভিষিক্ত। হে আল্লাহ ! আমাদের সফরে তুমি আমাদের সাথী হও এবং আমাদের পরিবার –পরিজনের জন্য আমাদের প্রতিনিধি হও। হে আল্লাহ ! তোমার কাছে আমরা সফরের ক্লান্তি , ফিরে আসার ব্যর্থতা , প্রাচুর্যের পরে রিক্ততা , নির্যাতিতের অভিশাপ এবং পরিবার –পরিজন ও মাল-সম্পত্তির প্রতি কু- দৃষ্টি হইতে তোমার নিকট আশ্রয় কামনা করি “।

[তিরমিজি ৩৪৩৯, সহীহ]

ঘরে প্রবেশের সময় যিকির

বলবে,

بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا، وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا

(বিসমিল্লাহি ওয়ালাজনা, ওয়াবিস্‌মিল্লাহি খারাজনা, ওয়া ‘আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা) “আল্লাহর নামে আমরা প্রবেশ করলাম, আল্লাহর নামেই আমরা বের হলাম এবং আমাদের রব আল্লাহর ওপরই আমরা ভরসা করলাম”।

অতঃপর ঘরের লোকজনকে সালাম দিবে।

আবূ দাউদ ৪/৩২৫, ৫০৯৬। আর আল্লামা ইবন বায রহ. তার তুহফাতুল আখইয়ার গ্রন্থে পৃ. ২৮ এটার সনদকে হাসান বলেছেন। তাছাড়া সহীহ হাদীসে এসেছে, “যখন তোমাদের কেউ ঘরে প্রবেশ করে, আর প্রবেশের সময় ও খাবারের সময় আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন শয়তান (নিজ ব্যক্তিদের) বলে, তোমাদের কোনো বাসস্থান নেই, তোমাদের রাতের কোনো খাবার নেই।” মুসলিম, নং ২০১৮


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply