তারাবির নামাজ / রমাযানের নামায এর জন্য উৎসাহ প্রদান

তারাবির নামাজ / রমাযানের নামায – ইমাম মালিক

তারাবির নামাজ / রমাযানের নামায – ইমাম মালিক, এই অধ্যায়ে হাদীস =৭ টি ( ২৪১-২৪৭ পর্যন্ত )>> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৬ রমাযানের নামায

  • পরিচ্ছেদঃ ১ – রমাযানের নামায [তারাবীহ] আদায়ের জন্য উৎসাহ প্রদান
  • পরিচ্ছেদঃ ২ – কিয়াম-এ রমাযান বা তারাবীহর নামাযের বর্ণনা

পরিচ্ছেদঃ ১ – রমাযানের নামায [তারাবীহ] আদায়ের জন্য উৎসাহ প্রদান

২৪০ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এক রাত্রে মাসজিদে নামায [তারাবীহ] আদায় করলেন। তাঁর [ইকতিদা] করে লোকজনও নামায আদায় করলেন। অতঃপর পরবর্তী রাত্রেও নামায আদায় করলেন। [সে রাত্রে] অনেক লোকের সমাগম হল। তারপর তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাত্রে তাঁরা একত্র হলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বের হলেন না। যখন প্রভাত হল, তিনি [কারণ] বলিলেন, তোমাদের কার্যক্রম আমি লক্ষ করেছি , তোমাদের উপর [তারাবীহ] ফরয করে দেওয়া হইবে, এটা আমাকে বের হওয়া হইতে বারণ করেছে। এটা ছিল রমাযানের ঘটনা।

[বুখারি ১১২৯, মুসলিম ৭৬১] তারাবির নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৪১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ রমাযানের তারাবীহর জন্য ওয়াজিব নামাযের মত নির্দেশ দান করিতেন না বটে, কিন্তু এটার জন্য অধিক উৎসাহ প্রদান করিতেন এবং ফরমাইতেন যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাব-এর [অর্থাৎ আল্লাহর উপর ঈমানসহ ও সওয়াবের আশায়] সাথে রমাযানের তারাবীহ আদায় করিবে তার বিগত সমুদয় [সগীরা] গুনাহ ক্ষমা করা হইবে। [বুখারি ২০০৮, মুসলিম ৭৫৯]

ইবনি শিহাব [যুহরী] [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর ওফাতের পরও তারাবীহর অবস্থা এইরূপই ছিল। আবু বাকর সিদ্দীক [রাদি.]-এর খিলাফতকালে এবং উমার ইবনি খাত্তাব [রাহিমাহুল্লাহ]-এর খিলাফতের প্রথম দিকে [তারাবীহর] অবস্থা অনুরূপই ছিল।

তারাবির নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ২ – কিয়াম-এ রমাযান বা তারাবীহর নামাযের বর্ণনা

২৪২ হইতে বর্ণিতঃ

আমি মাহে রমযানে উমার ইবনি খাত্তাব [রাহিমাহুল্লাহ]-এর সাথে মসজিদের দিকে গিয়েছি, [সেখানে গিয়ে] দেখি লোকজন বিভিন্ন দলে বিভক্ত। কেউ একা নামায আদায় করিতেছেন, আবার কেউ-বা নামায আদায় করিতেছেন এবং তাঁর ঈমামতিতে একদল লোকও নামায আদায় করিতেছেন। [এই দৃশ্য দেখে] উমার [রাদি.] বলিলেন, আমি মনে করি যে, [কত ভালই না হত] যদি এই মুসল্লিগণকে একজন কারীর সাথে একত্র করে দেওয়া হত! অতঃপর তিনি উবাই ইবনি কাব [রাদি.]-এর ঈমামতিতে একত্র করে দিলেন। [আবদুর রহমান] বলেন, দ্বিতীয় রাত্রেও আমি তাঁর সাথে [মসজিদে] গমন করলাম। তখন লোকজন তাঁদের কারীর ইকতিদায় নামায আদায় করেছিলেন। উমার [রাদি.] [এটা অবলোকন করে] বলিলেন, نِعْمَتِ الْبِدْعَةُ هَذِهِ এটা অতি চমৎকার বিদআত বা নূতন পদ্ধতি। আর যে নামায হইতে তারা ঘুমিয়ে থাকে তা উত্তম ঐ নামায হইতে, যে নামাযের জন্য তারা জাগ্রত হয়, অর্থাৎ শেষ রাতের নামাযই আফযল। {উমার [রাদি.]} এটা এজন্যই বলেছিলেন, অনেক লোকের অবস্থা [এই ছিল] রাত্রের শুরু ভাগে তারা নামায আদায় করে নিলেন। কেউ কেউ শেষ রাত্রে তারাবীহ পড়া আফযল মনে করিতেন।

[সহীহ বুখারি ২০১০] তারাবির নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৪৩ সায়িব ইবনি ইয়াযিদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-উবাই ইবনি কাব এবং তামীমদারী [রাদি.]-কে লোকজনের [মুসল্লিগণের] জন্য এগার রাকআত [তারাবীহ] কায়েম করিতে [পড়াইতে] নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারী একশত আয়াতবিশিষ্ট সূরা পাঠ করিতেন, আর [আমাদের অবস্থা এই ছিল] আমরা নামায দীর্ঘ সময় দাঁড়াইতে দাঁড়াইতে [ক্লান্ত হয়ে পড়লে] সাহায্য গ্রহণ করতাম অর্থাৎ লাঠির উপর ভর দিতাম। [এইভাবে নামায পড়তে পড়তে রাত শেষ হত] আমরা ভোর হওয়ার কিছু পূর্বে ঘরে ফিরে আসতাম। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

তারাবির নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২৪৪ ইয়াযিদ ইবনি রুমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] ইয়াযিদ ইবনি রুমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণনা করেন- তিনি বলেছেন, লোকজন উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর খিলাফতকালে রমযানে তেইশ রাকআত তারাবীহ পড়াতেন তিন রাকআত বিতর এবং বিশ রাকআত তারাবীহ। এটাই উমার [রাদি.] শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রমজানের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২৪৫ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আরাজ [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনেছেন লোকজন রমাযানের বিতর নামাযে কাফিরদের প্রতি অভিশাপ প্রেরণ করিতেন। আর কারী অর্থাৎ ঈমাম আট রাকআতে সূরা বাকারা তিলাওয়াত করিতেন। কোন সময় উক্ত সূরা বার রাকআতে পাঠ করলে লোকেরা মনে করিতেন যে, কারী [ঈমাম] নামায হালকা পড়েছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

রমজানের নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২৪৬ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, [মসজিদে রাত কাটিয়ে] আমরা রমাযানে [গৃহে] ফিরে আসতাম, তখন ভোর হওয়ার আশংকায় খাদেমগণকে [খানা প্রস্তুতির] কাজে লাগাতাম। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

উরওয়াহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; যাকওয়ান আবু আমর [রাহিমাহুল্লাহ] নাবী সাঃআঃ-এর সহধর্মিণী আয়েশা [রাদি.]-এর ক্রীতদাস ছিলেন। আয়েশা [রাদি.]-এর ওফাতের পর যাকওয়ান মুক্তিপ্রাপ্ত হইবেন বলে ঘোষণা ছিল। [উক্ত যাকওয়ান] রমাযান মাসে তারাবীহর নামায আদায় করিতেন এবং আয়েশা [রাদি.] তাঁর পেছনে [অন্যদের সথে] মুকতাদী হয়ে নামায আদায় করিতেন অথবা আয়েশা [রাদি.] তাঁর কুরআন পাঠ শুনতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

তারাবির নামাজ -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়


by

Comments

Leave a Reply