সালাম দেওয়ার নিয়ম । অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা।

সালাম দেওয়ার নিয়ম । অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা।

সালাম দেওয়ার নিয়ম । অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা , এই পর্বের হাদীস =৫৩ টি (১৩৯৬-১৪৪৮) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্ব-৩৯ঃ সালাম

৩৯/১. আরোহী পায়ে চলা ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম দিবে।
৩৯/৩. একজন মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের হক হচ্ছে সালামের উত্তর দেয়া।
৩৯/৪. আহলে কিতাবদেরকে প্রথমে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ এবং তাহাদেরকে কী ভাবে তাহাদের সালামের উত্তর দিবে।
৩৯/৫. বালকদেরকে সালাম দেয়া মুস্তাহাব।
৩৯/৭. মানবিক প্রয়োজনে মহিলাদের বাইরে বের হওয়া বৈধ।
৩৯/৮. অপরিচিত মহিলার নিকট একাকীত্বে অবস্থান এবং তার নিকট প্রবেশ করা হারাম।
৩৯/৯. কোন লোককে তার স্ত্রী বা কোন মাহরামার সঙ্গে একাকীত্বে দেখা গেলে তাহাদের সন্দেহ দূর করার জন্য এ মহিলা আমার উমুক হয় বলে পরিচয় তুলে ধরা মুস্তাহাব।
৩৯/১০. কেউ যদি কোন মাজলিসে এসে খালি স্থান পায় তাহলে সেখানে বসবে অথবা মাজলিসের পিছনে বসবে।
৩৯/১১. কেউ যদি তার যথাস্থানে প্রথমে বসে তাহলে তাকে তার স্থান থেকে উঠিয়ে দেয়া হারাম।
৩৯/১৩. অপরিচিতা মহিলাদের নিকট মেয়েলি স্বভাবের লোকের প্রবেশে বাধা দেয়া।
৩৯/১৪. পথিমধ্যে কোন অপরিচিতা মহিলা খুবই ক্লান্ত হয়ে গেলে তাকে আরোহীর পিছনে উঠানো জায়িয।
৩৯/১৫. তৃতীয় জনের বিনা অনুমতিতে দুজনে চুপে চুপে কথা বলা।
৩৯/১৬. চিকিৎসা, অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা।
৩৯/১৭. যাদু
৩৯/১৮. বিষ
৩৯/১৯. অসুস্থ ব্যক্তিকে ঝাড়ফুঁক করা মুস্তাহাব।
৩৯/২০. সূরা নাস, ফালাক্ব দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা ও প্রশ্বাসের থুথু দেয়া।
৩৯/২১. বদনজর, পিঁপড়ার কাপড় ও বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে ঝাড়ফুঁক করা মুস্তাহাব
৩৯/২৩. কুরআন ও যিকির আযকার দ্বারা ঝাড়ফুঁক করার পারিশ্রমিক নেয়া জায়িয।
৩৯/২৭. লাদুদ [রুগীর অনিচ্ছায় তার মুখের একধারে ঔষধ দিয়ে তাকে জোর করে খাওয়ান] দ্বারা চিকিৎসা করা মাকরূহ।
৩৯/২৮. উদুল হিন্দ দ্বারা চিকিৎসা করা আর তা [চন্দন] হচ্ছে কাঠ।
৩৯/২৯. কালজিরা দ্বারা চিকিৎসা করা।
৩৯/৩০. তালবিনা [আটা, ভুষি, মধু ইত্যাদি দ্বারা তৈরী খাবার] রোগীর মনে প্রশান্তি দানকারী।
৩৯/৩১. মধু পান করানোর মাধ্যমে চিকিৎসা করা।
৩৯/৩২. মহামারী, তায়েরাহ [পাখি উড়িয়ে] অশুভ ফল নেয়া ও গণনা করে ভবিষ্যদ্বাণী করা ইত্যাদির বর্ণনা।
৩৯/৩৩. আদওয়া, ত্বিয়ারাহ, হা-মা, সাফার, বৃষ্টির প্রতিশ্রতি দানকারী নক্ষত্র, গওল [প্রভৃতি শুভাশুভ লক্ষণ বলিতে কিছু] নেই এবং রুগ্ন ব্যক্তির নীরোগ ব্যক্তির নিকট যাওয়া উচিত নয় [এগুলোকে অশুভ লক্ষণ মনে করে]।
৩৯/৩৪. তায়েরাহ, ফাল এবং যাতে অশুভ হয়।
৩৯/৩৭. সাপ ও এ জাতীয় জীব হত্যা করা।
৩৯/৩৮. গৃহে বসবাসকারী গিরগিটি মেরে ফেলাই শ্রেয়।
৩৯/৩৯. পিঁপড়া মারা নিষেধ।
৩৯/৪০. বিড়াল হত্যা করা নিষিদ্ধ।
৩৯/৪১. খাওয়া নিষিদ্ধ এমন প্রাণীকে খাদ্য ও পানি খাওয়ানোর বর্ণনা।

৩৯/১. আরোহী পায়ে চলা ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম দিবে।

১৩৯৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আরোহী ব্যক্তি পদচারীকে, পদচারী ব্যক্তি উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক লোক অধিক সংখ্যককে সালাম করিবে।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ৬২৩২; মুসলিম ৩৯/১ হাঃ ২১৬০] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩. একজন মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের হক হচ্ছে সালামের উত্তর দেয়া।

১৩৯৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে আমি বলিতে শুনিয়াছি যে, এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের হক্ পাঁচটিঃ ১. সালামের জওয়াব দেয়া, ২. অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নেয়া ৩. জানাযার পশ্চাদানুসরণ করা ৪. দাওয়াত কবূল করা এবং ৫. হাঁচিদাতাকে খুশী করা [আল-হামদু লিল্লাহর জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা]।

[বোখারী পর্ব ২৩ অধ্যায় ২ হাদীস নং ১২৪০; মুসলিম ৩৯/৩, হাঃ ২১৬২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৪. আহলে কিতাবদেরকে প্রথমে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ এবং তাহাদেরকে কী ভাবে তাহাদের সালামের উত্তর দিবে।

১৩৯৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোন আহলে কিতাব তোমাদের সালাম দেয়, তখন তোমরা বলবে ওয়া আলাইকুম [তোমাদের উপরও]।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৬২৫৮; মুসলিম ৩৯/৪, হাঃ ২১৬৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৩৯৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ ইয়াহূদী তোমাদের সালাম করলে তাহাদের কেউ অবশ্যই বলবেঃ

السَّامُ عَلَيْكَ

আস্‌সামু আলাইকা। তখন তোমরা জবাবে

 وَعَلَيْكَ

ওয়াআলাইকা বলবে।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৬২৫৭; মুসলিম ৩৯/৪, হাঃ ২১৬৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪০০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার একদল ইয়াহূদী রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট এসে বললঃ

السَّامُ عَلَيْكَ

আস্‌সামু আলাইকা। [তোমার মৃত্যু হোক, নাউযুবিল্লাহ]। আমি এ কথার মর্ম বুঝে বললামঃ

عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ

আলাইকুমুস্ সামু ওয়াল লানাতু। [তোমাদের উপর মৃত্যু ও লানাত]। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আয়েশা! তুমি থামো। আল্লাহ সর্বাবস্থায়ই বিনয় পছন্দ করেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]! তারা যা বললোঃ তা কি আপনি শুনেননি? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এ জন্যই আমিও বলেছি,

وَعَلَيْكُمْ

ওয়া আলাইকুম [তোমাদের উপরও]।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৬২৫৬; মুসলিম ৩৯/৪ হাঃ ২১৬৫] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৫. বালকদেরকে সালাম দেয়া মুস্তাহাব।

১৪০১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

একবার তিনি একদল শিশুর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাহাদের সালাম করে বলিলেন যে, নাবী [সাঃআঃ]-ও তা করিতেন।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ১৫ হাদীস নং ৬২৪৭; মুসলিম ৩৯/৫, হাঃ ২১৬৮] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৭. মানবিক প্রয়োজনে মহিলাদের বাইরে বের হওয়া বৈধ।

১৪০২. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর সাওদাহ প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলেন। সাওদাহ এমন স্থূল শরীরের অধিকারিণী ছিলেন যে, পরিচিত লোকদের থেকে তিনি নিজেকে গোপন রাখতে পারতেন না। উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] তাঁকে দেখে বলিলেন, হে সাওদাহ! জেনে রেখ, আল্লাহ্‌র কসম, আমাদের দৃষ্টি থেকে গোপন থাকতে পারবে না। এখন দেখ তো, কীভাবে বাইরে যাবে? আয়েশা [রাদি.] বলেন, সাওদাহ [রাদি.] ফিরে আসলেন। আর এ সময় রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] আমার ঘরে রাতের খানা খাচ্ছিলেন। তাহাঁর হাতে ছিল টুকরা হাড়। সাওদাহ [রাদি.] ঘরে প্রবেশ করে বলিলেন, আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গিয়েছিলাম। তখন উমার [রাদি.] আমাকে এমন এমন কথা বলেছে। আয়েশা [রাদি.] বলেন, এ সময় আল্লাহ্ তাআলা তাহাঁর নিকট ওয়াহী অবতীর্ণ করেন। ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়া শেষ হল, হাড় টুকরা তখনও তাহাঁর হাতেই ছিল, তিনি তা রেখে দেননি। রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] বলিলেন, অবশ্যই দরকার হলে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

[বোখারী পর্ব ৬৫ সূরা [১৩] আল-আহযাব অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৪৭৯৫; মুসলিম ৩৯/৭, হাঃ ২১৭০] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৮. অপরিচিত মহিলার নিকট একাকীত্বে অবস্থান এবং তার নিকট প্রবেশ করা হারাম।

১৪০৩. উকবাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] বলেছেন, মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]! দেবরদের ব্যাপারে কি নির্দেশ? তিনি উত্তর দিলেন, দেবর তো মৃত্যুতুল্য।

[বোখারী পর্ব ৬৭ অধ্যায় ১১২ হাদীস নং ৫২৩২; মুসলিম ৩৯/৮, হাঃ ২১৭২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৯. কোন লোককে তার স্ত্রী বা কোন মাহরামার সঙ্গে একাকীত্বে দেখা গেলে তাহাদের সন্দেহ দূর করার জন্য এ মহিলা আমার উমুক হয় বলে পরিচয় তুলে ধরা মুস্তাহাব।

১৪০৪. সাফীয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

একদা তিনি রামযানের শেষ দশকে মাসজিদে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর খিদমতে উপস্থিত হন। তখন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] ইতিকাফরত ছিলেন। সাফিয়্যা তাহাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। অতঃপর ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি [উম্মুল মুমিনীন] উম্মু সালামাহ [রাদি.]-এর গৃহ সংলগ্ন মাসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌঁছলেন, তখন দুজন আনসারী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা উভয়ে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে সালাম করিলেন। তাঁদের দুজনকে নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা দুজন থাম। ইনি তো [আমার স্ত্রী] সফীয়্যাহ বিনতু হুয়ায়্যী। এতে তাঁরা দুজনে সুবহানাল্লাহ হে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলে উঠলেন এবং তাঁরা বিব্রত বোধ করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ শয়তান মানুষের রক্তের শিরায় চলাচল করে। আমি ভয় করলাম যে, সে তোমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করিতে পারে।

[বোখারী পর্ব ৩৩ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ২০৩৫; মুসলিম ৩৯/৯, হাঃ ২১৭৫] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১০. কেউ যদি কোন মাজলিসে এসে খালি স্থান পায় তাহলে সেখানে বসবে অথবা মাজলিসের পিছনে বসবে।

১৪০৫. আবু ওয়াকিদ আল-লায়সী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-একদা মাসজিদে বসে ছিলেন, তাহাঁর সাথে আরও লোকজন ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনজন লোক আসলো। তন্মধ্যে দুজন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর দিকে এগিয়ে আসলেন এবং একজন চলে গেলেন। আবু ওয়াকিদ [রাদি.] বলেন, তাঁরা দুজন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তাঁদের একজন মাজলিসের মধ্যে কিছুটা খালি জায়গা দেখে সেখানে বসে পড়লেন এবং অপরজন তাহাদের পেছনে বসলেন। আর তৃতীয় ব্যক্তি ফিরে গেল। যখন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] অবসর হলেন [সাহাবীদের লক্ষ্য করে] বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ তিন ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলব না? তাহাদের একজন আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থনা করিল, আল্লাহ্ তাকে আশ্রয় দিলেন। অন্যজন লজ্জাবোধ করিল, তাই আল্লাহ্ও তার ব্যাপারে লজ্জাবোধ করিলেন। আর অপরজন [মাজলিসে হাযির হওয়া থেকে] মুখ ফিরিয়ে নিলেন, তাই আল্লাহ্ও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

[বোখারী পর্ব ৩ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৬৬; মুসলিম ৩৯/১০ হাঃ ৬১৭৬] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১১. কেউ যদি তার যথাস্থানে প্রথমে বসে তাহলে তাকে তার স্থান থেকে উঠিয়ে দেয়া হারাম।

১৪০৬. ইবনি উমার হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপর কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সে সেখানে বসবে না।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ৩১ হাদীস নং ৬২৬৯; মুসলিম ৩৯/১১, হাঃ ২১৭৭] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১৩. অপরিচিতা মহিলাদের নিকট মেয়েলি স্বভাবের লোকের প্রবেশে বাধা দেয়া।

১৪০৭. উম্মে সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমার কাছে এক হিজড়া ব্যক্তি বসা ছিল, এমন সময়ে নাবী [সাঃআঃ] আমার ঘরে প্রবেশ করিলেন। আমি শুনলাম যে, সে [হিজড়া ব্যক্তি] আবদুল্লাহ ইবনি উমাইয়া [রাদি.]-কে বলছে, হে আবদুল্লাহ! কী বল, আগামীকাল যদি আল্লাহ তোমাদেরকে তায়েফের উপর বিজয় দান করেন তা হলে গাইলানের কন্যাকে নিয়ে নিও। কেননা সে [এতই কোমলদেহী], সামনের দিকে আসার সময়ে তার পিঠে চারটি ভাঁজ পড়ে আবার পিঠ ফিরালে সেখানে আটটি ভাঁজ পড়ে। {উম্মে সালামাহ [রাদি.] বলেন} তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ এদেরকে তোমাদের কাছে ঢুকতে দিও না।

[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৫৭ হাদীস নং ৪৩২৪; মুসলিম ৩৯/১৩, হাঃ ২১৮০] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১৪. পথিমধ্যে কোন অপরিচিতা মহিলা খুবই ক্লান্ত হয়ে গেলে তাকে আরোহীর পিছনে উঠানো জায়িয।

১৪০৮. আসমা বিন্তে আবু বকর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন যুবায়র [রাদি.] আমাকে শাদী করিলেন, তখন তার কাছে কোন ধন-সম্পদ ছিল না, এমন কি কোন স্থাবর জমি-জমা, দাস-দাসীও ছিল না; শুধুমাত্র কুয়ো থেকে পানি উত্তোলনকারী একটি উট ও একটি ঘোড়া ছিল। আমি তাহাঁর উট ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম এবং পানি উত্তোলনকারী মশক ছিঁড়ে গেলে সেলাই করতাম, আটা পিষতাম; কিন্তু ভালো রুটি তৈরি করিতে পারতাম না। তাই আনসারী প্রতিবেশী মহিলারা আমার রুটি তৈরিতে সাহায্য করত। আর তারা ছিল খুবই উত্তম নারী। রসূল  [সাঃআঃ] যুবায়র [রাদি.]-কে একখণ্ড জমি দিয়েছিলেন। আমি সেখান থেকে মাথায় করে খেজুরের আঁটির বোঝা বহন করে আনতাম। ঐ জমির দূরত্ব ছিল প্রায় দুমাইল। একদিন আমি মাথায় করে খেজুরের আঁটি বহন করে নিলে আসছিলাম। এমন সময় রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ]-এর সাক্ষাত হল, তখন রসূল  [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কয়েকজন আনসারও ছিল। নাবী [সাঃআঃ] আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে তাহাঁর উটের পিঠে বসার জন্য তাহাঁর উটকে ইখ্! ইখ্! বলিলেন, যাতে উটটি বসে এবং আমি তাহাঁর পিঠে আরোহণ করিতে পারি। আমি পরপুরুষের সঙ্গে একত্রে যেতে লজ্জাবোধ করিতে লাগলাম এবং যুবায়র [রাদি.]-এর আত্মসম্মানবোধের কথা আমার মনে পড়ল। কেননা, সে ছিল খুব আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। রাসূলুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] বুঝতে পারলেন, আমি খুব লজ্জিত বোধ করছি। সুতরাং তিনি এগিয়ে চললেন। আমি যুবায়র [রাদি.]-এর কাছে পৌঁছলাম এবং বললাম, আমি খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে রসূল  [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে আমার দেখা হয় এবং তাহাঁর সঙ্গে কিছু সংখ্যক সাহাবী ছিলেন। তিনি তাহাঁর উটকে হাঁটু গেড়ে বসালেন, যেন আমি তাতে সওয়ার হইতে পারি। কিন্তু আমি তোমার আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে লজ্জা অনুভব করলাম। এ কথা শুনে যুবায়র বলিলেন, আল্লাহ্‌র কসম! খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় বহন করা তাহাঁর সঙ্গে উটে চড়ার চেয়ে আমার কাছে অধিক লজ্জাজনক। এরপর আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] ঘোড়া দেখাশুনার জন্য আমার সাহায্যার্থে একজন খাদিম পাঠিয়ে দিলেন। এরপরই আমি যেন রেহাই পেলাম।

[বোখারী পর্ব ৬৭ অধ্যায় ১০৭ হাদীস নং ৫২২৪; মুসলিম ৩৯/১৪, হাঃ ২১৮২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ হাসান হাদীস

৩৯/১৫. তৃতীয় জনের বিনা অনুমতিতে দুজনে চুপে চুপে কথা বলা।

১৪০৯. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি কোথাও তিনজন লোক থাকে তবে তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দজনে মিলে চুপে চুপে কথা বলবে না।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৬২৮৮ ; মুসলিম পর্ব ৩৯/হাঃ ২১৮৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪১০. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোথাও তোমরা তিনজনে থাকো, তখন একজনকে বাদ দিয়ে দুজনে কানে-কানে কথা বলবে না। এতে তার মনে দুঃখ হইবে। তোমরা মানুষের মধ্যে মিশে গেলে তবে তা করাতে দোষ নেই।

[বোখারী পর্ব ৭৯ অধ্যায় ৪৭ হাদীস নং ৬২৯০; মুসলিম ৩৯/১৫, হাঃ ২১৮৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১৬. চিকিৎসা, অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা।

১৪১১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বদ নজর লাগা সত্য।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ৫৭৪০; মুসলিম ৩৯/২১, হাঃ ২১৯৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১৭. যাদু

১৪১২. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাহাঁর মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেননি। সুফ্ইয়ান বলেনঃ এ অবস্থা খুব যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি অবগত হও যে, আমি আল্লাহ্‌র কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বাতলিয়ে দিয়েছেন। [স্বপ্নে দেখি] আমার নিকট দুজন লোক এলেন। তাহাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং অন্যজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লাবীদ ইবনি আসাম। এ ইয়াহূদীদের মিত্র সুরাইক গোত্রের একজন; সে ছিল মুনাফিক। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে যারওয়ান নামক কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়, আর এ কূপের [পার্শবর্তী] খেজুর গাছের মাথাগুলো [দেখিতে] শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি এ কথা প্রচার করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র কসম, তিনি আমাকে শিফা দান করিয়াছেন; আর আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করিতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪৯ হাদীস নং ৫৭৬৫; মুসলিম ৩৯/১৭, হাঃ ২১৮৯] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১৮. বিষ

১৪১৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী মহিলা নাবী [সাঃআঃ]-এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এল। সেখান হইতে কিছু অংশ তিনি খেলেন, অতঃপর মহিলাকে হাযির করা হল। তখন বলা হল, আপনি কি একে হত্যা করবেন না? তিনি বলিলেন, না। আনাস [রাদি.] বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর তালুতে আমি বরাবরই বিষক্রিয়ার আলামত দেখিতে পেতাম।

[বোখারী পর্ব ৫১ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ২৬১৭; মুসলিম ৩৯/১৭ হাঃ ২১৯০] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/১৯. অসুস্থ ব্যক্তিকে ঝাড়ফুঁক করা মুস্তাহাব।

১৪১৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিয়ম ছিল, তখন যখন কোন রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তাহাঁর নিকট যখন কোন রোগীকে আনা হত, তখন তিনি বলিতেনঃ

أَذْهِبِ الْبَاسَ، رَبَّ النَّاسِ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

কষ্ট দূর করে দাও। হে মানুষের রব, শেফা দান কর, তুমিই একমাত্র শেফাদানকারী। তোমার শেফা ব্যতীত অন্য কোন শেফা নেই। এমন শেফা না দান কর যা সামান্য রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে।

[বোখারী পর্ব ৭৫ অধ্যায় ২০ হাদীস নং ৫৬৭৫; মুসলিম ৩৯/১৯, হাঃ ২১৯১] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/২০. সূরা নাস, ফালাক্ব দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা ও প্রশ্বাসের থুথু দেয়া।

১৪১৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

যখনই নাবী [সাঃআঃ] অসুস্থ হইতেন তখনই তিনি সূরায়ে মুআব্বিযাত পড়ে নিজের উপর ফুঁক দিতেন। যখন তাহাঁর রোগ কঠিন হয়ে গেল, তখন বারকাত অর্জনের জন্য আমি এ সূরাহ পাঠ করে তাহাঁর হাত দিয়ে শরীর মসেহ্ করিয়ে দিতাম।

[বোখারী পর্ব ৬৬ অধ্যায় ১৪ হাদীস নং ৫০১৬; মুসলিম ৩৯/২০ হাঃ ২১৯২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/২১. বদনজর, পিঁপড়ার কাপড় ও বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে ঝাড়ফুঁক করা মুস্তাহাব

১৪১৬. আবদুর রহমান ইবনিল আসওয়াদের পিতা আসওয়াদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাদি.]-কে বিষাক্ত প্রাণীর দংশনের কারণে ঝাড়-ফুঁক গ্রহণের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] সব রকমের বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে ঝাড়-ফুঁক গ্রহণের জন্য অনুমতি দিয়েছেন।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৩৭ হাদীস নং ৫৭৪১; মুসলিম ৩৯/২১ হাঃ ২১৯৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪১৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ঝাড়-ফুঁকে পড়তেনঃ

بِسْمِ اللهِ، تُرْبَةُ أَرْضِنَا، بِرِيقَةِ بَعْضِنَا، يُشْفَى سَقِيمُنَا، بِإِذْنِ رَبِّنَا

আমাদের দেশের মাটি এবং আমাদের কারও থুথুতে আমাদের রবের হুকুমে আমাদের রোগী আরোগ্য লাভ করে।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৩৮ হাদীস নং ৫৭৪৫; মুসলিম ৩৯/২১ ২১৯৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪১৮. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে আদেশ করিয়াছেন কিংবা তিনি বলেছেন, নজর লাগার জন্য ঝাড়ফুঁক করিতে।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৩৫ হাদীস নং ৫৭৩৮; মুসলিম ৩৯/৮, হাঃ ২১৯৫] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪১৯. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর ঘরে একটি মেয়েকে দেখলেন যে, তার চেহারায় কালিমা রয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তাকে ঝাড়ফুঁক করাও, কেননা তার উপর [বদ] নযর লেগেছে।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৩৫ হাদীস নং ৫৭৩৯; মুসলিম ৩৯/২১, হাঃ ২১৯৭] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/২৩. কুরআন ও যিকির আযকার দ্বারা ঝাড়ফুঁক করার পারিশ্রমিক নেয়া জায়িয।

১৪২০. আবু সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন। তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাহাদের মেহমান হইতে চাইলেন। কিন্তু তারা তাহাদের মেহমানদারী করিতে অস্বীকার করিল। সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার [আরোগ্যের] জন্য সব ধরনের চেষ্টা করিল। কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাহাদের কেউ বলিল, এ কাফেলা যারা এখানে অবতরণ করেছে তাহাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত। সম্ভবত, তাহাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে। ওরা তাহাদের নিকট গেল এবং বলিল, হে যাত্রীদল! আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না। তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি? তাহাদের [সাহাবীদের] একজন বলিলেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করিতে পারি। আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি। কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করব না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাহাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল। তারপর তিনি গিয়ে

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

“আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” [সূরা ফাতিহা] পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে [এমনভাবে নিরাময় হল] যেন বন্ধন হইতে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না। [বর্ণনাকারী বলেন,] তারপর তারা তাহাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল। সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়-ফুঁক করেছিলেন তিনি বলিলেন এটা করব না, যে পর্যন্ত না আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কী নির্দেশ দেন। তারা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করিলেন। তিনি {নাবী [সাঃআঃ]} বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দুআ? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নাবী [সাঃআঃ] হাসলেন।

[বোখারী পর্ব ৩৭ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ২২৭৬; মুসলিম ৩৯/২৩, হাঃ ২২০১] দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস৩৯/২৬. প্রতিটি রোগের ঔষধ আছে এবং চিকিৎসা করা মুস্তাহাব। সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪২১জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের ঔষধসমূহের কোনটির মধ্যে যদি কল্যাণ বিদ্যমান থেকে থাকে তাহলে তা রয়েছে শিঙ্গাদানের মধ্যে কিংবা মধু পানের মধ্যে কিংবা আগুনের দ্বারা ঝলসিয়ে দেয়ার মধ্যে। তবে তা রোগ অনুযায়ী হইতে হইবে। আর আমি আগুন দ্বারা দাগ দেয়াকে পছন্দ করি না।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৫৬৮৩; মুসলিম ৩৯/২৬, হাঃ ২২০৫]

১৪২২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] শিঙ্গা নিয়েছিলেন এবং শিঙ্গা প্রয়োগকারীকে তার মজুরী দিয়েছিলেন।

[বোখারী পর্ব ৩৭ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ২২৭৮; মুসলিম ৩৯/২৬, হাঃ ১২০২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪২৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] শিঙ্গা লাগাতেন এবং কোন লোকের পারিশ্রমিক কম দিতেন না।

[বোখারী পর্ব ২৭ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ২২৮০; মুসলিম ৩৯/২৬, হাঃ ১৫৭৭] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪২৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, জ্বর হয় জাহান্নামের উত্তাপ থেকে, কাজেই তোমরা পানি দিয়ে তা ঠান্ডা কর।

[বোখারী ৫৯/১০ হাদীসঃ ৩২৬৪; মুসলিম ৩৯/২৬ হাঃ ২২০৯] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪২৫. ফাতিমাহ বিনত্ মুনযির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আসমা বিন্ত আবু বকর [রাদি.]-এর নিকট যখন কোন জ্বরাক্রান্ত মহিলাকে দুআর জন্য আনা হত, তখন তিনি পানি হাতে নিয়ে সেই মহিলার জামার ফাঁক দিয়ে তার গায়ে ছিটিয়ে দিতেন এবং বলিতেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের আদেশ দিতেন, আমরা যেন পানি দিয়ে জ্বর ঠাণ্ডা করে দেই।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৫৭২৪; মুসলিম ৩৯/২৬, হাঃ ২২১১] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪২৬. রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ জ্বর হল জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্ট। কাজেই তোমরা তা পানির দ্বারা ঠাণ্ডা করে নিও।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৫৭২৬; মুসলিম ৩৯/২৬, হাঃ ২২১২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/২৭. লাদুদ [রুগীর অনিচ্ছায় তার মুখের একধারে ঔষধ দিয়ে তাকে জোর করে খাওয়ান] দ্বারা চিকিৎসা করা মাকরূহ।

১৪২৭. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর রোগাক্রান্ত অবস্থায় তাহাঁর মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তিনি ইশারায় আমাদেরকে তাহাঁর মুখে ঔষধ ঢালতে নিষেধ করিলেন। আমরা বললাম, এটা ঔষধের প্রতি রোগীদের স্বাভাবিক বিরক্তিবোধ। যখন তিনি সুস্থবোধ করিলেন তখন তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের ওষুধ সেবন করাতে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম, আমরা মনে করেছিলাম এটা ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ বিরক্তিভাব। তখন তিনি বলিলেন, আব্বাস ব্যতীত বাড়ির প্রত্যেকের মুখে ঔষধ ঢাল তা আমি দেখি। কেননা সে তোমাদের মাঝে উপস্থিত নেই।

[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৮৪ হাদীস নং ৪৪৫৮; মুসলিম ৩৯/২৭, হাঃ ২২১৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/২৮. উদুল হিন্দ দ্বারা চিকিৎসা করা আর তা [চন্দন] হচ্ছে কাঠ।

১৪২৮. উম্মু কায়স বিনত মিহসান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তাহাঁর এমন একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট এলেন যে তখনো খাবার খেতে শিখেনি। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] শিশুটিকে তাহাঁর কোলে বসালেন। তখন সে তাহাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনিয়ে এর উপর ছিটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করিলেন না। *[পেশাব অপবিত্র। তবে পেশাব লেগে যাওয়া বস্তুকে পবিত্র করার পদ্ধতি দু রকম। একঃ প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি অথবা দুগ্ধপোষ্য মেয়ে হলে তার পেশাব অবশ্যই ধুয়ে ফেলতে হইবে। দুইঃ যদি দুগ্ধপোষ্য ছেলে হয় তবে পানির ছিটা দিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে।]

[বোখারী পর্ব ৪ অধ্যায় ৫৯ হাদীস নং ২২৩; মুসলিম ২/৩১, হাঃ ২৮৭] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪২৯. উম্মু কায়স বিন্ত মিহসান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা ভারতীয় এই চন্দন কাঠ ব্যবহার করিবে। কেননা তার মধ্যে সাত ধরনের চিকিৎসা [নিরাময়] রয়েছে। শ্বাসনালীর ব্যথার জন্য এর [ধোঁয়া] নাক দিয়ে টেনে নেয়া যায়, নিউমোনিয়া দূর করার জন্যও তা সেবন করা যায়।

[বোখারী পর্ব ৭৩ অধ্যায় ১০ হাদীস নং ৫৬৯২; মুসলিম ৩৯/২৮ হাঃ ২২১৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/২৯. কালজিরা দ্বারা চিকিৎসা করা।

১৪৩০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ কালো জিরা সাম ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ৫৬৮৮; মুসলিম ৩৯/২৯ হাঃ ২২১৫] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩০. তালবিনা [আটা, ভুষি, মধু ইত্যাদি দ্বারা তৈরী খাবার] রোগীর মনে প্রশান্তি দানকারী।

১৪৩১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর পরিবারের কোন ব্যক্তি মারা গেলে মহিলারা এসে সমবেত হলো। তারপর তাহাঁর আত্মীয়রা ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহিলারা ব্যতীত বাকী সবাই চলে গেলে, তিনি ডেগে তালবীনা [আটা, মধু ইত্যাদি সংযোগে তৈরি খাবার] পাকাতে নির্দেশ দিলেন। তা পাকানো হলো। এরপর সারীদ [গোশতের মধ্যে রুটি টুকরো করে দিয়ে তৈরী খাবার] প্রস্তুত করা হলো এবং তাতে তালবীনা ঢালা হলো। তিনি বললেনঃ তোমরা এ থেকে খাও। কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তালবীনা রুগ্ন ব্যক্তির চিত্তে প্রশান্তি এনে দেয় এবং শোক দুঃখ কিছুটা লাঘব করে।

[বোখারী পর্ব ৭০ অধ্যায় ২৪ হাদীস নং ৫৪১৭; মুসলিম ৩৯/৩০, হাঃ ২২১৬] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩১. মধু পান করানোর মাধ্যমে চিকিৎসা করা।

১৪৩২. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললঃ আমার ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে তৃতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি পুনরায় এসে বললঃ আমি অনুরূপই করেছি। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন, কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট অসত্য বলছে। তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু পান করাল। এবার সে আরোগ্য লাভ করিল।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৫৬৮৪; মুসলিম ৩৯/৩১, হাঃ ২২৬৭] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩২. মহামারী, তায়েরাহ [পাখি উড়িয়ে] অশুভ ফল নেয়া ও গণনা করে ভবিষ্যদ্বাণী করা ইত্যাদির বর্ণনা।

১৪৩৩. উসামাহ্ বিন যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, প্লেগ একটি আযাব। যা বনী ইসরাঈলের এক সম্প্রদায়ের উপর পতিত হয়েছিল অথবা তোমাদের পূর্বে যারা ছিল। তোমরা যখন কোন স্থানে প্লেগের ছড়াছড়ি শুনতে পাও, তখন তোমরা সেখানে যেয়ো না। আর যখন প্লেগ এমন জায়গায় দেখা দেয়, যেখানে তুমি অবস্থান করছো, তখন সে স্থান হইতে পালানোর লক্ষ্যে বের হয়ো না। আবু নযর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, পলায়নের লক্ষ্যে এলাকা ত্যাগ করো না। তবে অন্য কারণে যেতে পার, তাতে বাধা নেই।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৩৪৭৩; মুসলিম ৩৯/৩২ হাঃ ২২১৮] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৩৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] সিরিয়ার দিকে যাত্রা করেছিলেন। অবশেষে তিনি যখন সারগ এলাকায় গেলেন, তখন তাহাঁর সঙ্গে সৈন্য বাহিনীর প্রধানগণ তথা আবু উবাইদাহ ইবনি জার্‌রাহ [রাদি.] ও তাহাঁর সঙ্গীগণ সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা তাঁকে অবহিত করেন যে, সিরিয়া এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, তখন উমার [রাদি.] বলেনঃ আমার নিকট প্রবীণ মুহাজিরদের ডেকে আন। তখন তিনি তাঁদের ডেকে আনলেন। উমার [রাদি.] তাঁদের সিরিয়ার প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটার কথা অবহিত করে তাঁদের কাছে পরামর্শ চাইলেন। তখন তাঁদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল। কেউ বললেনঃ আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বের হয়েছেন; কাজেই তা থেকে ফিরে যাওয়াকে আমরা পছন্দ করি না। আবার কেউ কেউ বললেনঃ আপনার সঙ্গে রয়েছেন শেষ অবশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণ, কাজেই আমাদের কাছে ভাল মনে হয় না যে, আপনি তাহাদের এই প্লেগের মধ্যে ঠেলে দিবেন। উমার [রাদি.] বললেনঃ তোমরা আমার নিকট থেকে চলে যাও। এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট আনসারদের ডেকে আন। আমি তাহাদের ডেকে আনলাম। তিনি তাহাদের কাছে পরামর্শ চাইলে তাঁরাও মুহাজিরদের পথ অবলম্বন করিলেন এবং তাঁদের ন্যায় মতভেদ করিলেন। উমার [রাদি.] বললেনঃ তোমরা উঠে যাও। এরপর আমাকে বললেনঃ এখানে যে সকল বয়োজ্যেষ্ঠ কুরাইশী আছেন, যাঁরা মাক্কাহ বিজয়ের বছর হিজরাত করেছিলেন, তাহাদের ডেকে আন। আমি তাহাদের ডেকে আনলাম, তখন তাঁরা পরস্পরে কোন মতপার্থক্য করেননি। তাঁরা বললেনঃ আপনার লোকজনকে নিয়ে ফিরে যাওয়া এবং তাহাদের প্লেগের কবলে আপনার ঢেলে না দেয়াই আমাদের কাছে ভাল মনে হয়। তখন উমার [রাদি.] লোকজনের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, আমি ভোরে সাওয়ারীর পিঠে আরোহণ করব [ফিরে যাওয়ার জন্য]। এরপর ভোরে সকলে এভাবে প্রস্তুতি নিল। আবু উবাইদাহ [রাদি.] বললেনঃ আপনি কি আল্লাহ্‌র নির্ধারণকৃত তাকদীর থেকে পলায়ন করার জন্য ফিরে যাচ্ছেন? উমার [রাদি.] বললেনঃ হে আবু উবাইদাহ! যদি তুমি ব্যতীত অন্য কেউ কথাটি বলত! হাঁ, আমরা আল্লাহ্‌র এক তাকদীর থেকে আল্লাহ্‌র অন্য একটি তাকদীরের দিকে ফিরে যাচ্ছি। তুমি বলত, তোমার কিছু উটকে যদি তুমি এমন কোন উপত্যকায় নিয়ে যাও আর সেখানে আছে, দুটি মাঠ। তন্মধ্যে একটি হল সবুজ শ্যামল, আর অন্যটি হল শুষ্ক ও ধূসর। এবার বল ব্যাপারটি কি এমন নয় যে, যদি তুমি সবুজ মাঠে চরাও তাহলে তা আল্লাহ্‌র তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ। আর যদি শুষ্ক মাঠে চরাও, তাহলে তাও আল্লাহ্‌র তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ। বর্ণনাকারী বলেন, এমন সময় আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] আসলেন। তিনি এতক্ষণ যাবৎ তাহাঁর কোন প্রয়োজনের কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেনঃএ ব্যাপারে আমার নিকট একটি তথ্য আছে, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা যখন কোন এলাকায় [প্লেগের] প্রাদুর্ভাবের কথা শোন, তখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোন এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর তোমরা সেখানে থাক, তাহলে পলায়ন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর উমার [রাদি.] আল্লাহ্‌র প্রশংসা করিলেন, তারপর প্রত্যাবর্তন করিলেন।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৩০ হাদীস নং ৫৭২৯; মুসলিম ৩৯/৩২, হাঃ ২২১৯] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩৩. আদওয়া, ত্বিয়ারাহ, হা-মা, সাফার, বৃষ্টির প্রতিশ্রতি দানকারী নক্ষত্র, গওল [প্রভৃতি শুভাশুভ লক্ষণ বলিতে কিছু] নেই এবং রুগ্ন ব্যক্তির নীরোগ ব্যক্তির নিকট যাওয়া উচিত নয় [এগুলোকে অশুভ লক্ষণ মনে করে]।

১৪৩৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ রোগের কোন সংক্রমণ নেই, সফরের কোন কুলক্ষণ নেই, পেঁচার মধ্যেও কোন কুলক্ষণ নেই। তখন এক বেদুঈন বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল  [সাঃআঃ]! তাহলে আমার উটের এ অবস্থা হয় কেন? সেগুলো যখন চারণ ভূমিতে থাকে তখন সেগুলো যেন মুক্ত হরিণের পাল। এমন অবস্থায় চর্মরোগা উট এসে সেগুলোর মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং এগুলোকেও চর্ম রোগাক্রান্ত করে ফেলে। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তাহলে প্রথমটিকে চর্ম রোগাক্রান্ত কে করেছে

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৫৭১৭; মুসলিম ৩৯/৩৩, হাঃ ২২২০] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৩৬. আবু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবু হুরাইরাহ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যেন কখনও রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের সাথে না রাখে।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৫৩ হাদীস নং ৫৭৭১; মুসলিম ৩৯/৩৩, হাঃ ২২২১] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩৪. তায়েরাহ, ফাল এবং যাতে অশুভ হয়।

১৪৩৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [রোগের মধ্যে] কোন সংক্রমণ নেই এবং শুভ-অশুভ নেই আর আমার নিকট ফাল পছন্দনীয়। সহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ ফাল কী? তিনি বললেনঃ উত্তম কথা

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৫৭৭৬; মুসলিম ৩৯/৩৪, হাঃ ২২২৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৩৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, শুভ-অশুভ নির্ণয়ে কোন লাভ নেই, বরং শুভ আলামত গ্রহণ করা ভাল। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ শুভ আলামত কী? তিনি বললেনঃ ভাল বাক্য, যা তোমাদের কেউ শুনে থাকে।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪৩ হাদীস নং ৫৭৫৪; মুসলিম ৩৯/৩৪, হাঃ ২২২৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৩৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ছোঁয়াচে ও শুভ-অশুভ বলিতে কিছু নেই। অমঙ্গল তিন বস্তুর মধ্যে নারী, ঘর ও জানোয়ার।

[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪৩ হাদীস নং ৫৭৫৩; মুসলিম ৩৯/৩৪, হাঃ ২২২৫] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৪০. সাহ্‌ল ইবনি সাদ সাঈদী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, যদি কোন কিছুতে অকল্যাণ থেকে থাকে, তবে তা আছে নারী, ঘোড়া ও বাড়িতে।

[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৪৭ হাদীস নং ২৮৫৯; মুসলিম ৩৯/৩৪ হাঃ ২২২৬] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩৭. সাপ ও এ জাতীয় জীব হত্যা করা।

১৪৪১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে মিম্বারের উপর ভাষণ দানের সময় বলিতে শুনেছেন, সাপ মেরে ফেল। বিশেষ করে মেরে ফেল ঐ সাপ, যার মাথার উপর দুটো সাদা রেখা আছে এবং লেজ কাটা সাপ। কারণ এ দু প্রকারের সাপ চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয় ও গর্ভপাত ঘটায়।

আবদুল্লাহ [রাদি.] বলিলেন, একদা আমি একটি সাপ মারার জন্য তার পিছু ধাওয়া করছিলাম। এমন সময় আবু লুবাবা [রাদি.] আমাকে ডেকে বলিলেন, সাপটি মেরো না। তখন আমি বললাম, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] সাপ মারার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলিলেন, এরপরে নাবী [সাঃআঃ] যে সাপ ঘরে বাস করে থাকে যাকে আওয়ামির বলা হয় এমন সাপ মারতে নিষেধ করিয়াছেন।

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ইবনি উমার [রাদি.] বলেছেন, আমাকে দেখেছেন আবু লুবাবা [রাদি.] অথবা যায়দ ইবনি খাত্তাব [রাদি.]।

[বোখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ১৪ হাদীস নং ৩২৯৭-৩২৯৯; মুসলিম ৩৯/৩৯ হাঃ ২২৩৩] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৪২. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এক গুহার মধ্যে আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। এমন সময় তাহাঁর প্রতি অবতীর্ণ হলো সূরাহ ওয়াল মুরসলঅহ। আমরা তাহাঁর মুখ থেকে সেটা গ্রহণ করছিলাম। এ সূরাহর তিলাওয়াতে তখনও রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুখ সিক্ত ছিল, হঠাৎ একটি সাপ বেরিয়ে এল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, “তোমরা ওটাকে মেরে ফেল।” আব্দুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আমরা সেদিকে দৌড়ে গেলাম, কিন্তু সাপটি আমাদের আগে চলে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, ওটা তোমাদের অনিষ্ট হইতে বেঁচে গেল যেমনি তোমরা এর অনিষ্ট হইতে বেঁচে গেলে।

[বোখারী পর্ব ৬৫ সূরা [৭৭] ওয়াল-মুরসালাত অধ্যায় ১ হাদীস নং ৪৯৩১; মুসলিম ৩৯/৩৭, হাঃ ২২৩৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩৮. গৃহে বসবাসকারী গিরগিটি মেরে ফেলাই শ্রেয়।

১৪৪৩. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মু শারকি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] তাকে গিরগিটি বা রক্তচোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

[বোখারী পর্ব ৫৯ অধ্যায় ১৫ হাদীস নং ৩৩০৭; মুসলিম ৩৯/৩৮ হাঃ ২২৩৭] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৪৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূল  [সাঃআঃ] গিরগিটিকে ক্ষতিকর [রক্তচোষা] প্রাণী বলেছেন। কিন্তু একে হত্যা করার আদেশ দিতে আমি তাঁকে শুনিনি

[বোখারী পর্ব ২৮ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ১৮৩১; মুসলিম ২৯/৩৯, হাঃ ২২২৯] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৩৯. পিঁপড়া মারা নিষেধ।

১৪৪৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, কোন একজন নাবীকে একটি পিপীলিকা কামড় দেয়। তিনি পিপীলিকার সমগ্র আবাসটি জ্বালিয়ে দেওয়ার আদেশ করেন এবং তা জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ্ তাআলা তাহাঁর প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ করেন, তোমাকে একটি পিপীলিকা কামড় দিয়েছে আর তুমি আল্লাহ্‌র তাসবীহকারী একটি জাতিকে জ্বালিয়ে দিয়েছ।

[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৫৩ হাদীস নং ৩০১৯; মুসলিম ৩৯/৩৯ হাঃ ২২১৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৪০. বিড়াল হত্যা করা নিষিদ্ধ।

১৪৪৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলেন, এক নারীকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেয়া হয়েছিল। সে বিড়ারটিকে বেঁধে রেখেছিল। সে অবস্থায় বিড়ালটি মরে যায়। মহিলাটি ঐ কারণে জাহান্নামে গেল। কেননা সে বিড়ালটিকে খানা-পিনা কিছুই করাইনি এবং ছেড়েও দেয়নি যাতে সে যমীনের পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকত।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৩৪৮২; মুসলিম ৩৯/৪০ হাঃ ২২৪২] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯/৪১. খাওয়া নিষিদ্ধ এমন প্রাণীকে খাদ্য ও পানি খাওয়ানোর বর্ণনা।

১৪৪৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেন, একজন লোক রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে তার ভীষণ পিপাসা লাগল। সে কূপে নেমে পানি পান করিল। এরপর সে বের হয়ে দেখিতে পেল যে, একটা কুকুর হাঁপাচ্ছে এবং পিপাসায় কাতর হয়ে মাটি চাটছে। সে ভাবল, কুকুরটারও আমার মতো পিপাসা লেগেছে। সে কূপের মধ্যে নামল এবং নিজের মোজা ভরে পানি নিয়ে মুখ দিয়ে সেটি ধরে উপরে উঠে এসে কুকুরটিকে পানি পান করাল। আল্লাহ তাআলা তার আমল কবূল করিলেন এবং আল্লাহ তার গোনাহ মাফ করে দেন। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]! চতুষ্পদ জন্তুর উপকার করলেও কি আমাদের সাওয়াব হইবে? তিনি বলিলেন, প্রত্যেক প্রাণীর উপকার করাতেই পুণ্য রয়েছে।

[বোখারী পর্ব ৪২ অধ্যায় ৯ হাদীস নং ২৩৬৩; মুসলিম ৩৯/৪১, হাঃ ২২৪৪] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৪৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলেন যে, একবার একটি কুকুর এক কূপের চতুর্দিকে ঘুরছিল এবং অত্যন্ত পিপাসার কারণে সে মৃত্যুর কাছে পৌঁছেছিল। তখন বনী ইসরাঈলের ব্যভিচারিণীদের একজন কুকুরটির অবস্থা লক্ষ্য করিল এবং তার পায়ের মোজা দিয়ে পানি সংগ্রহ করে কুকুরটিকে পান করালো। এ কাজের বিনিময়ে আল্লাহ্ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিলেন।

[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৩৪৬৭; মুসলিম ৩৯/৪১ হাঃ ২২৪৫] সালাম দেওয়ার নিয়ম -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

Comments

One response to “সালাম দেওয়ার নিয়ম । অসুখ ও ঝাড়ফুঁকের বর্ণনা।”

Leave a Reply