মুসলিমদের দোষ ত্রুটি গোপন রাখা জরুরী । রিয়াদুস সালেহীন
মুসলিমদের দোষ ত্রুটি গোপন রাখা জরুরী । রিয়াদুস সালেহীন >> রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন
পরিচ্ছেদ – ২৮ : মুসলিমদের দোষ ত্রুটি গোপন রাখা জরুরী এবং বিনা প্রয়োজনে তা প্রচার করা নিষিদ্ধ
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ ٱلۡفَٰحِشَةُ فِي ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِۚ ﴾ [النور: ١٩]
অর্থাৎ “যারা মু’মিনদের মাঝে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাহাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।” [সূরা নূর ১৯ আয়াত]
1/245. وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «لاَ يَسْتُرُ عَبْدٌ عَبْداً في الدُّنْيَا إلاَّ سَتَرَهُ اللهُ يَوْمَ القِيَامَةِ». رواه مسلم
১/২৪৫। আবু হুরায়রা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেন, ‘‘যে দুনিয়াতে কোনো বান্দার দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন।’’ [মুসলিম] [1]
2/246. وَعَنهُ، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ، يَقُولُ: «كُلُّ أُمَّتِي مُعَافىَ إلاَّ المُجَاهِرِينَ، وَإنّ مِنَ المُجَاهَرَةِ أنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ باللَّيلِ عَمَلاً، ثُمَّ يُصْبِحُ وَقَدْ سَتَرَهُ اللهُ عَلَيهِ، فَيقُولُ : يَا فُلانُ، عَمِلتُ البَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ، وَيُصبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللهِ عَنْه». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২/২৪৬। উক্ত সাহাবী থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-কে বলিতে শুনেছি, ‘‘আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে পাপ-প্রকাশকারী ব্যতীত। আর এক প্রকার প্রকাশ এই যে, কোনো ব্যক্তি রাতে কোনো পাপকাজ করে, যা আল্লাহ গোপন রাখেন। কিন্তু সকাল হলে সে বলে বেড়ায়, ‘হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি।’ অথচ সে এমন অবস্থায় রাত্রি অতিবাহিত করেছিল যে, আল্লাহ তার পাপ গুপ্ত রেখেছিলেন। কিন্তু সে সকালে উঠে তার উপর আল্লাহর আবৃত পর্দা খুলে ফেলে!’’ [বুখারী ও মুসলিম] [2]
3/247. وعنه، عن النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ فَتَبيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَجْلِدْهَا الحَدَّ، وَلا يُثَرِّبْ عَلَيْهَا، ثُمَّ إنْ زَنَتِ الثَّانِيَةَ فَلْيَجْلِدْهَا الحَدَّ، وَلا يُثَرِّبْ عَلَيْهَا، ثُمَّ إنْ زَنَتِ الثَّالِثَةَ فَلْيَبِعْهَا وَلَوْ بِحَبْل مِنْ شَعَر». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৩/২৪৭। উক্ত রাবী রাঃআঃ থেকেই বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘[কারো] দাসী যখন ব্যভিচার করে আর তা প্রমাণিত হয়ে যায়, তখন সে যেন তাকে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত বেত্রাঘাত করে এবং তিরস্কার না করে। অতঃপর দ্বিতীয়বার যদি ব্যভিচার করে, তাহলে সে যেন তাকে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত বেত্রাঘাত করে এবং তিরস্কার না করে। পুনরায় যদি ব্যভিচার করে, তাহলে যেন চুলের একটি রশির বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রি করে দেয়।’’ [বুখারী ও মুসলিম] [3]
4/248. وَعَنهُ، قَالَ : أُتِيَ النَّبيَّ ﷺ بِرَجُلٍ قَدْ شَرِبَ خَمْراً، قَالَ: «اضْربُوهُ»قَالَ أَبُو هريرة : فَمِنَّا الضَّارِبُ بِيَدِهِ، والضَّارِبُ بِنَعْلِهِ، وَالضَّارِبُ بِثَوبِهِ . فَلَمَّا انْصَرَفَ، قَالَ بَعضُ القَومِ : أخْزَاكَ الله، قَالَ: «لا تَقُولُوا هَكَذا، لاَ تُعِينُوا عَلَيهِ الشَّيْطَانَ». رواه البخاري
৪/২৪৮। উক্ত রাবী রাঃআঃ থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, [একদা] নবী সাঃআঃ-এর নিকট এক মাতালকে উপস্থিত করা হল। তিনি তাকে প্রহার করার আদেশ দিলেন। আবু হুরায়রা রাঃআঃ বলেন, আমাদের মাঝে কেউ তাকে হাত দ্বারা, কেউ জুতা দ্বারা এবং কেউ বা কাপড় দ্বারা প্রহার করল। লোকটি যখন চলে গেল, তখন এক ব্যক্তি বলিল, ‘আল্লাহ তোকে লাঞ্ছিত করুক।’ তখন রাসূল সাঃআঃ বলিলেন, ‘‘এরূপ বলো না; তার বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ো না।’’ [বুখারী] [4]
[1] মুসলিম ২৫৯০, আহমাদ ২৭৪৮৪, ৮৯৯৫
[2] সহীহুল বুখারী ৬০৬৯, মুসলিম ২৯৯০
[3] সহীহুল বুখারী ২১৫২, ২১৫৪, ২২৩৩, ২২৩৪, ২৫৫৬, ৬৮৩৮, ৬৮৩৯, মুসলিম ১৭০৩, ১৭০৪, তিরমিযী ১৪৩৩, ১৪৪০, আবূ দাউদ ৪৪৬৯, ৪৪৭০, ইবনু মাজাহ ২৫৬৫, আহমাদ ৭৩৪৭, ৮৬৬৯, ৯১৭৪, ১০০৩৩, ১৬৫৯৫, মুওয়াত্তা মালেক ১৫৬৪, দারেমী ২৩২৬
[4] সহীহুল বুখারী ৬৭৭৭, ৬৭৮১, আবূ দাউদ ৪৪৭৭, আহমাদ ৭৯২৬
Leave a Reply