রুকু সেজদাহ যা বলিতে হইবে ও সুতরা দেয়া

রুকু সেজদাহ যা বলিতে হইবে ও সুতরা দেয়া

রুকু সেজদাহ যা বলিতে হইবে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

রুকু সেজদাহ যা বলিতে হইবে ও সুতরা দেয়া

৩৯. অধ্যায়ঃ ইমামের অনুসরণ করা এবং প্রতিটি কাজ তার পরে করা
৪০. অধ্যায়ঃ রুকু থেকে মাথা তুলে যা বলিতে হইবে
৪১. অধ্যায়ঃ রুকু ও সাজদায় কুরআনের আয়াত পাঠ করা নিষেধ
৪২. অধ্যায়ঃ রুকু-সাজদায় যা বলিতে হইবে
৪৩. অধ্যায়ঃ সাজদার ফাযীলত এবং এর প্রতি উৎসাহ প্রদান করা
৪৪. অধ্যায়ঃ যেসব অঙ্গের সাহায্যে সাজদাহ্ করিতে হইবে এবং সলাতে চুল, কাপড় ও মাথার বেণী ধরা থেকে বিরত থাকতে হইবে।
৪৫. অধ্যায়ঃ সাজদার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা, উভয় হাতের তালু জমিনে রাখা, উভয় কনুই পাঁজর থেকে পৃথক রাখা এবং সাজদায় পেট উরু থেকে উঁচু ও পৃথক রাখা।
৪৬. অধ্যায়ঃ নামাজের সামগ্রিক বৈশিষ্ট্য – যা দিয়ে নামাজ শুরু এবং শেষ করিতে হইবে; রুকুর বৈশিষ্ট এবং এর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা; সাজদার বৈশিষ্ট্য ও এর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা; চার রাকআত বিশিষ্ট সলাতে
৪৭. অধ্যায়ঃ নামাজ আদায়কারীর সামনে সুত্‌রাহ্‌ [আড়াল] দেয়া
৪৮. অধ্যায়ঃ মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা নিষেধ
৪৯. অধ্যায়ঃ মুসল্লীর সুত্‌রার কাছাকাছি হওয়া
৫০. অধ্যায়ঃ নামাজ আদায়কারী কতটুকু পরিমাণ স্থান আড়াল [সুত্‌রাহ্‌ নির্ধারণ] করিবে
৫১. অধ্যায়ঃ নামাজ আদায়কারীর সামনে সম্মুখীন হওয়া [অর্থাৎ- আড়াআড়িভাবে, লম্বালম্বি হয়ে শুয়ে থাকার প্রসঙ্গে আলোচনা]
৫২.অধ্যায়ঃ একটি মাত্র কাপড় পরিধান করে নামাজ আদায় করা এবং তা পরিধান করার নিয়ম বিধান

৩৯. অধ্যায়ঃ ইমামের অনুসরণ করা এবং প্রতিটি কাজ তার পরে করা

৯৪৯. আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাকে বারা [রাদি.] এ হাদীস বলেছেন। তিনি মিথ্যাবাদী নন। তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর পিছনে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি [সাঃআঃ] রুকু থেকে মাথা তোলার পর আমি কাউকে [সাজদায় যাওয়ার জন্য] পিঠ বাঁকা করিতে দেখেনি, যে পর্যন্ত না রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের কপাল মাটিতে রাখতেন। অতঃপর সবাই সাজদায় লুটিয়ে পড়ত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৫]

৯৫০. আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাকে বারা [রাদি.] এ হাদীস বলেছেন। তিনি মিথ্যাবাদী নন। তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ” বলিতেন- আমাদের কেউই [সাজদায় যাওয়ার জন্য] পিঠ বাঁকা করত না যতক্ষণ পর্যন্ত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাজদায় না যেতেন। তাহাঁর পরে আমরা সাজদায় যেতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৬]

৯৫১. আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলিলেন,আমাদেরকে বারা [রাদি.] বলেছেন, তাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি যখন রুকুতে যেতেন, তারাও রুকুতে যেতেন। তিনি [সাঃআঃ] রুকু থেকে মাথা তোলার সময়

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ” বলিতেন। আমরা দাঁড়িয়ে থাকতাম, এমনকি যখন দেখতাম তিনি তাহাঁর কপাল মাটিতে রেখেছেন তখন আমরা তাহাঁর অনুসরণ করতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৭]

৯৫২. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী [সাঃআঃ] এর সাথে নামাজ আদায় করতাম। আমরা যতক্ষণ তাঁকে সিজদায় পৌছতে না দেখতাম, ততক্ষণ আমাদের কেউ নিজের পিঠ বাঁকা করতাম না।

যুহায়র বলেন, আমাদেরকে সুফইয়ান বলেছেন, এমনকি যখন আমরা তাঁকে সাজদারত অবস্থায় দেখতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৮]

৯৫৩. আমর ইবনি হুরায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর পিছনে ফাজরের নামাজ আদায় করলাম। আমি তাঁকে

 فَلاَ أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ * الْجَوَارِ الْكُنَّسِ

“আমি শপথ করি পশ্চাদপসরণকারী নাফসের, যা প্রত্যাগমন করে ও দৃশ্য হয়”- [সূরাহ আত-তাকবীর :১৫ :৬] পাঠ করিতে শুনলাম। তিনি সম্পূর্ণভাবে সাজদায় না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের কেউ নিজের পিঠ বাঁকা করত না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৯]

৪০. অধ্যায়ঃ রুকু থেকে মাথা তুলে যা বলিতে হইবে

৯৫৪. ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু থেকে পিঠ উঠানোর সময় বলিতেনঃ

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ

“সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ, আল্লা-হুম্মা রব্বানা-লাকাল হামদু মিলআস সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল আল আরযি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন্ বাদু।” অর্থাৎ, “প্রশংসাকারীর প্রশংসা আল্লাহ শুনেন। হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক সকল প্রশংসা আপনারই জন্য-যা আসমান ও জমিন পরিপূর্ণ এবং পরিপূর্ণতা ছাড়াও যতটুকু আপনি ইচ্ছা পোষণ করেন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬০]

৯৫৫. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [রুকু থেকে উঠে] এ দুআ পড়তেন :

 اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ

“সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ, আল্লা-হুম্মা রব্বানা-লাকাল্ হামদু মিল্আস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্ আল আরযি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন্ বাদু।” অর্থাৎ, “প্রশংসাকারীর প্রশংসা আল্লাহ্‌ শুনেন। হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক সকল প্রশংসা আপনারই জন্য-যা আসমান ও জমিন পরিপূর্ণ এবং পরিপূর্ণতা ছাড়াও যতটুকু আপনি ইচ্ছা পোষণ করেন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬১]

৯৫৬. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলিতেন :

 اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَاءِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ وَالْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الْوَسَخِ 

“আল্লা-হুম্মা লাকাল্ হামদু মিল্আস সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্ আল আরযি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন বাদু , আল্লা-হুম্মা তাহহিরনী বিসসালজি ওয়াল্ বারাদ ওয়াল্ মা-য়িল বা-রিদি আল্লা-হুম্মা তাহহিরনী মিনায্ যুনূবি ওয়াল্ খাতা-য়া-কামা- ইউনাক্কাস্ সাওবুল্ আবইয়াযু মিনাল্ ওয়াসাখ।” অর্থাৎ, “হে আল্লাহ! তোমার জন্য ঐ পরিমাণ প্রশংসা-যা আসমান ও জমিনকে পরিপূর্ণ করে দেয়। অতঃপর তুমি যা চাও তা দিয়ে পরিপূর্ণ করো। হে আল্লাহ! আমাকে বরফ, কুয়াশা, ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পবিত্র করে দাও। হে আল্লাহ! সাদা কাপড় যেভাবে ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়ে ধবধবে সাদা হয়ে যায়, আমাকেও তদ্রুপ যাবতীয় গুনাহ থেকে পবিত্র করে দাও।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬২]

৯৫৭. শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -এর সুত্রে মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সুত্রেও উপরের হাদীসের অনুরুপ বর্নিত হয়েছে।

৯৫৮. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখন বলিতেনঃ

رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ

“রব্বানা- লাকাল্ হামদু মিল্আস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন্ বাদু আহলাস্ সানা-য়ি ওয়াল্ মাজদি আহাক্কু মা- কা-লাল আবদু ওয়া কুল্লুনা- লাকা আবদুন, আল্ল-হুম্মা লা-মা-নিআ লিমা-আতাইতা ওয়ালা-মুতিয়া লিমা- মানাতা ওয়ালা ইয়ানফাউ যাল্ জাদ্দি মিনকাল্ জাদ্দ।“ অর্থাৎ “আমাদের প্রতিপালক! তুমি আসমান-জমিন সম পরিপুর্ন প্রশংসার অধিকারী, অতঃপর তুমি যা চাও তাও পুর্ন করে প্রশংসা। তুমি প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী। তোমার প্রশংসায় বান্দা যা কিছু বলে তুমি তার চাইতে বেশি হকদার। আমরা সবাই তোমার বান্দা; হে আল্লাহ! তুমি যা দান করো তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারো নেই এবং তুমি যা দেয়া বন্ধ করো, তা দান করার শক্তি কারো নেই। ধনবানদের ধন তোমার সামনে কোন কাজে আসে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬৪]

৯৫৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখন বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ ‏

“আল্লা-হুম্মা রব্বানা- লাকাল্ হামদু মিল্আস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্ আল আরযি ওয়ামা- বায়নাহুমা- ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন্ বাদু আহলাস্ সানা-য়ি ওয়াল্ মাজদি লা-মা-নিআ লিমা-আতাইতা ওয়ালা-মুতিয়া লিমা- মানাতা ওয়ালা- ইয়ানফাউ যাল্ জাদ্দি মিনকাল্ জাদ্দ।” অর্থাৎ “আমাদের প্রতিপালক। তুমি আসমান-যমিন সম পরিপুর্ন প্রশংসার অধিকারী, অতঃপর তুমি যা চাও তাও পুর্ন করে প্রশংসার অধিকার। তুমি প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী। [হে আল্লাহ!] তুমি যাকে দান করো তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারো নেই এবং তুমি যাকে দেয়া বন্ধ করো, তাকে দান করার শক্তি কারো নেই। চেষ্টা সাধনাকারীর প্রচেষ্টা তোমার সামনে কোন কাজে আসে না”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬৫]

৯৬০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] -এর এ হাদীস [আরবী] পর্যন্ত বর্নিত হয়েছে। হাদীসের পরবর্তী অংশ এ সুত্রে বর্নীত হয়নি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬৬]

৪১. অধ্যায়ঃ রুকু ও সাজদায় কুরআনের আয়াত পাঠ করা নিষেধ

৯৬১. আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [মৃত্যুশয্যায় থাকাকালিন সময়ে] হুজরার পর্দা তুলে দিলেন। লোকেরা এ সময় আবু বাকরের পিছনে নামাজের কাতারে দাঁড়ানো ছিল। তিনি বলিলেন, হে লোক সকল! আর নবুয়তের ধারা অবশিষ্ট থাকিবেনা। তবে মুসলিমরা সত্যস্বপ্ন দেখবে অথবা তাদেরকে দেখানো হইবে। সাবধান! আমাকে নিষেধ করা হয়েছে আমি যেন রুকু বা সাজদারত অবস্থায় কুরআন পাঠ না করি। তোমরা রুকু অবস্থায় মহান প্রভুর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ননা করিবে এবং সাজদারত অবস্থায় অধিক দুআ পড়ার চেষ্টা করিবে, কেননা তোমাদের দুআ কবুল হওয়ার উপযোগী। হাদীসটি আবু বাক্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] [আরবী] বলে রিয়াওয়াত করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬৭]

৯৬২. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজ কক্ষের পর্দা সরিয়ে দিলেন এ সময় তিনি মৃত্যু শয্যায় ছিলেন। তাহাঁর মাথা [কাপড় দিয়ে] বাঁধা ছিল। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! আমি কি তোমার বাণী পৌঁছে দিয়েছি? এ কথা তিনি তিনবার বলেলেন। নুবুওয়াতের সুসংবাদ [ধারা] আর অবশিষ্ট থাকিবে না। তবে ভাল স্বপ্ন অবশিষ্ট থাকিবে। নেক বান্দারা তা দেখবে অথবা তাদেরকে দেখানো হইবে। হাদীসের পরবর্তী বর্ননা সুফ্ইয়ানের বর্ননার অনুরুপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬৮]

৯৬৩. আলি ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে রুকু অথবা সাজদায় কুরআন পাঠ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৬৯]

৯৬৪. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে রুকু ও সাজদারত অবস্থায় কুরআনের আয়াত পাঠ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭০]

৯৬৫. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে রুকু-সাজদায় কুরআন পাঠ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আমি বলছি না “তিনি তোমাদের নিষেধ করিয়াছেন”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭১]

৯৬৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার প্রিয়তম [নবী [সাঃআঃ] ] আমাকে রুকু-সাজদায় কিরাআত পাঠ করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭২]

৯৬৭. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাকে রুকু অবস্থায় কুরআন পাঠ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। উল্লেখিত সব রাবীই রুকুর কথা বলেছেন। তারা নিজ নিজ বর্ননায় সাজদার মধ্যে কুরআন পাঠ করা নিষেধ” এরুপ কথা উল্লেখ করেন নি। যেমন, যুহরী, যায়দ ইবনি আসলাম, ওয়ালীদ ইবনি কাসির এবং দাউদ ইবনি কায়স নিজেদের বর্ননায় এ নিষেধাজ্ঞার কথাও উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৩]

৯৬৮. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উপরের হাদীসের অনুরুপ বর্নিত হয়েছে। এ সুত্রে সাজদায় কুরআন পাঠ করা নিষেধ এ কথার উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৪]

৯৬৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাকে নিষেধ করা হয়েছে আমি যেন রুকুর মধ্যে কুরআন পাঠ না করি। এ সুত্রে আলীর নাম উলেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৫]

৪২. অধ্যায়ঃ রুকু সেজদাহ যা বলিতে হইবে

৯৭০. হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ বান্দার সাজদাহরত অবস্থায়ই তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ লাভের সর্বোত্তম অবস্থা [বা মুহুর্ত]। অতএব তোমরা অধিক পরিমানে দুআ পড়ো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৬]

৯৭১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেজদাহ গিয়ে বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ

“আল্লা-হুম্মাগ্ ফিরলি যামবী কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়াজিল্লাহু ওয়া আওওয়ালুহু ওয়া আ-খিরাহু ওয়া আলা-নিয়াতাহু ওয়া সিররাহু”

অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমার সকল প্রকার গুনাহ ক্ষমা করে দিন। কম এবং বেশি, প্রথম এবং শেষ, প্রকাশ্য এবং গোপনীয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৭]

৯৭২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু-সেজদাহ এ দুআ অধিক পরিমানে পাঠ করিতেনঃ

 سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي

সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা রব্বানা- ওয়াবি হামদিকা আল্ল-হুম্মাগ্ ফিরলী।”অর্থাৎ, “হে আল্লাহ! আমার প্রতিপালক। তোমার প্রশংসার সাথে পবিত্রতা ঘোষনা করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।“

তিনি কুরআনের উপর আমাল করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৮] ১০৫

১০৫- পবিত্র কুরআনে সুরাহ আন্ নাসর এর ৩ নং [আরবী] আয়াতের উপত ;আমাল করে উক্ত দুআ তিনি রুকু ও সাজদাতে পড়তেন।

৯৭৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার ইন্তেকালের পুর্বে এই দুআটি খুব বেশি মাত্রায় পাঠ করিতেনঃ

 سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ

“সুবহা-নাকা ওয়াবি হামদিকা আসতাগফিরুকা ওয়াতুবু ইলায়ক”। অর্থাৎ, “মহান পবিত্র আল্লাহ, সকল প্রশংসা প্রাপ্য একমাত্র তার, আমি তোমার নিকট সকল পাপের ক্ষমা চাচ্ছি ও তাওবাহ করছি।” রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আপনাকে এ সব নতুন বাক্য পড়তে দেখছি- এগুলো কি? তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে আমার একটি নিদর্শন বা চিহ্ন রাখা হয়েছে। যখন আমি তা দেখি তখন এগুলো বলিতে থাকি। আমি দেখেছিঃ “ইযা-জা-আ-নাসরুল্ল-হি ওয়াল্ ফাত্হ” সুরার শেষ পর্যন্ত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৭৯]

৯৭৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন,

 إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ

ইযা-জা-আ নাসরুল্ল-হি ওয়াল্ ফাতহ” [সুরাহ আন্ নাসর] নাযিল হওয়ার পর থেকে আমি নবী [সাঃআঃ] -কে এ দুআ পাঠ করা ব্যতিরেকে কোন নামাজ আদায় করিতে দেখিনি। অথবা তিনি সেখানে [সলাতে] বলিতেনঃ

 سُبْحَانَكَ رَبِّي وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي 

“সুবহা-নাকা রব্বী ওয়াবি হামদিকা আল্ল-হুম্মাগ্ ফিরলী”। অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক আপনার জন্যই সকল পবিত্রতা ও প্রশংসা। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮০]

৯৭৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অধিক সংখ্যায় এ দুআ পড়তেনঃ

 سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। অর্থাৎ, “মহান পবিত্র আল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা তার জন্য। আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি তার কাছে তাওবাহ করছি, অনুতপ্ত হচ্ছি।”

রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি আপনাকে অধিক সংখ্যায় এ কথা বলিতে দেখেছি “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। রাবী বলেন, তিনি বললেনঃ আমার মহান প্রতিপালক আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আমি অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে একটি নিদর্শন দেখিতে পাব। যখন আমি সে আলামত দেখিতে পাই তখন অধিক সংখ্যায় এ দুআ পাঠ করিতে থাকিঃ

 سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

“সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। সে নিদর্শন সম্ভবত এই

 إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ‏

“ইযা-জা-আ নাসরুল্ল-হি ওয়াল ফাতহ…”। অর্থাৎ “ যখন আল্লাহর সাহায্য আসবে এবং বিজয় লাভ হইবে [অর্থাৎ-মাক্কাহ্ বিজয়] , তুমি দেখিতে পাবে, দলে দলে লোক আল্লাহর দীনে প্রবেশ করছে; তখন তুমি তোমার প্রভুর প্রশংসা সহকারে তাহাঁর তাসবীহ করো এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিঃসন্দেহে তিনি খুবই তাওবাহ্ গ্রহনকারী। [সুরাহ আন্- নাসর]

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮১]

৯৭৬. ইবনি জুরায়য [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আতাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি রুকুতে কি পড়েন? তিনি বলেন,

 سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ 

সুবহা-নাকা ওয়াবি হামদিকা লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা”। অর্থাৎ, “হে আল্লাহ! আমরা তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা বর্ননা করছি। তুমি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই।”

কেননা ইবনি আবু মুলাইকাহ্ আমাকে আয়িশার সুত্রে অবহিত করিয়াছেন যে, তিনি {আয়িশাহ্ রাদি.] } বলেছেন, একরাতে আমি ঘুম থেকে জেগে নবী [সাঃআঃ] -কে আমার কাছে পেলাম না। আমি ধারনা করলাম, তিনি হয়ত তাহাঁর অপর কোন স্ত্রীর কাছে গেছেন। আমি তাহাঁর খোঁজে বের হলাম, কিন্তু না পেয়ে ফিরে আসলাম। দেখি, তিনি রুকু অথবা [রাবীর সন্দেহ] সেজদাহ আছেন এবং বলছেন

 سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ 

সুবহা-নাকা ওয়াবি হামদিকা লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা”। আমি বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক। আমি কি ধারনায় নিমজ্জিত হয়েছি, আর আপনি কি কাজে মগ্ন আছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮২]

৯৭৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এক রাতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বিসানায় পেলাম না। আমি তাঁকে খোঁজ করিতে লাগলাম। হঠাৎ আমার হাত তাহাঁর উভয় পায়ের তালুতে গিয়ে ঠেকল। তিনি সেজদাহ ছিলেন এবং তাহাঁর পা দুটো দাঁড় করানো ছিল। এ অবস্তায় তিনি বলেছেনঃ

اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ 

আল্লাহুম্মা আউযু বিরিযা-কা মিন্‌ সাখাতিকা ওয়াবি মুআ-ফা-তিকা মিন্‌ উকুবাতিকা ওয়া আউযুবিকা মিনকা লা-উহ্‌সি সানা-আন্‌ আলাইকা আন্‌তা কামা- আস্‌নাইতা আল- নাফসিকা”।অর্থাৎ “হে আল্লাহ্‌! আমি তোমার অসন্তুষ্টি থেকে সন্তুষ্টির আশ্রয় চাই। তোমার শাস্তি থেকে তোমার শান্তি ও স্বস্তির আশ্রয় চাই। আমি তোমার নিকট তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি। তোমার প্রশংসার হিসাব করা আমার সম্ভব না। তুমি নিজে তোমার যেরূপ প্রশংসা বর্ণনা করেছ, তুমি ঠিক তদ্রূপ”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭২, ই সে. ৯৮৩]

৯৭৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু ও সেজদাহ এ দুয়া পড়তেনঃ

‏ سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ الْمَلاَئِكَةِ وَالرُّوحِ

সুব্বুহুন কুদ্দূসুন্ রাব্বুল্‌ মালা-ইকাতি ওয়ার্‌ রূহ”। অর্থাৎ “ সমস্ত ফেরেশতা ও জিবরীল [আঃ] –এর প্রতিপালক অত্যন্ত পাক-পবিত্র”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৩, ইসলামিক সেন্টার-৯৮৪]

৯৭৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি এ সূত্রেও উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮৫]

৪৩. অধ্যায়ঃ সাজদার ফাযীলত এবং এর প্রতি উৎসাহ প্রদান করা

৯৮০. মাদান ইব্‌নে তালহাহ্‌ আল ইয়ামারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর আযাদকৃত গোলাম সাওবান [রাদি.] -এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। আমি বললাম, আমাকে একটি কাজের কথা বলে দিন যা করলে আল্লাহ্‌ আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। অথবা [রাবীর সন্দেহ] তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর প্রিয়তম ও পছন্দনীয় কাজের কথা জিঞ্জেস করলাম। কিন্তু তিনি চুপ থাকলেন। আমি পুনর্বার জিঞ্জেস করলাম। এবারও তিনি নীরব থাকলেন। আমি তৃতীয়বার জিঞ্জেস করলে তিনি বলিলেন, আমি এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে জিঞ্জেস করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ তুমি আল্লাহর জন্য অবশ্যই বেশি বেশি সাজদাহ্ করিবে। কেননা তুমি যখন আল্লাহ্‌র জন্য একটি সাজদাহ্ করিবে, আল্লাহ্‌ তাআলা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দিবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দিবেন।

মাদান বলেন, অতঃপর আমি আবু দার্‌দাহ্‌ [রাদি.] -এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে জিঞ্জেস করলাম। সাওবান [রাদি.] আমাকে যা বলেছেন, তিনিও তাই বলিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮৬]

৯৮১. রাবীআহ ইব্‌নে কাআব আল আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রাত যাপন করছিলাম। আমি তাহাঁর ওযুর পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিতাম। তিনি আমাকে বললেনঃ কিছু চাও। আমি বললাম, জান্নাতে আপনার সাহচর্য প্রার্থনা করছি। তিনি বললেনঃ এছাড়া আরো কিছু আছে কি? আমি বললাম, এটাই আমার আবেদন। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি অধিক পরিমাণে সাজদাহ্ করে তোমার নিজের স্বার্থেই আমাকে সাহায্য করো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮৭]

৪৪. অধ্যায়ঃ যেসব অঙ্গের সাহায্যে সাজদাহ্ করিতে হইবে এবং সলাতে চুল, কাপড় ও মাথার বেণী ধরা থেকে বিরত থাকতে হইবে।

৯৮২. ইব্‌নে আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] -কে সাতটি হাড়ের সাহায্যে সাজদা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং মাথার চুল ও কাপড় ধরে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।

হাদীসের এ বর্ণনাটি ইয়াহ্ইয়ার।

আবু রাবী তাহাঁর বর্ণনায় বলেন, সাতটি হাড়ের সাহায্যে সাজদাহ্ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং চুল ও কাপড় আটকিয়ে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। [ সাতটি হাড় বা অঙ্গ হচ্ছে-] দুহাতের তালু দুহাঁটু, দুপা এবং কপাল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৭ ইসলামিক সেন্টার- ৯৮৮]

৯৮৩. ইব্‌নে আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমাকে সাতটি অঙ্গের সাহায্যে সাজদাহ্ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং চুল ও কাপড়গুলোকে ঠেকিয়ে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৮৯]

৯৮৪. ইব্‌নে আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] –কে সাতটি অঙ্গের সাহায্যে সাজদাহ্ করিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং চুল ও কাপড়গুলোকে গুটানো থেকে বারণ করা হয়। [নামাজ রত অবস্থায়]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯০]

৯৮৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমাকে সাতটি অঙ্গের সাহায্যে সাজদাহ্ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কপাল- এ বলে তিনি হাত দিয়ে নাকের দিকে ইশারা করিলেন; দুহাত দুপা [দুহাটু] এবং দুপায়ের পার্শ্বদেশ [পায়ের আঙ্গুল সমূহ ]। আমি [ অর্থাৎ- আমরা] যেন [সিজদার সময়] চুল ও কাপড় ধরে না রাখি এ নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯১]

৯৮৬. আবদুল্লাহ ইব্‌নে আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমাকে সাতটি অঙ্গের সাহায্যে সাজদাহ্ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এ সময়ে চুল ও পরিধেয় বস্ত্র গুটাতে নিষেধ করা হয়েছে। অঙ্গগুলো হচ্ছে, কপাল ও নাক, উভয় হাত, উভয় হাঁটু এবং উভয় পায়ের পাতা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯২]

৯৮৭. আব্বাস ইব্‌নে আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছেনঃ বান্দা যখন সাজদাহ্ করে তখন তার সাথে তার সাতটি অঙ্গ সাজদাহ্ করে- তার মুখমণ্ডল, তার দুহাতের পাতা, তার দুহাটু এবং দুপায়ের পাতা। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নেই, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯২]

৯৮৮. আবদুল্লাহ ইব্‌নে আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আবদুল্লাহ ইব্‌নে হারিসকে তার মাথার চুল পিছন দিকে বেঁধে রেখে নামাজ আদায় করিতে দেখলেন। তিনি উঠে দাঁড়িয়ে তা খুলে দিলেন। আবদুল্লাহ ইব্‌নে হারিস [রাদি.] নামাজ শেষ করে ইব্‌নে আব্বাসের দিকে ফিরে বলিলেন, কি ব্যাপার আপনি আমার চুল এরূপ করে দিলেন ! তিনি [ইবনে আব্বাস] বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ এ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত হচ্ছে-যে ব্যক্তি পিছন দিকে হাত বাধা অবস্থায় নামাজ আদায় করে তার মতো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৩]

৪৫. অধ্যায়ঃ সাজদা এর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা, উভয় হাতের তালু জমিনে রাখা, উভয় কনুই পাঁজর থেকে পৃথক রাখা এবং সেজদাহ পেট উরু থেকে উঁচু ও পৃথক রাখা।

৯৮৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সাজদার মধ্যে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভারসাম্য বজায় রেখে [ঠিকভাবে] সাজদাহ্ করো। তোমাদের কেউ যেন নিজের বাহুদ্বয় কুকুরের মত বিছিয়ে না দেয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৪]

৯৯০. মুহাম্মাদ ইব্‌নে আল মুসান্না ও ইব্‌নে বাশ্‌শার, ইয়াহ্ইয়া ইব্‌নে হাবীব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রেও উপরের হাদীসের অনুরূপ বণিত হয়েছে। ইব্‌নে জাফারের বর্ণনায় রয়েছে। “ তোমাদের কেউ যেন সাজদার সময় তার বাহুদ্বয়কে কুকুরের মতো বিছিয়ে না দেয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৫]

৯৯১. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তুমি সাজদাহ্ করো তোমার হাতের তালু মাটিতে রাখো এবং উভয় কনুই উঁচু করে রাখো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৬]

৪৬. অধ্যায়ঃ নামাজের সামগ্রিক বৈশিষ্ট্য – যা দিয়ে নামাজ শুরু এবং শেষ করিতে হইবে; রুকুর বৈশিcষ্ট এবং এর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা; সাজদার বৈশিষ্ট্য ও এর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা; চার রাকআত বিশিষ্ট সলাতে প্রতি দুরাকআত অন্তর তাশাহ্‌হুদ পাঠ; দুসাজদার মাঝখানে বসা এবং প্রথম বৈঠকের বর্ণনা।

৯৯২. আবদুল্লাহ ইব্‌নে মালিক ইবনি বুহাইনাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন , রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করার সময় দুহাত [পাঁজর থেকে] এমনভাবে ফাঁকা রাখতেন যে, তাহাঁর বগলের শুভ্রতা প্রকাশ হয়ে পড়ত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৭]

৯৯৩. জাফার ইব্‌নে রাবীআহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

সূত্রে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে আম্‌র ইব্‌নে হারিস-এর বর্ণনায় নিম্নরূপঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাজদাহ্ করিতেন, তখন উভয় বাহু প্রসারিত করে রাখতেন। এর ফলে তার বগলের শুভ্রতা প্রকাশ হয়ে পড়ত।

লায়স-এর বর্ণনায় নিম্নরূপঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাজদাহ্ করিতেন, উভয় বাহু পার্শ্বদেশ থেকে পৃথক রাখতেন। এমনকি আমি [আবদুল্লাহ ইবনি মালিক ইব্‌নে বুহাইনাহ্‌] তাহাঁর বগলের শুভ্রতা দেখিতে পেতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮৭. ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৮]

৯৯৪. মাইমুনাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যখন সাজদাহ্ করিতেন, কোন মেষ সাবক ইচ্ছা করলে তাহাঁর বাহুর ফাঁক দিয়ে চলে যেতে পারত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৯৯]

৯৯৫. নবী [সাঃআঃ] –এর স্ত্রী মাইমুনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাজদাহ্ করিতেন , দুবাহু এমনভাবে [পাঁজর থেকে] ফাঁকা রাখতেন যে, তাহাঁর পিছন থেকে বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। তিনি যখন বসতেন, বাম উরুর উপর শান্তভরে বসতেন।

[ই.ফা.৯৮৯, ই সে. ১০০০]

৯৯৬. [উম্মুল মুমিনিন] মাইমুনাহ্ বিনতু হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাজদাহ্ করিতেন, বাহুদ্বয় [পাঁজর থেকে] ফাঁকা রাখতেন। এমনকি তার পিছনের ব্যক্তিটি তাহাঁর বগলের শুভ্রতা দেখিতে পেত।

ওয়াকি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, মাইমুনাহ্ [রাদি.] ঔজ্জ্বল্য দ্বারা শুভ্রতা বুঝিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৯০, ইসলামিক সেন্টার- ১০০১]

৯৯৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকবীর [আল্ল-হু আকবার] বলে নামাজ শুরু করিতেন এবং সুরা আল ফা-তিহাহ্‌ দিয়ে কিরাআত পাঠ শুরু করিতেন। তিনি যখন রুকূ করিতেন, ঘাড় থেকে মাথা নীচুও করিতেন না, উপরেও উঁচু করে রাখতেন না বরং একই সমতলে রাখতেন। তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন, সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সাজদাহ্ করিতেন না। তিনি [প্রথম] সাজদাহ্ থেকে মাথা তুলে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত [দ্বিতীয়] সেজদাহ যেতেন না। তিনি প্রতি দুরাকআত অন্তর “আত্তাহিয়্যাতু” পাঠ করিতেন। তিনি বসার সময় বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা দাঁড় করিয়ে রাখতেন। তিনি শয়তানের বসা থেকে নিষেধ করিতেন। তিনি পুরুষ লোকেদেরকে হিংস্র জন্তুর ন্যায় দুহাত মাটিতে ছড়িয়ে দিতে নিষেধ করিতেন। তিনি সালামের মাধ্যমে নামাজের সমাপ্তি ঘোষণা করিতেন।

ইবনি নুমায়র থেকে আবু খালিদ-এর সূত্রে বর্ণিত আছে : তিনি শয়তানের মতো {১০৬} বসতে নিষেধ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৯১, ইসলামিক সেন্টার- ১০০২]

১০৬ – দুহাঁটু দাঁড় করিয়ে দুউরু বুকের সঙ্গে লাগলে পাছার উপর ভর দিয়ে উপবেশন করাকে শয়তানের বৈঠক বলা হয়। নামাজ রত অবস্থায় তাশাহ্‌হুদ পাঠকালে এরূপ বসতে নিষেধ করা হয়।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply