দাজ্জালের পরিচিতি , তার জন্য মাদীনাহ্ [প্রবেশ] হারাম
দাজ্জালের পরিচিতি , তার জন্য মাদীনাহ্ [প্রবেশ] হারাম >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২১. অধ্যায়ঃ দাজ্জালের পরিচিতি , তার জন্য মাদীনাহ্ [প্রবেশ] হারাম এবং কোন মুমিনকে হত্যা ও জীবিত করণ
৭২৬৫. আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাযি:] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন আমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে এক লম্বা বর্ণনা দিলেন। দাজ্জালের বিষয়ে তিনি এ-ও বলিলেন যে, দাজ্জালের আবির্ভাব হইবে, কিন্তু মাদীনার পথে ঘাটে প্রবেশ করা তার জন্য নিষিদ্ধ ও হারাম হইবে। অতঃপর মাদীনার নিকটবর্তী কোন এক রাস্তায় পৌছলে ঐ দিনই মাদীনাহ্ হইতে এক লোক তার নিকট যাবে, যে ব্যক্তি সে সময়কার শ্রেষ্ঠ মানব হইবে। সে এসে তাকে বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুই সে দাজ্জাল, যার কথা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে শুনিয়েছিলেন। দাজ্জাল বলবে, হে লোক সকল! যদি আমি এ লোককে হত্যা করার পর পুনরায় জীবিত করি তবে তোমাদের মনে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকিবে কি? লোকেরা বলবে, না। অতঃপর সে তাকে হত্যা করিবে; তারপর জীবন দান করিবে; জীবন দান করার পর সে লোক বলবে, আল্লাহর শপথ! এখন তো তোমার ব্যাপারে আমার জ্ঞান আরো বেড়ে গেছে, যা ইতোপূর্বে কখনো ছিল না। দাজ্জাল আবারো তাকে হত্যা করিতে মনস্থ হইবে। কিন্তু আর হত্যা করিতে সক্ষম হইবে না।
আবু ইসহাক বলেনঃ কথিত আছে যে, উক্ত ব্যক্তি [যাকে দাজ্জাল হত্যা করিবে] খিযির [আঃ]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭১০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৭১৬২]
৭২৬৬. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭১০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৭১৬৩]
৭২৬৭. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাযি:] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের পর কোন এক মুসলিম লোক তার দিকে এগিয়ে যাবে। তারপর পথে অস্ত্রধারী দাজ্জাল বাহিনীর সঙ্গে তার দেখা হইবে। তারা তাকে প্রশ্ন করিবে, কোথায় যাবে? সে বলবে, আবির্ভূত দাজ্জালের কাছে যাব। তারা তাকে আবারো প্রশ্ন করিবে, তুমি কি আমাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান আননি? সে বলবে, আমাদের প্রতিপালক গুপ্ত নন। দাজ্জালের লোকেরা তাকে লক্ষ্য করে বলবে, তোমরা তাকে হত্যা করে দাও। তখন তারা একে অপরকে বলবে, আমাদের রব কাউকে তার সামনে নেয়া ব্যতিরেকে হত্যা করিতে কি তোমাদের বারণ করেননি? তারপর তারা তাকে নিয়ে দাজ্জালের কাছে যাবে। দাজ্জালকে দেখামাত্রই সে বলবে, হে লোক সকল! এ-তো সেই দাজ্জাল, যার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে বর্ণনা দিয়েছেন। তারপর দাজ্জাল তার লোকদেরকে আগন্তুক লোকের মাথা ছিন্ন-ভিন্ন করার নির্দেশ দিয়ে বলবে, তাকে ধর এবং তার মাথা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দাও। তারপর তার পেট ও পিঠে আঘাত করা হইবে। আবার দাজ্জাল তাকে প্রশ্ন করিবে, তুমি কি আমার প্রতি ঈমান আনয়ন করিবে না। সে বলবে, তুমি তো মাসীহ্ দাজ্জাল। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর দাজ্জাল তার ব্যাপারে নির্দেশ দিবে। দাজ্জালের হুকুমে মাথা হইতে পা পর্যন্ত তাকে করাতে চিরে দু টুকরো করে দেয়া হইবে। তারপর দাজ্জাল উভয় টুকরার মধ্যস্থলে দন্ডায়মান হয়ে তাকে সম্বোধন করে বলবে, উঠো। সে সোজা দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর আবারো তাকে জিজ্ঞেস করা হইবে, তুমি কি আমার প্রতি ঈমান আনবে না? অত:পর আগন্তুক ব্যক্তি বলবে, তোমার সম্পর্কে কেবল আমার মাঝে সুস্পষ্ট ধারণা বেড়েই চলবে। তারপর আগন্তুক লোক বলবে, হে লোক সকল! আমার পর দাজ্জাল আর কারো সংঙ্গে এমন আচরণ করিতে সক্ষম হইবে না। এরপর যবাহ্ করার জন্য দাজ্জাল তাকে পাকড়াও করিবে। কিন্তু তার গলা ও ঘাড় তামায় রূপান্তর করা হইবে। ফলে দাজ্জাল তাকে যবাহ্ করিতে সক্ষম হইবে না। উপায়ান্তর না দেখে দাজ্জাল তখন তার হাত-পা ধরে তাকে নিক্ষেপ করিবে। লোকেরা মনে করিবে, দাজ্জাল তাকে আগুনে নিক্ষেপ করেছে। বস্তুত: সে জান্নাতে নিক্ষিপ্ত হইবে। অত:পর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে এ লোকই হইবে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় শাহাদাতের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭১১০, ইসলামিক সেন্টার- ৭১৬৪]
Leave a Reply