আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ – মিসকাত শরীফ

আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ – মিসকাত শরীফ

আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ – মিসকাত শরীফ >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্ব-১০, অধ্যায়ঃ আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ

পরিচ্ছদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

২২৮৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার নিরানব্বই– এক কম একশটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামগুলো মুখস্থ করিবে সে জান্নাতে যাবে। অপর বর্ণনায় আছে, তিনি বিজোড়, [তাই] বিজোড়কে ভালবাসেন। ]{১}

{১} সহীহ : বোখারী ২৭৩৬, ৭৩৯২, মুসলিম ২৬৭৭, তিরমিজি ৩৫০৬, ইবনি মাজাহ ৩৮৬০, আহমাদ ৭৬২৩, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ২৯২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৮১৬, ইবনি হিববান ৮১৭, সহীহ আল জামি ২১৬৬। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২২৮৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামগুলো মুখস্থ করিবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। যে নামগুলোর মধ্যে একটি নাম আল্ল-হ- যিনি ছাড়া আর কোন মাবূদ নেই। আর্ রহমান- দয়াময় বা মেহেরবান। যার দয়া বা মেহেরবানী সাড়া বিশ্বকে ছেয়ে আছে। আর্ রহীম- করুণা বা বিশেষ দয়ার অধিকারী, যে করুণা শুধু মুমিনদের প্রতি করা হয়। আল মালিক- রাজাধিরাজ, বাদশাহ। আল কুদ্দূস- অতি পাক-পবিত্র, ধ্বংস বা কোন অপশক্তি তাঁকে স্পর্শ করিতে পারে না। আস্ সালা-ম- শান্তিময় ও নিরাপদ, কোনরূপ অশান্তি তাঁকে ছুঁতে পারে না। আল মুমিন- নিরাপত্তাদাতা বা নিরাপদকারী। আল মুহায়মিনু- রক্ষণাবেক্ষণকারী। আল আযীয- প্রভাবশালী, অন্যের ওপর বিজয়ী। আল জাব্বা-র- কঠিন-কঠোর, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সংশোধনকারী। আল মুতাকাব্বিরু- অহংকারের অধিকারী, যাঁর জন্য অহংকার করাই শোভা পায়।

আল খ-লিক্ব- স্রষ্টা। আল বা-রী- ত্রুটিহীন সৃষ্টিকারী। আল মুসাব্বির- প্রকল্পক ও নকশা অংকনকারী, ডিজাইনার। আল গাফফা-র- বড় ক্ষমাশীল, যিনি অপরাধ ঢেকে রাখেন এবং অসংখ্য অপরাধ ক্ষমা করিতে দ্বিধাবোধ করেন না। আল কহহা-র- সকল বস্ত্ত যাঁর ক্ষমতার অধীন, অর্থাৎ- ক্ষমতা প্রয়োগে যাঁর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। আল ওয়াহহা-ব- বড় দাতা, যাঁর দান অসীম। আর্ রাযযা-ক- রিযকদাতা। আল ফাত্‌তা-হ- যিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সৃষ্টির মীমাংসাকারী, বিপদমুক্তকারী। আল আলীম- বড় জ্ঞাতা, যিনি পূর্বাপর সবকিছু জানেন। আল, ক্ব-বিয- রিযক ইত্যাদির সংকোচনকারী। আল বা-সিত্ব- রিযকসহ ইত্যাদির সম্প্রসারণকারী। আল খ-ফিয- যিনি নীচে নামান। আর্ র-ফিউ- যিনি উপরে উঠান। আল মুইযযু- সম্মান ও পূর্ণতা দানকারী। আল মুযিল্লু- অপমান ও অপূর্ণতা দানকারী। আস্ সামীউ- সর্বশ্রোতা, উচ্চস্বর-নিম্বস্বর সকল স্বরের শ্রোতা। আল বাসীর- দর্শক, ছোট-বড় সকল বস্ত্তর।

আল হাকাম- নির্দেশ দানকারী, বিধানকর্তা। আল আদলু- ন্যায়বিচারক, যিনি যা উচিত তা-ই করেন। আল লাত্বীফ- যিনি সৃষ্টির যখন যা আবশ্যক তা করে দেন; অনুগ্রহকারী, সূক্ষ্মদর্শী বা যিনি অতি সূক্ষ্ম বিষয় সম্পর্কেও অবগত। আল খবীর- যিনি গুপ্ত রহস্যাদি সম্পর্কে অবগত। আল হালীম- ধৈর্যশীল, যিনি অপরাধ জেনেও সহজে শাস্তি দেন না। আল আযীম- বিরাট মহাসম্মানী। আল গাফূর- যিনি অপরাধ গোপন রাখেন এবং অতি জঘন্য অপরাধও ক্ষমা করেন। আশ্ শাকূর- কৃতজ্ঞ, যিনি অল্পে বেশী পুরস্কার দেন। আল আলীয়্যু- সর্বোচ্চ সমাসীন; সর্বোপরি। আল কাবীর- বিরাট, মহান, ধারণার ঊর্ধে বড়। আল হাফীয- বড় রক্ষাকারী, যিনি বান্দাদের সব বিষয় লক্ষ্য রাখেন। আল মুক্বীতু- খাদ্যদাতা; দৈহিক ও আত্মিক শক্তিদাতা। আল হাসীবু- যিনি অন্যের জন্য যথেষ্ট হন; যিনি যার জন্য যা যথেষ্ট তা দান করেন।

আল জালীলু- গৌরবান্বিত, মহিমান্বিত; যাঁর মহিমা অতুলনীয়। আল কারীমু- বড় দাতা, আশার অধিক দাতা; যিনি বিনা চাওয়ায় দান করেন। আর্ রক্বীবু- যিনি সকলের সকল বিষয় লক্ষ্য রাখেন এবং সর্বদা নখদর্পণে থাকেন। আল মুজীবু- উত্তরদাতা, যিনি ডাকে সাড়া দেন। আল ওয়া-সিউ- সম্প্রসারণকারী; যাঁর দান, জ্ঞান, দয়া ও রাজ্য বিপুল ও সম্প্রসারিত। আল হাকীমু- প্রজ্ঞাবান তত্ত্বজ্ঞানী, যিনি প্রতিটি বিষয় উত্তমরূপে ও নিখুঁতভাবে সমাধা করেন। আল ওয়াদূদু- যিনি বান্দার কল্যাণকে পছন্দ করেন। আল মাজীদু- অসীম অনুগ্রহকারী। আল বা-ইসু- প্রেরক, রসূল প্রেরণকারী, রিযক প্রেরণকারী, কবর থেকে হাশরে প্রেরণকারী। আশ্ শাহীদু- বান্দার প্রতিটি কাজের সাক্ষী, যিনি প্রকাশ্য বিষয় অবগত, আল হাক্কু- সত্য ও সত্য প্রকাশকারী, যিনি প্রজ্ঞা অনুসারে কাজ করেন। আল ওয়াকীলু- কার্যকারক, যিনি বান্দাদের কাজের যোগানদাতা। আল কবিয়্যু- শক্তিবান, শক্তির অধিকারী। আল মাতীনু- বড় ক্ষমতাবান, যার ওপর কারো কোন প্রকার ক্ষমতা নেই। আল ওয়ালিয়্যু- যিনি মুমিনদের অভিভাবক, ভালবাসেন ও সাহায্য করেন।

আল হামীদু- প্রশংসিত, একমাত্র প্রশংসার যোগ্য। আল মুহসী- হিসাবরক্ষক, বান্দারা যা করে তিনি তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রাখেন। আল মুব্‌দিউ- বিনা নমুনায় স্রষ্টা, যিনি মডেল না দেখে সৃষ্টি করেন। আল মুঈদু- মৃত্যুর পর পুনঃসৃষ্টিকারী। যার পুনঃ সৃষ্টি, যিনি বিনা মডেলে সৃষ্টি করেন। আল মুহীউ- পুনরায় জীবিতকারী, আল মুমীতু- পুনরায় মৃত্যু দানকারী, যার পুনরায় সৃষ্টি করার ক্ষমতা আছে। আল হাইয়্যু- চিরঞ্জীব, আল কইয়্যূমু- স্বয়ং প্রতিষ্ঠিত, চিরস্থায়ী। আল ওয়া-জিদু- যিনি যাই চান তাই পান। আল মা-জীদু- বড় দাতা। আল ওয়া-হিদুল আহাদু- একক ও অদ্বিতীয়, যাঁর কোন শারীক নেই। আস্ সামাদু- প্রধান, প্রভু; যিনি কারো মুখাপেক্ষী নন কিন্তু সকলেই তাহাঁর মুখাপেক্ষী। আল ক-দিরু- ক্ষমতাবান, যিনি ক্ষমতা প্রয়োগে কারো মুখাপেক্ষী নন। আল মুকতাদিরু- সকলের ওপর যাঁর ক্ষমতা রয়েছে, সার্বভৌম, যাঁর বিধান চরম। আল মুকদ্দিমু- যিনি যাকে চান নিকটে করেন এবং আগে বাড়ান। আল মুআখখিরু- যিনি যাকে চান দূরে রাখেন বা পিছনে করেন। আল আও্ওয়ালু- প্রথম, অনাদি। আল আ-খিরু- সর্বশেষ, অনন্ত। আয্ যা-হিরু- যিনি ব্যক্ত, প্রকট গুণে ও নিদর্শনে। আল বা-ত্বিনু- যিনি গুপ্ত সত্তাতে। আল ওয়া-লিয়্যু- অভিভাবক, মুরুব্বী।

আল মুতাআ-লিয়্যু- সর্বোপরি। আল বাররু- মুহসিন, অনুগ্রহকারী। আত তাও্ওয়া-বু- তাওবাহ্ কবূলকারী, যিনি অপরাধে অনুশোচনাকারীর প্রতি পুনঃঅনুগ্রহ করেন। আল মুনতাকিমু- প্রতিশোধ গ্রহণকারী। আল আফুব্বু- বড়ই ক্ষমাশীল। আর্ রঊফু- বড়ই দয়ালু। মালিকুল মুল্‌ক- রাজাধিরাজ, যাঁর রাজ্যে তিনি যা ইচ্ছা তা করিতে পারেন। যুল্ জালা-লি ওয়াল ইকর-ম- মহিমা ও সম্মানের অধিকারী। আল মুকসিত্বু- অত্যাচার দমনকারী, উৎপীড়ক থেকে উৎপীড়িতের প্রতিশোধ গ্রহণকারী। আল জা-মিউ- কিয়ামাতে বান্দাদের একত্রকারী অথবা সর্বগুণের অধিকারী।

আল গনিয়্যু- বেনিয়াজ, যিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। আল মুগনিয়্যু- যিনি কাউকেও কারো মুখাপেক্ষী হইতে বাঁচিয়ে রাখেন। আল মা-নিউ- বিপদে বাধাদানকারী। আয্ যাররু- যিনি ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখেন। আন্ না-ফিউ- উপকারী, যিনি উপকারের ক্ষমতা রাখেন। আন্ নূরু- আলোকোজ্জ্বল, প্রভা, প্রভাকর। আল হা-দিয়ু- পথপ্রদর্শক [যারা তাহাঁর অনুসরণ করে তাদের]। আল বাদীউ- অদ্বিতীয়, অনুপম অথবা যিনি বিনা আদর্শে গড়েন। আল বা-ক্বী- যিনি সর্বদা আছেন, সৃষ্টি ধ্বংসের পরেও যিনি থাকিবেন। আল ওয়া-রিসু- উত্তরাধিকারী, সকল শেষ হবে আর তিনি সকলের উত্তরাধিকারী হবেন। আর্ রশীদু- কারো পরামর্শ বা জিজ্ঞাসু ছাড়া যাঁর কাজ উত্তম ও ভাল হয়। আস্ সাবূরু- বড়ই ধৈর্যশীল। [তিরমিজি, বায়হাক্বী-দাওয়াতুল কাবীর; তিরমিজি বলেন, হাদিসটি গরীব]{১}

{১} জইফ : তিরমিজি ৩৫০৭, মুসতাদারাক লিল হাকিম ৪১, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ২৯৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৮১৭, শুআবুল ঈমান ১০১, সহীহ ইবনি হিববান ৮০৮, যঈফাহ্ ২৫২৩, জইফ আল জামি ১৯৪৫। কারণ এর সানাদে আল ওয়ালীদ ইবনি মুসলিম একজন মুদাল্লিস রাবী। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২২৮৯. বুরায়দাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার এক ব্যক্তিকে বলিতে শুনলেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি এবং জানি যে, তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মাবূদ নেই। তুমি এক ও অনন্য। তুমি অমুখাপেক্ষী ও স্বনির্ভর। যিনি কাউকে জন্মও দেননি। কারো থেকে জন্মও নন। যার কোন সমকক্ষ নেই। তখন তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, এ ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে তার ইস্‌মে আযম বা সর্বাধিক বড় ও সম্মানিত নামে ডাকল। এ নামে ডেকে তাহাঁর কাছে কেউ কিছু প্রার্থনা করলে, তিনি তাকে তা দান করেন এবং কেউ ডাকলে তিনি তার ডাকে সাড়া দেন। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৪৯৩, তিরমিজি ৩৪৭৫, ইবনি মাজাহ ৩৮৫৭, আহমাদ ২২৯১৫, ইবনি হিব্বান ৮৯১, শুআবুল ঈমান ২৩৬৬, সহীহ আত তারগীব ১৬৪০। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২২৯০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মাসজিদে নাবাবীতে বসে ছিলাম। তখন জনৈক ব্যক্তি নামাজ আদায় করছিল এবং সলাতের পর বলছিল, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ তোমারই জন্য সব প্রশংসা। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই। তুমিই সবচেয়ে বড় দয়ালু, বড়দাতা। তুমিই আসমান জমিনের স্রষ্টা। হে মর্যাদা ও দান করার মালিক! হে চিরঞ্জীব, হে প্রতিষ্ঠাতা! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে আল্লাহকে ইস্মে আযম-এর সাথে ডাকে তিনি তাতে সাড়া দেন এবং যখন তাহাঁর কাছে প্রার্থনা করা হয় তখন তিনি তা দান করেন। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৪৯৫, তিরমিজি ৩৪৭৫, নাসায়ী ১৩০০, আহমাদ ১২২০৫, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৯৩৬১, ইবনি মাজাহ ৩৮৫৮, ইবনি হিববান ৮৯৩, সহীহ আত তারগীব ১৬৪১। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২২৯১. আসমা বিনতু ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর ইস্‌মে আযম এই দু আয়াতের মধ্যে রয়েছে,

وَإِلٰهُكُمْ إِلٰهٌ وَّاحِدٌ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ

ওয়া ইলা-হুকুম ইলা-হূ ওয়া-হিদ, লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়ার রহমা-নুর রহীম।

এছাড়াও সূরা আ-লি ইমরান-এর শুরুতে

الٓمْ اَللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ

আলিফ লা-ম মী-ম আল্ল-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম।

[তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, দারিমী]{১} {১} হাসান লিগয়রিহী : আবু দাউদ ১৪৯৬, তিরমিজি ৩৪৭৮, ইবনি মাজাহ ৩৮৫৫, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৯৩৬৩, দারিমী ৩৪৩২, মুজামুল কাবীর ৪৪০, সহীহ আত তারগীব ১৬৪২, সহীহ আল জামি ৯৮০। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান লিগাইরিহি

২২৯২. সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাছওয়ালা নবী ইউনুস [আঃ] মাছের পেটে গিয়ে যখন দুআ পড়েছিলেন তা হলো এই

لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّىْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ

লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্তা সুবহা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায্ যোয়া-লিমীন অর্থাৎ- তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই। তুমি পবিত্র, আমি হচ্ছি যালিম বা অত্যাচারী অপরাধী- [সূরা ইউনুস ১০ : ৮৭]।

যে কোন মুসলিমই যে কোন ব্যাপারে এ দুআ পাঠ করিবে, তার দুআ নিশ্চয়ই গৃহীত হবে। {১}

{১} সহীহ : তিরমিজি ৩৫০৫, আহমাদ ১৪৬২, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৮৬২, শুআবুল ঈমান ৬১১, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১২৩, সহীহ আত তারগীব ১৬৪৪, সহীহ আল জামি ৩৩৮৩। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

পরিচ্ছদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

২২৯৩. বুরায়দাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ইশার সলাতের সময় মাসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন দেখি জনৈক ব্যক্তি [সলাতে] কুরআন পড়ছেন এবং তার নিজের গলার স্বর উচ্চ করছেন। আমি তখন বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এভাবে [সলাতে] কুরআন পড়াকে কি আপনি রিয়া বা প্রদর্শনী বলবেন? উত্তরে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলন, না। বরং এ ব্যক্তি একজন বিনয়ী মুমিন। বুরায়দাহ্ [রাদি.] বলেন, আবু মূসা আল আশ্আরীই কুরআন পড়ছিলেন এবং তা উচ্চৈঃস্বরে পড়ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কিরাআত শুনছিলেন। তারপর আবু মূসা বসে এ দুআ করিতে লাগলেন, হে আল্লাহ! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি আল্লাহ, তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই, তুমি এক ও তুমি সকলের নির্ভরস্থল, অমুখাপেক্ষী। যিনি কাউকে জন্মও দেননি, কারো থেকে জন্মও নন এবং যার কোন সমকক্ষও নেই।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই সে আল্লাহর ঐ নামের সাথে তাহাঁর কাছে প্রার্থনা করিল, যে নাম ধরে যখন যা প্রার্থনা করা হয়, তখন তিনি তা দান করেন এবং ঐ নামের সাথে যখন তাঁকে ডাকে, তখন তিনি সে ডাকে সাড়া দেন। বুরায়দাহ্ [রাদি.] বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তাকে এটা বলব, যা আপনার কাছে শুনলাম? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ [বলো]। অতঃপর আমি তাঁকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তা বলে শুনালাম। তখন আবু মূসা [রাদি.] আমাকে বললেন, আজ থেকে আপনি আমার প্রিয় ভাই। কারণ আপনি আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সব কথা শুনালেন। {১}

{১} সহীহ : আহমাদ ২২৯৫২। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২২৯৪. সামুরাহ্ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বোত্তম [মর্যাদাপূর্ণ] কালাম বা বাক্য হলো চারটি-

سُبْحَانَ اللَّهِ

[১] সুবহা-নাল্ল-হ {আল্লাহ পবিত্র],

وَالْحَمْدُ لِلَّهِ

[২] ওয়াল হামদুলিল্লা-হ {আল্লাহর জন্য প্রশংসা],

وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

[৩] ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ {আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই],

 وَاللَّهُ أَكْبَرُ

[৪] ওয়াল্ল-হু আকবার {আল্লাহ সর্বাপেক্ষা মহান]।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় বাক্য চারটি- [১] সুবহা-নাল্ল-হ, [২] আল হামদুলিল্লা-হ, [৩] লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ও [৪] ওয়াল্ল-হু আকবার। এ চারটি কালিমার যে কোন একটি প্রথমে [আগ-পিছ করে] বললে তাতে তোমার কোন ক্ষতি হবে না। ]{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ২১৩৭, ইবনি মাজাহ ৩৮১১, ইবনি আবী শায়বাহ্ ২৯৮৬৮, আবু দাউদ ৪৯৫৮, আহমাদ ২০১০৭, মুজামুল আওসাত ৭৭১৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৩১০, শুআবুল ঈমান ৫৯৪, ইবনি হিববান ৮৩৬, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১০, সহীহ আত তারগীব ১৫৪৬, সহীহ আল জামি ৮৭৪। আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “আল্লাহ তায়ালার নাম সমূহ – মিসকাত শরীফ”

Leave a Reply