মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান শৌচকার্য কিবলা ও ফযীলত

মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান ও কিবলা বর্ণনা

মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান ও কিবলা বর্ণনা, এই অধ্যায়ে হাদীস =১৫ টি ( ৪৪১-৪৫৫ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ১৪ঃ কিবলা

পরিচ্ছেদ ০১. শৌচকার্যে গমন করলে তখন কিবলাকে সামনে রাখা নিষেধ
পরিচ্ছেদ ০২. শৌচকার্যের সময় কিবলাকে সামনে রাখার ব্যাপারে অনুমতি
পরিচ্ছেদ ০৩. কিবলার দিকে থুথু নিক্ষেপ করা নিষেধ
পরিচ্ছেদ ০৪. কিবলার বর্ণনা
পরিচ্ছেদ ০৫. মসজিদুন-নবী সাঃআঃ-এর ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ৬ – মহিলাদের মসজিদে গমন

পরিচ্ছেদ ০১. শৌচকার্যে গমন করলে তখন কিবলাকে সামনে রাখা নিষেধ

৪৪০ নাফি ইবনি ইসহাক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী সাঃআঃ-এর সাহাবী আবু আইয়ূব আনসারী [রাদি.]-কে আমি মিসরে বলিতে শুনিয়াছি আল্লাহর কসম, আমি জানি না এই শৌচাগারগুলি কি করব। অথচ রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি শৌচকার্যের জন্য যায় তবে কিবলাকে সামনেও করিবে না এবং পেছনেও করিবে না।

[বুখারি ১৪৪, মুসলিম ২৬৪] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪১ আনসারী সাহাবী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

শৌচকার্যের সময় কিবলাকে সামনে করে বসতে রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ আমাদেরকে নিষেধ করেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদ ০২. শৌচকার্যের সময় কিবলাকে সামনে রাখার ব্যাপারে অনুমতি

৪৪২ ওয়াসি ইবনি হাব্বান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন, কিছুসংখ্যক লোক বলে থাকে তুমি যখন তোমার আবশ্যকের জন্য [প্রসাব ও পায়খানার জন্য] বস, তখন কিবলা ও বায়তুল মুকাদ্দাসকে সামনে করিবে না। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, [একবার] আমি আমাদের গৃহের ছাদে চড়িলাম, তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে [তাঁর আবশ্যকের জন্য] দুটি ইটের উপর উপবিষ্ট দেখলাম, বায়তুল মুকাদ্দাসকে সামনে রেখে। অতঃপর তিনি বলেন, সম্ভবত তোমরা তোমাদের পাছার উপর নামাজ পড়। রাবী [ওয়াসি ইবনি হাব্বান] বলেন, আমি বললামঃ আল্লাহর কসম, আমি জানি না ইহা দ্বারা কি বুঝিয়েছেন। তখন তিনি বলিলেন, অর্থাৎ যে জমির সাথে পাছা লাগিয়ে সিজদা করে [সে পাছার উপর নামাজ পড়ে]।

[বুখারি ১৪৫, মুসলিম ২৬৬] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ ০৩. কিবলার দিকে থুথু নিক্ষেপ করা নিষেধ

৪৪৩ আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ [একবার] কিবলার দিকে দেয়ালে থুথু দেখিতে পেয়ে উহাকে ঘষে তুলে ফেললেন। তারপর তিনি মুখমণ্ডল লোকের দিকে করলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজ পড়ে সে যেন সামনের দিকে থুথু না ফেলে। কারণ যখন নামাজ পড়ে তখন অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তার সামনে থাকেন।

[বুখারি ৪০৬, মুসলিম ৫৪৭]এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৪ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ একবার কিবলার দিকে দেয়ালে থুথু অথবা কাশ বা নাকের পানি [কোনটি বলেছেন এই বিষয়ে রাবীর সন্দেহ হয়েছে] দেখিতে পেলেন, তিনি তা ঘষে পরিষ্কার করেছিলেন।

[বুখারি ৪০৭, মুসলিম ৫৪৯] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ ০৪. কিবলার বর্ণনা

৪৪৫ আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

লোকজন কাবাগৃহে ফজরের নামাযে ছিলেন এমন সময় একজন আগন্তুক তাঁদের কাছে এলেন। তিনি [এসে] বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ-এর উপর [গত] রাত্রে কুরআন নাযিল হয়েছে। তাহাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে [নামাযে] কাবার দিকে মুখমণ্ডল করার জন্য। অতএব আপনারাও কাবার দিকে মুখ করুন। এটা শুনে তাঁরা কাবা-র দিকে ঘুরে গেলেন অথবা তাঁদের মুখ ছিল শামের দিকে।

[বুখারি ৪০৩, মুসলিম ৫২৬] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৬ সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ মদীনায় শুভাগমন করার পর ষোল মাস যাবত বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে নামাজ আদায় করিয়াছেন। অতঃপর বদরের [যুদ্ধের] দুই মাস পূর্বে কিবলা পরিবর্তন হয়।

[মারফু, বুখারি ৪১, মুসলিম ৫২৫] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৭ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করলেই হয়, পূর্বে ও পশ্চিমের মধ্যবর্তী স্থান কিবলা বলে গণ্য করা হয়। [মদীনা হইতে মক্কা দক্ষিণ-পশ্চিমে, পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যবর্তী স্থান বলিতে এটাই বুঝানো হয়েছে।] [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদ ০৫. মসজিদুন-নবী সাঃআঃ-এর ফযীলত

৪৪৮ হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিত; রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, আমার এই মসজিদের এক নামাজ মসজিদুল হারাম ব্যতীত অন্য মসজিদের হাজার নামাজ অপেক্ষা উত্তম।

[বুখারি ১১৯০, মুসলিম ১৩৯৪] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৯ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগিচাসমূহের একটি বাগিচা। আর আমার মিম্বর হাওযের উপর অবস্থিত।

[বুখারি ১১৯৬, মুসলিম ১৩৯১, আবু হুরাইরা থেকে] এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৬ – মহিলাদের মসজিদে গমন

৪৫১ রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর দান্দীগণকে তোমরা আল্লাহর মসজিদসমূহ হইতে বিরত রেখো না।

[বুখারি ৯০০, মুসলিম ৪৪২, তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুনকাতে] কিবলা ও মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৪৫২ বুসর ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ বলেছেন, তোমাদের [মহিলাদের] কেউ যদি ইশার নামাযে হাজির হয়, তবে সে অবশ্য খুশবু স্পর্শ করিবে না। [সহীহ, মুসলিম ৪৪৩, ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদে إنقطاع তথা বিচ্ছিন্নতা রয়েছে]

কিবলা ও মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪৫৩ হইতে বর্ণিতঃ

মার [রাদি.]-এর স্ত্রী আতিকা বিনতে যায়দ ইবনি আমর ইবনি নুফায়ল [রাদি.] মসজিদে যাওয়ার জন্য উমার [রাদি.]-এর কাছে অনুমতি চাইতেন। তিনি কোন উত্তর দিতেন না। এতে তাঁর স্ত্রী বলিতেন, আল্লাহর কসম, যতদিন আপনি আমাকে নিষেধ না করেন, ততদিন আমি যেতে থাকব। কিন্তু তিনি [তবুও] নিষেধ করিতেন না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

কিবলা ও মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪৫৪ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

মেয়েরা যেসব নূতন [চালচলন ও তরীকা] সৃষ্টি করেছে, যদি রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ তাদের দেখিতেন, তবে অবশ্যই তাদেরকে মসজিদ হইতে বিরত রাখতেন যেমন বনি ইসরাইলের মেয়েদেরকে বিরত রাখা হয়েছিল। ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণনাকারিণী আমরা-এর কাছে প্রশ্ন করলাম বনি ইসরাইলের মেয়েদেরকে মসজিদে গমন করিতে নিষেধ করা হয়েছিল কি? আমরা [রাদি.] বলেন, হ্যাঁ।

[বুখারি ৮৬৯, মুসলিম ৪৪৫] মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

One response to “মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার বিধান শৌচকার্য কিবলা ও ফযীলত”

Leave a Reply