নবীর তাওয়াক্কুল, ফযীলত, হিদায়াত, উম্মাত ও মুজিযা

নবীর তাওয়াক্কুল, ফযীলত, হিদায়াত, উম্মাত ও মুজিযা

নবীর তাওয়াক্কুল, ফযীলত, হিদায়াত, উম্মাত ও মুজিযা  >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর বংশে ফযীলত এবং নুবূওয়াত প্রাপ্তির আগে [তাঁকে] পাথরের সালাম করা প্রসঙ্গ
২. অধ্যায়ঃ আমাদের নবী [সাঃআঃ] -কে সমুদয় সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান প্রসঙ্গ
৩. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর মুজিযা প্রসঙ্গ
৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার উপরে নবী [সাঃআঃ] -এর তাওয়াক্কুল এবং তাঁকে লোকদের [অনিষ্ট] হইতে আল্লাহ তাআলার হিফাযাত
৫. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] যে হিদায়াত ও ইলম সহ প্রেরিত হয়েছেন তা দৃষ্টান্তের বিবরণ
৬. অধ্যায়ঃ উম্মাতের প্রতি নবী [সাঃআঃ]-এর স্নেহ এবং তাদের জন্য ক্ষতিকর বিষয় থেকে গুরুত্ব সহকারে সতর্কীকরণ
৭. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর শেষ নবী হওয়ার বিবরণ
৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলা কোন উম্মাতের প্রতি রহম করার ইচ্ছা করলে সে উম্মাতের নবী কে তাদের আগে তুলে নেন

১. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর বংশে ফযীলত এবং নুবূওয়াত প্রাপ্তির আগে [তাঁকে] পাথরের সালাম করা প্রসঙ্গ

৫৮৩২. আবু আম্মার শাদ্দাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি ওয়াসিলাহ্ ইবনি আসকা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বলিতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ মহান আল্লাহ ইসমাঈল [আঃ]-এর সন্তানদের থেকে কিনানাহ্-কে চয়ন করে নিয়েছেন, আর কিনানাহ্ [র বংশ] হইতে, কুরায়শ-কে বাছাই করে নিয়েছেন আর কুরায়শ [বংশ] হইতে বানূ হাশিমকে বাছাই করে নিয়েছেন এবং বানূ হাশিম হইতে আমাকে বাছাই করে নিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭০]

৫৮৩৩. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি মাক্কায় একটি পাথরকে জানি, যে আমার [নবীরূপে] প্রেরিত হওয়ার আগেও আমাকে সালাম করত; আমি এখনও তাকে সন্দেহাতীতভাবে চিনতে পারি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭১]

২. অধ্যায়ঃ আমাদের নবী [সাঃআঃ] -কে সমুদয় সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান প্রসঙ্গ

৫৮৩৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি কিয়ামাতের দিন আদাম সন্তানদের সরদার হব এবং আমিই প্রথম ব্যক্তি যার কবর খুলে যাবে এবং আমিই প্রথম সুপারিশকারী ও প্রথম সুপারিশ গৃহীত ব্যক্তি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭২]

৩. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর মুজিযা প্রসঙ্গ

৫৮৩৫. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একবার নবী [সাঃআঃ] পানি আনতে বলিলেন, তখন একটি প্রশস্ত তল বিশিষ্ট অগভীর বর্তন নিয়ে আসা হলো। [তিনি তাতে হাত রেখে বারাকাতের দুআ করিলেন] এবং লোকেরা ওযূ করিতে লাগল। আমি তাদের সংখ্যা ষাট হইতে আশির মাঝে ধারণা করলাম। বর্ণনাকারী বলেন, আমি পানির দিকে চেয়ে থাকলাম- যা তার আঙ্গুলসমূহের মাঝ থেকে ফোয়ারার মতো বেরিয়ে আসছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৩]

৫৮৩৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে লক্ষ্য করলাম, তখন আসরের নামাজের সময় হয়ে গিয়েছিল আর লোকেরা ওযূর পানি সন্ধান করছিল; কিন্তু তারা খুঁজে পেল না। এ সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে কিছু ওযূর পানি আনা হলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সে পানির বর্তনে তাহাঁর হাত রেখে দিলেন এবং লোকদের তা হইতে ওযূ করিতে বলিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি দেখলাম, পানি তাহাঁর অঙ্গুলিসমূহের নিচ থেকে উচ্ছ্বল তরঙ্গের মত বেরিয়ে আসছে। তখন লোকেরা ওযূ করিল, এমনকি তাদের শেষ লোক পর্যন্ত সবাই অযূ করিতে সক্ষম হলো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৪]

৫৮৩৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সাহাবীগণ যাওরা নামক স্থানে ছিলেন। রাবী বলেন, যাওরা হলো মাদীনার বাজার ও মাসজিদের সন্নিকটে একটি স্থান। সে সময় তিনি একটি পাত্র নিয়ে আসতে বলিলেন, যাতে অল্প পানি ছিল। তিনি তাহাঁর [হাতের] মুষ্ঠি তাতে রাখলেন। তখন তাহাঁর অঙ্গুলিসমূহের মধ্য হইতে [পানি] উতড়িয়ে বের হইতে লাগল আর তাহাঁর সাহাবীগণ সবাই অযূ করিলেন। বর্ণনাকারী {কাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আবু হাম্যাহ্ [রাদি.]। তাঁরা কতজন ছিলেন? তিনি বলিলেন, তাঁরা ছিলেন তিনশ জনের মতো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৫]

৫৮৩৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যাওরায় ছিলেন। সে সময় একটি পানির পেয়ালা নিয়ে আসা হলো, যার পানিতে তাহাঁর অঙ্গুলিসমূহ ডুবছিল না অথবা ঐ পরিমাণ, যা তাহাঁর অঙ্গুলিসমূহ ডুবাতে পারে না। তারপর [পূর্বোল্লিখিত হাদীসের] বর্ণনাকারী হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৬]

৫৮৩৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উম্মু মালিক [রাদি.] তাহাঁর একটি চামড়ার পেয়ালায় নবী [সাঃআঃ]-এর জন্য ঘি উপঢৌকন পাঠাতেন। [কোন কোন সময়] তার ছেলেরা তার নিকট এসে [রুটি মাখাবার জন্য] তরকারি চাইত। কিন্তু তখন তাদের নিকট কিছু থাকত না। তাই তিনি [উম্মু মালিক] সে পেয়ালাটির নিকট যেতেন যাতে তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর জন্য উপঢৌকন প্রেরণ করিতেন। তখন তিনি তাতে কিছু ঘি পেয়ে যেতেন। তারপর তা তার ঘরের [রুটি মাখাবার] তরকারির কাজ দিতে থাকল। যে পর্যন্ত না সেটি [আঙ্গুল দিয়ে মুছে] নিংড়ে ফেললেন। সে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলে তিনি বললেনঃ তুমি সেটি নিংড়ে ফেলেছ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ! তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি সেটিকে [না মুছে] যথাবস্থায় রেখে দিলে তা কিছু মওজুদ থেকেই যেত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৭]

৫৮৪০. সালামাহ্ ইবনি শাবীব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক লোক খাবার চাইতে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলো। তিনি তাকে অর্ধ ওয়াস্ক যব খাবার জন্য দিলেন। লোকটি তা থেকে আহার করিতে থাকল আর তার স্ত্রী এবং তাদের [দুজনের] মেহমানরাও। পরিশেষে সে [একদিন] তা মেপে দেখল। ফলে তা ফুরিয়ে গেল। তারপরে সে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট [অভিযোগ নিয়ে] আসল। তিনি বলিলেন, যতি তুমি তা মেপে না দেখিতে, তাহলে তোমরা তা থেকে আহার করিতে থাকতে এবং তা তোমাদের জন্য [দীর্ঘ সময়] বিদ্যমান থাকত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৮]

৫৮৪১. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তাবূক যুদ্ধের বছর আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে [যুদ্ধে] বের হলাম। [এ সফরে] তিনি [দু] নামাজ একসাথে আদায় করিতেন। অর্থাৎ, যুহ্র ও আস্র একসাথে আদায় করিতেন, আর মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করিতেন। পরিশেষে একদিন [এমন] হলো যে, নামাজ দেরিতে আদায় করিলেন। তারপর বের হয়ে এসে যুহর ও আস্র একসাথে আদায় করিলেন, তারপর [তাঁবুতে] ঢুকলেন। অতঃপর আবার বেরিয়ে এলেন এবং মাগরিব ও ইশা একসাথে আদায় করিলেন। অতঃপর বলিলেন, ইন্শাআল্লাহ তোমরা আগামীকাল তাবূক জলাশয়ে পৌঁছবে, তবে চাশ্‌তের সময় না হওয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে পৌঁছতে পারবে না। তোমাদের মাঝে যে [ই] সেখানে [প্রথমে] পৌঁছবে সে যেন তার পানির কিছুই স্পর্শ না করে- যতক্ষণ না আমি এসে পৌঁছি। আমরা [ঠিক সময়েই] সেখানে পৌঁছলাম। [কিন্তু] ইতোমধ্যে দু লোক আমাদের পূর্বে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল। আর প্রসবণটিতে জুতার ফিতার ন্যায় ক্ষীণ ধারায় সামান্য পানি বের হচ্ছিল। মুআয বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঐ দুজনকে প্রশ্ন করিলেন, তোমরা তা হইতে কিছু পানি ছুঁয়েছো কি? ….. তারা উভয়ে বলিল, হ্যাঁ! তখন নবী [সাঃআঃ] তাদের দুজনকে ভর্ৎসনা করিলেন। আর আল্লাহর যা ইচ্ছা তাই তাদের বলিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর লোকেরা তাদের হাত দিয়ে অঞ্জলি ভরে ভরে প্রসবণ হইতে অল্প অল্প করে [পানি] তুলল, পরিশেষে তা একটি পাত্রে কিছু পরিমাণ জমা হলো। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার মাঝে তাহাঁর দুহাত এবং মুখ ধুলেন এবং তারপরে তা [পানি] তাতে [প্রসবণে] উল্টিয়ে [ঢেলে] দিলেন। ফলে পানির প্রসবণটি প্রবল পানি ধারায় কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন, অধিক পরিমাণে প্রবাহিত হইতে লাগল। আবু আলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সন্দেহ করিয়াছেন যে, বর্ণনাকারী এর মধ্যে কোন্টি বলেছেন। এবার লোকেরা পানি প্রয়োজন মতো পান করিল। পরে নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, হে মুআয! তুমি যদি দীর্ঘায়ু হও, তবে আশা করা যায় যে, তুমি দেখিতে পাবে প্রসবণের এ জায়গাটি বাগানে ভরে গেছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৭৯]

৫৮৪২. আবু হুমায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে তাবূক যুদ্ধের জন্য বের হলাম। আমরা ওয়াদিল কুরা এলাকায় এক মহিলার একটি বাগানের নিকট পৌঁছলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা এর পরিমাণ ধারণা করো। আমরা এর পরিমাণ অনুমান করলাম। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দশ ওয়াস্ ক[প্রায় পঞ্চাশ মণ] পরিমাণ ধারণা করিলেন এবং [মেয়ে লোকটিকে] বলিলেন, ইন্শাআল্লাহ আমরা তোমার এখানে ফিরে আসা পর্যন্ত এ পরিমাণ ধরে রাখো। তারপরে আমরা অগ্রসর হলাম এবং তাবূকে পৌঁছে গেলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ রাতে প্রচণ্ড বায়ু প্রবাহ তোমাদের উপর দিয়ে বয়ে যাবে। তাই তোমাদের কেউ যেন তার মধ্যে দাঁড়িয়ে না থাকে এবং যার উট আছে সে যেন তার দঁড়ি মজবুত করে বেঁধে রাখে। অতঃপর দেখা গেল, অনেক বাতাস প্রবাহিত হলো। জনৈক লোক দাঁড়ালে বাতাস তাকে তুলে নিয়ে পরিশেষে তাই নামক পাহাড়ে ফেলে দিল। আর [ঐ সময় নিকটবর্তী] আয়লার অঞ্চল প্রধান [শাসক] ইবনিল আলমা-র দূত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট একটি পত্র নিয়ে আসলো এবং তিনি তাঁকে একটি সাদা খচ্চর উপঢৌকন পাঠালেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও তার নিকট চিঠি লিখে পাঠালেন এবং তাকে একটি চাদর উপঢৌকন হিসেবে প্রেরণ করিলেন। এরপর আমরা এগিয়ে চলতে চলতে ওয়াদিল কুরা পৌঁছলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্ত্রীলোকটিকে [বাগানের মালিক] তার বাগান সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন যে, তার ফল কি পরিমাণে পৌঁছেছে? সে বলিল, দশ ওয়াস্ক। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি দ্রুত যাচ্ছি। তোমাদের মাঝে যার ইচ্ছা হয় সে আমার সাথে অবিলম্বে যেতে পারে। আর যার ইচ্ছা সে থেকে যেতে পারে। অতঃপর আমরা বেরিয়ে গেলাম। পরিশেষে মাদীনার নিকটবর্তী এলাকায় পৌঁছলাম। সে সময় তিনি বলিলেন, এ [মাদীনাহ্] হলো তাবা-পবিত্র ও উত্তম জায়গা। আর এ হলো উহুদ। আর তা এমন পর্বত, যে আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। এরপর বলিলেন, আনসারীদের শ্রেষ্ঠ পরিবার বানূ নাজ্জার, এরপর বানূ আবদুল আশ্হাল, তারপর বানূ হারিস ইবনি খাযরাজ, অতঃপর বানূ সাইদাহ্ পরিবার। আর আনসারদের প্রতিটি সম্প্রদায়ই ভাল। সাদ ইবনি উবাদাহ্‌ [রাদি.] আমাদের সঙ্গে এসে একত্রিত হলে [তাহাঁর সম্প্রদায়ের] আবু উসায়দ [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, আপনি কি দেখেননি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আনসার সম্প্রদায়গুলোর মাঝে ধারাবাহিকভাবে শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করিয়াছেন এবং আমাদের সম্প্রদায়কে তালিকার শেষে রেখেছেন। তখন সাদ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে গেলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আনসার সম্প্রদায়গুলোর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করিয়াছেন এবং আমাদের শেষে রেখেছেন! তখন তিনি বলিলেন, শ্রেষ্ঠ তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াও কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয়?

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮০]

৫৮৪৩. আমর ইবনি ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত সূত্রে আনসারদের প্রতিটি সম্প্রদায়ের কল্যাণ আছে পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি পরবর্তী অংশ- সাদ ইবনি উবাদাহ্ [রাদি.] সম্বন্ধে বর্ণনা উল্লেখ করেননি। তবে উহায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে বেশি উল্লেখ করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার [ইবনিল আলমা]-র জন্য তাদের জনপদগুলো লিখে দিলেন। উহায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণিত হাদীসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও তার নিকট চিঠি লিখে প্রেরণ করিলেন- উক্তিটি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮১]

৪. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার উপরে নবী [সাঃআঃ] -এর তাওয়াক্কুল এবং তাঁকে লোকদের [অনিষ্ট] হইতে আল্লাহ তাআলার হিফাযাত

৫৮৪৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে নাজ্দ-এর দিকে একটি জিহাদে গেলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [পেছন হইতে এসে] একটি কাঁটাবন যুক্ত উপত্যকায় আমাদের পেলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি গাছের তলায় অবতরণ করিলেন এবং তাহাঁর তলোয়ারটি সে বৃক্ষের একটি শাখায় লটকিয়ে রাখলেন। বর্ণনাকারী {জাবির [রাদি.]} বলেন, আর লোকেরা গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেয়ার জন্য প্রান্তরে ছড়িয়ে পড়ল। বর্ণনাকারী বলেন, পরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ জনৈক লোক আমার নিকট আসলো তখন আমি ঘুমন্ত। সে তলোয়ারটি হাতে নিল। আমি জেগে উঠলাম, আর সে আমার মাথার কাছে দণ্ডায়মান। আমি কিছু বুঝে না উঠতেই [দেখি] উন্মুক্ত তলোয়ারটি তার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে। অতঃপর সে আমাকে বলিল, কে তোমাকে আমা হইতে রক্ষা করিবে? তিনি বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ! সে দ্বিতীয় বার বলিল, তোমাকে আমার হাত থেকে কে রক্ষা করিবে? তিনি বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সে তখন তলোয়ারটি ভিতরে ঢুকিয়ে রাখল। আর ওই যে সে বসে আছে। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে কিছুই বলিলেন না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮২]

৫৮৪৫. সিনান ইবনি আবু সিনান দুওয়ালী ও আবু সালামাহ্ ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ আনসারী [রাদি.] ….. তিনি ছিলেন নবী [সাঃআঃ]-এর একজন সহাবী। তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে নাজ্দ অভিমুখে একটি মিশনে গেলেন। নবী [সাঃআঃ] যখন ফিরে এলেন তখন তিনিও তাহাঁর সাথে ফিরে আসেন। এরপর দুপুরের বিশ্রামকালে সকলে উপস্থিত হলো …..। তারপর ইব্রাহীম ইবনি সাদ ও মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের হুবহু উল্লেখ করিয়াছেন।

[ই.ফা.৫৭৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৩]

৫৮৪৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে এগিয়ে চললাম। পরিশেষে আমরা যখন যাতুর রিকায় পৌঁছলাম …..। এরপর যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে আর কোন কিছু বলেননি- উক্তটি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৪]

৫. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] যে হিদায়াত ও ইলম সহ প্রেরিত হয়েছেন তা দৃষ্টান্তের বিবরণ

৫৮৪৭. আবু বুরদাহ্ [রাদি.] ও আবু মূসা [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে যে হিদায়াত ও ইল্‌ম সহকারে প্রেরণ করিয়াছেন; তার দৃষ্টান্ত সে বৃষ্টির মত যা কোন ভূমিতে বর্ষিত হলো, আর সে ভূমির উৎকৃষ্ট কতকাংশ পানি গ্রহণ করে এবং প্রচুর তরতাজা ঘাস-পাতা উৎপাদন করে। আর কতকাংশ হলো শক্ত মাটি, যা পানি আবদ্ধ রাখে, ফলে আল্লাহ তাআলা তা দ্বারা মানুষের উপকার করেন এবং তারা তা থেকে পান করেন, [অন্যদের] পান করায় ও পশু চড়ায়। আর বৃষ্টি সে জমির আরও কিয়দংশ বর্ষিত হলো- যা উঁচু অনুর্বর, যা কোন পানি আবদ্ধ করে রাখে না আর কোন লতা-পাতাও উৎপাদিত করে না। সে উদাহরণ হলো সেসব লোকের- যারা আল্লাহর দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং আল্লাহ তাদের সেসব বস্তু দিয়ে উপকৃত করেন যা নিয়ে আল্লাহ আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন। ফলে সে ইল্‌ম অর্জন করে অন্যকেও শিক্ষা দেয়। আর তৃতীয় উদাহরণ হলো ঐ লোকদের যারা তার প্রতি মাথা উঁচু করেও তাকায় না এবং আল্লাহর ঐ হিদায়াতও কবূল করে না, যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৫]

৬. অধ্যায়ঃ উম্মাত এর প্রতি নবী [সাঃআঃ]-এর স্নেহ এবং তাদের জন্য ক্ষতিকর বিষয় থেকে গুরুত্ব সহকারে সতর্কীকরণ

৫৮৪৮. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উদাহরণ এবং আল্লাহ যা দিয়ে আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন তার উদাহরণ সে ব্যক্তির উপমার মতো যে তার স্বজাতির নিকট এসে বলে, হে আমার গোত্র! আমি আমার দু চোখে [শত্রু] সেনা দেখে এসেছি, আর আমি [সুস্পষ্ট] সতর্ককারী।

সুতরাং আত্মরক্ষা করো। তখন তার গোত্রের একদল তার কথা মেনে নিল এবং রাতের অন্ধকারে সুযোগে [জায়গা ত্যাগ করে] চলে গেল। আর একদল তাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করে ভোর পর্যন্ত স্ব-স্থান হইতে চলে গেল। ফলে [শত্রু] বাহিনী সকালে তাদের হামলা করিল এবং তাদের সমূলে ধ্বংস করে দিল। সুতরাং এ হলো তাদের উপমা যারা আমার আনুগত্য করিল এবং আমি যা নিয়ে এসেছি তার অনুররণ করিল এবং ওদের উদাহরণ যারা আমার অবাধ্য হলো এবং যে সত্য আমি নিয়ে এসেছি তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৬]

৫৮৪৯. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উপমা ও আমার উম্মাতের উপমা সে ব্যক্তির উপমার মতো, যে অগ্নি প্রজ্জ্বলন করেছে ফলে মাকড় ও কীট-পতঙ্গ তাতে জ্বলতে লাগল। আমি তোমাদের কোমরবন্ধ ধরে [তোমাদের রক্ষার জন্যে] টানছি আর তোমরা সবাই যেন তাতে পড়তে যাচ্ছো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৭]

৫৮৫০. আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উপরোক্ত সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

হুবহু রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৭, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৫৮৫১. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এগুলো হলো সেসব [হাদীস], যা আবু হুরায়রা্ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে আমাদের নিকট রিওয়ায়াত করিয়াছেন। এরপর সেগুলো হইতে তিনি কিছু হাদীস বর্ণনা করেন। তার একটি হলো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার অবস্থা সে লোকের অবস্থার মতো যে আগুন জ্বালিয়েছিল, তখন তাতে তার চতুষ্পার্শ্ব আলোকিত হলো, তখন পতঙ্গ ও সেসব জন্তু যা আগুনে পড়ে থাকে, তাতে পড়তে লাগল আর সে লোক সেগুলোকে বাধা দিতে লাগল। তবে তারা তাকে হারিয়ে দিয়ে তাতে ঢুকে পড়তে লাগল। তিনি বলিলেন, এটাই হলো তোমাদের অবস্থা আর আমার অবস্থা। আমি আগুন থেকে রক্ষার জন্য তোমাদের কোমরবন্ধগুলো ধরে টানি ও বলি যে, আগুন হইতে দূরে থাকো, আগুন থেকে দূরে থাকো এবং তোমরা আমাকে পরাস্ত করে তার মধ্যে ঢুকে পড়ছো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৮]

৫৮৫২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উপমা ও তোমাদের উপমা সে লোকের উপমার মতো যে আগুন জ্বালালো, ফলে ফড়িং দল আর পতঙ্গ তাতে ঝাপিয়ে পড়তে লাগল আর সে লোক তাদের তা থেকে বিতাড়িত করিতে লাগল। আমিও আগুন থেকে রক্ষার জন্য তোমাদের কোমরবন্ধ ধরে টানছি, আর তোমরা আমার হাত থেকে ছুটে যাচ্ছ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৮৯]

৭. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-এর শেষ নবী হওয়ার বিবরণ

৫৮৫৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার দৃষ্টান্ত এবং নবী গণের দৃষ্টান্ত সে লোকের দৃষ্টান্তের সাথে তুলনীয়, যে একটি অট্টালিকা প্রস্তুত করিল এবং সে তা সুন্দর ও সুদৃশ্যপূর্ণ করিল। পরে [তা দর্শনে আগত] লোকেরা তার চারদিকে ঘুরে দেখিতে লাগল [এবং] বলিতে লাগল যে, এর চাইতে সুন্দর কোন অট্টালিক আমরা দেখিনি। কিন্তু এ একটি ইটের স্থান সমাপ্ত হয়নি। {নবী [আঃ] বলেন,} আমিই হলাম সে ইটখানি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯০]

৫৮৫৪. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন এ হলো সে সব হাদীস, যা আবু হুরায়রা্ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে আমাদের নিকট উল্লেখ করিয়াছেন। তারপর তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেন। তার একটি হলো, আবুল কাসিম [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার দৃষ্টান্ত ও আমার পূর্বেকার নবী গণের দৃষ্টান্ত সে লোকের উপমার মতো, যে কতকগুলো গৃহ বানালো, তা সুন্দর করিল এবং সুদৃশ্য করিল এবং পূর্ণাঙ্গ করিল; কিন্তু তার কোন একটির কোণে একটি ইটের স্থান ছাড়া [খালি রাখল]। লোকেরা সে ঘরগুলোর চারদিকে চক্কর দিতে লাগল আর সে ঘরগুলো তাদের মুগ্ধ করিতে লাগল। পরিশেষে তারা বলিতে লাগল, এখানে একখাটি ইট লাগালেন না কেন? তাহলে তো আপনার অট্টালিকা পূর্ণাঙ্গ হত! অতঃপর মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] বলেন যে, আমি-ই হলাম সে ইটখানি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯১]

৫৮৫৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেনঃ আমার উপমা এবং আমার পূর্ববর্তী নবী গণের উপমা সে লোকের উপমার মতো, যে একটি অট্টালিকা বানালো এবং তা সুন্দর ও সুচারুরূপে গড়ে তুলল, তবে তার কোণগুলোর কোন এক কোণায় একটি ইটের স্থান ব্যতীত। লোকেরা তার চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখিতে লাগল আর তা দেখে আশ্চর্য হইতে লাগল এবং পরস্পর বলিতে লাগল, ঐ ইটখানি স্থাপন করা হলো না কেন? {নবী [আঃ]} বলেনঃ আমি-ই সে ইটখানি আর আমি নবী গণের মোহর ও শেষ নবী।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯২]

৫৮৫৬. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেনঃ আমার উপমা এবং নবী গণের উপমা ….. তারপর পূর্বোল্লিখিত হাদীসের অবিকল হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯৩]

৫৮৫৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উপমা এবং নবী গণের উপমা সে লোকের উপমা তুল্য, যে একটি বাড়ি তৈরি করিল এবং সে তা সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ করিল, তবে একটি ইটের স্থান ছাড়া। লোকেরা তাতে ঢুকতে লাগল এবং তা দেখে আশ্চর্য হইতে লাগল এবং বলাবলি করিতে থাকল, যদি এ একখানি ইটের স্থান খালি না থাকত [তবে কতই না উত্তম হত]! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমি হলাম সে ইটের স্থান। আমি আগমন করলাম এবং নবীগণের পরম্পরা শেষ করলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯৪]

৫৮৫৮. সালীম {ইবনি হাইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

হুবহু হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। তবে তিনি أَتَمَّهَا (পরিপূর্ণ করেছে)-এর স্থলে أَحْسَنَهَا (সুন্দর করেছে) বলেছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৭৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯৫]

৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলা কোন উম্মাতের প্রতি রহম করার ইচ্ছা করলে সে উম্মাতের নবী কে তাদের আগে তুলে নেন

৫৮৫৯. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেনঃ মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তাআলা যখন তাহাঁর বান্দাদের মধ্যে কোন উম্মাতের প্রতি রহ্মাতের ইচ্ছা করেন, তখন তাদের নবীকে তাদের পূর্বেই তুলে নেন এবং তাঁকে তাদের যুগের অগ্রগণ্য ও পূর্ববর্তী করেন। আর যখন কোন উম্মাতকে বিনাশ করার ইচ্ছা করেন, তখন তাদের নবীর জীবিতাবস্থায় তাদের শাস্তি দেন এবং এ অবস্থায় তাদের বিনাশ করেন যে, তিনি [নবী] তা দেখিতে পান। এরপর তাদের ধ্বংস দেখে তাহাঁর চোখ শান্ত করেন, যেহেতু তারা তাঁকে অমান্য করেছিল ও তাহাঁর আদর্শ অস্বীকার করেছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৯৬]

Comments

One response to “নবীর তাওয়াক্কুল, ফযীলত, হিদায়াত, উম্মাত ও মুজিযা”

Leave a Reply