নম্রতার ফযিলত ও অভিশাপ করা থেকে বিরত থাকা
নম্রতার ফযিলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২৩. অধ্যায়ঃ নম্রতার ফযিলত
২৪. অধ্যায়ঃ চতুষ্পদ প্রাণী ইত্যাদিকে অভিশাপ করা থেকে বিরত থাকা
২৫. অধ্যায়ঃ যাদের উপর নবী [সাঃআঃ] অভিসম্পাত করিয়াছেন, তিরস্কার করিয়াছেন অথবা বদদুআ করিয়াছেন; অথচ তারা এর যোগ্য নয় তাদের জন্য তা হইবে পবিত্রতা, পুরস্কার ও রহ্মাত স্বরূপ
২৩. অধ্যায়ঃ নম্রতার ফযিলত
৬৪৯২. জারীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নম্র আচরণ থেকে বঞ্চিত সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১২]
৬৪৯৩. জারীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নম্র থেকে বঞ্চিত সে কল্যাণমূলক সব কিছু থেকে বঞ্চিত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১৩]
৬৪৯৪. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নম্রতা থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি যাবতীয় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। কিংবা বলেছেন, যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত হইবে সে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১৪]
৬৪৯৫. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আয়েশাহ! আল্লাহ্ তাআলা নম্র ব্যবহারকারী। তিনি নম্রতা পছন্দ করেন। তিনি নম্রতার দরুন এমন কিছু দান করেন যা কঠোরতার দরুন দান করেন না; আর অন্য কোন কিছুর দরুনও তা দান করেন না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১৫]
৬৪৯৬. নবী [সাঃআঃ]–এর সহধর্মিণী আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নম্রতা যে কোন বিষয়কে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। আর যে কোন বিষয় থেকে নম্রতা বিদূরিত হলে তাকে কলুষিত করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১৬]
৬৪৯৭. শুবাহ্ হইতে বর্ণীতঃ
মিক্বদাম ইবনি শুরায়হ্ ইবনি হানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -কে এ সানাদে বর্ণনা করিতে শুনেছেন। তিনি তাহাঁর হাদীসে বাড়িয়ে বলেছেন, আয়িশাহ [রাদি.] একটি উটের পিঠে সওয়ার হয়েছিলেন। উটটি ছিল কঠোর স্বভাবের। তাই তিনি তাকে শক্তভাবে ফিরাচ্ছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তোমার উচিত নম্র ব্যবহার করা। পরবর্তী অংশ রাবী উক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১৭]
২৪. অধ্যায়ঃ চতুষ্পদ প্রাণী ইত্যাদিকে অভিশাপ করা থেকে বিরত থাকা
৬৪৯৮. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক সফরে ছিলেন। সে সময় এক আনসার মহিলা একটি উষ্ট্রীর পিঠে আরোহী ছিলেন। তিনি [তার আচরণে] বিরক্ত হয়ে তার উপর অভিসম্পাত করিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা শুনে বলিলেন, এর উপরে যা আছে তা নিয়ে নাও এবং একে ছেড়ে দাও। কেননা সে তো অভিশপ্ত হয়ে পড়েছে।
ইমরান [রাদি.] বলেন, আমি যেন সে উষ্ট্রীকে এখনও দেখিতে পাচ্ছি, যে মানুষের মাঝে হেঁটে বেড়াচ্ছে; অথচ কেউ তার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১৮]
৬৪৯৯. কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ, আবু রাবী’ ও ইবনু আবূ উমার (রাযিঃ) ….. ইসমাঈলের সনদে আইয়্যুব থেকে তার হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
তবে হাম্মাদ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে ইমরান বলেছেন- فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهَا نَاقَةً وَرْقَاءَ (আমি যেন সে মেটে রং-এর উষ্ট্রিটি এখনো দেখতে পাচ্ছি)। আর সাকাকী (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,خُذُوا مَا عَلَيْهَا وَأَعْرُوهَا فَإِنَّهَا مَلْعُونَةٌ এর উপর যা কিছু আছে তা নামিয়ে ফেলো এবং তাকে মুক্ত করে দাও। কেননা সে তো অভিশপ্ত’।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৩৬৯, ইসলামিক সেন্টার ৬৪১৯)
৬৫০০. আবু বারযাহ্ আল আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার একটি বালিকা একটি উট্নীর উপর আরোহিত ছিল। সেটির উপরে তার গোত্রের কিছু মালামালও ছিল। হঠাৎ সে নবী [সাঃআঃ]-কে দেখিতে পেল। আর পাহাড়ের কারণে তাদের পথটি ছিল সংকীর্ণ। ফলে উটের রশি টেনে বালিকাটি বলিল- [আর-বি] [উট চালনার শব্দ] হে আল্লাহ্! এর উপর অভিসম্পাত বর্ষণ করুন। রাবী বলেন, তখন নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ যে উট্নীর উপর অভিসম্পাত করা হয়েছে, সেটি যেন আমাদের সাথে না থাকে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২০]
৬৫০১. সুলাইমান আত্ তাইমী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি মুতামির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এটুকু বাড়িয়ে বলেছেন, “আল্লাহ্র কসম! আমাদের সাথে যেন সে উট্নীটি না থাকে, যার উপর আল্লাহ্র পক্ষ থেকে অভিশাপ বর্ষণ করা হয়েছে, কিংবা তিনি এরূপ কিছু বলেছেন।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২১]
৬৫০২. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ একজন সিদ্দীকের পক্ষে অভিসম্পাতকারী হওয়া সমীচীন নয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২২]
৬৫০৩. আলা ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
অত্র সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৩]
৬৫০৪. যায়দ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল মালিক ইবনি মারওয়ান উম্মু দারদাহ্ [রাদি.]-এর নিকট তার নিজের পক্ষ থেকে সৌন্দর্য বর্ধক কিছু গৃহ সামগ্রী পাঠালেন। এক রাতে আবদুল মালিক নিদ্রা থেকে জেগে তার খাদিমকে ডাকলেন। সে তার নিকট আসতে দেরি করলে তিনি তাকে অভিসম্পাত করিলেন। রাত্রি শেষে উম্মু দারদাহ্ [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, আমি শুনলাম যখন আপনি রাতে আপনার খাদিমকে ডেকেছিলেন তখন তাকে লানাত করিয়াছেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি আবু দারদাহ্ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অভিসম্পাতকারীরা কিয়ামাত দিবসে সুপারিশকারী কিংবা সাক্ষ্যদাতা হইতে পারবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৪]
৬৫০৫. যায়দ ইবনি আসলাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
অত্র সানাদে হাফস্ ইবনি মাইসারাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৫]
৬৫০৬. আবু দারদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, অভিসম্পাতকারীরা কিয়ামাত দিবসে সাক্ষী ও সুপারিশকারী হইতে পারবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৬]
৬৫০৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহকে বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আপনি মুশরিকদের উপর বদ্দুআ করুন। তিনি বলিলেন, আমি তো অভিসম্পাতকারীরূপে প্রেরিত হইনি; বরং প্রেরিত হয়েছি রহ্মাত স্বরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৭]
২৫. অধ্যায়ঃ যাদের উপর নবী [সাঃআঃ] অভিসম্পাত করিয়াছেন , তিরস্কার করিয়াছেন অথবা বদদুআ করিয়াছেন; অথচ তারা এর যোগ্য নয় তাদের জন্য তা হইবে পবিত্রতা, পুরস্কার ও রহ্মাত স্বরূপ
৬৫০৮. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা দুজন লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দরবারে আসলো। তারা তাহাঁর সঙ্গে কোন বিষয়ে আলোচনা করিল। তা কী ছিল, আমি জানি না। অতঃপর তারা তাঁকে রাগান্বিত করেছিল। তিনি তাদের উভয়কে অভিসম্পাত করিলেন এবং তিরস্কার করিলেন। যখন তারা বের হয়ে গেল আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]। যারা [আপনার কাছ থেকে] কল্যাণ লাভ করে। এরা দুজনে তার কিছুই পাবে না। তিনি বলিলেন, সে কী ব্যাপার! তিনি {আয়েশাহ [রাদি.]} বলিলেন, আপনি তো তাদের উভয়কে অভিসম্পাত করিয়াছেন এবং ধিক্কার দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কি জান আমার প্রতিপালকের সাথে এ বিষয়ে আমি কী শর্তারোপ করেছি? আমি বলেছিলাম, “হে আল্লাহ্! আমি একজন মানুষ। আমি কোন মুসলিমকে লানত করলে কিংবা তিরস্কার করলে তা তুমি তার জন্য পবিত্রতা ও পুরস্কার বানিয়ে দিও।
” [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৮]
৬৫০৯. আমাশ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমাশ [রাদি.] থেকে এ সানাদে জারীর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি ঈসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসে বলেন, এরপর তারা তাহাঁর সঙ্গে একান্তে মিলিত হলেন, তখন তিনি তাদের উভয়কে তিরস্কার করিলেন এবং তাদেরকে লানাত দিয়ে বের করে দিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২৯]
৬৫১০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “হে আল্লাহ্! আমি তো একজন মানুষ। সুতরাং আমি কোন মুসলিমকে গাল-মন্দ করলে কিংবা তাকে অভিশাপ করলে অথবা আঘাত করলে তখন তুমি তার জন্য তা পবিত্রতা ও রহ্মাত অর্জনের উপায় বানিয়ে দিও।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩০]
৬৫১১. জাবির [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
জাবির [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তার হাদীসেرَحْمَة (করুণা)-এর স্থলে أَجْرًا (সাওয়াব) উল্লেখিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩১]
৬৫১২. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ঈসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে اجعل [বানিয়ে দাও] উল্লেখ আছে। আর আবু হুরায়রা্-এর হাদীসে اجرا [পুরস্কার] কথাটি উল্লেখ রয়েছে এবং জাবির [রাদি.]-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে وَجَعَلَ وَرَحْمَةً [বানিয়ে দাও রহ্মাত] কথাটির উল্লেখ আছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩১ {ক}]
৬৫১৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট থেকে যে বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি, তুমি কখনো তার বিপরীত করো না। আমি তো একজন মানুষ মাত্র। সুতরাং আমি কোন মুমিন ব্যক্তিকে কষ্ট দিলে, গাল-মন্দ করলে, অভিসম্পাত করলে, তাকে কোড়া লাগালে তা তার জন্য রহ্মাত, পবিত্রতা ও নৈকট্যের কারণ বানিয়ে দাও, যার দ্বারা সে কিয়ামাত দিবসে তোমার নৈকট্য লাভ করিতে পারে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩২]
৬৫১৪. আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ সানাদে তার অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। পার্থক্য এতটুকু যে, তিনি বলেছেন, [আরবী] [কিংবা আমি দোর্রা মেরেছি]।
আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ শব্দটি আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-এর পরিভাষা মাত্র। আসলে এর অর্থ جَلَدْتُهُ [অর্থাৎ-আমি তাকে শাস্তি দিয়েছি]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৩]
৬৫১৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৪]
৬৫১৬. নাসরিয়্যিন-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
اللَّهُمَّ إِنَّمَا مُحَمَّدٌ بَشَرٌ يَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُ الْبَشَرُ وَإِنِّي قَدِ اتَّخَذْتُ عِنْدَكَ عَهْدًا لَنْ تُخْلِفَنِيهِ فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ آذَيْتُهُ أَوْ سَبَبْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ كَفَّارَةً وَقُرْبَةً تُقَرِّبُهُ بِهَا إِلَيْكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
“হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ তো একজন মানুষ। তিনি রাগান্বিত হন যেভাবে একজন মানুষ রাগান্বিত হয়। আর আমি আপনার কাছ থেকে যে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি আপনি কখনো তার উল্টো করবেন না। অতএব কোন মুমিনকে আমি দুঃখ দিলে কিংবা তাকে তিরস্কার করলে অথবা তাকে কোড়া লাগালে তা আপনি তার জন্য কাফ্ফারাহ্ ও নৈকট্য লাভের সোপান বানিয়ে দিন; যার দ্বারা কিয়ামাত দিবসে সে আপনার নৈকট্য অর্জন করিতে পারে।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৫]
৬৫১৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে,
اللَّهُمَّ فَأَيُّمَا عَبْدٍ مُؤْمِنٍ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْ ذَلِكَ لَهُ قُرْبَةً إِلَيْكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
“হে আল্লাহ্! আমি কোন ঈমানদার বান্দাকে মন্দ কথা বললে তুমি তা তার জন্য কিয়ামাত দিবসে তোমার সান্নিধ্য লাভের ওয়াসীলা বানিয়ে দিও।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৬]
৬৫১৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে,
اللَّهُمَّ إِنِّي اتَّخَذْتُ عِنْدَكَ عَهْدًا لَنْ تُخْلِفَنِيهِ فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ سَبَبْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْ ذَلِكَ كَفَّارَةً لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
“হে আল্লাহ্! আমি আপনার নিকট থেকে যে বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি, আপনি কখনো তার বিপরীত করবেন না। কাজেই আমি কোন মুমিন ব্যক্তিকে কষ্ট দিলে কিংবা গালি বা শাস্তি বিধান কায়িম করলে আপনি তার জন্য কিয়ামাত দিবসে কাফ্ফারাহ্ বানিয়ে দিন।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৭]
৬৫১৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি তো একজন মানুষ। অতএব আমি আমার পালনকর্তার সাথে এ শর্ত করে নিয়েছি যে, মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত কোন বান্দাকে আমি ভৎর্সনা করলে কিংবা তিরস্কার করলে তা যেন তার জন্য পবিত্রতা ও পুরস্কার হিসেবে গণ্য করা হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৮]
৬৫২০. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
অত্র সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩৯]
৬৫২১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আনাস [রাদি.]-এর মা উম্মু সুলায়মা-এর নিকট এক ইয়াতীম মেয়ে ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে দেখে বলিলেন, এ তুমি সে মেয়ে? তুমি তো অনেক বড় হয়েছ; কিন্তু তুমি দীর্ঘায়ু হইবে না। তখন ইয়াতীম মেয়েটি উম্মু সুলায়মের নিকট এসে কাঁদতে লাগল। তখন উম্মু সুলায়ম [রাদি.] বলিলেন, তোমার কী হয়েছে? হে আমার স্নেহের মেয়ে! মেয়েটি বলিল, নবী [সাঃআঃ] আমাকে বদ্দুআ করিয়াছেন।তিনি বলেছেন, আমি দীর্ঘায়ু হব না। সুতরাং এখন থেকে আমি বয়সে আর বড় হব না। অথবা সে [আরবী] এর স্থলে [আর-বী] [আমার সমবয়সী] বলেছিল। এ কথা শুনে উম্মু সুলায়ম [রাদি.] তাড়াতাড়ি গায়ে চাদর দিয়ে বেরিয়ে পড়েন এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে দেখা করেন। তখন তাহাঁর উদ্দেশে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, কী ব্যাপার, হে উম্মু সুলায়ম! তিনি বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ [সাঃআঃ]! আপনি কি আমার ইয়াতীম মেয়েটিকে বদ্দুআ করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হে উম্মু সুলায়ম! এটা কেমন কথা! বদ্দুআ করব কেন? উম্মু সুলায়ম বলিলেন, সে তো মনে করেছে যে, আপনি তাকে বদ্দুআ করিয়াছেন যেন তার বয়স না বাড়ে কিংবা তার সমবয়সীর বয়স বৃদ্ধি না পায়। রাবী বলেন , তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুচকি হেসে বলিলেন, হে উম্মু সুলায়ম! তুমি বোধহয় জান না যে, আমার রবের সাথে এ মর্মে আমি শর্ত করেছি এবং আমি বলেছি যে, আমি একজন মানুষ মাত্র। মানুষ যাতে সন্তুষ্ট থাকে আমিও তাতে সন্তুষ্ট হই। আমিও রাগান্বিত হই যেভাবে মানুষ রাগান্বিত হয়ে থাকে। সুতরাং আমি আমার উম্মতের কোন লোকের বিরুদ্ধে বদ্দুআ করলে সে যদি তার যোগ্য না হয় তাহলে তা তার জন্য পবিত্রতা, আত্মশুদ্ধি ও নৈকট্যর সোপান বানিয়ে দাও, যার দ্বারা কিয়ামাতের দিনে সে তোমার নৈকট্য অর্জন করিতে পারে।
আবু মান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উল্লেখিত এক হাদীসে তিন জায়গায় [আরবী]-এর স্থলে [আরবী] শব্দ বর্ণনা করিয়াছেন, যার অর্থ ছোট ইয়াতীম মেয়ে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৪০ ]
৬৫২২. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন আমি বালকদের সাথে খেলায় লিপ্ত ছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেখানে আসলেন। তখন আমি একটি দরজার পিছনে লুকিয়ে থাকলাম। তিনি বলেন, তিনি আমাকে তাহাঁর হাতে [আদর করে] চড় দিলেন এবং বলিলেন, যাও, মুআবিয়াকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে আসো। তিনি বলেন, তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং বললাম, তিনি খাচ্ছিলেন। [আমি ফিরে আসলাম] তিনি বলেন, তারপর তিনি [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, যাও , মুআবিয়াকে আমার নিকট ডেকে নিয়ে আসো। তিনি বলেন, তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং [ফিরে এসে] বললাম, তিনি [সাঃআঃ] খাচ্ছেন। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহ্ যেন তার পেটভর্তি না করেন।
ইবনিল মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি উমাইয়্যাকে বললাম, [আর-বী] আমাকে চড় মেরেছেন-এর অর্থ কি? তিনি বলিলেন, [আরবী] অর্থাৎ-তিনি আমাকে আদর করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৪১]
৬৫২৩. আবু হামযাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন যে, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি কিছু ছেলের সাথে খেলায় লিপ্ত ছিলাম। অকস্মাৎ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তথায় আসলেন আমি তাত্থেকে লুকিয়ে থাকলাম।… তারপর তিনি তার হুবহু হাদীস উল্লেখ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৪২]
Leave a Reply