কঠিন বিপদাপদের দুআ ও তাসবীহ তাহলীল
কঠিন বিপদাপদের দুআ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২১. অধ্যায়ঃ কঠিন বিপদাপদের দুআ
২২. অধ্যায়ঃ সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হাম্দিহি-এর ফযিলত
২৩. অধ্যায়ঃ মুসলিমদের অনুপস্থিতিতে তাদের জন্য দুআর ফযিলত
২৪. অধ্যায়ঃ পানাহারের পর আল হাম্দু লিল্লা-হ বলা মুস্তাহাব
২৫. অধ্যায়ঃ দুআকারীর দুআ গৃহীত হয়; যদি সে তাড়াহুড়া না করে বলে, “আমি দুআ করলাম কিন্তু গৃহীত হলো না”- তার বর্ণনা
২৬. অধ্যায়ঃ জান্নাতীদের অধিকাংশই দুঃস্থ-গরীব এবং জাহান্নামীদের অধিকাংশই মহিলা আর মহিলা জাতির ফিতনাহ্ প্রসঙ্গে
২৭. অধ্যায়ঃ তিন গর্তবাসীর ঘটনা এবং সৎকর্মকে ওয়াসীলা করা সংক্রান্ত
২১. অধ্যায়ঃ কঠিন বিপদাপদের দুআ
৬৮১৪ : ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[তিনি বলেন,] নবী [সাঃআঃ] কঠিন বিপদাপদের সময় বলিতেনঃ
اَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হুল আযীমুল হালীমু লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু রব্বুল আর্শিল আযীমি লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু রব্বুস্ সামা- ওয়া-তি ওয়া রব্বুল আর্যি ওয়া রব্বুল আর্শিল কারীম”, অর্থাৎ- “মহান, ধৈর্যশীল আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই। মহান আরশের পালনকর্তা আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রব এবং সম্মানিত আর্শের রব আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৬]
৬৮১৫ : হিশাম [রাদি.]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
এ সূত্রে হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর মুআয ইবনি হিশামের বর্ণিত হাদীসটি অধিক পরিপূর্ণ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৭]
৬৮১৬ : ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ বাক্যগুলোর সাহায্যে দুআ করিতেন এবং কঠিন বিপদাপদের সময় এগুলো পড়তেন। তারপর তিনি কাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে মুআয ইবনি হিশামের হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি বলেছেন,
رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ
“রব্বুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যি”, অর্থাৎ- “আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৮]
৬৮১৭ : ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন কোন গুরুত্বপূর্ণ কর্ম [বিপদ] তাহাঁর সামনে আসতো তখন তিনি বলিতেন …..। এরপর তিনি মুআয-এর বাবার বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন এবং এর সঙ্গে
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু রব্বুল আর্শিল কারীম”, অর্থাৎ- “মহান আর্শের প্রতিপালক আল্লাহ ব্যাতীত কোন মাবূদ নেই” বর্ধিত বর্ণনা করেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৯]
২২. অধ্যায়ঃ সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হাম্দিহি -এর ফযিলত
৬৮১৮ : আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করা হলো কোন্ কালাম সবচেয়ে উত্তম? তিনি বলিলেন, আল্লাহ তাআলা তাহাঁর ফেরেশ্তা কিংবা তাহাঁর বান্দাদের জন্য যে কালাম নির্বাচন করিয়াছেন, আর তা হলো,
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ
“সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হাম্দিহি” অর্থাৎ- “আমি আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও পবিত্রতা ঘোষণা করছি”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩০]
৬৮১৯ : আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আবু যার! আমি কি তোমাকে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কালামটি অবহিত করব না? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কালামটি আমাকে বলে দিন। তারপর তিনি বলিলেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কালাম হলো,
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ
“সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হাম্দিহি”, অর্থাৎ- “আমি আল্লাহর প্রশংসা ও পবিত্রতা ঘোষণা করছি।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩১]
২৩. অধ্যায়ঃ মুসলিমদের অনুপস্থিতিতে তাদের জন্য দুআর ফযিলত
৬৮২০ : আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মুসলিম বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করলে একজন ফেরেশ্তা তার জবাবে বলে “ আর তোমার জন্যও অনুরূপ”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩২]
৬৮২১ : উম্মু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার নেতা [স্বামী] আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, যে লোক তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করে, তার জন্য একজন নিয়োজিত ফেরেশ্তা আমীন বলিতে থাকে আর বলে, তোমার জন্যও অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৩]
৬৮২২ : সাফওয়ান ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি সাফওয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি সিরিয়াতে আবু দারদা [রাদি.]-এর ঘরে গেলাম। আমি তাকে ঘরে পেলাম না; বরং সেখানে উম্মু দারদাকে পেলাম। তিনি বলিলেন, আপনি কি এ বছর হাজ্জ পালন করবেন? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আল্লাহর নিকট আমাদের কল্যাণের জন্যে দুআ করবেন। কেননা, নবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ একজন মুসলিম বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করলে তা কবুল হয়। তার মাথার নিকটে একজন ফেরেশ্তা নিয়োজিত থাকেন, যখন সে তার ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা করে তখন নিয়োজিত ফেরেশতা বলে থাকে “আমীন এবং তোমার জন্যও অবিকল তাই”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৪]
৬৮২৩ : সাফ্ওয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এরপর আমি বাজারের দিকে বের হলাম। আর আবু দারদা [রাদি.]-এর দেখা পেলাম, তখন তিনি আমাকে অনুরূপ কথা নবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৪]
৬৮২৪ : আবদুল মালিক ইবনি আবু সুলাইমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিনি বলেছেন, সাফ্ওয়ান ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি সাফ্ওয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৫]
২৪. অধ্যায়ঃ পানাহারের পর আল হাম্দু লিল্লা-হ বলা মুস্তাহাব
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
৬৮২৫ : আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অবশ্যই আল্লাহ তাআলা সে বান্দার উপর সন্তুষ্ট, যে খাদ্য গ্রহণের পরে তার জন্য আল হাম্দু লিল্লা-হ পড়ে এবং পানীয় পান করার পরে তার কৃতজ্ঞতা [স্বীকার] করে আল হাম্দু লিল্লা-হ বলে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৬]
৬৮২৬ : আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৭]
২৫. অধ্যায়ঃ দুআকারীর দুআ গৃহীত হয়; যদি সে তাড়াহুড়া না করে বলে, “আমি দুআ করলাম কিন্তু গৃহীত হলো না”- তার বর্ণনা
৬৮২৭ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কারো দুআ তখনই গৃহীত হয় যখন সে তাড়াহুড়া না করে। [তাড়াতাড়ি করে দুআ করার পর] সে তো বলিতে থাকে, আমি দুআ করলাম; অথচ তিনি আমার দুআ গৃহীত হল না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৮]
৬৮২৮ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কারো দুআ তখনই গৃহীত হয় যখন সে তাড়াহুড়া না করে। সে বলিতে থাকে, আমি আমার প্রভুকে আহবান করলাম আর তিনি আমার আহ্বানে সাড়া দেয়া হল না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩৯]
৬৮২৯ : আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, বান্দার দুআ সর্বদা গৃহীত হয় যদি না সে অন্যায় কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য দুআ করে এবং [দুআয়] তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! [দুআয়] তাড়াহুড়া করা কি? তিনি বলিলেন, সে বলিতে থাকে, আমি তো দুআ করেছি, আমি দুআ তো করেছি; কিন্তু আমি দেখিতে পেলাম না যে, তিনি আমার দুআ কবূল করিয়াছেন। তখন সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, আর দুআ করা পরিত্যাগ করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪০]
২৬. অধ্যায়ঃ জান্নাতী দের অধিকাংশই দুঃস্থ-গরীব এবং জাহান্নামীদের অধিকাংশই মহিলা আর মহিলা জাতির ফিতনাহ্ প্রসঙ্গে
৬৮৩০ : উসামাহ্ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [মিরাজের রাতে] আমি জান্নাতের প্রবেশদ্বারে দাঁড়ালাম। প্রত্যক্ষ করলাম, যারা জান্নাতে প্রবেশ করছে তাদের অধিকাংশই দরিদ্র শ্রেণী, মিস্কীন আর ধনীদেরকে দেখলাম বন্দী অবস্থায়। যারা জাহান্নামবাসী হিসেবে পরিগণিত হয়েছে তাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার আদেশ করা হয়েছে। আর আমি জাহান্নামের প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে দেখলাম যে, যারা জাহান্নামে প্রবেশ করেছে তাদের অধিকাংশই মহিলা জাতি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪১]
৬৮৩১ : ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি জান্নাতের দিকে উঁকি দিলাম, আর দেখিতে পেলাম, তার অধিকাংশই দুঃস্থ গরীব লোক। তারপর জাহান্নামের দিকে উঁকি দিলাম, আর দেখিতে পেলাম জাহান্নামবাসীদের অধিকাংশই মহিলা জাতি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪২]
৬৮৩২ : ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৩]
৬৮৩৩ : ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] জাহান্নামের দিকে উঁকি দিলেন। অতঃপর আবুল আশহাব আইয়ূব-এর বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৩]
৬৮৩৪ :ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ …… এরপর সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৪]
৬৮৩৫ : আবু তাইয়্যাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুতার্রিফ ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর দু স্ত্রী ছিল। তিনি একবার তাদের একজনের নিকট হইতে আসলেন। তখন অপরজন বলিল, আপনি তো অমুকের কাছ হইতে আসছেন। তিনি বলিলেন, আমি ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.]-এর নিকট হইতে এসেছি। তিনি আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করিলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জান্নাতে মহিলা জাতি সবচেয়ে কম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৫]
৬৮৩৬ :আবু তাইয়্যাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি মুতার্রিফকে হাদীস বর্ণনা করিতে শুনেছি যে, “সত্যিই তার দুজন স্ত্রী ছিল”। মুআয-এর হাদীসের মর্মে অবিকল হাদীস।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৬]
৬৮৩৭ : আবদুল ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দুআর মধ্যে একটি ছিল এই যে,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ
“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন যাওয়া-লি নিমাতিকা ওয়াতা হাও্উলি আ-ফিয়াতিকা ওয়া ফুজা-য়াতি নিক্মাতিকা ওয়া জামীই সাখাতিকা” অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই নিআমাত দূর হয়ে যাওয়া হইতে, তোমার দেয়া সুস্থতা পরিবর্তন হয়ে যাওয়া থেকে, তোমার অকস্মাৎ শাস্তি আসা হইতে এবং তোমার সকল প্রকার অসন্তুষ্টি থেকে।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪
৬৮৩৮ :উসামাহ্ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি আমার [ইন্তিকালের] পরে পুরুষদের জন্য মহিলাদের ফিতনার চেয়ে অধিকতর কোন ফিতনাহ্ রেখে যাইনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৮]
৬৮৩৯ : সাঈদ ইবনি যায়দ ইবনি আম্র ইবনি নুফায়ল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আমার [ইন্তিকালের] পরে মানুষদের মধ্যে পুরুষদের জন্য নারীদের তুলনায় অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনাহ্ ছেড়ে যাইনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪৯]
৬৮৪০ : সুলাইমান আত্ তাইমী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এ সূত্রে তার অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৫০]
৬৮৪১ : আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, অবশ্যই দুনিয়াটা চাকচিক্যময় মিষ্টি ফলের মতো আকর্ষণীয়। আল্লাহ তাআলা সেখানে তোমাদেরকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করিয়াছেন। তিনি লক্ষ্য করিতেছেন যে, তোমরা কিভাবে কাজ করো? তোমরা দুনিয়া ও নারী জাতি থেকে সতর্ক থেকো। কেননা বানী ইসরাঈলের মাঝে প্রথম ফিতনাহ্ নারীকেন্দ্রিক ছিল।
ইবনু বাশশার (রহঃ) এর বর্ণিত হাদীসে فَيَنْظُرُ এর স্থানে لِيَنْظُرَ কথাটি আছে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৬৯৭, ইসলামিক সেন্টার ৬৭৫১)
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৫১]
২৭. অধ্যায়ঃ তিন গর্তবাসীর ঘটনা এবং সৎকর্মকে ওয়াসীলা করা সংক্রান্ত
৬৮৪২ : আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.]-এর সূত্রে রসূলুলাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, এক সময় তিন লোক পথে হেঁটে চলতে চলতে ঝড়-বৃষ্টি নেমে গেল। তখন তারা একটি পাহাড়ের গর্তে আশ্রয় নিল। ইতোমধ্যে পাহাড় হইতে একটি পাথর খণ্ড খসে পরে তাদের গর্তে মুখ ঢেকে দিল। ফলে গর্তে মুখ বন্ধ হয়ে গেল। সে মুহুর্তে তারা পরস্পরকে বলিতে লাগল, নিজ নিজ সৎ আমালের প্রতি খেয়াল করো যা তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করেছ এবং সে সৎকর্মের ওয়াসীলার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট দুআ করিতে থাকো। এমন হইতে পারে, আল্লাহ তাআলা তোমাদের এ মহাবিপদ [পাথরটি সরিয়ে] হইতে নিষ্কৃতি দিবেন। তখন তাদের একজন বলিল, হে আল্লাহ! আমার পিতা-মাতা ছিলেন বয়োবৃদ্ধ। আমার একজন স্ত্রী ও ছোট ছোট সন্তান-সন্ততি ছিল। আমি তাদের [জীবিকার] জন্য মেষ-বকরী মাঠে চরাতাম। [সন্ধ্যায়] ঘরে ফিরে এসে তাদের জন্য আমি সেগুলোকে দুধ দোহন করতাম এবং আমি আমার সন্তানদের পূর্বে প্রথমেই আমার পিতা-মাতাকে দুধ পান করাতাম। একদিন একটি গাছের সন্ধানে অনেক দূরে যেতে হলো, ফলে আমার ঘরে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। [ফিরে এসে] আমি তাদের [পিতা-মাতা] দুজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেলাম। তারপর আমি আগের মতই দুধ দোহন করলাম। তারপর আমি দুধ নিয়ে আমার পিতা-মাতার মাথার নিকট দাঁড়িয়ে থাকলাম এবং তাদের ঘুম ভাঙ্গানো ঠিক মনে করলাম না এবং তাদের পূর্বে সন্তানদেরকে দুধ পান করানোও পছন্দ করলাম না। সে মুহুর্তে [আমার] সন্তানরা ক্ষুধার তাড়নায় আমার দুপায়ের কাছে কাতরাচ্ছিল। তাদের ও আমার এ অবস্থা চলতে থাকলো। এ অবস্থায় শেষে ভোর হয়ে গেলো। যদি তুমি মনে কর যে, আমি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করেছি, তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা ফাঁকা করে দাও, যাদ্বারা আমরা আকাশ দেখিতে পাই। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাতে একটু ফাঁকা করে দিলেন। তা দিয়ে তারা আকাশ দেখিতে পেলেন।
অপর জন বলিল, হে আল্লাহ! আমার ঘটনা এই যে, আমার এক চাচাতো বোন ছিল কোন পুরুষ কোন নারীকে ভালবাসার মতই আমি তাকে অত্যধিক ভালবাসতাম এবং আমি তাকে একান্ত কাছে পেতে চাইলাম [যৌন আবেদন করলাম]। সে তা প্রত্যাখ্যান করিল এবং [অবশেষে] একশ দীনার বিনিময় চাইল। অতঃপর আমি কষ্ট করে একশ দীনার জমা করলাম। তারপর সেগুলো নিয়ে তার নিকট আসলাম। যখন আমি তার দুপায়ের মধ্যখানে বসলাম, সে সময় তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর বান্দা! আল্লাহকে ভয় করো। বিবাহ ব্যাতীত সতিত্ব নষ্ট করো না। এ কথা শুনে আমি তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালাম। তুমি যদি মনে কর যে, শুধুমাত্র তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই আমি এ কাজ করেছি তবে আমাদের জন্য একটু ফাঁকা করে দাও। তখন তিনি তাদের জন্য আরেকটু ফাঁকা করে দিলেন।
অন্য লোকটি বলিল, হে আল্লাহ! আমি এক ফারাক [প্রায় সাত কিলোগ্রাম] শস্যের বিনিময়ে একজন মজদুর নিযুক্ত করেছিলাম। সে তার কর্ম শেষ করলো এবং বলিল, আমাকে আমার প্রাপ্য দিয়ে দিন। আমি এক ফারাক [শস্য] তার সামনে পেশ করলাম। কিন্তু সে তা না নিয়ে চলে গেল। আমি সে শস্য জমিনে চাষ করিতে থাকলাম। শেষ অবধি তা দিয়ে গরু-বকরী ও রাখাল সংগ্রহ করলাম। পরে সে আমার নিকট আসলো এবং বলিল, আল্লাহকে ভয় করো। আর আমার পাওনা আদায় করিতে আমার উপর অবিচার করো না। আমি বললাম, তুমি এ [সমস্ত] গরু ও রাখাল নিয়ে যাও। সে বলিল, আল্লাহকে ভয় করো, আমার সাথে উপহাস করো না। আমি বললাম, সত্যিই আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না। এ গরু ও রাখাল নিয়ে যাও। অতঃপর সে তা নিয়ে চলে গেল। যদি তুমি জান যে, আমি এ কর্মটি তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করেছি তাহলে অবশিষ্টাংশ ফাঁকা করে দাও। তখন আল্লাহ তাআলা গুহার মুখের বাকী অংশটুকু ফাঁকা করে দিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৫২]
৬৮৪৩ : ইসহাক্ ইবনি মানসূর ও আবদ ইবনি হুমায়দ, সুওয়াইদ ইবনি সাঈদ, আবু কুরায়ব ও মুহাম্মাদ ইবনি তারীফ আল বাজালী, যুহায়র ইবনি হার্ব, হাসান আল হুলওয়ানী, আবদ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এরা সকলেই ইবনি উমর [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
মূসা ইবনি উক্বাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে আবু যামরাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের মর্ম অনুযায়ী হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁরা তাঁদের হাদীসে বর্ধিত বর্ণনা করেছেন, وَخَرَجُوا يَمْشُونَ “তারা পায়ে হেঁটে বের হয়েছিল”। সালিহ্ (রহঃ)-এর হাদীসে يَتَمَاشَوْنَ “তারা পায়ে হেঁটে চলছিল” বর্ণনা রয়েছে। উবাইদুল্লাহ তার হাদীসে خَرَجُوا “তারা বের হলো” বর্ণনা করেছেন।। এরপর তিনি কোন বিষয় বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৫৩]
৬৮৪৪ : ঈমাম যুহরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] আমাকে অবহিত করিয়াছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] বলেছেনঃ আমি রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, আগেকার উম্মাতের মাঝে তিনজন লোক একদিকে যাত্রা শুরু করেন, অবশেষে সন্ধ্যাবেলায় এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিলেন।… তারপর নাফি বর্ণিত হাদীসের একই অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করেন। তবে ইবনি উমর বলেন, তাদের মধ্য থেকে একজন বলেন, আমার দুই বৃদ্ধ মাতা-পিতা ছিল। আমি কক্ষনও তাঁদের পূর্বে পরিজনকে সন্ধ্যায় খাবার খাওয়াতাম না এবং তিনি [ইবনি উমর] বলেন, [চাচাতো বোনটি] আমার প্রস্তাবে রাজী হলো না। পরিশেষে সে অভাব-অনটনে আপতিত হলে আমার কাছে আসল। তখন আমি তাকে একশ বিশটি দিনার দিলাম। আর তিনি বলেন, আমি তার পাওনাটা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করলাম। ফলে অনেক ধন-সম্পদ হয়ে গেল, এরপর ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকল এবং তিনি বলেন, অতঃপর তারা গুহা হইতে বের হয়ে চলতে লাগল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নেই, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৫৪]
Leave a Reply