ফল ও পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে সত্য বলা
ফল ও পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে সত্য বলা >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৯.অধ্যায়ঃ অজ্ঞাত পরিমান খেজুরের স্তুপ নিদিষ্ট পরিমাণ খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করা হারাম
১০. অধ্যায়ঃ ক্রেতা ও বিক্রেতার জন্যে খিয়ারে মাজলিস [ক্রয়-বিক্রয় ভঙ্গে ইচ্ছা-স্বাধীনতা] থাকিবে
১১. অধ্যায়ঃ ক্রয়-বিক্রয়ে সত্য বলা ও দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা
১২. অধ্যায়ঃ কেনা-বেচায় প্রতারিত হওয়া
১৩. অধ্যায়ঃ ফল পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে বিক্রি করা নিষেধ
১৪. অধ্যায়ঃ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করা হারাম কিন্তু আরায়া {১১} হারাম নয়
১৫. অধ্যায়ঃ ফলবান খেজুর গাছ বিক্রি করা
১৬. অধ্যায়ঃ মুহাকালাহ্, মুযাবানাহ্, মুখাবারাহ্, খাবার যোগ্য হওয়ার আগেই ফল বিক্রি ও মুআ-ওয়ামাহ্ অর্থাৎ- কয়েক বছরের জন্যে ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ
৯.অধ্যায়ঃ অজ্ঞাত পরিমান খেজুরের স্তুপ নিদিষ্ট পরিমাণ খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করা হারাম
৩৭৪৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অজ্ঞাত পরিমান খেজুরের স্তুপ নিদিষ্ট পরিমাণ খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
[ই.ফা.৩৭০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭০৮]
৩৭৪৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ ধরনের বিক্রয় করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তবে বর্ণনাকারী রাওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদীসের শেষ অংশে খেজুরের কথা উল্লেখ করেননি।
[ই.ফা.৩৭০৯,ইসলামিক সেন্টার- ৩৭০৯]
১০. অধ্যায়ঃ ক্রেতা ও বিক্রেতার জন্যে খিয়ারে মাজলিস [ক্রয়-বিক্রয় ভঙ্গে ইচ্ছা-স্বাধীনতা] থাকিবে
৩৭৪৫. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতার একজনের অপরের উপর [ক্রয়-বিক্রয় ভঙ্গ করার] ইচ্ছা-স্বাধীনতা থাকিবে, যতক্ষণ তারা একে অপর থেকে আলাদা না হয়। তবে ইখতিয়ারের শর্তে ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকলে তা ভিন্ন কথা।
[ই.ফা.৩৭১০,ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১০]
৩৭৪৬. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যুহায়র ইবনি হারব ও আলী ইবনি হুজর এবং আবু রাবী ও আবু কামিল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]…ইবনি উমর [রাদি.] থেকে, ইবনিল মুসান্না ও ইবনি আবু উমর এবং ইবনি রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]……. ইবনি উমর [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে উপরে উল্লেখিত নাফি থেকে মালিক এর বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
[ই.ফা.৩৭১১,ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১১]
৩৭৪৭. ইবনি উমর [রা.] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, দুজন লোক পরস্পর কেনাবেচা করলে যতক্ষণ তারা একে অন্যের থেকে পৃথক না হয় এবং একত্রিত থাকে ততক্ষণ তাদের প্রত্যেকেরই ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার স্বাধীনতা থাকিবে। কিংবা যদি একজন অপরজনকে ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার ইখ্তিয়ার প্রদান করে এবং এরূপ শর্তে ক্রয়-বিক্রয় সমাধা হয় তবে এ ক্রয়-বিক্রয় ঠিক থাকিবে। আর যদি ক্রয়-বিক্রয়ের পর তারা একজন অন্যজন থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং উভয়ের কোন একজন ক্রয়-বিক্রয় বাতিল না করে তবে তাও ঠিক থাকিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১২]
৩৭৪৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা যখন ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করে তখন তাদের প্রত্যেকেরই ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপারে সুযোগ থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত তারা একে অন্যের থেকে পৃথক না হয়ে যায়। অথবা যদি ক্রয়-বিক্রয় খিয়ারের শর্তে [নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয় ঠিক রাখা না রাখার শর্ত] হয়ে থাকে তখনও খিয়ার বহাল থাকিবে।
ইবনি আবু উমারের বর্ণনায় আরো রয়েছে- নাফি বলেন, ইবনি উমর [রাদি.] যখন কারো সাথে ক্রয়-বিক্রয় করিতেন এবং তিনি তা বহাল রাখতে চাইতেন, তখন উঠে গিয়ে এদিক সেদিক কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করিতেন, তারপর দ্বিতীয়পক্ষের নিকট আবার প্রত্যাবর্তন করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৩]
৩৭৪৯. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে কেনা-বেচা পুরোপুরি হইবে না তারা পরস্পর আলাদা হওয়া পর্যন্ত। কিন্তু খিয়ারের শর্তে ক্রয়-বিক্রয় হলে; [পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেও খিয়ার বহাল থাকিবে]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৪]
১১. অধ্যায়ঃ ক্রয়-বিক্রয়ে সত্য বলা ও দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা
৩৭৫০. হাকীম ইবনি হিযাম [রা.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ক্রেতা ও বিক্রেতার একজন আরেকজন থেকে পৃথক হওয়া পর্যন্ত খিয়ার থাকিবে। উভয়ে যদি সত্য কথা বলে এবং দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করে দেয় তবে তাদের কেনা-বেচায় বরকত হইবে। আর যদি তারা কেনা-বেচার মধ্যে মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে তবে তাতে বরকত থাকিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৫]
৩৭৫১. হাকীম ইবনি হিযাম [রা.] সূ্ত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
হাকীম ইবনি হিযাম [রাদি.] সূ্ত্রে, নবী [সাঃআঃ] থেকে এরকম হাদীস বর্ণনা করেন।
মুসলিম ইবনি হাজ্জাজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাকীম ইবনি হিযাম [রাদি.] কাবার ভিতরে ভূমিষ্ট হন ও একশ বিশ বছর বেঁচে থাকেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৬]
১২. অধ্যায়ঃ কেনা-বেচায় প্রতারিত হওয়া
৩৭৫২. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট জানাল যে, ক্রয়-বিক্রয়ে তাকে প্রতারিত করা হয়। তখন তিনি বললেনঃ তুমি যার সাথে কেনা-বেচা করিবে তাকে বলবে, কোন প্রকার প্রতারণা থাকিবে না। এরপর থেকে যখনও সে কিছু খরিদ করত, তখনই বলে দিত কোন প্রকার প্রতারণা থাকিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৭]
৩৭৫৩. আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্ ও মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে আবদুল্লাহ ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্ ও মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে আবদুল্লাহ ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এদের বর্ণিত হাদীসে এ কথাটি নেই যে, “এরপর থেকে সে যখনই কিছু ক্রয় করত তখনই বলত কোন প্রকার প্রতারণা থাকিবে না।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৮]
১৩. অধ্যায়ঃ ফল পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে বিক্রি করা নিষেধ
৩৭৫৪. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফল উপযোগী হওয়ার পূবেৃ বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন। নিষেধ করিয়াছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭১৯]
৩৭৫৫. ইবনি উমর [রা.]-এর সূ্ত্রে, নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি উমর [রাদি.]-এর সূ্ত্রে, নবী [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২০]
৩৭৫৬. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] পাকার আগে খেজুর বিক্রি করিতে এবং সাদা হওয়ার আগে ও দুর্যোগ-মুক্ত হওয়ার পূর্বে বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আর ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই তিনি নিষেধ করিয়াছেন।
[ইফা. ৩৭২১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২১]
৩৭৫৭. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পরিপক্ক হওয়ার আগে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পূর্বে তোমরা ফল ক্রয় করো না।
বর্ণনাকারী বলেনঃ খাওয়ার যোগ্য হওয়ার অর্থ লাল বর্ণ ও হলদে বর্ণ ধারণ করা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২২]
৩৭৫৮. ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সানাদে বর্ণনা করেন, যতক্ষণ না তা পরিপক্ক হয়। এর পরবর্তী অংশ তিনি উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৩]
৩৭৫৯. ইবনি উমর [রা.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল ওয়াহব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৪]
৩৭৬০. ইবনি উমর [রা.]-এর সূ্ত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
মালিক ও উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৫]
৩৭৬১. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পরিপক্ক হওয়ার আগে তোমরা ফল বিক্রি করো না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৬]
৩৭৬২. যুহায়র ইবনি হার্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে এবং ইবনিল মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে আবদুল্লাহ ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। অবশ্য শুবার বর্ণনায় এতটুকু অতিরিক্ত আছে যে, ইবনি উমর [রাদি.]-এর কাছে পরিপক্ক হওয়ার অর্থ কী, জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাকৃতিক দূর্যোগ পার হওয়া।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৭]
৩৭৬৩. জাবির [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন অথবা তিনি বলেন, আমাদের নিষেধ করিয়াছেন ফল পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে তা বিক্রি করিতে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৮]
৩৭৬৪. জাবির ইবনি আবদিল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন ফল আহারযোগ্য হওয়ার আগেই বিক্রি করিতে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭২৯]
৩৭৬৫. আবুল বুখ্তারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট গাছে থাকা খেজুর বিক্রি বিষয়ে জানতে চাইলাম। তখন তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গাছের খেজুর বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন যতক্ষণ না তা খাওয়া যায় বা খাওয়ার যোগ্য হয় এবং ওজন করা যায়। রাবী বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে ওজন করিবে? তখন তার পাশেই অবস্থানকারী জনৈক ব্যক্তি উত্তর দিল- পরিমাণ করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩০]
৩৭৬৬. আবু হুরাইরাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফল খাওয়ার উপযোগী হওয়ার আগে তোমরা ক্রয় করিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩১]
১৪. অধ্যায়ঃ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করা হারাম কিন্তু আরায়া {১১} হারাম নয়
{১১} আরায়া হলো, বাগানের মালিক কিছু গাছ কোন গরীবকে প্রদান করিল। সে গাছগুলোতে তাজা রসালো খেজুর রয়েছে। এমতাবস্থায় সে গবীব লোকটির দ্বারা বাগানের মালিক বা অন্য কারো কাছে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করে দেয়াকে আরায়া বলে। এটা জায়েয, তবে ৫ ওয়াকাক বা ১৮ মণ ৩০ কেজির বেশি হইতে পারবে না। [সহীহ মুসলিম- শারহে নাবাবী, ২য় খণ্ড, ৮ পৃ:।
৩৭৬৭. য়াহ্ইয়া ইবনি ইয়াহ্ইয়া, ইবনি নুমায়র ও যুহায়র ইবনি হার্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ভিন্ন সূত্রে ইবনি উমর [রা.] সূ্রেত নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
খাওয়ার যোগ্য হওয়ার আগে তা বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং শুক্না খেজুরের বিনিময়ে রসালো তাজা খেজুর বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩২]
৩৭৬৮. ইবনি উমর [রা.] বর্ণনা করেন, যায়দ ইবনি সাবিত [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরায়া ধরনের কেনা-বেচার অনুমতি দান করিয়াছেন। ইবনি নুমায়র তাহাঁর বর্ণনায় [আরবী] শব্দটি বাড়িয়েছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩২]
৩৭৬৯. আবু হুরাইরাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: তোমরা ফল ক্রয় করো না খাওয়ার যোগ্য হওয়ার আগে এবং তাজা রসালো খেজুর খরিদ করো না শুকনো খেজুরের বিনিময়ে।
ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ সালিম তাহাঁর পিতা আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে সম্পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৩]
৩৭৭০. ইবনিল মুসাইয়্যিব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্ ও মুহাকালাহ্ নিষেধ করিয়াছেন। মুযাবানাহ্ হল, গাছের খেজুর খুরমার [শুকনো খেজুর] বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করা। আর মুহাকালাহ্ হল, ক্ষেতের শস্য অনুমান করে সংগৃহীত শস্যের বিনিময়ে বিক্রি করা এবং সংগৃহীত গমের পরিবর্তে জমি বর্গা দেয়া।
ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূ্ত্রে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফল খাওয়ার যোগ্য হওয়ার আগে ক্রয় করো না। আর খুরমার বিনিময়ে তাজা খেজুর ক্রয় করো না।
সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] … আবদুল্লাহ ইবনি সাবিত [রাদি.] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, অতঃপর আরায়া প্রক্রিয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে তাজা অথবা শুকনা খেজুরের ক্রয়-বিক্রয়ে অনুমতি দান করিয়াছেন। এ ছাড়া অন্য কোন ফলের ব্যাপারে তিনি এমন অনুমতি দেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৪]
৩৭৭১. যায়দ ইবনি সাবিত [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরায়ার মালিককে এ অনুমতি দিয়েছে যে, সে আরায়াকৃত গাছের তাজা খেজুর অনুমানের ভিত্তিতে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করিতে পারবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৫]
৩৭৭২. যায়দ ইবনি সাবিত [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরায়া পদ্ধতির অনুমতি প্রদান করিয়াছেন। বাড়ীর মালিক আরায়া করা ফল অনুমান করে খুরমার বদলে রাখতে পারে তাজা রসযুক্ত খেজুর খাওয়ার জন্যে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৬]
৩৭৭৩. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে একই সূত্রে এরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৭]
৩৭৭৪. ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উক্তরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি কিছু অতিরিক্ত বলেছেন যে, খেজুর গাছের আরায়া হল: নির্দিষ্ট সংখ্যক গাছ কাউকে দান করা। এরপর তার ঐ গাছগুলোর খেজুর অনুমান করে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৮]
৩৭৭৫. যায়দ ইবনি সাবিত [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরায়া পদ্ধতির ক্রয়-বিক্রয়ে অনুমানে পরিমাণ নির্ধারণ করে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।
ইয়াহ্ইয়া বলেন, আরায়া হলো নিজের পরিবারবর্গকে তাজা রসাল খেজুর খাওয়াবার জন্যে গাছের ঝুলন্ত খেজুর অনুমান দ্বারা পরিমাণ করে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে খরিদ করে রাখা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৩৯]
৩৭৭৬. যায়দ ইবনি সাবিত [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দানকৃত খেজুর অনুমানে পরিমাপ করে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪০]
৩৭৭৭. উবাইদুল্লাহর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন এবং বলেন, তা অনুমান করে নিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪১]
৩৭৭৮. রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত হইতে বর্ণীতঃ
রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে উক্ত সানাদে বর্ণনা করেন যে, আরায়া প্রক্রিয়ার ক্রয়-বিক্রয় অনুমানের ভিত্তিতে করিতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অনুমোদন দিয়েছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪২]
৩৭৭৯. সাহ্ল ইবনি আবু হাস্মাহ্ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শুক্না খেজুরের বদলে তাজা খেজুর বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেন: এটাই সুদ, এটাই মুযাবানাহ্। অবশ্য তিনি আরায়াকৃত দু একটা খেজুর গাছের খেজুর বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। বাড়ীর মালিক এর পরিমাণ অনুমান করে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে রেখে দিবে এবং তাজা ফল খাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৩]
৩৭৮০. বাশীর ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সু্ত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কতিপয় সাহাবী হইতে বর্ণীতঃ
তাঁরা বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরায়াকৃত খেজুর গাছের ফল অনুমান করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৪]
৩৭৮১.বাশীর ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে তার মহল্লায় বসবাসকারী রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কয়েকজন সাহাবী হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন-বর্ণনাকারী সাকাফী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুলাইমান ইবনি বিলাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। অবশ্য ইসহাক্ ও ইবনি মুসান্না সুদ-এর জায়গার মুযাবানা বলেছেন। আর ইবনি আবী উমর বলেছেন সুদ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৫]
৩৭৮২. সাহল ইবনি আবু হাস্মার সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোক্ত বর্ণনায় অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৬]
৩৭৮৩. রাফি ইবনি খাদীজ ও সাহল ইবনি আবু হাস্মাহ্ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্ অর্থাৎ- শুকনা খেজুরের বদলে গাছের কাঁচা খেজুর বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন, কিন্তু আরায়ার মালিকগণ ছাড়া। কেননা তাদেরকে তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৭]
৩৭৮৪. আবু হুরাইরাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরায়া প্রক্রিয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে ফলের পরিমাণ অনুমানের ভিত্তিতে পাঁচ ওয়াসাকের চেয়ে স্বল্প বা পাঁচ ওয়াসাকের ভেতরে করার জন্য অনুমতি প্রদান করিয়াছেন। বর্ণনাকারী দাঊদের এ ব্যাপারে সন্দেহ যে, কথা এভাবে বলেছেন- পাঁচ বা পাঁচের কম। তখন মালিক বলিলেন, হ্যাঁ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৮]
৩৭৮৫. ইবনি উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ থেকে নিষেধ করিয়াছেন। মুযাবানাহ্ হলো বৃক্ষের তাজা খেজুর পরিমাপ করে খুরমার বদলে বিক্রি করা এবং গাছের তাজা আঙ্গুর পরিমাপ করে কিশমিশের বিনিময়ে বিক্রি করা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৪৯]
৩৭৮৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আর মুযাবানাহ্ হলো বৃক্ষের তাজা খেজুর অনুমানে খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা ও কাঁচা আঙ্গুর পরিমাপ নির্ধারণ করে কিশমিশের বিনিময়ে বিক্রি করা এবং ক্ষেতের গম অনুমানে পরিমাপ করে সংগৃহীত গমের বিনিময়ে বিক্রি করা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫০]
৩৭৮৭. উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫১]
৩৭৮৮. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্র উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিয়াছেন। মুযাবানাহ্ হলো গাছের খেজুর পরিমাপ করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা এং কাঁচা আঙ্গুর পরিমাপ করে কিশমিশের বিনিময়ে বিক্রি করা। আর যে কোন ফল অনুমানের বিত্তিতে বিক্রি করিতেও তিনি নিষেধ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫২]
৩৭৮৯. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীত:
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্ নিষেধ করিয়াছেন। মুযাবানাহ্ হলো গাছের মাথায় যে খেজুর আছে তার পরিমাণ অনুমান করে নির্ধারিত পরিমাণ শুকনো খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করা- এ শর্তের উপর যে, যদি বেশী হয় তবে তা আমার থাকিবে। আর যদি কম হয় তবে সে ক্ষতি আমার উপরই আসবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৩]
৩৭৯০. আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৪]
৩৭৯১. আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্ নিষেধ করিয়াছেন। অর্থাৎ- বাগানে যদি খেজুর গাছ থাকে তবে তার কাঁচা খেজুর পরিমাপ করে শুকনো খেজুরের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করা। আর যদি আঙ্গুর থাকে তবে তা পরিমাপ করে কিশমিশের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করা। আর যদি তা ক্ষেতের ফসল হয় তবে তার পরিমাণ অনুমান করে সে পরিমাণ খাদ্য ক্রয়-করা-এসব করিতে তিনি নিষেধ করিয়াছেন।
কুতাইবার অন্য বর্ণনায় রয়েছে “অথবা যদি তা ক্ষেতের ফসল হয়”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৫]
৩৭৯২. আবু তাহির, ইবনি রাফি ও সুওয়াইদ ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ভিন্ন ভিন্ন সূ্ত্রে নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত সানাদে হাদীসটি অন্যান্যের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৬]
১৫. অধ্যায়ঃ ফলবান খেজুর গাছ বিক্রি করা
৩৭৯৩. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যদি খেজুরের রেণু প্রবিষ্ট করানো খেজুর গাছ বিক্রি করে তবে ঐ গাছের খেজুর বিক্রেতার পাপ্য। অবশ্য ক্রেতা যদি খেজুর নেয়ার শর্ত করে থাকে তবে তা তার হইবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৭]
৩৭৯৪. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন তাবিরকৃত খেজুর গাছ যদি মূলসহ ক্রয় করা হয় এবং ক্রেতা যদি ফল পাওয়ার শর্ত না দিয়ে থাকে, তবে তার ফল তাবিরকারীরই {১২} প্রাপ্য।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৮]
{১২} তাবীর হলো পরাগায়ন অর্থাৎ- স্ত্রী জাতীয় খেজুর গাছের মুকুলে পুরুষ জাতীয় খেজুর গাছের মুকুলের রেণু প্রবিষ্ট করানো। [সহীহ মুসলিম- তাহ্কীক : ফুআদ আবদুল বাকী, ৩য় খণ্ড, ২৬ পৃ:]
৩৭৯৫. ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেন: কোন ব্যক্তি খেজুর গাছে তাবির করার পর মূল গাছটি বিক্রি করে দিয়ে ঐ গাছের খেজুর তাবিরকারী পাবে, যদি ক্রেতা ফল পাওয়ার শর্ত করে না থাকে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৫৯]
৩৭৯৬. নাফির সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
নাফির সূত্রে এ হাদীস ঐরকমই বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬০]
৩৭৯৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি : যে ব্যক্তি তাবিরকৃত খেজুর গাছ খরিদ করিবে সে উক্ত গাছের ফল পাওয়ার শর্ত না করলে ঐ গাছের ফল বিক্রেতার প্রাপ্য এবং কেউ যদি গোলাম খরিদ করে এবং উক্ত গোলামের মাল পাওয়ার শর্ত না করে তবে সে মাল বিক্রেতারই প্রাপ্য।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬১]
৩৭৯৮. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সানাদে এ হাদীস অনুরূপ বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬২]
৩৭৯৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে অনুরূপ বলিতে শুনেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৩]
১৬. অধ্যায়ঃ মুহাকালাহ , মুযাবানাহ্, মুখাবারাহ্, খাবার যোগ্য হওয়ার আগেই ফল বিক্রি ও মুআ-ওয়ামাহ্ অর্থাৎ- কয়েক বছরের জন্যে ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ
৩৮০০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালাহ, মুযাবানাহ্, মুখাবারাহ্ ও পরিণত হওয়ার আগে ফল ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করিয়াছেন। আর আরায়া প্রক্রিয়া ছাড়া দীনার ও দিরহামের বিনিময় ব্যতীত ফল বিক্রি করা যাবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৪]
৩৮০১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন- অতঃপর তিনি উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৫]
৩৮০২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুখাবারাহ্, মুহাকালাহ, মুযাবানাহ্ এবং খাওয়ার যোগ্য হওয়ার পূর্বেই ফল বিক্রি করিতে নিষেধ করেছেণ। আর দিরহাম ও দীনারের বিনিময়েই কেবল ফল বিক্রি করা যাবে, কিন্তু আরায়া প্রক্রিয়াটি স্বতন্ত্র [অর্থাৎ- এতে ফলের বদলে ফল বিক্রয় চলবে]।
আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ ক্রয়-বিক্রয়ের ঐ ধরণগুলো সম্পর্কে জাবির [রাদি.] আমাদেরকে খুলে বলেছেন; মুখাবারাহ্ হলো: এক ব্যক্তিকে শস্যহীন শুন্য ক্ষেত প্রদান করা হয়। এরপর সে তাতে ফসল উৎপন্ন করে তারপর মালিক উৎপন্ন ফসলে অংশগ্রহণ করে। আর মুযাবানাহ্ হলো- গাছের মাথায় থাকা তাজা খেজুর অনুমানে পরিমাপ করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা। আর মুহাকালাহ ফসলের মধ্যে অনুরূপ পদ্ধতিতে হয়ে থাকে অর্থাৎ-ক্ষেতের বিদ্যমান শস্যকে অনুমানে পরিমাপ করে ঘরে রাখা শস্যের বিনিময়ে বিক্রি করা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৬]
৩৮০৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালাহ, মুযাবানাহ্, মুখাবানাহ্, মুখাবারাহ্ এবং খেজুর লাল বা হলদে অথবা খাদ্যোপযোগী হওয়ার পূর্বে খরিদ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। মুহাকালাহ হলো- ক্ষেতের শস্য নির্ধারিত পরিমাণ খাদ্যের বিনিময়ে বিক্রি করা। মুযাবানাহ্ হচ্ছে- গাছের খেজুর কয়েক অসক খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা। মুখাবারাহ্ বলা হয়- এক তৃতীয়াংশ, এক চতুর্থাংশ বা এরূপ নির্দিষ্ট কোন অংশকে।
যায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ আমি আতা ইবনি আবু রাবাহ্কে জিজ্ঞেস করলাম- আপনি কি জাবির ইবনি আবদুল্লাহকে বলিতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ বলেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৭]
৩৮০৪. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুযাবানাহ্, মুহাকালাহ, মুখাবারাহ্ এবং ফল পাকার আগে বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
রাবী বলেন, আমি সাঈদকে জিজ্ঞেস করলাম পাকার অর্থ কী? তিনি বলিলেন, লাল বর্ণ বা হলুদ বর্ণ ধারণ করা এবং খাওয়ার যোগ্য হওয়া।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৮]
৩৮০৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালাহ, মুযাবানাহ্, মুআওয়ামাহ্ ও মুখাবারাহ নিষেধ করিয়াছেন। দুজনের একজনে বলেন কয়েক বছরের জন্যে বিক্রি করার নাম মুআওয়ামাহ্। তিনি [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন কিছু অংশ বাদ দেয়া হইতে {১৩} আর অনুমতি দিয়েছেন আরায়ার বেলায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৬৯]
{১৩} কিছু অংশ বাদ অর্থাৎ বিক্রেতা শস্যস্তুপ বা বাগানের গাছগুলো থেকে অজ্ঞাত পরিমাণ কিছু বাদ দিয়ে বিক্রি করিতে চাইলে সে বেচাকেনা বাতিল বলে গণ্য হইবে। [শারহে মুসলিম, ঈমাম নাবাবী, ২য় খণ্ড, ১১ পৃ]
৩৮০৬. জাবির [রা.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি এ কথাটি উল্লেখ করেননি যে, কয়েক বছরের জন্যে বিক্রি করা হলো মুআওয়ামাহ্।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৭৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৭০]
৩৮০৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জমি বর্গা দিতে, কয়েক বছরের জন্যে বিক্রি করিতে এবং ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে বিক্রি করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
[ই-ফা. ৩৭৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৭৭১]
Leave a Reply