সহাবাহ, তাবিঈ ও তাবি তাবঈগণের ফাযীলত
সহাবাহ, তাবিঈ ও তাবি তাবঈগণের ফাযীলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৫২.অধ্যায়ঃ সহাবাহ, তাবিঈ ও তাবি তাবঈগণের ফাযীলত
৬৩৬১. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] এর সানাদে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ লোকদের উপর এমন সময় আসবে, তখন তাদের একদল জিহাদে লিপ্ত থাকিবে। তারপর তাদের কাছে জানতে চাওয়া হইবে, তোমাদের মাঝে এমন কেউ আছেন যিনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন? তারা সমস্বরে বলবে, জ্বি হ্যাঁ। তাঁরা তখন বিজয়ী হইবে। তারপর মানুষের মাঝখান থেকে একদল জিহাদ করিতে থাকিবে। তাদের প্রশ্ন করা হইবে, তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক আছেন কি, যিনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর সাহাবাগণকে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন? তারা তখন সমস্বরে বলে উঠবে, জ্বি হ্যাঁ। তখন তারা জয়ী হইবে। অতঃপর লোক অপর একটি দল যুদ্ধ করিতে থাকিবে। তখন তাদের প্রশ্ন করা হইবে, তোমাদের মাঝে এমন কেউ কি আছেন, যিনি সহাবীদের সাহচর্য অর্জনকারী অর্থ্যাৎ- তাবিঈকে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন? তখন লোকেরা বলবে, জি হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় চলে আসবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৭, ই.স ৬২৮৫]
৬৩৬২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন,আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] বলেন যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লোজনের উপর এমন সময় আসবে, যখন তাদের মাঝখান থেকে কোন অভিযাত্রী দল পাঠানো হইবে। তারপর মানুষেরা কথোপকথন করিবে, সন্ধান করো, তোমাদের মাঝে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাহাবীগণের কাউকে পাও কি না। তখন কোন একজন সাহাবী পাওয়া যাবে। তারপর তাহাঁর কারণে তাদের বিজয় অর্জিত হইবে। এরপর দ্বিতীয় সেনাদল পাঠানো হইবে। তখন মানুষেরা বলবে, তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক আছেন কি, যিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাহাবীদের প্রত্যক্ষ করিয়াছেন? তখন একজন [তাবিঈ]-কে পাওয়া যাবে। এরপর তাদের বিজয় লাভ হইবে। তারপর তৃতীয় সেনাদল পাঠানো হইবে। তখন প্রশ্ন করা হইবে, খোঁজ করে দেখ, তাদের মাঝে তাদের কাউকে দেখিতে পাও কি না, যারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাহাবীদের সাহচর্য লাভকারী অর্থাৎ তাবিঈদের অন্তর্ভূক্ত। তারপর চতুর্থ সেনাদল যুদ্ধে অবতীর্ণ হইবে। তখন জিজ্ঞেস করা হইবে দেখ, তোমরা এদের মাঝে এমন কাউকে পাও কি-না, যারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাহাবীদের সাহচর্য অর্জনকারীদের সাহচর্য লাভ করেছে অর্থাৎ কোন তাবি-তাবিঈকে প্রত্যক্ষ করেছে? তখন এক লোককে পাওয়া যাবে। অতঃপর তার কারণে তাদের বিজয় লাভ হইবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৮, ই.স ৬২৮৬]
৬৩৬৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মাঝে সর্বাধিক উত্তম তারাই যারা আমার যুগের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকেরা [অর্থ্যাৎ সাহাবাগণ]। তারপর তাদের সন্নিকটবর্তী সংযুক্ত যুগের লোক [অর্থ্যাৎ তাবিঈগণ]। তারপর তাদের সংযুক্ত যুগ [অর্থ্যাৎ তাবি তাবিঈগণ]। অতঃপর এমন সম্প্রদায়ের উদ্ভব হইবে যারা শপথের পূর্বে সাক্ষী দিবে এবং সাক্ষীর পূর্বে শপথ করিবে। আর হান্নাদ তার হাদীসে [যুগ বা সময় ] কথাটি বর্নণা করেননি এবং কুতাইবাহ বলেছেন অতঃপর অনেক সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হইবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩৯, ই.স ৬২৮৭]
৬৩৬৪. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কে প্রশ্ন করা হলো সর্বোত্তম লোক কে? তিনি বললেনঃ আমার যুগের লোক, তারপর তাদের সন্নিকটবর্তী যুগ, তারপর তাদের সন্নিকটবর্তী যুগ। তারপর এমন এক সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হইবে, যাদের সাক্ষীর পূর্বে শপথ ত্বরান্বিত হইবে এবং শপথের পূর্বে সাক্ষী সংঘটিত হইবে।
ইবরাহীম বলেছেন আমাদের শৈশবে লোকেরা আমাদেরকে শপথ এবং সাক্ষ্য দান হইতে বারণ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪০, ই.স ৬২৮৮]
৬৩৬৫. আবুল আহওয়াস ও জারীরের সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
মানসূর হইতে অবিকল বর্ণিত। তবে তাদের উভয়ের হাদীসেঃ [রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো] বর্ননা নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪১, ই.স ৬২৮৯]
৬৩৬৬. আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ সর্বোত্তম লোক আমার যুগের লোক [অর্থ্যাৎ সাহাববীগণ]। তারপর তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট [অর্থ্যাৎ তাবিঈগণ]। তারপর তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট [অর্থ্যাৎ তাবি তাবিঈগণ]। তারপর তিনি বলেন তৃতীয় অথবা চতুর্থটি সর্ম্পকে আমি অজ্ঞাত। তিনি [রাবী] বলেন তারপর তাদের পরবর্তীতে এমন লোক আসবে যাদের কেউ কেউ শপথের পূর্বে সাক্ষী দেবে এবং সাক্ষ্যের পূর্বে শপথ করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪২, ই.স ৬২৯০]
৬৩৬৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন সর্বোত্তম লোক তারা, যাদের মাঝে আমি আদিষ্ট হয়েছি [অর্থাৎ সাহাবাগণ]। তারপর তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজন [অর্থাৎ তাবিঈগণ]। আর আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত। তারপর তিনি তৃতীয়টি বর্নণা করিয়াছেন কিনা আমার মনে নেই। রাবী বলেন তারপর এমন এক সম্প্রদায়ের উদ্ভব হইবে যারা মোটা-সোটা হওয়া পছন্দ করিবে এবং সাক্ষ্য দিতে ডাকার আগেই সাক্ষ্য প্রদান করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৩, ই.স ৬২৯১]
৬৩৬৮. আবু বিশর [রাদি.] থেকে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
অনুরুপ বর্ণিত। তবে শুবাহ বর্ণিত হাদীসে এতটুকু আলাদা রয়েছে, আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেছেন আমার স্মরণ নেই যে, তিনি দুবার নাকি তিনবার বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৪, ই.স ৬২৯২]
৬৩৬৯. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে সর্বোত্তম আমার যুগের লোকেরা। তারপর তাদের সন্নিকটবতী যুগ। তারপর তাদের সন্নিকটবতী যুগ। ইরান [রাদি.] বলেন আমি স্মরণে নেই যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কি তাহাঁর যুগের পর দুযুগের নাকি তিন যুগের কথা বলে বর্নণা করিয়াছেন। তারপর তাদের পরবর্তীতে এমন এক জাতির উদ্ভব হইবে যারা সাক্ষ্য প্রদান করিবে অথচ তাদের নিকট সাক্ষ্য তলব করা হইবে না। আর তারা খিয়ানত করিতে থাকিবে আমানতদারী রক্ষা করিবে না। তারা মানৎ করিবে কিন্তু তা পূরণ করিবে না। আর তাদের দেহে মোটা-সোটা হওয়া প্রকাশ পাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৫, ই.স ৬২৯৩]
৬৩৭০. শুবাহ [রাদি.] এর সূত্রে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল বর্ণিত। আর তাদের অর্থাৎ ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ, বাহয ও শাবাবাহ বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেছেন, আমার স্মরণে নেই যে তিনি কি তাহাঁর যুগের পর দুই যুগ কিংবা তিন যুগের কথা বর্নণা করিয়াছেন কিনা। শাববাহ বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেছেন, আমি যাহদাম ইবনি মুদরাব হইতে শুনেছি। তিনি আমার নিকট ঘোড়ার পৃষ্ঠে সওয়ার হয়ে এক বিশেষ দরকারে এসেছিলেন। তারপর তিনি আমাকে হাদীস শুনান যে তিনি ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে শুনেছেন। আর ইয়াহইয়া ও বাহয বর্ণিত হাদীসে বর্নণা রয়েছে – “ তারা মানৎ করিবে কিন্তু তা পূরণ করিবে না”। আর বাহয বর্ণিত হাদীসে ইবনি জাফার এর বর্নণানুযায়ী শব্দটার বর্নণা রয়েছে। [শাব্দিক পার্থক্য থাকলেও হাদীসের মূল কথা একই] ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৬, ই.স ৬২৯৪]
৬৩৭১. ইমরান ইবনি হুসায়নের সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এ হাদীসটি বর্ণিত। এ বর্ণনায় রয়েছে এ উন্মাতের সর্বোত্তম হলো তারাই, যাদের মাঝে আমি আদিষ্ট হয়েছি [অর্থ্যাৎ সাহাবাগণ]। আবু আওয়ানাহ বর্ণিত হাদীসে বর্ধিত রয়েছে যে, তিনি বলেন আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত, তিনি তৃতীয়টি বর্ণনা করিয়াছেন কিনা? ইমরান থেকে যাহদম বর্ণিত হাদীসের অর্থানুসারে। কাতাদা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সানাদে হিশাম বর্ণিত এতটুকু অতিরিক্ত রয়েছে যে, অর্থাৎ “তারা শপথ করিতে থাকিবে কিন্তু তাদের নিকট শপথ চাওয়া হইবে না।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৭, ই.স ৬২৯৫]
৬৩৭২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন এক লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কে প্রশ্ন করিল সর্বোত্তম লোক কে? তিনি বলিলেন, সে যুগ যাতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। এরপর দ্বিতীয় যুগ, তারপর তৃতীয় যুগ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪৮, ই.স ৬২৯৬]
Leave a Reply