অনাথ- এতীম , কন্যা সন্তান প্রতি দয়া। রিয়াদুস সালেহীন হাদীস
অনাথ- এতীম , কন্যা সন্তান প্রতি দয়া। রিয়াদুস সালেহীন হাদীস >> রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন
পরিচ্ছেদ – ৩৩ : অনাথ- এতীম , কন্যা সন্তান ও সমস্ত দুর্বল ও দরিদ্রের সঙ্গে নম্রতা, তাহাদের প্রতি দয়া ও তাহাদের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করার গুরুত্ব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَٱخۡفِضۡ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢١٥ ﴾ [الشعراء: ٢١٥]
অর্থাৎ “মু’মিনদের জন্য তুমি তোমার বাহুকে অবনমিত রাখ।” [সূরা হিজর ৮৮ আয়াত]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَٱصۡبِرۡ نَفۡسَكَ مَعَ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ رَبَّهُم بِٱلۡغَدَوٰةِ وَٱلۡعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجۡهَهُۥۖ وَلَا تَعۡدُ عَيۡنَاكَ عَنۡهُمۡ تُرِيدُ زِينَةَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ ﴾ [الكهف: ٢٨]
অর্থাৎ “তুমি নিজেকে তাহাদেরই সংসর্গে রাখ যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাহাদের রবকে তাহাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাহাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না।” [সূরা কাহফ ২৮ আয়াত]
তিনি আরো বলেন,
﴿ فَأَمَّا ٱلۡيَتِيمَ فَلَا تَقۡهَرۡ ٩ وَأَمَّا ٱلسَّآئِلَ فَلَا تَنۡهَرۡ ١٠ ﴾ [الضحا: ٩، ١٠]
অর্থাৎ “অতএব তুমি পিতৃহীনের প্রতি কঠোর হয়ো না এবং ভিক্ষুককে ধমক দিয়ো না।” [সূরা যুহা ৯-১০ আয়াত]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ أَرَءَيۡتَ ٱلَّذِي يُكَذِّبُ بِٱلدِّينِ ١ فَذَٰلِكَ ٱلَّذِي يَدُعُّ ٱلۡيَتِيمَ ٢ وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلۡمِسۡكِينِ ٣ ﴾ [الماعون: ١، ٣]
অর্থাৎ “তুমি কি দেখেছ তাকে, যে [দ্বীন বা] কর্মফলকে মিথ্যা মনে করে থাকে? সে তো ঐ ব্যক্তি, যে পিতৃহীনকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়। এবং সে অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদানে উৎসাহ প্রদান করে না।” [সূরা মাউন ১-৩ আয়াত]
1/265. وَعَن سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ رضي الله عنه، قَالَ : كُنَّا مَعَ النَّبيِّ ﷺ سِتَّةَ نَفَرٍ، فَقَالَ المُشْرِكُونَ لِلنَّبيِّ ﷺ : اُطْرُدْ هَؤُلاَءِ لاَ يَجْتَرِئُونَ عَلَيْنَا، وَكُنْتُ أنَا وَابْنُ مَسْعُودٍ وَرَجُلٌ مِنْ هُذَيْلٍ وَبِلالٌ وَرَجُلاَنِ لَسْتُ أُسَمِّيهِمَا، فَوَقَعَ في نَفسِ رَسُولِ اللهِ ﷺ مَا شَاءَ اللهُ أنْ يَقَعَ فَحَدَّثَ نَفسَهُ، فَأنْزَلَ اللهُ تَعَالَى : ﴿ وَلَا تَطۡرُدِ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ رَبَّهُم بِٱلۡغَدَوٰةِ وَٱلۡعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجۡهَهُۥۖ ﴾ [الانعام: ٥٢] رواه مسلم
১/২৬৫। সা‘দ ইবনি আবী অক্কাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা ছ’জন লোক নবী সাঃআঃ-এর সঙ্গে ছিলাম। ইতোমধ্যে মুশরিকরা নবী সাঃআঃ-কে বলিল, ‘এদেরকে [আপনার মজলিস থেকে] তাড়িয়ে দিন, যেন এরা আমাদের ব্যাপারে দুঃসাহসী হতে না পারে।’ [সা‘দ বলেন,] আমি, ইবনি মাসউদ, হুযাইল গোত্রের এক ব্যক্তি, বিলাল এবং আরও দু’জন ছিলেন, যাদের নাম আমি করছি না। অতঃপর রাসূল সাঃআঃ-এর অন্তরে আল্লাহ যা ইচ্ছা করিলেন তাই ঘটল। সুতরাং তিনি মনে মনে [তাঁদেরকে তাড়ানোর] কথা ভাবলেন। যার জন্য আল্লাহ এই আয়াত অবতীর্ণ করিলেন, ‘‘যারা তাহাদের প্রতিপালককে প্রাতে ও সন্ধ্যায় তাহাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ডাকে, তাহাদেরকে তুমি বিতাড়িত করো না।’’ [সূরা আন‘আম ৫২ আয়াত, মুসলিম] [1]
2/266. عَنْ أَبِي هُبَيرَة عَائِذِ بنِ عَمرٍو المُزَنِي وَهُوَ مِنْ أهْلِ بَيعَةِ الرِّضْوَانِ رضي الله عنه : أنَّ أبَا سُفْيَانَ أتَى عَلَى سَلْمَانَ وَصُهَيْبٍ وَبلاَلٍ في نَفَرٍ، فَقَالُوا : مَا أخَذَتْ سُيُوفُ اللهِ مِنْ عَدُوِّ الله مَأْخَذَهَا، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رضي الله عنه: أتَقُولُون هَذَا لِشَيْخِ قُرَيْشٍ وَسَيدِهِمْ ؟ فَأتَى النَّبيَّ ﷺ، فَأخْبَرهُ، فَقَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ، لَعلَّكَ أغْضَبتَهُمْ؟ لَئِنْ كُنْتَ أغْضَبْتَهُمْ لَقَدْ أغْضَبتَ رَبَّكَ». فَأَتَاهُمْ فَقَالَ : يَا إخْوَتَاهُ، أغْضَبْتُكُمْ؟ قَالُوا : لاَ، يَغْفِرُ اللهُ لَكَ يَا أُخَيَّ . رواه مسلم
২/২৬৬। বায়আতে রিযওয়ানে অংশগ্রহণকারীদের একজন [সাহাবী] আবূ হুবাইরাহ ‘আইয ইবনি ‘আমর মুযানী রাঃআঃ বলেন, [হুদাইবিয়ার সন্ধি ও বায়‘আতের পর] আবূ সুফিয়ান [কাফের অবস্থায়] সালমান, সুহাইব ও বিলালের নিকট এল। সেখানে আরো কিছু সাহাবা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা [আবূ সুফিয়ানের প্রতি ইঙ্গিত করে] বলিলেন, ‘আল্লাহর তরবারিগুলো আল্লাহর শত্রুর হক আদায় করেনি।’ [এ কথা শুনে] আবূ বকর রাঃআঃ বলিলেন, ‘তোমরা এ কথা কুরাইশের বয়োবৃদ্ধ ও তাহাদের নেতার সম্পর্কে বলছ?’ অতঃপর আবূ বকর রাঃআঃ নবী সাঃআঃ-এর নিকট এলেন এবং [এর] সংবাদ দিলেন। নবী সাঃআঃ বলিলেন, ‘‘হে আবু বকর! সম্ভবতঃ তুমি তাহাদেরকে [অর্থাৎ সালমান, সুহাইব ও বেলালকে] অসন্তুষ্ট করেছ। তুমি যদি তাহাদেরকে অসন্তুষ্ট করে থাক, তাহলে তুমি আসলে তোমার প্রতিপালককে অসন্তুষ্ট করেছ।’’ সুতরাং আবূ বকর তাঁদের নিকট এসে বলিলেন, ‘ভাইয়েরা! আমি কি তোমাদেরকে অসন্তুষ্ট করেছি?’ তাঁরা বলিলেন, ‘না। আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুক প্রিয় ভাইজান!’ [মুসলিম] [2]
3/267. وَعَن سَهلِ بنِ سَعدٍ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «أَنَا وَكَافلُ اليَتِيمِ في الجَنَّةِ هَكَذا» وَأَشارَ بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى، وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا. رواه البخاري
৩/২৬৭। সাহ্ল ইবনি সা‘দ রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘আমি ও এতীমের তত্ত্বাবধানকারী জান্নাতে এভাবে [পাশাপাশি] থাকব।’’ এ কথা বলার সময় তিনি [তাহাঁর] তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল মিলিয়ে উভয়ের মাঝে একটু ফাঁক রেখে ইশারা করে দেখালেন। [বুখারী] [3]
4/268. وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «كَافلُ اليَتيِم لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ في الجَنَّةِ»وَأَشَارَ الرَّاوِي وَهُوَ مَالِكُ بْنُ أنَسٍ بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى . رواه مسلم
৪/২৬৮। আবু হুরায়রা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘নিজের অথবা অপরের অনাথ [এতীমের] তত্ত্বাবধায়ক; আমি এবং সে জান্নাতে এ দু’টির মত [পাশাপাশি] বাস করব।’’ বর্ণনাকারী আনাস ইবনি মালেক রাঃআঃ তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলের দিকে ইঙ্গিত করিলেন। [মুসলিম] [4]
5/269. وَعَنهُ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «لَيْسَ المِسْكينُ الَّذِي تَرُدُّهُ التَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ، وَلا اللُّقْمَةُ وَاللُّقْمَتَانِ إِنَّمَا المِسكِينُ الَّذِي يَتَعَفَّفُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وَفي رِوَايَةٍ في الصَّحِيحَينِ: «لَيْسَ المِسكِينُ الَّذِي يَطُوفُ عَلَى النَّاسِ تَرُدُّهُ اللُّقْمَةُ واللُّقْمَتانِ، وَالتَّمْرَةُ والتَّمْرَتَانِ، وَلَكِنَّ المِسْكِينَ الَّذِي لاَ يَجِدُ غنىً يُغْنِيه، وَلاَ يُفْطَنُ بِهِ فَيُتَصَدَّقَ عَلَيهِ، وَلاَ يَقُومُ فَيَسْأَلُ النَّاسَ».
৫/২৬৯। উক্ত সাহাবী থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘মিসকীন সে নয়, যাকে একটি খেজুর এবং দু’টি খেজুর এবং এক গ্রাস বা’ দুগ্রাস [অন্ন] ফিরিয়ে দেয়। বরং মিসকীন তো ঐ ব্যক্তি, যে [অভাব থাকা সত্ত্বেও] চাওয়া থেকে দূরে থাকে।’’ [বুখারী ও মুসলিম] [5]
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘মিসকীন সে নয়, যে এক অথবা দু টুকরা খেজুর কিংবা এক অথবা দু মুঠো খানা পেয়ে বিদায় হয়ে যায়। কিন্তু মিসকীন হল সেই ব্যক্তি, যে প্রয়োজন মোতাবেক যথেষ্ট রুযীর মালিক নয় এবং সাধারণতঃ লোকে তাকে অভাবী বলে চিনতেও পারে না; যাতে তাকে দান করা যায়। আর সে নিজে উঠে লোকের কাছে চায়ও না।’’ [অর্থাৎ পেটে ক্ষুধা রেখে মুখে লাজ করে।]
6/270. وَعَنهُ، عَنِ النَّبيِّ ﷺ، قَالَ: «السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالمِسْكِينِ، كَالمُجَاهِدِ في سَبيلِ اللهِ»وَأحسَبُهُ قَالَ: «وَكالقَائِمِ الَّذِي لاَ يَفْتُرُ، وَكَالصَّائِمِ الَّذِي لاَ يُفْطِرُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৬/২৭০। উক্ত সাহাবী থেকেই বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘বিধবা ও মিসকীনদের অভাব দূর করায় চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।’’ [হাদীসের বর্ণনাকারী বলেন,] আমি ধারণা করছি যে, তিনি এ কথাও বলিলেন, ‘‘সে ঐ নফল নামায আদায়কারীর মত যে ক্লান্ত হয় না এবং ঐ রোযা পালনকারীর মত যে রোযা ছাড়ে না।’’ [বুখারী] [6]
7/271. وَعَنهُ، عَنِ النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «شَرُّ الطَّعَامِ طَعَامُ الوَلِيمَةِ، يُمْنَعُهَا مَنْ يَأتِيهَا، وَيُدْعَى إِلَيْهَا مَنْ يَأْبَاهَا، وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّعْوَةَ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُولَهُ». رواه مسلم
وَفي رِوَايَةٍ في الصَّحِيحَينِ : عَنْ أَبِي هُرَيرَةَ مِن قَولِهِ : «بئْسَ الطَّعَامُ طَعَامُ الوَلِيمَةِ يُدْعَى إِلَيْهَا الأغْنِيَاءُ ويُتْرَكُ الفُقَراءُ».
৭/২৭১। উক্ত রাবী রাঃআঃ হতেই বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেন, ‘‘সবচেয়ে নিকৃষ্ট খাবার ঐ অলীমার খাবার, যাতে যে [স্বয়ং] আসে তাকে [অর্থাৎ মিসকীনকে] বাধা দেওয়া হয় এবং যাকে আহ্বান করা হয় সে [অর্থাৎ ধনী] আসতে অস্বীকার করে। আর যে ব্যক্তি দাওয়াত গ্রহণ করল না, সে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের নাফরমানী করল।’’ [মুসলিম] [7]
বুখারী-মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে যে, আবু হুরায়রা রাঃআঃ বলিতেন, ‘অলীমার খাবার নিকৃষ্টতম খাবার, যাতে বিত্তশালীদেরকে ডাকা হয় এবং দরিদ্রদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
8/272. عَن أَنَسٍ رضي الله عنه، عَنِ النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْن حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ القِيَامَةِ أنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ»وضَمَّ أصَابِعَهُ . رواه مسلم
৮/২৭২। আনাস রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন তাহাদের সাবালিকা হওয়া অবধি করিবে, কিয়ামতের দিন আমি এবং সে এ দু’টি আঙ্গুলের মত পাশাপাশি আসব।’’ অতঃপর তিনি তাহাঁর আঙ্গুলগুলি মিলিত করে [দেখালেন]। [মুসলিম] [8]
9/273. وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ : دَخَلَتْ عَلَيَّ امْرَأةٌ وَمَعَهَا ابنَتَانِ لَهَا تَسْأَلُ، فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيئاً غَيْرَ تَمْرَةٍ وَاحدَةٍ، فَأعْطَيْتُهَا إيَّاهَا فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْها ولَمْ تَأكُلْ مِنْهَا، ثُمَّ قَامَتْ فَخَرجَتْ، فَدَخَلَ النَّبيُّ ﷺ عَلَينَا، فَأخْبَرْتُهُ فَقَالَ: «مَنِ ابْتُليَ مِنْ هذِهِ البَنَاتِ بِشَيءٍ فَأحْسَنَ إلَيْهِنَّ، كُنَّ لَهُ سِتراً مِنَ النَّارِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৯/২৭৩। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মহিলা তার দু’টি মেয়ে সঙ্গে নিয়ে আমার নিকট ভিক্ষা চাইল। অতঃপর সে আমার নিকট একটি খুরমা ব্যতীত কিছুই পেল না। সুতরাং আমি তা তাকে দিয়ে দিলাম। মহিলাটি তার দু’মেয়েকে খুরমাটি ভাগ করে দিল এবং সে নিজে তা থেকে কিছুই খেল না, অতঃপর সে উঠে বের হয়ে গেল। ইতোমধ্যে নবী সাঃআঃ এলেন। আমি তাঁকে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বলিলেন, ‘‘যাকে এই কন্যা সন্তান দিয়ে কোনো পরীক্ষায় ফেলা হয়, তারপর যদি সে তাহাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে, তাহলে এ কন্যারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে অন্তরাল হবে।’’ [বুখারী, মুসলিম] [9]
10/274. وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ : جَاءَتني مِسْكينةٌ تَحْمِلُ ابْنَتَيْنِ لَهَا، فَأطْعَمْتُها ثَلاَثَ تَمرَات، فَأعْطَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا تَمْرَةً وَرَفَعتْ إِلَى فِيها تَمْرَةً لِتَأكُلها، فَاسْتَطعَمَتهَا ابْنَتَاهَا، فَشَقَّتِ التَّمْرَةَ الَّتي كَانَتْ تُريدُ أنْ تَأكُلَهَا بَيْنَهُمَا، فَأعجَبَنِي شَأنُهَا، فَذَكَرْتُ الَّذِي صَنَعَتْ لِرَسُولِ الله ﷺ، فَقَالَ: «إنَّ الله قَدْ أوْجَبَ لَهَا بِهَا الجَنَّةَ، أَوْ أعتَقَهَا بِهَا مِنَ النَّارِ». رواه مسلم
১০/২৭৪। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মিসকীন মহিলা তার দু’টি কন্যাকে [কোলে] বহন করে আমার কাছে এল। আমি তাকে তিনটি খুরমা দিলাম। অতঃপর সে তার কন্যা দু’টিকে একটি একটি করে খুরমা দিল এবং সে নিজে খাবার জন্য একটি খুরমা মুখ-পর্যন্ত তুলল। কিন্তু তার কন্যা দু’টি সেটিও খেতে চাইল। সুতরাং মহিলাটি যে খেজুরটি নিজে খেতে ইচ্ছা করেছিল, সেটিকে দু’ভাগে ভাগ করে তাহাদের মধ্যে বণ্টন করে দিল। সুতরাং তার [এ] অবস্থা আমাকে মুগ্ধ করল। তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর নিকট মহিলাটির ঘটনা বর্ণনা করলাম। নবী সাঃআঃ বলিলেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজেব করে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দিয়েছেন।’’ [মুসলিম] [10]
11/275. وَعَنْ أَبِي شُرَيحٍ خُوَيْلِدِ بنِ عَمرٍو الخُزَاعِيِّ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ النَّبيُّ ﷺ: «اَللهم إنِّي أُحَرِّجُ حَقَّ الضَّعِيفَينِ : اليَتِيم وَالمَرْأةِ».حديث حسن رواه النسائي بإسناد جيد
১১/২৭৫। আবূ শুরাইহ্ খুওয়াইলিদ ইবনি ‘আমর খুযা‘য়ী রাঃআঃ বলেন, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমি লোকদেরকে দুই শ্রেণীর দুর্বল মানুষের অধিকার সম্বন্ধে পাপাচারিতার ভীতিপ্রদর্শন করছি; এতীম ও নারী।’’ [নাসায়ী, উত্তম সূত্রে] [11]
12/276. وَعَن مُصعَبِ بنِ سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ: رَأى سَعدٌ أنَّ لَهُ فَضْلاً عَلَى مَنْ دُونَهُ، فَقَالَ النَّبيُّ ﷺ: «هَلْ تُنْصَرُونَ وتُرْزَقُونَ إلاَّ بِضُعَفَائِكُمْ». رواه البخاري هكذا مُرسلاً، فَإِنَّ مُصعَبَ بنَ سَعدَ تَابِعِيٌّ، وَرَوَاهُ الحَافِظ أَبُو بَكرٍ البَرقَاني في صَحِيحِهِ مُتَّصِلاً عَن مُصعَبٍ، عَنْ أَبِيهِ رضي الله عنه.
১২/২৭৬। মুসআব ইবনি সা‘দ ইবনি আবী অক্কাস রাঃআঃ [তাহাঁর পিতা] সা‘দ ধারণা করিলেন যে, তার চেয়ে নিম্নশ্রেণীর লোকের উপর তাহাঁর মর্যাদা রয়েছে। নবী সাঃআঃ বলিলেন, ‘‘তোমাদেরকে দুর্বলদের কারণেই সাহায্য করা হয় এবং রুযী দেওয়া হয়।[12] [বুখারী মুরসাল সূত্রে, যেহেতু মুসআব ইবন সা‘দ তাবেঈ। তবে হাফেয আবূ বকর বারক্বানী তাহাঁর সহীহ গ্রন্থে ‘মুস‘আব নিজ পিতা হতে’ মুত্তাসিল সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন।]
13/277. وَعَنْ أَبِي الدَّردَاءِ عُوَيمِرٍ رضي الله عنه، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ، يَقُولُ: «ابْغُونِي الضُّعَفَاءَ، فَإنَّمَا تُنْصَرُونَ وتُرْزَقُونَ، بِضُعَفَائِكُمْ». رواه أَبُو داود بإسناد جيد
১৩/২৭৭। আবূ দারদা উআইমির রাঃআঃ বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-কে বলিতে শুনেছি, ‘‘আমার জন্য তোমরা দুর্বলদেরকে খুঁজে আনো, কেননা তোমাদের দুর্বলদের কারণেই তোমাদেরকে সাহায্য করা হয় এবং রুযী দেওয়া হয়।’’ [আবূ দাউদ, উত্তম সূত্রে] [13]
[1] মুসলিম ২৪১৩, ইবনু মাজাহ ৪১২৮
[2] মুসলিম ২৫০৪, আহমাদ ২০১১৭
[3] সহীহুল বুখারী ৫৩০৪, ৬০০৫, তিরমিযী ১৯১৮, আবূ দাউদ ৫১৫০, আহমাদ ২২৩১৩
[4] মুসলিম ২৯৮৩, আহমাদ ৮৬৬৪
[5] সহীহুল বুখারী ১৪৭৬, ১৪৭৯,৪৫৩৯, মুসলিম ১০৩৯, নাসায়ী ২৫৭১, ২৫৭২, ২৫৭৩, আবূ দাউদ ১৬৩১, আহমাদ ৭৪৮৬, ২৭৪০৪, ৮৮৬৭, ৮৮৯৫, ৯৪৫৪, মুওয়াত্তা মালেক -১৪৩৭, দারেমী ১৬১৫
[6] সহীহুল বুখারী ৫৩৫৩, ৬০০৭, ৬০০৬, মুসলিম ২৯৮২, তিরমিযী ১৯৬৯, নাসায়ী ২৫৭৭, ইবনু মাজাহ ২১৪০, আহমাদ ৮৫১৫
[7] সহীহুল বুখারী ৫১৭৭, মুসলিম ১৪৩২, আবূ দাউদ ৩৭৪২, ইবনু মাজাহ ১৯১৩, আহমাদ ৭২৩৭, ৭৫৬৯, ৭০০৮, ১০০৪০, মুওয়াত্তা মালেক -১১৬০, দারেমী ২০৬৬
[8] মুসলিম ২৬৩১, তিরমিযী ১৯১৪, আহমাদ ১২০৮৯
[9] সহীহুল বুখারী ১৪১৮, ৫৯৯৫, মুসলিম ২৬২৯, তিরমিযী ১৯১৫, আহমাদ ২৩৫৩৬, ২৪০৫১, ২৪০৯০, ২৪৮০৪, ২৫৫২৯
[10] সহীহুল বুখারী ১৪১৮, ৫৯৯৫, মুসলিম ২৬৩০, ২৯২৯, তিরমিযী ১৯১৫, ইবনু মাজাহ ৩৬৬৮, আহমাদ ২৩৫৩৫, ২৪০৫১, ২৪০৯০, ২৪৮০৪, ২৫৫২৯
[11] ইবনু মাজাহ ৩৬৭৮, আহমাদ ৯৩৭৪
[12] সহীহুল বুখারী ২৮৯৬, নাসায়ী ৩১৭৮, আহমাদ ১৪৯৬
[13] তিরমিযী ১৭০২, আবূ দাউদ ২৫৯৪
Leave a Reply