আযল -এর হুকুম

আযল -এর হুকুম

আযল -এর হুকুম >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

২২. অধায়ঃ আযল -এর হুকুম

৩৪৩৬. ইবনি মুহায়রিয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং আবু সিরমাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.]-এর নিকট গেলাম। আবু সিরমাহ্ তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আবু সাঈদ! আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আযল সম্পর্কে আলোচনা করিতে শুনেছেন? তিনি বললেনঃ হাঁ আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে বানূ মুস্তালিক-এর যুদ্ধ করেছি। সে যুদ্ধে আমরা আরবের সবচেয়ে সুন্দরী বাঁদীদের বন্দী করলাম। এদিকে আমরা দীর্ঘকাল স্ত্রী সাহচর্য থেকে বঞ্চিত ছিলাম। অন্যদিকে আমরা ছিলাম সম্পদের প্রতি অনুরাগী। এমতাবস্হায় আমরা বাঁদীদের দ্বারা উদ্দেশ্য হাসিল করার এবং আযল করার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু আমরা এ কথাও আলোচনা করলাম যে, আমরা কি এ কাজ করিতে যাব, অথচ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মধ্যে উপস্হিত রয়েছেন। তাহাঁর নিকট আমরা কি এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করব না! তাই আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ ঐ কাজ না করাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কেননা, আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামাত পর্যন্ত যত মানুষ সৃষ্টি করার কথা লিখে রেখেছেন সে সব মানুষ সৃষ্টি হইবেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪০৮]

৩৪৩৭. মুহাম্মাদ ইবনি ইয়াহ্ইয়া ইবনি হাব্বান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে রাবীআর হাদীসের মর্মানুযায়ী হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে সে হাদীসে উল্লেখ আছে যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “কেননা আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামাতের দিন পর্যন্ত যত মাখলুক্ব সৃষ্টি করবেন তা লিখে দিয়েছেন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪০৯]

৩৪৩৮. আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা কিছু সংখ্যক যুদ্ধবন্দিনী লাভ করেছিলাম। [তাদের সাথে] আমরা আযল করছিলাম। এরপর আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাদের বলিলেন, অবশ্যই তোমরা এ কাজ করিবে। অবশ্যই তোমরা এ কাজ করিবে। অবশ্যই তোমরা এ কাজ করিবে। [বিস্ময় প্রকাশ করে বলিলেন] বস্তুত ক্বিয়ামাত পর্যন্ত যত প্রানী সৃষ্টি হওয়ার তা সৃষ্টি হইবেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১০]

৩৪৩৯. আনাস ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, মাবাদ ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.] থেকে এ হাদীসটি শুনেছেন? তিনি {আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.]} বলিলেন, হাঁ, নবী [সাঃআঃ] থেকে। তিনি বলেন, এটা না করলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কেননা, এটা হল তাক্বদীরের অন্তর্ভুক্ত।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১১]

৩৪৪০. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে আনাস ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাদের হাদীসে রয়েছে- নবী [সাঃআঃ] আযল সম্পর্কে বলেছেনঃ এ কাজ না করলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কেননা এটা তাক্বদীরের অন্তর্গত।

রাবী বাহ্য-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেনঃ আমি তাকে [আনাস ইবনি সীরীন] জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.] থেকে এ হাদীসটি শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হাঁ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১২]

৩৪৪১. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]-কে আযল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ তা না করলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কেননা, এ হল তাক্বদীরের অন্তভুক্ত।

মুহাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর উক্তি “লা আলাইকুম” [তোমাদের কোন ক্ষতি নেই]-নিষেধাজ্ঞারই নিকটবর্তী।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৩]

৩৪৪২. আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে আযল সম্পর্কে উল্লেখ করলাম। তিনি বলিলেন, তোমরা তা কেন করিতে চাও? তারা বলিল, এমন লোক আছে যার স্ত্রী সন্তানকে দুধ পান করায় সে তার সঙ্গে সঙ্গত হয়। অথচ এতে সে গর্ভবতী হোক তা সে পছন্দ করে না। আবার কোন লোকের দাসী আছে, সে তার সঙ্গে সংগত হয় কিন্তু এতে সে গর্ভবতী হোক তা সে অপছন্দ করে। তিনি বলিলেন, তা না করলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কেননা, তা তাক্বদীরের উপর নির্ভরশীল।

ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি এ হাদীস হাসান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম, এ হল সতর্কবানী স্বরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৪]

৩৪৪৩. ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি মুহাম্মাদ সূত্রে ইব্রাহীমকে হাদীস বর্ণনা করেছি অর্থাৎ আযল সম্পর্কে। তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনি বিশ্র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৫]

৩৪৪৪. মাবাদ ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম! আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আযল সম্পর্কে কোন আলোচনা করিতে শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হাঁ- এ বলে তিনি বর্ণিত ইবনি আওনের হাদীসের ন্যায় [আরবী] পর্যন্ত বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৬]

৩৪৪৫. আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আযল সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে উল্লেখ করা হল। তিনি বলিলেন, তোমাদের কেউ কেন এ কাজ করে-তিনি এ ব্যাপারে একথা বলেন নি, “তোমাদের কেউ যেন এ কাজ না করে। কোন সৃষ্টি জীব নেই যাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেননি।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৭]

৩৪৪৬. আবু সাঈদ আল খুদ্রী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আযল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ সব পানিতেই সন্তান পয়দা হয় না। মূলত আল্লাহ যখন কোন বস্তু সৃষ্টি করিতে ইচ্ছা করেন তখন কোন কিছুই তাকে বাধা দিতে পারে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৮]

৩৪৪৭. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২০, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪১৯]

৩৪৪৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, আমার একটি দাসী আছে যে আমাদের খিদ্মাত ও পানি সরবরাহের কাজে নিয়োজিত। আমি তার নিকট আসা যাওয়া করে থাকি, কিন্তু সে গর্ভবতী হোক তা আমি পছন্দ করি না। তখন তিনি বলিলেন, তুমি ইচ্ছে করলে তার সাথে আযল করিতে পার। তবে তার তাক্বদীরে সন্তান থাকলে তা তার মাধ্যমে আসবেই। লোকটি কিছু দিন অতিবাহিত করিল। অতঃপর সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, দাসীটি গর্ভবতী হয়েছে। তিনি বলিলেন, আমি তোমাকে এ মর্মে জানিয়ে ছিলাম যে, তার তাক্বদীরে যা আছে তা আসবেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২১, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪২০]

৩৪৪৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিল, আমার একটি দাসী আছে। আমি তার সাথে আযল করে থাকি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এ কাজ আল্লাহর ইচ্ছাকে কিছুতেই প্রতিহত করিতে পারে না। রাবী বলেন, এরপর সে ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যে দাসীটির কথা আপনার কাছে উল্লেখ করেছিলাম সে গর্ভবতী হয়েছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ “আমি আল্লাহর বান্দা ও আল্লাহর রাসুল।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২২, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪২১]

৩৪৫০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর কাছ থেকে এসে সুফ্ইয়ান বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ মর্মে হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪২২]

৩৪৫১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা আযল করতাম আর কুরআন নাযিল হত। এর উপর ইসহাক্ব আরো বাড়িয়ে বলেছেন যে, সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এতে যদি নিষেধ করার মতো কিছু থাকত, তরে কুরআন তা নিষেধ করে দিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪২৩]

৩৪৫২. আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, “আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যামানায় আযল করতাম।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪২৪]

৩৪৫৩. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যামানায় আযল করতাম। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে পৌছলে এ থেকে তিনি নিষেধ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩৪২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩৪২৫]


Posted

in

by

Comments

One response to “আযল -এর হুকুম”

Leave a Reply