দারিদ্রের ফযীলত এবং দুনিয়াদারি ত্যাগ -রিয়াদুস সালেহীন

দারিদ্রের ফযীলত এবং দুনিয়াদারি ত্যাগ -রিয়াদুস সালেহীন

দারিদ্রের ফযীলত এবং দুনিয়াদারি ত্যাগ -রিয়াদুস সালেহীন >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পরিচ্ছেদ – ৫৫: দুনিয়াদারি ত্যাগ করার মাহাত্ম্য, দুনিয়া কামানো কম করার প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং দারিদ্রের ফযীলত

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ إِنَّمَا مَثَلُ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا كَمَآءٍ أَنزَلۡنَٰهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ فَٱخۡتَلَطَ بِهِۦ نَبَاتُ ٱلۡأَرۡضِ مِمَّا يَأۡكُلُ ٱلنَّاسُ وَٱلۡأَنۡعَٰمُ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَخَذَتِ ٱلۡأَرۡضُ زُخۡرُفَهَا وَٱزَّيَّنَتۡ وَظَنَّ أَهۡلُهَآ أَنَّهُمۡ قَٰدِرُونَ عَلَيۡهَآ أَتَىٰهَآ أَمۡرُنَا لَيۡلًا أَوۡ نَهَارٗا فَجَعَلۡنَٰهَا حَصِيدٗا كَأَن لَّمۡ تَغۡنَ بِٱلۡأَمۡسِۚ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ لِقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ٢٤ ﴾ [يونس: ٢٤] 

অর্থাৎ“ বস্তুত পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত তো বৃষ্টির মত, যা আমি আসমান হতে বর্ষণ করি। অতঃপর তার দ্বারা উৎপন্ন হয় ভূপৃষ্ঠের উদ্ভিদগুলো অতিশয় ঘন হয়ে, যা হতে মানুষ ও পশুরা ভক্ষণ করে। অতঃপর যখন ভূমি তার শোভা ধারণ করে ও নয়নাভিরাম হয়ে ওঠে এবং তার মালিকরা মনে করে যে, তারা এখন তার পূর্ণ অধিকারী, তখন দিনে অথবা রাতে তার উপর আমার [আযাবের] আদেশ এসে পড়ে, সুতরাং আমি তা এমনভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিই, যেন গতকাল তার অস্তিত্বই ছিল না। এরূপেই আয়াতগুলোকে আমি চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য বিশদরূপে বর্ণনা করে থাকি।” [সূরা ইউনুস ২৪ আয়াত]

তিনি আরো বলেন,

﴿ وَٱضۡرِبۡ لَهُم مَّثَلَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا كَمَآءٍ أَنزَلۡنَٰهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ فَٱخۡتَلَطَ بِهِۦ نَبَاتُ ٱلۡأَرۡضِ فَأَصۡبَحَ هَشِيمٗا تَذۡرُوهُ ٱلرِّيَٰحُۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ مُّقۡتَدِرًا ٤٥ ٱلۡمَالُ وَٱلۡبَنُونَ زِينَةُ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَٱلۡبَٰقِيَٰتُ ٱلصَّٰلِحَٰتُ خَيۡرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابٗا وَخَيۡرٌ أَمَلٗا ٤٦ ﴾ [الكهف: ٤٥،  ٤٦] 

অর্থাৎ “তাহাদের কাছে পেশ কর উপমা পার্থিব জীবনের; এটা পানির ন্যায় যা আমি বর্ষণ করি আকাশ হতে, যার দ্বারা ভূমির উদ্ভিদ ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদগ্ত হয়। অতঃপর তা বিশুষ্ক হয়ে এমন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় যে, বাতাস ওকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ধনৈশবর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা। আর সৎকার্য, যার ফল স্থায়ী, ওটা তোমার প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশা প্রাপ্তির ব্যাপারেও উৎকৃষ্ট।” [সূরা কাহফ ৪৫-৪৬ আয়াত]

আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেছেন,

﴿ ٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّمَا ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَا لَعِبٞ وَلَهۡوٞ وَزِينَةٞ وَتَفَاخُرُۢ بَيۡنَكُمۡ وَتَكَاثُرٞ فِي ٱلۡأَمۡوَٰلِ وَٱلۡأَوۡلَٰدِۖ كَمَثَلِ غَيۡثٍ أَعۡجَبَ ٱلۡكُفَّارَ نَبَاتُهُۥ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَىٰهُ مُصۡفَرّٗا ثُمَّ يَكُونُ حُطَٰمٗاۖ وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِ عَذَابٞ شَدِيدٞ وَمَغۡفِرَةٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضۡوَٰنٞۚ وَمَا ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَآ إِلَّا مَتَٰعُ ٱلۡغُرُورِ ٢٠ ﴾ [الحديد: ٢٠] 

অর্থাৎ “তোমরা জেনে রেখো যে, পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক অহংকার প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয়। এর উপমা বৃষ্টি; যার দ্বারা উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তা পীতবর্ণ দেখিতে পাও, অবশেষে তা টুকরা-টুকরা [খড়-কুটায়] পরিণত হয় এবং আখেরাতে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।” [সূরা হাদীদ ২০ আয়াত]

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ ٱلشَّهَوَٰتِ مِنَ ٱلنِّسَآءِ وَٱلۡبَنِينَ وَٱلۡقَنَٰطِيرِ ٱلۡمُقَنطَرَةِ مِنَ ٱلذَّهَبِ وَٱلۡفِضَّةِ وَٱلۡخَيۡلِ ٱلۡمُسَوَّمَةِ وَٱلۡأَنۡعَٰمِ وَٱلۡحَرۡثِۗ ذَٰلِكَ مَتَٰعُ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسۡنُ ٱلۡمَ‍َٔابِ ١٤ ﴾ [ال عمران: ١٤] 

অর্থাৎ “নারী, সন্তান-সন্ততি, জমাকৃত সোনা-রূপার ভান্ডার, পছন্দসই [চিহ্নিত] ঘোড়া, চতুষ্পদ জন্তু ও ক্ষেত-খামারের প্রতি আসক্তি মানুষের নিকট লোভনীয় করা হয়েছে। এ সব ইহজীবনের ভোগ্য বস্তু। আর আল্লাহর নিকটেই উত্তম আশ্রয়স্থল রয়েছে।” [আলে ইমরান ১৪]

তিনি আরো বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقّٞۖ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَا وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِٱللَّهِ ٱلۡغَرُورُ ٥ ﴾ [فاطر: ٥] 

অর্থাৎ “হে মানুষ! আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; সুতরাং পার্থিব জীবন যেন কিছুতেই তোমাদেরকে প্রতারিত না করে এবং কোন প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই আল্লাহ সস্পর্কে তোমাদেরকে প্রবঞ্চিত না করে।” [সূরা  ফাত্বির ৫ আয়াত]

আল্লাহ তা‘আলা অন্য জায়গায় বলেন,

﴿ أَلۡهَىٰكُمُ ٱلتَّكَاثُرُ ١ حَتَّىٰ زُرۡتُمُ ٱلۡمَقَابِرَ ٢ كَلَّا سَوۡفَ تَعۡلَمُونَ ٣ ثُمَّ كَلَّا سَوۡفَ تَعۡلَمُونَ ٤ كَلَّا لَوۡ تَعۡلَمُونَ عِلۡمَ ٱلۡيَقِينِ ٥ ﴾ [التكاثر: ١،  ٥] 

অর্থাৎ “প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে। যতক্ষণ না তোমরা [মরে] কবরে উপস্থিত হও। কখনও নয়, তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে। আবার বলি, কখনও নয়, তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে। সত্যিই, তোমাদের নিশ্চিত জ্ঞান থাকলে অবশ্যই তোমরা জানতে [ঐ প্রতিযোগিতার পরিণাম]।” [সূরা তাকাসুর ১-৫ আয়াত]

তিনি আরো বলেন,

﴿وَمَا هَٰذِهِ ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَآ إِلَّا لَهۡوٞ وَلَعِبٞۚ وَإِنَّ ٱلدَّارَ ٱلۡأٓخِرَةَ لَهِيَ ٱلۡحَيَوَانُۚ لَوۡ كَانُواْ يَعۡلَمُونَ ٦٤﴾ [العنكبوت: ٦٤] 

অর্থাৎ “এ পার্থিব জীবন তো খেল-তামাশা ছাড়া কিছুই নয়। আর পারলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন; যদি ওরা জানত।” [সূরা আনকাবূত ৬৪ আয়াত]

এ মর্মে প্রচুর আয়াত রয়েছে এবং হাদীসও অগণিত। তার মধ্যে কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করছিঃ-

1/461 عَن عَمرِو بنِ عَوفٍ الأنصَارِي رضي الله عنه: أنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ بَعَثَ أَبَا عُبَيدَةَ بنَ الجَرَّاحِ رضي الله عنه إِلَى الْبَحْرَيْنِ يَأتِي بِجِزْيَتِهَا، فَقَدِمَ بمَالٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ، فَسَمِعَتِ الأَنْصَارُ بقُدُومِ أَبي عُبيْدَةَ، فَوَافَوْا صَلاَةَ الفَجْرِ مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ، فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللهِ ﷺ، انْصَرفَ، فَتَعَرَّضُوا لَهُ، فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللهِ ﷺ حِيْنَ رَآهُمْ، ثُمَّ قَالَ:« أظُنُّكُمْ سَمعتُمْ أنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ قَدِمَ بِشَيْءٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ ؟ » فَقَالُوا: أَجَل، يَا رَسُولَ اللهِ، فَقَالَ: «أبْشِرُوا وَأَمِّلُوا مَا يَسُرُّكُمْ، فَوَالله مَا الفَقْرَ أخْشَى عَلَيْكُمْ، وَلَكِنِّي أخْشَى أنْ تُبْسَط الدُّنْيَا عَلَيْكُمْ كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا، فَتُهْلِكَكُمْ كَمَا أهْلَكَتْهُمْ ». متفقٌ عَلَيْهِ

১/৪৬১। ‘আমর ইবনি ‘আউফ আনসারী রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ একবার আবূ উবাইদাহ ইবনি জার্রাহকে জিযিয়া [ট্যাক্স] আদায় করার জন্য বাহরাইন পাঠালেন। অতঃপর তিনি বাহরাইন থেকে [প্রচুর] মাল নিয়ে এলেন। আনসারগণ তাহাঁর আগমনের সংবাদ শুনে ফজরের নামাযে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর সঙ্গে শরীক হলেন। যখন তিনি নামায পড়ে [নিজ বাড়ি] ফিরে যেতে লাগলেন, তখন তারা তাহাঁর সামনে এলেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাহাদেরকে দেখে হেসে বলিলেন, ‘‘আমার মনে হয়, তোমরা আবূ উবাইদাহ বাহরাইন থেকে কিছু [মাল] নিয়ে এসেছে, তা শুনেছ।’’ তারা বলিল, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বলিলেন, ‘‘সুসংবাদ গ্রহণ কর এবং তোমরা সেই আশা রাখ, যা তোমাদেরকে আনন্দিত করিবে। তবে আল্লাহর কসম! তোমাদের উপর দারিদ্র্য আসবে আমি এ আশংকা করছি না। বরং আশংকা করছি যে, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের ন্যায় তোমাদেরও পার্থিব জীবনে প্রশস্ততা আসবে। আর তাতে তোমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিবে, যেমন তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। অতঃপর তা তোমাদেরকে ধ্বংস করে দেবে, যেমন তাহাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।’’ [বুখারী ও মুসলিম]  [1]

2/462 وَعَن أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي رضي الله عنه، قَالَ: جَلَسَ رَسُولُ اللهِ ﷺ عَلَى الْمِنْبَرِ، وَجَلَسْنَا حَوْلَهُ، فَقَالَ: «إنَّ ممَّا أخَافُ عَلَيْكُمْ مِنْ بَعْدِي مَا يُفْتَحُ عَلَيْكُمْ مِنْ زَهْرَةِ الدُّنْيَا وَزِينَتِهَا». متفقٌ عَلَيْهِ

২/৪৬২। আবূ সাইদ খুদরী রাঃআঃ বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ মিম্বরে বসলেন এবং আমরা তাহাঁর আশেপাশে বসলাম। অতঃপর তিনি বলিলেন, ‘‘আমি তোমাদের উপর যার আশঙ্কা করছি তা হল এই যে, তোমাদের উপর দুনিয়ার শোভা ও সৌন্দর্য [এর দরজা] খুলে দেওয়া হবে।’’[বুখারী ও মুসলিম] [2]

3/463 وَعَنهُ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ، قَالَ:« إنَّ الدُّنْيَا حُلْوَةٌ خَضِرَةٌ وَإنَّ الله تَعَالَى مُسْتَخْلِفُكُمْ فِيهَا، فَيَنْظُرُ كَيْفَ تَعْمَلُونَ، فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاءَ ». رواه مسلم

৩/৪৬৩। উক্ত রাবী রাঃআঃ থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘দুনিয়া হচ্ছে সুমিষ্ট ও সবুজ শ্যামল এবং আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাতে প্রতিনিধি করিয়াছেন। অতঃপর তিনি দেখবেন যে, তোমরা কিভাবে কাজ কর। অতএব তোমরা দুনিয়ার ব্যাপারে সাবধান হও এবং সাবধান হও নারীজাতির ব্যাপারে।’’ [মুসলিম] [3]

4/464 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ، قَالَ:«  اَللهم لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشَ الآخِرَةِ ». متفقٌ عَلَيْهِ

৪/৪৬৪। আনাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘হে আল্লাহ! আখেরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন।’’ [বুখারী ও মুসলিম]  [4]

5/465 وَعَنهُ، عَن رَسُولِ اللهِ ﷺ، قَالَ: «يَتْبَعُ الْمَيِّتَ ثَلاَثَةٌ: أهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ: فَيَرْجِعُ اثْنَانِ، وَيَبْقَى وَاحِدٌ: يَرْجِعُ أهْلُهُ وَمَالُهُ وَيبْقَى عَمَلُهُ ». متفقٌ عَلَيْهِ

৫/৪৬৫। উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘তিনটি জিনিস মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে [সঙ্গে যায়]। দাফনের পর দু’টি ফিরে আসে, আর একটি তার সাথেই থেকে যায়। সে তিনটি হল তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার আমল। দাফনের পর তার পরিবারবর্গ ও মাল ফিরে আসে। আর তার আমল তার সাথেই থেকে যায়।’’ [বুখারী ও মুসলিম]  [5]

6/466  وَعَنهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «يُؤْتَى بِأنْعَمِ أهْلِ الدُّنْيَا مِنْ أهْلِ النَّارِ يَوْمَ القِيَامَةِ، فَيُصْبَغُ فِي النَّارِ صَبْغَةً، ثُمَّ يُقَالُ: يَا ابْنَ آدَمَ، هَلْ رَأيْتَ خَيْراً قَطُّ ؟ هَلْ مَرَّ بِكَ نَعِيمٌ قَطُّ ؟ فَيَقُولُ: لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ، وَيُؤْتَى بِأشَدِّ النَّاسِ بُؤسَاً في الدُّنْيَا مِنْ أهْلِ الجَنَّةِ، فَيُصْبَغُ صَبْغَةً في الجَنَّةِ، فَيُقَالُ لَهُ: يَا ابْنَ آدَمَ، هَلْ رَأيْتَ بُؤساً قَطُّ ؟ هَلْ مَرَّ بِكَ شِدَّةٌ قَطُّ ؟ فيَقُولُ: لاَ وَاللهِ، مَا مَرَّ بِي بُؤْسٌ قَطُّ، وَلاَ رَأيْتُ شِدَّةً قَطُّ ». رواه مسلم

৬/৪৬৬। উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য হতে এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, যে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী ও বিলাসী ছিল। অতঃপর তাকে জাহান্নামে একবার [মাত্র] চুবানো হবে, তারপর তাকে বলা হবে, ‘হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনো ভাল জিনিস দেখেছ? তোমার নিকটে কি কখনো সুখ-সামগ্রী এসেছে?’ সে বলবে, ‘না। আল্লাহর কসম! হে প্রভু!’। আর জান্নাতীদের মধ্য হতে এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, যে দুনিয়ার সবচেয়ে দুখী ও অভাবী ছিল। তাকে জান্নাতে [মাত্র একবার] চুবানোর পর বলা হবে, ‘হে আদম সন্তান! তুমি কি [দুনিয়াতে] কখনো কষ্ট দেখছ? তোমার উপরে কি কখনো বিপদ গেছে?’ সে বলবে, ‘না। আল্লাহর কসম! আমার উপর কোনদিন কষ্ট আসেনি এবং আমি কখনো কোন বিপদও দেখিনি।’’ [মুসলিম]  [6]

7/467 وَعَنِ المُسْتَوْرِدِ بنِ شَدَّادٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ:« مَا الدُّنْيَا في الآخِرَةِ إِلاَّ مِثْلُ مَا يَجْعَلُ أَحَدُكُمْ أُصْبُعَهُ في اليَمِّ، فَلْيَنْظُرْ بِمَ يَرْجِعُ ». رواه مسلم

৭/৪৬৭। মুস্তাওরিদ ইবনি শাদ্দাদ রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘আখেরাতের মুকাবেলায় দুনিয়ার দৃষ্টান্ত ঐরূপ, যেমন তোমাদের কেউ সমুদ্রে আঙ্গুল ডুবায় এবং [তা বের করে] দেখে যে, আঙ্গুলটি সমুদ্রের কতটুকু পানি নিয়ে ফিরছে।’’ [মুসলিম] [7]

8/468 وَعَن جَابِرٍ رضي الله عنه: أنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ مَرَّ بِالسُّوقِ وَالنَّاسُ كَنَفَتَيْهِ، فَمَرَّ بِجَدْيٍ أَسَكَّ مَيِّتٍ، فَتَنَاوَلَهُ فَأَخَذَ بِأُذُنِهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَيُّكُم يُحِبُّ أنْ يَكُونَ هَذَا لَهُ بِدرْهَم ؟ » فَقَالُوا: مَا نُحِبُّ أنَّهُ لَنَا بِشَيْءٍ وَمَا نَصْنَعُ بِهِ ؟ ثُمَّ قَالَ: «أَتُحِبُّونَ أَنَّهُ لَكُمْ ؟ » قَالُوا: وَاللهِ لَوْ كَانَ حَيّاً كَانَ عَيْباً، إنَّهُ أسَكُّ فَكَيْفَ وَهُوَ ميِّتٌ ! فَقَالَ: «فوَاللهِ للدُّنْيَا أهْوَنُ عَلَى اللهِ مِنْ هَذَا عَلَيْكُمْ ». رواه مسلم

৮/৪৬৮। জাবের রাঃআঃ কর্তৃক বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বাজারের পাশ দিয়ে গেলেন। এমতাবস্থায় যে, তাহাঁর দুই পাশে লোকজন ছিল। অতঃপর তিনি ছোট কানবিশিষ্ট একটি মৃত ছাগল ছানার পাশ দিয়ে গেলেন। তিনি তার কান ধরে বলিলেন, ‘‘তোমাদের কেউ কি এক দিরহামের পরিবর্তে এটাকে নেওয়া পছন্দ করিবে?’’ তাঁরা বলিলেন, ‘আমরা কোনো জিনিসের বিনিময়ে এটা নেওয়া পছন্দ করব না এবং আমরা এটা নিয়ে করবই বা কি?’ তিনি বলিলেন, ‘‘তোমরা কি পছন্দ কর যে, [বিনামূল্যে] এটা তোমাদের হোক?’’ তাঁরা বলিলেন, ‘আল্লাহর কসম! যদি এটা জীবিত থাকত তবুও সে ছোট কানের কারণে দোষযুক্ত ছিল। এখন তো সে মৃত [সেহেতু একে কে নেবে]?’ তিনি বলিলেন, ‘‘আল্লাহর কসম! তোমাদের নিকট এই মৃত ছাগল ছানাটা যতটা নিকৃষ্ট, দুনিয়া আল্লাহর নিকট তার চেয়ে বেশি নিকৃষ্ট।’’ [মুসলিম] [8]

9/469 وَعَن أَبي ذَرٍّ رضي الله عنه، قَالَ: كُنْتُ أَمْشِي مَعَ النَّبي ﷺ فِي حَرَّةٍ بِالمَدِينَةِ، فَاسْتَقْبَلَنَا أُحُدٌ، فقال:« يَا أَبَا ذَرٍّ » قُلتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ . فَقَالَ: «مَا يَسُرُّنِي أنَّ عِنْدِي مِثْلَ أُحُدٍ هَذَا ذَهَباً تَمْضِي عَلَيَّ ثَلاَثَةُ أيّامٍ وَعِنْدِي مِنْهُ دِينَارٌ، إِلاَّ شَيْءٌ أرْصُدُهُ لِدَيْنٍ، إِلاَّ أنْ أقُولَ بِهِ في عِبَادِ الله هَكَذَا وَهَكَذَا وَهكَذَا» عَن يَمِينِهِ وَعَن شِمَالِهِ وَمِنْ خَلْفِهِ، ثُمَّ سَارَ، فَقَالَ: «إنَّ الأَكْثَرينَ هُمُ الأَقَلُّونَ يَوْمَ القِيَامَةِ إِلاَّ مَنْ قَالَ بالمَالِ هكَذَا وَهكَذَا وَهكَذَا » عَن يَمِينِهِ وَعَن شِمَالِهِ وِمنْ خَلْفِهِ «وَقَلِيلٌ مَاهُمُ». ثُمَّ قَالَ لِي: «مَكَانَكَ لاَ تَبْرَحْ حَتَّى آتِيكَ» ثُمَّ انْطَلَقَ في سَوادِ اللَّيْلِ حَتَّى تَوَارَى، فَسَمِعْتُ صَوتاً، قَدِ ارْتَفَع، فَتَخَوَّفْتُ أنْ يَكُونَ أحَدٌ عَرَضَ لِلنَّبيِّ ﷺ، فَأرَدْتُ أنْ آتِيهِ فَذَكَرتُ قَوْلَه: «لا تَبْرَحْ حَتَّى آتِيَكَ » فَلَم أبْرَحْ حَتَّى أتَانِي، فَقُلْتُ: لَقَدْ سَمِعْتُ صَوتاً تَخَوَّفْتُ مِنْهُ، فَذَكَرْتُ لَهُ، فَقَالَ: «وَهَلْ سَمِعْتَهُ ؟ » قُلتُ: نَعَمْ، قَالَ: «ذَاكَ جِبريلُ أتَانِي فَقَالَ: مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِكَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئاً دَخَلَ الْجَنَّةَ »، قلت: وَإنْ زَنَى وَإنْ سَرَقَ ؟ قَالَ:« وَإنْ زَنَى وَإنْ سَرَقَ ». متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ البخاري

৮/৪৬৯। আবূ যার্র রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি [একবার] নবী সাঃআঃ এর সাথে মদীনার কালো পাথুরে যমীনে হাঁটছিলাম। উহুদ পাহাড় আমাদের সামনে পড়ল। তিনি বলিলেন, ‘‘হে আবূ যার্র! এতে আমি খুশী নই যে, আমার নিকট এই উহুদ পাহাড় সমান স্বর্ণ থাকবে, এ অবস্থায় তিনদিন অতিবাহিত হবে অথচ তার মধ্য হতে একটি দীনারও আমার কাছে অবশিষ্ট থাকবে। অবশ্য তা থাকবে যা আমি ঋণ আদায়ের জন্য বাকী রাখব অথবা আল্লাহর বান্দাদের মাঝে এইভাবে এইভাবে এইভাবে ডানে, বামে ও পিছনে খরচ করব।’’

অতঃপর [কিছু আগে] চলে তিনি বলিলেন, ‘‘প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন নিঃস্ব হবে। অবশ্য সে নয় যে সম্পদকে [ফোয়ারার মত] এইভাবে এইভাবে এইভাবে ডানে, বামে ও পিছনে ব্যয় করে। কিন্তু এ রকম লোকের সংখ্যা নেহাতই কম।’’

তারপর তিনি আমাকে বলিলেন, ‘‘তুমি এখানে বসে থাক, যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে [ফিরে] আসছি।’’ এরপর তিনি রাতের অন্ধকারে চলতে লাগলেন, এমনকি শেষ পর্যন্ত তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। হঠাৎ আমি এক জোর শব্দ শুনলাম। আমি ভয় পেলাম যে, কোনো শত্রু হয়তো নবী সাঃআঃ এর সামনে পড়েছে। সুতরাং আমি তাহাঁর নিকট যাওয়ার ইচ্ছা করলাম, কিন্তু তাহাঁর কথা আমার স্মরণ হল, ‘‘তুমি এখানে বসে থাক, যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে [ফিরে] এসেছি।’’ সুতরাং আমি তাহাঁর ফিরে না আসা পর্যন্ত বসে থাকলাম। [তিনি ফিরে এলে] আমি বললাম, ‘আমি এক জোর শব্দ শুনলাম, যাতে আমি ভয় পেলাম।’ সুতরাং যা শুনলাম আমি তা তাহাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বলিলেন, ‘‘তুমি শব্দ শুনেছিলে?’’ আমি বললাম, ‘জী হ্যাঁ!’ তিনি বলিলেন, ‘‘তিনি জিব্রাঈল ছিলেন। তিনি আমার কাছে এসে বলিলেন, ‘আপনার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।’ আমি বললাম, ‘যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে তবুও কি?’ তিনি বলিলেন, ‘যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে।’’ [বুখারী ও মুসলিম]  [9]

10/470  وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَن رَسُولِ اللهِ ﷺ، قَالَ: «لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ أُحُدٍ ذَهَباً، لَسَرَّنِي أنْ لاَ تَمُرَّ عَلَيَّ ثَلاَثُ لَيالٍ وَعِنْدِي مِنْهُ شَيْءٌ إِلاَّ شَيْءٌ أرْصُدُهُ لِدَيْنٍ ». متفقٌ عَلَيْهِ

১০/৪৭০। আবূ হুরাইরা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যদি আমার নিকট উহুদ পাহাড় সমান সোনা থাকত, তাহলে আমি এতে আনন্দিত হতাম যে, ঋণ পরিশোধের পরিমাণ মত বাকী রেখে অবশিষ্ট সবটাই তিন দিন অতিবাহিত না হতেই আল্লাহর পথে খরচ করে ফেলি।’’ [বুখারী-মুসলিম]  [10]

11/471 وَعَنهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أسْفَلَ مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ ؛ فَهُوَ أجْدَرُ أنْ لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ الله عَلَيْكُمْ». متفقٌ عَلَيْهِ، وهذا لفظ مسلم

وَفِي رِوَايَةِ البُخَارِي: «إِذَا نَظَرَ أَحَدُكُمْ إِلَى مَنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ في المَالِ وَالخَلْقِ، فَلْيَنْظُرْ إِلَى مَنْ هُوَ أسْفَل مِنْهُ » .

১১/৪৭১। উক্ত সাহাবী রাঃআঃ থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘[দুনিয়ার ধন-দৌলত ইত্যাদির দিক দিয়ে] তোমাদের মধ্যে যে নীচে তোমরা তার দিকে তাকাও এবং যে তোমাদের উপরে তার দিকে তাকায়ো না। যেহেতু সেটাই হবে উৎকৃষ্ট পন্থা যে, তোমাদের প্রতি যে আল্লাহর নিয়ামত রয়েছে তা তুচ্ছ মনে করিবে না।’’ [বুখারী ও মুসলিম, শব্দগুলি মুসলিমের]  [11]

বুখারীর বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমাদের কেউ যখন এমন ব্যক্তির দিকে তাকায়, যাকে সম্পদে ও দৈহিক গঠনে তার থেকে বেশি শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে, তখন সে যেন এমন ব্যক্তির দিকে তাকায়, যে এ বিষয়ে তার চেয়ে নিম্নস্তরের।’’

12/472 وَعَنهُ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: «تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ، وَالدِّرْهَمِ، وَالقَطِيفَةِ، وَالخَمِيصَةِ، إنْ أُعْطِيَ رَضِيَ، وَإنْ لَمْ يُعْطَ لَمْ يَرْضَ ». رواه البخاري

১২/৪৭২। আবু হুরায়রা রাঃআঃ হতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘ধ্বংস হোক দীনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম ও উত্তম পোশাক-আশাক ও উত্তম চাদরের গোলাম [দুনিয়াদার]! যদি তাকে দেওয়া হয়, তাহলে সে সন্তুষ্ট হয়। আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়।’’[বুখারী]  [12]

13/473 وَعَنهُ رضي الله عنه، قَالَ: لَقَدْ رَأيْتُ سَبعِينَ مِنْ أهْلِ الصُّفَّةِ، مَا مِنهُمْ رَجُلٌ عَلَيْهِ رِدَاءٌ: إمَّا إزارٌ، وَإمَّا كِسَاءٌ، قَدْ رَبَطُوا في أعنَاقِهِمْ، فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ نِصْفَ السَّاقَيْن، وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الكَعْبَيْنِ، فَيَجْمَعُهُ بِيَدِهِ كَراهِيَةَ أنْ تُرَى عَوْرَتُهُ . رواه البخاري

১৩/৪৭৩। উক্ত সাহাবী রাঃআঃ থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি সত্তরজন [আহলে সুফ্ফাকে] এই অবস্থায় দেখেছি, তাহাদের কারো কাছে [গা ঢাকার] জন্য চাদর ছিল না, কারো কাছে লুঙ্গী ছিল এবং কারো কাছে চাদর, [এক সঙ্গে দু’টি বস্ত্রই কারো কাছে ছিল না] তারা তা গর্দানে বেঁধে নিতেন। অতঃপর সেই বস্ত্র কারো পায়ের অর্ধগোছা পর্যন্ত হত এবং কারো পায়ের গাঁট পর্যন্ত। সুতরাং তাঁরা তা হাত দিয়ে জমা করে ধরে রাখতেন, যেন লজ্জাস্থান দেখা না যায়!’ [বুখারী]  [13]

14/474 وَعَنهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «الدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ، وَجَنَّةُ الكَافِرِ ». رواه مسلم

১৪/৪৭৪। উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘দুনিয়া মু’মিনের জন্য জেলখানা এবং কাফেরের জন্য জান্নাত।’’[মুসলিম] [14]

15/475 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: أَخَذَ رَسُولُ اللهِ ﷺ بِمَنْكِبَيَّ، فَقَالَ: «كُنْ في الدُّنْيَا كَأنَّكَ غَرِيبٌ، أَو عَابِرُ سَبيلٍ» . وَكَانَ ابنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، يَقُولُ: إِذَا أمْسَيتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ المَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِمَرَضِكَ، وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ . رواه البخاري

১৫/৪৭৫। ইবনি উমার রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ [একদা] আমার দুই কাঁধ ধরে বলিলেন, ‘‘তুমি এ দুনিয়াতে একজন মুসাফির অথবা পথচারীর মত থাক।’’ আর ইবনি উমার রাঃআঃ বলিতেন, ‘তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে আর ভোরের অপেক্ষা করো না এবং ভোরে উপনীত হলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার অবস্থায় তোমার পীড়িত অবস্থার জন্য কিছু সঞ্চয় কর এবং জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ কর।’[বুখারী] [15]

* এই হাদীসের ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেন, দুনিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ো না এবং তাকে নিজের আসল ঠিকানা বানিয়ে নিও না। মনে মনে এ ধারণা করো না যে, তুমি তাতে দীর্ঘজীবী হবে। তুমি তার প্রতি যত্নবান হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করো না। তার সাথে তোমার সম্পর্ক হবে ততটুক, যতটুক একজন প্রবাসী তার প্রবাসের সাথে রেখে থাকে। তাতে সেই বিষয়-বস্তু নিয়ে বিভোল হয়ে যেও না, যে বিষয়-বস্তু নিয়ে সেই প্রবাসী ব্যক্তি হয় না, যে স্বদেশে নিজের পরিবারের নিকট ফিরে যেতে চায়। আর আল্লাহই তওফীক দাতা।

16/476 وَعَن أَبي العَبَّاسِ سَهلِ بنِ سَعدٍ السَّاعِدِي رضي الله عنه، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ الله، دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ أحَبَّنِي اللهُ وَأحَبَّنِي النَّاسُ، فَقَالَ: «ازْهَدْ في الدُّنْيَا يُحِبّك اللهُ، وَازْهَدْ فِيمَا عِنْدَ النَّاسِ يُحِبّك النَّاسُ ». حديث حسن رواه ابن ماجه وغيره بأسانيد حسنة

১৬/৪৭৬। আবুল আব্বাস সাহল ইবনি সা‘দ রাঃআঃ বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাঃআঃ এর কাছে এসে বলিল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে এমন কর্ম বলে দিন, আমি তা করলে যেন আল্লাহ আমাকে ভালবাসেন এবং লোকেরাও আমাকে ভালবাসে।’ তিনি বলিলেন, ‘‘দুনিয়ার প্রতি বিতৃষ্ণা আনো, তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালবাসবেন। আর লোকদের ধন-সম্পদের প্রতি বিতৃষ্ণা আনো, তাহলে লোকেরা তোমাকে ভালবাসবে।’’ [ইবনি মাজাহ প্রমুখ, হাসান সূত্রে, সিলসিলাহ সহীহাহ ৯৪৪নং] [16]

17/477 وَعَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: ذَكَرَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ رضي الله عنه، مَا أَصَابَ النَّاسُ مِنَ الدُّنْيَا، فَقَالَ: لَقَدْ رَأيْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَظَلُّ الْيَوْمَ يَلْتَوِي مَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلأ بِهِ بَطْنَهُ. رواه مسلم

১৭/৪৭৭। নু‘মান ইবনি বাশীর রাঃআঃ বলেন, উমার ইবনুল খাত্ত্বাব রাঃআঃ [পূর্বেকার তুলনায় বর্তমানে] লোকেরা যে দুনিয়ার [ধন-সম্পদ] অধিক জমা করে ফেলেছে সে কথা উল্লেখ করে বলিলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে দেখেছি, তিনি সারা দিন ক্ষুধায় থাকার ফলে পেটের উপর ঝুঁকে থাকতেন [যেন ক্ষুধার জ্বালা কম অনুভব হয়]। তিনি পেট ভরার জন্য নিকৃষ্ট মানের খুরমাও পেতেন না।’[মুসলিম] [17]

18/478  وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنهَا، قَالَتْ: تُوُفِّي رَسُولُ اللهِ ﷺ، وَمَا فِي بَيْتِي مِنْ شَيْءٍ يَأكُلُهُ ذُو كَبِدٍ إِلاَّ شَطْرُ شَعِيرٍ فِي رَفٍّ لِي، فَأكَلْتُ مِنْهُ حَتَّى طَالَ عَلَيَّ، فَكِلْتُهُ فَفَنِيَ . متفقٌ عَلَيْهِ

১৮/৪৭৮। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, ‘রাসূলল্লাহ সাঃআঃ এই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলেন যে, তখন একটা প্রাণীর খেয়ে বাঁচার মত কিছু খাদ্য আমার ঘরে ছিল না। তবে আমার তাকের মধ্যে যৎসামান্য যব ছিল। এ থেকে বেশ কিছুদিন আমি খেলাম। কিন্তু যখন একদিন মেপে নিলাম, সেদিনই তা শেষ হয়ে গেল।’ [বুখারী ও মুসলিম] [18]

19/479 وَعَن عَمرِو بنِ الحَارِثِ أَخِي جُوَيْرِيَّةَ بِنتِ الحَارِثِ أُمِّ المُؤْمِنِينَ، رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: مَا تَرَكَ رَسُولُ اللهِ ﷺ عِنْدَ مَوْتِهِ دِينَاراً، وَلاَ دِرْهَماً، وَلاَ عَبْداً، وَلاَ أَمَةً، وَلاَ شَيْئاً إِلاَّ بَغْلَتَهُ الْبَيضَاءَ الَّتي كَانَ يَرْكَبُهَا، وَسِلاَحَهُ، وَأرْضاً جَعَلَهَا لاِبْنِ السَّبِيلِ صَدَقَةً . رواه البخاري

১৯/৪৭৯। উম্মুল মু’মিনীন জুয়াইরিয়্যাহ বিনতে হারেসের ভাই ‘আমর ইবনি হারেস রাঃআঃ বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাহাঁর মৃত্যুর সময় কোনো দীনার, দিরহাম, ক্রীতদাস, ক্রীতদাসী এবং কোনো জিনিসই ছেড়ে যাননি। তবে তিনি ঐ সাদা খচ্চরটি ছেড়ে গেছেন, যার উপর তিনি সওয়ার হতেন এবং তাহাঁর হাতিয়ার ও কিছু জমি; যা তিনি মুসাফিরদের জন্য সাদকাহ করে গেছেন।’ [বুখারী]  [19]

20/480 وَعَن خَبَّابِ بنِ الأَرَتِّ رضي الله عنه، قَالَ: هَاجَرْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ نَلْتَمِسُ وَجْهَ اللهِ تَعَالَى، فَوَقَعَ أجْرُنَا عَلَى اللهِ، فَمِنَّا مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَأكُل مِنْ أجْرِهِ شَيْئاً، مِنْهُمْ: مُصْعَبُ بن عُمَيْرٍ رضي الله عنه، قُتِلَ يَوْمَ أُحُد، وَتَرَكَ نَمِرَةً، فَكُنَّا إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ، بَدَتْ رِجْلاَهُ، وَإِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رِجْلَيْهِ، بَدَا رَأسُهُ، فَأمَرَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ، أنْ نُغَطِّي رَأسَهُ، وَنَجْعَلُ عَلَى رِجْلَيْهِ شَيْئاً مِنَ الإذْخِرِ، وَمِنَّا مَنْ أيْنَعَتْ لَهُ ثَمَرَتُهُ، فَهُوَ يَهْدِبُهَا . متفقٌ عَلَيْهِ

২০/৪৮০। খাববাব ইবনি আরাত্ত্ রাঃআঃ বলেন, ‘আমরা আল্লাহর চেহারা [সন্তুষ্টি] লাভের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর সঙ্গে [মদীনা] হিজরত করলাম। যার সওয়াব আল্লাহর নিকট আমাদের প্রাপ্য। এরপর আমাদের কেউ এ সওয়াব দুনিয়াতে ভোগ করার পূর্বেই বিদায় নিলেন। এর মধ্যে মুস‘আব ইবনি উমাইর রাঃআঃ; তিনি উহুদ যুদ্ধে শহীদ হলেন এবং শুধুমাত্র একখানা পশমের রঙিন চাদর রেখে গেলেন। আমরা [কাফনের জন্য] তা দিয়ে তাহাঁর মাথা ঢাকলে তাহাঁর পা বেরিয়ে গেল। আর পা ঢাকলে তাহাঁর মাথা বেরিয়ে গেল। তাই রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে, ‘‘তা দিয়ে ওর মাথাটা ঢেকে দাও এবং পায়ের উপর ‘ইযখির’ ঘাস বিছিয়ে দাও।’’ আর আমাদের মধ্যে এমনও লোক রয়েছেন, যাঁদের ফল পেকে গেছে। আর তাঁরা তা সংগ্রহ করছেন।’[বুখারী ও মুসলিম] [20]

21/481 وَعَن سَهلِ بنِ سَعدٍ السَّاعِدِي رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ:« لَوْ كَانَت الدُّنْيَا تَعْدِلُ عِنْدَ الله جَنَاحَ بَعُوضَةٍ، مَا سَقَى كَافِراً مِنْهَا شَرْبَةَ مَاءٍ ». رواه الترمذي وقال:«حديث حسن صحيح»

২১/৪৮১।  সাহল ইবনি সা‘দ রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যদি আল্লাহর নিকট মাছির ডানার সমান দুনিয়ার মূল্য বা ওজন থাকত, তাহলে তিনি কোন কাফেরকে তার [দুনিয়ার] এক ঢোক পানিও পান করাতেন না।’’[তিরমিযী, বিশুদ্ধ সূত্রে] [21]

22/482 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ، يَقُولُ: «أَلاَ إنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ، مَلْعُونٌ مَا فِيهَا، إِلاَّ ذِكْرَ اللهِ تَعَالَى، وَمَا وَالاهُ، وَعَالِماً وَمُتَعَلِّماً» رواه الترمذي، وقال:«حديث حسنٌ»

২২/৪৮২। আবূ হুরাইরা রাঃআঃ বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে বলিতে শুনেছি, ‘‘শোনো! নিঃসন্দেহে দুনিয়া অভিশপ্ত। অভিশপ্ত তার মধ্যে যা কিছু আছে [সবই]। তবে আল্লাহর যিকর এবং তার সাথে সম্পৃক্ত জিনিস, আলেম ও তালেবে-ইলম নয়।’’ [তিরমিযী, হাসান সূত্রে]  [22]

23/483وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «لاَ تَتَّخِذُوا الضَّيْعَةَ فَتَرْغَبُوا في الدُّنْيَا». رواه الترمذي، وقال: «حديثٌ حسنٌ »

২৩/৪৮৩। আব্দুল্লাহ ইবনি মাসঊদ রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘তোমরা জমি-জায়গা, বাড়ি-বাগান ও শিল্প-ব্যবসায়ে বিভোর হয়ে পড়ো না। কেননা, [তাহলে] তোমরা দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়বে।’’[তিরমিযী, হাসান সূত্রে] [23]

24/484 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: مَرَّ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ وَنَحْنُ نُعَالِجُ خُصّاً لَنَا، فَقَالَ: «مَا هَذَا ؟ » فَقُلْنَا: قَدْ وَهَى، فَنَحَنُ نُصْلِحُهُ، فَقَالَ: «مَا أرَى الأَمْرَ إِلاَّ أعْجَلَ مِنْ ذَلِكَ » . رواه أَبو داود والترمذي بإسناد البخاري ومسلم، وقال الترمذي:«حديثٌ حسنٌ صحيحٌ »

২৪/৪৮৪। আব্দুল্লাহ ইবনি ‘আমর ইবনুল ‘আস রাঃআঃ বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করিলেন। এমতাবস্থায় যে, আমরা আমাদের একটি কুঁড়েঘর সংস্কার করছিলাম। তিনি বলিলেন, ‘‘এটা কী?’’ আমরা বললাম, ‘কুঁড়ে ঘরটি দুর্বল হয়ে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছিল, তাই আমরা তা মেরামত করছি।’ তিনি বলিলেন, ‘‘আমি ব্যাপারটিকে [মৃত্যুকে] এর চাইতেও নিকটবর্তী ভাবছি।’’ [আবূ দাউদ, তিরমিযী, বুখারী ও মুসলিমের সূত্রে][24]

25/485 وَعَن كَعبِ بنِ عِيَاضٍ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ، يَقُولُ: «إنَّ لِكُلِّ أُمَّةٍ فِتْنَةً، وفِتْنَةُ أُمَّتِي: المَالُ » رواه الترمذي، وقال: «حديثٌ حسنٌ صحيحٌ »

২৫/৪৮৫। কা‘ব ইবনি ‘ইয়াদ রাঃআঃ বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাঃআঃকে বলিতে শুনেছি; ‘‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফিতনা রয়েছে এবং আমার উম্মতের ফিতনা হচ্ছে মাল।’’[তিরমিযী, হাসান সহীহ সূত্রে][25]

26/486 وَعَنْ أَبِيْ عَمْرٍو، وَيُقَاُلُ: أَبُوْ عَبْدِ الله، وَيُقَالُ: أَبُوْ لَيْلىٰ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ رضي الله عنه، أَنَّ النَّبِيَّﷺ  قَالَ: « لَيْسَ لِإِبْنِ آدَمَ حَقٌّ فِيْ سِوٰى هٰذِهِ الْخِصَالِ: بَيْتٌ يَسْكُنُهُ، وَثَوْبٌ يُوَارِي عَوْرَتَهُ وَجِلْفُ الخُبْزُ، وَالمَاءِ » رواه الترمذي وقال: حديث صحيح.

২৬/৪৮৬। আবূ ‘আমর ‘উসমান ইবনু আফ্ফান রাঃআঃ [তাকে আবূ ‘আব্দুল্লাহ ও আবূ লাইলাও বলা হয়] হতে বর্ণিত, নাবী সাঃআঃ বলেছেন: আদম সন্তানের তিনটি বস্তু ব্যতীত কোন বস্তুর অধিকার নেই। তা হলো: তার বসবাস করার জন্য একটি বাড়ি, শরীর আবৃত করার জন্য কিছু কাপড় এবং কিছু রুটি ও পানি। হাদীসটি তিরমিযী বর্ণনা করে বলেন, এটি সহীহ হাদীস।[26]

27/487 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ الشِّخِّيرِ رضي الله عنه، أنه قَالَ: أتَيْتُ النَّبيَّ ﷺ، وَهُوَ يَقْرَأُ: ﴿ أَلۡهَىٰكُمُ ٱلتَّكَاثُرُ ١ ﴾ [التكاثر: ١]  قَالَ:« يَقُولُ ابْنُ آدَمَ: مَالِي، مالي، وَهَلْ لَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا أكَلْتَ فَأفْنَيْتَ، أَو لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ، أَوْ تَصَدَّقْتَ فَأَمْضَيْتَ ؟! » رواه مسلم

২৭/৪৮৭। আব্দুল্লাহ ইবনি শিখ্খীর রাঃআঃ বলেন, আমি নবী সাঃআঃ এর নিকট এলাম, এমতাবস্থায় যে, তিনি ‘আলহাকুমুত তাকাসুর’ অর্থাৎ প্রাচুর্য্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে। [সূরা তাকাসুর] পড়ছিলেন। তিনি বলিলেন, ‘‘আদম সন্তান বলে, ‘আমার মাল, আমার মাল।’ অথচ হে আদম সন্তান! তোমার কি এ ছাড়া কোন মাল আছে, যা তুমি খেয়ে শেষ করে দিয়েছ অথবা যা তুমি পরিধান করে পুরাতন করে দিয়েছ অথবা সাদকাহ করে [আখেরাতের জন্য] জমা রেখেছ।’’ [মুসলিম] [27]

28/488 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ مُغَفَّلٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ ﷺ: يَا رَسُولَ اللهِ، وَاللهِ إنِّي لأُحِبُّكَ، فَقَالَ: «انْظُرْ مَاذَا تَقُولُ ؟ » قَالَ: وَاللهِ إنِّي لأُحِبُّكَ، ثَلاَثَ مَرَّات، فَقَالَ: «إنْ كُنْتَ تُحِبُّنِي فَأَعِدَّ لِلْفَقْرِ تِجْفَافاً، فإنَّ الفَقْرَ أسْرَعُ إِلَى مَنْ يُحِبُّني مِنَ السَّيْلِ إِلَى مُنْتَهَاهُ ». رواه الترمذي، وقال: «حديث حسن » .

২৮/৪৮৮। আব্দুল্লাহ ইবনি মুগাফ্ফাল হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি নবী সাঃআঃকে বলিল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কসম! আমি নিঃসন্দেহে আপনাকে ভালবাসি।’ তিনি বলিলেন, ‘‘তুমি যা বলছ, তা চিন্তা করে বল।’’ সে বলিল, ‘আল্লাহর কসম! আমি নিঃসন্দেহে আপনাকে ভালবাসি।’ এরূপ সে তিনবার বলিল। তিনি বলিলেন, ‘‘যদি তুমি আমাকে ভালবাসো, তাহলে দারিদ্রের জন্য বর্ম প্রস্তুত রাখো। কেননা, যে আমাকে ভালবাসবে স্রোত তার শেষ প্রান্তের দিকে যাওয়ার চাইতেও বেশি দ্রুতগতিতে দারিদ্র্য তার নিকট আগমন করিবে।’’ [তিরমিযী, হাসান] [28]

29/489 وَعَن كَعبِ بنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «مَا ذِئْبَانِ جَائِعَانِ أُرْسِلاَ فِي غَنَمٍ بِأفْسَدَ لَهَا مِنْ حِرْصِ المَرْءِ عَلَى المَالِ وَالشَّرَفِ لِدِينهِ». رواه الترمذي، وقال:«حديث حسن صحيح»

২৯/৪৮৯। কা‘ব ইবনি মালেক রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘ছাগলের পালে দু’টি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকে ছেড়ে দিলে ছাগলের যতটা ক্ষতি করে, তার চেয়ে মানুষের সম্পদ ও সম্মানের প্রতি লোভ-লালসা তার দ্বীনের জন্য বেশী ক্ষতিকারক।’’[তিরমিযী]  [29]

30/490 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: نَامَ رَسُولُ اللهِ ﷺ عَلَى حَصيرٍ، فَقَامَ وَقَدْ أثَّرَ في جَنْبِهِ، قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللهِ، لَوْ اتَّخَذْنَا لَكَ وِطَاءً . فَقَالَ: «مَا لِي وَلِلدُّنْيَا ؟ مَا أَنَا في الدُّنْيَا إِلاَّ كَرَاكِبٍ اسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا » رواه الترمذي، وقال: «حديث حسن صحيح »

৩০/৪৯০। আব্দুল্লাহ ইবনি মাসঊদ রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ একদা চাটাই-এর উপর শুলেন। অতঃপর তিনি এই অবস্থায় উঠলেন যে, তাহাঁর পার্শ্বদেশে তার দাগ পড়ে গিয়েছিল। আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি [আপনার অনুমতি হয়, তাহলে] আমরা আপনার জন্য নরম গদি বানিয়ে দিই।’ তিনি বলিলেন, ‘‘দুনিয়ার সাথে আমার কী সম্পর্ক? আমি তো [এ] জগতে ঐ সওয়ারের মত যে ক্লান্ত হয়ে একটু বিশ্রামের জন্য] গাছের ছায়ায় থামল। পুনরায় সে চলতে আরম্ভ করল এবং ঐ গাছটি ছেড়ে দিল।’’[তিরমিযী, হাসান-সহীহ] [30]

31/491. وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «يَدْخُلُ الفُقَرَاءُ الْجَنَّةَ قَبْلَ الأَغْنِيَاءِ بِخَمْسِمئَةِ عَامٍ ». رواه الترمذي، وقال: «حديث صحيح »

৩১/৪৯১। আবু হুরায়রা রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘গরীব মু’মিনরা ধনীদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।’’ [তিরমিযী, সহীহ]  [31]

32/492 وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ وَعِمْرَانَ بنِ الحُصَيْنِ رضي الله عنهما، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: «اطَّلَعْتُ في الجَنَّةِ فَرَأيْتُ أكْثَرَ أهْلِهَا الفُقَرَاءَ، وَاطَّلَعْتُ في النَّارِ فَرَأيْتُ أكْثَرَ أهْلِهَا النِّسَاءَ ». متفقٌ عَلَيْهِ

৩২/৪৯২। ইবনি আব্বাস ও ইমরান ইবনি হুসাইন [ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘আমি বেহেশ্তের মধ্যে তাকিয়ে দেখলাম, তার অধিকাংশ অধিবাসীরাই গরীব লোক। আর জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, তার অধিকাংশ অধিবাসীরাই মহিলা।’’ [বুখারী ও মুসলিম] [32]

33/493 ورواه البخاري أيْضاً من روايةِ عِمْرَان بنِ الحُصَينِ ..

৩৩/৪৯৩। ইমাম বুখারী উক্ত হাদীসকে ইমরান ইবনি হুসাইন রাঃআঃ থেকেও বর্ণনা করিয়াছেন।

34/494 وَعَن أُسَامَةَ بنِ زَيدٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: «قُمْتُ عَلَى بَابِ الجَنَّةِ، فَكَانَ عَامَّةُ مَنْ دَخَلَهَا المَسَاكِينُ، وَأصْحَابُ الجَدِّ مَحبُوسُونَ، غَيْرَ أنَّ أصْحَابِ النَّارِ قَدْ أُمِرَ بِهِم إِلَى النَّارِ». متفقٌ عَلَيْهِ

৩৪/৪৯৪। উসামাহ ইবনি যায়েদ রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেন, ‘‘আমি জান্নাতের দুয়ারে দাঁড়িয়ে দেখিতে পেলাম, সেখানে অধিকাংশ নিঃসব লোক রয়েছে। আর ধনবানরা তখনো [হিসাবের জন্য] অবরুদ্ধ রয়েছে। অথচ দোযখীদেরকে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়ে গেছে।’’ [বুখারী ও মুসলিম]  [33]

35/495 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: «أصْدَقُ كَلِمَةٍ قَالَهَا شَاعِرٌ كَلِمَةُ لَبِيدٍ: ألاَ كُلُّ شَيْءٍ مَا خَلاَ اللهَ بَاطِلُ ». متفقٌ عَلَيْهِ

৩৫/৪৯৫। আবু হুরায়রা রাঃআঃ কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘সবচেয়ে সত্য কথা যা কোন কবি বলেছেন, তা হল লাবীদ [কবির] কথা, [তিনি বলেছেন,] ‘শোনো, আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই বাতিল।’’ [বুখারী] [34]


[1] সহীহুল বুখারী ৩১৫৮, ৪০১৫, ৬৪২৫, মুসলিম ২৯৬১, তিরমিযী ২৪৬২, ইবনু মাজাহ ৩৯৯৭, আহমাদ ১৬৭৮৩, ১৮৪৩৬

[2] সহীহুল বুখারী ১৪৬৫, ৯২২, ২৮৪২, ৬৪২৭, মুসলিম ১০৫২, নাসায়ী ২৫৮১, ইবনু মাজাহ ৩৯৯৫, আহমাদ ১০৫৫১, ১০৭৭৩, ১১৪৫৫

[3] মুসলিম ২৭৪২, তিরমিযী ২১৯১, ইবনু মাজাহ ৪০০০, আহমাদ ১০৭৫৯, ১০৭৮৫, ১১০৩৪, ১১১৯৩

[4] সহীহুল বুখারী ২৮৩৪, ২৮৩৫, ২৯৬১, ৩৭৯৫, ৩৭৯৬, ৪০৯৯, ৪১০০, ৬৪১৩, ৭২০১, মুসলিম ১৮০৫, তিরমিযী ৩৮৫৭, ইবনু মাজাহ ৭৪২, আহমাদ ১১৭৬৮, ১২৩১১, ১২৩২১, ১২৩৪৬, ১২৪৩৯, ১২৫৩৯

[5] সহীহুল বুখারী ৬৫১৪, মুসলিম ২৯৬০, তিরমিযী ২৩৭৯, নাসায়ী ১৯৩৭, আহমাদ ১১৬৭০

[6] মুসলিম ২৮০৭, আহমাদ ১২৬৯৯, ১৩২৪৮

[7] মুসলিম ২৮৫৮, তিরমিযী ২৩২৩, ইবনু মাজাহ ৪১০৮, আহমাদ ১৭৫৪৭, ১৭৫৪৮, ১৭৫৫৯

[8] মুসলিম ২৯৫৭, আবূ দাউদ ১৮৬, আহমাদ ১৪৫১৩

[9] সহীহুল বুখারী ৬২৬৮, ১২৩৭, ২৩৮৮, ৩২২২, ৫৮২৭, ৬৪৪৩, ৬৪৪৪, ৭৪৮৭, মুসলিম ৯৪, তিরমিযী ২৬৪৪, আহমাদ ২০৮৪০, ২০৯০৫, ২০৯১৫, ২০৯৫৩

[10] সহীহুল বুখারী ২৩৮৯, ৬৪৪৫, ৭২২৮, মুসলিম ৯৯১, ইবনু মাজাহ ৪১৩২, আহমাদ ৭৪৩৫, ২৭৪১২, ৮৩৮৯, ৮৫৭৮, ৮৯২৭, ৯১৪৫, ২৭২২৫

[11] সহীহুল বুখারী ৬৪৯০, মুসলিম ২৯৬৩, আহমাদ ২৭৩৬৪, ৯৮৮৬

[12] সহীহুল বুখারী ২৮৮৭, ৭৪৩৫, তিরমিযী ২৫৭৫, ইবনু মাজাহ ৪১৩৬

[13] সহীহুল বুখারী ৪৪২

[14] মুসলিম ২৯৫৬, তিরমিযী ২৩২৪, ইবনু মাজাহ ৪১১৩, আহমাদ  ৮০৯০, ২৭৪৯১, ৯৯১৬

[15] সহীহুল বুখারী ৬৪১৬, তিরমিযী ২৩৩৩, ইবনু মাজাহ ৪১১৪, আহমাদ ৪৭৫০, ৪৯৮২, ৬১২১

[16] ইবনু মাজাহ ৪১০২

[17] মুসলিম ২৯৭৭, ২৯৭৮, তিরমিযী ২৩৭২, ইবনু মাজাহ ৪১৪৬, আহমাদ ২৪২৪৭

[18] সহীহুল বুখারী ৩০৯৭, ৬৪৫১, মুসলিম ২৯৭৩, তিরমিযী ২৪৬৭, ইবনু মাজাহ ৩৩৪৫, আহমাদ ২৪২৪৭

[19] সহীহুল বুখারী ৪৪৬১, ২৭৩৯, ২৮৭৩, ২৯১২, ৩০৯৮, নাসায়ী ৩৫৯৪, ৩৫৯৫, ৩৫৯৬, আহমাদ ১৭৯৯০

[20] সহীহুল বুখারী ১২৭৬, ৩৮৯৭, ৩৯১৪, ৪০৪৭, ৪০৮২, ৬৪৩২, ৬৪৪৮

[21] তিরমিযী ২৩২০, ইবনু মাজাহ ৪১১০

[22] তিরমিযী ২৩২২, ইবনু মাজাহ ৪১১২

[23] তিরমিযী ২৩২৮, আহমাদ ৩৫৬৯, ৪০৩৮, ৪২২২

[24] তিরমিযী ২৩৩৫, আবূ দাউদ ৫২৩৫, ইবনু মাজাহ ৪১৬০, আহমাদ ৬৪৬৬

[25] তিরমিযী ২৩৩৬, আহমাদ ১৭০১৭

[26] আমি [আলবানী] বলছিঃ বরং হাদীসটি দুর্বল। এর সনদ দুর্বল হওয়ার দু’টি কারণ রয়েছে। ‘‘সিলসিলাহ্ য‘ঈফা’’ গ্রন্থে [১০৬৩] এর দুর্বল হওয়ার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। [১] বর্ণনাকারী হুরাইস ইবনুস সায়েব সম্পর্কে ইমাম আহমাদ বলেনঃ তার সমস্যা ছিল না কিন্তু তিনি উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর উদ্ধৃতিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এ মুনকার হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, অথচ এটি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হতে বর্ণিত হয়নি। আর সাজী তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। [২] দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে এই যে, হাদীসটি আসলে ইসরাঈলী কোন এক ব্যক্তি হতে বর্ণিত হয়েছে। দারাকুতনীকে এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি উত্তরে বলেনঃ হুরাইস সন্দেহ্ করিয়াছেন। সঠিক হচ্ছে এই যে, হাসান ইবনু হুমরান কোন এক কিতাবী হতে বর্ণনা করিয়াছেন। দেখুন ‘‘সিলসিলাহ্ য‘ঈফা’’ উক্ত নম্বরে।

[27] মুসলিম ২৯৫৮, তিরমিযী ২৩৪২, নাসায়ী ৩৬১২, আহমাদ ১৫৮৭০, ১৫৮৮৭

[28] হাদীসটিকে শাইখ আলবানী প্রথমে দুর্বল আখ্যা দিলেও তিনি পরবর্তীতে পূর্ব সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসেন এবং ‘‘সিলসিলাহ্ সহীহাহ্’’ গ্রন্থে [২৮২৭] সহীহ্ আখ্যা দেন। তিরমিযী ২৩৫০

[29] তিরমিযী ২৩৭৬, আহমাদ ১৫৩৫৭, ১৫৩৬৭, দারেমী ২৭৩০

[30] তিরমিযী ২৩৭৭, ইবনু মাজাহ ৪১১৬৯, আহমাদ ৩৭০১, ৪১৯৬

[31] তিরমিযী ২৩৫৩, ২৩৫৪, ইবনু মাজাহ ৪১২২, আহমাদ ৭৮৮৬, ৮৩১৬, ২৭৭৯৩, ১০২৭৬, ১০২৫২

[32] সহীহুল বুখারী ৩২৪১, ৫১৯৮, ৬৪৪৯, ৬৫৪৬, মুসলিম ২৭৩৮, তিরমিযী ২৬০৩, আহমাদ ১৯৩১৫, ১৯৪২৫, ১৯৪৮০

[33] সহীহুল বুখারী ৫১৯৬, ৬৫৪৭, মুসলিম ২৭৩৬, আহমাদ ২১২৭৫, ২১৩১৮

[34] সহীহুল বুখারী ৩৮৪১, ৬১৪৭, ৬৪৮৯, মুসলিম ২২৫৬, তিরমিযী ২৮৪৯, ইবনু মাজাহ ৩৭৫৭, আহমাদ ৭৩৩৬, ৮৮৪০, ৮৮৬৬, ৯৪৪৪, ৯৫৯০, ৯৭২৪, ৯৮৭০

Comments

Leave a Reply