বাইতুল্লাহ শরীফের দিকে [যুদ্ধ] অগ্রগামী সেনাদল মাটিতে ধ্বসে যাবে
বাইতুল্লাহ শরীফের দিকে [যুদ্ধ] অগ্রগামী সেনাদল মাটিতে ধ্বসে যাবে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২. অধ্যায়ঃ বাইতুল্লাহ শরীফের দিকে [যুদ্ধ] অগ্রগামী সেনাদল মাটিতে ধ্বসে যাবে
৭১৩২. উবাইদুল্লাহ ইবনি কিব্তিয়্যাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হারিস ইবনি আবু রাবীআহ্ এবং আবদুল্লাহ ইবনি সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] দুজনেই উম্মুল মুমিনীন উম্মু সালামাহ্ [রাদি.]-এর কাছে গেলেন। আমিও তাঁদের সঙ্গে ছিলাম। তাঁরা তাকে ঐ বাহিনী সম্বন্ধে প্রশ্ন করিলেন, যারা ভূমিতে ধ্বসে যাবে। তখন ইবনি যুবায়র [রাদি.]-এর খিলাফাতকাল ছিল। উত্তরে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জনৈক আশ্রয় গ্রহণকারী বাইতুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করিবে। তখন তার বিরুদ্ধে একটি বাহিনী প্রেরণ করা হইবে। তারা যখন “বাইদা” নামক এক মাঠে অবস্থান নিবে তখন তারা ভূমিতে ধ্বসে যাবে। এ কথা শুনে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ঐ লোকের ব্যাপারে এ কি করে প্রযোজ্য হইতে পারে যে অসন্তুষ্ট হৃদয়ে এ অভিযানে শামিল হয়েছে? উত্তরে তিনি বলিলেন, তাদের সঙ্গে তাকে সহ ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। তবে কিয়ামাতের দিন তার উত্থান হইবে স্বীয় নিয়্যাতের ভিত্তিতে।
বর্ণনাকারী আবু জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ “বাইদা” হলো মাদীনার নিকটবর্তী স্থান।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৩৩]
৭১৩৩. আবদুল আযীয ইবনি রুফাই [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাতে আছে, আমি আবু জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সঙ্গে দেখা করে বললাম, উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] তো “বাইদা” নামক এক ময়দানের কথা বলেছেন। আবু জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, কক্ষনো নয়, আল্লাহর শপথ! এতো মাদীনার “বাইদা” মাঠ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৩৪]
৭১৩৪. হাফসাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ]-কে এ কথা বলিতে শুনেছেন যে, একটি বাহিনী এ কাবা গৃহের বিপক্ষে যুদ্ধ করার ইচ্ছা করিবে। তারপর তারা যখন “বাইদা” নামক এক ময়দানে পদার্পণ করিবে তখন তাদের মাঝের অংশটি ভূমিতে ধ্বসে যাবে। এ সময় অগ্রভাগের সৈন্যরা পশ্চাতের সৈন্যদেরকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকতে থাকিবে। অতঃপর প্রত্যেকেই ভূমিতে ধ্বসে যাবে। বেঁচে যাওয়া একটি ব্যক্তি ছাড়া তাদের কেউ আর বাকী থাকিবে না। সে-ই তাদের সম্বন্ধে অন্যদেরকে খবর দিবে। এ কথা শুনে এক লোক বলিল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি হাফসাহ্ [রাদি.]-এর উপর মিথ্যারোপ করনি এবং হাফসাহ্ [রাদি.]-এর সম্বন্ধেও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনিও নবী [সাঃআঃ]-এর উপর মিথ্যারোপ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৩৫]
৭১৩৫. উম্মুল মুমিনীন হাফসাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন সম্প্রদায় এ গৃহ তথা কাবার দায়িত্ব গ্রহণ করিবে, যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকিবে না, থাকিবে না তার উল্লেখযোগ্য সৈন্য সংখ্যা এবং থাকিবে না তাদের আসবাব-সামগ্রী। তাদের বিপক্ষে একটি সৈন্যদল পাঠানো হইবে। তারা উদ্ভিদ শূন্য এক ময়দানে আসতেই তাদেরকে ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে।
বর্ণনাকারী ইউসুফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ সময় সিরিয়াবাসীরা মাক্কাবাসীদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য আসছিল। আবদুল্লাহ ইবনি সাফওয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আল্লাহর শপথ! তারা এ সৈন্যবাহিনী নয়।
বর্ণনাকারী যায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উম্মুল মুমিনীন থেকে ইউসুফ ইবনি মাহিক-এর হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে আবদুল্লাহ ইবনি সাফ্ওয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যে সৈন্যদলের কথা বর্ণনা করিয়াছেন তিনি সে বাহিনীর কথা বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৩৬]
৭১৩৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্বীয় হাত পা নাড়ালেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আজ রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আপনি এমন আচরণ করিয়াছেন, যা আগে আপনি কখনো করেননি। তিনি বললেনঃ আশ্চর্যের বিষয় এই যে, কুরায়শ বংশীয় জনৈক লোক বাইতুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করিবে। তার কারণে আমার উম্মাতের একদল লোক বাইতুল্লাহর উপর আক্রমণের ইচ্ছা করিবে। তারা রওনা হয়ে গাছপালাশূন্য মায়দানে আসতেই তাদের ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। এ কথা শুনে আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বিভিন্ন ধরনের মানুষই তো রাস্তা দিয়ে চলে। উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাদের মাঝে কেউ তা স্বেচ্ছায় আগমনকারী, কেউ অপারগ, আবার কেউ পথিক মুসাফির। তারা সবাই এক সঙ্গেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে বিভিন্ন মিল্লাতের অনুসারী হিসেবে তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হইবে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তাদের নিয়্যাতের ভিত্তিতে উত্থিত করবেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৭০৩৭]
Leave a Reply