সমুদ্রের তরঙ্গের মতো যে ফিতনা তরঙ্গায়িত হইবে

সমুদ্রের তরঙ্গের মতো যে ফিতনা তরঙ্গায়িত হইবে

সমুদ্রের তরঙ্গের মতো যে ফিতনা তরঙ্গায়িত হইবে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৭. অধ্যায়ঃ সমুদ্রের তরঙ্গের মতো যে ফিতনা তরঙ্গায়িত হইবে

৭১৬০. হুযাইফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা উমর [রাদি.]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তিনি বলিলেন, ফিতনা বিষয়ক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বাণী তোমাদের কার মনে আছে? আমি বললাম, আমার মনে আছে। এ কথা শুনে তিনি বলিলেন, ব্যস! তুমি তো খুব সাহসী। তিনি কি বলেছেন, বলো? তারপর আমি বললাম, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, স্বীয় নাফ্স, সন্তান-সন্ততি এবং প্রতিবেশীর ব্যাপারে মানুষ যে ফিতনায় জড়িত হয়, তার সিয়াম, নামাজ, সদাকাহ্ এবং সৎকার্যের আদেশ ও অসৎকার্যে বাধা দানই হলো এগুলোর জন্য কাফ্ফারাহ্। এ কথা শুনে উমর [রাদি.] বলিলেন, আমি তো এ ফিতনার ব্যাপারে শুনতে চাইনি। বরং সমুদ্রের তরঙ্গমালার মতো যে ফিতনা নিপতিত হইতে থাকিবে, আমি তো শুধু তাই শুনতে চেয়েছি। তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! এ ফিতনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক, এতে আপনার উদ্দেশ্য কি? এ ফিতনা ও আপনার মধ্যে এক রুদ্ধদ্বার অন্তরায় রয়েছে। তিনি প্রশ্ন করিলেন, এ দ্বার কি ভাঙ্গা হইবে, না খোলা হইবে? আমি বললাম, না, ভাঙ্গা হইবে না, বরং খোলা হইবে। এ কথা শুনে উমর [রাদি.] বলিলেন, তবে তো তা আর কক্ষনো বন্ধ হইবে না। বর্ণনাকারী শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমরা হুযাইফাহ্ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করলাম, কে সে দ্বার, উমর [রাদি.] তা কি জানতেন? উত্তরে তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আগামী দিনের পর রাত্র, এ কথাটি যেমন জানতেন, ঠিক তদ্রূপ ঐ বিষয়টিও তিনি জানতেন।

হুযাইফাহ্ [রাদি.] বলনে, আমি তাঁকে ভুল হাদীস শুনাইনি। শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, কে সে দরজা, এ বিষয়ে হুযাইফাহ্ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিতে আমরা ভয় পাচ্ছিলাম। তাই আমরা মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বললাম, আপনি তাঁকে প্রশ্ন করুন।

তিনি হুযাইফাহ্ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিলেন। হুযাইফাহ্ [রাদি.] বলিলেন, এ দরজা হচ্ছে স্বয়ং উমর [রাদি.]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৬১]

৭১৬১. আমাশ [রাদি.] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

আবু মুআবিয়ার অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ঈসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেছেন, আমি হুযাইফাহ্ [রাদি.]-কে এ কথা বলিতে শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৬২]

৭১৬২. হুযাইফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উমর [রাদি.] বলিলেন, ফিতনা সম্পর্কীয় হাদীস আমাকে কে শুনাতে পারবে? তারপর সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] পূর্ববর্তীদের হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৬৩]

৭১৬৩. মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, জুনদুব [রাদি.] বলিলেন, আমি জারাআয় [কূফার সন্নিকটবর্তী একটি স্থানে] আসলাম। দেখলাম এক লোক বসে আছে। আমি বললাম, আজ তো এখানে কয়েকটি খুন হইবে। এ কথা শুনে লোকটি বলিল, কক্ষনো না। আল্লাহর শপথ! খুন হইবে না। আমি বললাম, আল্লাহর শপথ! অবশ্যই খুন হইবে। সে আবারো বলিল, আল্লাহর শপথ! খুন কক্ষনো হইবে না। এ ব্যাপারে আমি একটি হাদীস শুনেছি, যা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন। আমি বললাম, আজ থেকে তুমি আমার একজন অপ্রীতিকর সঙ্গী। কারণ তুমি শুনতে পাচ্ছ যে, আমি তোমার বিরুদ্ধাচারণ করছি। অথচ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে হাদীস শুনা সত্ত্বেও তুমি আমাকে নিষেধ করছ না। তারপর আমি বললাম, এ অসন্তুষ্টির কি কারণ? তাই আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম এবং তাকে প্রশ্ন করলাম পরে জানতে পেলাম, তিনি হলেন হুযাইফাহ্ [রাদি.]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৬৪]

Comments

Leave a Reply