গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার ও মীরাস লাভ করা

গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার

গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার, এই অধ্যায়ে হাদীস =২৫ টি ( ১৪৯৮-১৫২২ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৩৮ গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার

পরিচ্ছেদঃ ১ – যে ব্যক্তি গোলাম বা বাঁদীর মধ্যে তার নির্ধারিত অংশকে আযাদ করে তার মাসআলা
পরিচ্ছেদঃ ২ -আযাদীপ্রদানে শর্তারোপ
পরিচ্ছেদঃ ৩ -যে লোক ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসী আযাদ করেছে, উহা ব্যতীত তার অন্য কোন মাল নেই তার বিবরণ
পরিচ্ছেদঃ ৪ -ক্রীতদাস আযাদ হলে তার মাল কার প্রাপ্য হইবে তার মাসআলা
পরিচ্ছেদঃ ৫ -উম্মাহাতুল-আওলাদ {১} -এর আযাদী এবং এ সম্পর্কিত বিবিধ হুকুম
পরিচ্ছেদঃ ৬ -পূর্বে যার উপর দাসমুক্তি ওয়াজিব হয়েছে তার জন্য কি ধরনের দাস মুক্ত করা জায়েয তার বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ৭ -আযাদ করা ওয়াজিব এমন দাস-দাসীকে কি কি কারণে বা শর্তে আযাদ করা বৈধ হয় না
পরিচ্ছেদঃ ৮ -মৃত ব্যক্তির পক্ষ হইতে জীবিত ব্যক্তির দাসদাসী আযাদ করা
পরিচ্ছেদঃ ৯ -দাস-দাসী আযাদ করার ফযীলত এবং নিষিদ্ধ যৌন সঙ্গমকারিণী ও জারজ সন্তানকে আযাদ করা
পরিচ্ছেদঃ ১০ -যে আযাদ করিবে অভিভাবকত্ব ও উত্তরাধিকার তারই জন্য হইবে
পরিচ্ছেদঃ ১১ -ক্রীতদাস কর্তৃক অভিভাবকত্ব টেনে নেয় যখন তাকে আযাদ করা হয়
পরিচ্ছেদঃ ১২ -মিত্রতার কারণে মীরাস লাভ করা
পরিচ্চেদ ১৩ -সায়িবা {১}-এর মীরাস এবং ইহুদী ও নাসরানী ক্রীতদাসকে যে আযাদ করেছে তাহার অভিভাবকত্ব ও উত্তরাধিকার

পরিচ্ছেদঃ ১ – যে ব্যক্তি গোলাম বা বাঁদীর মধ্যে তার নির্ধারিত অংশকে আযাদ করে তার মাসআলা

১৪৬০ আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি গোলামের মধ্যে তার নির্ধারিত অংশকে আযাদ করে দেয় এবং তার রয়েছে মাল [সঙ্গতি] যা গোলামের মূল্য পরিমাণ হইবে, তবে তার উদ্দেশ্যে ন্যায়সঙ্গতভাবে মূল্য নিরুপণ করা হইবে, অতঃপর শরীকদেরকে তাদের স্ব-স্ব অংশ দেয়া হইবে এবং তার পক্ষ হইতে গোলাম আযাদ হয়ে যাবে। নতুবা {অর্থাৎ গোলামের মূল্য পরিমাণ অর্থ আযাদকারীর নিকট না থাকলে} যতটুকুর সে স্বত্বাধিকারী তার সেই অংশ আযাদ হয়েছে। [বুখারি ২৫২২, মুসলিম ১০৫১]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন গোলামের ব্যাপারে আমাদের নিকট যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত মত তা হচ্ছে এই যে, গোলামের কর্তা তার গোলামের এক-তৃতীয়াংশ অথবা এক-চতুর্থাংশ অথবা অর্ধেক অংশ হইতে যে কোন অংশ আযাদ করেছে তার মৃত্যুর পর {অর্থাৎ জীবিতাবস্থায় বলেছে যে তার মৃত্যুর পর গোলামের সেই অংশ আযাদ হইবে} তবে কর্তা যতটুকু আযাদ করেছে এবং যেই পরিমাণ অংশ নির্দিষ্ট করেছে গোলাম-এর সেই পরিমাণ অংশই আযাদ হইবে। কারণ এই নির্ধারিত পরিমাণ বা অংশের আযাদী ওয়াজিব হয়েছে কর্তার মৃত্যুর পর। পক্ষান্তরে তার কর্তা জীবিত থাকতে এই ব্যাপারে তার ইখতিয়ার ছিল। {অর্থ দ্বারা ক্রয় করে অবশিষ্ট অংশ আযাদ করার ইখতিয়ারও তার ছিল।} যখন ওসীয়্যতকারী কর্তার ওসীয়্যত অনুসারে গোলাম মুক্তিপ্রাপ্ত হয়েছে, তবে ওসীয়্যতকারীর অধিকার শুধু সেই অংশে, যেই অংশ তিনি আযাদ করার জন্য নির্দিষ্ট করিয়াছেন, কারণ এ নির্ধারিত অংশ তাঁর নিজস্ব সম্পদ। কাজেই গোলামের অবশিষ্ট অংশ আযাদ হয়নি। কারণ তার মালে এখন অন্যের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে অবশিষ্ট অংশ অন্যান্য লোকের পক্ষ হইতে কিরূপে আযাদ করা হইবে? যারা প্রথম আযাদ করেনি, যারা তাকে স্বীকৃতি প্রদান করেনি, আর যারা স্বত্বেরও অধিকারী নয় ও স্বত্ব তাদের জন্য প্রমাণিতও হয়নি। এটা করিয়াছেন মৃত ব্যক্তি- সেই আযাদ করেছে এবং স্বত্বাধিকার ও তার জন্য নির্ধারিত হয়েছে। কাজেই অন্য কারো মালের উপর এই [গোলামের বাকী অংশ আযাদ করার] বোঝা চাপিয়ে দেয়া হইবে না। অবশ্য সে যদি গোলামের অবশিষ্ট অংশ তার মাল হইতে আযাদ করার জন্য ওসীয়্যত করে থাকে, তবে তার শরীক ও ওয়ারীসানদের উপর উহা জরুরী হইবে। শরীকগণ এটা অস্বীকার করিতে পারবে না। ইহা প্রযোজ্য হইবে মৃত ব্যক্তির এক-তৃতীয়াংশ মাল হইতে। কারণ এতে ওয়ারিসানদের কোন ক্ষতি নেই।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি কোন ব্যক্তি পীড়িত অবস্থায় তার গোলামের এক-তৃতীয়াংশ আযাদ করে এবং সে আযাদ করেছে পরিষ্কারভাবে। তবে সে ক্রীতদাসের সম্পূর্ণ আযাদ হইবে তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ হইতে। কারণ এই ব্যক্তি সেই ব্যক্তির মতো নয়, যে তার মৃত্যুর পর ক্রীতদাসের এক-তৃতীয়াংশ আযাদ করেছে, কারণ সে ব্যক্তি মৃত্যুর পর ক্রীতদাসের এক-তৃতীয়াংশ আযাদ করিতেছে, সে জীবিত থাকলে উহা হইতে ফিরে যেতে পারে, আযাদী কার্যকর নাও করিতে পারে। {এটা হচ্ছে ওসীয়্যত, ওসীয়্যতে রুজু করার ইখতিয়ার থাকে অর্থাৎ ওসীয়্যত হইতে প্রত্যাবর্তনের স্বাধীনতা থাকে।}

আর যে ক্রীতদাসের কর্তা পীড়িতাবস্থায় উহার এক-তৃতীয়াংশ আযাদ করেছে পরিষ্কাররূপে, সে জীবিত থাকলে গোলাম পূর্ণ আযাদী লাভ করিবে, আর মৃত্যু হলে তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ হইতে তাকে আযাদ করা হইবে। এর কারণ এই যে, মৃত ব্যক্তির নির্দেশ কার্যকর হয় তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশে, যেমন সুস্থ ব্যক্তির নির্দেশ কার্যকর হইবে তার সম্পূর্ণ সম্পদের মধ্যে।

গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ২ -আযাদীপ্রদানে শর্তারোপ

১৪৬১ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি তার দাসকে আযাদ করেছে এবং পরিষ্কারভাবে আযাদ করেছে। যেমন সে ক্রীতদাসের সাক্ষ্য বৈধ হয়, তার স্বত্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার আযাদী পূর্ণতা লাভ করে, তবে গোলামের উপর যেরূপ শর্তারোপ করা হয় তার কর্তা তার উপর অনুরূপ কোন শর্তারোপ করিতে পারবে না এবং উহার উপর গোলামির কোন কিছু চাপাতেও পারবে না। কারণ রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি গোলাম হইতে তার অংশ আযাদ করেছে তার উপর সেই গোলামের [অবশিষ্ট অংশের] মূল্য ধার্য করা হইবে। তারপর শরীকদেরকে তাদের অংশ প্রদান করা হইবে, এবং তার পক্ষ হইতে গোলাম পূর্ণরূপে আযাদ হয়ে যাবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি গোলামে অন্য কারো অংশ না থাকে, তবে আযাদী পূর্ণ করার জন্য তিনি অধিক হকদার হইবে এবং সেই আযাদীতে কোন প্রকার দাসত্ব মিশ্রিত থাকিবে না।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৩ -যে লোক ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসী আযাদ করেছে, উহা ব্যতীত তার অন্য কোন মাল নেই তার বিবরণ

১৪৬২ হাসান ইব্নু আবিল-হাসান বাসরী ও মুহাম্মাদ ইব্নু সীরীন [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর যুগে এক ব্যক্তি মৃত্যুর সময় তার ছয়জন ক্রীতদাসকে আযাদ করিল। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ তাদের মধ্যে [নির্বাচনের উদ্দেশ্যে] লটারির ব্যবস্থা করলেন এবং [লটারির মাধ্যমে] সেই ক্রীতদাসদের মধ্য হইতে এক-তৃতীয়াংশ [অর্থাৎ দুইজন] আযাদ করে দিলেন।

[সহীহ, ঈমাম মুসলিম ১৬৬৮, ইমরান বিন হুসাইন [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৬৩ রবিয়া ইব্নু আবদির রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবান ইব্নু উসমান [রাহিমাহুল্লাহ]-এর শাসনকালে এক ব্যক্তি তার সব কয়টি গোলামকে আযাদ করে দিল, তার আর কোন মাল ছিল না সেই ক্রীতদাসগুলো ছাড়া। আবান ইব্নু উসমানের নির্দেশে সব ক্রীতদাসকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হল। তারপর লটারি দেয়া হল মৃত ব্যক্তির অংশ যেই ভাগে বাহির হইবে সেই ভাগের ক্রীতদাসদেরকে আযাদ করা হইবে। তিন অংশের মধ্য হইতে এক অংশের উপর লটারি উঠল, ফলে যেই এক-তৃতীয়াংশের উপর লটারি উঠল সে অংশ আযাদ হল। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৪ -ক্রীতদাস আযাদ হলে তার মাল কার প্রাপ্য হইবে তার মাসআলা

১৪৬৪ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনেছেন, এটা প্রচলিত সুন্নাত [নিয়ম] যে, ক্রীতদাস আযাদ হলে মাল তার পশ্চাদগামী হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আরও স্পষ্ট করে এই দৃষ্টান্তটি বলা যায় যে, ক্রীতদাস আযাদ হলে তার মালও তার সাথে থাকিবে, কারণ মুকাতাব [যাকে মালের বিনিময়ে আযাদী প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে]-কে [মালের বিনিময়ে] আযাদীর প্রতিশ্রুতি দেয়া হলে তবে শর্ত না করলেও মাল তারই থাকিবে। এটা এই জন্য যে, কিতাবতের কার্য পূর্ণতা লাভ করলে [অর্থাৎ অর্থ আদায় করলে] উহা হুবহু স্বত্বাধিকার-এর চুক্তির মতো গণ্য হইবে, যেমন ক্রীতদাসকে আযাদ করে দিলে সে স্বত্বাধিকার লাভ করে তদ্রুপ বদলে কিতাবত [আযাদীর জন্য নির্ধারিত অর্থ] আদায় করলে ক্রীতদাস আযাদ হয়ে যায় এবং তার সম্পদের স্বত্বাধিকারী সে নিজেই হইবে। আর ক্রীতদাস ও মুকাতাব-এর সম্পদ তাদের সন্তান-সন্ততির মতো নয়, কারণ তাদের সন্তানগণ তাদেরই মতো [কর্তাগণ তাদের মালিক বটে] তারা তাদের সম্পদের মতো নয় অর্থাৎ সম্পদের মতো ক্রীতদাস ও মুকাতাব দাস সন্তানদের মালিক হইবে না। কারণ নিয়ম এই, যেই নিয়মে কোন দ্বিমত নেই অর্থাৎ ক্রীতদাস আযাদ হলে তার মাল তার পশ্চাদানুসরণ করিবে, কিন্তু সন্তান তার পশ্চাদগামী হইবে না। আর মুকাতাব-এর সাথে যখন কিতাবত করা হয়, তখন তার মালও তার পশ্চাদানুসরণ করিবে, কিন্তু তার সন্তান তার পশ্চাদগামী হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যা একে আরও স্পষ্ট করে তা হল, ক্রীতদাস ও মুকাতাব তারা উভয়ে দেউলিয়া হলে তাদের সম্পদ ও তাদের উম্মে ওয়ালাদগণকে গ্রহণ করা হইবে কিন্তু তাদের সন্তানগণকে বিনিময়ে গ্রহণ করা হইবে না। কারণ সন্তান তাদের মাল নয়।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আর একটি দৃষ্টান্ত একে স্পষ্ট করে তোলে। তা হল, যদি ক্রীতদাসকে এই শর্তে বিক্রয় করা হয় যে তার মাল ক্রেতা পাবে, তবে ক্রীতদাসের সন্তান মালের অন্তর্ভুক্ত হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আরও যে দৃষ্টান্ত একে স্পষ্ট করে তা হল এই যে, ক্রীতদাস কাউকেও জখম করলে, ক্রীতদাস ও উহার মাল বিনিময়ে নেয়া হইবে, কিন্তু [বিনিময়ে] সন্তানকে গ্রহণ করা হইবে না।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৫ -উম্মাহাতুল-আওলাদ {১} -এর আযাদী এবং এ সম্পর্কিত বিবিধ হুকুম

{১} যেই সকল ক্রীতদাসী মনিবের সন্তান জন্ম দিয়েছে ঐ সকল ক্রীতদাসীকে “উম্মুহাতুল-আওলাদ” বলা হয়। তাদের বিক্রি করা অথবা দান করা নিষিদ্ধ।

১৪৬৫ আবদুল্লাহ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.] বলেছেন, যে ক্রীতদাসী তার কর্তার ঔরসে সন্তান জন্মাইয়াছে, সে কর্তা উহাকে বিক্রয় করিতে পারবে না, আর পারবে না উহাকে দান করিতে, কেউ উহার স্বত্বাধিকারও লাভ করিবে না, মনিব তাকে উপভোগ করিবে যখন মনিবের মৃত্যু হইবে ক্রীতদাসী তখন আযাদ হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৬৬ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]- হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইব্নু খাত্তাব [রাদি.]-এর নিকট জনৈকা ক্রীতদাসী এল, যাকে তার মনিব আগুন দ্বারা জখম করেছে অথবা তার শরীরে আগুন লাগিয়েছে। উমার [রাদি.] উহাকে আযাদ করে দিলেন [অর্থাৎ আযাদ করে দেয়ার জন্য কর্তাকে নির্দেশ দিলেন]। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আমাদের নিকট সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, যে ব্যক্তির উপর ঋণ আছে এবং ঋণ তার সমস্ত মাল ঘিরে রেখেছে সে ব্যক্তির পক্ষে [ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীকে] আযাদ করা বৈধ নয়। বালক যতক্ষণ বালেগ না হয় অথবা বালেগ পুরুষের সমপর্যায়ে না পৌঁছে, ততক্ষণ তার পক্ষে গোলাম আযাদ করা বৈধ হইবে না, যে ব্যক্তির মালের উপর মুতাওয়াল্লী নিযুক্ত করা হয়েছে [এবং তাকে কার্য পরিচালনা হইতে বিরত রাখা হয়েছে] সে বালিগ [সাবালক] হলেও গোলাম আযাদ করিতে পারবে না, যাবত সে নিজ সম্পদের পরিচালক না হইবে।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৬ -পূর্বে যার উপর দাসমুক্তি ওয়াজিব হয়েছে তার জন্য কি ধরনের দাস মুক্ত করা জায়েয তার বর্ণনা

১৪৬৭ আতা ইব্নু ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] উমার ইব্নু হাকাম {১} [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আমার এক ক্রীতদাসী আমার ছাগপাল চরাইতেছিল। একদিন আমি তার নিকট গেলাম এবং জানতে পারলাম সে একটি বকরী হারিয়ে ফেলেছে। আমি তাকে বকরীর বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। সে বলল, উহাকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে। আমি তার জন্য দুঃখিত হলাম, আর আমি আদম সন্তানের একজন [আমার রাগ হল]। তাই আমি ক্রীতদাসীর মুখের উপর চড় মারলাম। আমার উপর [পূর্বে] একটি দাস বা দাসী আযাদ করা জরুরী ছিল, এখন আমি উহাকে [ক্রীতদাসীকে] আযাদ করব কি? রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ উহাকে [ক্রীতদাসীকে] জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ্ কোথায়? সে বলল, ঊর্ধ্বলোকে। তিনি [রসূল সাঃআঃ} বলিলেন, আমি কে? সে বলল, আপনি আল্লাহর রসূল। তারপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন একে আযাদ করে দাও।

[সহীহ, মুসলিম ৫৩৭]{১} মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, এটা প্রকৃতপক্ষে হইবে মুয়াবিয়া ইবনি হাকাম।এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৬৮ ওবায়দুল্লাহ্ ইব্নু আবদিল্লাহ্ ইব্নু উতবা ইব্নু মাসঊদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আনসারদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর কাছে তার একটি কৃষ্ণ বর্ণের ক্রীতদাসীকে নিয়ে উপস্থিত হল এবং বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ্! আমার উপর একটি ঈমানদার ক্রীতদাসী আযাদ করা ওয়াজিব হয়েছে, আপনি যদি একে ঈমানদার মনে করেন তবে আমি তাকে আযাদ করব। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ উহাকে [উদ্দেশ্য করে] বলিলেন, আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নেই- তুমি কি এর সাক্ষ্য দাও? সে বলল, হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ আবার বলিলেন মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল- তুমি এই সাক্ষ্য দাও কি? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ পুনরায় বলিলেন [মৃত্যুর পর] পুনরুত্থানে তুমি বিশ্বাস কর কি? সে বলল, হ্যাঁ। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, তুমি একে আযাদ কর। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪৬৯ মাকবুরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হল এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যার উপর দাস বা দাসীর আযাদ করা ওয়াজিব হয়েছে। প্রশ্নটি হল, সে ব্যক্তি জারজ সন্তান আযাদ করিতে পারবে কি? আবু হুরায়রা [রাদি.] বলিলেন, হ্যাঁ, উহা তার জন্য যথেষ্ট হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৭০ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]- হইতে বর্ণিতঃ

ফুযালা ইব্নু উবায়দ আনসারী [রাদি.] হইতে, তিনি ছিলেন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর সাহাবীদের একজন। তাঁর নিকট প্রশ্ন করা হল এক ব্যক্তি সম্পর্কে, যার উপর রাকাবা [গোলাম বা বাঁদী] আযাদ করা ওয়াজিব, তার পক্ষে জারজ সন্তান আযাদ করা জায়েয হইবে কি? তিনি বলিলেন হ্যাঁ, উহা তার পক্ষে যথেষ্ট হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৭ -আযাদ করা ওয়াজিব এমন দাস-দাসীকে কি কি কারণে বা শর্তে আযাদ করা বৈধ হয় না

১৪৭১ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আবদুল্লাহ-ইব্নু উমার [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হল যেই ক্রীতদাসকে আযাদ করা ওয়াজিব হয়েছে উহাকে [ক্রেতা কর্তৃক আযাদ করার] শর্তে ক্রয় করা যায় কি? তিনি বলিলেন, না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন রাকাবা ওয়াজিব {ক্রীতদাস বা দাসীকে কোন ব্যাপারে আযাদ করা ওয়াজিব হলে উহাকে রাকাবা-ই ওয়াজিবা বলা হয়। যেমন মানত এবং কাফফারাতে গোলাম আযাদ করা ওয়াজিব হয়} সম্বন্ধে যা আমি শুনিয়াছি [তন্মধ্যে] সর্বাপেক্ষা সুন্দরতম [এই যে,] রাকাবা-ই ওয়াজিব-কে যে আযাদ করিবে, সে আযাদী দেয়ার শর্ত করে ক্রয় করিবে না। কারণ এইরূপ শর্ত করলে এ রাকাবা পূর্ণ রাকাবা হইবে না, কেননা যে এইরূপ শর্ত করিবে তার উদ্দেশ্যে বিক্রেতা মূল্য কমিয়ে দিবে [কাজেই রাকাবা অসম্পূর্ণ থাকিবে]।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন নফল নিয়্যত আযাদ করার জন্য গোলাম ক্রয় করিতে যেয়ে আযাদ করিবে বলে শর্ত করে ক্রয় করাতে কোন দোষ নেই।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন রিকাবে-ওয়াজিবা সম্পর্কে সবচাইতে সুন্দর যা আমি শুনিয়াছি, [তা হল এই], উহাতে নাসরানী অথবা ইহুদী গোলাম আযাদ করা যাবে না। মুকাতাব [যে ক্রীতদাসকে অন্য কিছুর বিনিময়ে আযাদ করিবে বলে ঠিক করা হয়েছে] ও মুদাব্বার [কর্তার মৃত্যুর পর যে ক্রীতদাস আযাদ]-কে অথবা যাকে কয়েক বৎসরের জন্য আযাদ করা হয়েছে উহাকে আযাদ করা যাবে না [আরও আযাদ করা যাবে না] উম্মু ওয়ালাদকে এবং অন্ধকেও না, তবে নফল রূপে নাসরানী, ইহুদী ও মজুসীকে আযাদ করাতে কোন দোষ নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে বলেছেন:

এখানে মান্না [مَنًّا] হচ্ছে আযাদ করা।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন ওয়াজিবরূপে যে ব্যাপারে ক্রীতদাসকে আযাদ করা হয়, যার উল্লেখ আল্লাহ্ তাআলা কুরআন মাজীদে বর্ণনা করিয়াছেন, সেই সকল ব্যাপারে মুমিন রাকাবা-কেই আযাদ করিতে হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন কাফফারাতে মিসকীনদেরকে ভোজ দেয়াতে মুসলমান মিসকীন ছাড়া অন্য কাউকেও ভোজ দেয়া ঠিক নয়, এই ব্যাপারে কোন অমুসলিমকে খাওয়াবে না।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৮ -মৃত ব্যক্তির পক্ষ হইতে জীবিত ব্যক্তির দাসদাসী আযাদ করা

১৪৭২ আবদুর রহমান ইব্নু আবি আমরাহ্ আনসারী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর মাতা কিছু ওসীয়্যত করার ইচ্ছা করেছিলেন, পরে ভোর হওয়া পর্যন্ত উহাতে বিলম্ব করলেন, অতঃপর ওসীয়্যত করার পূর্বেই তাঁর মৃত্যু হয়, তিনি [গোলাম বা বাঁদী] আযাদ করার সংকল্প করেছিলেন। আবদুর রহমান বলেন আমি কাসিম ইব্নু মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বললাম, তার পক্ষ হইতে আমি আযাদ করলে ইহা তাঁর উপকার করিবে কি? কাসিম বলিলেন সাদ ইব্নু উবাদা [রাদি.] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর নিকট আরয করলেন, আমার মাতার মৃত্যু হয়েছে, আমি তার পক্ষ হইতে গোলাম আযাদ করলে এটা তার উপকার করিবে কি? রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, হ্যাঁ। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৭৩ ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইব্নু আবী বাকর [রাহিমাহুল্লাহ]-এর আকস্মিক ওফাত {১} হয় তাঁর নিদ্রাতে। নবী সাঃআঃ-এর পত্নী আয়িশা [রাদি.] তাঁর পক্ষ হইতে অনেকগুলো দাস-দাসী আযাদ করেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন এই বিষয়ে যা শুনিয়াছি তন্মধ্যে এটা আমার কাছে উত্তম।

{১} তাঁর ওফাত হয় মক্কার রাস্তায় হিজরী ৫৩ সনে।-আওজাস এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৯ -দাস-দাসী আযাদ করার ফযীলত এবং নিষিদ্ধ যৌন সঙ্গমকারিণী ও জারজ সন্তানকে আযাদ করা

১৪৭৪ নবী করীম সাঃআঃ-এর সহধর্মিণী আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর নিকট প্রশ্ন করা হল, যেসব ব্যাপারে দাস-দাসী আযাদ করা ওয়াজিব উহাতে কোন প্রকার দাস-দাসী [আযাদ করা] উত্তম?

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, যার মূল্য বেশি এবং যারা কর্তাদের [এবং তাদের পরিজনের] নিকট মনোরম ও আদরণীয়। [বুখারি ২৫১৮, মুসলিম ৮৪]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৭৫ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জারজ সন্তান ও তার মাতাকে আযাদ করিয়াছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১০ -যে আযাদ করিবে অভিভাবকত্ব ও উত্তরাধিকার তারই জন্য হইবে

১৪৭৬ নবী করীম সাঃআঃ-এর সহধর্মিণী আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

বারীরা [রাদি.] [তার কাছে] এসে বলিলেন আমি আমার কর্তাদের সাথে প্রতি বৎসর এক উকীয়া [এক উকীয়াতে চল্লিশ দিরহাম হয়- আওজাস] হিসাবে [সর্বমোট] নয় উকীয়ার বিনিময়ে মুকাতাবত আযাদী লাভের কথা ঠিক] করেছি। আপনি আমাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করুন। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন যদি তোমার কর্তারা পছন্দ করেন যে, আমি উহার ব্যবস্থা করি তবে উহা [আদায়] করব আর তোমার অভিভাবকত্ব আমার জন্য হইবে। বারীরা তাঁর কর্তাদের নিকট গেলেন এবং এই বিষয়ে তাদেরকে অবহিত করলেন। তারা অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলেন। বারীরা তাঁর কর্তাদের নিকট হইতে যখন [ফিরে] এলেন তখন [আয়িশার গৃহে] রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বসা ছিলেন। বারীরা আয়িশা [রাদি.]-কে বলিলেন আমি তাদের নিকট সেই কথা পেশ করেছিলাম। তারা ইহা অস্বীকার করেছে। কিন্তু যদি অভিভাবকত্ব [তাদের জন্য বহাল থাকে তবে তারা রাজী। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ইহা শুনলেন। অতঃপর তাহাকে [আয়িশাকে] জিজ্ঞেস করলেন। আয়িশা ব্যাপারটি তাহাকে জানালেন। রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ [এটা শুনে] বলিলেন, তুমি বারীরাকে [মূল্য পরিশোধ করে] গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য [অভিভাবকত্বের] শর্ত মেনে নাও, [কিন্তু উহা যেহেতু অবৈধ তাই স্বত্ব তারা পাবে না]। অভিভাবকত্ব হইবে যে আযাদ করিবে তার। তারপর আয়িশা [রাদি.] তাই করলেন অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ লোকদের [সাহাবীদের] মাঝে কিছু বলার জন্য দাঁড়ালেন। অতঃপর আল্লাহর হামদ ও গুণ বর্ণনা করলেন, তারপর বলিলেন লোকদের কি হল? তারা এমন সব শর্ত আরোপ করে যা আল্লাহর কিতাবে নেই, আর যেই সকল শর্ত আল্লাহর কিতাবে নেই, উহা বাতিল বলে গণ্য হইবে। যদিও শত শর্তও হয়ে থাকে। আল্লাহর হুকুমই গ্রহণযোগ্য, আল্লাহর শর্ত অতি দৃঢ়। [জেনে রাখুন] অভিভাবকত্ব তারই হইবে যে আযাদ করিবে।

[বুখারি ২১৬৮, মুসলিম ১৫০৪]এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৭৭ আবদুল্লাহ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মুল মুমিনীন আয়িশা [রাদি.] জনৈকা ক্রীতদাসীকে খরিদ করে আযাদ করার ইচ্ছা করলেন। ক্রীতদাসীর কর্তারা বলল, আমরা উহাকে আপনার কাছে এই শর্তে বিক্রয় করিতে পারি যে, উহার অভিভাবকত্ব আমাদের জন্য থাকিবে। আয়িশা [রাদি.] রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর কাছে ইহা উল্লেখ করলেন। তিনি বলিলেন, এই শর্তারোপ যেন তোমাকে [উহাকে ক্রয় কয়ে আযাদ করিতে] বারণ না করে। অভিভাবকত্ব উহারই হইবে, যে আযাদ করিবে।

[বুখারি ২১৬৯, মুসলিম ১৫০৪]এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৭৮ আমরাহ বিনত আবদির রহমান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

বারীরা এলেন উম্মুল মুমিনীন আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট সাহায্য চাইতে। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন যদি তোমার কর্তারা পছন্দ করে যে আমি তাদেরকে একবারে মূল্য পরিশোধ করব এবং তোমাকে আযাদ করে দিব তবে আমি উহা করব। বারীরা কর্তাদের নিকট এটা পেশ করলেন। তারা বলল, আমরা এতে রাজী নই, তবে যদি তোমার অভিভাবকত্ব আমাদের জন্য থাকে। [সহীহ, বুখারি ২৫৬৪, তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, আমরাহ মনে করে ধারণা করি যে, আয়িশা [রাদি.] এটা উল্লেখ করিয়াছেন রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর কাছে। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলিলেন, তুমি বারীরাকে খরিদ কর এবং তাকে আযাদ করে দাও, অভিভাবকত্ব অবশ্য তারই জন্য থাকিবে যে আযাদ করিবে।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৭৯ আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ অভিভাবকত্ব বিক্রি ও দান করিতে নিষেধ করিয়াছেন। [বুখারি ২৫৩৫, মুসলিম ১৫০৬]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যে ক্রীতদাস নিজকে ক্রয় করে নেয় আপন কর্তা হইতে এই শর্তে যে, সে যাকে চায় তাকে অভিভাবকত্ব প্রদান করিবে। এটা জায়েয হইবে না। অভিভাবকত্ব তার জন্য হইবে, যে আযাদ করিবে। আর যদি কোন ব্যক্তি নিজের মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীতদাসকে যাকে ইচ্ছা তাকে অভিভাবকত্ব প্রদানের অনুমতি দিয়েদেয় তবে এটা বৈধ হইবে না। কারণ রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন অভিভাবকত্ব তারই হইবে যে আযাদ করিবে এবং তিনি স্বত্বাধিকার বিক্রয় ও দান করিতে নিষেধ করিয়াছেন। যদি কর্তার পক্ষে ক্রীতদাসের জন্য এইরূপ শর্ত করা বৈধ হয় অথবা সে ক্রীতদাসকে অনুমতি দেয় যে, সে যাকে ইচ্ছা অভিভাবকত্ব প্রদান করিবে, তবে ইহা দান করা হল।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ১১ -ক্রীতদাস কর্তৃক অভিভাবকত্ব টেনে নেয় যখন তাকে আযাদ করা হয়

১৪৮০ রবীআ ইব্নু আবদির রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যুবাইর ইব্নুল আওয়াম [রাদি.] জনৈক ক্রীতদাসকে খরিদ করে উহাকে আযাদ করেছিলেন। সেই ক্রীতদাসের কয়েকটি ছেলে ছিল আযাদ স্ত্রীর ঔরসের। যুবাইর [রাদি.] যখন উহাকে আযাদ করলেন তখন তিনি বলিলেন, এরা আমার মাওয়ালী। আযাদী প্রদান সূত্রে এদের উপর আমার অভিভাবকত্ব উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- তাই এরা এখন আমার অধীনস্থ ও অধিকারভুক্ত। অন্যদিকে এই সন্তানদের জননীকে যারা আযাদ করেছিলেন। {১} তাঁরা বলিলেন এরা আমাদের অধিকারভুক্ত। অতঃপর তাঁরা বিবাদ নিয়ে উসমান ইব্নু আফফান [রাদি.]-এর কাছে গেলেন। উসমান [রাদি.] উহাদের অভিভাবকত্ব-এর ফয়সালা দিলেন যুবাইরের পক্ষে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হল জনৈক ক্রীতদাসী সম্বন্ধে, যার কয়েকটি ছেলে রয়েছে আযাদ স্ত্রীর ঔরসে। তাদের স্বত্বাধিকার কার জন্য হইবে। সাঈদ বলিলেন, যদি আযাদী না পাওয়া অবস্থায় তাদের পিতার মৃত্যু হয় তবে তাদের অভিভাবকত্ব হইবে তাদের মাতার মাওলাদের [আযাদী দাতার] জন্য। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন তদ্রুপ অনারব মুসলিম লিআনকারী স্ত্রীলোকের সন্তান ও তার [সন্তানের মাতা] মাওলার দিকে সম্পর্কিত হইবে। তাই মাতার কর্তারা এই ছেলের মাওলা হইবে। যদি সে মারা যায় তবে তারা উহার মীরাস লাভ করিবে। সে কোন অপরাধ করলে তারা উহার পক্ষ হইতে খেসারত বা ক্ষতিপূরণ দিবে। আর উহার পিতা যদি উহার নসব স্বীকার করে নেয় তবে উহাকে পিতার দিকে সম্পর্কিত করা হইবে। এবং উহার স্বত্বাধিকার তার পিতার অভিভাবকত্ব লাভ করিবে। তার মীরাসও তাদের জন্য হইবে, আর তার অপরাধের খেসারতও হইবে তাদের উপর এবং [স্বীকারোক্তির পর] ছেলের পিতাকে [অপরাধের শাস্তিতে] বেত্রাঘাত করা হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন তদ্রুপ আরব লিআনকারী স্ত্রীলোকের স্বামী যে স্ত্রীকে সন্তানের ব্যাপারে অপবাদ দিয়েছে সে যদি উহার ছেলের নসব [জন্মসূত্র] স্বীকার করে তবে সে ছেলে ঐ রূপ মর্যাদাই লাভ করিবে। কিন্তু [পার্থক্য এই থাকিবে যে,] এই ছেলের মাতা ও ভগ্নীদের মীরাস বরাদ্দের পর অবশিষ্ট মীরাস যদি তার পিতার সাথে সে যুক্ত না হয় তবে সাধারণ মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত হইবে।

পক্ষান্তরে লিআনকারী স্ত্রীলোকের ছেলের মীরাস তার অর্থাৎ মাতার মাওলারা লাভ করিবে পিতা কর্তৃক ছেলের নসব স্বীকার করার পূর্ব পর্যন্ত। কারণ এই ছেলের নসব [জন্মসূত্র] নাই, ফলে তার কোন মীরাস লাভ করে এমন কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। আর যদি নসব প্রমাণিত হয় তবে তার মীরাস আসাবাগণ হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আমাদের নিকট ইজমাঈ সর্বজন গৃহীত সিদ্ধান্ত যাতে কোন ইখতিলাফ নাই- মাসয়ালা হল এই, ক্রীতদাসের পুত্রগণ আযাদ স্ত্রীর ঔরসের হলেও ক্রীতদাসের পিতা আযাদ হলে, তবে পুত্রদের বড় বাপ অর্থাৎ দাদা স্বীয় ছেলের এমন পুত্রদের [নাতির] যারা আযাদ এবং আযাদ মাতার গর্ভে যাদের জন্ম, তাদের মীরাস লাভ করিবে, যতদিন পিতা ক্রীতদাস থাকে ততদিন। যদি তাদের পিতা আযাদ হয়ে যায় তবে পিতার মাওলাগণ অভিভাবকত্ব লাভ করিবে। আর যদি ক্রীতদাস থাকতেই তার মৃত্যু হয় তবে মীরাস অধিকার দাদার জন্য থাকিবে। আর যদি ক্রীতদাস পিতার আযাদ দুই পুত্র থাকে এবং উহাদের একজন মারা যায় তাদের পিতা গোলাম থাকা অবস্থায় তবে পুত্রের বড় বাপ-দাদা মীরাস ও অভিভাবকত্ব দুইটিই লাভ করিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যে ক্রীতদাসীকে আযাদ করা হল এবং তার স্বামী তখনও [অন্যের] দাস। অতঃপর সন্তান প্রসবের পূর্বে অথবা পরে তার স্বামীকে আযাদ করা হয় তবে পেটে যা ছিল উহার অর্থাৎ সন্তানের অভিভাবকত্ব যে তার জননীকে আযাদ করেছে সে-ই লাভ করিবে। কারণ এই সন্তান তার মাতাকে আযাদী দেয়ার পূর্বের, ফলে দাসত্ব তাকে স্পর্শ করেছে। সে ঐ সন্তানতুল্য মর্যাদার অধিকারী নয় যাকে তার জননী গর্ভে ধারণ করেছে আযাদী লাভের পরে। কারণ আযাদী লাভের পর জননী সেই সন্তান গর্ভে ধারণ করেছে। সেই সন্তানের পিতা তার অভিভাবকত্ব প্রাপ্ত হইবে, যদি পিতাকে আযাদ করা হয়ে থাকে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যে ক্রীতদাস গোলাম আযাদ করার জন্য তার কর্তার অনুমতি প্রার্থনা করেছে, কর্তা তাকে অনুমতি দিয়েছে তবে আযাদীপ্রাপ্ত ক্রীতদাসের অভিভাবকত্ব এই ক্রীতদাসের কর্তা লাভ করিবে, এই [আযাদীপ্রাপ্ত] ক্রীতদাসের অভিভাবকত্ব ও উত্তরাধিকার তার কর্তা যে তাকে আযাদ করেছে সে পাবে না, যদিও সে [পরে] আযাদী লাভ করে থাকে।

{১} ঐ সন্তানদের মাতাকে আযাদ করেছিলেন রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.]।এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১২ -মিত্রতার কারণে মীরাস লাভ করা

১৪৮১ আবদুল মালিক ইব্নু আবী বাকর ইব্নু আবদির রহমান তাঁর পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল মালিক-এর নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, আসী ইব্নু হিশাম পরলোকগমন করেন এবং তিনি রেখে যান তাঁর তিন পুত্র, দুইজন [তাদের মধ্যে] সহোদর ও একজন ছিল বৈমাত্রের ভ্রাতা। পরে সহোদরদ্বয়ের একজনের মৃত্যু হয়। সে রেখে যায় সম্পদ ও মাওয়ালী। {যে সকল ক্রীতদাসকে মুক্তি দিয়েছে, সেই সব ক্রীতদাস মুক্তিদাতার মাওয়ালী।} তার সহোদর ভাই তার সম্পদ ও মাওয়ালীদের অভিভাবকত্বের উত্তরাধিকারী হল। অতঃপর যিনি সম্পদ ও অভিভাবকত্বের উত্তরাধিকার লাভ করিবেন তিনি মৃত্যুবরণ করলেন এবং রেখে গেলেন তার পুত্রও বৈমাত্রেয় ভ্রাতা; তার পুত্র বলল আমার পিতা যে সম্পদ ও অভিভাবকত্বের মালিক হয়েছিলেন [বর্তমানে] আমি সেই সবের উত্তরাধিকারী হয়েছি। তার ভাই [অর্থাৎ পুত্রের চাচা] বলল, এইরূপ নয়। তুমি সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়েছ। কিন্তু মাওয়ালীদের অভিভাবকত্বের উত্তরাধিকারী তুমি নও। তুমি কি ভেবে দেখ না যদি আমার ভাই আজ পরলোকগমন করত, আমি কি উহার উত্তরাধিকারী হতাম না? অতঃপর তারা উভয়ে বিবাদ নিয়ে উসমান ইব্নু আফফান [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হল। তিনি {উসমান [রাদি.]} মাওয়ালীগণের স্বত্বাধিকার তার ভাইকে প্রদান করলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৮২ আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবী বাকর ইব্নু হাযম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তার পিতা তাঁর নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি আবান ইব্নু উসমান [রাদি.] {১}-এর নিকট বসা ছিলেন [এমন সময়] জুহাইনা [গোত্রের] কিছু লোক এবং বনী হারিস ইব্নু খাযরাজ [গোত্রের] কিছু লোক বিবাদ নিয়ে তাঁর কাছে এল। আর জুহাইনা গোত্রের জনৈকা নারী বনী হারিস ইব্নু খাযরাজ-এর এক ব্যক্তির স্ত্রী ছিল, তাকে বলা হত ইবরাহীম ইব্নু কুলাইব। [তার] স্ত্রী মারা যায় এবং রেখে যায় ধন-সম্পদ ও আযাদ করা ক্রীতদাস উহার মীরাস পেল তার স্বামী ও পুত্র। অতঃপর স্ত্রীলোকটির পুত্রটি মারা গেল। তখন স্বামীটি বলল, মাওয়ালীগণের স্বত্বাধিকার আমার প্রাপ্য। কারণ তার পুত্র [উত্তরাধিকারসূত্রে] উহার মালিক হয়েছে। জুহাইনীয়া গোত্রের লোকেরা বলল, এইরূপ নয়। উহারা [আযাদী প্রাপ্ত ক্রীতদাসগণ] হচ্ছে আমাদের [গোত্রের] স্ত্রীলোকের ক্রীতদাস। {যাদেরকে এই স্ত্রীলোক আযাদ করেছে।} তার পুত্র যখন মারা গেল তবে এই মাওয়ালীগণের স্বত্বাধিকার আমরাই পাব। আমরা উহাদের মীরাস লাভ করব। সব শুনে আবান ইব্নু উসমান [রাহিমাহুল্লাহ] মাওয়ালীগণের অভিভাবকত্ব প্রদান করলেন জুহাইনীয়দের জন্য। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} আবান ইবনি উসমান [রাহিমাহুল্লাহ] তখন মদীনার শাসনকর্তা ছিলেন। -আওজাযুল মাসালিকএই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৮৩ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন সেই ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি পরলোকগমন করেছে তিন পুত্র রেখে, আর রেখে গিয়েছে কতিপয় মাওয়ালী [ক্রীতদাস] যাদেরকে সে আযাদ করেছে। তারপর তার দুই পুত্র মারা যায়। তারা উভয়ে রেখে যায় [তাদের] সন্তান। সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] বলিলেন তার তিন পুত্রের মধ্যে জীবিত পুত্র মাওয়ালীগণের অভিভাবকত্ব ও উত্তরাধিকার লাভ করিবে। সেও পরলোকগমন করলে তখন তার সন্তান ও তার [মৃত] দুই ভাইয়ের সন্তানগণ মাওয়ালীগণের সম্পদের উত্তরাধিকারের ব্যাপারে বরাবর হকদার হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্চেদ ১৩ -সায়িবা {১}-এর মীরাস এবং ইহুদী ও নাসরানী ক্রীতদাসকে যে আযাদ করেছে তাহার অভিভাবকত্ব ও উত্তরাধিকার

{১} জাহিলীয়া যুগে দেব-দেবীদের নামে ভক্তরা পশুকে মুক্ত অবস্থায় ছেড়ে দিত। সেরূপ পশুকে সায়িবা বলা হত। কারণ এসব পশুর উপর কোন বাধা-নিষেধ ছিল না। তাই তারা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াত। কেউ যদি তার ক্রীতদাসকে লক্ষ্য করে বলে, “তুমি অদ্য হইতে সায়িবা”-এই উক্তির দ্বারা তার উদ্দেশ্য হয় ক্রীতদাসকে আযাদ করা, তবে সে ক্রীতদাস আযাদ হইবে। ক্রীতদাসের মৃত্যু হলে আযাদী দাতা মীরাস পাবে।

১৪৮৪ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ইব্নু শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করিয়াছেন সায়িবা সম্বন্ধে। তিনি বলেছেন, সে যার সাথে ইচ্ছা মিত্রতার বন্ধন করিতে পারে আর যদি তার মৃত্যু হয় অথচ সে কাউকেও ওয়ালী [অভিভাবক] নিযুক্ত করেনি, তবে তার মীরাস হইবে মুসলমানদের জন্য এবং তার খেসারতও মুসলমানদের উপর হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন সায়িবা সম্বন্ধে যা শোনা গিয়েছে তা হল সে কারো সাথে মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হইবে না এবং তার মীরাস মুসলমানদের জন্য হইবে, আর তার খেসারত তাদের উপর আসবে।

ইহুদী ও নাসরানী সম্বন্ধে মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন তাদের একজনের ক্রীতদাস মুসলমান হয়েছে এবং তার পক্ষ হইতে ক্রীতদাস বিক্রি হওয়ার পূর্বে সে উহাকে আযাদ করে দিয়েছে [এইরূপ] মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীতদাসের অভিভাবকত্ব মুসলমানদের জন্য হইবে। এর পর যদি ইহুদী ও নাসরানী মুসলমান হয় স্বত্বাধিকার তাদের দিকে আর ফিরবে না। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, যদি ইহুদী অথবা নাসরানী তাদের সহধর্মী কোন ক্রীতদাসকে আযাদ করে, তারপর যে ইহুদী অথবা নাসরানী একে আযাদ করেছে তার ইসলাম গ্রহণের পূর্বে সেই ক্রীতদাস মুসলমান হয়, তারপর যে আযাদ করেছে সেও মুসলমান হয় তবে অভিভাবকত্ব তার দিকে প্রত্যাবর্তন করিবে। কারণ যেই দিন আযাদ করেছিল সেই দিন স্বত্বাধিকার তারই প্রাপ্য ছিল।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি ইহুদী অথবা নাসরানীর মুসলিম সন্তান থাকে, আর সে [কর্তা] তাকে আযাদ করেছে তার ইসলাম গ্রহণের পূর্বে যদি আযাদী প্রাপ্ত ক্রীতদাস মুসলমান হয়ে যায়, তবে সে [সন্তান] ইহুদী অথবা নাসরানী পিতার আযাদী প্রদত্ত ক্রীতদাসদের মীরাসের অধিকারী হইবে। আর যদি আযাদী প্রাপ্তির সময় ক্রীতদাস মুসলমান হয়ে থাকে তবে ইহুদী অথবা নাসরানীর মুসলিম সন্তানরা মুসলিম ক্রীতদাসের স্বত্বাধিকারের কোন কিছু প্রাপ্য হইবে না। কারণ ইহুদী অথবা নাসরানীর জন্য কোন অভিভাবকত্ব নেই। তাই মুসলিম ক্রীতদাসের অভিভাবকত্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রাপ্য হইবে।

গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

Comments

One response to “গোলাম আযাদ করা এবং স্বত্বাধিকার ও মীরাস লাভ করা”

Leave a Reply