আল্লাহর ভয়ে এবং তাহাঁর সাক্ষাতের আনন্দে কান্না – রি.সা.

আল্লাহর ভয়ে এবং তাহাঁর সাক্ষাতের আনন্দে কান্না – রি.সা.

আল্লাহর ভয়ে এবং তাহাঁর সাক্ষাতের আনন্দে কান্না – রি.সা. >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পরিচ্ছেদ – ৫৪: আল্লাহর ভয়ে এবং তাহাঁর সাক্ষাতের আনন্দে কান্না করার মাহাত্ম্য

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَيَخِرُّونَ لِلۡأَذۡقَانِ يَبۡكُونَ وَيَزِيدُهُمۡ خُشُوعٗا۩ ١٠٩ ﴾ [الاسراء: ١٠٩] 

অর্থাৎ “তারা কাঁদতে কাঁদতে ভূমিতে লুটিয়ে [সিজদা] দেয় এবং এ [কুরআন] তাহাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।” [সূরা বানী ইস্রাঈল ১০৯ আয়াত]

তিনি আরো বলেন,

﴿ أَفَمِنۡ هَٰذَا ٱلۡحَدِيثِ تَعۡجَبُونَ ٥٩ وَتَضۡحَكُونَ وَلَا تَبۡكُونَ ٦٠ ﴾ [النجم: ٥٩،  ٦٠] 

অর্থাৎ “তোমরা কি এই কথায় বিস্ময়বোধ করছ? এবং হাসি-ঠাট্টা করছ! ক্রন্দন করছ না?” [সূরা নাজ্ম ৫৯-৬০ আয়াত]

1/451 وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ لِي النَّبيُّ ﷺ: «اِقْرَأْ عَليَّ القُرْآنَ » قُلتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَقرَأُ عَلَيْكَ، وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ ؟! قَالَ: «إِنِّي أُحِبُّ أَنْ أسْمَعَهُ مِنْ غَيرِي » فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ سُورَةَ النِّسَاءِ، حَتَّى جِئْتُ إِلى هذِهِ الآيَةِ: ﴿ فَكَيۡفَ إِذَا جِئۡنَا مِن كُلِّ أُمَّةِۢ بِشَهِيدٖ وَجِئۡنَا بِكَ عَلَىٰ هَٰٓؤُلَآءِ شَهِيدٗا ٤١ ﴾ [النساء: ٤١]  قَالَ: «حَسْبُكَ الآنَ » فَالَتَفَتُّ إِلَيْهِ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ . متفقٌ عَلَيْهِ

১/৪৫১। ইবনি মাসঊদ রাঃআঃ বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে বলিলেন, ‘‘তুমি আমার সামনে কুরআন তিলাওয়াত কর।’’ উত্তরে আমি আরজ করলাম, ‘আমি আপনার সামনে তিলাওয়াত করব, অথচ তা আপনার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে?’ তিনি বলিলেন, ‘‘আমি অন্যের কাছ থেকে তা শুনতে ভালবাসি।’’ অতএব আমি সূরা ‘নিসা’ তিলাওয়াত করলাম। পরিশেষে যখন আমি এ আয়াতে এসে পৌঁছলাম; যার অর্থ, ‘‘তখন তাহাদের কী অবস্থা হবে, যখন প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী [নবী] উপস্থিত করব এবং তোমাকেও তাহাদের সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব?’’ তখন তিনি আমাকে বলিলেন, ‘‘যথেষ্ট, এবার থাম।’’ আমি তাকিয়ে দেখলাম, তাহাঁর চক্ষু দু’টি থেকে অশ্রুধারা প্রবাহিত হচ্ছে। [বুখারী ও মুসলিম]  [1]

2/452 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: خَطَبَ رَسُولُ اللهِ ﷺ خُطبَةً مَا سَمِعْتُ مِثلَهَا قَطُّ، فَقَالَ: «لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ، لَضحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيتُمْ كَثِيراً ». فَغَطَّى أصْحَابُ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَجُوهَهُمْ، وَلَهُمْ خَنِينٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

২/৪৫২। আনাস রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ একদা এমন ভাষণ দিলেন যে, ওর মত [ভাষণ] কখনোও শুনিনি। [তাতে] তিনি বলিলেন, ‘‘যা আমি জানি তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে তোমরা কম হাসতে এবং অধিক কাঁদতে।’’ [এ কথা শুনে] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর সাহাবীগণ তাঁদের চেহারা ঢেকে নিলেন এবং তাহাদের বিলাপের রোল আসতে লাগল। [বুখারী ও মুসলিম]  [2]

3/453 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «لاَ يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللهِ حَتَّى يَعُودَ اللَّبَنُ في الضَّرْعِ، وَلاَ يَجْتَمِعُ غُبَارٌ في سَبِيلِ اللهِ وَدُخَانُ جَهَنَّمَ ». رواه الترمذي، وقال: «حديثٌ حَسنٌ صحيحٌ »

৩/৪৫৩। আবু হুরায়রা রাঃআঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘সে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করিবে না, যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করেছে, যতক্ষণ না [দোহনকৃত] দুধ বাঁটে ফিরে যাবে। [অর্থাৎ দু’টোই অসম্ভব]। আর আল্লাহর রাস্তার ধুলো ও জাহান্নামের ধোঁয়া একত্রিত হবে না।’’ [তিরমিযী, হাসান সহীহ]  [3]

4/454 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ:« سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلُّهُ: إمَامٌ عَادِلٌ، وَشَابٌّ نَشَأ في عِبَادَةِ الله تَعَالَى، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ بِالمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابّا في اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيهِ وتَفَرَّقَا عَلَيهِ، وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأةٌ ذَاتُ مَنصَبٍ وَجَمَالٍ، فَقَالَ: إنِّي أخَافُ الله، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ، فَأخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ الله خَالِياً فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .

৪/৪৫৪। আবূ হুরাইরা রাঃআঃ কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাহাঁর [আরশের] ছায়া দান করিবেন যেদিন তাহাঁর ছায়া ব্যতীত আর  কোন ছায়া থাকবে না; [তারা হল,] ন্যায় পরায়ণ বাদশাহ [রাষ্ট্রনেতা], সেই যুবক যার যৌবন আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে অতিবাহিত হয়, সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদসমূহের সাথে লটকে থাকে [মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে।] সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব ও ভালবাসা স্থাপন করে; যারা এই ভালবাসার উপর মিলিত হয় এবং এই ভালবাসার উপরেই চিরবিচ্ছিন্ন [তাহাদের মৃত্যু] হয়। সেই ব্যক্তি যাকে কোন কুলকামিনী সুন্দরী [ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে] আহবান করে, কিন্তু সে বলে, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ সেই ব্যক্তি যে দান করে গোপন করে; এমনকি তার ডান হাত যা প্রদান করে, তা তার বাম হাত পর্যন্তও জানতে পারে না। আর সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার উভয় চোখে পানি বয়ে যায়।’’ [বুখারী-মুসলিম]  [4]

5/455 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ الشِّخِّيرِ رضي الله عنه، قَالَ: أَتَيتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ وَهُوَ يُصَلِّي وَلِجَوْفِهِ أَزِيزٌ كَأَزِيزِ المِرْجَلِ مِنَ البُكَاءِ . حديث صحيح رواه أَبو داود والترمذي في الشمائل بإسناد صحيح

৫/৪৫৫। আব্দুল্লাহ ইবনি শিখ্খীর রাঃআঃ বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর নিকট এলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি নামায পড়ছিলেন এবং তাহাঁর বুক থেকে চুলার হাঁড়ির [ফুটন্ত পানির] মত কান্নার অস্ফুট রোল শোনা যাচ্ছিল।’ [আবূ দাউদ, বিশুদ্ধ সূত্রে, শামায়েলে তিরমিযী বিশুদ্ধ সূত্রে] [5]

6/456 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لأُبَي بنِ كَعبٍ رضي الله عنه: «إنَّ الله – عَزَّ وَجَلَّ – أَمَرَنِي أَنْ أقْرَأَ عَلَيْكَ: ﴿ لَمۡ يَكُنِ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ ﴾ [البينة: ١]  قَالَ: وَسَمَّانِي ؟ قَالَ: «نَعَمْ » فَبَكَى أُبَيٌّ . متفقٌ عَلَيْهِ . وَفِي رِوَايَةٍ: فَجَعَلَ أُبَيٌّ يَبْكِي .

৬/৪৫৬। আনাস রাঃআঃ বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ উবাই ইবনি কা‘ব রাঃআঃ-কে বলিলেন, ‘‘আল্লাহ আমাকে আদেশ করিলেন যে, আমি তোমাকে ‘সূরা লাম য়্যাকুনিল্লাযীনা কাফারু’ পড়ে শুনাই।’’ উবাই ইবন কা‘ব বলিলেন, ‘[আল্লাহ কি] আমার নাম নিয়েছেন?’ তিনি বলিলেন, ‘‘হ্যাঁ।’’ সুতরাং উবাই [খুশীতে] কেঁদে ফেললেন। অন্য এক বর্ণনায় আছে, উবাই কাঁদতে লাগলেন। [বুখারী ও মুসলিম]  [6]

7/457 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ أَبُو بَكرٍ لِعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا بَعْدَ وَفَاةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ: انْطَلِقْ بِنَا إِلَى أُمِّ أيْمَنَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا نَزُورُهَا كَمَا كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَزُورُهَا، فَلَمَّا انْتَهَيَا إِلَيْهَا، بَكَتْ، فَقَالاَ لَهَا: مَا يُبْكِيكِ ؟ أمَا تَعْلَمِينَ أنَّ مَا عِنْدَ اللهِ خَيْرٌ لرَسُولِ اللهِ ﷺ، فَقَالَتْ: مَا أبْكِي أَنْ لاَ أَكُونَ أَعْلَمُ أنَّ مَا عِنْدَ الله تَعَالَى خَيْرٌ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ، وَلَكِنْ أبكي أنَّ الوَحْيَ قدِ انْقَطَعَ مِنَ السَّماءِ، فَهَيَّجَتْهُمَا عَلَى البُكَاءِ، فَجَعَلا يَبْكِيَانِ مَعَهَا . رواه مسلم

৭/৪৫৭। আনাস রাঃআঃ বলেন, রসূল সাঃআঃ এর জীবনাবসানের পর আবূ বকর সিদ্দীক রাঃআঃ উমার রাঃআঃ-কে বলিলেন, ‘চলুন, আমরা উম্মে আইমানের সাথে সাক্ষাৎ করিতে যাই, যেমন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাহাঁর সাথে সাক্ষাৎ করিতে যেতেন।’ সুতরাং যখন তাঁরা উম্মে আইমানের কাছে পৌঁছলেন, তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। অতঃপর তাঁরা তাঁকে বলিলেন, ‘তুমি কাঁদছ কেন? তুমি কি জানো না যে, আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর জন্য [দুনিয়া থেকে] অধিক উত্তম?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি এ জন্য কান্না করছি না যে, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর জন্য আল্লাহর নিকট যা রয়েছে তা অধিকতর উত্তম, সে কথা আমি জানি না। কিন্তু আমি এ জন্য কাঁদছি যে, আসমান হতে ওহী আসা বন্ধ হয়ে গেল।’ উম্মে আইমান [তাহাঁর এ দুঃখজনক কথা দ্বারা] ঐ দু’জনকে কাঁদতে বাধ্য করিলেন। ফলে তাঁরাও তাহাঁর সাথে কাঁদতে লাগলেন। [মুসলিম] [7]

8/458 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: لَمَّا اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللهِ ﷺ وَجَعُهُ، قِيلَ لَهُ فِي الصَّلاَةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ » فَقَالَت عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنهَا: إنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَرَأَ القُرْآنَ غَلَبَهُ البُكَاءُ، فَقَالَ: «مُرُوهُ فَليُصَلِّ » .

وَفِي رِوَايَةٍ عَن عَائِشَةٍَ، رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَت: قُلتُ: إنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ مَقَامَكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ . متفقٌ عَلَيْهِ

৮/৪৫৮। ইবনি উমার রাঃআঃ বলেন, যখন [মরণ রোগে] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর কষ্ট বেড়ে গেল, তখন তাঁকে [জামা‘আত সহকারে] নামায পড়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বলিলেন, ‘‘তোমরা আবূ বকরকে নামায পড়াতে বল।’’ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলিলেন, ‘আবূ বকর নরম মনের মানুষ, কুরআন পড়লেই তিনি কান্না সামলাতে পারেন না।’ কিন্তু পুনরায় তিনি বলিলেন, ‘‘তাকে নামায পড়াতে বল।’’

আয়েশা থেকে অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘আবূ বকর যখন আপনার জায়গায় দাঁড়াবেন, তখন তিনি কান্নার কারণে লোকদেরকে [কুরআন] শুনাতে পারবেন না।’ [বুখারী ও মুসলিম]  [8]

9/459 وَعَن إِبرَاهِيمَ بنِ عَبدِ الرَّحمَانِ بنِ عَوفٍ: أَنَّ عَبدَ الرَّحمَانِ بنَ عَوفٍ رضي الله عنه أُتِيَ بِطَعَامٍ وَكَانَ صَائِماً، فَقَالَ: قُتِلَ مُصْعَبُ بنُ عُمَيْرٍ رضي الله عنه، وَهُوَ خَيْرٌ مِنِّي، فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مَا يُكَفَّنُ فِيهِ إِلاَّ بُرْدَةٌ إِنْ غُطِّيَ بِهَا رَأسُهُ بَدَتْ رِجْلاهُ ؛ وَإنْ غُطِّيَ بِهَا رِجْلاَهُ بَدَا رَأسُهُ، ثُمَّ بُسِطَ لَنَا مِنَ الدُّنْيَا مَا بُسِطَ – أَو قَالَ: أُعْطِينَا مِنَ الدُّنْيَا مَا أُعْطِينَا- قَدْ خَشِينا أنْ تَكُونَ حَسَنَاتُنَا عُجِّلَتْ لَنَا، ثُمَّ جَعَلَ يَبكِي حَتَّى تَرَكَ الطَّعَامَ . رواه البخاري

৯/৪৫৯। ইব্রাহীম ইবনি আব্দুর রহমান ইবনি আওফ রাঃআঃ কর্তৃক বর্ণিত, একদিন আব্দুর রহমান ইবনি আওফ রাঃআঃ-এর কাছে খাবার আনা হল, তখন তাহাঁর রোযা ছিল। তিনি বলিলেন, ‘মুস‘আব ইবনি ‘উমাইর রাঃআঃ শহীদ হলেন। আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে ভাল লোক। [অথচ] তাঁকে কাফন দেওয়ার মত এমন একটি চাদর ভিন্ন অন্য কিছু পাওয়া গেল না, যা দিয়ে তাহাঁর মাথা ঢাকলে পা দু’টি বের হয়ে যাচ্ছিল এবং পা দু’টি ঢাকলে মাথা বের হয়ে যাচ্ছিল! তারপর আমাদের জন্য পৃথিবীর যে প্রাচুর্য দেওয়া হল, অথবা তিনি বলিলেন, ‘আমাদেরকে পার্থিব সম্পদ যা দেওয়া হল, আমাদের আশংকা হয় যে, আমাদের সৎকর্মের [বিনিময়] আমাদের জন্য ত্বরান্বিত করা হয়েছে। অতঃপর তিনি কাঁদতে লাগলেন, এমনকি খাবারও পরিহার করিলেন।’ [বুখারী] [9]

10/460 وَعَن أَبي أُمَامَة صُدَيِّ بنِ عَجلاَنَ البَاهِلِي رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: «لَيْسَ شَيْءٌ أحَبَّ إِلَى اللهِ تَعَالَى مِنْ قَطْرَتَيْنِ وَأثَرَيْنِ: قَطَرَةُ دُمُوعٍ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ، وَقَطَرَةُ دَمٍ تُهَرَاقُ في سَبيلِ اللهِ. وَأَمَّا الأَثَرَانِ: فَأَثَرٌ فِي سَبيلِ اللهِ تَعَالَى، وَأَثَرٌ فِي فَرِيضَةٍ مِنْ فَرَائِضِ الله تَعَالَى ». رواه الترمذي، وقال:« حديثٌ حسنٌ »

১০/৪৬০। আবূ উমামাহ সুদাই ইবনি ‘আজলান বাহেলী রাঃআঃ কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘আল্লাহর নিকট দু’টি বিন্দু এবং দু’টি চিহ্ন অপেক্ষা কোনো বস্তু প্রিয় নয়। [এক] ঐ অশ্রু বিন্দু যা আল্লাহর ভয়ে বের হয় [দুই] ঐ রক্ত বিন্দু যা আল্লাহর পথে বইয়ে দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে দু’টি চিহ্ন হলঃ [এক] ঐ চিহ্ন যা আল্লাহর পথে [জিহাদ করে] হয় [দুই] আল্লাহর কোনো ফরয কাজ আদায় করে যে চিহ্ন [দাগ] পড়ে।’’ [তিরমিযী, হাসান] [10]

এ বিষয়ে আরো হাদীস রয়েছে। তার মধ্যে একটি ‘ইরবায ইবনি সারিয়াহ রাঃআঃ-এর হাদীস, ‘একদা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদেরকে এমন মর্মস্পর্শী বক্তৃতা শুনালেন যে, তাতে অন্তর ভীত হল এবং চোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে গেল।’ যা ১৬১ নম্বরে অতিবাহিত হয়েছে।


[1] সহীহুল বুখারী ৪৫৮২, ৫০৪৯, ৫০৫০, ৫০৫৫, ৫০৫৬, মুসলিম ৮০০, তিরমিযী ৩০২৪, ৩০২৫, আবূ দাউদ ৩৬৬৮, ইবনু মাজাহ ৪১৯৪, আহমাদ ৩৫৪০, ৩৫৯৫, ৪১০৭

[2] সহীহুল বুখারী ৯৩, ৫৪০, ৪৬২১, ৬৩৬২, ৬৪৮৬, ৭০৯১, ৭২৯৪, ৭২৯৫, মুসলিম ২৩৫৯, আহমাদ ১১৬৩৩, ১২২৪৮, ১২৩৭৫, ১২৪০৯, ১২৭৩৫, ১৩২৫৪

[3] তিরমিযী ১৬৩৩, ২৩১১, নাসায়ী ৩১০৭, ৩১০৮, ৩১০৯, ৩১১০, ১৩১১১, ৩১১২, ইবনু মাজাহ ২৭৭৪, আহমাদ ১০১৮২

[4] সহীহুল বুখারী ৬৬০, ১৪২৩, ৬৪৭৯, ৬৮০৬, মুসলিম ১০৩১, তিরমিযী ২৩৯১, নাসায়ী ৫৩৮০, আহমাদ ৯৩৭৩, মুওয়াত্তা মালিক ১৭৭৭

[5] নাসায়ী ১২১৪, আবূ দাউদ ৯০৪, আহমাদ ১৫৮৭৭

[6] সহীহুল বুখারী ৩৮০৯, ৪৯৫৯, ৪৯৬০, ৪৯৬১, মুসলিম ৭৯৯, তিরমিযী ৩৭৯২, আহমাদ ১১৯১১, ১১৯৯৫, ১২৫০৮, ১২৮৭৩, ১৩০৩০, ১৩৪৭২, ১৩৬১৮

[7] মুসলিম ২৪৫৪, ইবনু মাজাহ ১৬৩৫

[8] সহীহুল বুখারী ৬৮২, ১৯৮, ৬৬৪, ৬৬৫, ৬৭৯, ৬৮৩, ৬৮৭, ৭১২, ৭১৩, ৭১৬, ২৫৮৮, ৩০৯৯, ৩৩৮৪, ৪৪৪২, ৪৪৪৫, ৫৭১৪, ৭৩০৩, মুসলিম ৪১৮, তিরমিযী ৩৬৭২, ইবনু মাজাহ ১১২৩২, ১২৩৩, ১৬১৮, আহমাদ ৫১১৯, ২৩৫৮৩, ২৪১২৬, ২৫৭৯১, মুওয়াত্তা মালিক ৪১৪, দারেমী ১২৫৭

[9] সহীহুল বুখারী ১২৭৫, ১২৭৪, ৪০৪৫

[10] তিরমিযী ১৬৬৯

Comments

Leave a Reply