মদ হারাম এবং সিরকা ও চিকিৎসা করা হারাম
মদ হারাম এবং সিরকা ও চিকিৎসা করা হারাম >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১. অধ্যায়ঃ মদ হারাম এবং আঙ্গুরের রস, কাঁচা-পাকা খেজুর এবং কিসমিস ইত্যাদি থেকে তৈরি পানীয় যা নেশাগ্রস্ত করে সেগুলোর বর্ণনা
২. অধ্যায়ঃ মদ দ্বারা সিরকা তৈরি করা নিষেধ
৩. অধ্যায়ঃ মদ দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম
৪. অধ্যায়ঃ খেজুর ও আঙ্গুর হইতে যা কিছু পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় তাই মদ নামে পরিচিত
১. অধ্যায়ঃ মদ হারাম এবং আঙ্গুরের রস, কাঁচা-পাকা খেজুর এবং কিসমিস ইত্যাদি থেকে তৈরি পানীয় যা নেশাগ্রস্ত করে সেগুলোর বর্ণনা
৫০২১. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে বদর দিবসে আমি গনীমাত [যুদ্ধলব্ধ মাল] হইতে একটি বয়স্ক উট পেয়েছিলাম। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে আর একটি বয়স্ক উট দিয়েছিলেন। একদিন আমি জনৈক আনসারী ব্যক্তির দরজার সামনে সে দুটি বেঁধে রাখলাম। আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল, সে দুটির পিঠে করে কিছু ইযখির ঘাস বয়ে আনবো, আর তা বিক্রয় করে ফাতিমাহ্ [রাদি.]-এর ওয়ালীমায় সাহায্য নিব। আমার সঙ্গে ছিল বানূ কাইনুকা গোত্রের জনৈক স্বর্ণকার। হামযাহ্ ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] সে বাড়িতেই মদ পান করছিল। তার সাথে ছিল একজন গায়িকা। সে [তার গানের মধ্যে] বললঃ [………… আরবি] অর্থাৎ- হে হামযাহ্! হৃষ্টপুষ্ট উট দুটির কাছে যাও এবং মেহমানদের জন্য তা জবেহ করো।
তারপর হামযাহ্ ও দুটির নিকট ছুটে গেল। পরে দুটিরই কুজ {৩}কেটে ফেললো এবং তাদের পেট ফেড়ে দিল। তারপর সে এ দুটির কলিজা বের করে নিল।
আমি ইবনি শিহাবকে বললাম, তিনি কুজ দুটি কি করিলেন? তিনি বলিলেন, কুজ দুটি কেটে সাথে নিয়ে চললেন। ইবনি শিহাব বলেন, আলী [রাদি.] বলেছেন, এ মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে গেলাম। তাহাঁর নিকট ছিল যায়দ ইবনি হারিসাহ্ [রাদি.]। এরপর আমি তাঁকে পুরো ঘটনা জানালাম। তিনি যায়দ [রাদি.]-কে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন। আমিও তাহাঁর সাথে চললাম। হামযাহ্ [রাদি.]-এর নিকট গিয়ে তিনি তাকে কিছু কঠিন কথা বলিলেন। হামযাহ্ [রাদি.] চোখ তুলে বলিল, তোমরা তো আমার বাবার ক্রীতদাস ছাড়া কিছু নও। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পিছন দিকে ফিরে আসলেন। এমনকি তিনি তাদের নিকট থেকে বেরিয়ে চলে এলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬ষ্ঠ খণ্ড-৪৯৬৪, ইসলামিক সেন্টার-৪৯৭১]
বিঃ দ্রঃ ৪৯৬৪ নম্বরটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ভুলক্রমে দুইবার দিয়েছে।
{৩}জন্তুর বুক ও ঘাড়ের মাঝামাঝি উপরের অংশে বৃহৎ যে গোশ্তপিণ্ড তাকে কুজ বলা হয়।
৫০২২. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সূত্রে হুবহু বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৬৫, ইসলামিক সেন্টার-৪৯৭২]
৫০২৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন আমি গনীমাত থেকে আমার ভাগে একটি বয়স্ক উট পেয়েছিলাম। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেদিন এক পঞ্চমাংশ থেকে আমাকে আর একটি উট দিয়েছিলেন। আমি যখন রসূল [সাঃআঃ] তনয়া ফাতিমাহ্-এর সাথে বাসর যাপনের আকাঙ্ক্ষা করলাম, তখন বানূ কাইনুকা গোত্রের জনৈক স্বর্ণকার ও আমি উভয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ হলাম। সে আমার সাথে যাবে আর আমরা [দুজনে] ইয্খির [ঘাস] নিয়ে আসবো। আমি ইচ্ছা করলাম, এগুলো স্বর্ণকারদের কাছে বিক্রি করে তা দিয়ে আমার বিয়ের ওয়ালীমার বিষয়ে সাহায্য নিব। আমি উট দুটির জন্য বসার গদি, থলে এবং রশি ইত্যাদি জিনিস সংগ্রহ করছিলাম। আর আমার উট দুটি একজন আন্সারী লোকের গৃহের পাশে বাঁধা ছিল। আমিও যা সংগ্রহ করার সংগ্রহ করলাম। এমন সময় অকস্মাৎ লক্ষ্য করি সে দুটি [উটের] কুজ কেটে ফেলা হয়েছে, পেটের দিক কেটে ফেলা হয়েছে এবং উভয়ের কলিজা বের করে নেয়া হয়েছে। আমার দু নয়ন এ দৃশ্য সহ্য করিতে পারল না। আমি বলে উঠলাম, এ কাজ কোন্ লোক করিল? লোকেরা, বলিল হামযাহ্ ইবনি আবদুল মুত্তালিব। সে এ বাড়িতে আনসারদের একদল মদ্যপায়ীকারীদের মাঝে আছে। তাকে ও তার সঙ্গীদেরকে গান শুনাচ্ছিল এক গায়িকা। সে তার গানে বললঃ [………আরবি] অর্থাৎ- হে হামযাহ্! তুমি হৃষ্টপুষ্ট উট দুটির সন্মুখে যাবে কি? পরে হামযাহ্ তরবারি নিয়ে উঠলো, উট দুটির কুজ কেটে ফেললো, পশ্চাৎদিক চিড়ে ফেললো। অতঃপর ও দুটোর কলিজা নিয়ে গেল। আলী [রাদি.] বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকটে গিয়ে উপস্থিত হলাম, তখন তাহাঁর কাছে ছিল যায়দ ইবনি হারিসাহ্ [রাদি.]। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার অবয়ব দেখে বুঝতে পারলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ্র কসম, আজকের দিনের মতো আমি আর কখনও দেখিনি! হামযাহ্ আমার উট দুটির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উভয়ের কুজ দুটি কেটে ফেলেছে, পিছনের দিক কেটে ফেলেছে, এবং কলিজা খুলে নিয়েছে! সে ঐ গৃহে আছে আর তার সাথে আছে মদ্যপায়ীদের কিছু লোক। তিনি বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর চাদর নিয়ে আসতে বলিলেন। অতঃপর তা পরিধান করে হাঁটতে লাগলেন। আমি এবং যায়দ ইবনি হারিসাহ্ তাহাঁর পিছনে পিছনে অনুকরণ করলাম। পরিশেষে তিনি সে ঘরের দরজায় এসে অনুমতি চাইলেন যে ঘরে হামযাহ্ ছিল। তারা তাঁকে অনুমতি দিল। তিনি প্রবেশ করেই লক্ষ্য করিলেন মদ্যপায়ীর দল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হামযার অপকর্মের জন্য তাকে শাসন ও নিন্দা করিতে লাগলেন। এমতাবস্থায় হামযার চোখ দুটি লাল হয়ে গেল। সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। এরপর সে তার হাঁটুর দিকে তাকালো, তারপর আরো উঁচুতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিল তাহাঁর নাভীর দিকে, এরপর দৃষ্টি উঠালো তার চেহারার দিকে। এরপর হামযাহ্ বলিল, তোমরা তো আমার পিতার গোলাম ছাড়া কিছুই নও। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন বুঝতে পারলেন সে নেশাগ্রস্ত, তখন তিনি পিছনে হেঁটে বের হয়ে পড়লেন। আমরাও তাহাঁর সাথে বের হলাম।
[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৬৬, ইসলামিক সেন্টার-৪৯৭৩]
৫০২৪. যুহরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোল্লিখিত সূত্রে হুবহু বর্ণিত আছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৬৬, ইসলামিক সেন্টার-৪৯৭৪]
৫০২৫. আনাস ইবনি মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মদ হারাম হওয়ার দিন আমি আবু তালহার ঘরে লোকদের মদ পান করাচ্ছিলাম। তারা শুকনো ও কাঁচা খেজুরের মদ পান করতো [অর্থাৎ শুকনো ও কাঁচা খেজুর দ্বারা তৈরি ঘন তৈলাক্ত ও সিরকা পান করতো]। হঠাৎ শুনা গেল জনৈক লোক ঘোষণা দিচ্ছে। তিনি বলিলেন, বের হয়ে দেখো। আমি বের হয়ে দেখলাম, এক লোক ঘোষণা দিচ্ছে : শুনে রাখো মদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, অতঃপর মাদীনার চারপাশে ও অলিগলি দিয়ে মদের ঢল প্রবাহিত বইতে থাকে। আবু তাল্হাহ্ আমাকে বলিলেন, বের হও এবং এগুলো ঢেলে দিয়ে আসো। অতঃপর আমি সেগুলো ঢেলে দেই। তারা সবাই বা তাদের কেউ কেউ বলিলেন, অমুক নিহত হয়েছে! অমুক নিহত হয়েছে! অথচ তাদের উদরে মদ আছে। রাবী বলেন, আমি জ্ঞাত নই যে, এ কথাও আনাস [রাদি.]-এর হাদীসের অন্তর্ভুক্ত কি-না। এরপর আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন: “যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তারা পূর্বে যা খেয়েছে তাতে তাদের কোন গুনাহ নেই, যদি তারা সতর্ক হয় এবং ঈমান আনে ও সৎকাজ করে”– [সূরা আল-মায়িদাহ্] ৫:৯৩]।
[ই.ফা.৪৯৬৭, ইসলামিক সেন্টার-৪৯৭৫]
৫০২৬. আবদুল আযীয ইবনি সুহায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মানুষেরা আনাস [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিল ফাযীখ [খেজুরের তৈরি মদ] সম্পর্কে। তিনি বলিলেন, তোমরা যাকে ফাযীখ বলে সম্বোধন কর, তোমাদের এ ফাযীখ ব্যতীত আমাদের আর কোন মদ-ই ছিল না। আমি আমাদের ঘরে আবু তাল্হা, আবু আইয়ূব [রাদি.] এবং রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আরো কতিপয় সাহাবীকে মদপান করাতে মত্ত ছিলাম। এমন সময় এক লোক এসে বলিল, তোমাদের নিকট কি কোন সংবাদ এসেছে? আমরা বললাম, না। সে বলিল, মদ তো সম্পূর্ণরুপে নিষেধ করা হয়েছে। তিনি [আবু তালহা] বলিলেন, হে আনাস! এ মদের কলসগুলো ঢেলে দাও। তিনি বলেন,তারা উক্ত ব্যক্তির সংবাদের পর কোন খোঁজখবরও করেননি। এ সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসাবাদও করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৬৮ ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৭৬]
৫০২৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে আমার চাচাদের ফাযীখ পান করাচ্ছিলাম। আর বয়সে আমি তাদের সবার ছোট ছিলাম। এ সময় এক লোক এসে বলিল, মদ তো হারাম করা হয়েছে। তারা সবাই বলিলেন, হে আনাস! এ হাড়িগুলো উল্টিয়ে দাও। আমি সেগুলো উপুড় করে ফেলে দিলাম।
সুলাইমান বলেন, আমি আনাসকে বললাম, ফাযীখ কি জিনিস? তিনি বলিলেন, কাঁচা-পাকা খেজুর দ্বারা তৈরিকৃত মদ। তিনি বলেন, আবু বকর ইবনি আনাস বলেছেন, তখন এটাই ছিল তাদের একমাত্র নেশাজাতীয় দ্রব্য।
সুলাইমান বলেন, আমার নিকটে জনৈক লোক আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে রিওয়ায়াত করিয়াছেন যে, তিনিও [আনাস] এ কথা বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৭৭]
৫০২৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি সম্প্রদায়ের মাঝে দাঁড়িয়ে তাদের মদপান করাচ্ছিলাম। এরপর বর্ণনাকারী ইবনি উলাইয়্যার মতো বর্ণনা করেন। তবে তিনি বলেন, তারপর আবু বকর ইবনি আনাস বলিলেন, সেকালে ওটাই ছিল তাদের মদ। আনাস [রাদি.] তথায় উপস্থিত ছিলেন, তিনি এ কথা অস্বীকার করেননি।
ইবনি আবদুল আলা মুতামির-এর সূত্রে তাহাঁর বাবা হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ যারা তাহাঁর সাথে ছিল তাঁদের একজন আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি আনাস [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন, তৎকালীন সময়ে সেটাই ছিল তাদের মদ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৭৮]
৫০২৯. আনাস ইবনি মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু তাল্হাহ্, আবু দুজানাহ্ ও মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.]-কে আনসারীদের একদল মানুষের মাঝে মদপান করাচ্ছিলাম। তখন এক লোক আমাদের নিকট এসে বলিল, একটি নতুন ব্যাপার ঘটেছে, মদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অতঃপর আমরা তখন পাত্রগুলো উপুড় করে ঢেলে দিয়েছিলাম। সে মদ ছিল কাঁচা-পাকা মিশ্রিত খেজুরের বানানো।
কাতাদাহ্ বলেন, আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] বলেছেন, মদকে হারাম করা হয়েছে। সেকালে তাদের সাধারণ মদ ছিল কাঁচা-পাকায় সংমিশ্রিত খেজুরের তৈরী।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৭৯]
৫০৩০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এমন একটি মদপাত্র হইতে- আবু তাল্হাহ্, আবু দুজানাহ্ ও সুহায়ল ইবনি বাইযা [রাদি.]-কে মদপান করাচ্ছিলাম যার মধ্যে কাঁচা-পাকা খেজুরের মদ ছিল। অতঃপর বর্ণনাকারী সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের হুবহু রিওয়ায়াত করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮০]
৫০৩১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাঁচা-পাকা খেজুর দিয়ে মদ তৈরী করা এবং তা পান করা থেকে বারণ করিয়াছেন। সেদিন তাই ছিল তাদের সাধারণ নেশাজাতীয় দ্রব্য যেদিন মদ হারাম করা হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮১]
৫০৩২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু উবাইদাহ্ ইবনি জার্রাহ্, আবু তালহাহ্ উবাই ইবনি কাব [রাদি.]-কে মদপান করাচ্ছিলাম, যা কাঁচা ও শুকনো খেজুর দিয়ে তৈরি ছিল। অতঃপর জনৈক আগত ব্যক্তি এসে বলিল, মদ তো হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। আবু তালহাহ্ [রাদি.] বলিলেন, হে আনাস! তুমি সে কলসটির কাছে গিয়ে তা ভেঙ্গে ফেল। আমি আমাদের মিহরাসটির [ছিদ্রযুক্ত পাথর] নিকট গেলাম এবং কলসের নিম্নাংশে আঘাত কর। যার দরুন সেটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮২]
৫০৩৩. জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন যে, আল্লাহ তাআলা যে আয়াতে মদ নিষিদ্ধ করিয়াছেন, সেটি এমন সময় তৈরি করিয়াছেন, যখন মদীনায় শুধুমাত্র খেজুরের তৈরি মদপান করা হত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮৩]
২. অধ্যায়ঃ মদ দ্বারা সিরকা তৈরি করা নিষেধ
৫০৩৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ]-কে মদ দিয়ে সিরকা তৈরি করা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলিলেন, না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮৪]
৩. অধ্যায়ঃ মদ দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম
৫০৩৫. ওয়ায়িল আল-হায্রামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তারিক ইবনি সুওয়াইদ জুফী [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে মদ সস্পর্কে প্রশ্ন করিলেন। তিনি তাকে বারণ করিলেন, কিংবা মদ প্রস্তুত করাকে খুব জঘন্য মনে করিলেন। তিনি {তারিক [রাদি.]} বলিলেন, আমি তো শুধু ঔষধ তৈরি করার জন্য মদ প্রস্তুত করি। তিনি বললেনঃ এটি তো [ব্যাধি নিরামক] ঔষধ নয়, বরং এটি নিজেই ব্যাধি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮৫]
৪. অধ্যায়ঃ খেজুর ও আঙ্গুর হইতে যা কিছু পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় তাই মদ নামে পরিচিত
৫০৩৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মদ তৈরি হয় দুটি গাছ [এর ফল] হইতে, তা হলো- খেজুর ও আঙ্গুর গাছ [এর ফল]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮৬]
৫০৩৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, মদ তৈরি হয় ঐ দুটি গাছ [এর ফল] থেকে, তা হলো- খেজুর ও আঙ্গুর গাছ [এর ফল]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮৭]
৫০৩৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মদ তৈরি হয় ঐ দুটি গাছ [এর ফল] থেকে, তা হলো- আঙ্গুর ও খেজুর গাছ [এর ফল]। আবু কুরায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর বর্ণনায় আঙ্গুরকে খেজুর বলা হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯৮৮]
Leave a Reply