ঈমানের শাখা প্রশাখার ও ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমুহ
ঈমানের শাখা -প্রশাখার সংখ্যা, তাহাঁর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বর্ণনা >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ [সাঃআ:]-কে রসূল হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয় সে মুমিন যদিও সে কাবীরাহ গুনাহে লিপ্ত হয়
১২. অধ্যায়ঃ ঈমানের শাখা -প্রশাখার সংখ্যা, তাহাঁর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জা শরমের ফাযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
১৩. অধ্যায়ঃ ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমুহ
১৪. অধ্যায়ঃ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পরস্পর ফাযীলাত ও কোনটি সর্বোত্তম কাজ
১৫. অধ্যায়ঃ যে এসব গুনে গুণান্বিত হইবে সে ঈমানের মিষ্টতা পাবে
১১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ [সাঃআ:]-কে রসূল হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয় সে মুমিন যদিও সে কাবীরাহ গুনাহে লিপ্ত হয়
৫৭. আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনেছেনঃ সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে, যে রব হিসেবে আল্লাহকে, দ্বীন হিসেবে ইসলামকে এবং রসূল হিসেবে মুহাম্মাদ [সাঃআ:]-কে সন্তষ্ট চিত্তে স্বীকার করেছে।
[ই.ফা. ৫৮; ই.সে. ৫৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২. অধ্যায়ঃ ঈমানের শাখা -প্রশাখার সংখ্যা, তাহাঁর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জা শরমের ফাযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৫৮. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেছেনঃ ঈমানের শাখা সত্তরটির চেয়েও বেশী, আর লজ্জা শরম ঈমানের একটি শাখা।
[ই.ফা. ৫৯; ই.সে. ৬০]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫৯. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন, ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশী। অথবা ষাটটির কিছু বেশী। এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে [আল্লাহ ব্যাতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই] এ কথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জা ঈমানের একটি বিশেষ শাখা।
[ই.ফা. ৬০; ই.সে. ৬১]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬০. সালিমের পিতা আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে উপদেশ দিচ্ছিলেন শুনতে পেয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলিলেন, লজ্জা ঈমানের অংগ।
[ই.ফা. ৬১; ই.সে. ৬২]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬১. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে উক্ত সুত্রে হইতে বর্ণিতঃ
তবে তাহাঁর বর্ণনায় আছে, নবি [সাঃআ:] জনৈক আনসারীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সে আনসারী তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে নাসীহাত করছিলেন।
[ই.ফা. ৬২; ই.সে. ৬৩]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬২. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নবি [সাঃআ:] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, লজ্জা-সম্ভ্রম কল্যাণকেই ডেকে আনে। বুশায়র ইবনি কাব বলেন, জ্ঞান বিজ্ঞানের পুস্তকে লিখা আছে যে, এর [লজ্জা] মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে এবং প্রশান্তি নেমে আসে। তাহাঁর কথা শুনে ইমরান বলেন, আমি তোমাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর মুখ নিঃসৃত বাণীই বর্ণনা করছি। আর তুমি আমাকে বলছ, তোমাদের বইয়ের কথা।
[ই.ফা. ৬৩; ই.সে. ৬৪]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৩. আবু কাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের এক দল ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআ:] এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। আমাদের মাঝে বুশায়র ইবনি কাবও ছিলেন। তখন ইমরান [রাঃআ:] আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা প্রসংগে বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেন লজ্জার সবটাই মঙ্গলজনক। রাবী বলেন যে, কিংবা রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ লজ্জা সবটাই কল্যাণকর। বুশায়র ইবনি কাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, কোন কোন কিতাবে কিংবা হিকমাতের গ্রন্থে আমরা পেয়েছি যে, লজ্জা থেকেই আল্লাহর জন্য গাম্ভীর্য ও প্রশান্তির উৎপত্তি এবং তা থেকে দুর্বলতারও উৎপত্তি। রাবী বলেন, এ কথা শুনে ইমরান [রাঃআ:] রেগে গেলেন এমন কি তার দুই চোখ লাল হয়ে গেল। ইমরান [রাঃআ:] বলেন, সাবধান! আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর হাদীস বলছি আর তার মুকাবিলায় তুমি পুঁথির কথা বলছ। এরপর ইমরান [রাঃআ:] পুনরুক্তি করিলেন। আর বুশায়রও তার কথার পুনরাবৃত্তি করিলেন। এতে ইমরান [রাঃআ:] খুবই রেগে গেলেন। রাবী বলেন যে, আমরা বলিতে লাগলাম, হে আবু নুজায়দ [ইমরানের উপনাম] সে আমাদেরই লোক। তার মধ্যে ত্রুটি নেই।
ইসহাক ইবনি ইবরাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআ:] সুত্রে নবি [সাঃআ:] থেকে হাম্মাদ ইবনি যায়দের মত হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ই.ফা. ৬৪, ৬৫; ই.সে. ৬৫-৬৬]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৩. অধ্যায়ঃ ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমুহ
৬৪. সুফইয়ান ইবনি আবদুল্লাহ আস সাকাফী [রাযি :] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে, আমাকে এ সম্পর্কে “আপনার পরে” অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করিতে না হয়। আবু উসামার হাদীসে রয়েছে- আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলিলেন, বল আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম, অতঃপর এ উপর অবিচল থাক।
[ই.ফা. ৬৬; ই.সে. ৬৭]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪. অধ্যায়ঃ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পরস্পর ফাযীলাত ও কোনটি সর্বোত্তম কাজ
৬৫. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূল [সাঃআ:]-কে প্রশ্ন করিল যে, কোন ইসলাম উত্তম? রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, তুমি লোকদের পানাহার করাবে এবং পরিচিত এবং অপরিচিত সবাইকে সালাম করিবে।
[ই.ফা. ৬৭; ই.সে. ৬৮]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৬. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র ইবনি আল আস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] কে জিজ্ঞেস করিল, সর্বোত্তম মুসলিম কে? তিনি বলিলেন, সে ব্যক্তি যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে।
[ই.ফা. ৬৮; ই.সে. ৬৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৭. জাবির [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবি [সাঃআ:] কে বলিতে শুনিয়াছি যে, সত্যিকার মুসলিম সে যার মুখ ও হাত থেকে অন্যান্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।
[ই.ফা. ৬৯; ই.সে. ৭০]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৬৮. আবু মূসা [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! কোন্ ইসলাম উত্তম? তিনি বলিলেন, উত্তম ইসলাম হলো তার, যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে।
ইবরাহীম ইবনি সাঈদ আল জাওহারী [রাঃআ:] ….. বুরায়দ ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] থেকে এ সানাদে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সর্বোত্তম মুসলিম কে? রাবী হাদীসের বাকী অংশ উপরোক্ত হাদীসের মতো বর্ণনা করেন।
[ই.ফা. ৭০; ই.সে. ৭১-৭২]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫. অধ্যায়ঃ যে এসব গুনে গুণান্বিত হইবে সে ঈমানের মিষ্টতা পাবে
৬৯. আনাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেছেনঃ তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে রয়েছে, সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ অনুভব করিবে। [১] অন্য সবার তুলনায় যার কাছে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল অধিক প্রিয়। [২] যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তাহাঁর বান্দাকে ভালোবাসে। [৩] এবং যাকে আল্লাহ কুফ্র থেকে মুক্তি দিয়েছেন, তারপর সে কুফ্রের দিকে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করে যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে।
[ই.ফা. ৭১; ই.সে. ৭৩]
ঈমানের মিষ্টতা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৭০. আনাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, তিনটি গুন যার মধ্যে বিদ্যমান সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ পায়। [১] যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কাউকে ভালবাসে [২] যার কাছে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় [৩] এবং যাকে আল্লাহ কুফ্র থেকে মুক্তি দিয়েছেন; তারপর সে কুফ্রের দিকে ফিরে যাওয়ার তুলনায় আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অধিক পছন্দ করে।
[ই.ফা. ৭২; ই.সে. ৭৪]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৭১. আনাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেনঃ পূর্বের হাদীসের অনুরূপ। তবে এ সূত্রে উল্লেখ আছে, তিনি বলেনঃ “ইয়াহূদী অথবা নাসারা ধর্মের দিকে পুনর্বার ফিরে যাওয়ার চেয়ে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকেই ভালো মনে করে।
[ই.ফা. ৭৩; ই.সে. ৭৫]
ঈমানের মিষ্টতা – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply