মুয়াত্তা মালিক । কোন জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে

মুয়াত্তা মালিক । কোন জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে

মুয়াত্তা মালিক । কোন জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে এই অধ্যায়ে হাদীস =৪ টি ( ১৪১১-১৪১৪ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৩৫ শুফ্আ

পরিচ্ছেদঃ ১ -কোন্ জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে
পরিচ্ছেদঃ ২ – যে সকল জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে না

পরিচ্ছেদঃ ১ -কোন্ জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে

মুয়াত্তা মালিক -১৩৯৩ সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] ও আবু সালাম ইব্নু আবদুর রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ঐ জিনিসের মধ্যে শুফআর ফায়সালা করিয়াছেন যা শরীকদের মধ্যে বন্টন হয়নি। সুতরাং যখন তাদের মধ্যে সীমা নির্ধারিত হয়ে যাবে তখন আর তাতে শুফ্আ চলবে না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এই মাসআলাতে কোন মতবিরোধ নেই এবং আমার মতও এটাই।

 মুয়াত্তা মালিক – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

মুয়াত্তা মালিক -১৩৯৪ বর্ণণাকারী হইতে বর্ণিতঃ

সাঈদ ইব্নু মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল শুফআ {১} সম্বন্ধে, উহার কি কোন নিয়ম আছে? উত্তরে তিনি বলিলেন, শুফআ ঘর ও জমির মধ্যে হয় এবং একমাত্র শরীকগণই তা পায়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} কোন জমিনের শরীকদারদের মাঝে অগ্রক্রয়ের অধিকার। মুয়াত্তা মালিক – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

মুয়াত্তা মালিক -১৩৯৫ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতেও এইরূপ বর্ণিত আছে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি কোন ব্যক্তি কয়েকজন একযোগে মালিক এমন কোন জমির এক অংশ কোন জন্তু অথবা গোলামের পরিবর্তে কিংবা এই ধরনের কোন মালের [যেমন জিনিসপত্র] পরিবর্তে খরিদ করে, অতঃপর শরীকদার নিজ শুফআ নেয়ার জন্য আসে কিন্তু এই সময়ে ঐ গোলাম অথবা দাসী মারা গিয়ে থাকে এবং তাদের মূল্য কত ছিল কেউ জানে না। কিন্তু খরিদ্দার বলে যে, তার মূল্য একশত দীনার ছিল এবং শুফআ দাবিদার পঞ্চাশ দীনার বলে, তবে খরিদ্দার বলে যে, তার মূল্য একশত দীনার ছিল এবং শুফআ দাবিদার পঞ্চাশ দীনার বলে, তবে খরিদ্দার হইতে এই ব্যাপারে কসম [শপথ] গ্রহণ করা হইবে যে, উহার মূল্য একশত দীনার ছিল। তার পর শুফআ দাবিদারের ইচ্ছা হলে উহা গ্রহণও করিতে পারে অথবা দাবি ছেড়েও দিতে পারবে। কিন্তু যদি শুফআর দাবিদারের ইচ্ছা হলে উহা গ্রহণও করিতে পারে অথবা দাবি ছেড়েও দিতে পারবে। কিন্তু যদি শুফআর দাবিদার তার দাবির সপক্ষে প্রমাণ করে যে, উক্ত দাস দাসীর মূল্য খরিদ্দার যা বলে তা হইতে কম ছিল, তবে তার কথা মানতে হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি কেউ একযোগে কয়েক ব্যক্তি মালিক এমন ঘর অথবা জমির নিজ অংশ দান করে দেয় কিন্তু যাকে দান করা হয়েছে সে দানকারীকে তার মূল্য দিয়ে দেয়, তবে শুফআর দাবি করার অধিকার শরীকদারদের থাকিবে এবং গ্রহীতাকে টাকা-পয়সা ফেরত দিয়ে তা নিবার ইখতিয়ার শরীকদারদের থাকিবে, দীনার অথবা দিরহাম যা দিয়ে হোক মূল্য শোধ করিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যে, যদি কেউ তার সঙ্গে অন্যেরাও মালিক এমন ঘর অথবা জমি হেবা [দান] করে এবং এখনও কোন বিনিময় গ্রহণ করেনি এবং বিনিময় তলবও করেনি, এমন সময় শরীকদার যদি চায় যে, উহার বিনিময় দিয়ে দখল করিবে তবে উহার বিনিময় প্রদান না করে দখল করা জায়েয হইবে না। যদি বিনিময় দিয়ে দেয় তবে উহা শুফআ দাবিকারীর জন্য বৈধ হইবে এই শর্তে যে, পূর্ণ মূল্য সে দিয়ে দিবে ও দখল নিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যে, শুফআর দাবিদার যদি জমির বেচাকেনার সময় অনুপস্থিত থাকে তবে তার শুফআর অধিকার বাতিল হইবে না, যদিও সে অনেক দিন গায়েব থাকে। আর গায়েব থাকার কোন সীমা আমাদের নিকট নাই যে, এতদিন গায়েব থাকলে শুফআর অধিকার থাকিবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন এক ব্যক্তির কয়েকজন সন্তান ওয়ারিসসূত্রে কোন জমির মালিক হল, তার পর তাদের কারো সন্তান জন্ম হওয়ার পর সে মারা গেল এবং তার এক সন্তান মৃত পিতার প্রাপ্য অংশ বিক্রয় করিতে চায়, তবে বিক্রেতার ভাই তার চাচার চাইতে শুফআর অধিকার বেশি রাখে। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যে, আমাদের নিকটও হুকুম অনুরূপ।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি শুফআর শরীকদারদের মধ্যে কয়েকজন দাবি করে তবে বিক্রীত সম্পদ হইতে প্রত্যেক হিস্যা [অংশ] অনুযায়ী নিবে। যদি কম হয় কমই নেবে আর বেশি হলে বেশিই নেবে। এটা তখনই করিবে যখন তাদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে, অথবা একজন তার সঙ্গীর নিকট হইতে তার হিস্যা খরিদ করে কোন শরীকদারকে বলবে যে, আমি আমার হিস্যা পরিমাণ শুফআ নিব। অতঃপর খরিদ্দার বলবে যে, তুমি যদি চাও তবে সবটুকুরই শুফআ নিয়ে যাও, আমি তোমাকে সবই দিয়ে দিচ্ছি। কিংবা শুফআর দাবিও পরিহার কর। এই অবস্থায় শুফআর দাবিদারের উচিত পূর্ণ হিস্যা খরিদ্দার হইতে খরিদ করে নেয় অথবা শুফআর দাবি পরিত্যাগ করা। যদি পূর্ণ নিতে চায় তবে সে বেশি হকদার, অন্যথায় সে হকদার হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন এক ব্যক্তি কিছু জমি খরিদ করিল, অতঃপর উহা আবাদ করিল ও তাতে ঘর নির্মাণ করিল অথবা কূপ খনন করিল। তার পর এক ব্যক্তি এসে হক দাবি করিল এবং শুফআর মাধ্যমে উহা নেয়ার ইচ্ছা করিল, তবে তার শুফআ দাবির কোন অধিকার নেই যতক্ষণ বানানো ঘর অথবা কূপ খননের মূল্য আদায় না করে। যদি তার মূল্য আদায় করে দেয় তবে তার শুফআর দাবি গ্রাহ্য হইবে। অন্যথায় তার কোন শুফআর দাবি চলবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন এক ব্যক্তি শরীকের ঘর অথবা জমি বিক্রয় করে জানতে পারল যে, শুফআর দাবিদার শুফআ দাবি করিবে। তাই ক্রেতা মূল্যের ব্যাপারে মিথ্যার আশ্রয় নিতে চাইল এবং বিক্রেতাও তাই করিল। তাতে শুফআর দাবিদারের শুফআ নষ্ট হইবে না। এই ব্যাপারে শুফআর দাবিদারই শুফআর অধিকারী, যে মূল্যে বিক্রয় করেছে তা আদায় করার পর।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি কেউ শরীকী ঘর অথবা জমির এক অংশ ও ১টি জন্তু এবং কিছু জিনিসপত্র একই বৈঠকে আফদে [দাম] খরিদ করে, অতঃপর শুফআ দাবিকারীর শুফআ দাবি করে, শুধু ঘরের অথবা জমিতে, কিন্তু খরিদ্দার বলে যে, আমি যা খরিদ করেছি সকলই নিয়ে যাও, কারণ আমি সবই খরিদ করেছি। তখন শুফআর দাবিদার জমি ও ঘরেরই শুফআ নিবে, তার হিস্যা যতদূর আসে। তখন ঐ পূর্বের মূল্যের হিসাবে প্রত্যেকটি জিনিসের মূল্য ধরতে হইবে পৃথকভাবে। অতঃপর শুফআ নিয়ে যাবে ঐ খরিদকৃত আসল দামের হিসাবে, যা হয় তা দিয়ে। জন্তু ও জিনিসপত্র কোনটাই নেবে না, কিন্তু সে যদি ইচ্ছা করে সবগুলো নিয়ে যায় তবে উহাও জায়েয।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন শরীকী জমির এক অংশ কেউ বিক্রয় করিল, অতঃপর যাদের শুফআর অধিকার আছে তাদের কেউ খরিদ্দারের পক্ষে দাবি প্রত্যাখ্যান করিল কিন্তু তাদের আর কেউ তা দাবি করে বসল, এই অবস্থায় খরিদ্দারের পূর্ণ অংশ তার নিতে হইবে। এটা হইবে না যে, সে তার ভাগের অংশই নিবে এবং বাকী অংশ ছেড়ে দিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি অনেকেই মালিক এমন একটি ঘরের কোন এক শরীক তার অংশ বিক্রয় করিল। একজন শরীক ছাড়া আর সকলেই অনুপস্থিত। অতঃপর সেই উপস্থিত শরীককে এই মর্মে জিজ্ঞেস করা হইবে যে, শুফআর দাবিতে আপনি এটা নিয়ে যান অথবা ছেড়ে দেন; সে বলল, আমি আমার অংশ নিচ্ছি এবং অন্য শরীকদের অংশ ছেড়ে দিচ্ছি, তারা হাযির হওয়ার পর যদি তাদের অংশ তারা নেয় তবে তো ভাল, না হয় আমি সবটুকু নিব। এই পন্থা জায়েয নয়, হয়ত সে পূর্ণ হিস্যা নেবে, না হয় পূর্ণ দাবি ছেড়ে দেবে। অতঃপর যদি অন্যান্য শরীকগণ আসে তবে তার নিকট হইতে তারা অংশ নিবে অথবা ছেড়ে দেবে। আর উক্ত ব্যক্তি যদি তা গ্রহণই না করে তবে তার আর শুফআর অধিকার থাকিবে না।

 মুয়াত্তা মালিক – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২ – যে সকল জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে না

মুয়াত্তা মালিক -১৩৯৬ উসমান ইব্নু আফ্ফান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জমির সীমানা নির্ধারিত হয়ে গেলে তখন আর উহাতে শুফআ চলে না এবং কূপের মধ্যেও শুফআ চলে না, আর চলবে না নর খেজুর গাছেও। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যে, আমাদের নিকট এই হুকুমই গ্রহণযোগ্য। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন পথের মধ্যে শুফআ চলবে না, তা বন্টনের যোগ্য হোক অথবা বন্টনের যোগ্য নাই হোক।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আমাদের কাছে ঘরের বারান্দায়ও শুফআ চলবে না, তা বন্টনের উপযোগী হোক বা না হোক। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, যদি কেউ অনেকে মালিক এমন কোন জমির কোন অংশ খেয়ারের শর্তে খরিদ করে এবং বিক্রেতার শরীকদারগণ ইচ্ছা করিল যে, তাদের শরীকদার যা বিক্রয় করেছে তা শুফআর মাধ্যমে নিয়ে নিবে, খরিদ্দারের ইখতিয়ার পূর্ণ হবার পূর্বে এইরূপ ক্ষেত্রে তাদের জন্য শুফআ জায়েয হইবে না। যতক্ষণ খরিদ্দারের খরিদ পাকাপোক্ত না হয়, অতঃপর যদি তার খরিদ পাকাপোক্ত হয় তবেই তাদের জন্য শুফআ জায়েয হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি এক ব্যক্তি একটি জমি খরিদ করে অনেক দিন পর্যন্ত নিজ দখলে রাখে। অতঃপর এক ব্যক্তি এসে তার মীরাসের দাবি করে শুফআর অধিকার দাবি করিল। যদি তার মীরাসের হক প্রমাণিত হয় তবে তার জন্য শুফআর দাবি থাকিবে। এই সময় যা উৎপন্ন হয়েছে তা খরিদ্দারের থাকিবে, যে দিন হইতে দ্বিতীয় জনের হক প্রতিষ্ঠিত হয় সেই দিন পর্যন্ত। কেননা যদি জমি বন্যায় নষ্ট হয়ে যেতে তবে সে তারই অধীনে থাকব। আর যদি অনেক দিন চলে যায় অথবা সাক্ষী কিংবা বিক্রেতা ও ক্রেতা মারা যায় অথবা তারা জীবিতই, কিন্তু বেচাকেনার মূল্য অনেক দিন অতিবাহিত হওয়ার কারণে ভুলে গিয়েছে এই অবস্থায় তার শুফআ চলবে না। কিন্তু তার [মীরাসের] হক পাবে যা প্রমাণিত হয়। আর যদি ব্যাপার অন্য রকম হয় যেমন বেশি দিন অতিবাহিত হয়নি কিন্তু বিক্রেতা বিক্রয়কে এইজন্য গোপন করিতেছে যেন প্রতিবেশী শুফআর দাবি না করিতে পারে; তবে আসল জমির দাম যাচাই করে দেখিতে হইবে, তার দাম কত। অতঃপর জমি যদি আরো বেড়ে থাকে- যেমন ঘরবাড়ি বাগ-বাগিচা তবে তার মূল্য আদায় করে প্রতিবেশী শুফআর দাবিতে নিয়ে নিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন জীবিতদের সম্পত্তির নয়, মৃত ব্যক্তিদের সম্পত্তিতেও শুফআ চলবে। কিন্তু যদি অংশীদাররা অংশ বন্টন করে নেয় এবং বিক্রয় করে ফেলে তবে আর শুফআ চলবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন আমার মতে গোলাম, বাঁদী, উট, গরু, বকরী ও জীব-জন্তুতে এবং কাপড়-চোপড় ও কূপে যার আশেপাশে জমি নাই শুফআর দাবি চলবে না, কেননা শুফআ তো ঐখানেই হয়ে থাকে যেখানে সীমানা নির্ধারিত করা যায়। সুতরাং যেখানে ভাগবাটোয়ারা চলে না সেখানে শুফআও চলবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন যদি কেউ এমন জমি খরিদ করে যেখানে মানুষের শুফআর অধিকার চলে, তবে তার উচিত সে যেন সমস্ত প্রতিবেশীকে বিচারকের নিকট নিয়ে যায় এবং বলে যে, হয়তো তোমরা নিয়ে যাও অথবা শুফআর দাবি পরিত্যাগ কর। আর সে যদি সকল প্রতিবেশীকে নিয়ে যায়নি কিন্তু বেচাকেনার বিষয় [সময় মতো] সকল প্রতিবেশীই খবর পেয়েছিল এবং এতদসত্ত্বেও অনেক দিন পর্যন্ত শুফআর দাবি করেনি, অতঃপর শুফআর দাবি করলে তাদের দাবি অগ্রাহ্য হইবে।

 মুয়াত্তা মালিক – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

Comments

One response to “মুয়াত্তা মালিক । কোন জিনিসের মধ্যে শুফআ চলে”

Leave a Reply