দাজ্জালের আবির্ভাবের সময় রোমীয়দের অধিক পরিমাণে যুদ্ধে অগ্রগামী হওয়া
দাজ্জালের আবির্ভাবের সময় রোমীয়দের অধিক পরিমাণে যুদ্ধে অগ্রগামী হওয়া >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১১. অধ্যায়ঃ দাজ্জালের আবির্ভাবের সময় রোমীয়দের অধিক পরিমাণে যুদ্ধে অগ্রগামী হওয়া
৭১৭৩. ইউসায়র ইবনি জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার কূফা নগরীতে লাল ঝঞ্ঝা বিশিষ্ট বায়ু প্রবাহিত হলো। এমন সময় জনৈক লোক কূফায় এসে বলিল যে, হে আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ! সতর্ক হও, কিয়ামত সংঘটিত হইবে না, যতক্ষণ না উত্তরাধিকার সম্পদ অবণ্টিত থাকিবে এবং যতক্ষণ না মানুষেরা গনীমাতের বিষয়ে আনন্দ প্রকাশ না করিবে। তারপর তিনি নিজ হাত দ্বারা সিরিয়ার প্রতি ইশারা করে বলিলেন, আল্লাহর শত্রুরা একত্রিত হইবে মুসলিমদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য এবং মুসলিমগণও তাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য একত্রিত হইবে। এ কথা শ্রবণে আমি বললাম, আল্লাহর শত্রু বলে আপনাদের উদ্দেশ্য হলো রোমীয় [খ্রীষ্টান] সম্প্রদায়। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ! এবং তখন ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হইবে। তখন মুসলিম জাতি একটি দল অগ্রে প্রেরণ করিবে, তারা মৃত্যুর জন্য সম্মুখে এগিয়ে যাবে। বিজয় অর্জন করা ছাড়া তারা প্রত্যাবর্তন করিবে না। এরপর পরস্পর তাদের মধ্যে যুদ্ধ হইবে। যুদ্ধ করিতে করিতে রাত্রি অতিবাহিত হয়ে যাবে। তারপর দু পক্ষের সৈন্য জয়লাভ করা ছাড়াই ফিরে চলে যাবে। যুদ্ধের জন্য মুসলিমদের যে দলটি এগিয়ে গিয়েছিল তারা প্রত্যেকেই মৃতুবরণ করিবে। অতঃপর পরবর্তী দিন মুসলিমগণ মৃতুর জন্য অপর একটি দল সামনে পাঠাবে। তারা সবাই মৃতুবরণ করিবে। অতঃপর পরবর্তী দিন মুসলিমগণ মৃতুর জন্য অপর একটি দল সামনে পাঠাবে। তারা বিজয়ী না হয়ে ফিরবে না। এদিনও পরস্পরের মধ্যে মারাত্মক যুদ্ধ হইবে। পরিশেষে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। উভয় বাহিনী বিজয়লাভ করা ছড়াই স্বীয় শিবিরে প্রত্যাবর্তন করিবে। যে দলটি সামনে ছিল তারা সরে যাবে। অতঃপর তৃতীয় দিন আবার মুসলিমগণ মৃতু বা বিজয়ের উদ্দেশে অপর একটি বাহিনী পাঠাবে। এ যুদ্ধ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকিবে। পরিশেষে বিজয়লাভ করা ছাড়াই উভয় বাহিনী প্রত্যাবর্তন করিবে। তবে মুসলিম বাহীনীর সামনের সেনাদলটি শাহীদ হয়ে যাবে। তারপর যুদ্ধের চতুর্থ দিনে অবশিষ্ট মুসলিমগণ সকলেই যুদ্ধের জন্য সামনে এগিয়ে যাবে। সে দিন কাফিরদের উপর আল্লাহ তআলা অকল্যাণ চক্র চাপিয়ে দিবেন। তারপর এমন যুদ্ধ হইবে যা জীবনে কেউ দেখবে না অথবা জীবনে কেউ দেখেনি। পরিশেষে তাদের শরীরের উপর পাখী উড়তে থাকিবে। পাখী তাদেরকে অতিক্রম করিবে না; এমতাবস্থায় তা মাটিতে পড়ে নিহত হইবে। একশ মানুষ বিশিষ্ট গোত্রে, মাত্র এক লোক বেঁচে থাকিবে। এমন সময় কেমন করে গনীমাতের সম্পদ নিয়ে লোকেরা আনন্দোৎসব করিবে এবং কেমন করে উত্তরাধিকার সম্পদ ভাগ করা হইবে। এমতাবস্থায় মুসলিমগণ আরেকটি ভয়ানক বিপদের খবর শুনতে পাবে এবং এ মর্মে একটি শব্দ তাদের কাছে পৌঁছবে যে, দাজ্জাল তাদের পেছনে তাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ সংবাদ শুনতেই তারা হাতের সমস্ত কিছু ফেলে দিয়ে রওনা হয়ে যাবে এবং দশজন অশ্বারোহী ব্যক্তিকে সংবাদ সংগ্রাহক দল হিসেবে প্রেরণ করিবে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, দাজ্জালের খবর সংগ্রাহক দলের প্রতিটি লোকের নাম, তাদের বাপ-দাদার এবং তাদের ঘোড়ার রং সম্পর্কেও জ্ঞাত আছি। এ পৃথিবীর সর্বোত্তম অশ্বারোহী দল সেদিন তারাই হইবে।
ইবনি আবু শাইবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর রিওয়ায়াতের মধ্যে [আরবী আছে]-এর স্থলে [আরবী আছে] উল্লেখ করিয়াছেন। অর্থাৎ জাবির-এর ছেলের নাম ইউসায়র-এর স্থলে উসায়র বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৭৪]
৭১৭৪. ইউসায়র ইবনি জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন লাল রক্তিম ঝঞ্ঝা বিশিষ্ট বায়ু প্রবাহিত হলো। তারপর তিনি পূর্বের মতো অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু ইবনি উলাইয়্যার হাদীসটি পরিপূর্ণ এবং প্রশান্তিদায়ক।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৭৫]
৭১৭৫. উসায়র ইবনি জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমি আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর গৃহে ছিলাম। গৃহটি তখন লোকে লোকারণ্য ছিল। ইবনি উসায়র-এর ন্যায় তিনিও বলিলেন, তখন কূফা নগরীতে লাল রক্তিম ঝঞ্ঝা বিশিষ্ট বায়ু প্রবাহিত হলো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৭৬]
Leave a Reply