রাত্রিকালের নামাজ দু দু রাকআত, আর রাত্রির শেষে এক রাকআত বিতর

রাত্রিকালের নামাজ দু দু রাকআত, আর রাত্রির শেষে এক রাকআত বিতর

রাত্রিকালের নামাজ দু দু রাকআত, আর রাত্রির শেষে এক রাকআত বিতর >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস শরীফ হতে

২০. অধ্যায়ঃ রাত্রিকালের নামাজ দু দু রাকআত, আর রাত্রির শেষে এক রাকআত বিতর
২১.অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি এ আশঙ্কা করে যে, সে শেষ রাত্রে [ঘুম থেকে] জাগ্রত হইতে পারবে না, সে যেন রাতের প্রথম অংশেই তা আদায় করে নেয়।

২০. অধ্যায়ঃ রাত্রিকালের নামাজ দু দু রাকআত, আর রাত্রির শেষে এক রাকআত বিতর

১৬৩৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে রাতের নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রাতের নামাজ দু দু রাকআত করে আদায় করিবে। যখন ভোর হওয়ার সম্ভাবনা দেখবে তখন এক রাকআত নামাজ আদায় করে নিবে। যে নামাজ আদায় করেছে এভাবে তা বিতরে পরিণত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬১৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৬২৫]

১৬৩৪. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] কে রাতের [নফল] নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন-রাতের নামাজ দু দু রাকআত করে আদায় করিবে। তবে ভোর হয়ে আসছে দেখলে এক রাকআত বিত্‌র আদায় করে নিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬১৯, ইসলামিক সেন্টার- ১৬২৬]

১৬৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমর ইবনিল খাত্ত্বাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [একদিন] জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলিল-হে আল্লাহর রসূল! রাতের নামাজ কীভাবে আদায় করিতে হইবে? জবাবে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ রাতের নামাজ দু দু রাকআত করে আদায় করিবে। অতঃপর যখন ভোর হয়ে আসছে বলে মনে করিবে তখন এক রাকআত বিত্‌র আদায় করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২০, ইসলামিক সেন্টার- ১৬২৭]

১৬৩৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করিল : হে আল্লাহর রসূল! রাতের নামাজ কিভাবে আদায় করিতে হইবে? আমি সে সময় প্রশ্নকারী ও নবী [সাঃআঃ] এর মাঝে [দাঁড়িয়ে] ছিলাম। জবাবে নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ দু রাকআত দু রাকআত নামাজ আদায় করিবে। আর বিত্‌র পড়ে তোমার নামাজ শেষ করিবে। [আবদুল্লাহ্ ইবনি উমর বলেন] এক বছর পর জনৈক ব্যক্তি তাকে একই প্রশ্ন করিল। আমি জানি না এ ব্যক্তি পূর্বের প্রশ্নকারী সে ব্যক্তি না অন্য আরেক ব্যক্তি। এবারও আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পাশে একই স্থানে ছিলাম। তিনি তাকে পূর্বের মতই জবাব দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২১, ইসলামিক সেন্টার- ১৬২৮]

১৬৩৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করিল। এতটুকু বর্ণনা করার পর উভয়ে [আবু কামিল ও মুহাম্মাদ ইবনি উবায়দ আল গুবারী] পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিলেন। তবে তাদের বর্ণিত হাদীসে অতঃপর এক বছর পরে তাঁকে জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করিল এবং এর পরের কথাগুলোর উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২২, ইসলামিক সেন্টার- ১৬২৯]

১৬৩৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ভোর হওয়ার পূর্বেই বিত্‌র আদায় কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩০]

১৬৩৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি. হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রাতের বেলায় নফল নামাজ আদায় করিবে সে যেন বিত্‌র নামাজ সর্বশেষে আদায় করিবে। কেননা, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এভাবেই নামাজ আদায় করিতে আদেশ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৪, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩১]

১৬৪০. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের রাতের নামাজ বিত্‌র দিয়ে শেষ কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩২]

১৬৪১. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কেউ রাতের বেলা নামাজ আদায় করলে সে যেন ফাজ্‌রের পূর্বে শেষ নামাজ হিসেবে বিত্‌র আদায় করে নেয়। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদেরকে [সাহাবীগণকে] এভাবে [নামাজ আদায় করিতে] আদেশ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৩]

১৬৪২. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শেষ রাতে বিত্‌র নামাজের সময়। আর বিত্‌র নামাজ এক রাকআত মাত্র [অথবা শেষ রাতে বিত্‌র নামাজ এক রাকআত আদায় করিবে]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৪]

১৬৪৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বিত্‌র নামাজ রাতের শেষাংশে এক রাকআত মাত্র আদায় করিতে হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৫]

১৬৪৪. আবু মিজলায [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি আব্বাস [আবদুল্লাহ] [রাদি.]-কে বিত্‌র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, আমি রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছি : এক রাকআত নামাজ রাতের শেষ ভাগে আদায় করিতে হইবে। তিনি [আবু মিজলায] আরো বলেছেনঃ আমি একইভাবে ইবনি উমর [আবদুল্লাহ] [রাদি.]-কেও বিষয়টি জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনিও বলেছিলেন : আমি রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি বিত্‌র নামাজ এক রাকআত, [নামাজ ] রাতের শেষ ভাগে আদায় করিতে হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬২৯, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৬]

১৬৪৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে উচ্চৈঃস্বরে ডাকল। তিনি তখন মাসজিদে ছিলেন। সে বলিল : হে আল্লাহর রসূল! আমি রাতের নামাজ কীভাবে বিত্‌র বা বেজোড় নামাজ আদায় করব? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ কেউ রাতে [নফল] নামাজ আদায় করলে দুরা আত দু রাকআত করে আদায় করিবে। অতঃপর ভোর হওয়ার আভাস পেলে এক রাকআত নামাজ আদায় করে নিবে। এ এক রাকআত নামাজই সে যত নামাজ আদায় করছে সেগুলোকে বিত্‌র বা বেজোড় করে দিবে।

আবু কুরায়ব তার বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.]-এর নাম উল্লেখ না করে উবায়দুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩০, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৭]

১৬৪৬. আনাস ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম, ফাজ্‌রের নামাজের পূর্বের দু রাকআত সলাতে আমি কিরাআত দীর্ঘায়িত করে থাকি-এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী? তিনি বললেনঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের বেলা নফল নামাজ দু দু রাকআত করে আদায় করিতেন এবং এক রাকআত বিত্‌র বা বেজোড় আদায় করিতেন। আনাস ইবনি সীরীন বলেন-এ সময় আমি বললাম : আমি তো আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করছি না। [আমার এ কথা বলার পর] তিনি বললেনঃতুমি তো মোটা বুদ্ধির লোক দেখছি! তুমি কি আমাকে হাদীসটা [পুরো] বলিতে দিবে না।! রসুলূল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের বেলা নফল নামাজ দু দু রাকআত করে আদায় করিতেন এবং পরে এক রাকআত বিত্‌র বা বেজোড় আদায় করিতেন। আর ফাজ্‌রের নামাজের পুর্বে দু রাকআত নফল এমনভাবে আদায় করিতেন যেন তিনি ইক্বামাত বা তাকবীর শুনতে পাচ্ছেন।

খালাফ ইবনি হিশাম তাহাঁর বর্ণনাতে “ফাজ্‌রের পূর্বের দু রাকআত নামাজ সম্পর্কে আপনার মতামত কী” কথাটি উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি নামাজ শব্দটি উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩১, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৮]

১৬৪৭. আনাস ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, “আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম” ….. পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। তবে তার বর্ণনাতে তিনি এতটুকু কথা অধিক বলেছেন যে, আর তিনি রাতের শেষভাগে এক রাকআত বিত্‌র আদায় করিতেন। তাহাঁর বর্ণনাতে এ কথাও উল্লেখ আছে যে, আবদুল্লাহ ইবনি উমর বললেনঃ আরে থামো থামো! তুমি তো মোটা বুদ্ধির লোক দেখছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩২, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৩৯]

১৬৪৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ রাতের নামাজ [নফল নামাজ ] দু রাকআত করে আদায় করিবে। তবে যখন দেখবে যে, সকাল হয়ে যাচেছ তখন এক রাকআত বিত্‌র আদায় করিবে। আবদুল্লাহ্ ইবনি উমর [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করা হল-দু দু রাকআত কীভাবে আদায় করিতে হইবে? তিনি বললেনঃ প্রতি দু রাকআত আদায় করে সালাম ফিরাবে।

[ই.ফা.১৬৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৪০]

১৬৪৯. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ভোর [ফাজ্‌র] হবার পূর্বেই বিত্‌র নামাজ আদায় কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩৪,ইসলামিক সেন্টার- ১৬৪১]

১৬৫০. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তারা নবী [সাঃআঃ]-কে বিত্‌র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফাজ্‌রের ওয়াক্তের পূর্বেই বিত্‌র আদায় করে নাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৪২]

২১.অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি এ আশঙ্কা করে যে, সে শেষ রাত্রে [ঘুম থেকে] জাগ্রত হইতে পারবে না, সে যেন রাতের প্রথম অংশেই তা আদায় করে নেয়।

১৬৫১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শেষ রাতে জাগতে পারবে না বলে কারো আশঙ্কা হলে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই [ইশার নামাজের পর] বিত্‌র আদায় করে নেয়। আর কেউ যদি শেষ রাতে জাগতে আগ্রহী থাকে [অর্থাৎ শেষ রাতে জাগতে পারবে বলে নিশ্চিত হইতে পারে] তাহলে সে যেন শেষভাগে বিত্‌র আদায় করে নেয়। কেননা, শেষ রাতের সলাতে [মালাকগণের] উপস্থিতি থাকে। আর এটাই সর্বোত্তম ব্যবস্থা। হাদীসটি বর্ণনাকারীর আবু মুআবিয়াহ্ [আরবী] শব্দের পরিবর্তে [আরবী] শব্দ উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৪৩]

১৬৫২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, তোমাদের কেউ যদি শেষ রাতে জাগতে পারবে না বলে আশঙ্কা করে তাহলে বিত্‌র নামাজ আদায় করে ঘুমাবে। আর যার শেষরাতে জাগতে পারার আত্মবিশ্বাস বা নিশ্চয়তা আছে সে শেষ রাতে বিত্‌র আদায় করিবে। কেননা শেষ রাতের কুরআন পাঠে মালায়িকাহ্ উপস্থিত থাকে। আর এটা সর্বাপেক্ষা উত্তমও বটে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৬৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৬৪৪]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply